#রাজকন্যা_হূরিয়া🌸🤍
#লেখা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
[১৮]
রাজকুমারের রাজ্যে যুদ্ধ ঘোষনা হওয়ার পর সিরাজদি রাজ্য থেকে তার সাহায্যের জন্য সেনা পাঠানো হয় মোট আড়াই হাজার। আর তাদের মধ্যে যুদ্ধে জয়লাভ করে রাজ্যে ফিরে আসে মোট দু’হাজার আট শত আট জন। বাকি সেনারা নিখোঁজ। শোনা যায় এই যুদ্ধে বেশিরভাগ আহত হলেও কোনো সেনারই মৃত্যু হয়নি। তবে? তারা ফিরলো না কেন? কার হাতে বন্দী হলো? যুদ্ধের এতোগুলো দিন পেরিয়ে গেলো অথচ এই খবর রাজকন্যা জানেইনা। চাচাজান কিংবা মন্ত্রী মশাই কেউই তাকে এই খবর দেননি! এর পেছনে কার হাত আছে? চাচাজান? নাকি মন্ত্রী মশাই?
ঠাস করে এক চড় পড়লো রেদোয়ানের গালে। রেদোয়ান থতমত খেয়ে তাকালো চড় খেয়ে। অপমানে লজ্জায় মাথা নীচু হয়ে গেলো তার। ভেতরে রাগ হলেও দুঃসাহস হয়নি সরদারের চোখে চোখ রাখার।
“অধম! তোমার মতো মূর্খের উপর ভরসা করাই বোকামো হয়েছে আমার। আর ছোট রাজা.. আপনাকে দেখলে তো আমার রীতিমতো হাসি পায়। এতখানি বয়স বেড়ে গেলো কিন্তু বুদ্ধি? হাঁটুর গোড়ায়।”
চাচাজান ক্ষেপা দৃষ্টিতে তাকালেন আয়াসের দিকে। কিন্তু তাতে আয়াসের বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই। সে নিজের ভাবনায় বিভোর। ঐ লোকটা যদি আর এক মুহুর্তও বেঁচে থাকতো, তবে নির্ঘাত রাজকন্যা আজ সবটা জেনে যেতো। আর সঙ্গে সঙ্গে তাদের পর্দা ফাঁস হয়ে যেতো। এতদিনের সাজানো গোছানো পরিকল্পনায় মুহুর্তেই জল মিশে ঘোলা হয়ে যেতো। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বন্দী ছাড়া পেলো কেমন করে? ওমন অবস্থা থেকে বের হলো কেমন করে?
“শোনো আয়াস, তুমি এবং তোমার আব্বাজান রাজকন্যাকে যতই দুর্বল আর বাচ্চা মেয়ে ভাবোনা কেন? ও কিন্তু তোমাদের চেয়েও একধাপ উপরে চলে। তাই বলছি, তোমরা যে পরিকল্পনায় এগোচ্ছে তা ওর সামনে ফিকে পড়তে এক দন্ডও সময় লাগবে না। রাজকন্যা সাধারণ নয় আয়াস। ওকে সাধারণ ভেবে ভুল করিও না।”
আয়াসের মস্তিষ্কে চিনচিনে এক ব্যাথার আবির্ভাব হয়। সে জানে রাজকন্যা সাধারণ নয়। রাজকন্যা সাধারণ হতেই পারেনা। এসব নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। সে ভাবছে অন্যকিছু। যার ভয় দিনে দিনে তাকে গ্রাস করে গিলে নিচ্ছে। একটু একটু করে গিলে নিচ্ছে।
“ঐ জ্বীনটা এখনও বেঁচে আছে?”
আয়াস জিজ্ঞেস করে। রেদোয়ান মাথা নাড়ে। মুখে বলে,
“হ্যাঁ সরদার। ওকে বাঁচিয়ে রেখেছি। ওকে বাঁচিয়ে রাখলে আমাদের অনেক কাজে আসতে পারে।”
“হু, এক কাজ করো, ওকে মুক্ত করো।”
আয়াসের বানীতে চমকে ওঠে রেদোয়ান। ভয়ার্ত কন্ঠে বলে,
“সরদার এ আপনি কি বলছেন? ওকে মুক্ত করলে যে আমাদের খেল এখানেই খতম। ওকে মুক্ত করলে ও নিশ্চয়ই রাজকন্যার কাছে গিয়ে সবটা প্রকাশ করে দেবে। ত্ তারপর কি হবে ভাবতে পারছেন সরদার।”
“এসব ভাবনা আমার! তোমাকে যা বলেছি তাই করো।”
রেদোয়ান ঢোক গেলে। রাজকন্যার হাতে মৃত্যুর দৃশ্য চোখের সামনে ভাসতেই শরীর কাঁপে তার। সরদার যে পাগল হয়ে গেছে রাজকন্যার ভালোবাসায়। আর সেটা সে বেশ বুঝতে পারছে। কিন্তু নাকচ করেও কি হবে? কোনো লাভ নেই তো। এখানে না করলে সরদারের হাতে মরতো হবে আর ওখানে জ্বীনকে মুক্ত করলে রাজকন্যার হাতে মরতে হবে। এ যে শাঁখের করাতে গলা দেওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে।
“আয়াস,এই ভুল করিওনা পুত্র। রাজকন্যার জ্বীনকে যখন বন্দী করেছো হয় ওকে মেরে ফেলো নয়তো ওকে এভাবেই চির বন্দী রাখো। কেননা,রাজকন্যা যদি একবার জানতে পারে ওর জ্বীনের সাথে এই অন্যায় কে বা কারা করেছে তবে নিশ্চিন্তে থাকো তোমরা, তোমাদের কাল এলো বলে।”
আয়াস মলিন হাসে। মনেমনে কিছু একটা ভাবে। অতঃপর বড় করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে গলা পরিস্কার করে গম্ভীর গলায় বলে,
“মনোযোগ দিয়ে শোনো রেদোয়ান, জ্বীনটাকে আহত অবস্থায় তুলে নিয়ে যাবে নগর রাজ্যে। ঠিক রাজ্যের মাঝপথে ওকে ফেলে দিয়ে আসবে। যেন খুব সহজেই লোকের নজরে পড়তে পারে। তবে হ্যাঁ, ওকে দেখার জন্য একমাত্র ব্যক্তি যেন রাজকন্যাই হয়। বাকি যত পথিক থাকবে সবাইকে সরিয়ে দিবে ওখান থেকে। রাজকন্যা এতক্ষণে নিশ্চয়ই নগর রাজ্যের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছে। ঐ সেনার মৃত্যু হওয়ার পর রাজকন্যা হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। বাকি নিখোঁজ সেনাদের খোঁজে সে নগর রাজ্যে যাবে। আর রাজকন্যা যেন রাজ্য অব্দি পৌঁছাতে না পারে তারই একটা বড় বাঁধা হবে তার জ্বীন। রাজকন্যা ওকে এমতাবস্থায় দেখে নিশ্চয়ই রাজ্যের কথা ভুলে ওকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। স্বাভাবিক ভাবেই জ্বীনের চিকিৎসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে। আর এই সুযোগে আমরা বাকি প্রমানগুলোও মুছে ফেলতে পারবো।”
আয়াসের মুখে কথা গুলো শুনে ধরে প্রাণ ফিরে এলো রেদোয়ানের। একই সঙ্গে চাচাজানেরও। দু’জনেই একসাথে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। চাচাজান নিশ্চিন্ত মনে বললেন,
“যাক, ভুল মানুষের উপর বিশ্বাস রাখিনি তবে।”
আয়াস বাঁকা হাসলো। এক ভ্রু উঁচিয়ে মনেমনে ভাবলো কিছু একটা। অতঃপর বলল,
“সাপও মরলো আর লাঠিও ভাঙল না। আয়াসকে ধরা এতো সহজ নয় রাজকন্যা। এতো সহজ নয়।”
•
একটু সামনেই জিন্নাতের আহত শরীরটা লুটিয়ে পড়ে থাকতে দেখে দাঁত খিঁচিয়ে চিঁহি চিঁহি করে দাঁড়িয়ে পড়লো সুফি। রাজকন্যা শক্ত হাতে সুফিকে ধরে নিজেকে সামলালো। খানিক বিরক্ত স্বরে চেঁচিয়ে উঠে বলল,
“সুফি এসব কি অভদ্রতা। চলতে চলতে হঠাৎ থেমে গেলে কেন?”
সুফি জবাবে আবারও চিঁহি চিঁহি করে ডেকে উঠলো। তাতে রাজকন্যা আরও বিরক্ত হলো। এই মুহুর্তে সুফির সঙ্গে আলাপচারিতা করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই তার। ভোর থেকে সবটা শোনার পর সে আর এক দন্ডও বসে থাকতে পারছিলো না। তাই বাধ্য হয়েই নগর রাজ্যের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছে। যত রহস্য সব এই রাজ্যেই লুকিয়ে আছে। আর আজ সে সব রহস্যের উদঘাটন করবেই করবে। কিন্তু মাঝপথে এই সুফির আবার কি হলো?
সুফির পিঠ থেকে নেমে পড়লো রাজকন্যা। কোনো সমস্যা তো নিশ্চয়ই হয়েছে, নয়তো সুফি এমন করার ঘোড়া নয়।
“সুফি? কি হয়েছে তোমার! কিছু বলতে চাও?”
রাজকন্যার প্রশ্নে এবার আর ডাকলো না সুফি। রাজকন্যাকে রেখেই ছুট্টে গেলো সামনের দিকে। রাজকন্যা সুফির কান্ড দেখে হকচকিয়ে গেলো। হতবিহ্বল হয়ে তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে পিছু ডাকতে নিলেই বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো সে। তার কন্ঠনালি থমকে গেলো এক মুহুর্তেরও অনেক পূর্বে। বুকের ভেতরটা কেমন চিৎকার পেড়ে উঠলো জিন্নাতকে দেখে। কেবল জিন্নাতকে দেখে নয়,তার এমন মর্মান্তিক অবস্থা দেখে। রাজকন্যা পারলো না নিশ্চুপ থাকতে। গলা ফাটিয়ে জিন্নাত বলে হাহাকার তুললো। পাগলের মতো ছুট্টে গেলো জিন্নাতের বরফ শীতল শরীরটার কাছে। ও কি বেঁচে আছে? মনটা প্রশ্ন করল! নিজের প্রশ্ন নিজেই কুঁকড়ে পড়লো রাজকন্যা। না! জিন্নাতের কিছু হতে পারেনা।
“জিন্নাত! এই জিন্নাত.. কি হয়েছে তোমার? চোখ খোলো জিন্নাত? আ্ আমি.. আমি তোমার রাজকন্যে.. এই যে দেখো আমায়? আমি চলে এসেছি তোমার কাছে। তোমার এই অবস্থা কি হলো? ও জিন্নাত.. দয়াকরে চোখ খোলো..”
ভুবন কাঁপিয়ে কেঁদে উঠলো রাজকন্যা। বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরলো জিন্নাতের বরফ শীতল শরীরটা। কে করছে তার এতো বড় সর্বনাশ? তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষগুলোকে কেন এতো পীড়া সহ্য করতে হচ্ছে? প্রথমে আব্বাজান তারপর আম্মাজান আর আজ? আজ জিন্নাতকেও ওরা ছাড় দিলো না।
“ইয়া খোদা.. দয়াকরুন আমার উপর! দয়াকরুন আমার জিন্নাতের উপর। ওকে বাঁচিয়ে দিন প্রভু! ওকে বাঁচিয়ে দিন! জিন্নাতের কিছু হয়ে গেলে আমি নিঃশ্ব হয়ে যাবো প্রভু। আমাকে দয়াকরুন.. জিন্নাতকে আমার থেকে কেঁড়ে নিবেন না। দয়াকরুন!”
কাঁদতে কাঁদতে হাত জোড় করলো রাজকন্যা। তার ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে। জিন্নাত যে নিঃশ্বাস অব্দি নিচ্ছেনা। জিন্নাতের মৃত্যু রাজকন্যা সহ্য করতে পারবেনা। একটু একটু করে যত্ন করে এই চেহারা সে দিয়েছিলো জিন্নাতকে। সেই চেহারার যে সবটাই ঝলছে গেছে। শরীরের সব মাংস নরম হয়ে গেছে। একটু জোরে টান লাগলেই সবটা খুলে আসবে যেন। জিন্নাতের এমন মর্মান্তিক অবস্থা সহ্য করতে পারছেনা রাজকন্যা।
আর বসে থাকা যাবেনা। জিন্নাতের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু এতদূরে এসে কি করে জিন্নাতের চিকিৎসা করবে? তাকে রাজ্যে ফিরতে হলেও যে কম করে দুই প্রহর লেগে যাবে। ততক্ষণে জিন্নাত বাঁচবে কি না সন্দেহ। জিন্নাতকে নিয়ে আর কোনো রকম ঝুঁকি নিতে পারবেনা সে। যা করার এখানেই করতে হবে। রাজকন্যা পাঁজা কোলে তুলে নিলো জিন্নাতকে। জিন্নাতের শরীর নেতিয়ে এসেছে। অনেকটা কাপড়ের মতো। যেন ভাজ করে রেখে দেওয়া যাবে। আশেপাশে কোনো বাড়িঘর নেই। আছে কেবল রাশিরাশি জঙ্গল। রাজকন্যা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। এই জঙ্গলই আজ তার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হবে। জিন্নাতকে নিয়ে সে জঙ্গলের ভেতর রওনা হলো। সঙ্গে সুফিও যাচ্ছে। সুফি জানে এই মুহুর্তে তাকে তার রাজকন্যার পিছু নিয়েই থাকতে হবে। তাই আদেশ পাওয়ার পূর্বেই সে পিছু নিলো মালিকের। রাজকন্যা গভীর জঙ্গলে ঢুকে গেছে। এখান থেকে বাইরেটা পরিমাপ করা অসম্ভব প্রায়। ভেতরটা বেশ অন্ধকার। রাজকন্যা মাটির বুকে শুয়ে দিলো জিন্নাতকে। অতঃপর জিন্নাতের পাশে বসলো। কিছুক্ষন দৃষ্টি বোলালে আহত জিন্নাতের দিকে। ফের চোখ বন্ধ করে অনবরত সূরা পড়তে আরম্ভ করলো। মুলত জ্বীনদের আহবান করছে সে। খানিকটা সময় পেরোতে আশেপাশে ভরে গেলো শতাধিক জ্বীনে। রাজকন্যা চোখ মেলে দেখলো তাদের। তারা সালাম দিলো রাজকন্যাকে। রাজকন্যা হাসিমুখে সালামের উত্তর দিয়ে অনুনয়ী সুরে বলল,
“আমি খুব বিপদে পড়েছি। আমার আপনাদের সাহায্যের প্রয়োজন।”
একজন চিকন স্বরে বলল,
“আদেশ করুন রাজকন্যা হূরিয়া। আমরা আপনাকে সাহায্য করবো।”
রাজকন্যা অশ্রুসিক্ত নয়নে জিন্নাতকে দেখলো একবার। অতঃপর কান্না জড়ানো গলায় বলল,
“আপনারা আমার জিন্নাতকে নিয়ে যান। ওকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিন। ওকে সুস্থ করে ফিরিয়ে দিন আমার নিকটে। আমি জানি ওর চিকিৎসা আমার এই জগতে নেই। নয়তো আমি ওকে এক্ষনি নিয়ে যেতাম। ওকে সুস্থ করতে হলে আপনাদের হেফাজতেই দিতে হবে। তাই আপনাদের ডাকা হয়েছে। আমি কখনও কারোর কাছে হাত জোর করে কিছু চায়নি। আজ চাচ্ছি। দয়াকরে আমাকে ফিরিয়ে দিবেন না আপনারা।”
“কিন্তু রাজকন্যা! ও যে আপনার পালিত। আর মনুষ্য জগতের পালিত জ্বীনকে আমরা কখনোই ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারিনা। এটা আমাদের নিয়মের বাইরে।”
রাজকন্যা আহত হলো। আবারও হাত জোর করলো। কাঁদতে কাঁদতে বলল,
“দয়াকরুন আপনারা। আমি আপনাদের কাছে হাত জোর করছি। ওকে চিকিৎসা দিন। নয়তো ও মরে যাবে!”
“ক্ষমা করবেন রাজকন্যা। এ অসম্ভব। আপনি আমাদের নিকট অন্যকিছু…”
“না। আমি আমার জিন্নাতকে ছাড়া আর কিছু চাইনা। আমি আমার জিন্নাতের প্রান ভিক্ষা চাইছি। আপনারা আমাকে এটুকু দয়াকরুন!”
রাজকন্যার অশ্রুসিক্ত নয়নে মন গলে একজনের। সে বাকিদের থামিয়ে দিয়ে বলে,
“ঠিকাছে রাজকন্যা। আমরা নিয়ে যাবো জিন্নাতকে। তবে একটা শর্তে?”
রাজকন্যার দম আঁটকে আসে আনন্দে। সে আনন্দে হৈহৈ করে উঠে বলে,
“হ্ হ্যাঁ হ্যাঁ! ব্ বলুন না কি শর্ত?”
“আমরা আমাদের নিয়মের বাইরে এই জ্বীনকে নিয়ে যাচ্ছি। এতে আমাদের অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। তাই আমি চাই আমরা যদি কখনও সেই ক্ষতিপূরণের দাবী হিসেবে এই জ্বীনকে বরাবরের নিয়ে যেতে চাই তবে আপনি আমাদের বাঁধা দিতে পারবেন না। আপনাকে হাসি মুখে ওকে আমাদের সঙ্গে বিদায় দিতে হবে।”
“আ্ আমি রাজি। আমি ওর জীবনের বদলে সব কিছু করতে রাজি। আপনারা দয়াকরে ওকে নিয়ে যান। ওকে বাঁচিয়ে তুলুন।”
“যথাআজ্ঞা রাজকন্যা।”
সকল জ্বীন একসাথে জয়ধ্বনি করে জিন্নাতকে নিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলো। রাজকন্যা চোখের জল ছেড়ে দিয়ে মোনাজাত ধরলো।
“হে প্রভু! জিন্নাতকে আপনি বাঁচিয়ে দিন। দয়াকরে বাঁচিয়ে দিন।”
ফের হাতের উল্টো পিঠে চোখ মুছলো। অতঃপর উঠে দাঁড়িয়ে নিজেকে ধাতস্থ করে উঠে বসলো সুফির পিঠে। এখন যাত্রা শুরু হবে নগর রাজ্যে। রাজকন্যা সুফির পিঠে দু’বার চাপড় দিয়ে বলল,
“চলো সুফি। রহস্য খুঁজতে যাওয়া যাক।”
সুফি দাঁত খিঁচিয়ে চিঁহি চিঁহি করে ডেকে বাতাসের গতিতে ছুটলো নগর রাজ্যের পথে। রাজকন্যা শক্ত হাতে ধরলো হাতের বাঁধনটা।
#চলবে_____
[ বিঃদ্রঃ এই উপন্যাসটার প্রত্যেকটা চরিত্র আমার ভীষণ মায়ার। কারোর কিছু হলেই যেন মনটা কাঁদতে শুরু করে দেয়। তো,আজ যখন জিন্নাতকে নিয়ে বর্ননা দিচ্ছিলাম, সত্যি কথা বলতে নিজেরই খুব কান্না পেয়ে যাচ্ছিলো। নিজেই নিজেকে সান্ত্বনা দিতে শুরু করি। জানিনা আপনাদের কেমন লাগবে। গঠন মূলক মন্তব্য আশা করছি আপনাদের থেকে। ভালোবাসা সকলকে।❤️]