রাজকন্যা হূরিয়া পর্ব-২০

0
318

#রাজকন্যা_হূরিয়া🌸🍁
#লেখা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
[২০]

রাজকুমার আহত দৃষ্টিতে একপলক দেখে নিলো আরহামকে। আরহামের শরীরের বিভিন্ন ক্ষ/ত জায়গাগুলোয় র’ক্ত জমাট বেঁধে আছে এখনও। কবিরাজ মশাই একটু একটু করে পরিষ্কার করছেন সবটা। কবিরাজ মশাইকে সাহায্য করছে আদিম। কক্ষে আরও উপস্থিত আছে তিনজন প্রহরী। তাদেরকে রাখা হয়েছে আরহামকে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য। কেননা রাজকন্যা জানে,রেদোয়ানকে বন্দী করার পর ডাকাতের ওস্তাদ চুপ করে বসে থাকার লোক নয়। নিশ্চিয়ই কোনো হামলা হবে। আর সেটা হবে আরহামের উপর। কেননা,আরহাম আর রেদোয়ানকে আলাদা করে বাছাই করা খুব একটা সহজ নয়। বলা যায়, ওস্তাদজী আগের পরিকল্পনা মাফিক আরহামকে পূনরায় বন্দী করে রেদোয়ানকে পূনরায় পাঠিয়ে দিতে পারেন এখানে।

রাজকন্যার বুক চিঁড়ে তপ্ত দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। তার রাজকুমারের জন্য বেশি খারাপ লাগছে। রাজকুমার অনেক বড় আঘাত পেয়েছে আরহামের এমন অবস্থা দেখে। আর সবটা শোনার পরতো ভেঙেই পড়েছে। নিজের উপর রাগ হচ্ছে তার, কেমন বন্ধু হয়েছে সে? বন্ধুর এমন বিপদে সে তাকে বাঁচাতেই পারলোনা! এমনকি চিনতে পর্যন্ত পারলোনা। চরম রাগ আর ঘৃনা হচ্ছে নিজের উপর।

“রাজকুমার?”

রাজকন্যা হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে রাজকুমারের হাতটা শক্ত করে ধরলো। রাজকুমারের অক্ষিপটে স্থির দৃষ্টি রেখে ভরসা দিয়ে বলল,

“আরহাম এখন আমার হেফাজতে থাকবে। আর আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি, ও অতিদ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। ঠিক আগের মতো।”

রাজকুমারের অসহায়ত্ব মুখটা অনেকটা স্বাভাবিক হলো। তপ্ত দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে গুমোট বাঁধা গলায় বলল,

“আরহাম আমার প্রানপ্রিয় বন্ধু ছিল রাজকন্যা। হিসেব নেই ঠিক কতটা করেছে আরহাম আমার জন্য। কিন্তু আমি? ওর বিপদে ওর পাশে দাঁড়াতে পারলাম না। ভুলে গেলাম ওকে।”

“নিজেকে দোষারোপ করবেন না রাজকুমার। এ আপনার দোষ নয়। এ যে চোখের ধোঁকা। আমি নিজেই তো প্রথমে ওকে দেখে ভড়কে যাই। মাথাটা কেমন ফাঁকা হয়ে আসছিলো। যে আরহামকে আমি সুস্থ সবল অবস্থায় রাজপ্রাসাদে দেখে এলাম! সেই আরহামের এই অবস্থা কি করে হয়েছে? আর ওকে দেখে মনে হচ্ছিল ও এখানে আজ থেকে নয়,বরং অনেকদিন আগে থেকেই বন্দী হয়ে আছে।”

“আমি রেদোয়ানের সঙ্গে একবার দেখা করতে চাই রাজকন্যা।”

রাজকন্যা আতংকিত নয়নে তাকায়। রাজকুমার তাকে ভরসা দেয়।

“চিন্তা করবেন না। ও কারাগারে বন্দী থেকে আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা।”

রাজকন্যা নিজেকে সামলায়। চোখের পলক ঝাপটে দু’জন প্রহরী ডাকে।

“রাজকুমারকে নিয়ে যাও বন্দীর কাছে। যতক্ষণ উনি সেখানে থাকবেন তোমরাও সঙ্গে থেকো।”

“যথাআজ্ঞা রাজকন্যা।”

প্রহীরা নতশির করে রাজকন্যার হুকুম পালনে রাজকুমারকে নিয়ে চলে গেলো বন্দীর কাছে। রাজকন্যা তাদের যাওয়ার পানে কয়েক মুহুর্ত স্থীর দৃষ্টি রেখে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। অতঃপর আকস্মিক কিছু মনে পড়তেই পেছন মুড়ে তাকালো। আদিমের দিকে সন্দেহের দৃষ্টি নিক্ষেপ করে হঠাৎ ডাকলো তাকে।

“আদিম?”

আদিম পাশ ফিরে তাকালো রাজকন্যার দিকে।

“কিছু বলবে রাজকন্যা?”

“তোমাকে একটা কাজ করতে হবে?”

“আদেশ করো?”

“তোমার আব্বাজানকে বন্দী করতে হবে। আর তার পাহাড়ায় থাকবে স্বয়ং তুমি।”

আদিমের দৃষ্টি বিস্ময়ে ভরে ওঠে। প্রশ্নবিদ্ধ মুখ করে বলে,

“কি করেছেন আব্বাজান?”

“বিশ্বাসঘাতকতা!”

রাজকন্যা দৃড় কন্ঠে বলে ওঠে। আদিম চকিতে তাকিয়ে থাকে। তবে সে জানে, রাজকন্যা হয়তো ভুল বলেনি।

ফুপুআম্মা নামাজের পাটিতে বসে আছেন। এই অবেলায় কিসের নামাজ পড়ছেন তিনি জানেনা রাজকন্যা। তবুও অপেক্ষা করলো তার নামাজ শেষ হওয়ার। নামাজ শেষ হতেই ছুটে গেলো তার পানে। হাঁটু ভাজ করে লুটিয়ে বসলো ফুপুআম্মার সামনে। ফুপুআম্মা প্রথম দফায় চমকে উঠলেন। দোয়াটুকু পড়ে চটজলদি হাত রাখলেন রাজকন্যার মাথায়। ভীতিকর বিস্ময় নিয়ে আওড়ালেন,

“কি হয়েছে রাজকন্যার?”

রাজকন্যা ফুপুআম্মার হাতদুটো মুষ্টিবদ্ধ করে নেয়। আকুল কন্ঠে বলে,

“ফুপুআম্মা, আজ আপনাকে নিজের স্বামীর সম্পর্কে আমাকে সবটা খুলে বলতে হবে! আমি খুব বিপদে পড়েছি ফুপুআম্মা!”

ফুপুআম্মা হকচকিয়ে উঠলেন। তার ভীতিকর বিস্ময়ে মোড়ানো চোখ জোড়ার রঙ বদলে গেলো ক্ষনকালেই। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সে চোখে ভর করলো আক্রোশের ছাপ। কেমন করে তাকালেন তিনি। রাজকন্যা শঙ্কিত মনে দেখলো ফুপুআম্মাকে। তিনি কেমন ফোঁস ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলছেন।

“কেন শুনবে তুমি ঐ অপ্রকৃতিস্থ মানবের ইতিহাস। ও যে মানবজাতের ছিলো না। ও যে.. ও যে ছিলো আস্ত এক দানব!”

রাজকন্যার বুক কাঁপে। ফুপুআম্মার হাত জোড়া আরেকটু শক্ত করে ধরে। ব্যাকুল হয়ে বলে,

“দয়াকরে আমাকে সবটা খুলে বলুন ফুপুআম্মা। আমায় যে সবটা জানতেই হবে।”

ফুপুআম্মা কেঁপে ওঠেন। অতীতকে ভুলে গিয়ে সে তো ভালোই ছিলো। কিন্তু আর বোধহয় ভালো থাকা হলো না। রাজকন্যার মুখ চেয়ে তিনি পারলেন না নীরব থাকতে। অতীতে ডুব দিয়ে পাতা উল্টালেন বিষাদসিন্ধুর।

“আব্বাজান আমায় জোর করে বিবাহ দিয়েছিলেন এক ডাকাতের সঙ্গে। নাম তার নাজিমউদ্দীন। তার নিত্যকার কাজ ছিলো মানুষ মে/রে তার সমস্ত ধনসম্পদ ভোগ করা। তবে তার এই অপকর্মের মাত্রা প্রথম দিকে একটা পরিসীমায় থাকলেও এই বিশাল রাজ্যে পা রেখে তা যেন তরতর করে বেড়ে গেলো। লোভ,লালসা,প্রতিহিংসা.. কিচ্ছুই যেন আর বাঁধ মানলোনা। কিন্তু হুট করেই তো সে আর এই রাজ্যের রাজা হয়ে যেতে পারেনা। আর সেটা সম্ভবও ছিলোনা। কেননা আব্বাজান আমাকে সর্বদাই অপছন্দের তালিকায় রাখতেন। আর আমার স্বামী ছিলো একজন ডাকাত। আব্বাজান যদি পারতেন তাহলে আমাদের দু’জনকেই বনবাসে পাঠিয়ে দিতেন। তোমার আব্বাজান আমায় সবসময় আগলে আগলে রাখতো। এই রাজ্যের একমাত্র কন্যা সন্তান হিসেবে আমি যা পায়নি তা পেয়েছিলাম তোমার আব্বাজানের বড় বোন হওয়ার সুবাদে। সিরাজউদ্দীন আমায় মাথায় তুলে রাখতো। আব্বাজানের চোখের আড়ালে আমাকে কতকি দিয়েছে আমার ভাইটা। কিন্তু সে সুখও সইলো না আমার কপালে। যেদিন সিরাজউদ্দীনের রাজসিংহাসনে বসার দিনক্ষন ঠিক হলো সেদিনই সিরাজউদ্দীনকে অপহরণ করা হলো। নির্মমভাবে পি/টি/য়ে হ/ত্যা/র চেষ্টা হলো সিরাজউদ্দীনের। আব্বাজান ব্যাকুল হয়ে উঠলেন। কে বা কারা করছে এমন কাজ?
আমি বুঝে গিয়েছিলাম এই কাজ করার পেছনে কার হাত থাকতে পারে? মিললোও তাই। নাজিমুদ্দিন সিরাজকে হ/ত্যা/র চেষ্টা করেছে। কিন্তু পারেনি। সিরাজউদ্দীন কোনো মতে নিজের জীবন বাঁচায়। সেখানে ছোটখাটো একটা যুদ্ধও হয়। তবে যারা সিরাজউদ্দীনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তার ম/রা/র আগমুহূর্ত পর্যন্ত নিজেদের পরিচয় গোপন রাখে। আর নাজিমউদ্দিন সবার আড়ালেই থাকে। তাই আর জানা হলোনা সিরাজউদ্দীনের এই হ/ত্যা কান্ডের পেছনে কার হাত ছিলো। আমি তখন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি, আমি সবটা খুলে বলব সিরাজউদ্দীনকে। নাজিমউদ্দিন বোঝার পূর্বে আমি একবার আব্বাজানের সঙ্গে সবটা বলার প্রয়াস করি। কিন্তু আব্বাজান আমার একটা কথাও শোনেনি। তখন আমি নয়মাসের অন্তঃসত্ত্বা। নাজিমউদ্দীন আমার গলায় তলোয়ার ধরে,আমাকে হুমকি দেয় যদি আর কখনও তার আসল রূপ কারোর সামনে প্রকাশ করতে যাই তবে, তবে সে আমায় নিজ হাতে খু/ন করবে। আমি তোয়াক্কা করিনি। আমি জেদি কন্ঠে বলি, ‘আমি আমার ভাইয়ের সঙ্গে এই অন্যায় কিছুতেই সহ্য করবো না। আমি সব সত্যি সবাইকে বলে দেবো।’ এ কথা শুনে নাজিমউদ্দিন হিংস্র দানবের মতো আচরণ করতে লাগলো। আমাকে বেধরাম পিটিয়ে অচেতন করে ফেলল। আমি ভেবেছিলাম আমি বোধহয় আর বাঁচব না। কিন্তু ওমন মুহুর্তে ফেরেশতার মতো এসে হাজির হয় আমার ভাই। সঙ্গে তোমার আম্মাজানও ছিলো। আমার ওমন অবস্থায় তৎক্ষনাৎ চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। কবিরাজ মশাই আমার এমন অবস্থা দেখে ঘাবড়ে যায়। তিনি বলেওছিলেন মা এবং সন্তান দু’জনেই শঙ্কায়। বাঁচবে কিনা বলা মুশকিল। আল্লাহ’র অশেষ কৃপায় বেঁচে গেলাম আমি। বেঁচে গেলো আমার সন্তানও। রাজ্যের কয়েকজন দাসীরা নাজিমউদ্দীনের এমন ব্যভিচার এবং স্বীকারোক্তির সাক্ষী ছিলো। সিরাজউদ্দীন আচমকাই সবটা জেনে গেলো। তৎক্ষনাৎ ঘোষনা করা হলো নাজিমউদ্দিনের খোঁজ যে দিতে পারবে তাকে অনেক বড় পুরষ্কার দেওয়া হবে। অচেতন অবস্থায় কানে ঠিক শুনেছিলাম আমার পুত্র সন্তান হয়েছিল। সে কাঁদছিলো৷ কিন্তু যখন চোখ খুলি তখন মৃত এক পুত্র সন্তানের মুখ দেখতে পাই। কেউ কোনোদিন জানলোও না আমার সন্তান হয়েছিলো কিনা। আর যারা জেনেছিলো তারা জানতো আমি মৃত সন্তানের জন্ম দিয়েছি। আব্বাজান বললেন,’তোর মতো পোড়ামুখী কলঙ্ক ছাড়া আর কিই বা দিতে পারবি?’ আমি আবারও অপয়া হয়ে রইলাম। কিছুদিন পর খবর এলো কারা যেন মে/রে ফেলেছে নিজামউদ্দিনকে। আমার খুশি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমি খুশি হতে পারিনি। আমি উপরওয়ালার কাছে দু’হাত তুলে দোয়া করেছিলাম-‘আল্লাহ যেন তার সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন।”

ফুপুআম্মা থামলো। তার শরীর ভেঙে আসছে। থরথর করে কাঁপছেন তিনি। রাজকন্যা খেয়াল করে দেখলো ফুপুআম্মার অশ্রুসিক্ত নয়ন। কেন যেন তার খুব করে জানতে ইচ্ছে করল, “দানব জেনেও ফুপুআম্মা কি কখনও ভালোবেসেছিলেন ঐ মানুষটাকে?”

“তার কয়েক বছর পর আবারও অপহরণ হয় সিরাজউদ্দীনের। তবে আগেরবারের মতো আর ফিরে আসেনি সিরাজউদ্দীন। বরাবরের মতো হারিয়ে গেলো সে। বরাবরের মতো।”

মুখে আঁচল চাপলেন ফুপুআম্মা। তার বুকের ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে ভেঙে যাচ্ছে। একদিকে নিজের স্বামী, পুত্র আর অন্যদিকে নিজের ভাই! সব হারিয়ে আজ তিনি নিঃশ্ব। একেবারে নিঃশ্ব।

সুফি এসে থামলো ঘন জঙ্গলটার সামনে। রাজকন্যা ওর পিঠ থেকে নেমে ওর পিঠে হাত চাপড়ালো। কোমল স্বরে বলল,

“আমার জন্য অপেক্ষা করিও। যদি দেখো আমি না ফিরি তবেই এই জঙ্গলে প্রবেশ করবে। নয়তো নয়।

সুফি চিঁহি চিঁহি করে ডাকলো। রাজকন্যা মিষ্টি হাসলো। অতঃপর নিজেকে প্রস্তুত করে প্রবেশ করলো জঙ্গলে। নাজিমউদ্দীনের খোঁজে।

ভরাট জঙ্গলে এসে থামলো আয়াস। সঙ্গে রেদোয়ান। সে উদ্ধার করতে পেরেছে তাকে। তবে খুব সহজে নয়, অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়ে তাকে। কারাগারের সঙ্গে সরাসরি যোগ আছে পাতালঘরের কারাগারের। সে সেখান থেকে পৌঁছেছে রেদোয়ানের কাছে। গভীর রাতে একটা পিঁপড়েও জেগে ছিলোনা। আর জেগে থাকবেই বা কেমন করে? সে তো পানিতে নিদ্রাবিষ মিশিয়ে ছিলো। যা খেতেই সব ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমিয়েছে।

“সরদার? এই ভরাট জঙ্গলে আমরা কেন এলাম?”

কৌতুহলী স্বরে জানতে চায় রেদোয়ান। আয়াস হাসে। দূরে একটা কুঠির নির্দেশ করে বলে,

“ওখানে অতিথি আপ্যায়ন করবো। চলো জলদি।”

রেদোয়ান হোঁচট খায়।

“অতিথি?”

“হু।”

“কে সরদার?”

“উফফ রেদোয়ান! তুমি কবে থেকে এতো প্রশ্ন করতে আরম্ভ করলে?”

“ক্ষমা করবেন সরদার!”

রেদোয়ান করুন গলায় বলে। আয়াস সগতোক্তি হেসে কাঁধে হাত রাখে রেদোয়ানের।

“ভয় পেয়োনা। তোমার সব প্রশ্নের জবাব ঐ কুঠিরেই আছে।”

রেদোয়ান শুধু মাথা নাড়ে। আর কিছু বলেনা। তারা কুঠিরের সামনে এসে দাঁড়ায়। দরজাটা ভেজিয়ে রাখা। আয়াস হালকা ধাক্কা দিয়ে খুলে দেয় দরজাটা। রেদোয়ান কৌতূহল নিয়ে ভেতরে দেখতেই ঝটকা খায়। ভীতিকর বিস্ময় নিয়ে বলে ওঠে,

“আরহাম!”

আয়াস সশব্দে হেঁসে ওঠে। রেদোয়ানের বুক কেঁপে ওঠে। আবার কোন প্রলয় শুরু হবে? রাজকন্যা কি এবার আর চুপ করে থাকবেন?

#চলবে____

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here