রাজকন্যা হূরিয়া পর্ব-৮

0
352

#রাজকন্যা_হূরিয়া🌸🥀
#লেখা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
[৮]

রাজকুমার ফিরলো ঠিক পাঁচদিনের মাথায়। এসে পরিবারের সবার মাঝে দাঁড়িয়ে বিজয়ের হাসি দিয়ে ঘোষণা করলো সে এই যুদ্ধে জয়লাভ করে ফিরেছে। সে শত্রুপক্ষকে হারিয়ে নিজের রাজ্যকে আরও একবার শত্রু মুক্ত করতে পেরেছে। সবাই ভীষণ আনন্দে হৈহৈ করে উঠলো। ‘রাজকুমার সাদ্দাতের জয়’ নামে প্রতিধ্বনি করতে লাগলো। রাজকুমারও এতে সন্তুষ্ট হলো। সন্তুষ্ট মনে নিজের কক্ষের দিকে রওনা হলো। রাজকন্যা এতোদিনে অনেক উপায়েই তার খোঁজ জোগাড় করতে চেয়েছে। তার আপ্রাণ চেষ্টা শেষ পর্যন্ত গিয়ে কোনো না কোনো ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এর সঠিক কারন কি সে জানতে পারেনি। কেউ তার পথে বারবার বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজকুমারের খবর নিতে বারবার বাঁধা দিয়েছে। এমনকি সেই জয়ী হয়েছে। হেরে গেছে রাজকন্যা। সে কোনোমতেই রাজকুমারের খোঁজ আনতে পারেনি।

“রাজকন্যা..”

বড় উৎফুল্ল হয়ে রাজকন্যার নাম আওড়ালো রাজকুমার। এই পাঁচদিন স্রেফ দিন ছিলো না রাজকুমারের জন্য.. ছিলো অগুনিত মাস আর অগুনিত বছরের সমান। যুদ্ধ চলাকালীনও সে ভেবে গিয়েছে রাজকন্যার পবিত্র মুখ খানা। কি মনহরণী পবিত্র রূপ। যেমন রূপ তেমন সুন্দর হাসি তার। হাসে কম, তবে যখন হাসে তখন তরতাজা হয়ে ওঠে প্রকৃতি। আহা কি সুন্দর।

রাজকন্যা তার কক্ষ সংলগ্ন বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে অন্যমনস্ক হয়ে। তার মস্তিষ্ক ভোঁতা হয়ে ঝিমঝিম করছে। তার কর্ণকুহরে প্রবেশ করেনি রাজকুমারের ডাক। সে শুনতে পায়নি একদমই। রাজকুমার ধীরেধীরে এগোলো রাজকন্যার পানে। দূর থেকে তার চোখে ধরা দেয় রাজকন্যার লম্বা ঘন-কালো কেশ। যা কোমর রেখেও বহুদূর গড়িয়ে নেমেছে। সাপের মতো আঁকাবাকা তাদের চলন। যার থোকে থোকে গোলাপের বিচরন। কাটাহীন গোলাপ। যার মিষ্টি সুঘ্রাণ অনেকদূর চলে এসেছে। রাজকুমার মোহনীয় হাসলো। সে বুঝলো সে আবারও প্রেমে পড়েছে তার প্রণয়নীর। এবার আর রূপের নয় তার ঘনকালো লম্বাকেশের। চমৎকার গড়ন তাদের। মন জুড়িয়ে এলো।

উন্মুক্ত কোমরে কারোর গভীর ছোঁয়া পেয়ে আপাদমস্তক কেঁপে ওঠে রাজকন্যা। তার বুকের ভেতরে কাঁপে। অন্যমনস্ক হয়ে সে দিনদুনিয়া ছেড়ে বহুদূরে চলে গিয়েছিল। হঠাৎ এমন ধাক্কা খেয়ে বর্তমানে অবতার করতে হবে ভাবনাতেও আসেনি। ঘাড় ফিরিয়ে পেছনে দেখতে নিলেও সে পথ বন্ধ করলো মানুষটা। পিঠে ছড়িয়ে থাকা চুলগুলোর মাঝে নাক ডোবালে। গভীর ভাবে নিঃশ্বাস টানলো। আহা কি মাতাল করা গন্ধ। মাথা ঘুরিয়ে গেলো মানুষটার। পরম শান্তিতে আরেকটু গভীর হতেই কাটা ফুটলো ঠিক ওষ্ঠদ্বয়ের নীচে। কাতর কন্ঠে অস্ফুট শব্দ করে পিছিয়ে পড়লো কয়েক কদম। রাজকন্যা এবার দেখার সুযোগ পেলো তাকে। পাঁচ পাঁচ টা দিন! কম ছিলো না তার জন্য। কিভাবে দিন কেটেছে একমাত্রই সেই জানে। অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হয়েছে। চোখ জুড়িয়েছে তার শ্যামকে দেখে। তবে হঠাৎ দৃষ্টি কাঁপলো রাজকুমারের থুঁতনি দেখে।

“সে কি! কি হলো?”

বলে দ্রুত পায়ে ছুটে এলো রাজকুমারের সন্নিকটে। রাজকুমার চিনচিনে জ্বলা ভাবে হাত চেপে রেখেছে জায়গাটায়। রাজকন্যা চিন্তান্বিত মনে হাত বাড়ালো সেদিকে। রাজকুমার ওর চিন্তা দেখে প্রশান্তি পেলো যেন। ব্যাথা ভুলে হঠাৎ দু’হাতে আড়স্ত করলো রাজকন্যাকে। রাজকন্যা অবাক চৈতন্য মনে আওড়ালো,

“এই আঘাত কি করে লাগলো?”

“আপনার কাছে আসার শাস্তি!”

রাজকুমার নির্বিকার কন্ঠে আওড়ালো। রাজকন্যা লজ্জা পেলো। সেই সঙ্গে ভারী অবাকও হলো।

“কেমন করে কাটলো?”

“আপনাকে এতদিন নিজের থেকে দূরে রেখে নিজেই অতিষ্ট হয়ে পড়েছিলাম। তাই আগেপিছে কিছু না ভেবে যখন এগিয়ে গেলাম তখন আপনার সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমার পথ রোধ করেছে।”

“আমার সবচেয়ে বড় অস্ত্র?” (অবাক কন্ঠ)

“জি।”

“কি সেটা?”

“এই যে.. আপনার কেশ!”

রাজকন্যা আরও বেশি অবাক হয়। বিচলিত হয়ে পড়ে। বলে,

“সে কি করে সম্ভব?”

রাজকুমার তার হাতের বাঁধন আরও শক্ত করে। আরেকটু কাছে টেনে আনে তার প্রণয়নীকে। শীতল কন্ঠে আওড়ায়,

“জানিনা। তবে আঘাত যেতেহু করেছেন এর প্রতিক্রিয়াও আপনিই করবেন।”

রাজকন্যা আহত হলো। সে এখনও বুঝে উঠতে পারলো না রাজকুমারের এই আঘাতের সঠিক কারন! শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখলো কতক্ষণ। রাজকুমারের কথার মমার্থও ধরতে পারলোনা। হঠাৎ নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো রাজকুমারের কাটা-স্থানের ঔষধী খুঁজতে। রাজকুমার ছাড়লো না তাকে। বরং হাতের বাঁধন ধীরে ধীরে শক্ত করলো। রাজকন্যা অবাক হয়ে বলে,

“কি করছেন? ছাড়ুন আমাকে! আমি আপনার জন্য ঔষধীর ব্যবস্থা করি।”

“ঔষধীতে তো এই ঘা সেরে যাবে রাজকন্যা। কিন্তু মনের ঘা কি শুঁকাবে?”

“এ মা! কি হলো আবার মনে?”

“দেখবেন?”

“দেখবো।”

রাজকন্যা সরল মনে বলে। রাজকুমার সত্যি সত্যি দেখাতে শুরু করে তার হৃদযন্ত্রের জখম। রাজকন্যাকে ছেড়ে নিজের পোশাক খুলতে আরম্ভ করে সে। রাজকন্যা উৎসুক নয়নে তাকায়। চোখ নামায় না। তবে বারবার ভেতরে লজ্জার বান উপচে পড়ে। দৃষ্টি স্থীর রাখতে পারেনা! কাঁপে,নড়ে। ভীত হয়। এক পর্যায়ে রাজকুমারের উন্মুক্ত শরীর ভেসে ওঠে রাজকন্যার লজ্জা মিশ্রিত চাহনিতে। সুঠাম দেহ তার। পেটানো শরীর। শক্ত পেশিবহুল বাহু। লোমহীন উদার বুক। রাজকন্যা কেঁপে ওঠে। কি করছে সে? এভাবে পলকহীনভাবে রাজকুমারের উন্মুক্ত শরীরে চোখ বুলাচ্ছে কেন? রাজকুমার কি ভাবছে! রাজকন্যা চোখ নামিয়ে নেয়। তার ভীষণ লজ্জা লাগছে। রাজকুমার মিটমিট করে হাসে। শয়তানি হাসি। এক পর্যায়ে রাজকন্যার হাতটা উঠিয়ে আনে। ঠিক বুকের পা পাশে চেপে ধরে। রাজকুমারের শরীর ছুঁতেই রাজকন্যা আবারও কাঁপে। তার ভেতরে প্রবল ঝড় শুরু হয়। সে স্পষ্ট শুনতে পায় কেউ তার বুকের ভেতরে অনায়াসে ঢোল পিটিয়ে চলেছে। যার শব্দে সে অতিষ্ট হয়ে পড়ছে। সে তার হাত গুটিয়ে নিতে চায়। কিন্তু রাজকুমার তা হতে দেয়না। সে বলে,

“অনুভব করছেন?”

রাজকন্যা ঢোক গিলে। একাকার মিশ্রিত অনুভূতি নিয়ে সে রাজকুমারের দিকে তাকায়।

“আ্ আপনি ঠাট্টা করছেন আমার সাথে? আমি কিন্তু বোকা নই।”

শব্দ করে হেসে ওঠে রাজকুমার। রাজকন্যা লজ্জায় গুটিয়ে যায়। সে বুঝতে পারে রাজকুমার ইচ্ছে করে করছে এসব। যার ফলে লজ্জারা আরও জাঁতা দিয়ে ধরে তাকে। নিজেকে রাজকুমারের থেকে ছাড়িয়ে নিতে গেলেই তার অন্য হাত টাও আবদ্ধ হয় রাজকুমারের উন্মুক্ত বুকে। সে কেঁপে ওঠে আরও একদফা। লজ্জায় কথা আওড়াতে পারেনা আর। রাজকুমার তার হাত জোড়া নামিয়ে আনে রাজকন্যার উন্মুক্ত কোমরে। দু’হাতে ফের আবদ্ধ করে তাকে। রাজকন্যাকে টেনে নেয় নিজের খুব কাছে। রাজকন্যার বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করে বাজতে থাকা শব্দ অনায়াসেই টের পায় সে। অমনি শয়তানি হাসে। মুলত এই মুহুর্তে রাজকন্যাকে জ্বালানোই তার একমাত্র কাজ। রাজকন্যা ভারী নিঃশ্বাস ফেলে। যা রাজকুমারের মুখ আঁচড়ে পড়ে।

“ছ্ ছাড়ুন না।”

অতিকষ্টে মুখ খুলে রাজকন্যা। রাজকুমার হাসে। কোনো কথা বলেনা। রাজকন্যা হঠাৎ কেঁপে ওঠে। জিন্নাত কক্ষে প্রবেশ করেছে। সে অনুভব করছে জিন্নাতের অস্তিত্ব। ইশশ! জিন্নাত তাদের এই অবস্থায় দেখলে কি ভাববে! ভাবতেই আরও বেশি লজ্জা লাগছে তার। রাজকুমার ওর কাঁপন দেখে কেবল হাসেই। হঠাৎ করে বসলো অনাকাঙ্ক্ষিত এক কর্ম। রাজকন্যার কম্পিত ওষ্ঠদ্বয়ে এঁকে দিলো এক গভীর চুমু। যার সমাপ্তি কয়েক মুহুর্ত ঘটলো না। ঠিক কয়েক মিনিট গড়াতে মুক্তি পেলো সে। রাজকুমারের হঠাৎ কান্ডতে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো রাজকন্যা। স্থবির হয়ে তাকালো রাজকুমারের দিকে। রাজকন্যার এই আকস্মিক চেহারায় হাসি পেয়ে গেলো রাজকুমারের। সে তাকে আরেকটু কাছে টেনে আনলো। কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,

“শোধ নিলাম। অখুশি হননি তো?”

“প্ পাগল আপনি!”

রাজকন্যা লজ্জায় মরে যাচ্ছে। ও জিন্নাতের কথা ভাবলে আরও বেশি লজ্জায় মরছে সে। সে এখনও এখানে উপস্থিত আছে।

“হু খুব পাগল। এই রমনীর জন্য।”

ভাবলেশহীন ভাবে আওড়ায় রাজকুমার। অতঃপর রাজকন্যাকে মুক্ত করে নিজের হাতের বন্ধন থেকে। রাজকন্যা মুক্তি পেয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচে। দ্রুত সরে পরে রাজকুমারের থেকে খানিকটা দূরে। এই মুহুর্তে তাকে জল খেতে হবে। নয়তো সে তেষ্টাতেই অর্ধমৃত হবে।

দ্রুত পায়ে কক্ষ থেকে বের হয় রাজকন্যা। কিন্তু কয়েক মুহুর্তের মাঝেই আবার ভেতরে প্রবেশ করে। রাজকুমার ওকে আবার ফিরে আসতে দেখে বলল,

“পালাতে চাচ্ছেন নাকি?”

“চাইলেই কি? পালাতে পারছি কই?”

“কেন? কে বাঁধা দিলো?”

“দাসীরা! আমাকে দেখে কেমন মিটমিট করে হাসছে দেখুন। আপনিও খুব বেশরম।”

রাজকুমার হাসে। কথা শেষ করেই হুট করে নিজের পোশাক পরে নেয়। অতঃপর ফের এগিয়ে আসে রাজকন্যার পানে। রাজকন্যা ভীত দৃষ্টিতে তাকায়। পালানোর পথ খোঁজে। যা বুঝতে পেরে রাজকুমার হাসতে হাসতে বলে,

“ভয় নেই কাছে আসছি না।”

“উফফ!”

রাজকুমার হো হো করে হেসে ওঠে। জিন্নাত চলে গেছে। আর তাকে কক্ষে দ্বিতীয়বার পাঠানোর মহৎ কাজটা সেই করেছে। তবে তার নাম সে রাজকুমারের সামনে নিতে চায়না। ইচ্ছে করেই চায়না। কারন বেশিরভাগ পুরুষই জিন্নাত জাতিকে বড় ঘৃনার দৃষ্টিতে দেখে। যদি রাজকুমারও সবার মতো হয়? যদি সেও তার দাদাজানের মতো জিন্নাত জাতিকে সমুলে উৎখাত করতে চায়? সে সহ্য করতে পারবেনা। জিন্নাত তার খুব প্রিয়। আর সেই সাথে জিন্নাত জাতিও। এই ধরণীতে সবারই সমান অধিকার আছে ভালোভাবে বেঁচে থাকার। তবে বরাবর মনুষ্য জাতির হাতেই কেন অন্য জাতি নির্যাতিত, পীড়িত হয়!

“জল।”

রাজকুমার জলের গ্লাস হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাজকন্যার সামনে। রাজকন্যার এতক্ষণে সম্পূর্ণ মনোযোগ পড়লো রাজকুমারের কাটাস্থানে। বেশ খানিকটা কেটেছে। রক্ত মুখো হয়ে আছে জায়গাটায়।

“ভাববেন না,ঠিক হয়ে যাবে।”

রাজকন্যা কিছু বলবার পূর্বেই বলে ওঠে রাজকুমার। রাজকন্যা অবাক হয়। বলে

“আপনি কি করে বুঝলেন?”

“আপনার চোখ পড়েছি।”

“ইশশ! সে কি পড়া যায় নাকি?”

“প্রেমে পড়লে সম্ভব।”

“ও। আপনি পড়েছেন বুঝি?”

“খুব।”

“প্রেমে কিভাবে পড়তে হয়?”

“আপনি পড়েননি?”

“না তো!”

রাজকন্যার সহজ-সরল স্বীকারোক্তি। রাজকুমার আহত হয়। অসহায় কন্ঠে বলে,

“ও।”

“এদিকে বসুন।”

রাজকন্যা তার হাত ধরে নিয়ে শয্যায় বসায়। অতঃপর দাসীকে আদেশ করে ঔষধীর ব্যবস্থা করতে।

“আপনি কাটা সহ গোলাপ পড়েন?”

“না তো। কাটা কই পেলেন?”

“আপনার ফুলের কাটাতেই আমার মুখ কেটেছে।”

“সে কি!”

রাজকন্যা চটজলদি তার চুলগুলো সামনে আনে। রাজকুমার যা বলছে তা যে কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। দাসীরা এতোভুল করেনি যে কাটাসহ ফুল দিয়ে তাকে সজ্জিত করবে। তাতে সে নিজেও তো আহত হতে পারে।

রাজকন্যা প্রত্যেকটা ফুল নিজের হাতে ধরে দেখলো। পূনরায় বাছাই করলো। কিন্তু কোথাও কোনো কাটা যুক্ত ফুল পেলো না। সে অবাকের শীর্ষে পৌঁছে বলল,

“আপনি ভুল বলছেন। আমার চুলের কোনো ফুলেই তো কাটা নেই।”

রাজকুমার নিজেও ভীষণ অবাক হয়। তবে সে স্পষ্ট টের পেয়েছি এ রাজকন্যার মাথার ফুলেরই কাটা। এখন যে নেই। অদৃশ্য হয়ে গেলো কি? নাকি অন্য কোনো রহস্য আছে। ফুলেও রহস্য? অদ্ভুত!

#চলবে

[ গল্পটা আপনাদের বেশিরভাগেরই অপছন্দ। তাই না?]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here