গ্রামের ছেলেটি -(পর্ব- ১৮ তম)

0
338

#গ্রামের_ছেলেটি

পর্ব- ১৮ তম

স্বপন

অনেক দিন পর বাড়িতে আসলাম, গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির দিকে রওনা হওলাম,,,

বাড়িতে এসে দেখি মা উঠোন ঝাড়ু দিচ্ছে আমি তাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরি,,

আমিঃ মা কেমন আছো,,,,
মাঃ আরে শিমুল বাবা তুই কেমন আছোত, এতোদিন পর মায়ের কথা মনে পড়লো বুঝি,,,
আমিঃ না মা আসতে তো চাই কিন্তু পড়ের কাজ করি চাইলেই কি আর আসা জায় বলো, মা তোমার শরির এতো গরম কেন দেখি,,
মাঃ আমার কিছু হয় বাবা,
সুমাঃ আরে চাইয়া কেমন আছো,,,,( রান্নাঘর থেকে আমার কথা শুনে বেরিয়ে আসে)
আমিঃ ভালো তুই কেমন আছিস আর তোর পড়াশোনা কেমন চলছে,,,
সুমাঃ ভালো ভাইয়া,, ভাইয়া মা মিথ্যা বলছে , মার শরিরে অনেক জর আমি বললাম কাজ না করতে তারপর ও মা করছে,,
আমিঃ কি বলিস ডাক্তার দেখাবেনা, কি কর যে মা চল,,তোমাকে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাই।

মা যেতে চাইছিলো না আমি তাকে জোর করে নিয়ে গেলাম,, সুমাকে বাসায় রেখে,,, মাকে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ কিনে মাকে নিয়ে চলে এলাম । বাড়ি এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে একটু হাটতে বেরুলাম। অনেক দিন ধরে এলাকায় আসা হয় না, ছোট বেলায় কত খেলাধুলা করেছি। এক সাথে কত ছেলে মেয়ে ছিলাম তারা এখন একাক জন একাক জায়গায় আছে। কেউ বিয়ে করেছে, আবার কেউ বিদেশ চলে গেছে, কেউ দুর্ঘটনায় আমাদের ছেড়ে চলে গেছে না ফেরার দেশে।

হাটতেছি আর এসব ভাবছি সামনে দেখি একটা চায়ের দোকান আমি সেখানে চলে গেলাম,

আমিঃ আসসালামু আলাইকুম কাকা কেমন আছেন,,,, (রিন্টু কাকা)
রিন্ট কাকাঃ ওলাইকুম আসসালাম,, ভালো তুই কেমন আছোত,,,
আমিঃ জি আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো,,
রিন্টু কাকাঃ তা কখন এলি,,
আমিঃ এই তো আজকেই এলাম, ,,তা কাকা লোকজন দেখছি না কেমন যে ফাকা ফাকা লাগছে,,,
রিন্ট কাকাঃ আর লোকজন সবাই যার যার কাজে এদিক সেদিক চলে গেছে, কেউ বিদেশ কেউ তোদের মতো চাকরি নায় তো ব্যবসায় নিয়ে ব্যস্ত।

এক সময় এই দোকানে কত আড্ডা দিয়েছি, সবাই মিলে,,আগের মতো আর নেই সময় এর সাথে সাথে মানুষগুলো পালটে গেছে। ,আর কিছু কথা বলে চলে আসলাম,,

আমিঃ আরে সোহেল ভাইয়া যে কেমন আছেন,,,
সোহেল ভাইয়াঃ ভালো তুই কেমন আছোত, সুমার কাছে শুনলাম তুই এসেছিস,,,
আমিঃ ভালো ভাইয়া,,,
সোহেল ভাইয়াঃ যাক তুই এসেছিস ভালোই হয়েছে পরে নিরিবিলি বসে কথা হবে আমার আবার একখানে যেতে হবে।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।।

সোহেল ভাইয়া রাইসার চাচাতো ভাই,।

সন্ধ্যার সময় মামাদের বাসায় গেলাম,,গিয়ে দেখি মামি আর মামাতো বোন কলি আপু ঘরে বসে টিভি দেখছে,। আমি গিয়ে মামিকে সালাম দিলাম তিনি সালামের উত্তর দিলো,,,

আমিঃ মামি কেমন আছেন,,,
মামিঃ ভালো বাবা তুই কেমন আছোত,
আমিঃ ভালো,,,মামা কোথায় মামাকে দেখছি না।
কলি আপুঃ কিরে শিমুল কেমন আছোত, তুই দেখি অনেক বড় হয়ে গেছিস তাই এখন আর আপু চোখে পড়েনা বুঝি,,

আমি আপুর কাছে গিয়ে,,

আমিঃ আপু,, ভালো তুমি কেমন আছো,তুমি এখানে কবে এলে,,,
আপুঃ এই তো ২ দিন হলো কাল আবার চলে যাবো,,,
আমিঃ কেন আপু কাল তোমার যাওয়া হবে না,কাল তুমি আমাদের বাড়ি যাবে,,অনেক দিন তোমার সাথে কথা হয় না,।
আপুঃ না রে তোর দুলাভাইর কাজের সমস্যা হয়।
আমিঃ দুলাভাই ও আসছে,,কোথায়,,
আপুঃ তার মেয়েকে নিয়ে বেরিছে সেই বিকেলে এখনো খবর নেই,,,,তা ফুফু কেমন আছে রে আর সুমা,,,
আমিঃ মায়ের শরির টা একটু খারাপ করেছে,,,,

মামিঃ কি বলিস ডাক্তার দেখাইছোত,,
আমিঃ ডাক্তার দেখিছি আসে,,

তারপর আপুর সাথে আরো কিছু ক্ষন গল্প করলাম। দুলাভাইরা চলে আসেছে তাদের সাথে কথা বলি।অনেক রাত হয়ে গেছে তাই তাদের বলে চলে আসা দিলে আমাকে না খেয়ে আসতে দিবে না। তারপর রাতের খাবার খেয়ে চলে এলাম বাড়ি,,,

বিকেলে ফয়সালদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছি হটাৎ ফয়াসাল ডাক দিলো, আমরা এক সাথে খেলাধুলো করতাম,,এখন মনে হয় ও একাই বাড়ি আছে, আর আমরা দূরে।

আমিঃ কিরে ফয়সাল কি খবর তোর,
ফয়সালঃ ভালো তোর কি খবর কতদিন পর এলি,,
আমিঃ হ্যা রে, কাকা,কাকি এরা কেমন আছে,,
ফয়সালঃ ভালো আছে,,

ফয়সালের সাথে অনেক আড্ডা দিলাম,
বেশ কিছু দিন কেটে গেলো বাড়িতে,,,

সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে একটু হাটার জন্য বেরোই। সকাল সকাল হাটলে ভালোই লাগে, সোহেল ভাইয়ার সাথে দেখা তিনি তাদের বাড়ি নিয়ে গেলো,, তাদের বাড়িতে অনেক লোকজন এসেছে মনে হয় বিয়ে কারো, সোহেল ভাইয়াকে তার বাবা ডাক দিলো সে চলে গেলো আমার তাদের বাড়িটাকে ঘুরে দেখছি,।

বাড়িটায় নতুন করে রঙ করেছে,,,
হটাৎ পিছনে কারো আয়াজ শুনতে পেলেম, আমি শুনে চমকে উঠি,,,,তাকিয়ে দেখি রাইসা,

আমিঃ কিরে এভাবে কেউ করে,,,
রাইসাঃ কেন ভয় পেলি বুঝি,,,,
আমিঃ তুই এলি কবে দেখাও করলিনা,,
রাইসাঃ রাতে এসেছি তাহলে কিভাবে দেখা করবো শুনি,,
আমিঃ ওহ আচ্ছা এসব কিছু কি তোর বিয়ের,,,
রাইসাঃ মানে আমার কিসে বিয়ে,, আমি আবার কখন বললাম আমার বিয়ে।
আমিঃ মানে তাহলে সেদিন যে,,,
রাইসাঃ দাড়া দাড়া তুই খুলে দেখিস নি সেটায় কি লেখা, আরে ইসরাত আপুর বিয়ে,,
আমিঃ আরে কিভাবে দেখবো রাকিব তো শুনে রেগে মেগে ছুড়ে ফেলে দিলো,,,,
রাইসাঃ তার মানে রাকিব ভেবেছে আমার বিয়ে,,,
এই কথা শুনে রাইসার মুখ ব্যাজার হয়ে গেলো,।

আমিঃ কিহলো,,, আচ্ছা কিছু চিন্তা করিস না আমি রাকিবকে আনার ব্যবস্থা করছি,,,,

রাকিব কে ফোন করি কিন্তু রাকিব ফোন উঠায় না,,,আমি রাইসাকে বলি। শুনে মন খারাপ করে বসে থাকে,,,

আমিঃ কি হয়েছে,,এভাবে মন খারাপ করে আছিস কেন বললাম তো আমি ওকে যেকরে হক এখানে এনে ছাড়বো,,
রাইসাঃ যদি না আসে,,আমি এদিকে মনে করেছি বাবাকে এই বিয়েতে আমাদের কথা বলব।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখছি কি করা যায় ঠিক আছে,,,,

রাইসাদের বাড়ি থেকে চলে এলাম,, রাকিবের কল এলো,,

আমিঃ হ্যালো,,
রাকিবঃ কেমন আছোত বাড়িতে গিয়ে তো ভুলেই গেলি কোন খোঁজ নেই,,।
আমিঃ দাড়ান ভাই আমার খবর নেই নাকি আপনার ফোন করলাম ধরলেন না যে,,,,
রাকিবঃ ফোন কাছে ছিলো না,,, পরে এসে দেখি তোর কল,,
আমিঃ হুম,, এখন রাইসার বিয়ে তা তুই আসবি না,,
রাকিবঃ ভাই তুই কি বন্ধু নাকি শত্রু তুই যানোস আমি,,,
আমিঃ কিন্তু রাইসা তো অনেক খুসি,, এখন তুই যদি এভাবে বকার মতো নিজেকে কষ্ট কি হবে,,রাইসাকেও তো দেখাতে হবে যে তুই ও অনেক ভালো আছিস ওকে ছাড়া,,,
রাকিবঃ আমি চোখের সামনে ওর বিয়ে দেখতে পারবো না,,,
আমিঃ আরে পাগল নাকি,, ও যদি তোর সামনে অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারে, তোর ওর সামনে ভালো থার অভিনয় করতে পারবি না। রাইসা তো আমাকে এসেই অপমান করছে, তুই কাপুরুষের মতো ওর সামনে কিছু বলতে পারলিনা সেদিন,,,আরো অনেক কিছু যা ফোনে বলা যাবে না তুই তারাতাড়ি চলে আয়,,
রাকিবঃ কি ও আমাকে এসব বলেছে আমি এক্ষনি আসছি,,

রাকিবকে আরো কিছু উল্টো পালটা বলি। আমার ঠিকানা দিলাম,,,

দুপুর ১২টা বাজে আমি আর ফয়সাল সাকোতে বসে আছি,,, আর কথা বলছি রাইসার কল,,,

রাইসাঃ কিরে রাকিব কল করেছিলো,,,
আমিঃ না,,, এখনো করেনি,,
রাইসাঃ তাহলে একটা কল করে দেখ না,,,
আমিঃ আমি কেন করবো আপনার তারা থাকলে আপনি করেন, আমি এখন কাজে আছি,,,
রাইসাঃ মানে কোথায় তুই,,,

তারপর বলে ফোন রেখে দিলাম,,,,

রাইসা রাকিব কে ফোন করে,,,,

রাকিবঃ হ্যালো৷
রাইসাঃ কেমন আছো,,,
রাকিবঃ তুমি কি ভেবেছো তুমিচলে গেলে আমি কষ্টে শেষ হয়ে যাবো,,না আমি আসছি তোমার বিয়ে খেতে শুধু তাই না তোমার বিয়েতে নাচবো গাইবো অনেক আনন্দ করবো,,,
রাইসাঃ মানে কি বলছ এসব বুঝলাম না,,,
রাকিবঃ মজা নিচ্ছ এখন কিছু বুঝছো না, শিমুলের কাছে কি বলেছ আমার বিষয়ে তুমি,,,
রাইসাঃ আমি আবার শিমুলের কাছে কি বললাম,,

আমি আর ফয়সাল বাজি লাগাছি,,,

আমিঃ বেশি না ৫০০ টাকা বাজি যে হারবে সে ৫০০ টাকা দিবে ঠিক আছে,,
ফয়সালঃ ঠিক আছে তাহলে রেডি হ।
রাইসাঃ কি করছিস তোরা আমিও তোদের সাথে বেট লাগাবো,,,
আমিঃ না এটা মেয়েদের জন্য না,
রাইসাঃ মেয়ে আর ছেলে আছে নাকি আমি মেয়ে বলে কি আমাকে কম মনে করিস আজকে তোদের দেখিয়ে দেবো মেয়েরাও পারে,,
ফয়সালঃ আরে শিমুল বলছে না পারবি না,,
রাইসাঃ রাখ তোর শিমুলের চামচামি,,,
ফয়সাল চুপ হয়ে গেলো,,,
আমিঃ আরে দেখ বুঝে নে পরে কিন্তু আমাদের কিছু বলতে পারবি না,,,

এই বলে আমি ফয়সাল কে চোখ টিবি মারলাম,,,

রাইসাঃ আরে তোরা এসব কি করছিস,,,
আমিঃ এটাই তো কে কত দূর তার প্রস্রাব নিতে পারে।
রাইসাঃ মানে,,,
আমিঃ হ্যা,,,এখন তুই ও যদি আমাদের সাথে যো দিতে চাস তো দে আমাদের কোন মানা নেই।।
এই শুনে রাইসা আমাদের দুই জনের উপর হামলা করলো,,,আমি আর ফয়সাল দিলাম এক দোড় তারাতাড়ি করে সাকো থেকে নেমে গেলাম,,,

আমিঃ আরে আমরা তোর সাথে মজা করছিলাম,,,আমরা সাকো থেকে লাফ দেয়ার জন্য বাজি ধরছিলাম আর কি।

আমি আর ফয়সাল গোসল করছি আর রাইসা পারে বসে ফোন গুতাচ্ছে। আমরা দুইজনে মিলে একটা প্লান করলাম রাইসাকে পানিতে নামানোর জন্য,,

চুপচাপ আমরা উপরে উঠে ওর কাছে যাই । ওর এদিকে কোন খেয়াল নেই ফোনের দিকেই তাকিয়ে আছে। আমি বুঝি না এতোটা ধ্যান দিয়ে কি করে চার পাশের কোন খেয়াল নেই।

আমি আর ফয়সাল একজন ওর হাত আর একজন ওর পা ধরে উঠাই । দোল দোল দোলোনি বলে পানিতে ছুড়ে মারি,,

রাইসা চিল্লাতে শুরু করে দেয়,, অনেক আকুতি মিনুতি করে , কে শুনে কার কথা,, শেষ মেশ বলে ওর ফোনটা রাখতে, ধুর তোর ফোন তাহলে আবার তোকে ছাড়তে হবে। এতো বড় রিসক্সকে নিবে। ।।

রাইসা পানিতে পরে ওর ফোন খুজতে থাকে আর আমাদের ইচ্ছা মতো গুষ্টি উদ্ধার করছে। আমরা হাসছি আর ওর সাথে খুজে বেরাচ্ছি,,,

আমিঃ আচ্ছা রাইসা যদি তোর ফোন খুজে পাই তাহলে আমাদের কি দিবি বল,,
রাইসাঃ তোরা আমার ফোন হারাইছিস আবার তোরাই আমার কাছে চাইছিস,,,

এই বলে আমাদের কাদা মারা শুরু করে আমরা রাও মারছি। শুরু হয়ে গেলো যুদ্ধ,,,,

এরি মধ্যে আংকেল মানে রাইসার কাকা দেখে ফেলে, রাইসাকে ডাক আমরা ভদ্রলোকের মতো উপরে উঠে আসি,,,

রাইসা তার কাছে যায় মাথা নিচু করে, তারপর তিনি জিজ্ঞেস করে ওখানে কি করছিলো,,রাইসা বলে ওর ফোন পড়ে গিয়েছে তাই খুজতেছিলো,,,

ভাই আর যাই হোক মেয়েরা বাহানাটা ভালো দিতে পারে,, ওদের মাথায় মনে হয় সব কিছু সাজানো থাকে, কেউ জিজ্ঞেস করলে কি বলে বেচে যাওয়া যায়। তারপর আমি ওর ফোনটা ওর কাছে দিতেই ও বান্ধরের মতো থাবা দিয়ে নিয়ে নিলো,। মনে হলো বন্ধরকে কলা দেয়া হচ্ছে,,,

রাইসাঃ তোকে আমি পড়ে দেখে নেবো,,,

আস্তে করে যাতে ওর কাকা না শুনে,,

আমিঃ চল যা তুই আবার আমার কি দেখবি৷ মোল্লার দোড় মসজিদ পর্যন্ত, আর তোর দোড় আমার যানা আছে,,,

রাইসা নাক ফোলাতে ফোলাতে চলে গেলো,,,,,

আমিঃ আসসালামু আলাইকুম কাকা কেমন আছেন,,,
রাইসার কাকাঃ ওলাইকুম আসসালাম,, ভালো,, তুই কেমন কছোত, কবে এলি,,,
আমিঃ আমি আসছি তো অনেক দিন আপনাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম তো আপনাকে দেখলাম না,,,
রাইসার কাকাঃ এই বিয়ের কাজে এখানে ওখানে যেতে হয়,,,,,,,

তার সঙ্গে কথা বলে আমি আমার বাড়ি চলে এলাম, আর ফয়সাল ওর বাড়ি চলে গেলো,,,

রাতে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে আছি,, রাত ১ টার সময় রাকিবের কল,,,

আমিঃ হ্যালো,,,
রাকিবঃ কিরে ঘুমিয়ে গেছিস,,,
আমিঃ ওখন ঘুমাবো না কখন ঘুনাবো,,,বাজে কত দেখেছিস,,
রাকিবঃ ওহ আচ্ছা,, আমি তো আসতেছি,,,গাড়িতে এখন কোথায় নামবো,,,
আমিঃ কি এই রাতে,,,

তারপর আমি ওকে নামতে হবে কোথায় তা বলে দিয়ে বললাম আমি আসতেছি ওকে নিতে,,,,

এখন কি করবো আমি একা এই রাতে , ফয়সালকে কল করলাম ফোন ধরছে না। আরো কয়েক বার ফোন করলাম,,,।রাইসা কে কল করবো কিন্তু ওর তো ফোন নষ্ট হয়ে গেছে, দিয়ে দেখি,,,

কল হচ্ছে,,,, রিসিভ করতেই,,

আমিঃ হ্যালো রাইসা,,,
ইসরাত আপুঃ না আমি ইসরাত ,,,
আমিঃ ওহ আপু গুড মর্নিং,,,

আমি ফোনটা কেটে দিলাম,,,,

আবার ফয়সালকে কল করি,,,এবার ধরেছে আমি ওকে বলি,, বেরহতে। তারপর আমি ও মিলে গেলাম,,, গিয়ে দেখি এখনো আসেনি,,,

আমিঃ কিরে ঘুমাচ্ছিস নাকি,,
ফয়সালঃ হা কি করবো একদম কাচা ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে আসছিস, আর কতক্ষন একবার ফোন করে দেখনা না হলে আমি এখানেই ঘুমিয়ে যাবো,,

রাইসার নাম্ববার থেকে কল এলো আমি ভয়ে ধরছি না,, কেটে গেলো আবার কল দিলো,,
এবার ধরলাম,,,এবার কথা বলে দেখি রাইসা,,

আমিঃ কিরে তোর ফোন আপুর কাছে কেন,,
রাইসাঃ তোদের জন্য তো তখন আমার ফোন না ফেলে দিলে কি এরকম হতো,তাই তো আপুর ফোনে সিম লাগাতে হলো,,এখন বল এতো রাতে কল কেন করলি,,
আমিঃ আরে রাকিব আসতেছে, ওকে নিতে একা আসবো তাই তোকে কল করেছিলাম
রাইসাঃ তাহলে এখন কোথায় তুই,,
আমিঃ বাস স্টান,,,
রাইসাঃ একা নাকি,,
আমিঃ না ফয়সাল আছে সাথে,,,সেই কখন দাঁড়িয়ে আছি ওর কোন খবরি নেই,,
রাইসাঃ কি বলিস বেশি রাত হলে যদি ভুতে ধরে,,তার উপর তোরা তিন জন,, শুনেছি বিজোর থাকলে নাকি ভুতে ধরে,,,
আমিঃ আরে গাধি ভুত আসবে কোথা থেকে,,,
রাইসাঃ কেন ছোট বেলাতো তোরাই বলতি রাতে জোরায় জোরায় না হলে ভুতে ধরে,,,,
আমিঃ আচ্ছা তোর কি মাথার ঘিলু হাটুর নিচে নেমে গেছে নাকি,,,তাও হতে পারে তোদের মেয়েদের তো বুদ্ধি থাক হাটুর নিচে,,দেখ এতো রাতে মাথা নষ্ট করিস না আপা,
রাইসাঃ হাহাহাহাহা,,,কি ভয় করছে, দেখিস রাকিবের যেন কিছু না হয় তোদের চিন্তা আমি করি না,,
আমিঃ তোর রাকিবের যদি এতোই চিন্তা তাহলে তুই আসলেই পারতি৷,,
রাইসাঃ আমি কি জানতাম নাকি যে রাকিব আসবে,,,আর আমি গেলে তো আর এক সমস্যা,,, তোরা দুই জনে গিয়েছি জোরায় ছিলি। আমি হলে তিন জন বিজোর সমস্যা তো আরো হতো,,,
আমিঃ দেখ বুন অনেক জালাই ছো আর না এখন আর নিতে পারতাছিনা,,, তুই গ্রামে এইয়া কি তোর মাথা আউলাইয়া গেছে,,
রাইসাঃ হ তোর ভাষার মতো,,
আমিঃ রাখ এই একটা গাড়ি এইছে দেখি এইডায় আইছে নাকি,,,
রাইসাঃ ওকে বায় সাবধানে আসিস,,

রাইসা ফোন রেখে দিলো, গাড়ি থেমেছে দেখলাম একজন লোক নামলো,,,,আমি এগিয়ে যাই গিয়ে দেখি রাকিব, আমি দেখে অবাক এই কদিনে শুকিয়ে শেষ,,,

আমিঃ কিরে দেবদাস,একি অবস্থা তোর,,
রাকিবঃ শালা মজা নেস,,,
আমিঃ চল আর এই হচ্ছে ফয়সাল আমার ছোডো কালের দস্ত,,

তারপর আমরা তিন জন মিলে একসাথে কথা বলতে বলতে বাড়ি আসলাম,, ২০ মিনিট সময় লাগে বাড়ি থেকে হেটে যেতে, আর এই সময় কোন গাড়ি ও নেই,,,

আগে ফয়সালকে ওর বাড়ি দিয়ে আমরা দুই জনে বাড়ি চলে আসি,,,

সকালে রাইসার কল,,,

আমিঃ কি হইছে এই সময় ফোন দিলি যে,,
রাইসাঃ এই তুই মনে হয় একজনো ঘুমাছ,,বাজে কত দেখছত
আমিঃ আরে ভাই রাতে রাকিব ঘুমাতে দেয় নায় এখন তুই দিচ্ছিস না। তোদের দুজনের মধ্যে আমি এক বেচারা,,,
রাইসাঃ তুই উঠে আমাদের বাড়ি আয়,,,
আমিঃ,,,,,,,
রাইসাঃ কিরে কথা বলছিস না কেন,,হ্যালো,,,হ্যালো,,,

আমি ঘুমিয়ে গেছি,,,,,

ঘুম থেকে উঠে দেখি রাকিব এখনো ঘুমাচ্ছে আমি ডাকলে উঠে না,,আমি ফ্রেশ হয়ে গেলাম রাইসার কাছে,,

রাইসা আমাকে দেখে আমার কাছে এসে,,

রাইসাঃ তোদের কারনে আমাকে বাবার কাছে কত গুলা কথা শুনতে হলো,,,,
আমিঃ মানে,,,
রাইসাঃ কালকের তোদের এই কান্ডের কারনে বাবা আমাকে,,,
আমিঃকে বলেছে তোর কাকা নাকি,,,
রাইসাঃ না,, আর যারা দেখেছে,,,তারা বলেছে,,,কাকা তো যানেই না সেখানে কি হয়েছিলো,,
আমিঃ দূর আমাদের জন্য এইটুকু কথা শুনলে কি হয়,,,
রাইসাঃ দাড়া দাড়া তুই আমাকে বললি রাকিবকে তুই কল করিস নি,, তারপর আমি যখন রাকিবকে কল করি এরপর রাকিব যা বলল,,সব আমার মাথার উপর দিয়ে গেছে, আর আমি রাকিব আর আমার বিষয় কি বলছে,,

এইরে ফেসে গেছি মনে হয়,, ভাগ শিমুল,,,
আর পিছন থেকে ইসরাত আপু,,

ইসরাত আপুঃ শিমুল কাল রাতে তুই কল করিছিলি তাই না,,,
আমিঃ ইয়ে আপু হা,,
ইসরাত আপুঃ তুই রাত ১টা বাযে আমাকে গুড মর্নিং বলিস তাই না।।।
আমিঃ সরি আফা ভুল হইয়া গেছে মাপ কইরা দেন,,,

তাদের কাছ থেকে বেচে বাড়ি চলে আসি , এসে দেখি রাকিব উঠে ফ্রেশ হয়ে খেতেও বসেছে,,
আমিঃ কিরে ঘুম ভেঙেছে,,
রাকিবঃ হুম,,

তারপর এক সাথে খেয়ে নিলাম,,,

রাইসা বলল রাকিবকে ওদের বাড়ি নিয়ে যেতে,,

আমি আর রাকিব গেলাম ওদের বাসায়,,,গিয়ে সামনেই দেখি ওর বাবা তার কাছে গিয়ে সালাম দিলাম,,রাকিবকে আগেও দেখেছে,। রাইসার বাবা রাকিবকে তার পাশে বসিয়ে কথা বলতে থাকে এরি মধ্যে রাইসা চলে আসে আমি ওর কাছে যাই,,

আমিঃ কিরে তোর বাবা দেখি উকিলের মতো জেরা করছে , কারণ কি,,,
রাইসাঃ বাবাকে বলে দিছি রাকিবের বিষয়,,, আমিঃ আরে শয়তান,,,,

,,,,, চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here