গল্প – আমার একটাই তুমি
.
Part – 10
.
writer – ArFin_$uMon
.
.
পরেরদিন সকালে উঠে দেখি জুলি সাজুগুজু করে রেডি হয়ে আছে এত সকালে কেন সেজেছে কিছুই বুঝতে পারছি না আবার মিট মিট করে হাসছে, কি যে হলো উনার কিন্তু জুলিকে ব্লাক কালার এর ড্রেস এ অনেক সুন্দর লাগছে।
আমিঃ- আচ্ছা আপনি এত সকালে এই ভাবে সেজে গুজে আছেন কেন? কোথাও যাবেন কী?
উনি মাথা নেড়ে হ্যাঁ উত্তর দিলেন ।
আমিঃ- আচ্ছা কোথায় যাবেন আপনি আর আমার তো অফিস আছে প্রতিদিন আপনাকে নিয়ে এইভাবে ঘুড়ে বেড়ালে আমার চাকরিটা তো চলে যাবে।
আপুঃ- আরে গাধা তোর যাওয়া লাগবে না ও আমার সাথে যাবে আজকে ওর ভার্সিটির প্রথম দিন তাই আমি নিয়ে যাব।
আমিঃ- আচ্ছা সাবধানে নিয়ে যাস আর খেয়াল রাখিস আবার আসার সময় সাথে করে নিয়ে আসিস।
আপুঃ- তুই এমন ভাব করছিস যেন জুলিকে রেখে আমি চলে আসব। যা ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেতে যা আম্মু তোকে ডাকছে।
এইবলে আপু আর জুলি চলে গেল। আমি যখন আপুর সাথে কথা বলছিলাম উনি তখন শুধু হাসছিল। এরপর আমি উঠে গোসল শেষ করে রেডি হয়ে খাওয়ার টেবিল এ গিয়ে বসলাম।
জুলি আমার প্লেট এ খাবার বেড়ে দিচ্ছিলো। আমার সাইডে এক দাড়িয়ে যখন খাবার পরিবেশন করছিল তখন ফ্যানের বাতাসে উনার চুল থেকে একটা মিষ্টি গন্ধ আসছিলো যা আপনাদের বলে বোঝাতে পারব না। একটু পর আমি উঠে হাত ধুয়ে আমার রুমে ব্যাগ নিতে গেলাম। জুলিও আমার পিছন পিছন আসতে থাকল। আমি ব্যাগ নিয়ে বের হব ঠিক তখন ও আমার দিকে আপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে..
আমিঃ- কিছু বলবেন আপনি?
উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে? আমি আবার ও জিজ্ঞাস করলাম জুলি! কিছু বলবেন কি আপনি?
জুলিঃ- হুম।(ইশারায়)
এরপর আমার হাতে দুইটা চিরকুট ধরিয়ে দিল আর সাথে একটা টিফিন বক্স। প্রথমটাই লেখা ছিল..
জুলিঃ- দুপুরে সময় মতো খেয়ে নিবেন আর তাছাড়া আজকে আপনার পছন্দের খাবার আমি নিজে রান্না করেছি কেমন হয়েছে জানি না কিন্তু আপনি খেয়ে নিবেন। আর আজ পারলে একটু তাড়াতাড়ি আসবেন।
আর দ্বিতীয় চিরকুট এ লিখা ছিল..
জুলিঃ- আচ্ছা আমাকে ভার্সিটি অবদি দিয়ে আসলে কি আপনার অফিসে যেতে অনেক দেরি হয়ে যাবে কি? যদি দেরি না হয় আমাকে দিয়ে আসুন আপনার সাথে যতটা ফ্রি ভাবে কথা বলি আপুর সাথে সেইরকম কিছুই বলি নি তাই বলছিলাম।
আমিঃ- ও এই ব্যাপার আপনি এত টেনশন করছেন কেন? আপনাকে আমি প্রতিদিন দিয়ে আসব আবার আমি প্রতিদিন আসার সময় নিয়ে আসব। আর আপু অনেক ফ্রেন্ডলি আপু আমাদের ব্যাপারে সব জানে সো এত চিন্তা করার কিছু নাই আপনি আপু কে নিয়ে নিচে আসেন আমি আপানাদের জন্য নিচে ওয়েট করছি।
এইবলে আমি নিচে চলে আসলাম। নিচে এসে আপুদের জন্য ওয়েট করতে থাকলাম। কিন্তু ১০ মিনিট হতে যাচ্ছে এখন ও উনাদের খোঁজ নাই। একটু পর আমি উপরের দিকে উঠতে যাব ঠিক তখনি দেখি জুলি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছে তাই আবার গাড়িতে এসে বসলাম একটু পর আপু আর জুলি আসল। আপু অনেক ফাজিল জুলিকে জোর করে সামনে বসালো আমার পাশের সিটে। এরপর আমি আর কিছু না বলে গাড়ি চালানো শুরু করলাম।
গাড়ি চালানোর সময় বার বার আমি জুলির দিকে তাকাচ্ছি উনি জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। আপু আছে দেখে হয়তো আমার দিকে তাকাচ্ছেন না। যাই হোক একটু পর ভার্সিটির সামনে এসে দাড়ালাম যাওয়ার আগে কালকের সব কথা আপুকে বলে আর জুলিকে বিদায় জানিয়ে আমি অফিসে চলে আসলাম।
আজকে অফিসে এসে আমি ফ্রি মাইন্ডে আমার কাজ করতে ছিলাম আর খচ্ছড় বস টাও অফিসে নাই যাক বাবা বাঁচা গেছে অন্যদিন হলে এতক্ষন হলে আমাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতো। একটু পর আমার কেবিনে আমার ফেন্ড ইমামুল আসল।
আমিঃ- আরে ইমামুল কি খরব তোর? তোকে তো দেখায় যায় না ইদানিং। কই ছিলি এতদিন?
ইমামুলঃ-আরে বলিস না ভাইয়ের বিয়ে খেতে গিয়ে জ্বর হয়েছিলো তাই এই কয় দিন অফিস অফ দিছিলাম। তোর কি খবর?
আমিঃ- আমার খবর সব সময় ভালো থাকে তাই এখন ও ভালো।
ইমামুলঃ- ভালো তো থাকবেই নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচয় হচ্ছে তোমার ভালো থাকাটাই তো স্বাভাবিক।
আমিঃ- মানে কি? কি বলছিস তুই।
ইমামুলঃ- বন্ধু আজ সকালে অফিসে আসার পথে দেখলাম তোর সাথে একটা সুন্দরী মেয়ে দাড়িয়ে ছিল। তোর আপু ও ছিল। কে ওই মেয়েটা দোস্ত তোর গালফ্রেন্ড?
ইমামুল এর কথা শুনে আমার কিছুটা মেজাজ খারাপ হয়ে গেলে। এই কুকুর তাহলে দেখে ফেলল আমাদের না একে কিছু বলা যাবে না। ভার্সিটি লাইফে আমি একটা মেয়েকে লাইক করতাম কিন্তু ওকে যখনি ঐ মেয়েটার কথা বলছি তখন আমার আগে গিয়ে ও প্রোপজ করে দিয়েছিল ঐ মেয়েটা কে। না এই লুচ্চা কে জুলির ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। একটু পর ইমামুল এর কথা শোনে আবার বাস্তবে ফিরলাম।
ইমামুলঃ- কিরে কি এত ভাবছিস তুই? বল মেয়েটি কে?
আমিঃ- হুম তুই ঠিকই ধরছিস। ওইটা তোর ভাবি।
ইমামুলঃ- মানে কি? আর কবেই বা হলো তোদের বিয়ে?
আমিঃ- মানে খুবই সহজ। ও আমার বিয়ে করা বউ আর হঠাৎ করে ১ মাস আগেই ওর সাথে আমার বিয়েটা হয়েই গেল দাওয়াত টাও কাউকে দিতে পারলাম না।
আমার কথাটা শুনে ওর মুখ কালো হয়ে গেল। কথা বলছে না আমি আবার বললাম..
আমিঃ- কেন রে তুই কি ভাবছিলি হুম।
ইমামুলঃ- না তেমন কিছুই না ভাবলাম তোর কোন কাজিন হবে হয়তো। কিরে বল ভাবির নাম কি কোথায় থাকে কিসে পড়ে?
আমিঃ- তোর এত কিছু শোনা লাগবে না? এই যে ফাইলটি দেখছোস তা আজকের মধ্যে কমপ্লিট করে আমার কাছে দিয়ে যাবি।
ইমামুলঃ- দোস্ত আমার অনেক জ্বর। এখন না কালকে আমি ফাইলটা ব্যাক দিয়ে দিব। এখন আমি তোদের বিয়ের কথা শুনব কিভাবে হলো কবে হলো?
আমিঃ- না দোস্ত আমার এখন কাজ আছে। পরে বলব তুই আগে এইটা কমপ্লিট করে নিয়ে আয়।
ইমামুলঃ- দোস্ত আমার সাথে এমন করছিস কেন? প্লিজ বল না দোস্ত?
আমিঃ- আচ্ছা স্যার কে ফোন দিতে হবে তাহলে।
ইমামুলঃ- এই না আমি যাচ্ছি ফোন দিস না।
এই বলে ইমামুল চলে গেল এরপর আমি মোবাইল বের জুলির একটা ছবি বের করে দেখছিলাম আর উনার কথা ভাবছিলাম। রকিং চেয়ারে বসে যখন চোখ বুঝছি মনে হচ্ছে জুলি আমার সামনে দাড়িয়ে আছে। উনার হাসিমাখা মুখ বার বার ভেসে উঠছে।
.
.
চলবে……………………