গল্প – আমার একটাই তুমি
.
Part – 2
.
writer – ArFin_$uMon
.
.
এরপর আর মেয়েটা কিছু বলল না একটু পর বাসার সামনে চলে এলাম। খুব ভয় করছে বাসায় ডুকলে কি না কি হবে? তাও ভয়ে ভয়ে উপরে উঠলাম তারপর কলিং বেল টিপ দিতেই আপু এসে দরজা খুলে দিল।
মেয়েটা আমার পিছনে দাড়িয়ে ছিল একটু,, আপু আমার সাথে বউয়ের সাজে মেয়ে দেখে চিলান্নি দিতে গেছিলো। আমি তাড়াতাড়ি ওর মুখ চেপে ধরে বললাম..
আমিঃ- আপু একটু চুপ কর প্লিজ? দেখ এত রাতে প্লিজ চেঁচামেচি করিস না তোর পায়ে পরছি।
আপুঃ- এই কি করছিস তুই পা ছাড় বলছি এই তুই ঝামেলায় আছিস না। ভালোই তো মিথ্যা কথা বলা শিখে গেছিস আর আমার চেঁচামেচি করাও লাগবে না আব্বু আম্মু সোফায় বসে টিভি দেখছে। আর মেয়েটা কে? আর কবে বিয়ে করলি।
আমিঃ- আপু প্লিজ একটু ম্যানেজ কর এতরাতে প্লিজ চেঁচামেচি করিস না আমাদের রুমে ডুকতে দে আমি কাল তোকে সব বলব। তুই আব্বু -আম্মু কে রুমে পাঠা আর আমি এইদিক দিয়ে জুলি কে নিয়ে রুমে ডুকছি।
একটু পর আপু আব্বু আম্মুকে ম্যানেজ করে রুমে পাঠালো। আর আমরা ২ জন এইদিকে দৌঁড় দিয়ে আমার রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে দরজা আটকানোর সাথে সাথে মেয়েটি সন্দেহ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
আমিঃ- কি হলো আপনার এইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন? ওহহ আপনি বলতে পারেন ওকে ওয়েট করুন এই বলে আমি একটা ডাইরি আর একটা পেন উনার কাছে দিলাম। একটু পর কি যেন একটা লিখে আমার হাতে দিল।
জুলিঃ- আপনি দরজা বন্ধ করলেন কেন? মতলব কি হুম আমার কাছে কিন্তু একটা চাকু আছে বাজে মতলব নিয়ে আমার কাছে আসলে কিন্তু আমি ওটা চালিয়ে দিব।
কথা গুলো পড়ে আমার মেজাজটা পুরো গরম হয়ে গেল। এত রিক্স নিয়ে ওকে বাসায় আনলাম আর ও আমাকে ক্যারেকটার লস ভাবছে। ইচ্ছা করছে ঘাড়টা ধরে বাসা থেকে বের করে দিতে কিন্তু কেন জানি ওর মুখের দিকে তাকালে সত্যি আমার অনেক মায়া হচ্ছে।
তারপর আবার ভাবলাম উনি তো মনে মনে ঠিকই ভাবছে একটা অচেনা মানুষকে কেউ বিশ্বাস করতে চায় না। একটু পর জুলির গোঙ্গানির শব্দে বাস্তবে ফিরলাম। এবার আমি ওর মুখের ইশারা বুঝতে পারলাম ও বলছে..
জুলিঃ- কি হলো উত্তর দিচ্ছেন না কেন ?
আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই দরজায় কে যেন নক করল। আমি জুলি কে তাড়াতাড়ি বাথরুমে পাঠিয়ে দিয়ে ভয়ে ভয়ে দরজা টা একটু খুলে দরজার ফাক দিয়ে দেখলাম। এরপর আপু রুমে এসে বলল..
আপুঃ- এই নে খাবারটা এখানে থাকলো খেয়ে নে আর এই ড্রেস টা ওকে পড়তে বল আর কালকে দিনের জন্য রেডি ‘হ’।
আম্মু আব্বুর কাছে যে কি ঝাড়টায় না তোর কপালে আছে। কিন্তু একটা কথা মেয়েটা কিন্তু দেখতে অনেক সুন্দর। ও কোথায় রে এখন ?
আমিঃ- বাথরুমে গেছে ডাক দিব কি ?
আপুঃ- না থাক এখনো আব্বু আম্মু জেগে আছে কালকে কথা হবে। আর তোরা খেয়ে নে অনেক রাত হতে যাচ্ছে আমি গেলাম।
এই বলে আপু রুম থেকে বেড়িয়ে গেল। আমিও সাথেসাথে দরজা লাগিয়ে ভাতের প্লেট নিয়ে খেতে বসব ঠিক তখনি জুলির কথা মনে পড়ল। মেয়েটিকে তো বাথরুমে আটকে রাখছি এরপর আপু যে ড্রেস টা দিছে ওইটা নিয়ে বাথরুমের দরজায় নক করলাম।
আমিঃ- জুলি দরজা খুলুন আমার আপু আসছিলো ভয় নেই। আচ্ছা দরজা খুলে এই ড্রেসটা নিয়ে চেইন্জ করে নিন।
একটু পর জুলি দরজাটা হালকা খুলে ড্রেসটা নিয়ে নিলো। আমার আর খাওয়া হলো না ভাতের প্লেটটা টেবিল এর উপর রেখে সোফায় এসে শুয়ে পড়লাম। একটু পর জুলি বেড়িয়ে এসে ওই প্রশ্নটা আবার করল এবার আমি উত্তর দিলাম।
আমিঃ- না আপনি মনে মনে যা ভাবছেন তা সম্পূর্ন ভুল ভাবছেন আমি এই রকম ছেলে না। আপনি বিছানায় শুয়ে পড়ুন আমি সোফায় থাকব আর কোন প্রোবলেম হলে আমাকে ডাক দিবেন এখন এই খাবার টা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন।
এই বলে আমি অন্যদিকে মুখ ঘুড়িয়ে শুয়ে পরলাম কিন্তু ৫ মিনিট পর গোঙ্গানির শব্দে আমি আবার উঠে বসলাম। কিন্তু উঠে দেখি উনি এখনো ওখানে দাড়িয়ে আছে আর ভাতের প্লেট টাও ওখানেই রাখা। মুখ দিয়ে কি যেন ইশারা করে বোঝাতে চাচ্ছে। এবার আমার সত্যি মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেল..
আমিঃ- আচ্ছা আপনার সমস্যা টা কি? রাত ২টা বাজতে যাচ্ছে বললাম তো চুপচাপ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। কি হলো খান বলছি ?
জুলিঃ- (নিশ্চুপ)
আমিঃ- কি আমাকে খায়িয়ে দিতে হবে হুম? কি ভাবেন নিজেকে আমি কি আপনার বিএফ লাগি যে খাওয়ায় দিতে হবে হুম।(অনেকটা উচ্চ স্বরে)
জুলিঃ- (এখনো নিশ্চুপ)
একটু পর আমার চোখ হঠাৎ ওর হাতের দিকে গেল। ডান হাত অনেকটা কাটা অবস্থায় আছে। একটু পর আমি ওর মুখের দিতে তাকালাম চোখ দিয়ে এখনো জ্বল বেয়ে পড়ছে। আমি তাড়াতাড়ি ওনার কাছে গিয়ে বললাম..
আমিঃ- সরি আমি আসলে বুঝতে পারি নি যে আপনার হাত কাটা কিন্তু আপনার এটা হলো কিভাবে।
একটু পর খাতায় লিখে বলল..
জুলিঃ- বাসা থেকে পালানোর সময় গিরিল এ খোঁচা লেগে এমন টা হয়েছে।
আমিঃ- ইস্ দেখি হাতের অবস্থা তো অনেক খারাপ আপনি বসুন আমি আসছি।
এই বলে আমি ড্রোয়ার থেকে সেভলন ক্রিম এনে লাগিয়ে দিয়ে ভালো করে হাতে ব্যাডেন্জ করে দিলাম। তারপর হাত ধুয়ে ভাতের প্লেট টা নিয়ে জুলিকে খাওয়ায় দিলাম। একটু পর জুলি ইশারায় বলল আপনি খেয়েছেন।
আমিঃ- না আমি খায় নি। আপনি খেয়ে নিন ২.৩০ বাজতে যাচ্ছে। কি হলো নিন এই তো আর অর্ধেক আছে খেয়ে নিন। এরপর ইশারায় বলল আপনি না খেলে আমিও খাব না।
আমি বললাম..খাব না কিন্তু কি আর করা জুলির চাপে খেতে হলো। খাওয়া শেষ করে উনি শুয়ে পড়ল। আমি আমার মতো সোফায় এসে শুয়ে পড়লাম কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসচ্ছে না বার বার এই পাশ ওই পাশ করছি আর মনে মনে ভাবছি এই প্রথম আমি কোন মেয়েকে খাওয়ায় দিছি এতটা টেক কেয়ার করছি। এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে চোখ লেগে গেছে মনে নেই।
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শুরু হলো আরেক ঝামেলা।
.
.
চলবে……………………
।
।
★(লিখার মতো অবস্থায় ছিলাম না। তারপরেও আপনাদের কথা চিন্তা করে এইটুকু লেখা। হয়তো ভালোভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে পারিনি লেখায় অনেক ভুল ক্রুটি আছে। তাই ভুল ক্রুটি গুলো সবাই ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেকবেন।)★