একদিন তুমিও ভালোবাসবে ‘ 🌸❤️ ||পর্ব~৬২||

0
1944

‘ একদিন তুমিও ভালোবাসবে ‘ 🌸❤️
||পর্ব~৬২||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

৯৪.
আদিত্য: মৌ তুমি যেমন ভাবছো জিয়া তেমন মেয়ে নয়। ও অতটাও খারাপ না।

মৌমিতা: বাহবা, দুদিনে জিয়ার প্রতি এতো ভালোবাসা তোমার?

আদিত্য: মৌ প্লিজ! আমাকে জিয়ার সাথে কথা বলতে দাও। অলওয়েজ সব কিছুতে আমাকে এভাবে আটকানোর কোনো মানে হয় না। আমি মনে করি এই জন্যেই জিয়া কাজগুলো করেছে স আমাকে যেতে দাও ওর কাছে।

মৌমিতা: আমার তোমার সাথে জরুরী কথা আছে তাই তুমি এখন আমার সাথে যাবে।

আমি আদিকে টেনে নিয়ে জিয়ার সামনে থেকে চলে এলাম। আদি আমার আর ওর রিসেপশনের আগে একটা পার্টি থ্রো করেছে যেখানে আমার ক্লাসমেটস আর ওর ক্লাসমেটসরাসহ আরো অনেকে উপস্থিত ইউনিভার্সিটির। পার্টি চলাকালীন হুট করেই জিয়া আমার সামনে এসে দাঁড়ায় আমি ওকে এড়িয়ে এগিয়ে যেতেই দেখি আদি জিয়ার দিকে তাকিয়ে এদিকেই আসছে। তাই আমি নিয়ে চলে গেলাম ওকে অন্যদিকে। আদির সাথে কথা বলে, একপ্রকার ঝগড়া করে আমি এসে বার সাইডে বসলাম। কিছুক্ষণ পর আমার পাশে এসে জিয়া এসে বসলো।

মৌমিতা: কি ব্যাপার বল তো জিয়া? তুই কেন আমার আগে পিছে ঘুরছিস বলবি? আগের দিনের অপমান কি কম হয়ে গেছে?

জিয়া: দেখ, আমি জানি আমি ভুল করেছি। আসলে কোয়েলের সাথে আমি অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। ওর বাবা যদি এসবের ব্যাপারে জানতে পারে তাহলে কোনোভাবেই আমাকে আর এই ইউনিভার্সিটিতে পড়তে দেবে না। প্লিজ, প্লিজ তুই কোয়েলকে একটু বোঝা যাতে অন্তত আমাকে এই ইউনিভার্সিটিতে পড়তে দেয়। প্লিজ! আমি আর কখনও তোদের ত্রিসীমানায় আসবো না।

মৌমিতা: ওহ, তো এইজন্য আমার পিছনে ঘুর ঘুর করছিস তুই? নিজের স্বার্থ ছাড়া কখনও কিছু বুঝিস না তুই, এটা আমি ভুলেই গেছিলাম।

আমি কথাটা বলে কোয়েলের কাছে চলে এলাম। কোয়েলকে এসে জিয়ার কথাগুলো বলতেই কোয়েল বললো,

কোয়েল: আচ্ছা, এই ব্যাপার? চল দেখি ও কি বলে।

আমি আর কোয়েল জিয়ার কাছে আসতেই দেখি জিয়া দুটো ড্রিংকের গ্লাস নিয়ে বসে আছে। আমি গিয়ে জিয়ার পাশে বসতেই জিয়া আমার হাতে ড্রিংকের গ্লাসটা দিয়ে আমাকে বললো,

জিয়া: তুই এটা নে। এক্ষুনি ওয়েটার দিয়ে গেলো, আমি কোয়েলের সাথে কথা বলে আসছি।

জিয়া উঠে কোয়েলের সাথে কথা বলতে শুরু করলে আমি আমার পার্স থেকে একটা ছোটো মুড়ানো কাগজ বার করলাম, যাতে একটা পাউডার আছে। আস্তে করে সেটা খুলে জিয়ার ড্রিংকের গ্লাসটাতে একটু মিশিয়ে দিলাম। এদিকে কোয়েল জিয়ার সাথে কথা বলে ওকে ব্যস্ত রেখেছে। আমি ইশারা করে দিতেই কোয়েল জিয়ার কথায় রাজি হয়ে গেলো আর জিয়া আমার পাশে এসে বসলো।

জিয়া: তোর ড্রিংক শেষ?

মৌমিতা: হ্যাঁ। কিন্তু আমার মাথাটা না কেমন জানো ঝিমঝিম করছে।আমি একটু ওয়াশরুম থেকে আসছি হ্যাঁ?

কোয়েল: আমি যাচ্ছি তোর সাথে, চল।

কথা শেষ করে আমি উঠে কোয়েলের সাথে ওয়াশরুমে চলে আসলাম। আড় চোখে দেখলাম জিয়ার ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি।

জিয়া: (গ্লাসে চুমুক দিয়ে) এইবার বুঝবে আসল অপমান কাকে বলে, যখন সবার সামনে আদির বউ মাতলামি করে ওর সন্মান ধুলোয় মিশাবে। (বাঁকা হেসে)

__আমি কি একটু বসতে পারি এখানে?

জিয়া পাশে তাকিয়ে দেখলো রাজকে। আঁতকে উঠলো জিয়া রাজকে দেখে। সেই দেখে রাজ বললো,

রাজ: জিয়া রিল্যাক্স! আমি এমনিই বসতে চেয়েছিলাম। তোর প্রবলেম থাকলে ইটস ওকে, আমি চলে যাচ্ছি।

জিয়া: না না। আমার কোনো প্রবলেম নেই। তুমি ব..বসতে….

রাজ: আরে জিয়া সাবধানে। কি করছিস?

জিয়া উঠে রাজকে আটকাতে গেলে জিয়ার মাথাটা হুট করেই ঘুরে যায় আর ও পরে যেতে নিলে রাজ ধরে নেয়। রাজ জিয়াকে বসিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে,

রাজ: তুই ঠিক আছিস তো?

জিয়া: হ্যাঁ, মাথাটা একটু ঘুরছে।

রাজ: ড্রিংকটা বেশি করে ফেলেছিস হয়তো।

জিয়া: বায় দ্য ওয়ে রাজ। আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই। আসলে আমি সেদিন রাগের বশে কোয়েলকে অনেক আজে বাজে কথা বলে ফেলেছি। কি করবো বলো? আমি তো আদিকে ভীষণণণণ ভালোবাসি তাই মৌমিতার সাথে ওকে মেনে নিতে পারিনা। (মাতাল কণ্ঠে)

রাজ: এটাই তো জিয়া। তুই যদি মৌমিতাকে সরানোর চেষ্টা না করে নিজের বাবার বিরুদ্ধে গিয়ে আদির সাথে থাকতে পারলে আজ আদি তোর হতো।

জিয়া: ম..মানে? তুমি কি বলছো? ড্যাডের বিরুদ্ধে কেন যাবো? ড্যাড তো আদিকে পছন্দ করে।

রাজ: তোর বাবা কোনোকালেই আদিকে পছন্দ করতো না। তোর জন্য মেনে নিয়েছিলো শুধু। তুই তো জানিস আদি বরাবর সত্য, ন্যায়ের পথে থাকতে ভালোবাসে যেখানে তোর বাবা পুরো বিপরীত। এই নিয়েই আদি ভালোভাবে তোর বাবাকে বলেছিলো যে এসব ছেড়ে দিতে। কিন্তু তোর বাবা আদিকে খুব বাজে ভাবে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছে।

জিয়া: কি? ড্যাড এরকম করেছে?

রাজ: হ্যাঁ, তাই জন্যেই তো আদি মৌমিতাকে একসেপ্ট করতে বাধ্য হয়েছে। আদি ভেবেছিলো তুই ওকে সাপোর্ট করবি।

জিয়া: আ..আমি তো জ..জানতামই না ব্যাপারটা।

রাজ: এখন তো জানলি। এখন যদি তুই আমাকে তোর বাবা কি কি কাজে জড়িত সেটা বলিস তাহলে আমি আদিকে সেটা বলবো। ওকে বোঝাবো যাতে ও মৌমিতাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। এমনিতেও ও মৌমিতার সাথে হ্যাপি নেই, সবটা তোর বাবার উপর রাগ করে করেছে। তুই নিজের চোখেই দেখেনে।

রাজের কথায় জিয়া সামনে তাকাতেই দেখলো আদিত্য আর মৌমিতার মধ্যে ভালোই কথাকাটাকাটি চলছে। সেই দেখে জিয়া চোখ টানতে টানতে রাজকে বললো,

জিয়া: আ..আমি জ..জানি! আমি সব জানি। ড..ড্যাড কি কি ক..কাজে জড়িত সব জ..জানি…

এক এক করে জিয়া রাজকে সব বলতে শুরু করলো। পরেশবাবুর কোথায় কোম্পানি আছে আর সেখানে কি কি দুর্নীতি হয়। এছাড়া কীভাবে পরেশবাবু স্মাগলিং এর কাজে যুক্ত হয়েছিলেন সব। রাজ সবটা শুনে নিজের ফোনের রেকর্ডারটা অফ করে দিলো তারপর আদিত্যকে ফোন করলো। আদিত্যকে ফোন করতেই আদিত্য,মৌমিতা আর কোয়েল এসে দাঁড়ালো। দেখলো জিয়া রাজের কাঁধে মাথা রেখে ঢুলছে। কোয়েল গিয়ে সাথে সাথে জিয়ার মাথাটা তুলে চেয়ারটা ঘুরিয়ে ডেস্কে শুয়ে দিলো।

কোয়েল: নেশার ঘোরেও মেয়ে গায়ে পরা স্বভাব গেলো না। হুহ, যত্তসব!

আদিত্য: সো? পুলিশকে কল করেদি?

কোয়েল: না না। আমাদের যেই প্রুফের দরকার ছিলো তা আমরা পেয়ে গেছি যখন, তখন এভাবে সবার আনন্দ নষ্ট করে কোনো লাভ নেই।

রাজ: তাহলে কি করতে চাইছো?

কোয়েল: কি আবার? পরেশবাবুর বাড়ি গিয়ে জিয়াকে পৌঁছে দিয়ে আসি আর ওনাকেও মামাবাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দি? ভালো হবে না?

আদিত্য: গ্রেট আইডিয়া!

রাজ: যাই বলিস, বউদির আইডিয়াটা কিন্তু জাস্ট ফাটাফাটি। এতে সবাই আনন্দও করতে পারলো আবার আমাদের কাজ হাসিলও হয়ে গেলো।

আদিত্য: বউটা কার দেখতে হবে না? (মৌমিতাকে একহাতে আগলে)

মৌমিতা: আমি শুধু ভাবছি, আজকের দিনেও জিয়া আমাকে হেনস্থা করতে চেয়েছিল। ভাগ্যিস রাজদা দেখে কোয়েলকে মেসেজ করেছিলেন যে, জিয়া আমার ড্রিংকে নেশার ওষুধ মিশিয়েছে।

কোয়েল: যা হয় ভালোর জন্যই হয়। ওর নিজেরই ডাবল ডোজ হয়ে গেছে, তাই জন্যেই তো কাজ তাড়াতাড়ি হয়েছে।

আদিত্য: যাই হোক, আমি এবার অ্যানাউন্সমেন্ট করে সবাইকে ইনভাইট করে পার্টিটা শেষ করে দিই?

রাজ: ইয়াহ অফকোর্স।

আদিত্য মৌমিতাকে নিয়ে পার্টির মধ্যমণি হয়ে উঠলো। রাজ আর কোয়েলও ওদের সাথে গেলো। ওরা অ্যানাউন্সমেন্ট করুক, আমরা প্ল্যানিংটা জেনে আসি চলুন।

ফ্ল্যাশব্যাক………………………….

আদিত্য মৌমিতা আর কোয়েলের হাত ধরে ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে গেলো। ইউনিভার্সিটি থেকে বেরোতেই দেখলো রাজ গাড়ি নিয়ে আসছে। রাজ এসে আদিত্যের গাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়ে নেমে জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে”। এর উত্তরে সবাই একে অপরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি শুরু করলো, কি বলবে ভেবে।

রাজ: কি রে সবাই এভাবে একে অপরের মুখ দেখছিস কেন?

আদিত্য: আমি বলছি।

আদি রাজদাকে একটু সাইডে নিয়ে গিয়ে আস্তে আস্তে ডিটেইলসে সবটা বলতে শুরু করলো। কোয়েল হুট করে আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরলে আমি ওর মুখে দিকে তাকালাম। বেচারি ভয়ে একবারে চুপসে গেছে। সৌভিকদার কথাটা মনে করে আমিও একটা বড়ো সরো ঢোঁক গিললাম। আদির বলা শেষ হতেই আদির মুখটাও থমথমে হয়ে গেলো রাজদার নীরবতা দেখে। রাজদা শার্টের হাতা ফোল্ড করতে শুরু করলেন এবার। আদি রাজদাকে সেই দেখে কিছু বলতে যাবে তাঁর আগেই রাজদা লাফিয়ে গাড়ির বনেটের উপর উঠে বসে, আদির পিঠে জোরে একটা চাপর মারলেন।

রাজ: আরি সাবাস! গ্র্যান্ড রিসেপশনের আগে তো তুই গ্র্যান্ড অ‌্যানাউন্সমেন্ট করে ফেললি। (হেসে)

রাজদার এতো শান্ত ভাব দেখে অবাক হওয়ার সাথে সাথে স্বস্তি পেলাম। আদি হেসে বললো,

আদিত্য: প্ল্যানিং তো শুধু অ‌্যানাউন্সমেন্টের ছিলো, সেটা যে গ্র্যান্ড হয়ে যাবে ভাবিনি।

মৌমিতা: প্ল্যানিং ছিলো মানে?

রাজদা: মানে আদি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলো এই বিষয়টা সবাইকে জানাবে। আর তোমাকেও সারপ্রাইজ দেবে।

মৌমিতা: মানে আদি যেগুলো বললো কিছুক্ষণ আগে সেগুলো সত্যি?

আদিত্য: নাহ আমি তো শুধু শুধু ঢ্যাঁড়া পেটালাম সবার সামনে তাই না? (রেগে)

কোয়েল: আরে দাভাই চটছিস কেন? মৌ সারপ্রাইজটা হজম করতে পারেনি। এমন একটা পরিস্থিতিতে হয়েছে ব্যাপারটা তাই হয়তো।

আদিত্য: এখনই হজম করতে না পারলে হবে, আগে তো অনেক কিছু হজম করতে হবে।

আদি দুষ্টু হেসে আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিলে আমি একটা শুকনো ঢোঁক গিলি চোখ বড়ো বড়ো করে। কোয়েল আর রাজদা যে হাসলেন আমার রিয়াকশন দেখে সেটা আমি আড় চোখে লক্ষ্য করলাম। এদিকে আদিও ঠোঁট কামড়ে হাসছে।

মৌমিতা: নির্লজ্জ! (বিড়বিড় করে)

আদিত্য: রাজ! কোথায় গেছিলিস তুই?

রাজ: আমার অফিসের একটা ফাইল আনতে। বায় দ্য ওয়ে, ডেট ফিক্সড কবে করেছিস।

আদিত্য: এই তো রবিবার।

রাজ: তার মানে আর পাঁচদিন পর? আজকে তো সোমবার।

কোয়েল: দাভাই, নিমন্ত্রণ নেওয়ার জন্য দিন গুনছে।

আদিত্য: ওকে আবার নিমন্ত্রণ করতে হবে নাকি?

রাজ: যাবার হলে তো নিমন্ত্রণ নেওয়ার আশা করবো। যেখানে আমাকে মানায় না সেখানে আমি গিয়ে কি করবো?

রাজ ইচ্ছা করেই কথাটা বলেছে সবার রিয়াকশন দেখার জন্য। কথাটা শুনতেই আদিত্য মাথা নামিয়ে নেয় আর মৌমিতা, কোয়েলেরও মুখটা কালো হয়ে যায়। সেই দেখে রাজ হেসে দিয়ে বলে,

রাজ: এতো সিরিয়াস হওয়ার কিছু নেই আমি মজা করছিলাম। আসলে, আমার মনে হয় না আমি সেদিন থাকতে পারবো বলে। আমাকে কাজের থ্রু তে একটু বাইরে যেতে হবে।

আদিত্য: (তাচ্ছিল্য হেসে) এড়িয়ে যাওয়ার জন্য কথাটা বলে সান্তনা দিচ্ছিস তাই না?

রাজ: আমি জানতাম মজাটা করার পর তুই এটাই বলবি তাই প্রমাণটা নিয়ে এসেছি।

রাজদা বনেট থেকে নেমে গাড়ির ভিতর থেকে ফাইলটাআদির হাতে ধরিয়ে বললো,

রাজ: এই দেখ, টিকিট কবে বুক করা। তুই আমাকে আজকে সকালে জানালি আর টিকিট বুক আমি এক সপ্তাহ আগে করে রেখেছি। একটা ইম্পরট্যান্ট মিটিং আছে ভাই। নেক্সট প্রজেক্টের জন্য ডিল ফাইনাল হবে আমাকে যেতেই হবে নাহলে কোম্পানির লস হবে।

আদিত্য: ঠিক আছে দ্যান আমি ডেট পিছিয়ে দিচ্ছি। তাহলেই তো হয়ে যায়।

রাজ: না হয় না। আমি কবে ফিরবো তাঁর কোনো ঠিক নেই।

কোয়েল: মানে?

রাজ: মানে হতে পারে ডিল ফাইনাল হওয়ার পর ওখানকার ব্রাঞ্চে থেকেই আমাকে প্রজেক্ট কমপ্লিট করে ফিরতে হলো। যতক্ষণ প্রজেক্ট সাকসেসফুল হবে, আমি আসতে পারবো না সেক্ষেত্রে। তুই যেভাবে আজকে সবার সামনে বিষয়টা বলেছিস তাতে আমার মনে হয় না দেরী করা ঠিক হবে বলে তাই প্লিজ আমার জন্য তোদের রিসেপশনটা ডিলে করিস না।

আদিত্য: তুই আমার রিসেপশনে থাকবি না এটা আমি মানতে পারছিনা কিছুতেই রাজ। ইটস ইম্পসিবল।

মৌমিতা: রাজদা, আপনি না থাকলে আমাদের কি করে ভালো লাগতে পারে? আমার ননদিনীর কি ভালো লাগবে বলুন?

কোয়েল: ও কখনও ভেবেছি আমার ভালো লাগা-না লাগা নিয়ে? বাদ দে, ওকে এসব বলা বেকার। ও ভাবে না আমার কথা।

কোয়েল তেজ দেখিয়ে ওখান থেকে চলে গেলে আমি অসহায় ভাবে রাজদার দিকে তাকাই। আদিও ভীষণ আপসেট হয়ে রয়েছে বোঝা যাচ্ছে।

রাজ: আচ্ছা এভাবে আপসেট হোসনা আমি ট্রাই করছি কোনো ভাবে মিটিংটা পোস্টপন করা যায় কি না। বাট আমি বলবো আশা না রেখে তোরা রিসেপশনটা সেরে ফেল। কুহুকে আমি মানিয়ে নেবো। আদি, তুই তো বুঝবি বল আমার সিচুয়েশনটা?

আদি কোনোরকম ভাবে হ্যাঁ বোধক মাথা নেড়ে ওখান থেকে চলে গেলে রাজদা আমাকে বলেন,

রাজ: আদিকে প্লিজ একটু বুঝিও? আমার মনে হচ্ছেনা আমি আর পোস্টপন করতে পারবো বলে মিটিংটা। কারণ আমার বস নেই দেশে, উনি নিজে আমাকে ডিলটা সাইন করতে বলেছেন। এক্সামের জন্য পোস্টপন করেছিলেন মিটিংটা এরপর আর করবেন কি না বুঝতে পারছি না।

মৌমিতা: আপনি চেষ্টা করুন, আমিও দেখছি ওকে বোঝানো যায় কি না।

রাজ: সে তো ঠিক আছে কিন্তু এই “আপনিটা” তুমি কখন হবে? (হেসে)

মৌমিতা: উমম..আমাদের রিসেপশনে আসলে আর..

রাজ: আর?

মৌমিতা: আর আমার একটা প্ল্যান আছে। পরেশবাবুর এগেইনস্টে প্রুফ কালেক্ট করার জন্য।

রাজ: কি প্ল্যান?

মৌমিতা: আমার আদির রিসেপশনের আগে একটা পার্টির আয়োজন করবো। সেখানে আমার আর আদির ক্লাসমেটসরা থাকবে। জিয়াও থাকবে। সেখানে জিয়াকে নেশা করাতে হবে তারপর তুমি ওর কাছে গিয়ে বলবে আদিকে ওর বাবা পছন্দ করে না, ওনার কাজে বাঁধা দেওয়ার জন্য অপমান করেছেন। তাই আদি আমাকে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে নাহলে জিয়া যদি ওর বাবার এগেইনস্টে প্রুফ দেয় তাহলে আদি ওকেই মেনে নেবে।

রাজ: আইডিয়াটা বেশ ভালো। আদি আর কোয়েলকে জানাতে হবে তো?

মৌমিতা: চলুন।

ফ্ল্যাশব্যাক এন্ড……………………………….

[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]

আইডি- কোয়েল ব্যানার্জী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here