প্রজাপতির_রং🦋 Part_37

0
918

প্রজাপতির_রং🦋
Part_37
#Writer_NOVA

পূর্ব দিগন্তে সূর্য মামা উঁকি দিয়েছে বহু আগে । উঠবে উঠবে করে শেষ পর্যন্ত সূর্য উঠে তার কিরণে সারা পৃথিবীকে আলোকিত করে ফেলেছে ।বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাপ-বেটার জন্য অপেক্ষা করছি আমি। ঘন্টাখানিক হলো তারা একসাথে জগিং করতে বের হয়েছে। তায়াং ভাইয়ার সাথে মিনিট খানিক আগে কথা হলো।তারা নাকি তাদের গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে। আজ তায়াং ভাইয়ার দাদীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।তার জন্য তায়াং ভাইয়ার বাবা-চাচা ও ফুপিরা মিলে গ্রামের বাসায় মিলাদের আয়োজন করছে।তায়াং ভাইয়া অবশ্য বিকালে চলে আসবে।আজ সন্ধ্যায় এনাজ যে পার্টির আয়োজন করছে সেখানে তায়াং ভাইয়া না থাকলে তো এনাজ পুরো তুলকালাম কান্ড বাঁধিয়ে ফেলবে।তায়াং ভাইয়ার দাদীর কথা মনে হতেই চোখ দুটো টলমল করে উঠলো। উনি মানুষ হিসেবে অনেক ভালো ছিলেন।আমি যখন তায়াং ভাইয়াদের বাসায় থেকে পড়াশোনা করতাম তখন প্রায় তিনি গ্রাম থেকে ঢাকায় আসতেন।আমায় ও তন্বীকে কখনও আলাদা চোখে দেখেননি।তন্বী হলো তায়াং ভাইয়ার ছোট বোন।আমার থেকে এক বছরের ছোট তন্বী।আমার একটা মাত্র খালামণির একটা ছেলে ও একটা মেয়ে। তানভীর রহমান ওরফে তায়াং ও তন্বী রহমান।তন্বীর বিয়ে হয়ে গেছে বছর দুই আগে।ওর হাজবেন্ড বেসরকারি এক ব্যাংকের কর্মকর্তা।ওর এক বছরের একটা মেয়েও আছে। দাদীর কথা মনে হতেই আমার স্মৃতির পাতায় ঝলমল করে উঠলো একটা দিন।

ফ্লাশব্যাক………….❣️

আজ সারা বাড়ি একটা গোছানো পরিবেশ।হবেই তো। আজ যে তায়াং ভাইয়ার দাদী আসেছে গ্রাম থেকে।উনি বেশিরভাগ সময় গ্রামেই থাকেন তার ছোট ছেলের সাথে। ডাক্তার দেখাতে কিংবা বেড়াতে মাঝে মাঝে আসেন।উনি মানুষটা খুব ভালো।অন্য দশজনের মতো খিটখিটে মেজাজের নয়।খালামণিকে অনেক ভালোবাসেন।তায়াং ভাইয়া আর তন্বী তো দাদী বলতেই অজ্ঞান।আমাকেও অনেক আদর করেন তিনি।তন্বী কলেজে গেছে।আমার আজ যেতে ইচ্ছে করেনি।তাই বাড়িতে।দাদী সোফায় বসে পান সাজাচ্ছেন। আমি খালামণির সাথে টুকটাক কাজে সাহায্য করছি।তখুনি কলিংবেল বেজে উঠলো।এখন নিশ্চয়ই তায়াং বজ্জাত ছেমরায় আসছে।ও ছাড়া আর কে হবে।দাদী সোফা থেকে হাঁক ছারলো।

দাদীঃ বড় বউমা,দেখো কে এসেছে? নিশ্চয়ই আমার দাদুভাই হবে।কতক্ষণ ছেলেটা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে।জলদী খুলে দেও।আমি তো একা উঠতে পারবো না। জানোই তো বাতের ব্যাথা।উঠলে বসতে পারি না। বসলে উঠতে পারি না।

খালামণিঃ দিচ্ছি মা।আমার হাতে রক্ত লেগে আছে।মুরগী কাটছি।(আমার দিকে তাকিয়ে) নোভা,যা তো গিয়ে দরজাটা খুলে দিয়ে আয়।

আমিঃ যাচ্ছি খালামণি।

হাতের থেকে আলুর ঝুড়িটা রেখে ওড়নায় হাত মুছতে মুছতে দরজার সামনে গেলাম।সিটকিনি খুলে দিতেই দেখলাম,দরজার অপাশে তায়াং ভাইয়া হাতের আঙুলের ডোগায় বাইকের চাবি ঘুরাচ্ছে।এমন একটা ভাব যেনো কোন নবাবী কাজ সেরে নবাব পুত্তর এসেছে। সাথে মিস্টার আনাইজ্জা কলার দেখা পেলাম।এ লোকটা এখানে কি করছে?নিশ্চয়ই তায়াং ভাইয়ার মুখে শুনেছে বাসায় আজ ভালো-মন্দ রান্না হবে।ওমনি ছোচার মতো খেতে চলে এসেছে। একে নিয়ে আর পারি না বাপু।আসছে তো ভালো কথা।এখন তো বাটারফ্লাই, বাটারফ্লাই বলে কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলবে।মাঝে মাঝে এদের ওপর ভিষণ রাগ হয় আমার।কিন্তু রেগেও লাভ নেই। এই দুটো হলো তিতা বেহায়া।

তায়াংঃ কি রে দরজা থেকে সরবি?নাকি এভাবেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শো অফ করবি?আমরা তোকে দেখতে ইচ্ছুক নয়।সামনে থেকে সর।ভেতরে ঢুকতে দে।মুখটাকে এমন পেচার মতো করে রেখেছিস কেন?

আমিঃ চোখের মাথা কি খেয়েছিস?আমি কখন মুখ পেচার মতো করে রাখলাম?তোরা ভেতরে ঢুকে যা।মানা করছে কে?

তায়াংঃ তোর মতো একটা হাতি পুরো দরজা দখল করে রাখলে ঢুকবো কোথা দিয়ে?

আমিঃ নিজেদের দিকে একটু তাকা।তাহলে দেখতে পারবি কে হাতি?

তায়াংঃ বকবক না করে সর তো।আমার ডার্লিংয়ের সাথে দেখা করতে দে।তোর জন্য ৩ মিনিট ২৭ সেকেন্ড দেরী হয়ে গেলো।আমার ডার্লিং কোথায়?

আমিঃ এ্যহ আইছে।সারা সকাল খবর ছিলো না। আর এখন আসছে ডার্লিং। দাদীকে তোর সাথে কথা বলতে মানা করবো।

তায়াংঃ যা করার কর।আমার ডার্লিং আমার সাথে কথা না বলে থাকতেই পারবে না।

কথাগুলো বলে হাতের কনুই দিয়ে আমার কাঁধে ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেল তায়াং ভাইয়া।আমি হালকা একটু ব্যাথা পেয়েছি। সেদিকে ঐ বেডার খেয়াল নেই। সে নিজের মতো ভেতরে ঢুকে গেল। আমি হাত দিয়ে ব্যাথার স্থানে ডলতে ডলতে সামনে তাকালাম। এতক্ষণ আমাদের দুই ভাই-বোনের মাঝে এনাজ একটা কথাও বলেনি।চুপচাপ শুনছে আর মিটমিট করে হাসছে।সেও তায়াং ভাইয়ার পিছু পিছু চলে গেল।এতে আমি বেশ অবাক হলাম।সূর্য আজ কোনদিক দিয়ে উঠছে।মিস্টার আনাইজ্জা কলা আমাকে কিছুই বললো না। অন্যদিন হলে তো এই পাঁচ মিনিটে দশবার তার মুখে বাটারফ্লাই শব্দটা শুনে ফেলতাম।ধূর,যা খুশি তা করুক। আমার কি?মুখ ভেংচি মেরে রেগে দরজা আটকিয়ে ওদের সামনে গেলাম।সোফার কাছে যেতেই তায়াং ভাইয়া জোরে চিৎকার করে বললো।

তায়াংঃ ও সুন্দরী, কখন এলে?নতুন কোন প্রেমিক পাইছো নাকি সুন্দরী? এসে আমার খোঁজও নেও না।

কথাগুলো বলতে বলতে দাদীকে জড়িয়ে ধরলো।দাদী তায়াং ভাইয়ার কান টেনে বললো।

দাদীঃ আমি নতুন প্রেমিক পাইছি নাকি তুই নতুন প্রেমিকা পাইছিস দাদাুভাই?সেজন্য তো এই বুড়ির খবর নেওয়ার প্রয়োজনও মনে করিস না।

তায়াংঃ আহ ছাড়ো।লাগছে তো।

দাদী ভাইয়ার কান ছেড়ে দিলো।কান ছেড়ে দিতেই ভাইয়া দাদীর কপালে একটা চুমু খেয়ে বললো।

তায়াংঃ নাগো ডার্লিং।তোমার মতো আজও কাউকে পেলাম না।তাই তো প্রেম করতে পারিনি।সুন্দরী তুমি কি যে বলো না।

আমিঃ ভাইয়া তুই কি বললি? আবার বল, আবার বল।তুই আজও কাউকে পাসনি🤨?

তায়াংঃ তুই এখানে কি করিস?যা কাজে যা।তুই হলি কুটনি বুড়ি। নির্ঘাত এখন আমার সাথে আমার সুন্দরীর ব্রেকআপ করার ধান্দায় আছিস।যা ভাগ।

আমিঃ সব শোধ তুলে রাখলাম।সময় হলে সুদসহ ফেরত দিবো।মনে রাখিস😏।

তায়াংঃ যা যা ভাগ।

🦋🦋🦋

এনাজ বহু বছর থেকেই এই বাসায় আসা-যাওয়া করে।তায়াং ভাইয়ার জানে জিগার দোস্ত বলে কথা।সেই সুবাদে বহু আগের থেকেই দাদী এনাজকে চিনে।তাছাড়া দাদীর সাথে এনাজের বেশ ভাবও আছে।আমি এগুলো সকালে খালামণির থেকে জেনেছি। কাজ করতে করতে এটা ওটা প্রশ্ন করতে করতে এনাজের কথা উঠেছিলো।তখন খালামণি বলেছে।

এনাজঃ আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছো ডার্লিং?এক নাতি পেয়ে আমাকে দেখছি ভুলেই
গেছো😒? হুম ভালো ভালো।(মুখ গোমড়া করে)

দাদীঃ আরে আমার এনাজ ডার্লিং যে।তা কবে ফিরলে বিদেশ থেকে? তোমাকে কি আমি ভুলে যেতে পারি?আমার কত হ্যান্ডস্যাম বয়ফ্রেন্ডটা,একে ভুলে গিয়ে নিজে ঠকবো নাকি।

এনাজঃ হয়েছে হয়েছে আর বলতে হবে না।

আমিঃ দাদী তুমি ভালোই পাম মারতে পারো।জিও দাদী জিও।তোমার পাম মারার তারিফ করতে হয়।তবে চোখ দুটো আবার নষ্ট করো না। জঙ্গলের আনাইজ্জা কলাকে তুমি হ্যান্ডসাম বলছো।কি পরিমাণ তেল যে তুমি মাখতে পারো তা তুমি নিজেও জানো না। (মনে মনে)

মনে মনে কথা বলে নিজেই মুখ টিপে হাসতে লাগলাম।এনাজ সামনে গিয়ে দাদীকে জড়িয়ে ধরলো। তায়াং ভাইয়া তো সে কখন টুপ করে দাদীর কোলে মাথা রেখে লম্বা হয়ে সোফায় শুয়ে পরেছে।দাদী ওর মাথায় খুব যত্ন সহকারে বিলি কেটে দিচ্ছে।আমাকে হাসতে দেখে তায়াং ভাইয়া হুংকার ছারলো

তায়াংঃ তুই এখনো সরিস নি।দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি করছিস?তোকে না এখান থেকে যেতে বলছি।নিশ্চয়ই আমাদের এভাবে দেখে হিংসে হচ্ছে। তাই মনে মনে শয়তানি বুদ্ধি খিচুড়ি পাকাচ্ছিস।

আমিঃ হু হু আমার তো বয়েই গেছে। সবাইকে নিজের মতো ভাবিস না।তোর হিংসে হয় বলে যে আমার হবে এমন কোন কথা নেই। তাছাড়া তোর আগে আমি দাদীর আদর নিয়েছি।(দাদীর দিকে তাকিয়ে) দাদী, ওর চুলে বিলি না কেটে কয়েক গোছা চুল ছিঁড়ো তো।সবসময় আমার সাথে লেগে থাকে।মাথার চুল ছিঁড়লে যদি ঐ গোবর মাথায় একটু বুদ্ধি খুলে।আর সবাইকে নিজের মতো ভাবা বন্ধ করে।

দাদীঃ তোরা এখনো সেই ছোটবেলার মতো লেগে থাকিস?একটুও বদলাসনি।

তায়াংঃ এই শাঁকচুন্নি জীবনে বদলাবেও না।

আমিঃ একদম শাঁকচুন্নি বলবি না ভাইয়া।ভালো হবে না কিন্তু। (রেগে)

তায়াংঃ যা ভাগ চোখের সামনে থেকে। এখন তো তুই আরো দূর্বল হয়ে গেলি নোভা।আমাদের দলের আরো একজন সদস্য বেড়ে গেলো।আব তেরা কেয়া হোগা কালিয়া।(শয়তানি হাসি দিয়ে)

আমিঃ যা যা মুড়ি চাবা তুই। এই নোভা একাই একশো।কাউকে দরকার নেই আমার।আর দাদী কিন্তু বলে নি তোর দলে।তাই এতো খুশি হইস না।

তায়াংঃ আমার সুন্দরী আমার দলেই থাকবে।তা আর কষ্ট করে বলতে হবে না।তাই এখন তুই গিয়ে মনের দুঃখে মুড়ি চাবা।(শয়তানি হাসি দিয়ে)

আমিঃ হু হু😏।আসছে দল নিয়া।চল ফট এখান থেকে।

তায়াংঃ তুই ফট।

দাদীঃ থামবি তোরা।দুদিন পর বিয়ে হলে বাচ্চার বাবা-মা হয়ে যাবি।আর এখন নিজেরাই ঝগড়া করিস।

এনাজঃ কি শুরু করলা তোমরা?বাটারফ্লাই, যাও এক গ্লাস ঠান্ডা পানি নিয়ে এসো তো।

আমিঃ ঠান্ডা পানি দিয়ে কি করবেন আপনি?

এনাজঃ দুটোর মাথায় ঢালবো।কি বাচ্চাদের মতো বিহেভ করছো তোমরা দুজন।

আমিঃ ওরে আল্লাহ রে! কত ভালো মানুষ। দাদীর সামনে ন্যাকা সাজা হচ্ছে। কিছুই বুঝে না।উনি এমন একটা ভাব করছে, এই প্রথম আমাকে আর তায়াং ভাইয়াকে এভাবে লেগে থাকতে দেখলো।দুটোর একটাকেও আমি ছারবো না বলে দিলাম।সুযোগ আমারও আসবে।এখন শুধু দাদী আছে বলে আমিও ভালো মেয়ে সেজে আছি।(মনে মনে)

এনাজঃ কি বললাম, দাঁড়িয়ে আছো কেন যাও।তোমাদের মাথায় ঢালার জন্য না আনো।আমার খাওয়ার জন্য তো এক গ্লাস পানি আনো।বড্ড তেষ্টা পেয়েছে।

তায়াংঃ কাকে কি বলছিস?ও নিজে এক গ্লাস পানি ঢেলে খায় নাকি তার সন্দেহ। আর তুই ওকে পানি আনতে বলছিস।ওর আশায় থাকলে, তুই তেষ্টায় বুকের ছাতি ফেটে মরবি।

আমি কটমট করে তায়াং ভাইয়ার তাকিয়ে কিচেনে চলে গেলাম।সেখান থেকে দুই গ্লাস লেবু শরবত বানিয়ে নিয়ে এলাম।টি-টেবিলের ওপর ট্রে রেখে তার পাশে দাঁড়ালাম।

তায়াংঃ আমি কি সঠিক দেখছি😮?তুই আমাদের জন্য শরবত করে এনেছিস।আল্লাহ আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। এনাজ আমাকে একটা চিমটি কাট তো।তবে আমি সিউর, নিশ্চয়ই তুই এর মধ্যে কিছু মিশিয়েছিস।নয়তো এনাজ একবার বলতেই ছুটে গিয়ে নিয়ে আসতি না।

আমিঃ দেখছো দাদী, দেখছো।এর জন্য বলে কারো ভালো করতে নেই। আমি ভালো বলে ওদের জন্য শরবত করে আনলাম।আর কুত্তাটা আমাকে সন্দেহ করছে।এসব কি সহ্য করা যায় তুমিই বলো।

দাদী কোন উত্তর দিলেন না।মিটমিট করে হাসতে লাগলেন।এনাজ ইতিমধ্যে গ্লাস খালি করে ফেলছে।গ্লাসের শরবত টুকু শেষ করে একটা ঢেকুর তুলে আমার দিকে তাকিয়ে একটা ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে বললেন।

এনাজঃ তোমার হাতের লেবুর শরবত আর চায়ের কোন জুড়ি নেই। আমি সারাদিন খেয়ে থাকতে পারবো।তোমার হাতে সত্যি জাদু আছে বাটারফ্লাই।

তায়াংঃ হইছে এত সুনাম করিস না।অলরেডি ফুলে ঢোল হয়ে গেছে। আরো ফুলালে ফেটে যাবে।এরকম শরবত না আমি চুটকি তেই বানাতে পারি।শরবত বানানো আহামরি কোন কাজ নয়।

আমার ইচ্ছে করছে তায়াং বজ্জাতটার মাথা ফাটাতে।ও নিজেই আমার হাতের বানানো জিনিস পছন্দ করে।কিন্তু জীবনে স্বীকার করে না।আর এনাজ তো আমার বানানো চা ও শরবত দুটোর পাগল।দুপুরে এলে মাস্ট ওর আমার হাতের শরবত,আর বিকেলে এলে আমার হাতের চা লাগবেই। যেই পর্যন্ত আমি না বানিয়ে খাওয়াবো।ততক্ষণ এই বাসা থেকে এনাজ যাবে না।

মনে মনে তায়াং ভাইয়াকে কতগুলো কথা শোনানোর প্রস্তুতি নিলাম।কিন্তু তার আগেই কিচেন থেকে খালামণির ডাক আসতেই আমি মুখ ঝামটা মেরে সেদিক চলে গেলাম।এই ছেমরা আমার মুডটাই নষ্ট করে দিছে।আমি চলে যেতেই তিনজন হো হো করে হেসে উঠলো। যার কারণটা আমি খুঁজে পেলাম না।হঠাৎ এদের কি হলো, আর কিসের জন্য হাসলো তা আমার জানা নেই। আমি জানতে চাইছিও না।মাথা থেকে সবকিছু ঝেড়ে ফেলে কিচেনের কাজে মনোযোগ দিলাম।

ফ্লাশব্যাক এন্ড………..❣️

চোখের কোণ বেয়ে টুপ করে দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরলো।মানুষটার স্মৃতি আছে কিন্তু মানুষ নেই। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে।ওড়না দিয়ে চোখ মুছে নিলাম।এরিন,হিমি এখনো উঠেনি।সকাল সকাল এনাজ এসে বলে সে নাকি ছেলেকে নিয়ে হাঁটতে বের হবো।আমিও মানা করলাম না।বাবা-ছেলের এখন একসাথে থাকা উচিত। রাস্তার পাশে চোখ পরতেই দেখি দুজন জগিং করতে করতে এদিকেই আসছে।বাবা-ছেলের পরনে একিরকম জগিং স্যুট, একি রকম জুতো।নাভানের জিনিসপত্র এনাজ আসার সময় নিয়ে এসেছে। আমার কাছে দুজনকে মনে একজন সিনিয়র এনাজ আরেকজন জুনিয়র এনাজ।পাশাপাশি আসছে দুজন।দৃশ্যটা দেখে মুহুর্তে মনটা ভালো হয়ে গেলো। এক ধ্যানে তাদের দিকে তাকিয়ে রইলাম। দুজনকে একসাথে দেখতে ভীষণ ভালো লাগছে ।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here