আমার একটাই তুমি . Part – 13

0
383

গল্প – আমার একটাই তুমি
.
Part – 13
.
writer – ArFin_$umon
.
.
এরপর আমাকে ধাক্কা দিতে দিতে বাথরুম এ পাঠালো। তারপর শাওয়ার শেষ করে সকালের নাস্তা করে সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এিশাল এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
গাড়িতে উঠার পর ২জন এর মধ্যে নিরবতা কাজ করছে। আমিও গাড়ি ড্রাইভ করছি আর জুলি ও বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি মাঝে মাঝে উনার দিকে তাকাচ্ছি খুব ভাব উনার আমি বার বার সাঁধে কথা বলি আর উনি সব সময় চুপ করে বসে থাকবে কিন্তু জুলিকে ব্লু কালার এর শাড়ি আর ব্লাক কালার এর ম্যাচিং করা ব্লাউজ এ অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
আর এই দিকে জুলি মনে মনে ভাবছে কি হলো উনার অন্যদিন তো সব সময় কথা বলে আজ কি হলো উনার সকালের কথায় কি কষ্ট পেয়েছে নাকি? কিন্তু আমি তো তেমন কিছুই উনাকে বলি নি। অন্যদিন থ্রি পিস পড়লে সুন্দর না দেখালেও আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে আর আজ এত কষ্ট করে শাড়ি পড়ে বসে আছি কিছুই বলছে না ইডিয়েট একটা।
না এই হাদারাম টা মনে হয় ভাবছে আমি এখনো উনার পর রাগ করে আছি না আমাকেই আগে কথা বলতে হবে।
এইদিকে আমি গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছি। একটু পর উনি আমার হাতে চিমটি দিল। আমি জুলির দিকে তাকালে উনি ইশারায় বলল..
জুলিঃ- আমাকে কেমন দেখাচ্ছে?
আমি গাড়িটা একটু সাইড করে দাড়িয়ে জুলির দিকে অপলক দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে আছি। আমি এইভাবে তাকিয়ে আছি দেখে উনি আবার ও ইশারায় বলল..
জুলিঃ- কি হলো এই ভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? বলুন আমাকে কেমন লাগছে।
আমিঃ- হুম সুন্দর অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে।
জুলিঃ- থাক আর ডপ দিতে হবে না আমি জানি একদম বাজে দেখাচ্ছে।(ইশারায়)
আমিঃ- আরে না আমি সত্যি বলছি অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে।
জুলিঃ- হুম বুঝলাম। তা এখানে কেন গাড়ি থামালেন।(ইশারায়)
আমিঃ- তেমন কিছুই না এমনি একটু দাঁড় করালাম এখানকার বাইরের পরিবেশটা অনেক সুন্দর
তাই আর আপনি কি খাবেন?
জুলিঃ- আইসক্রিম।(ইশারায়)
আমিঃ- এই ঠান্ডার মধ্যে আপনি আইসক্রিম খাবেন হুম আপনার তো ঠান্ডা লেগে যাবে।
জুলিঃ- থাক আমার লাগবে না।(ইশারায়)
আমিঃ- আচ্ছা আপনি এত রাগ করেন কেন হুম।
জুলিঃ- আমি কোন রাগ করি নি।(ইশারায়)
আমিঃ- আচ্ছা বাবা সরি! আমার ভুল হয়ে গেছে আর হবে না। আপনি এখানে বসুন আমি নিয়ে আসছি কিন্তু আপনি গাড়ি থেকে নামবেন না।
জুলিঃ- হুম।
এই বলে আমি গাড়ি থেকে নেমে কনফেকশনারীর দোকান খুঁজতে লাগলাম কিন্তু কাছে কিনারে কোন দোকান দেখতে পেলাম না তাই বাধ্য হয়ে আবার গাড়ির দিকে ব্যাক করলাম।
ওখানে গিয়ে দেখি আরেক ঘটনা জুলি গাড়িতে নেই আশে পাশেও নেই কি হবে এখন উনার কাছে তো ফোন ও নেই খুঁজবো কিভাবে? জুলির আবার কোন বিপদ হলো না তো।
না একবার পিছনে গিয়ে দেখি যেই ভাবা সেই গিয়ে দেখি জুলি পিছনে দাড়িয়ে আছে আর আমাকে দেখে হাসছে। আমার মেজাজ পুরোপুরি খারাপ হয়ে গেল।
আমিঃ- কোথায় ছিলেন আপনি আর কতক্ষন ধরে আমি আপনাকে খুজছি হুম।
জুলিঃ- আমি এখানেই তো ছিলাম।(ইশারায়)
আমিঃ- ফাইজলামি করার জায়গা পান না আপনি যদি এখানে থাকেন তাহলে আমি খুঁজে পাচ্ছিলাম না কেন?
এরপর আমাকে ইশারায় কিছু বোঝাতে চাচ্ছিল কিন্তু আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম তাই ব্যাগ থেকে একটা নোটপ্যাড বের করে লিখতে থাকল কিছুক্ষন পর চিরকুট টি আমার হাতে দিল..
জুলিঃ- আপনি যখন আমাকে খুঁজছিলেন তখন আমি পিছনে ছিলাম আবার যখন আপনি পিছনে গেলেন আমি সামনে চলে আসলাম এই একটু লুকোচুরি খেলছিলাম।
কথাগুলো পড়ে আমি চিঠিটা এক টান দিয়ে ছিড়ে ফেলে দিলাম। আমার এই রকম আচরন দেখে জুলি আমার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমিঃ- এটা ফাইজলামি করার জায়গা না ওকে যান চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে বসুন।
কথাগুলো শেষ করে একবার জুলির দিকে তাকালাম। মেয়েটার চোখ দুটো ছলছল করছে। এই দেখ একটু কিছু বললেই তো রাগ রাগ আর রাগ।
আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই জুলি চলে গেল। আমিও একটু পর গাড়িতে গিয়ে উঠলাম।
২০ মিনিট ধরে গাড়ি ড্রাইভ করছি কিন্তু জুলি একবার ও আমার দিকে তাকায় নি। না রাগের মাথায় একটু বেশি খারাপ ব্যবহার করে ফেলছি। না উনাকে একবার সরি বলতে হবে।
আমিঃ- জুলি আসলে তখন রাগের মাথায় একটু বেশিই খারাপ ব্যবহার করে ফেলছি প্লিজ কিছু মনে করবেন না। আমি ইচ্ছা করে বলতে চাইনি। i’m really sorry julii…
জুলিঃ- (নিশ্চুপ)।
আমি আর কেনো কথা না বলে নিজের মতো গাড়ি চালাতে থাকলাম।
আর এই দিকে জুলির চাচা রহিম সাহেব জুলির নানু বাড়িতে প্রবেশ করলেন। বাসার কলিং বেল বাজাতেই কাজের মেয়ে এসে দরজা খুলে দিল আর ভিতরে আসতে আসতে বলল।
জুলির চাচাঃ- আরে ভাবী কি খবর আপনাদের সব ঠিক আছে তো?
-জ্বি ভাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আপনার কি খবর?
জুলির চাচাঃ- আরে রাখেন আপনার খবর জুলিকে ভালো ফ্যামিলিতে বিয়ে দিয়ে মোটা অংকের দেনমোহর আদায় করে কি ফ্লাট এর ৫ তালা কমপ্লিট করছেন?
-কি সব বলছেন ভাই আমি জুলিকে বিয়ে দিতে যাব কেন আর জুলির সাথে তো ৬ মাস হয়,,দেখা হয় না আর আপনি তো ওকে নিয়ে গিয়েছিলেন।
জুলির চাচাঃ- থাক ভাবি আর মিথ্যা কথা বলবেন না চুপচাপ ওই ছেলের ফ্যামিলির ঠিকানা বলেন।
-আরে আজব তো। আপনি কি বলছেন কিছুই বুঝতে পারছি না। আর আমরা আপনাদের মত না নিয়ে বিয়ে দিতে যাব কেন?
জুলির চাচাঃ- তাহলে আপনার ভাগ্নি বিয়ের রাতে কোথায় গেল। কিছুদিন আগে আমার এক পরিচিত লোক ওকে এক ছেলের সাথে ঘুরতে দেখেছে। তাহলে বলুন এই ছেলেটা কে আর চুপচাপ ঠিকানা দিন। না হয় জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে আপনাদের নাম এ থানায় রিপোর্ট দিব।
-আপনার সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করছি আর না। আমার বাসা থেকে চুপচাপ বেড়িয়ে যান। আর রিপোর্ট আমরাই দিব আমাদের না জানিয়ে আমার ভাগ্নিকে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে।
জুলির চাচাঃ- ঠিক আছে আজকে আমি চলে যাচ্ছি কিন্তু আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো।
এই বলে রহিম সাহেব বাসা ত্যাগ করল।
এইদিকে আমি আর জুলি এিশাল এর কাছাকাছি এসে পড়লাম কিন্তু এখনো জুলি কোনো কথা বলছে না মুখ গোমড়া করে বসে আছে। এত রাগ করে আছে কি আর বলব।
আমিঃ- জুলি আমরা তো এিশাল টাউন এর ভিতর চলে আসছি কিন্তু এবার কোথায় যাব তা চিনি না আপনি একটু দেখিয়ে দিন হাতের মাধ্যমে। কি হলো বলুন।
জুলি।- হুম।
এরপর উনি হাতের মাধ্যমে উনার মামার বাসার ঠিকানা বলে দিল কোন কোন রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। এরপর বাসার সামনে আসতেই রাগ দেখিয়ে গাড়ি থেকে নেমে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে আসল আর যাওয়ার আগে হাতের আঙুল দিয়ে ২ দেখিয়ে উপরে চলে আসল মানে ২ তালায় আসতে বলল।
একটু পর জুলি কলিং বেল বাজাতেই একটি মেয়ে এসে দরজা খুলে দিল। খুলেই চিল্লানি..
-খাল্লামা ও খাল্লামা দেখুন জুলি আপু আসছে।
বলেই দৌঁড় দিল। একটু পর একটি মহিলা আসতেই জুলি দৌঁড়ে গিয়ে উনাকে জরিয়ে ধরল। তাহলে উনি জুলির মামি। একটু পর ওই মহিলা আঙুল এর ইশারাই বলল আমি কে। এরপর জুলি ওর মামী কে ইশারায় অনেক কিছুই বলল কি বলল আমি কিছুই বুঝলাম না। একটু পর উনি(মামী) আমার দিকে এগিয়ে আসছে আমার বুক ডুক ডুক করছে। এরপর উনি এসে আমার হাত ধরে ভেতরে নিয়ে গেল যাক বাবা বাঁচলাম।
.
.
চলবে……………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here