#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory
পর্ব-২৮
বাড়ির ড্রয়িং রুমে পুলিশ বসে রয়েছে । অন্যদিকে লিহানের বেডরুমে ডক্টর। হঠাৎ করে লিহানের এমন পড়ে যাওয়াতে তার মা মিসেস সাবিনা চৌধুরী ভীষণ তাড়াহুড়ায় ডক্টর ডাকেন । অন্যদিকে সে সময়ে তাদের বাড়িতে হঠাৎ করে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে পুলিশ আসে। এস.আই সুবিন ভুঁইয়া
মূলত জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য এসেছেন। তার সামনে একমাত্র সুন্দর ছাড়া সকলের উপস্থিত রয়েছে। অন্যদিকে সুন্দর রয়েছে লিহানের রুমে । মিসেস চৌধুরী ইচ্ছে করে সুন্দরকে সেখানে বসিয়ে রেখেছিল কারণ বাড়িতে একের পর এক যে অঘটন গুলো ঘটে চলেছে তার পেছনে দায়ী সুন্দর । এসব প্রশ্নের সম্মুখীন সুন্দর যেন না হয় তাই সে ডক্টরের সাথে লিহান এর বিষয়ে কথা বলতে বলেন সুন্দরকে । তার ভয় সুন্দরকে নিয়ে
নয় । তার ভয় বাড়িতে আসা এসআই কে নিয়ে! অন্যদিকে এস.আই সুবিন একের পর এক প্রশ্ন করেই চলেছে,
-আপনাদের বাড়িতে একের পর এক অঘটন ঘটে চলেছে। ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত? সন্দেহভাজন কেউ থাকলে অনুগ্রহ করে খুলে বলুন।
মি. চৌধুরীর বেশ খোলামেলা জবাব ,
-না আমাদের বাড়িতে তেমন কোনো অঘটন ঘটেনি।
-তবে কেমন অঘটন ঘটেছে?
-আমার জানামতে কিছুই ঘটেনি।
সুন্দর এর বাবার এমন জবাব শুনে রহস্যময়ী হাসি দিয়ে এস আই আশেপাশে পর্যবেক্ষণ করে বলল,
-কার বিয়ে হচ্ছে?
-আমার বড় ছেলে সানজিল চৌধুরীর…
-পাত্রী কে?
সুন্দরের মা এক কোনায় দাঁড়িয়ে থাকা স্পৃহার দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলল,
– ওই যে ও
এসআই এবার উঠে গিয়ে স্পৃহার কাছে গিয়ে একটু কেশে বলল,
-তা মিসেস চৌধুরী! নাম কী আপনার?
স্পৃহা কোন জবাব দিল না । তবে তার জবাব না দেওয়ার কারণে এসআইয়ের লজ্জা পাওয়ার কথা ছিল , কিন্তু তা না পেয়ে তিনি হেসে আবার নিজের জায়গায় গিয়ে বসলেন । তারপর সুন্দরের বাবার দিকে তাকিয়ে বললেন ,
-আপনি না বলেছিলেন কোন অঘটন ঘটেনি। কিন্তু আমার কাছে খবর এসেছে লাইটিং এর কাজ করতে আসা লোকের চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
-কিন্তু সেটি একটি এক্সিডেন্ট ছিল । কোন ইচ্ছাকৃত ঘটনা নয় ।
-ইচ্ছাকৃত হোক বা অনিচ্ছাকৃত ঘটনা হোক। অঘটন ঘটেছে এটাই কথা।
একটু থেমে এস.আই সুবিন স্পৃহার দিকে তাকিয়ে বলল ,
-এক কাপ কফি পাওয়া যাবে মিসেস চৌধুরী ?
স্পৃহা ওই একই কোনায় দাঁড়িয়ে রইল । সাবিনা চৌধুরী বলল ,
-ও এখনো এ বাড়িতে নতুন । আমি নিয়ে আসছি ।আপনি বসুন।
এই বলেই মিসেস সাবিনা চৌধুরী চলে গেলেন রান্নাঘরে ।এস.আই সুবিনের মুখটা কেমন যেন রহস্যময় ।
সে আবার বলতে শুরু করলেন,
– বাড়িতে এত বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে অথচ আপনাদের কোন আত্মীয়-স্বজন এলো না ! হাতে গোনা মাত্র তিন থেকে চারজন রয়েছে । কেন মিস্টার চৌধুরী?
-এটা একেবারেই ব্যক্তিগত ব্যাপার । বাইরের মানুষদের সাথে আমরা আমাদের পারিবারিক কথা শেয়ার করি না।
এমন কড়া জবাব শুনে এসআই সুবিন সকলের দিকে তাকিয়ে বলল,
– আপনাদের কারো কোন কিছু নিয়ে কিছু জানাতে হলে আমাকে নির্ভয়ে বলুন । কারো কোন ক্ষতি হবে না।
ড্রয়িং রুমে উপস্থিত সবাই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সকলের এমন প্রতিক্রিয়া দেখে এসআই উঠে দাঁড়ালেন ।
মিস্টার চৌধুরীর দিকে হাত বাড়িয়ে বললেন ,
-আজ আর কফি খাব না ।অন্য একদিন এসে খাওয়া যাবে।
এরপর স্পৃহার সামনে এসে বললেন,
-স্পৃহা তোমার নাম । তাইতো?
স্পৃহা একইভাবে দাঁড়িয়ে রইলো কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানো ছাড়াই । এসআই সবিন ভূঁইয়া রহস্যময় হাসি দিয়ে সোজা বাইরে চলে গেলেন।
এদিকে লিহানের চেকআপ করাও হয়ে গিয়েছে। ডক্টর বেরিয়ে যাওয়ার পর একে একে সবাই লিহানের রুমে যায়।
উদগ্রীব হয়ে মিসেস চৌধুরী সুন্দরকে জিজ্ঞেস করে,
– কি হয়েছে ওর ?
সুন্দর তার মায়ের দিকে না তাকিয়ে শান্ত দৃষ্টিতে স্পৃহাকে দেখে।
সুন্দরের মা এবার সুন্দরের কাছে গিয়ে তার শরীর টা হালকা ঝাঁকিয়ে বললো,
-লিহান কে বাঁচতে দেওয়া যায় না?
সুন্দর এবারও একই ভাবে স্পৃহা কে দেখছে। স্পৃহার দৃষ্টি ফ্লোরে। সুন্দর তার মায়ের দিকে তাকালো, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখে বলল,
-লিহানের ডিমেনশিয়া হয়েছে…
-Dementia?
-হ্যাঁ, কিছু মনে রাখতে পারবে না। বেঁচে থাকবে রিলাক্স!
মিসেস সাবিনা চৌধুরী কড়া দৃষ্টিতে স্পৃহার দিকে তাকালো। সুন্দর তার মাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-বেঁচে থাকবে,তাই অন্য দিকে তাকিয়ে আর মারবেন না নিজের ছেলে কে।
কথাটা বলে সুন্দর স্পৃহার কাছ থেকে তার হাত মুচরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। তারপর স্পৃহার কানের কাছে ফিসফিশিয়ে বলল ,
-খুব সাহস হয়েছে ! কি শাস্তি দেওয়া যায় বলোতো ?
সুন্দরের হঠাৎ এমন কাজে রুমে উপস্থিত সকলে বেশ হকচকিয়ে গেল । সকলের দৃষ্টি উপেক্ষা করে সুন্দর স্পৃহাকে কোলে তুলে নিয়ে যায় তার রুমে। বিছানায় বসিয়ে তার শক্ত হাতে ইশতেহার গাল চেপে ধরে।
-এত সাহস কোথায় পেলে!!?
স্পৃহা সুন্দরের কথায় কোন জবাব দেয় না । সুন্দর স্পৃহার গলায় হাত দিয়ে এক ধাপ বেশি জোরে চেঁচিয়ে আবার জিজ্ঞেস করে ,
-কি হলো কথা বলছো না কেন?
স্পৃহা এবার মুখ খোলে ,
-আপনার নিজের ভাইকে ঠান্ডা মাথায় খু*ন করছেন ! লজ্জা করছে না ? আবার জোর গলায় আমাকে প্রশ্ন করেন!
-ও যা অন্যায় করেছে তার শাস্তি পাচ্ছে।
-আপনি সকলকে বললেন আপনার ভাইয়ের ডিমেনশিয়া হয়েছে । কিন্তু আসলে যে প্রি প্লানড পিটিএসডি থেকে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে আপনি নিজে ঠান্ডা মাথায় সব শেষ করার পরিকল্পনা করেছেন তা কেউ জানলো না! খুব চালাক ভাবেন নিজেকে তাই না!!!! কেউ কিছু বুঝবে না অথচ দেখুন আমি সব জেনে গেলাম।
সুন্দর স্পৃহার গলা ছেড়ে দেয়। পাগলের মতো হাসতে হাসতে বলে ,
-নিজেকে চালাক তো তুমি ভাবছো!
স্পৃহার কাছে গিয়ে নিজের সমস্ত ভর তার উপরে ছেড়ে দেয় সুন্দর । তার দুই হাত মাথার কাছে নিয়ে চেপে ধরে । এরপর নিজের মুখ স্পৃহার গলায় গুঁজে দিয়ে আস্তে আস্তে হিংস্র হতে থাকে। এদিকে ব্যাথায় কান্না করে দেয় স্পৃহা।
বেশ কিছুক্ষন পর মাথা উঁচু করে স্পৃহার চোখে চোখ রেখে সুন্দর জিজ্ঞেস করে ,
-এত তেজ কোথা থেকে আসে? আমার সামনে খুব সাহসী হওয়ার চেষ্টা করো তাই না ? নিজের সাহস দেখিয়ে
নিজেই ঝামেলাতে পড়ো মাথায় থাকে না?
কানবে না এখন!
একনাগারে কথাগুলো বলেই স্পৃহার ঠোঁট আঁকড়ে ধরে সুন্দর। ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেলে ছেড়ে দেয় আঁকড়ে ধরে থাকা ঠোঁট। তারপর একটা লিকুইড সোপ এবং নেট দিয়ে স্পৃহার ঠোঁট পরিষ্কার করতে থাকে।
স্পৃহার কথা বলার মত কোন শক্তি নেই । সুন্দরের এত শক্তি প্রয়োগ করাতে তার নরম পাতলা ঠোঁট দিয়ে অঝরে র*ক্ত পড়ছে । অন্যদিকে সুন্দর পাগলের মত বারবার বলতে থাকে,
– এই ঠোঁট দিয়ে তুমি কথা বলেছিলে ওই লোকের সাথে !!এই ঠোঁট না ?? যা দিয়ে কথা বলেছিলে !
তাই না স্পৃহা!
স্পৃহার মুখ দিয়ে আওয়াজ করার কোন ক্ষমতাই এখন নেই। বরং মনে হচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যে সে তার জ্ঞান হারাবে ।
কিছুক্ষণ আগের কথা মনে পড়ছে তার ।লিহানকে সুন্দর
জীবন্ত লা*শ বানিয়ে রেখে দেবে এ বিষয়টা জানতে পেরেই
সেই গোপনে সেখানকার থানার এস আই সুবিন ভুঁইয়া কে কল
দিয়ে আসতে বলে। কিন্তু সুন্দর এ বিষয়টি জানলো কি করে!
স্পৃহার দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এসেছে। সুন্দরের বলা একটি কথাই শুনল সে!
-Don’t you know that I’m a stalker?
Stalker!
(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara©️
Episode:28
আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? আগের পর্বগুলোতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖
Jototuk parsi lekhar try korsi,mon khule support koren🥺🙏🏻
Apnader jonne ekta group khola hoyeche,jate Amar sathe apnara and apnader sathe ami always connect thakte pari. Sobai join hoye niben,link comment e diye dibo
Ajker episode ta kemon legeche? Sobai janaben🥺
Ar ekhon amar jonne sobai onek onek beshi doa korben🥺💝