#বিস্মৃতির_মাঝে_তুমি_আমি
#পর্ব_৩
#লেখিকা_অনামিকা_তাহসিন_রোজা
কনসার্টের প্রস্তুতি চলছে। বাইরে সুরের ঢেউয়ের সঙ্গে ভক্তদের উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছে। আহমেদ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁর চোখে আনন্দ ও উদ্বেগের ছাপ। কনসার্টের মঞ্চে ওঠার মুহূর্ত এর জন্য তাঁর হৃদয়ে একটানা ঢেউ খেলাচ্ছে। একটু পর সৌরভ জ্যাকেট নিয়ে হাজির হলো আহমেদের মেকআপ রুমে। সৌরভ এসেই হাস্যজ্জল কন্ঠে বললো,
“স্যার আপনাকে তো অনেক বেশি সুন্দর লাগছে আজ।”
আহমেদ আয়না দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে একটু হাসলো শুধু। সৌরভ জ্যাকেটটা আহমেদের দিকে এগিয়ে দিল। আহমেদ সেটা হাসিমুখে পড়ল। সৌরভ একটু পর্যবেক্ষণ করে বলে উঠলো,
“স্যার একটা কথা বলি….”
আহমেদ বলল,
“বলো,জিজ্ঞেস করার কি আছে!”
সৌরভ একটু ইতস্তত ভাব নিয়ে বলল,
“আপনাকে আজকে তো অনেক খুশি দেখাচ্ছে স্যার। এমনটা হওয়ার কারণ জানতে পারি?”
আহমেদ তার দিকে এক পলক তাকালো। সৌরভ অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বলল,
“না মানে আপনি তো কয়েকদিন ধরে অনেক আপসেট ছিলেন! এমনকি গান রেকর্ডিং এর সময়ও আপনি গোমড়া মুখে থাকতেন। আজ একটু খুশি খুশি দেখছি আপনাকে।”
আহমেদ ড্রেসিং টেবিল থেকে ঘড়িটা হাতে পড়তে পড়তে বলল,
” হ্যাঁ সৌরভ! ঠিক ধরেছ। আজ আমি অনেক খুশি। কারণ আজ তোমার ম্যাম কে আমার সামনে আসতেই হবে। সে আজ আমাকে দেখতে বাধ্য!”
বলেই আহমেদ একটা রহস্যময় হাসি দিল।সৌরভ কিছু না বুঝে শুধু তাকিয়ে রইল!
<<<<<<<<<<<<>>>>>>>>>>>>>
হুড়মুড় করে রোজার ঘরে ঢুকতে গিয়ে ঠাশ করে মাথায় জোরে একটা বারি খেলো অহনা। বিরক্তিসূচক শব্দ করে উঠতে গেলে সামনে রিয়াদ কে দেখে চুপসে গেলো সে।মিনমিন করে বললো,
“সরি রে, আমি দেখতে পাইনি!”
রিয়াদ ভ্রু কুঁচকে বললো,
” এভাবে রকেটের গতিতে আসছিলি কেন? ম্যাম কাজ করছে তো!”
অহনা মাথা ঘষতে ঘষতে তাড়াহুড়ো করে বলল,
” আর বলিস না রে ! একটা সেই খবর পাইছি, যদিও খবর টা বাসি! তাও এখনই ম্যাম কে জানানো টা খুব দরকার।এই কারণে এক্সাইটেমেনট ধরে রাখতে পারিনি!”
” কি খবর? আমিও একটু শুনি।”
“ভেতরে চল,,, ম্যাম এর সামনেই বলছি!”
দুজন মিলে একসাথে ভেতরে আসার পর অহনা আস্তে করে রোজা কে ডেকে বললো,
” ম্যাম, একটা খবর আছে!”
রোজা সোফায় বসে কাজ করছিলো, অহনার কথা শুনে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,
” কি খবর? বলো”
” ম্যাম, আসলে জাভেদ রায়ান এর দেশে ফিরে আসার কারণ টা মনে হয় পেয়ে গিয়েছি!”
রোজা ভ্রু কুঁচকে বললো,
” মানে?”
” ম্যাম, গত সপ্তাহে জাভেদ রায়ান এর মিরপুরের ২১ টা ফ্যাক্টরীতে আগুন লেগে গিয়েছিলো! আগুন এর উৎস কেও জানেনা। এছাড়া উনার ধানমন্ডি এর বাড়িতেও কেও আগুন দিয়েছিলো। অনেক টাকা লোকসান হয়ে গেছে ম্যাম। প্রায় ৬৭ কোটি টাকার মতো হবে। আর আমার মনে হয় এই কারণেই হয়তো ও দেশে ফিরেছে। যতই হোক, টাকা সম্পর্কে সে তো আবার অনেক সিরিয়াস। ”
রোজা মাথা নেড়ে বললো,
“মনে হয় না অহনা, আমি সিউর ও এই কারণেই তাহলে দেশে ফিরেছে। কিন্তু তোমরা এই খবর আগে কেনো জানতে পারোনি? আমিতো তোমাদের খোঁজ রাখতে বলেছিলাম।”
রিয়াদ আমতা আমতা করে বললো,
“ম্যাম আমরা আসলে কেস গুলো নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম। আর অফিসিয়াল অনেক কাজ ছিল। আবার ওইদিকে ওই শা’লা টাকলাটা,,, না মানে এসআই টা খুব জালাচ্ছিলো! এসব ব্যস্ততার মধ্যে এই কারণে…………….”
রোজা হাত উঠিয়ে তাকে থামিয়ে দিলো। রিয়াদও দমে গেল। সে তো জানেই রোজা এসব অযুহাত পছন্দ করে না।
অহনা আবার বলে উঠলো,
“ম্যাম, আমার মনে হচ্ছে কেও ইচ্ছে করে এই কাজ করেছে! নাহলে জাভেদ রায়ান এতটাও কেয়ারলেস হবে বলে মনে হয় না! ”
রোজা কিছু বললো না। তার মাথায় এখন অন্য এক চিন্তা ঘুরছে। আগুন লাগার বিষয়টা তার কাছে খুব ঘোলাটে লাগছে। রোজা কে এভাবে মগ্ন দেখে রিয়াদ আর অহনা একে অপরের দিকে চাওয়া চাওয়িই করলো। জাভেদ রায়ান এর খোঁজ না রাখার কারনে তারা কি শাস্তি পাবে নাকি আবার! একটু পর নাহিদ ও নূরা এসে হাজির হলো তাঁদের মাঝে। নূরা বললো,
” ম্যাম, গাড়ি বের করেছি। আমরা এখনই বের হতে পারি। ”
নূরার কথা শুনে রিয়াদ বললো,
” গাড়ি বের করা মানে,,,,,ম্যাম কোথাও যাবেন নাকি?
রোজা ফোন হাতে নিয়ে বললো,
” হুম, একটু থানা থেকে ঘুরে আসি,, আর তোমাদের ওই টাকলা টাকে একটু টাইট দিয়ে আসি। ওদিকের কাজ গুলা ঠিক মতো হচ্ছে কিনা সেটাও তো জানতে হবে। আর আমার নিজেরও কিছু কাজ আছে। ”
রোজার মুখে এসআই কে টাকলা বলা শুনে রিয়াদ মুচকি হাসলো।
অহনা বললো,
” ম্যাম আমিও যাই? ”
রোজা বললো,
” হুম, তুমি,নূরা আর নাহিদ আমার সাথে চলো। আর রিয়াদ তুমি পেন্ডিং কেস গুলোর কাজ শুরু করো। আগামী ৭ দিনের মধ্যে অন্তত একটা কেস ক্লোস করা চাই। ”
<<<<<<<<<<<<<<<>>>>>>>>>>>>>>>
বিশাল স্টেডিয়াম ভর্তি হাজারো দর্শক উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছে আহমেদের আগমনের জন্য। স্টেজের উপরে ঝুলছে রঙিন আলো। একবারে নিরব স্টেজ, কিন্তু দর্শকের গর্জন ক্রমশ বাড়ছে। তাই একসাথে ধ্বনি তুলতে থাকে, ” আহমেদ! আহমেদ!”
নির্দিষ্ট সময়ের কিছু আগে স্টেজের আলো ধীরে ধীরে কমে আসে। এক মিষ্টি সুর বাজতে শুরু করে, এবং সেই সুরের সাথে মিশে যায় দর্শকদের উত্তেজনা। হঠাৎই স্টেজের মাঝখানে একটা আলোর ঝলকানি হয়, এবং ধোঁয়ার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে আহমেদ । তার গায়ে চকচকে কালো জ্যাকেট, চোখে সূর্যগ্লাস, মাইক্রোফোন হাতে নেয়ার সাথে সাথেই দর্শকের চিৎকারের তীব্রতা দ্বিগুণ হয়ে যায়।
অন্যদিকে, শহরের রাস্তাগুলো জমজমাট। রাস্তায় গাড়ির দীর্ঘ লাইন, ভক্তদের তাড়া, আর যানজট। রোজা বিরক্তকর মুখ নিয়ে গাড়িতে বসে ফোন স্ক্রোল করচ্ছে। সেই বিশ মিনিট ধরে ট্রাফিক জ্যামে আটকে আছে। জ্যামে আটকে থাকলেও সে বিরক্ত বোধ করত না।কিন্তু সে তখনই বিরক্তবোধ করা শুরু করেছে যখন সে জানতে পেরেছে এই জ্যামের কারণ হলো সাদ আহমেদ রহমানের কনসার্ট!!! রোজা বিরবির করে বলে উঠলো,
” এই লোকের জন্য আমার সবকিছুতে দেরি হয়। এ লোকের জন্যই আমার প্রত্যেক কাজে এভাবে বাঁধা পড়ে।”
এদিকে নূরার মনটা খুসখুস করছে। সে আহমেদের অনেক বড় ফ্যান।এভাবে আহমেদের কনসার্ট শুনতে পাচ্ছে। কিন্তু সেই কনসার্টে অংশগ্রহণ করতে পারছে না ভেবে তার মনটা ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে! গাড়ির লুকিং গ্লাস থেকে একবার সে রোজা কে দেখে নেয় আর মনে মনে ভাবে,
” ম্যাম যদি না থাকতো তাহলে আমি দৌড়ে কনসার্টে চলে যেতাম!”
রোজা সঠিক সময় পৌঁছাতে চায়, কিন্তু যানজটের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। তার মেজাজ খারাপ হচ্ছে আরেকটা কারণে! এই গাড়িতে বসেই সে আহমেদের কন্ঠ শুনতে পাচ্ছে। ক্ষুব্ধ মনে সে মনে মনে আহমেদের দিকে তাকিয়ে ইচ্ছে মতো গা’লা’গা’লি করে। কিছুক্ষণ পর আর সহ্য করতে না পেরে রোজা গাড়ি থেকে থেকে নেমে পড়ে। রোজাকে নামতে দেখে নূরা ও অহনা একে অপরের দিকে তাকায়। নাহিদ বলে ওঠে,
“ম্যাম নেমে পড়লেন যে!”
রোজা বলল,
” আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি। তোমরা একটু কনসার্ট দেখে এসো যাও। এভাবে ট্রাফিক জ্যামে আটকে থেকে লাভ নেই। তার থেকে বরং কনসার্ট টা ইনজয় করে আসো।”
রোজার কথা শুনে অহনার মুখটা একদম হাঁ হয়ে যায়। এটা কিভাবে সম্ভব? সে কি স্বপ্ন দেখছে? রোজার এই কথা বলতে পারছে? অহনার এমন তাকানো দেখে রোজা সিরিয়াস কণ্ঠে বলে ওঠে,
” আমি তোমাদেরকে যেতে বলেছি। আমি যাব না। তাছাড়া নুরা তো ওই গায়ককে পছন্দ করে। যাও ইনজয় করে আসো। আর এমনিতেও এই জ্যামের মধ্যে আমি থানায় এখন যেতে পারবো না।”
নূরা উৎফুল্লে লাফিয়ে ওঠে হুরমুর করে গাড়ি থেকে বের হয়ে রোজাকে বলে,
“থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাম। থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ!”
অহনা একটু আমতা আমতা করে বলে,
” ম্যাম আপনি কিভাবে জানলেন যে নূরার,,,,,”
কথা শেষ হওয়ার আগে রোজা বলে উঠলো,
” তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছ অহনা যে আমার গ্রুপে কোনো মেম্বারকে নেওয়ার আগে বা নেওয়ার পরে হলেও আমি তার সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নিই!”
নুরা দাঁত দিয়ে জিভ কেটে বলল,
“ম্যাম আসলে আমি না উনার অনেক বড় ফ্যান।আর উনি তো কোনো ক্রিমিনাল না! ওরা সবাই আমাকে বলেছিল আপনি নাকি ওনাকে পছন্দ করেন না। এই কারণে আমি আপনাকে কিছু বলিনি।”
রোজা মুচকি হেসে বলল,
“যাও তোমরা। আমি এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছি। ”
নাহিদ বলে উঠলো,
” ম্যাম আপনিও চলুন না! গান শুধু শুনবো!”
রোজা ভ্রু কুচকে তাকালো। নাহিদ আবারো বলল,
“ম্যাম আপনি শুধু গান শুনবেন। ওই গায়কের দিকে তাকানোর দরকার নেই তো।”
অহনাও সহমত পোষণ করল।অনেক জোরজবরদস্তি করে সবাই মিলে রোজা কেও নিয়ে গেল কনসার্টের দিকে।
<<<<<<<<<<<<<<<>>>>>>>>>>>>>>
আহমেদ গিটার হাতে নিয়ে ব্যান্ড দের ইশারা করল। শুরু হলো মিউজিক,,,,,,,,,
Milne hai mujhse aa
Phir jaane kyun tanha
mod pe hai laayi aashique
O.. khud se hai ya Khuda se
Iss pal meri ladaai
Kis mod pe hai laayi aashiqui
O o…
Aashiqui baazi hai taash ki
Toot.te bante vishwaas ki
O.. Milne hai mujhse aayi
Phir jaane kyun tanhaai
Kis mod pe hai laayi aashiqui
গানের প্রতিটি লাইনে তার সুরের জাদু দর্শকদের হৃদয় স্পর্শ করছে। হাজার হাজার হাত উঁচু হয়ে তাকে স্বাগত জানাচ্ছে, ফোনের ফ্ল্যাশগুলো একসাথে জ্বলতে শুরু করে যেন আকাশের তারাগুলো মর্ত্যে নেমে এসেছে। দর্শকরা করতালিতে মেতে ওঠে। চারিদিকে একবার চোখ বুলিয়ে আহমেদ আবারো গাইতে শুরু করলো।
Jaane kyun main sochta hoon
Khaali sa main, ik raasta hoon
Tune mujhe kahin kho diya hai
Yaa main kahin khud laapata hoon
Aa dhoond le tu phir mujhe
Kasamein bhi doon toh kya tujhe…
Aashiqui baazi hai taash ki
Toot.te bante vishwaas ki
O.. Milne hai mujhse aayi..
Phir jaane kyun tanhaai
Kis mod pe hai laayi aashiqui
এর মধ্যেই রোজাকে নিয়ে হাজির হয় নুরা,নাহিদ এবং অহনা! নূরা তো এসেই চিল্লানো শুরু করে দেয়!! অহনা এবং নাহিদও খুব খুশি! তাদের কাছেও আহমেদের গান অনেক ভালো লাগে। কিন্তু রোজার ভয়ে তারা কখনো স্বীকার করে না। রোজা না চাইতেও একবার তাকায় আহমেদের দিকে! আহমেদ অবশেষে খুঁজে পায় তার গন্তব্য! কনসার্টে এত ভিড়ের মধ্যেও আহমেদের চোখ জোড়া যাকে খুঁজছিল,তাকে পেয়ে গিয়ে আহমেদ মুচকি হাসে। রোজা চোখ সরিয়ে নেয়। আহমেদ খুব অমায়িকভাবে হেসে আবারো গিটারে হাত দিয়ে রোজার দিকে তাকিয়েই গাইতে শুরু করে…………..
Toota hua saaz hoon main
Khud se hi naaraz hoon main
Seene mein jo kahin pe dabi hai
Aisi koi aawaaz hoon main
Sun le mujhe tu bin kahe..
Kab tak khaamoshi dil sahe..
Aashiqui baazi hai taash ki
Toot.te bante vishwaas ki (x2)
O milne hai mujhse aayi
Phir jaane kyun tanhaai
Kis mod pe hai laayi aashiqui
O Khud se hai ya Khuda se
Iss pal meri ladaai
Kis mod pe hai laayi aashiqui
O o ho…
Aashiqui baazi hai taash ki
Toot.te bante vishwaas ki
রোজা একটা শুকনো ঢোক গিলে। যতই হোক, এই মানুষটাকে সে ভালোবেসেছিল! বেসেছিল বললে ভুল হবে এখনো ভালোবাসে! এখানে থাকাটা আর ঠিক হবে না! রোজা একটু অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে সবাইকে বলে,
” চলো যাই। হয়েছে! আর গান শুনতে লাগবেনা।দেরি হয়ে যাচ্ছে। থানায় চলো।”
নুরা মুখটা বাংলা পাঁচের মত করে বলল,
” ম্যাম আর একটু! ”
রোজা শক্ত দৃষ্টিতে তাকায়। সবাই মিইয়ে যায়,আর বলে,
” আচ্ছা ঠিক আছে চলুন।”
রোজা আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে হনহন করে ভীড় থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে,যা দেখে আহমেদ মুচকি হেসে মনে মনে বলে,
” তুমি এখনো একটুকুও বদলাওনি মাই কুইন! তুমি এখনো আগের মতই আছো! এখনো তুমি আমার প্রতি দুর্বল! এখনো তুমি আমার সামনে বেশিক্ষণ থাকতে পারো না! এখনো তুমি আমার চোখের দিকে তাকাতে ভয় পাও! ”
রোজা এবং বাকিদের প্রস্থানের পর আহমেদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
<<<<<<<<<<<<<<>>>>>>>>>>>>
থানায় এসআই এর সামনে চেয়ারে বসে হাতে কফির কাপ নিয়ে রয়েছে রোজা। এসআই তৃতীয়বারের মতো রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম মুছল।সে খুব ভালোই ভয়ে আছে। রোজা কফির কাপে চুমুক দিয়ে আবারো বলল,
” আপনারা কী করছেন? মানে ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগল!জাভেদ রায়ান দেশে আসলো! সে এখন দেশেই আছে, অথচ আপনারা কিছুই জানেন না।এখন আবার বলছেন, দেশের কোন জায়গায় সে আছে সেটাও আপনারা জানেন না! মানে তার কোন তথ্য আপনারা আমাকে দিতে পারছেন না। দুই সপ্তাহ ধরে কী করছেন তাহলে?”
এসআই কপালের ঘাম মুছে আমতা আমতা করে বলল,
“ম্যাম, আসলে আমরা কেস গুলো নিয়ে একটু ব্যস্ততায় ছিলাম তো,,,”
রোজা বাঁকা হেসে বলল,
” কেস নিয়ে ব্যস্ততা! কাজ! আচ্ছা বুঝলাম! কিন্তু একজন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কে ধরা আপনাদের কাজ নয়! আপনাদের এসব কেস সল্ভ করতে বেশিদিন লাগার কথা নয়! আপনারা একজন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কে ছেড়ে দিয়ে এসব ছোটখাটো কেস নিয়ে পড়ে আছেন! আবার সেটাকে অজুহাত বানিয়ে আমাকে বলছেন। নাইস! ওকে ফাইন! আপনাকে এখন আর এসব বিষয় দেখতে লাগবেনা। আপনারা তাহলে কেস নিয়ে থাকুন। জাভেদ রায়ান কে আমি দেখছি। ”
রোজা কফির কাপটা টেবিলে রেখে উঠে দাঁড়ালো। থানা থেকে বের হওয়ার আগে সে আবারো এসআই এর দিকে তাকিয়ে বলে,
“যেহেতু আপনারা জাভেদ রায়ান এর কেসটা দেখছেন না, সেহেতু বাকি কেসগুলা যাতে যথাযথভাবে ক্লোজ হয় এই বিষয়ে দায়িত্বটাও আপনার। কোনো কেস যদি পেন্ডিং থাকে অথবা কোনো কেস যদি সফলভাবে ক্লোজ না হয়, তাহলে কী করতে হবে সেটা আমার জানা আছে,,,, ভালো থাকবেন! আসছি! ”
বলেই রোজা এবং বাকিরা হনহন করে থানা থেকে বেরিয়ে পড়ল। তারা বেরিয়ে পড়ার পর এসআই একটা সস্তির শ্বাস ফেলল!
চলবে,,,,,,,,,,,,,
নোট : পাঠক মহল🫶 এখন এ গল্পটা একটু ঘোলাটে মনে হলেও খুব তাড়াতাড়ি সমস্ত জট খুলে যাবে🧡আসলে দুই তিন পর্বে কোনো গল্পের থ্রিলার বোঝা যায় না😊 খুব তাড়াতাড়ি সমস্ত জট খুলে দেব😊🫶 আর এত দেরিতে পর্ব দেয়ার জন্য অনেক দুঃখিত🤧🥹🫶