সিঁদুর শুদ্ধি #নাফিসা মুনতাহা পরী #পর্বঃ৩৭

0
636

#সিঁদুর শুদ্ধি
#নাফিসা মুনতাহা পরী
#পর্বঃ৩৭
.

আজ তোকে শিকারের পালা। অপেক্ষায় ছিলাম তুই কখন বাসা থেকে বের হবি। আজ তোর আর্তচিৎকারই হবে আমার সুখ। যতটা আঘাত তুই ওকে দিয়েছিস তার থেকে কয়েকগুন আঘাত এখন তুই পাবি। যে ক্ষমতার দম্ভে তুই এত নিকৃষ্ট কাজ করেছিস, সেই ক্ষমতায় তোর কাছ থেকে সারাজিবনের মত ছিনিয়ে নিব। দেখি তোর দম্ভ এবার তুই কোথায় দেখাস।
অভি মহিলাটির দু’টি পাখা এক নিমিষেই বেঁধে ফেলে। তারপর হাতের ইশারা করতেই হাত থেকে আগুনের লাভা বের হতে লাগলো।

আগুন দেখে মহিলাটি আৎকে ওঠে। ভয়ে জোড়ে একটা চিৎকার দিয়ে বলল,

—” তুমি এই হিমশীতল আগুন কোথায় থেকে পেলে! বল, কে তুমি?”

অভি চোখ-মুখে কঠোরতার ভাব এনে বিদ্রুপ স্বরে বলল,

—” কি ভয় লাগছে! যদি ভয় পেয়েই থাকিস, তাহলে আমাকে আপাতত তোর যম মনে কর।”

না আমাকে ছেড়ে দাও। আমিতো তোমার কোন ক্ষতি করিনি, তাহলে তুমি কেন আমার এতবড় ক্ষতি করতে চাও! ঐ আগুনের স্পর্শে আমি আমার সমস্ত শক্তি হারিয়ে ফেলব। আমাকে কেন এতবড় শাস্তি দিবে বলেই মহিলাটি অভির পায়ে পড়ল।

অভিও একটু সরেই মহিলার শরীরে আগুন স্পর্শ করালো। তাতেই মহিলার শরীরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে লাগল। তার শরীর সমস্ত যাদুশক্তি শেষ হতে লাগলো। মহিলাটির আর্তচিৎকারে, অভি তাচ্ছিল্য কন্ঠে বলে উঠলো,

—” খুবতো নিজের শক্তি দেখিয়েছিস এতদিন ধরে। একজন নিরাপরাধ মানুষকে বাসা ছাড়তে অবদি বাধ্য করলি! এত তোর শক্তির তখোম! এবার দেখা তোর শক্তি। আমিও দেখতে চাই, তুই কত উড়তে পারিস।”

বৃদ্ধা মহিলাটির শরীরের আগুন নিভে গেছে। সে এখন শক্তিহীন একটা পিশাচ। একটা পিশাচের জন্য এর থেকে লজ্জাজনক অবস্থা আর হতে পারেনা। মহিলাটি তার সর্বশেষ চেষ্টা করলো অভিকে মারার জন্য। কোমরের ভাঁজ থেকে একটা কৌটা ছুড়ে মারলো অভির দিকে। ঐ মেয়ের জন্য আজ তুই আমার এই হাল করলি! তোকে আমি ছাড়বোনা। আগে তোকে মারবো তারপর ঐ মেয়েটাকে।

বুড়ি মরবে কিন্তু তেজ কমাবেনা। এই শক্তিহীন শরীর নিয়ে তুই কি করবি হুম বলেই অভি অদৃশ্য হয়ে গেল।
সাথে সাথে মহিলাটির চ্যাল বিফলে গেল। মহিলাটি থমকে দাড়ালো। কারন তার শেষ ম্যাজিক উল্টো তার উপরই প্রভাব পড়তে লাগলো। মহিলাটির শরীর ধীরে ধীরে পাথর হতে শুরু করলো। এমন সময় অভি আবার দৃশ্যমান হল।

মহিলাটির পা থেকে আস্তে আস্তে পাথর হতে চলছিল। সে আফসুস সুরে বলল,

—” আমি জানিনা, তোমার সাথে আমার কি শত্রুতা রয়েছে। তুমি একটা নিকৃষ্ট অর্ধমানবীর জন্য আমার এই হাল করলে? আমার দুর্ভাগ্য তাকে আমি শেষ করতে পারলামনা। আর একটু সময় পেলে, তাকে তো আমি কাঁচাই চিবিয়ে খেতাম।”

মহিলাটির কথা শেষ হতেই অভি মহিলাটির পা বরাবর একটা কিক করতেই মহিলার পাথরের শরীর কোমড় হতে ভেঙ্গে গেল। আর বডিটা মাটিতে গড়াগড়ি খেতে লাগলো। অভি রাগে কটমট করতে করতে বলল,

—” সে কোন সাধারন নারী নয়। সে আমার স্ত্রী, মিসেস. অভি ভৌমিক। ওর গায়ে হাত দেওয়ার আগে ওর পরিচয় সম্পর্কে তোর অবগত হওয়া উচিত ছিল। অনেক কষ্ট দিয়েছিস। এখন, তুইও সেই কষ্ট উপভোগ করতে থাক।”

কথাগুলো বলে অভি চলে যাচ্ছিল। এমন সময় মহিলাটি খিকখিক করে শেষ হাসি হেঁসে নিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো,

—” আমার জিবন তো আজ শেষ। তবে, তুমিও একটা কথা মনে রেখ। তোমার সমাজ কোনদিনও ঐ অর্ধমানবী কে মেনে নিবেনা। তুমি সব জায়গায় লজ্জিত হবে। তোমাকে সবাই ধিক্কার দিয়ে সমাজচ্যুত করবে। সেই দিনগুলো হয়তো আমি দেখতে পারবোনা কিন্তু পুরো পিশাচ জগৎ দেখবে তোমার অক্ষমতা।”

অভি ওকে আর কোন কথা বলার সুযোগ দিলোনা। চলতে চলতে হাত পিছন দিকে নিয়ে ঐ মহিলার উদ্দেশ্য আগুন ছুড়ে মারলো। অভির আগুলের জেল্লায় মহিলাটির বাঁকি শরীর ভষ্ম হয়ে বাতাসে উড়ে গেল।

অভি যখন মহিলাটিকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল তখন বিদ্যা দৌড়াতে দৌড়াতে একটি ব্রীজের উপর এল। কষ্ট, অপমান, অভিমান, আশাভঙ্গ সব কিছু একসাথে ওর মন আর ধৈর্য্যর উপর আঘাত হানে। আর সে মারাত্বক একটা ভুল ডিসিশন নেয়। ব্রিজের রেলিং এর উপর উঠে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকে। ব্রিজের নিচ দিয়ে নদী বয়ে চলে গেছে। কোনকিছু না ভেবেই ব্রীজ থেকে নদীর জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিদ্যা। নদীর গভীর জলে তলিয়ে যেতেই কি যেন একটা শক্তি ওকে খপ করে ধরে ফেলে। নিজের শরীর দিয়ে বিদ্যার শরীরকে পেঁচিয়ে ধরে পাড়ে নিয়ে আসে। তারপর ওকে ঘাসের উপর রেখে বিদ্যার পাশে বসে অনেকক্ষন বিদ্যার দিকে চেয়ে রইলো। পূর্নিমার চাঁদের আলো বিদ্যার মুখে পড়তেই ওর চেহারা চমকাতে লাগলো। তাদেখে মাঝারি আকারের সাপটি ভয় পেয়ে তিনহাত দুরে সরে গেল। এক টুকরো মেঘ এসে যখন চাঁদকে ঢেকে দিল তখন চাঁদের আলো বিদ্যার কাছ থেকে আড়াল হতেই ও আবার স্বাভাবিক হয়ে গেল।

সাপটি আবার কিলবিলিয়ে বিদ্যার পাশে এসে লেজ গুটিয়ে দাড়ালো। আবার বিদ্যার দিকে চেয়ে ওর লেজ দিয়ে বিদ্যাকে আলতো ধাক্কা দিল। সেন্সলেস বিদ্যা লেজের ধাক্কা খেয়ে একটু নড়ে উঠলো। সাপটির মনে সাহস হল। সে এবার বিদ্যার শরীরে উঠে একদম ওর বুকে ফোনা তুলে দাড়ালো। বিদ্যার নাকে সাথে নিজের মাথাটা ঘেষেই পলট দিল সাপটি। হারিয়ে যাওয়া কোন মূল্যবান সম্পদ ফিরে পেলে যেমন মন উচ্ছসিত হয় ঠিক বিদ্যাকে পেয়ে সাপটিরও তেমন হল। সে একটা মানুষ বন্ধু পেয়েছে। সরসর করে বিদ্যার উপর থেকে নিচে নামলো। তারপর মনের আনন্দ বার কয়েক পলট খেয়ে মুখ খুলে বলল,

—” আমিও কাজ করতে পারি। কে বলেছে আমি অবোধ। ওহে আমার বন্ধুর দল, তোমরা দেখে যাও আমার নতুন সাথীকে। সাথী…..! কিন্তু সাথীতো কথা বলছেনা।”

সাপটি ওর লেজ নিজের চোখের কাছে এনেই চোখ বন্ধ করলো। তারপর আবার চোখ খুলতেই চোখ দিয়ে একফোঁটা জল পরে গেল। আর জলের ফোটা সাথে সাথে ছোট্ট একবিন্দু পাথরের আকার ধারন করে। এবার লেজ দিয়ে ঐ পাথর বিন্দু বিদ্যার বুকে রাখতেই তা তীব্র উজ্জ্বল আলোতে পরিনিত হল। উজ্জ্বল আলো বিদ্যার বুকের সাথে মিশে গেল। সাপটি কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকে বিদ্যার পাশে। বার বার লেজ দিয়ে বিদ্যাকে জাগানোর চেষ্টা করে কিন্তু বিদ্যার জ্ঞান ফিরেনা। সাপটি শেষে মন ভার করে শেষ বার বিদ্যাকে পরখ করতেই দেখতে পেল, একটা আলোর ঝলকানি ওর দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছে। সাপটি ভয়ে ছুটলো তার গর্তের দিকে। প্রানপনে ছুটে গর্তের ভিতর নিজের শরীলকে গলিয়ে দিয়ে মুখটা বাহিরে রেখে বিদ্যাকে দেখতে লাগলো। এমন ভাবে সে রইল, যাতে কোন বিপদ ঘটলেই গর্তের ভিতর চলে যেতে পারে।

আলোর ঝলকানিটা দ্রুতই বিদ্যার কাছে পৌছালো। এটা আর অন্য কেউ ছিলোনা। এটা ছিল অভি। আলোকরশ্মি থেকে মানুষে পরিনিত হল অভি। অভি বিদ্যার শরীরে হাত দিয়েই বুঝলো কোন অশরী তাকে ছুয়েছে। অভি এদিক ওদিক চাইলো কিন্তু কাউকে দেখতে পেলোনা। অভি বিদ্যার পেটে চাপ দিতেই বিদ্যার মুখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল। কিন্তু বিদ্যার এত সহজে সেন্স ফিরবেনা। অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে।

অভি হঠাৎ কানটা সজাগ করলো। আসেপাশেই কেউ আছে। কিছু একটা মনে করে বিরবির করে মন্ত্র পড়তেই অভির হাতে লাল টুকটুকে একটা আপেল এসে হাজির হল। অভি আপেলটি ছুড়ে মারতেই আপেলটি গিয়ে গর্তের সামনে পড়লো। এমন টুকটুকে লোভনীয় আপেল দেখে সাপটি আর লোভ সামলাতে পারলোনা। জ্বীভ চটকিয়েই আপেলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। চোখ বুঝে গপগপ করে আপেলটি খেয়ে চোখটা মেলাতেই অভিকে দেখতে পেল। অভির হাতে ধরা পড়ে গেছে সে। অভিও মুচকি একটা হাঁসি দিয়ে বলল,

—” আমার বিবিকে বাঁচানোর জন্য শুকরিয়া ছোট জনাব।”

অভির কথা শুনে সাপটির ঘুস ঘুস করে পাতার নিচে লুকিয়ে পড়লো। তারপর আবার মাথাটা তুলে দেখলো, অভির হাতে আবার ঐ রকম আরো ১টি আপেল। এবার সে খুঁশি হয়ে বের হল পাতার স্তুপের ভিতর থেকে। সে একটা ৫ বছরের বালকের রুপ ধারন করলো। তারপর অভির হাত থেকে খপ করে আপেলটি কেড়ে নিয়ে খেতে লাগলো। অভি ততক্ষনে বিদ্যাকে পাঁজাকোলা করে তুলে উঠে দাড়ালো। বাচ্চারুপী সাপটি খাওয়া বন্ধ করে অভির দিকে চেয়ে বলল,

—” ও তোমার বিবি!”

জ্বী জনাব, সে আমার বিবি। আপনার এভাবে এখানে একা আসা উচিত হয়নি। আপনার বাবা-মা চিন্তা করছে হয়ত। আমি এখানে দাড়িয়ে আছি আপনি চলে যান।

আধা খাওয়া আপেলটি বালক তার সাদা ধবধবে পাঞ্জাবীর পকেটে রেখে বলল,

—” আমি যদি না আসতাম, তাহলে তোমার বিবিকে কে বাঁচাতো!”

—“এই জন্যইতো তোমাকে শুকরিয়া জানালাম। আমি তোমাকে আরও কিছু আপেল দিতে পারি। তুমি কি আপেলগুলো নিবে?”

—“হ্যাঁ দাও। কিন্তু তোমার ঠিকানা দিয়ে যাও। যাতে আমি আবার তোমার সাথে দেখা করতে পারি।”

এমন সময় কে যেন আব্বাস বলে ডেকে উঠলো। সেও ছিল ৫ বছরের একটা শিশু। ছেলেটি কাছে আসতেই অভি বিদ্যাকে নিয়ে ভ্যানিস হয়ে গেল।

আমির ভাই আমার বন্ধু বলে আব্বাস ফিরে তাকাতেই দেখলো কেউ নেই। অনেক খুজলো, কিন্তু কোথাও পেলোনা। তবে আব্বাসের দুই পকেট ভর্তি আপেল পাওয়া গেল।

অভি নিজের বাসায় এল। এমনি বেশ ঠান্ডা পড়েছে। এমন কনকনে ঠান্ডায় কেউ জলে ঝাঁপ দেয়! আজ যদি কিছু হয়ে যেত তাহলে কখনো আমি তোমায় ক্ষমা করতামনা। আমি জানি তোমার মাথা একটুতেই গরম হয়ে যায়। তাই বলে নিজের জিবনের সাথে এমন ছেলে খেলা! আমার কথা কি একবারও মনে হয়নি তোমার?

কথাগুলো বলতে বলতে অভির গলা ধরে আসে। চোখ দিয়ে কয়েকফোটা জলও পড়ে যায়। চোখের জল মুছে বিদ্যার ভিজা কাপড়গুলো বদলে দিয়ে ওকে বেডে সুয়ে দেয়। ছোট ছেলেটা উল্টা-পাল্টা পদ্ধতিতে ওকে জাগানোর চেষ্টা করছে। তাই এর প্রভাবে বিদ্যার সেন্স ফিরতে দেরী হচ্ছে। বিদ্যার শরীর হিম ঠান্ডা হয়ে গেছে। তাই অভি বিদ্যার কম্বলের ভিতর ঢুকে বিদ্যাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টে করলো।

সকালে বাসার সবাই দেখলো, বিদ্যা তার জায়গায় নেই। চাবিটা খোলা। শিকলগুলো ফ্লোরে পড়ে আছে। বিদ্যা মুক্ত! তারমানে আজ আর কারো নিস্তার নেই। ভয়ে সবার অন্তর আত্মা শুকিয়ে গেল। বিদ্যা কিভাবে এখান থেকে ছাড়া পেল। তাছাড়া আকাশী সিঁদুরে মন্ত্র পড়ে ওর চারদিকে চক্র আকারে দাগ দিয়েছিল। এগুলো ভেদ করে কোন খারাপ শক্তি কখোনই বের হয়ে যেতে পারবেনা।

সবার কথা শুনে রিভা শুধু চুপ করে আছে। বাসার সবার খাওয়া নেওয়া বন্ধ হয়ে গেল। এতদিন তারা যে পিশাচকে নিয়ে থেকেছে সেটা তারা ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি।

বেলা বাড়তেই আয়ানকে বাসায় নিয়ে আসা হল। কিন্তু সাজিত যখন জানতে পারলো বিদ্যা নেই,তখন ও পাগলপ্রায় হয়ে গেল। গলা বাজিয়ে বলল,

—” কার হুকুমে তোমরা ওকে এভাবে বেঁধে রেখেছিল! তোমাদের স্পর্দ্ধা দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। বাড়ীর মেয়ের সাথে তোমরা কিভাবে এমন আচরন করলে?”

কাকে বাড়ীর মেয়ে বলছেন! সে আমাদের বাসার কেউ নয়। মা আমাদের নিজে সেই কথা বলেছে বলে চেঁচিয়ে উঠলো আকাশী।

আয়ানের বাবা গিয়ে আকাশীর গালে ঠাশ্ করে একটা চড় মেরে বলল,

—” গলা নামিয়ে কথা বলো। তোমরা যে কারনে আমার ছোট বোনটাকে অভিযুক্ত করেছ, তার কোন প্রমান দিতে পারবে! তোমাদের মাথায় একবারও আসলোনা, এই পিশাচগুলো যে কোন মানুষের রুপ ধরতে পারে? তোমরা কি জানো, কাজগুলো কে করেছে? তোমরা যদি সেই কথা জানতে তাহলে বিদ্যার সাথে এমন করতেনা। আয়ান নিজে বলেছে এগুলো শর্মিষ্ঠা কাকির জেঠিমা করেছেন। কারন তিনি কোন মানুষ নন। যাও ওনাকে ডেকে নিয়ে আসো।”

কারো কথা সাজিতের কানে গেলোনা। সে পাগলের মত রাস্তায় গিয়ে খুজতে লাগলো বিদ্যাকে। অনেক খুঁজেও পেলোনা বিদ্যাকে। অবশেষে বাসায় ফিরে এসে সোজা ওর বৌদির ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে সাধনা দেবীকে বলল,

—” আপনি এই জন্য বিদ্যার মা বলে নিজেকে জাহির করেন! আপনি আপনার আসল রুপ দেখালেন তো! পর কখনো আপন হয়না। সেটা আপনাকে দেখে সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমি এমনই এক হতভাগ্য পিতা, যে কিনা নিজের মেয়ের দায়িত্ব নিতে পারলামনা। আজকের পর থেকে আপনার মুখে যেন বিদ্যার নাম না শুনি। কোনদিনও যেন না শুনি। যদি শুনি তাহলে আমি আপনার কি হাল করবো সেটা নিজেও জানিনা। আপনার নিজের মেয়ে হলে আপনি ওকে এভাবে মৃত্যুর মুখে ফেলে দিতে পারতেন? কখনো পারতেন না। প্রস্তুতি নেন দাদার মুখোমুখি হওয়ার। আমি আপনাকে ছেড়ে দিলেও দাদা আপনাকে কোনদিনও মাফ করবেনা।”

কথাগুলো বলেই সাজিত রুম থেকে বের হতেই আবার থেমে গেল। তারপর ফুফিয়ে কেঁদে উঠে বলল,

—” বৌদি, তোমাকে না বৃন্দা তার মেয়ের দায়িত্ব সপে গেছে! আজ তুমি কোন স্বার্থে তাকে অস্বীকার করলে? তোমার কখনো ক্ষমা পাওয়ার যোগ্যতা নেই।”

সাজিত রুম থেকে চলে যেতেই সাধনা দেবী হাউমাউ করে ডুকরে কেঁদে উঠলো। সে বুঝতে পেরেছে, তার দ্বারা কতবড় ভুল হয়েছে।

পুরো একদিন পর বিদ্যার জ্ঞান ফিরে আসে। চোখ মেলে সে বুঝার চেষ্টা করছে, সে এখন কোথায় আছে! তারতো এতক্ষনে মারা যাওয়ার কথা। তাহলে সে এখানে কেন? কে তাকে বাঁচালো?

বিদ্যা একটু ওঠার চেষ্টা করতেই সামনে দেখলো, পাশে চেয়ার পেতে এক মহিলা বসে আছে। মহিলাটি আর কেউ নয়। সে ছিল অপুর মা দেবকী।

[ চলবে…………]

বিদ্রঃ অনেক কষ্টে এতটুকু লিখেছি। ব্যস্ততার কারনে সময় পাইনি। আজ এতটুকুই পড়েন আপনারা। নিচে দেবকী কে নিয়ে একটা টুইষ্ট রেখে দিলাম। কি হতে পারে পরবর্তীতে। সকলের একটু মতামত দেখতে চাই।

আজকের পর্বে কি লিখেছি নিজেও জানিনা। রিভাইজ ও দিতে পারলামনা। এমনিতেই লেট করে ফেলেছি

সরাসরি ওয়েবসাইট এ পড়ুন: https://nafisarkolom.com/2020/10/sidur-suddhi-20/

আমার ব্যক্তিগত ফেইসবুক একাউন্ট: https://www.facebook.com/nafisa.muntaha

চাইলে আমার গ্রুপে জয়েন করতে পারেন: https://www.facebook.com/groups/nafisarkolom

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here