#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_০৬
_______
পরদিন সকালে….
প্রতিদিনের মতো নীল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে,, রেডি হয় কলেজে যাওয়ার জন্য…
নিচে গিয়ে,,, আব্বু (মুখে এক রাশ হাসি দিয়ে)
দৌঁড়ে গিয়ে নীল তার আব্বুকে জড়িয়ে ধরে..
(ব্যবসার জন্য রায়হান সরকার দেশের বাহিরেই থাকে বেশি,,, বাড়িতে খুব কমই থাকে)
নীল– আব্বু কেমন আছো? তুমি কখন আসছো আমাকে ডাকনি কেনো?
রায়হান সরকার– মামনি মন খারাপ করে না,, আমি অনেক রাতে আসছি আর তখন তুমি ঘুমিয়ে ছিলে তাই তোমাকে আর ডাক দেইনি আমি মামনি…
মিসেস সরকার– নীল তাড়াতাড়ি নাস্তা করো তোমার কলেজের জন্য লেট হয়ে যাবে…
রায়হান সরকার– আসো আজ আব্বু নিজে হাতে তোমাকে খাইয়ে দেই…
মিসেস রায়হান—- নীল আর তুমি এসে টেবিলে বসো আমি খাবার বেরে দিচ্ছি..
রায়হান সরকার নীলকে খাইয়ে দেয় নীল হা করে গব গব খেয়ে নেয়
(নীল তার আব্বুকে দেখে এতটাই খুশি হয় যে কালকের কথা নীল ভুলেই যায় ),,,
নীল ওর আব্বু আম্মুকে জড়িয়ে ধরে একটা চুমু দিয়ে বাই বলে কলেজের জন্য বেরিয়ে গেলো…
তানিয়া,, কাজল— তানজুম কে জ্বালানোর জন্য বলে উঠলো…
কিরে কালকের কিসটা কেমন ছিলো রে তানজু,,???
তানজুম– তোরা বেশি বারাবাড়ি করছিস কিন্তু
তানিয়া– ওমা তোমরা করতে পারবা আর আমরা বলতে পারবো না..
কাজল– ওই দেখ নীল আসছে
নীল– কিরে তোরা সব কলেজের গেইটে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো চল কলেজের ভিতরে.. (মুখ ভরা হাসি দিয়ে)
তানিয়ে তানজুমের দিকে তাকাচ্ছে তানজুম কাজলের দিকে তাকাচ্ছে
তানজুম– কিরে তুই এত খুশি কেনো?
নীল– আমার আব্বু আসছে তাই,, চল ক্লাসে যাই
তানিয়া– তুই কি কালকের কথা সব ভুলে গেছিস (হাঁটতে হাঁটতে নীলকে জিজ্ঞেস করলো)
নীল– কালকের কোন কথা
কাজল– মানে কি তুই কেমন মেয়ে
নীল– মানে??
তানজুম– তুই যে কাল অভ্র ভাইয়াকে অপমান
করছি চড় মারলি সে করে চলে গেলো?
আর তুই সব ভুলে গেছিস
নীল– ক্লাসে চলে আসছি ভিতরে চল,,
ওইদিকে
——————–
অভ্র এখনো ঘুমাচ্ছে,, তাই ওকে আকাশ ডাক আর ডাকেনি.
দু’জনে মিলে নিচে চলে গেলো নাস্তা শেষ করে
মিস্টার আর মিসেস চৌধুরীর সাথে বসে কিছু কথা বলতে চাইলো,,,
মিস্টার চৌধুরী– বলো কি বলতে চাও তোমরা?
মিসেস চৌধুরী– হ্যাঁ বাবা বলো কি বলবে তোমরা
আকাশ– আঙ্কেল আমরা একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়ে কথা বলতে চাই…
রাজ চৌধুরী– হ্যাঁ বলো..!
আকাশ– আঙ্কেল অভ্র একটা মেয়েকে
খুব ভালোবাসে আর তার জন্য পাগলামো করেছে
আপনি যদি ব্যাপার টা একটু দেখেন…
রাজ চৌধুরী– মেয়েটা কে??
শুভ– আঙ্কেল মেয়েটার নাম “নীলাঞ্জনা নীল”
রায়হান সরকার এর একমাত্র মেয়ে…
রাজ চৌধুরী– রায়হান সরকার হুমমম
তোমরা এই বিষয়ে অভ্রকে আর কিছু বলো না
আমি দেখছি ব্যাপার টা..
শুভ-আকাশ– ওকে আঙ্কেল
রাজ চৌধুরী অফিসে চলে যায়।
অভ্র ঘুম থেকে ফ্রেস হয়ে নিচে এসে দেখে সবাই নিচে বসে বসে গল্প করছে।
অভ্র কিছু না বলে নিচে গেয়ে নাস্তা করে নিলো,,
আর অফিস চলে গেছে,,
অফিসে গিয়ে দেখে,,, তার বাবা অফিসে নেই..
অভ্র– বাবা কোথায় গেলো? কাউকে কিছু না বলে..
(রাজ চৌধুরী এসেছে রায়হান সরকার এর সাথে কথা বলতে,, রায়হান সরকার এর অফিসে)
ফাহাদ– আসতে পারি স্যার?
রায়হান সরকার- হুম আসো তুবান.!
ফাহাদ– স্যার আপনার সাথে Business Man রাজ
চৌধুরী আপনার সাথে দেখা করতে এসেছে..
উনাকে কি ভিতরে আসতে বলবো?
রায়হান সরকার– হুম হুম আাসতে বলো তুমি তাকে বাহিরে বসিয়ে রেখেছো আসতে বলো..
ফাহাদ — ওকে স্যার.!
পর্ব → ০৮
____________
রায়হান সরকার– হুম হুম আাসতে বলো তুমি তাকে বাহিরে বসিয়ে রেখেছো আসতে বলো..
ফাহাদ — ওকে স্যার.!
ফাহাদ– স্যার আপনার জন্য ভিতরে অপেক্ষা করছে..!
(রাজ চৌধুরী ওকে বলে চলে গেলো রায়হান সরকারের কেবিনে)
রাজ চৌধুরী– আসতে পারি..?
রায়হান সরকার– আরে আরে আসুন না পারমিশন নেওয়ার কি আছে আসুন
(রাজ চৌধুরী ভেতরে আসলেন)
রায়হান সরকার — বসুন
রাজ চৌধুরী– জি ধন্যবাদ,, আমি Actually আপনার সাথে কাজ বাদে পার্সোনাল বিষয়ে কথা বলতে আসছি আমি জানি সেজন্য বাসায় যাওয়া উচিত ছিলো কিন্তু অফিসে চলে এসেছি… I’m Sorry
রায়হান সরকার– না না কোনো সমস্যা নেই,, এসেছেন ভালো করেছেন,, বাড়িতে গেলে হয়তো আমাকে পেতেন না…
পার্সোনাল বিষয়ে কথা বলবেন তাহলে কেবিনের পাশে আমার রুমে বসে কফি খেতে খেতে কথা বলা যাবে!
রাজ চৌধুরী– ওকে সিউর.!
(দুজনে কফি খেলো আর সব কথা রাজ চৌধুরী রায়হান সরকার কে বললেন,,
তারপর তারা দু’জনে ঠিক করলো নীল কে দেখতে যাবে সব ফিক্সড রায়হান সরকার কে বিদায় দিয়ে রাজ চৌধুরী চলে গেলেন)
ওই দিকে কলেজ শেষ হলো…
৪জন এক সাথে বকবক করতে করতে বের হলো..
তানিয়া– জানিস নীল তোকে তো বলাই হয় নাই কালকের রোমাঞ্চকর কথা
নীল– কি রোমাঞ্চকর কথা??
তানজুম– তানিয়া চুপ করবি..
কাজল– রোমাঞ্চকর ঘটনা টা হলো..
(আর বলতে যাবে সাথে সাথেই তানজুম কাজলের মুখ চেপে ধরে)
তানজুম– চুপ আর একটা কথা বলবি তো
নীল– আমাকে কেউ বলবে কিছু
তানিয়া– কাল পার্কে আকাশ ভাইয়া তানজুমকে আমাদের সবার সামনে কিস করে
নীল– কিহহহহহহ
কিন্তু এই আকাশ ভাইয়া টা কে
তানিয়া– নীলললল
( পরে সব খুলে বললো নীলকে কাজল আর তানিয়া আর তানজুম লজ্জায় লাল গোল টমাটু হয়ে গেছে
চল চল যাওয়া যাক কলেজ গেইটের সামনে যাওয়ার পর,,, তানজুম এদিক ওদিক তাকিয়ে কোথায় অভ্রকে দেখতে পেলো না)
তানজুম– দেখ অভ্র ভাইয়া আজ আসেনি..
তানিয়া– সে তো কাল বলেই দিছে সে আর আসবে না…
নীল– আসে নাই ভালোই হইছে,, তাতে এত কথা বলার কি আছে
কাজল– তুই এমন কেনো নীল ভাইয়া তোকে কত ভালোবাসে তোর কি উনার জন্য একটু মায়াও লাগে না নাকি
নীল– না লাগে না,,, ( বলে গাড়িতে উঠে চলে গেছে)
কাজল– যা চলে গেলো…
রাতে….সরকার বাড়ি.!
মিসেস সরকার– নীল খেতে এসো,, তোমার আব্বু ওয়েট করছে তোমার জন্য ডিনার টেবিলে তাড়াতাড়ি আসো আম্মু…
নীল– আসছি মা.!
খাবার টেবিলে__
রায়হান সরকার– আমার কি ইমপোর্টেন্স কথা বলার আছে সবাই খেয়াল করে শুনবে..
নীলকে দেখতে ২দিন পর ছেলের বাড়ি থেকে লোক আসবে,, সময় মতো সব কিছু ঠিকঠাক মতো রেডি করে রাখবে.. ক্লিয়ার
নীল– কিন্তু আব্বু….!
রায়হান সরকার– আমি যা বলেছি মাথায় রাখবে আর একটা কথাও শুনতে চাইনা,, আর চুপচাপ খাও নীল..
রাহেলা সরকার– কিন্তু রায়হান,, যার তার সাথে তো আর মেয়ে বিয়ে দিয়ে দেওয়া যাবে না বাবা.
রায়হান– মা,, চিন্তা করো না আমি সব খোঁজ খবর নিয়েছি সব খুব ভালো মানুষ রাজ চৌধুরী আর উনার ফ্যামিলির সবাই অনেক ভালো.. Don’t Worry
(নীল রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে কান্না করতে লাগলো কারণ সে বিয়ে করতে চায় না)
মিসেস সরকার– নীল কান্না করছিস কেনো সোনা মেয়ে আমার… (নীলের চুলে বিলি কেটে বললো)
নীল শুয়া থেকে উঠে ওর মা কে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগে…
নীল– মা আমি বিয়ে করতে চাই না মা..
বিয়ে করা মানে একটা মেয়ের স্বাধীনতা শেষ
বিয়ে মানে অন্যের অধিনে চলে যাওয়া তার মতো করে বাঁচা নিজের ইচ্ছের দাম না পাওয়া মা আমি এইভাবে বাঁচতে পারবো না,, আমি বিয়ে করতে চাই না নিজের মতো বাঁচতে চাই নিজে কিছু করতে চাই মা প্লিজ আব্বুকে বোঝাও😭
( কান্না করতে করতে নীল এক পর্যায়ে ওর মায়ের কোলে ঘুমিয়ে যায় নীলকে বালিশে শুইয়ে দিয়ে ওর মা চলে যায়)…
সরকার বাড়িতে রায়হান সরকারের কথাই শেষ কথা…
তাই নীলের মা কিছু করতে পারে না মেয়ের জন্য…
ওই দিকে…
নীলকে ভুলে থাকার জন্য সারাদিন রাত কাজের মধ্যে ডুবে আছে অভ্র তবুও সে নীল কে ভুলতে পারছে না..
কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে আসে অভ্র..
বাড়িতে এসে অভ্র অবাক সবাই এক সাথে বসে আছে.
রাজ চৌধুরী– অভ্র রুমে গিয়ে ফ্রেশ হও আর নিচে এসে ডিনার শেষ করে এখানে এসে বসবে তোমাদের সাথে আমার জরুরি কথা আছে যাও তাড়াতাড়ি আসবে..
অভ্র– ওকে বাবা..
অভ্র ফ্রেশ হয়ে ডিনার শেষ করে সবার সাথে গিয়ে বসে হ্যাঁ বাবা বলো কি বলবে..
রাজ চৌধুরী– অভ্র আমি তোমার জন্য মেয়ে দেখেছি আর আমরা সবাই ২দিন পর মেয়েটিকে দেখতপ যাবো পছন্দ হলে আংটি পরিয়ে আসবো।
অভ্র– কিন্তু বাবা আমি এই বিয়ে করতে পারবো না আর আমি কাউকে দেখতে যেতেও পারবো না সরি এই প্রথম বার আপনার কোনো কথার অবাধ্য হচ্ছি কিন্তু আমি পারবো না..( বলে অভ্র নিজের রুমে চলে গেলো)
রাজ চৌধুরী– বোঝাও তোমার ছেলেকে আমরা ২দিন পর যাচ্ছি মানে যাবোই..
মিসেস চৌধুরী– অভ্রকে আমি বুঝাচ্ছি..
মিসেস চৌধুরী– অভ্র শান্ত হো বাবা
— কি করে শান্ত হবো মা আমি ওই মেয়েকে দেখতে যাবো না আর আমি ওই মেয়েকে বিয়ে করবো না
— শোন বাবা শুধু দেখতে যাবি,, , দেখলেই তো আর বিয়ে হয়ে যায় না, শুধু আমাদের সাথে দেখতে যাবি পরে বলে দিবি পছন্দ হয়নি বাস আর মেয়ে নাকি অনেক সুন্দরী প্লিজ বাবা রাজি হয়ে না
— কিন্তু মা
যা বলেছি তাই পরে বাকি আমি তোর বাবাকে বুঝিয়ে বলবো তুই বলবি তোর মেয়ে পছন্দ হয়নি ওকে
— হুম ওকে যাবো তুমি এখন যাও…
অভ্র— নীলললল (এক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে)
.
.
.
.
চলবে….???
“কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ” ❌