#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
Part_40
#Writer_NOVA
বাইক থেকে নামতেই আমার বড় চাচাতো বোনের তিন মেয়ে অনন্যা, অর্থি, ঐশি ও ইভা দৌড়ে আমাদের নিতে আসলো। চারটা আমাকে জড়িয়ে ধরে চ্যাপ্টা বানিয়ে ফেলছে। আমি ওদের থেকে কোনরকম নিজেকে ছাড়িয়ে বললাম,
— খালামণিরারে আমাকে একটু নিঃশ্বাস নিতে দে।আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরলে আমি শ্বাস আটকিয়ে নিচে পরে থাকবো।
অনন্যা মুখ গোমড়া করে বললো,
— এত দেরী! তোমাকে কল করতে করতে আমি হয়রান হয়ে গেলাম। আমি কিছু সময় পরপর ইভাকে জিজ্ঞেস করতাছি খালামণি কখন আসবো? কতখন পর পর রাস্তায় এসে দাড়ায় থাকি।তোমারা এত দেরী করে আসবে তা জানলে তোমাদের জন্য বরণডালা নিয়া আসতাম। তোমার জন্য আমরা কেউ দুপুরের ভাত খাই নাই। একসাথে খাবো বলে।
আমি ওর গাল দুটো টেনে এক হাতে জড়িয়ে ধরে বললাম,
— আহারে, আমার বড় কাকিটা রে। মেয়ের জন্য কত চিন্তা।
অর্থি গাল ফুলিয়ে বললো,
— হু বড় আপিরেই আদর করে। আমরা তো কেউ না। তোমার জন্য আমরা কখন থেকে অপেক্ষা করতাছি।কিন্তু আমাকে কেউ দেখেয় না।
আমি এদের কান্ড দেখে মিটমিট করে হাসলাম।তারপরে অর্থির এক হাত টেনে আমার পাশে দাঁড় করালাম,
— থাক খালামণি রাগ কইরো না। তুমি আমার কিউটি একটা খালামণি। এখন রাগ করলে কিন্তু আবার চলে যাবো।
অর্থি চেচিয়ে বললো,
— এই না। এক সপ্তাহের আগে কোথাও যাইবা না।আমরা যতদিন থাকবো তুমি ততদিন থাকবা।
ঐশি আমার এক হাত ওর দুই হাতের মুঠোয় নিয়ে আমাকে বললো,
— কেমন আছো খালামণি?
— আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুমি?
— আমিও ভালো। তোমার জন্য আমরা কখন থেকে বসে আছি। বারবার ইভা খালামণিকে জিজ্ঞেস করি নোভা খালামণি কখন আসবো। আর তোমরা কত দেরী করে আসলা।
— আমরা ইচ্ছা করে দেরী করি নাই। সারা রাস্তা যাম। এতো যামে আগে কখনও পরিনি। সকাল দশটায় রওনা দিয়ে এই চারটা বাজে আসলাম।
— খালামণি ঐ আঙ্কেলটা কে?
— তোমার তায়াং মামার বন্ধু।
অনন্যা বললো,
— আম্মু আর মামার সাথে যে শপিং করছিলো সে?
ইভা আমার থেকে সাইড ব্যাগটা নিয়ে অনন্যাকে উত্তর দিলো।
— হুম এনাজ ভাইয়াই ছিলো শপিং-এর সময়।
অর্থি বললো,
— উনি কি শাড়ি চয়েজ করে দিছে?
অনন্যা বললো,
— হুম সেই শাড়ি চয়েজ করছে। উনার চয়েজ খুব সুন্দর। বিয়ের শাড়িটা বাসার সবাই পছন্দ করছে।
এনাজ বাইক নিয়ে আমাদের কিছুটা পেছনে আসছে।আমি ইভাকে বললাম,
— ইভা,যা উনার থেকে মিষ্টির প্যাকেটগুলা নিয়ে আয়।
ইভা ও অর্থি একসাথে দৌড় দিলো পেছন দিকে। এনাজের সাথে কুশল বিনিময় করে তার থেকে জোর করে প্যাকেটগুলো নিয়ে এলো। আমাদের পাশের বাসায় আসার পর আমি এনাজকে বললাম,
— আপনি আপাতত বাইকটা এখানে তালা মেরে রাখেন। বাসার অবস্থা বুঝে একটু পর এসে নিয়ে যাবেন।
এনাজ মাথা হেলিয়ে সম্মতি প্রকাশ করলো। বাইক রেখে আমাদের সাথে সাথে চলতে লাগলো। এর মধ্যে অনন্যা,অর্থি,ঐশী তিন বোনই এনাজের সাথে কথা বলেছে। এরা আবার খুব সহজে সবার সাথে মিশতে পারে। ঐশীতো ইতিমধ্যে ভাব জমিয়ে ফেলেছে। এনাজের হাত ধরে হাটছে। এবার ছোট করে ওদের তিন বোনের পরিচয় দিয়ে দেই। আমার বড় চাচ্চুর চার ছেলে-মেয়ে। তিন ছেলে আর এক মেয়ে। মেয়ের নাম শাহীনুর।এই আপু বংশের বড় মেয়ে। আর ভাই-বোনের মধ্যে উনি ২য়। তার তিন মেয়ে এই অনন্যা, অর্থি ও ঐশী। অনন্যা এবার কলেজে উঠেছে। অর্থি ক্লাশ 10-এ। ঐশী ক্লাশ ফাইভে। ওদের আপন খালামণি নেই বলে আমি ও ইভা ওদের সব। এই বাসায় আসলে আমাদের দুইজনকে ছাড়া কোন কাজ করবে না। যার বিয়ে সে হলো ওদের ছোট মামা।
বাড়িতে ঢুকতেই আমাদের নিয়ে হৈচৈ পরে গেল। তাদের কান্ড দেখে মনে হচ্ছে ছয় মাস পর আমি শ্বশুর বাড়ি থেকে জামাই নিয়ে বাবার বাড়ি এসেছি।বাসায় এখন আমাদের নিয়ে হুলস্থুল। সবার সাথে কুশল বিনিময় করে রুমে ঢুকতে পারলাম। আমাদের উঠোনেই L আকৃতির করে প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে। মানুষ আজ খুব বেশি নয়। আমার এক ফুপি, তার মেয়ে, মেয়ের জামাই, বাচ্চারা ছাড়া আর কেউ আসেনি। আম্মু কাজ ছেড়ে উঠে আসলো। আমি ফ্যান ছেড়ে দিয়ে রুমের ফ্লোরে হাত-পা ছড়িয়ে বসে পরলাম। এনাজ খাটের ওপর চার হাত-পা চারদিকে দিয়ে শুয়ে পরলো। বেচারার ওপর দিয়ে ঝড়ই গেছে। আম্মু ওড়নায় হাত মুছতে মুছতে রুমে ঢুকে আমাকে জিজ্ঞেস করলো,
— আসতে কোন অসুবিধা হয়নি তো?
— একটুও না। বাইকে আসায় আমি হেব্বি আনন্দে আসছি। খালমণিরা আসে নাই?
— এই প্রশ্ন আমি তোকে করতাম। আধা ঘণ্টা আগে কল দিছিলাম তখন বললো বাবু বাজার ব্রীজে যামে আটকে আছে। এখনও কি যামে আটকে আছে কিনা কে জানে?
— আমরা বাইকে আসায় চিপাচাপা দিয়ে জলদী এসে পরেছি।
এনাজ উঠে বসে আম্মুকে সালাম দিলো।
— আসসালামু আলাইকুম আন্টি।
— ওয়া লাইকুমুস সালাম। কেমন আছো বাবা?
— আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি?
— আলহামদুলিল্লাহ। ফ্রেশ হয়ে নাও। আমি খাবারের ব্যবস্থা করি।
— এত ব্যস্ত হতে হবে না। তায়াং-এর খালামণির বাসা মানে আমারো খালামণির বাসা। যা করতে হবে নিজের হাতেই করতে পারবো।
— আচ্ছা তা করো। এখন যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো। আমি টেবিলে খাবার দিতে বলি।
— গোসল করবো আন্টি। নয়তো অস্বস্তি লাগবে।
— তাহলে এই ওয়াসরুমে গোসল করে ফেলো। বিকেল হয়ে গেছে আরো দেরী করলে দুপুরের ও রাতের খাবার একসাথে খেতে হবে।(আমার দিকে তাকিয়ে) বোরখা খুলিস না কেন? বোরখা খুলে ফ্রেশ হো।
আমি আম্মুকে বললাম,
— হ্যাঁ হচ্ছি। একটু জিরিয়ে নেই।
বোরখা খুলে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। এনাজ গোসলে ঢুকছে। আমি মোবাইল বের করে ফেসবুক ওন করে খাটে বসতেই অনন্যা এসে বললো,
— এখন আবার মোবাইল নিয়া কেন বসছো?খেতে চলো। আজকে কি আর খাবে না? তোমার জন্য আমরা বসে আছি। পেটে ইদুর দৌড়াইতাছে।
আমি মোবাইল রেখে বললাম,
— মেহমান রেখে একা একা কি করে খাবো? বিষয়টা কি ভালো দেখায়?
—গোসল থেকে বের হয়নি?
— না।
— তাকে কি বলবো? আঙ্কেল নাকি মামা?
— মামা বলবি। আঙ্কেল কেন বলবি?
— ছোট মামা কিন্তু আমায় সব বলছে।
— কি বলছে?
— এই আঙ্কেল তোমাকে পছন্দ করে।
আমি চোখ দুটো রসগোল্লা বানিয়ে ওকে বললাম,
— কার থেকে জানলি?
— বললাম না ছোট মামা বলছে।
— ছোট ভাইয়া কার থেকে জানলো?
— মামাকে তো আঙ্কেল বলছে।
ওর কথা শুনে আমি আরেকদফা অবাক। এনাজ এই কথা ছোট ভাইয়াকেও বলে দিছে। আল্লাহ জানে এবার কি হয়? অনন্যাকে ওর মা ডাক দিতেই ও বের হয়ে গেলো। আমি চিন্তায় পরে গেলাম। যদিও ছোট ভাইয়া ও অনন্যা কাউকে এসব বিষয় বলবে না। তবুও একটা কিন্তু রয়ে যায়।
💖💖💖
ছোট ভাইয়ার নাম আব্দুস সামাদ। তারই বিয়ে। একে আমাদের বাড়ির সবাই ভয় পায়।ভাইয়া আবার আমার আব্বুকে ভয় পায়। আব্বুকে শুধু ভাইয়া নয় আমার চাচাতো সব ভাই-বোন ভয় পায়। আসলে আব্বুকে দেখতে খুব ঠান্ডা ও নরম মনের মানুষ মনে হবে। কিন্তু তার রাগ বাড়ির সবার থেকে বেশি। তাই তাকে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আব্বুকে আমাদের দুই বোনের থেকে চাচাতো ভাই-বোনের ভয় পাওয়া দেখলে মাঝেমধ্যে আমার ভীষণ হাসি পায়।কিন্তু ভাইয়া আবার অন্যরকম। তার মাথা সবসময় গরম থাকে।যেদিন ভাইয়া রেগে যাবে সেদিন বাড়িতে ভাংচুর অবশ্যই হবে। তবে আমি মাঝে মাঝে আব্বুকে ভয় পেলেও ভাইয়াকে একটুও ভয় পাই না। ভাইয়া আমার থেকে ১২ বছরের বড়। কিন্তু আমাদের বন্ডিং দেখলে বলবে পিঠাপিঠি ভাই-বোন। ওকে আমি তুই করে বললেও সবার সামনে সবসময় বলি না। আম্মু জানতে পারলে বকা দেয়।যার কারণে লুকিয়ে তুই বলতে হয়। তায়াং ভাইয়াকে তুই করে বলাও আম্মু পছন্দ করে না। তাই আম্মুর সামনে আমি দুজনকে আপনি বলে সম্বোধন করি। আর আম্মুর আড়ালে তুই।
— এই যে মিস টিডি পোকা হারালে কোথায়?
— কোথাও না।
— তিন মিনিট ধরে তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু তোমার কোন রিয়েকশন নেই।
— আমি খেয়াল করিনি।
— তাতো দেখতে পাচ্ছি। তায়াং,আন্টি,তন্বী আসছে?
— না এখনো আসেনি।
— তায়াং আজ অনেক রাগবে। সকালে এমনি রেগে ছিলো। যামে পরে আজ ওর মেজাজ হাই লেভেলের চড়া হবে।
— হুম তাতো হবেই।
— চলো খেতে যাই। নাকি আমাকে রেখে পেটভোজন করে এসেছে?
— ইস, ওমন নই আমি। আপনার জন্য বসে আছি। আর আমার জন্য আমার সব ভাগ্নিরা বসে আছে।
— তোমার ভাগ্নিগুলো ভীষণ মিশুক। ছোট টা তো আমার হাত ছাড়ছিলোই না।
— ওরা এরকমি। সবার সাথে খুব সহজে মিশে যেতে পারে।
— ওদের নাম কি?
— বড়জনের নাম অনন্যা, আমরা ওকে অন্যা বলে ডাকি। মেজু অর্থি, ছোট ঐশী।
— খুব সুন্দর নাম।
এনাজ তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে লাগলো। তখুনি রুমে শাহীনুর আপু প্রবেশ করে আমাকে বকা আরম্ভ করলো,
— কি রে নোভা এখনো খেতে আসিস না কেন? মেহমান নিয়ে আসছিস আর না খাইয়ে রাখবি? একটু পর মাগরিবের আজান দিবে। আর কখন খাবি? রাতের রান্না বসিয়ে দিলে কি খাবারের ভেজাল করতে পারবো?
— আমার কি দোষ? উনি তো গোসলে গিয়েছিলো। তাকে ছাড়া কি খেতে পারি? মেহমান রেখে খেলে কেমন দেখায়?
শাহীনুর আপু আমার দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে এনাজের দিকে তাকালো। এনাজের সাথে কুশল বিনিময় সেরে নিয়ে বললো,
— তুমি তাহলে আসছো ভাই? আমি তো ভাবছিলাম আসবা না। তুমি আসছো তাতে অনেক খুশি হইছি। সামাদকে জিজ্ঞেস করলাম তোমাকে কল দিছে কিনা। ও বললো হ্যাঁ দিয়েছে। তুমি না আসলে সত্যি আমি অনেক রাগ করতাম।
এনাজ মাথার পেছনে চুলকে লাজুক হেসে বললো,
— এতবার করে বলছেন না আসতে পারি? ছোট ভাইয়ের কাছে বড় বোন দাওয়াত রক্ষা করার কথা বলেছে। ছোট ভাই সেটা অমান্য করলে তো বড় বোনকে অপমান করা হয়।
— চলো তাড়াতাড়ি খেতে আসো। আন্টিরাতো এখনো আসলো না।নোভা আয় জলদী।
আপু চলে গেল। বলে রাখা ভালো শাহীনুর আপু ও ছোট ভাইয়া ঢাকায় গিয়েছিল শপিং করতে। তখুনি এনাজ ও তায়াং ভাইয়া ছিলো তাদের সাথে। আমাদের পরিবারটা এমনি বেশ বড়। যদিও সবাই ভিন্ন খায়। তবে কোন অনুষ্ঠান হলে সবাই একসাথে খাওয়া-দাওয়া করি। এনাজ বললো,
— তোমাদের পরিবারের সবাই খুব ভালো। আমাকে কত সহজে সবাই আপন করে নিয়েছে। আমার মনে হচ্ছে নিজের বাসার অনুষ্ঠানে এসেছি। খুব বড় কপাল থাকলে এরকম ফ্যামেলী পাওয়া যায়।
— তা ভুল বলেননি। আমার পরিবারের মানুষ এরকমি। আরো দুটো দিন যাক তখন আপনিও তাদের সাথে পুরোপুরি মিশে যেতে পারবেন। আমাদের বিক্রমপুরের মানুষ অনেক অতিথিপরায়ণ। অতিথি পেলে আমরা ভীষণ খুশি হই। এখান থেকে যাওয়ার পর আপনি সারাজীবন এখানকার আতিথিয়েতা মনে রাখবেন।
এনাজ শয়তানি হাসি দিয়ে এক চোখ মেরে বললো,
— এই জন্য তো এই বাড়ির মেয়েকে বিয়ে করতে চাইছি। পুরো পরিবার পেয়ে যাবো তাহলে😉।
— ইস, শখ কত!
— অনেক শখ।
— হু হয়েছে চলেন এবার। এখন না গেলে সত্যি বকা খাবো। আমার বাকি চাচাতো ভাইয়ের বউদের সাথে আপনাকে পরিচয় করে দিবো।
— ওকে চলো।
রুম থেকে বের হয়ে বাইরে এলাম। উঠানের কোণার দিকে দুটো টেবিল পাতা। সেখানে চেয়ার টেনে খেতে বসে পরলাম। আমাদের সাথে অনন্যা,অর্থি,ইভাও বসলো। ওরা এনাজের সাথে কথা বলছে। আম্মু আমাদের খাবার বেড়ে দিয়ে গেল। এনাজ খেতে খেতে আমাকে জিজ্ঞেস করলো,
— রান্না কে করেছে?
আমি ডালের বাটি থেকে ডাল প্লেটে নিয়ে বললাম,
— এতগুলো মানুষের রান্না শাহিনুর আপু একা করছে। আপু রান্নায় বেশ এক্সপার্ট। উনি একা ১০০ জন মানুষের রান্না একা করতে পারবে। উনাকে অনুষ্ঠানের সময় রান্নাঘর ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
— তাহলে তো আপু অনেক কাজের। তুমি তাহলে এতো অলস কেন?
— সব পরিবারে একটা অলস থাকেই। আর আমার পরিবারে সেই একজন আমি।
— এমনভাবে বলছো যেন মনে হচ্ছে কি বীরত্বের কাজ।
—ইয়েস।
— সব রান্না কি মাটির চুলোয় করেছে?
— জ্বি হ্যাঁ। গ্যাস বেশি হয়ে যাইনি আমাদের।
— আপুর রান্না অনেক মজা।
— যে খাবে সেই বলবে। আপু অনেক ভালো রান্না পারে।
— তুমি মাটির চুলোয় রান্না করতে পারো?
— এটা কি এমন কঠিন কাজ যে পারবো না?
— তুমি সত্যি পারো😳?
— ক্লাশ নাইন থেকে মাটির চুলোয় রান্না করতে পারি। এটা আমার কাছে কোন ব্যাপারই মনে হয় না।
— গ্যাস নেই এইখানে?
— প্রত্যেকের ঘরে ঘরে আছে। তবে গ্রামের মানুষ মাটির চুলোয় রান্না করতে বেশি পছন্দ করে। খরচ কম আবার রান্নাও খুব দ্রুত হয়।
— মাটির চুলোর রান্না ভীষণ মজা।
— হ্যাঁ।
আমরা দুজন ফিসফিস করে কথা বলছি। অর্থি আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলো,
— তোমরা দুজন কি কথা বলো?
এনাজ দুষ্টুমির সুরে বললো,
— বলতেছি ভাগ্নিগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে এবার বিয়ে দিতে হবে।
অর্থি মুখ বাঁকিয়ে বললো,
— এ্যাহ না। ছোটমামার পর সিরিয়ালে নোভা খালামণি। তারপর ইভা। আমাদের বিয়ে দেরী আছে।
এনাজ সবার সাথে কথা বলে খেতে লাগলো। আমি কোন কথা না বলে চুপচাপ খাওয়ায় মনোযোগ দিলাম। কিছু সময় পর খালামণি, তায়াং ভাইয়া, তন্বী চলে এলো। একেকজনের চেহারার অবস্থা কাহিল। তায়াং ভাইয়া অনেক রেগে আছে। আমার দিকে রেগে একবার তাকিয়ে হনহন করে আমাদের দালানে ঢুকে পরলো। আমি মুচকি হেসে শসায় কামড় দিয়ে চাবাতে লাগলাম।
তায়াং ভাইয়ার সাথে আজ সাবধানে কথা বলতে হবে। নয়তো সব রাগ আমার ওপর ঝারবে।
#চলবে
আসসালামু আলাইকুম। আজকে গল্প দিবো না বলেছিলাম তাও দিয়ে দিলাম। তবে আগামীকাল সত্যিই দিবো না।আরেকটা কথা,বিয়ে বাড়ির ঘটনাগুলো অনেক পর্বের হবে। প্লিজ কেউ বিরক্ত হয়েন না। গল্পের ৪০ পর্ব হয়ে গেলো। এখনো আরো কত কাহিনি রয়ে গেছে 😵। আল্লাহ মালুম এই গল্প কবে শেষ হবে।শেষ পর্যন্ত আমার সাথে থাকবেন তো আপনারা🥺?