সুখের_নেশায় #পর্ব___১৮

0
714

#সুখের_নেশায়
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা
#পর্ব___১৮

হসপিটালের লম্বা করিডোর পেরিয়ে বড় বড় পা ফেলে চৈত্রিকার বাবার কেবিনের কাছাকাছি এলো সাফারাত। বা দিকে তাকাতেই দেখে ফাহমিদা মিম কে বুকে নিয়ে কাঁদছেন। ক্ষণে ক্ষণে মায়ের বুকে ফুঁপিয়ে উঠছে মিম। কিন্তু চৈত্রিকা নেই। কোথায় গেল মেয়েটা?সাফারাতের বুকে চিনচিনে ব্যথা শুরু হলো। সাফারাত তো মায়ের ভালোবাসা পেয়েও মা’র হারানোর যন্ত্রণা টা আজও সহ্য করতে পারে নি। অন্যদিকে চৈত্রিকা সর্বদা বাবার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কাঙ্গাল ছিল। হয়ত আজও কাঙ্গাল রয়ে গেল মেয়েটা।

সাফারাতের ইচ্ছে করছে না ফাহমিদা,মিম কে সান্ত্বনা দিতে। এই মুহুর্তে তাদের কান্নাটায় সঠিক। প্রিয় মানুষ হারিয়ে গেলে কে না কাঁদে?না চাইতেও অশ্রু ঝরে পড়ে চক্ষু কোটর হতে। কেবিনের দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করে সাফারাত। নিরবতায় আচ্ছন্ন কেবিনটায় চৈত্রিকা বসে আছে স্থির। নির্নিমেষ,গভীর দৃষ্টিতে চেয়ে আছে সাদা কাপড়ে আবৃত বাবার নিথর দেহের পানে। চোখের পলকও যেন ফেলছে না মেয়েটা। সাফারাত ধীর পায়ে পাশে গিয়ে দাঁড়াল। কোলের উপর পড়ে থাকা চৈত্রিকার হাত টা ধরল আলতো করে। তৎক্ষনাৎ দৃষ্টি সরিয়ে সাফারাতের দিক নিক্ষেপ করল চৈত্রিকা। ছোট্ট করে বললো,

” আপনি এসেছেন? ”

কি আশ্চর্য! মেয়েটার চোখে জলের ছিটেফোঁটা নেই। কন্ঠ নরম,শান্ত। সাফারাত হকচকালো । এক ঝাঁক ভয় জেঁকে ধরল তার মনটাকে। এই মুহুর্তে চৈত্রিকার পাগলের মতো কাঁদার কথা ছিল। কাঁদছে না কেন মেয়েটা?কেন কাঁদছে না?চৈত্রিকা কি তবে অতি শোকে পাথর হয়ে গেল!সবকিছু এলোমেলো লাগছে তার। চৈত্রিকাকে টেনে উঠিয়ে দুই বাহুতে হাত রাখে আলতো করে। লহু স্বরে বলে উঠল,

” আপনাকে অসুস্থ দেখাচ্ছে চৈত্র। বাহিরে চলুন। ”

চৈত্রিকা চোখ বুঁজল। সাফারাতের এক হাতে হাত রাখল। বাঁধন বেশ নড়বড়ে। নিষ্প্রভ স্বরে বললো,

” বাবাকে সিলেট নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন প্লিজ। বাবা বলেছে উনার দেহ টা যেন উনার জন্মস্থানে সমাহিত করা হয়। ”

কতটা সহজে কথাগুলো বলছে মেয়েটা!সাফারাতের ভিতরটা দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে। চৈত্রিকাকে বুকের সাথে মিশিয়ে নিতে পারলে হয়ত শান্তি পেত।

” আপনি একটু নরমাল হন প্লিজ। আমি সব ব্যবস্থা করে ফেলছি এখনই। একটাই অনুরোধ নিজের ভিতরের কষ্টগুলো বাহির মুক্ত করে দিন। ”

চৈত্রিকা সাফারাতের আকুতিভরা কন্ঠ শুনে মাথা নাড়ালো। তৎপরে বাবার লাশের দিকে তাকিয়ে রইল নিষ্পলক,অনিমেষ। ফোন বের করে দিহানকে কল দিল সাফারাত। কারণ ফাহমিদা, মিম কে সামলাতে হলে আরো একজনের প্রয়োজন। চৈত্রিকা কে বসিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে এল। মিম দাঁড়িয়ে ছিল কেবিনের অভিমুখে। সাফারাতকে দেখে মেয়েটা হাউমাউ করে কেঁদে উঠল। হতবিহ্বল হয়ে পড়ল সাফারাত। ঠোঁট চেপে মিমের মাথায় হাত রাখে শুধু। ওদের কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে সে। দ্রুত বেগে স্থান ত্যাগ করে রিসিপশনে এলো। রিসিপশনের মেয়েটা একগাল হাসল তাকে দেখে। তাকিয়ে রইল স্থির। মেজাজ খিটখিটে হয়ে উঠল সাফারাতের। গম্ভীরভাবে সকল ফর্মালিটি পূরণ করে লাশ নেওয়ার ব্যবস্থা করে ফেলে। ইতিমধ্যে দিহানও এসে পড়েছে। ওয়ার্ড বয়দের বলা হলো লাশ এম্বুল্যান্সে তুলে দিতে। হার্ট এট্যাকে মারা গিয়েছেন আহমেদ সাহেব।

এম্বুলেন্সে উঠেছেন ফাহমিদা, দিহান। চৈত্রিকা ও মিম কে উঠতে দেয় নি সাফারাত। ফাহমিদা সাফারাত ও দিহানকে এক দেখায় চিনতে পারলেও কিছু জিজ্ঞেস করলেন না। এই মুহুর্তে একটা শব্দও উচ্চারণ করার ক্ষমতা নেই উনার। চুপচাপ বসে আছেন। সাফারাত চৈত্রিকাকে নিয়ে গাড়িতে উঠবে তখনই তাহাফ,তাহাফের বাবা-মা হাজির হয়। সাফারাতের হাতে চৈত্রিকার হাত দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে তাহাফ। এগিয়ে এসে চৈত্রিকার হাত ছাড়িয়ে নিতে উদ্যত হলে সাফারাত টেনে এক হাতে চৈত্রিকাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। তাহাফের চোখ দুটো জ্বলে উঠে। কিন্তু তা যেন সাফারাতের রক্তিম চক্ষুদ্বয় হতে নিতান্তই তুচ্ছ, নিরর্থক। কপালের শিরাগুলো দৃশ্যমান সাফারাতের। চোয়াল শক্ত হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কন্ঠে নম্রতা এঁটে বলে উঠল,

” চৈত্রর অবস্থা ভালো না। আর এখন সিন ক্রিয়েট করার সময় নই। আপনি কে আমি জানিনা তবে পরে রাগ,ক্রোধ দেখাবেন। এখন না। ”

মিম পাশ থেকে বললো,

” ভাইয়া ইনি আপুর বাগদত্তা। ”

সাফারাতের রাগ টা মাথাচাড়া দিয়ে উঠল সঙ্গে সঙ্গে। তাহাফ ক্রুদ্ধ কন্ঠে বললো,

” চৈত্র আমার সাথে যাবে। আর আপনিই বা কে হোন চৈত্রর?আমার বাগদত্তাকে আপনি কোন অধিকারে ছুঁয়েছেন?”

চৈত্রিকার এতক্ষণ নিবিড়তা ভেঙ্গে গেল। কন্ঠে গভীর আর্তবিষাদের ছাপ।

” আমি আপনার সাথে যাবো না। সাফারাতের সাথে যাবো আমি। সাফারাতের পরিচয় আপনার জানতে হবে না। শুধু এতটুকু জেনে রাখবেন আমার একমাত্র ভরসার স্থান সাফারাত। যদি পারেন অমানুষের মুখোশ খুলে মানুষ হবেন। আমার বাবার নিথর দেহ পড়ে আছে অথচ আপনার মধ্যে নূন্যতম মানবিকতা নেই। আমার চোখের সামনে আসবেন না আপনি। একদম আসবেন না। ”

সাফারাত, তাহাফ দু’জনের চোখ নিবদ্ধ চৈত্রিকার কঠোর মুখশ্রীতে। ভিতরে ভিতরে ফুঁসছে তাহাফ। চৈত্রিকাকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে তার। চৈত্রিকার দেহে অন্য পুরুষের স্পর্শ তার সহ্য হচ্ছে না। না এটা ভালোবাসা না। তাহাফ শুধু একান্ত ভাবে নিজের নিকৃষ্ট ছোঁয়া আঁকতে চায় চৈত্রিকার দেহের সর্বাঙ্গে। তাহাফের বাবা-মা কিছু বলতে পারছেন না। পরে এসব নিয়ে কথা হবে বলে তাহাফ কে টেনে নিয়ে যান উনারা। চৈত্রিকা কারো অপেক্ষা না করে মিম কে নিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে। সাফারাত বসে তার পাশে। ধূসর রঙের চক্ষু দুটি সারা রাস্তা শুধু চৈত্রিকার দিকে তাকিয়ে পার করে। অপেক্ষা তার কখন চৈত্রিকার নেত্রযুগল হতে বেয়ে যাবে এক ফোঁটা জল। জলে ভিজিয়ে দিবে সাদা শার্ট,প্রশস্ত বক্ষস্থল।
________________

সন্ধ্যে গড়িয়ে রাতের আঁধারে ঢেকে গেছে ধরিত্রী। ঘরের ভেতর মানুষের শোরগোল। পাড়া-প্রতিবেশীদের আগমন ঘটেছে সান্ত্বনা দেবার লক্ষ্যে। কিন্তু চৈত্রিকার যে কোনো ধরনের সান্ত্বনা চাই না। তার স্রেফ বাবাকে চায়। হসপিটালে নিয়ে যাবার সময় গাড়িতে বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে দেবার দৃশ্য টা পুনরায় চায়। বাবা তো তার হাত টা ধরেই শেষ বার নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিল। তখন থেকে চৈত্রিকার চোখের জল শুকিয়ে গেছে। ভিজে উঠে না চোখের কোল। আজ চারপাশে মানুষের উচ্চআওয়াজ,ফিসফিস করা শব্দের শেষ নেই। শেষ হয়ে গেছে বাবার সেই ক্রোধ মিশ্রিত ধমক,মুখ ফিরিয়ে নেওয়া। টলমল পায়ে পুকুর ঘাটে এসে বসল চৈত্রিকা। ওদের বাড়িটা তো আহমেদ বিক্রি করে দিয়েছে। এখন যেখানে আছে সেটা আহমেদের চাচাতো ভাইয়ের বাড়ি। বিকেলের দিকে শেষ হয়েছে উনার দাফনের কাজ। ভেজা মাটির গন্ধ আসছে। পিচ্ছিল হয়ে আছে পুকুর ঘাট। শেষ বিকেলে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়ত চেয়েছে চৈত্রিকাদের জীবনের সকল কষ্ট ধুয়ে মুছে নিতে কিন্তু বরাবরই ব্যর্থ হলো। নতুন এক কষ্টের যে সূচনা হয়েছে মাত্র।

কারো পদধ্বনি পেয়ে চৈত্রিকা ঘাড় বাকিয়ে চাইল। তাহাফ দাঁড়িয়ে আছে ঠাই। বাড়ির উঠোন থেকে আসা আবছা আলোর ছটায় চৈত্রিকা তাকে দেখেও দেখে নি এমন ভান করে সামনে তাকিয়ে রইল অনঢ়। চোখ মুখ শক্ত করে গটগট পায়ে স্থান ত্যাগ করে তাহাফ। পরক্ষণেই আবারো পায়ের শব্দে চৈত্রিকা নড়েচড়ে বসল। বিরস স্বরে পিছনে না তাকিয়েই প্রশ্ন করে,

” কোথায় ছিলেন?”

সাফারাত পাশে দাঁড়িয়ে চৈত্রিকার দৃষ্টি লক্ষ্য করে সুদূরে রাখল। অন্ধকার ব্যতীত কিছুই নেই। এদিকটায় তমসার ভিড়। চাঁদের আলো নেই। আকাশে মেঘ গর্জন করে উঠছে ক্ষণে,ক্ষণে। চৈত্রিকা পুনরায় প্রশ্ন করল,

” ঢাকা ফিরে যাবেন?”

” উঁহু। আপনি বোধ হয় ভুলে গেলেন সিলেটে বাড়ি আছে আমাদের। এখান থেকে কিছু দূরে। ”

” ভুলি নি। তবে আট বছরের দূরত্বে মস্তিষ্ক থেকে অনেক কিছুই বেরিয়ে গেছে। নয়ত চাপা পড়ে গেছে। পুরোনো হয়নি শুধু আপনার সাথে কাটানো সময়গুলো। ”

সাফারাতের হৃদপিণ্ডে কথাটা গিয়ে তীরের মতো বিঁধল। চৈত্রিকার হাত টা আঁকড়ে ধরে শরীরের অনেকখানি শক্তি ব্যয় করে।

” মিম,আন্টি,আপনি আমার সাথে চলেন আমাদের বাড়িতে। কয়েকটা দিন তো থাকবেন সিলেটে। এখানে আপনাদের প্রবলেম হবে। তাছাড়া তাহাফ আছে এখানে। আমি পারব না ওকে এখানে সহ্য করতে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি কথা বলব আন্টির সাথে। আপনাকে ছাড়া এক দন্ডও চলবে না আর আমার। ”

চৈত্রিকার কোনো হেলেদুল হলো না। নির্লিপ্ত ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছে। তার তো খুশি হবার কথা,আনন্দে চোখে পানি আসার কথা। এতো বছর ধরে যাকে ভালোবেসে এলো একপাক্ষিক ভাবে,সে ভালোবাসে কি-না না জেনে। আজ সেই মানুষ টা হাতটা মুঠোয় বেঁধে বলছে তাকে ছাড়া থাকতে পারবে না! তবুও চৈত্রিকা নির্বাক। সাফারাত এবার বাধ্য হলো নিষ্ঠুর হতে। চৈত্রিকা এমন রোবটের মতো থাকলে তার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যদি কষ্ট পায় পাবে। তবুও এই মেয়েকে কাঁদাবে সাফারাত। টেনে নিজের বুকে নিয়ে এলো। কোমর জরিয়ে নিজের সাথে চেপে ধরল কঠোরভাবে। বিদ্যুৎ চলে গিয়ে নিকষ কালোতে ডুবিয়ে দিয়েছে প্রকৃতি। প্রগাঢ় অন্ধকারে চৈত্রিকা হাতড়ে সাফারাতের শার্ট আঁকড়ে ধরে। মিনমিন করে বললো,

” বাবার কাছে যাবো। ”

সাফারাত গভীরভাবে ডেকে উঠল,

” চৈত্র! ”

চৈত্রিকার গলার স্বর,আর্তনাদ বেড়ে গেল হুট করে। ভালোবাসার, অতি শান্তির স্থানে মুখ গুঁজে সারাদিন চেপে রাখা কষ্ট মুক্ত করে দিল। বাঁধ ভাঙা অশ্রু গড়িয়ে যাচ্ছে। পাগলের মতো প্রলাপ করতে লাগল চৈত্রিকা। সাফারাতের গলায়,বুকে খামচে ধরে,আঁচড় কেটে ক্রমাগত বলতে লাগল– ‘ আমি বাবার কাছে যাবো। আমায় নিয়ে চলুন। ‘

সাফারাতের বুকটা হাহাকার করে উঠল। চৈত্রিকাকে মিশিয়ে নিল বুকে। যদি পারত তাহলে মেয়েটার সব কষ্টে নিজের জমায়িত কষ্টের সাথে যোগ করে নিত সাফারাত। এই মেয়ের কান্নার শব্দ, ফোঁপানো হৃদয়ের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিচ্ছে। চৈত্রিকা কাঁদছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছে মেয়েটা। নিঃসাড় হয়ে আসছে সমস্ত দেহ। বাবা নামক মানুষটা যে নেই। কেন পারল না সে বাবার রাজকন্যা হতে?কেন?সাফারাতের বুকে মুখ গুঁজে নিস্তব্ধ, নিশ্চুপ হয়ে গেল একটাসময়। সাফারাত অবাক হয়ে চৈত্রিকা কে বুক থেকে সরালো কিছুটা। দেহ ছেড়ে দিয়েছে। পড়ে যেতে নিলে পাঁজা কোলা করে তড়িৎ গতিতে ঘরে নিয়ে এলো। মানুষজনের দিকে ফিরেও তাকালো না। মিম,ফাহমিদা আরো কয়েকজন ছুটে আসতেই জানালো চৈত্রিকা জ্ঞান হারিয়েছে। কেউ কেউ তীররেখা নজরে চাইছে ওদের দিকে। পাড়ার কয়েকজন মহিলা ফিসফিস করছেন। সাফারাত বাহিরের টিউবওয়েল থেকে পানি এনে চৈত্রিকার চোখে মুখে ছিটিয়ে দিল। মিম কে বলল মাথায় পানি দিতে। ফাহমিদা মিমের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন সাফারাত চৈত্রিকার খুব ভালো ফ্রেন্ড। তিনি আর কিছু জিজ্ঞেস করেন নি। মেয়ের উপর অগাধ বিশ্বাস আছে। চৈত্রিকার শরীর মুহূর্তেই গরম হয়ে যাচ্ছে। জ্বরে পুরো দেহ কাঁপছে তার। সাফারাত হন্তদন্ত হয়ে বাহিরে এলো। দিহানকে বললো বাজারে ডাক্তার আছে জলদি যেন ডাক্তার নিয়ে আসে।

এই সমাজ,সমাজের মানুষের কারোই তোয়াক্কা করল না সাফারাত। সারারাত বসে রইল চৈত্রিকার শিয়রে। চৈত্রিকার অবস্থা খুব একটা ভালো না। শারীরিকের চেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সে। ফাহমিদা অসুস্থ হয়ে পড়ায় উনাকে অন্য ঘরে নিয়ে গেলেন। মিম বসে রইল বোনের পাশে। দিহান অনেকবার এসেছে, সাফারাত কে বুঝিয়েছে বাহিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সাফারাতের ত্যাড়ামি,জেদের কাছে কেউই টিকতে পারে নি। চৈত্রিকা অচেতন অবস্থায়ও সাফারাতের হাত টা ধরে আছে। ঘুমে থেকেও মেয়েটা আঁকড়ে ধরে রেখেছে বিশস্ত হাত টুকু।
________________

সাতটা দিন পেরিয়ে গেছে। চৈত্রিকার সুস্থ হতে অনেকটা সময়ই লেগে গিয়েছে। এই সাতদিন সাফারাত চৈত্রিকার খেয়াল রেখেছে। চোখে হারিয়েছে চৈত্রিকাকে। তাহাফ ও তার পরিবার দু’দিনের মাথায় চলে গিয়েছে ঢাকা। দিহানের মা একা বিধায় তাকেও চলে যেতে হয়েছে। সাফারাত নিজের বাড়িতে রাত কাটিয়ে সকালে সূর্যের রশ্মি চারদিকে না ছড়াতেই হাজির হয়ে যায় চৈত্রিকার সামনে। রাতটুকুর জন্য যেতে চাইত না। চৈত্রিকার কথায় বাধ্য হয়ে যেত। শুধুমাত্র বন্ধুত্বে মেয়ের প্রতি কোনো ছেলের এতো পাগলামি, উম্মাদনা,চিন্তা ফাহমিদাকে ভাবিয়ে তুলল। চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়লেন তিনি। তাহাফের মা ফোন করেছিলেন কিয়ৎক্ষণ পূর্বে। তাহাফ খুব শীগ্রই চৈত্রিকার দায়িত্ব নিতে চায়।

#চলবে,,,,!
( ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here