সুন্দর_স্পৃহা #সামিয়া_সারা #psychobasedstory পর্ব-২৩

0
3

‼️ Violence alert ‼️
📌📢এলার্ট
(প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য)
এতদিন যারা ডার্ক রোমান্স ভাইব পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন আজকের পর্বটি পড়ে তা একটু হলেও অনুভব করতে পারবেন । তবে এ পর্বটি সম্পূর্ণ প্রাপ্ত মনস্কদের জন্য। আমি আলাদা করে সকলকে সতর্ক করে দিতে চাই , যারা অতিরিক্ত ভায়ো*লেন্স, র*ক্ত , খু*ন ,ক্রা*ইম ,কি*লিং ইত্যাদি সহ্য করতে পারেন না,তারা দয়া করে এড়িয়ে যাবেন🥺
📌মানসিকভাবে দুর্বল কেউ দয়া করে এই পর্বটি পড়বেন না📌

#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory

পর্ব-২৩

সুন্দরের কথা শুনে আরেক দফায় চমকে তাকালো স্পৃহা। কী বলছে সে?! লিহানও থমকে রয়েছে। এতোদিন একসাথে ছিল মানে?
স্পৃহা শান্ত গলায় সুন্দরকে জিজিজ্ঞেস করল,

-আপনি বলুন যে আপনি মিথ্যা বলছেন।

সুন্দর স্পৃহার গালে হাত দিয়ে বললো,

-তোমাকে ছাড়া আমি এক সেকেন্ড থাকতে পারি না। ভয়ানক কষ্ট হয়। তবে ভাবলে কী করে যে এই কত রাত একা ছেড়ে দিব?

-কিন্তু আপনি বলেছিলেন এমন কিছুই হবে না।

-হ্যাঁ,অমন কিছুই হয়নি। তুমি বললে আজ রাতে হতে পারে।

লিহান এবার আর সহ্য করতে পারল না। এতোকিছু হওয়ার পরেও সে বললো,

-ভাইয়া! আর দুদিন পর ওর সাথে আমার বিয়ে!

সুন্দরের শান্ত শীতল জবাব,

-এর জবাব ঘুম থেকে উঠেই দিব। আমার স্পর্শের এখন ঘুমনো দরকার।

কিছুক্ষণ থেমে সুন্দর আবার বললো,

-আমাদেরকে ডিস্টার্ব করিস না ভুলেও!

এবার লিহান বেশ চেঁচিয়ে বললো,

-তোমাদের ডিস্টার্ব করব না??? এর মানে কী!? ও তোমার সাথে থাকবে না! ২দিন পরে ওর সাথে আমার বিয়ে!

-২ বছর আগে থেকে ও আমার বউ।
Now get lost and be ready for the upcoming morning .

.

লিহানের কিছুতেই ঘুম আসছে না । অনেকক্ষণ ধরে তার রুমের এপাশ থেকে ওপাশ হেঁটে চলেছে। মাথার মধ্যে নানা ধরনের চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। অন্যদিকে আশিক তার রুমে গিয়ে ব্যাগ গোছানো শুরু করেছে । তাকে যেভাবেই হোক এই বাড়ি থেকে বের হতে হবে । আরিয়ানের যা অবস্থা করেছে সুন্দর! সেও তো সুন্দরের সাথে প্রতারণা করেছিল , সুন্দর তার কি অবস্থা করবে এটা ভেবেই সে ভয়ে , আতঙ্কে শিউরে উঠছে।

সবকিছু গুছিয়ে রুম থেকে বাইরে যেতেই দেখে তার রুমের সামনে দুজন গার্ড দাঁড়িয়ে। সুন্দর এবার তার কি অবস্থা করতে পারে তার আর বুঝতে বাকি রইলো না। সুন্দর যে এতদিন থেকে একটা বড় ধরনের খেলা খেলছিল কী তারা আজ বুঝতে পারলো। এখন আশিক আর লিহানের কিছু বুঝতে আর বাকি রইলো না। সব বোঝার পরে আশিক এ পরিস্থিতি থেকে বের হতে চাইলেও লিহান স্পৃহাকে ছাড়া পিছিয়ে যেতে চাচ্ছে না।

.

.

.

.

.

স্পৃহা কে বেশ জোরাজুরি করেই রুমে নিয়ে গেল সুন্দর।
দরজা লক করে তাকে কোল থেকে নামিয়ে দিল বিছানায়।
স্পৃহা এখনো সে কথাই ভেবে চলেছে যে এই কতদিন সুন্দর তার সাথে এক রুমে ঘুমিয়েছে। সুন্দর স্পৃহার দিকে ঝুঁকে এসে তার দুহাত স্পৃহার দুপাশে বিছানায় রাখল। তারপর বলল,

-তুমি রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাকে যে তোমার রুমে দেখতে পেতে কখনো সন্দেহ হয়নি যে আমি তোমার সাথে ছিলাম?

স্পৃহা কোন জবাব দিল না ।
সুন্দর আবারো বলল,

– নিজের গলায় এত ভালোবাসার চিহ্ন দেখেও কখনো বুঝতে পারোনি?

এই কথা শুনে স্পৃহা নিজের গলায় হাত বুলালো । তার মনে পরল সে আয়নায় দেখেছিল গলায় র*ক্তজমাট বাধার দাগ।

স্পৃহার হঠাৎ এমন ভয় পাওয়া দেখে সুন্দর আবার বলে উঠলো ,

-এই জন্য তোমায় এত ভালোবাসি স্পর্শ ! ভীষণ বোকা তুমি। তুমি ভাবলে কি করে তোমাকে ছাড়া যে সুন্দর এক মুহূর্ত থাকতে পারে না সে অন্য কারো কাছে তোমাকে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্তে বসে থাকবে!

স্পৃহা এবার বললো,

-গতকাল রাতে আপনি এসেছিলেন?

-কেন কেউ তোমায় স্পর্শ করেছিল?

স্পৃহা আতঙ্কিত দৃষ্টিতে সুন্দরের দিকে তাকালো । সে কি হ্যাঁ বলবে নাকি না বলবে বুঝতে পারছে না । হ্যাঁ বললে সুন্দর যদি কিছু একটা ক্ষতি করে এসব ভেবে বলল ,

-না .।..

সুন্দর স্পৃহার এই জবাবেরই অপেক্ষা করছিল। তার মুখে না শুনে সে জোরে জোরে হাসতে শুরু করলো। তারপর বিছানা থেকে এক হাত উঠিয়ে স্পৃহার গলায় আলতো করে হাত দিয়ে স্লাইড করতে লাগলো। হেঁচকা টেনে তাকে উঠিয়ে পেছন থেকে কোমর জড়িয়ে ধরল। এক হাত কোমরে আর এক হাত গলায় সুন্দরের ভারি নিঃশ্বাস উপচে পড়ছে স্পৃহার কাঁধে। স্পৃহার বুঝতে আর বাকি রইল না সেদিন রাতে তার রুমে সুন্দর ই এসেছিল। স্পৃহার নীরবতা দেখে সুন্দর তার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলতে শুরু করল,

-তুমি কি ভেবেছিলে তোমার এই কোমরে বাইরের ছেলে হাত রেখেছে ??

তাই বলে সুন্দর স্পৃহার পরিহিত কাপড় ভেদ করে কোমরে তার নখ বসিয়ে আছর দিল । স্পৃহা ব্যথায় কুকড়ে উঠলো । সুন্দর স্পৃহার কোমর ছেড়ে গলাতে হাত দিল একইভাবে ।বলল,

-ভেবেছিল এখানে অন্য কেউ স্পর্শ করেছে ! তবুও তুমি অস্বীকার করে আমাকে না বলেছ !! নিজের অন্যায় একটার পর একটা বাড়িয়ে চলেছে স্পর্শ । সব সহ্য করে নিতে পারবে তো?

স্পৃহার গলা ও কোমরে জ্বালা করছে । সুন্দর এসবের পাত্তা না দিয়েই আবার বলল ,

-তোমার সাহস দেখে আমি খুব অবাক হয়ে গেলাম ! তুমি শাড়ি পড়তে চেয়েছিলে কি করে ? এমন দুঃসাহস দেখাতে বুক কাঁপল না? দুই বছর আগে তোমার শাড়ি পড়া বন্ধ করে দিলাম। তবুও তুমি আবারো পড়তে চেয়েছিলে । তোমার উপরের রাগ আমি তোমার শাড়ির উপরে মিটিয়েছি।

-আপনি আমাকে ওভাবে মা*রতে চেয়েছিলেন?

সুন্দর স্পৃহার ঠোঁটে তার তর্জনী আঙুল রেখে বলল ,

-শশশশ্
তোমাকে মারার কথা আমি স্বপ্নেও ভাবিনা । তোমাকে নিজের কাছে রেখে শাস্তি দিব ,তবুও ম*রতে দিব না । রাগটা হয়েছিল শাড়ির উপর। তোমার সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকবে আর আমি এটা মেনে নেব! ?? তাই শেষ করে দিয়েছি!

স্পৃহা সুন্দরের কথা শুনে চোখ বন্ধ করে নিল। সুন্দর আরিয়ানের সাথে যা করেছে সে দৃশ্য নিজের চোখে দেখার পরে তার মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। স্পৃহার মনোভাব বুঝে সুন্দর শয়তানী হাসি দিল । সে তার স্পর্শকে শাস্তি দিতে চেয়েছিল। এতদিন তার স্পর্শ তাকে কষ্ট দিয়েছে ! ভীষণ কষ্ট দিয়েছে। অন্য কারো সাথে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে। এত সহজে কি ছেড়ে দিবে তাকে ?
এজন্য স্পর্শের সামনে সকলকে ভয়ানক শাস্তি দিবে ।সুন্দর খুব ভালোমতো জানে এর চেয়ে বড় শাস্তি স্পৃহার জন্য হতে পারে না কিছু।

স্পৃহার মুখে আতঙ্কের ছাপ দেখে সুন্দর তার দুই হাত স্পৃহার দুই গালে রেখে বলল ,

-মনে আছে স্পর্শ , লাইটিং এর এক লোক তোমার ভাবে দিকে বাজে ভাবে তাকিয়ে ছিল?

স্পৃহা সুন্দরের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়লো । অর্থাৎ তার মনে আছে।

এবার স্পৃহা কে বিছানায় বসিয়ে নিজেও তার পাশে বসলো সুন্দর । তার ফোনের ভিডিও ফোল্ডারে গিয়ে স্পৃহার সামনে একটি ভিডিও অন করে দিল। সুন্দর স্পৃহাকে ভিডিওটি দেখিয়ে বলল ,

-এই যে সেই লোক।

ভিডিওটি তে দেখা যাচ্ছে সুন্দর লোকটার চোখ টেনে ধরে রয়েছে। চোখে ভয়ানক রাগ। পাশ থেকে লাইটেরই একটি তার নিল। তারটি হাতে নিয়ে টান দিয়ে ছিড়লো। তার হাতের রগ ফুলে উঠেছে। তারের ছেড়া অংশ লোকটার সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সে। ভয়ানক রাগী বৃষ্টিতে লোকটির দিকে তাকিয়ে বলল ,

-এই চোখ দিয়ে তুই আমার স্পর্শকে দেখেছিস!
এই চোখ আমি শেষ করে দিব ! এসব বলে সুন্দর লোকটার চোখ টেনে ধরে…

এ পর্যন্ত দেখার পরে স্পৃহা ধাক্কা দিয়ে ফোনটা সরিয়ে দিল।

-তুমি দেখলে না কেন ? তারমানে তুমি কষ্ট পাচ্ছ? ওই লোকটার জন্য তুমি কষ্ট পেলে ? !!! এখন দেখো আমি কি করি।

স্পৃহা কষ্ট সহ্য করতে না পেরে কান্না করে দিল।

আকুতি করে সুন্দরকে বলল,

– দয়া করে আমায় মাফ করে দিন। আমার এসব শাস্তি সহ্য হয় না! এসব র*ক্ত, খু*ন, অ*ত্যাচার আমি সহ্য করতে পারি না।

সুন্দর স্পৃহার থেকে এ কথাটি শোনার জন্য অপেক্ষা করছিল । এবার তার আনন্দ হচ্ছে। সে তার স্পর্শকে শাস্তি দিতে পারছে ! সুন্দর স্পৃহা কে বলল ,

-বেশ তোমাকে এই ভিডিও দেখতে হবে না ! ওই লোকটা কে আমি জানে মে*রে ফেলবো । কারণ তুমি ওর জন্য কষ্ট পেয়েছো ।

স্পৃহা এবার সুন্দর কে বলল,

– ভিডিওটা দিন আমি দেখব!

সুন্দর আবারো ভিডিওটা অন করে সামনে দিল। লোকটার চোখ টেনে ধরে কিভাবে সুন্দর তার চোখে তারের ছেড়া অংশ লাগালো তা দেখে স্পৃহা জ্ঞান হারায়। লোকটার ছটফটানি, চোখের অংশের অবস্থা দেখে সে আর সহ্য করতে পারে না। ছাদে অনেক মানুষের সাথে থাকা সত্ত্বেও সে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। আর এখানে সে অন্ধকার রুমে সুন্দরের মতো একজন পা*গলের সাথে বসে এ ভয়ানক দৃশ্য দেখল!

জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যেতেই সুন্দর তাকে উঠিয়ে বালিশ ঠিক করে ঠিকমতো শুইয়ে দিল।

তখনই সুন্দরের কাছে তার একজন গার্ডের কল আসে। লোকটা কল দিয়ে জানায়,

– আশিক তার রুম থেকে পালানোর চেষ্টা করেছে।

সুন্দরের দৃষ্টি এ কথা শুনে ভয়ানক হয়ে উঠলো । সে স্পৃহা কে লক করে চলে গেল আশিকের রুমে।

আশিকের কাছে এসে বলল ,

-এই দুই পা দিয়ে এখান থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলি তাই না? ভেবেছিলি পালিয়ে যেতে পারলে শাস্তি আর পাবি না? তোর পালানোর ক্ষমতাই নষ্ট করে দেবো আমি!

আশিক সুন্দরের এই হুমকি শুনে ভয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে আবার পালাতে যায়। সুন্দরের গার্ড দরজা থেকে তাকে আবারো ধরে ফেলে । নিজের শরীরের আশিকের ধাক্কা খেয়ে সুন্দর বেশি রাগান্বিত হয়ে পড়ে। গার্ডদের আদেশ করল একটা চেয়ারের সাথে আশিক কে বেঁধে দিতে। একটি লোহার বক্সের মধ্যে অনেকগুলো কয়লাতে আগুন দিয়ে আশিকের পায়ের নিচে দিতে বলে। আশিকের ভয়ানক চিৎকার দেয়ালের চারদিক থেকে প্রতিফলিত হয়ে বাজতে থাকে । এমন চিৎকারে সকলেই রুহ কেঁপে উঠলো!

আশিকের দুই পা দিয়ে ধোয়া বের হচ্ছে!

(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara©️
Episode:23

আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? আগের পর্বগুলোতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖
Jototuk parsi lekhar try korsi,mon khule support koren🥺🙏🏻

Golpo deoar ekta fixed time korte chai. Apnader kon time e shubidha hoy?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here