#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_২৪
______
মেসেজ সেন্ট করে ফোন বুকের সাথে মিশিয়ে গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে দুই চোখ বেয়ে অনবরত পানি জড়ছে.!
অভ্র সবে মাত্র মিটিং শেষ করে নিজের কেবিনে এসে বসছে সাথে আকাশ ও শুভ…!
আকাশ- ভাই আজকে তুই আঙ্কেল এর সাথে সিলেট চলে গেলে আমরা দু’জন কিছুতেই মিটিং সামলাতে পারতাম না।
শুভ- কারেক্ট ছে….!
নিলয়- কক্ষে প্রবেশ করে…!
নিলয়- অভ্র স্যার…! একটা কথা বলার ছিলো… মনে হচ্ছে খুব ইমপোর্টেন্ট.!
অভ্র- হুম বলো….!
নিলয়- স্যার আপনার ফোনে অনেকগুলো কল আসছে।
অভ্র- কার?
নিলয়- জানি না স্যার আননোন নাম্বার!
অভ্র- তাহলে রেখে দাও…. এখন দেখতে পারবো না পরে দেখবে এমনেই মিটিংয়ের জন্য টায়ার্ড হয়ে গেছি।
শুভ- ওদের নেকামি গুলা দেখে আমার ইচ্ছে করছিলো একটা ঘুসি দিয়ে নাক ভেঙে দিতে এমনিতেই লেইট করে আসছে তার পরে আবার নেকামি শুরু করছিলো।
আকাশ- আমারও সেম শুধু ক্লাইন্ট বলে বেঁচে গেলো।
নিলয়- স্যার সাথে একটা মেসেজ ও আছে আপনি প্লিজ একটু চেক করেন অনেক গুলো কল দিয়েছে আপনি মিটিংয়ে ছিলেন তাই দিতে পারিনি।
অভ্র- উফফ নিলয়! দাও ফোন দাও না দেখা পর্যন্ত তো আবার তুমি ছাড়বে না নাছোড়বান্দা বলি হারি তুমি।
নিলয়- এই যে ফোন!
অভ্র ফোন হাতে নিতেই ৩০মিসড কল…!
দেখে কৌতূহল বসত লক খুলে আগে মেসেজ দেখে।
আননোন নাম্বার- অভ্র প্লিজ হেল্প মি..! (জোরে জোরেই পড়ল অভ্র)
আকাশ- কে হেল্প চাইছে তোর কাছে?
অভ্র- জানি না!
শুভ- তুই ভালো করে নাম্বার টা দেখ!
অভ্র- হুম!
অভ্র– ০১৩৮৬৯৮৭৫**
২বার নাম্বার চেক করার পর।
অভ্র বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়।
আকাশ- কি হয়েছে?
শুভ- কিরে এভাবে দাঁড়ালি কেন?
অভ্র- এই এই নাম্বার তো
আকাশ- কার নাম্বার.!
ওইদিকে দ্বিতীয় লোক- দেখ এখানে থাকা সেফ না আমাগো জানিসই তো ওই ভাঙ্গা বাড়িতে ভূত আছে যার জন্য রাতে এই রাস্তায় রাতে মানুষ আহে না চল পালাই।
প্রথম লোক- ওই ওই ঠিক কইছে চল যাইগা।
সন্যগয়না টাকা তো পাইছিই..!
তৃতীয় লোক- ওই মাইয়ারে আমি…!
দ্বিতীয় লোক- চল চল মাইয়ারে পরে দেখিস আগে ভূতের হাত থেকা তো বাঁচি..!
তৃতীয় লোক- চল..
তিনজনেই লিডারের কাছে যাচ্ছে।
নীল ভূতের কথা শুনে জেনো বরফের মতো জমে গেছে নীল যেই গাছটার নিচে বসে আছে তার পাশেই বাড়িটা…
নীল ওরা যেতেই উল্টো খোলা মাঁঠের দিকে দিলো দৌঁড়…!
দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে আর একটু হলেই পানিতে পরে যেতো সামনে একটা বড় পুকুর,, আশে পাশে শুধু কয়েকটা বড় বড় গাছ অনেক দূরে দূরে তাও…!
রাতের অন্ধকারে তেমন কিছে দেখা যাচ্ছে না।
নীল- আল্লাহ আজ কি সব বিপদ তুমি আমার উপরেই দিয়েছো এখন কোথায় যাবো আমি প্রথমে ওই লোকগুলো পরে ভূত এখন পানি….!
বলে নীল পেছনে ঘুরতেই দেখলো।
কি জেনো একটা ওর দিকে হেঁটে আসছে ছোটো একটা আর চোখে লাইট জ্বলছে।
নীল- ভূতততততততত…! (নীল ভূত ভেবে চিৎকার দিয়ে সেন্সলেস হয়ে সেখানেই পরে যায়)
শুভ- তোতলানো বন্ধ করে বল! কার নাম্বার?
অভ্র- এটা নীল এর নাম্বার! নীল আমাকে এত গুলো কল দিয়েছিলো কেনো আর হেল্প চেয়ে মেসেজেই বা দিয়েছে কেনো নীল তো বাড়িতে…!
আকাশ- তুই সিউর এটা নীল এর নাম্বার?
অভ্র- আমার বউয়ের নাম্বার আমি চিনবো না!
শুভ- তারাতাড়ি কল বেক কর!
অভ্র তারপর সাথে সাথেই কল বেক করে।
কিন ফোন বন্ধ?
(নীল পরে যাওয়ায় ওর হাত থেকে ফোনটাও পরে বন্ধ হয়ে যায়)
অভ্র- ওর ফোন বন্ধ বলছে। কেবিনের মধ্যে পায়চারি করছে আর বার বার কল দিচ্ছে।
শুভ- আন্টিকে কল দে…!
অভ্র সাথে সাথে মিসেস চৌধুরী কে কল দেয়।
মিসেস চৌধুরী কল রিসিভ করতেই।
অভ্র- মা নীল কোথায় ওর ফোন বন্ধ কেনো?
মিসেস চৌধুরী- নীল কে বেয়াই বেয়ান নিতে আসছিলো ওদের বাড়ি গেছে।
অভ্র- কি আমাকে বলো নি কেনো আগে?
মিসেস চৌধুরী আর কিছু বলার আগেই অভ্র কল কেটে দেয়!
অভ্র- নীল আমাদের বাড়িতে নেই ওদের বাড়িতে গেছে।
আকাশ- তাহলে রিলাক্স থাক!
শুভ- রিলাক্স কিভাবে থাকবে ভাবি ওখানে থাকলে অভ্রকে এতগুলো কল + ওই মেসেজ কেনো দিতো অভ্র তুই আঙ্কেল কে কল দে!
অভ্র মিস্টার সরকার কে কল দিয়। দুইবার রিং হওয়ার পর মিস্টার সরকার কল রিসিভ করেন রাত এখন ১১টার একটু বেশি বাজে…!
মিস্টার সরকার- হ্যালো বাবা বলো এত রাতে কল দিলে?
অভ্র- বাবা আপনি আমার সাথে নীলের….
আর কিছু বলতে না দিয়ে মিস্টার সরকার বললেন।
মিস্টার সরকার- নীল তোমাকে সব বলে দিয়েছে?
অভ্র- কি বলবে?
মিস্টার সরকার- কি জানি বাবা আমি তো জানি না। অনেকবার জিজ্ঞেস করেছিলাম বলেছিলো শুধু তোমাকে বলবে তোমাকে জানাতেই হবে।
অভ্র- ও এজন্যই কল দিয়েছিলো।
মিস্টার সরকার- হ্যা অনেক ইমপোর্টেন্ট কথা নাকি বলবে অনেক টেনশনেও ছিলো।
অভ্র- আচ্ছা নীল এখন কোথায় ফোন বন্ধ কেনো?
মিস্টার সরকার- কি বলো তুমি নীল তো রাতে না খেয়েই ডিনার টেবিল থেকে উঠে যায় তোমাদের বাড়ির উদ্দেশ্য বেরিয়েছে তোমাকে কি জেনো বলতেই হবে।
অভ্র- আপনাদের বাড়িতে নেই।
মিস্টার সরকার- নাহ,, নীল তোমাদের বাড়িতে যায়নি তো কোথায় গেলো আমার মেয়ে?
অভ্র- না না বাবা নীল আমাদের বাড়িতে পৌছে গেছে আমি এখনো অফিসে আর মা বলেছিলো আপনাদের সাথে নীল আসছে তাই আপনাকে কল দিলাম টেনশন করবেন না আমি এখনি বাড়ি যাচ্ছি।
মিস্টার সরকার- আচ্ছা বাবা রাখি আমার মেয়ে এতদিন পরে এসেও থাকতে পারেনি তোমার জন্য চলে গেছে ওকে নিয়ে একদিন এসে কেমন আমাদের ও ভালো লাগবে।
অভ্র- জি বাবা।
আকাশ – কি হলো ব্যাপারটা?
অভ্র- নীল ওদের বাড়িতেও নেই আমাকে কি একটা ইমপোর্টেন্ট কথা বলার জন্য নয়টার আগেই সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরে কিন্তু আমার বাড়ি পর্যন্ত নীল পৌঁছায় নাই রাস্তায় নীল এর কোনো বিপদ হয়েছে নীল আমাকে বলেছিলো নীল যদি কোনো দিন বিপদে পরে তাহলেই আমাকে কল দিবে তর আগে কল দিবে না আর আজ নীল সত্যি সত্যি বিপদে পরেই আমার কাছে হেল্প চেয়েছে আর আমি বলেই চিৎকার দিয়ে টেবিলের উপর সব ফেলে দেয় ফাইল টেবিল ল্যাপ আরও সব কিছু নিচে পরে যায়।
অভ্র- আমার নীল এর যদি কিছু হয় আমি সব কিছু তছনছ করে দিবো বলেই জরে একটা হুংকার দিয়ে নিচে বসে পরে…!
অভ্র ক্ষিপ্ত বাঘের মতো হয়ে আছে রাগে মুখ নাক লাল হয়ে গেছে
চোখ দুটো রক্ত বর্ণ ধারণ করেছে।
আকাশ- তুই শান্ত হো আমরা নীলকে খুঁজে পেয়ে যাবো চল আমরা নীলকে খুঁজি গিয়ে।
শুভ- আকাশ ঠিক বলেছে অভ্র এখানে বসে সব ভেঙে তছনছ করার থেকে গুরত্বপূর্ণ কাজ আমাদের এখন ভাবিকে খোঁজা…!
নিলয়- ভাবির লাস্ট ফোনের লোকেশান চেক করে আমরা জানতে পারবো ভাবির ফোন কথায় বন্ধ হয়েছে।
আকাশ- আমি টের্ছ করছি…!
অভ্র উঠে দৌঁড়ে কেবিন থেকে বের হলো। সব স্টাফ রা অভ্রর দিকে তাকিয়ে আছে ওকে দৌঁড়াতে দেখে অভ্রর পেছনে আকাশ, আকাশের পেছনে শুভ আর শুভর পেছনে নিলয়।।
স্টাফরা– স্যাররা এভাবে দৌঁড়াচ্ছে কেনো?
সব ওদের মাথার উপর দিয়ে গেলো।
অভ্র ড্রাইবিং সিটে বসতে গেলেই…!
নিলয়- স্যার গাড়ি আমি চালাচ্ছি আপনি পেছনে বসেন শান্ত হয়ে।
অভ্র আকাশ শুভ পেছনে বসে।
নিলয় গাড়ি চালাচ্ছে।
আকাশ- নীলের ফোনের লাস্ট লোকেশান কড়োই তলা দেখাচ্ছে তিন রাস্তার মোড়ে….!
নিলয়- আমি গাড়ি সেদিকেই নিচ্ছি.!
কড়োই তলা বলা হয় এই জায়গা টাতে বড় কড়োই গাছ সাথে তিন রাস্তা তাই কড়োই তলা তিন রাস্তার মোড়….! (আমাদের এখানে এই গাছের নাম এটাই তাই আমি এই নামই লিখছি)
৩০মিনিটের মধ্যে গাড়ি কড়োই তলা কড়োই গাছের নিচে থামে…!
.
.
.
#চলবে …..?
.
রি-চেইক করা হয়নি ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন!
ভালো থাকবেন সবাই!
“হ্যাপি রিডিং”………
.
“কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ”……… ❌