#সিঁদুর শুদ্ধি
#নাফিসা মুনতাহা পরী
#পর্বঃ৩৪
.
বিদ্যার কথা শুনে অভি ফিরে তাকালো ওর দিকে। তারপর হাতের আঙ্গুল ঘুরিয়ে বলল,
—” তোমার পাগলামি গুলো একটু বেশিই বেড়ে গেছে, তাইনা?”
বিদ্যা অভির কথাগুলোকে পাত্তা না দিয়ে, নিজের মস্তিষ্ককে প্রস্তুতি করছে, কিভাবে অভির উপর চড়াও হওয়া যায়।
মাথা তেমন একটা কাজ করলোনা। কারন দেহের প্রয়োজনটা একটু বেশিই পেয়েছে। বিদ্যা মুখ ফুটে বলেই ফেলল,
—” অভি….পি পেয়েছে।”
অভি বিদ্যার কথা বুঝতে পারেনা। তাই ও কপাল কুচকে বলল,
—” কি পেয়েছে তোমার?”
বিদ্যা মুখ লুকিয়ে হেঁসে ওর কনিষ্ঠ আঙ্গুল উঁচু করে বলল,
—” এটা পেয়েছে।”
বিদ্যার কথা শুনে অভির মুখে হাসি ফুটলো। মনে মনে প্রমোদ গুনে বিদ্যাকে ইশারা করে বলল,
—” কাছে এস।”
অভির কথা শুনে বিদ্যার আর তর সইলোনা। দৌড়ে এসে অভির গায়ে পড়ে গেল। অভিও প্রায় সাথে সাথেই বিদ্যাকে ধরে ফেললো। এভাবে কেউ দৌড় দেয়! সারা জিবন এমন ভাবেই থাকবে! একটুও বড় হবেনা?
স্যরি বলে বিদ্যা নিজেকে সামলে নিল। তারপর ওয়াসরুমের দিকে রওনা দিতেই অভি বলল,
—” এত ভারি ড্রেস পরে ভিতরে গেলে, নিজেকে তো সামলাতে পারবেনা। ড্রেস জলে ভিজে যাবে। তারচেয়ে বরং স্কার্টটা খুলে যাও।”
অভি কথাগুলো বলা এখনো শেষ করেনি তার আগেই অভির কাছে এসে দু’হাত উচু করে বলল,
—” জলদি খুলে দাও।”
অভি কথা না বাড়িয়ে নিচের স্কার্টটা খুলে দিতেই বিদ্যা দৌড় দিল ওয়াসরুমে। অভি এই অবস্থায় বিদ্যাকে দেখে চোখ একদম চড়কগাছে তুলল। শুধু টু কোয়াটার জিন্স প্যান্ট আর লেহেঙ্গার উপরের পার্টটা সে পড়ে আছে। অভি মাথাটা ঝাকিয়ে অন্য দিকে ফিরে বলল,
—” ও জাষ্ট আমায় পাগল করে ছাড়বে।”
কথাগুলো বলে অভি বেড সম্পূর্ন গুছিয়ে একটু অপেক্ষা করে ওয়াশরুমের কাছে গিয়ে বলল,
—” বিদ্যা তোমার হয়েছে?”
অভির কথার প্রত্তুরে কোন জবাব আসেনা। মাথা ভিমড়ি খেয়ে কোথায়ও পড়ে গেলনাতো, বলেই অভি আর অপেক্ষা না করে দরজাতে হাত দিতেই দরজা খুলে গেল। যাহোক, দরজা সে ভিতর থেকে বন্ধ করে দেয়নি। অভি ভিতরে কেবল ঢুকতে যাবে তখনই বিদ্যা ছোট বাচ্চাদের মত ঝাৎ করে একটা চিৎকার করে উঠলো। যাতে অভি ভয় পেয়ে যায়।
বিদ্যার এহেন কান্ডে অভি ওকে হাত ধরে টেনে এনে মনে মনে বলল,
—” ভূতের রাজাকে ভুতের ভয় দেখায়। দ্যাটস্ ক্রেজি।”
অভি গিয়ে ওয়াসরুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আবার বিদ্যার কাছে এসে দাড়ালো। তারপর ধমকের সুরে বলে উঠলো,
—” এভাবে কতক্ষন দাড়িয়ে ছিলে?”
বিদ্যা অভির কথার জবাব না দিয়ে অভির পায়ের উপর দু’পা দিয়ে ওর গলা জড়িয়ে ধরে দাড়ালো। তারপর অভিমানের সুরে ছোট বাচ্চাদের মত বলে উঠলো,
—” বা..রে, আমি যদি ওভাবে ওয়াসরুমে না দাড়িয়ে থাকতাম! তাহলে তুমি কখন আমায় ছেড়ে চলে যেতে। আমার কাছে আর থাকতে না।”
ওহ্ আচ্ছা আচ্ছা, আপনি তাহলে এই মতলবে ওয়াসরুমে এতক্ষন ধরে দাড়িয়ে ছিলেন? যাতে আমি বাহিরে না যেতে পারি, তাইতো বলেই দু’হাতে বিদ্যার কোমর ধরেই টান দিল। তারপর বিদ্যার কানে নিজের মুখ এনে আবার ফিসফিসিয়ে অভিযোগ সুরে বলে উঠলো,
—” কেমন বউ তুমি হুমহ্! যে তোমার ভালোবাসায় আমাকে বেঁধে রাখতে পারোনা। তুমিতো দেখছি এ বিষয়ে প্রচন্ড কাঁচা।”
অভির পারফিউমের ঘ্রানে বিদ্যা মাতালের উপর মাতাল হয়ে উঠছে। অভির বুকে মুখ গুজিয়ে ঘ্রান নিতে সে এখন খুব ব্যস্ত। ঐ অবস্থা ভাঙ্গা গলায় বলল,
—“অভি! তোমার বুকের ঘ্রান আমার খুব চেনা চেনা লাগে।”
বিদ্যার কথা শুনে অভি হেঁসে বলল,
—” কথাটা অবশ্যই মন্দ বলোনি। আমার শরীরের ঘ্রান তোমার চিনে রাখাই উচিত। কিন্তু আসল কথা সেটা নয়। আসল কথা হল,
আমি আজকাল দেখি, বড্ড রাত জাগো তুমি। আর খাওয়া দাওয়াও ঠিকমত করোনা। এটা কি ঠিক?”
বিদ্যা অভির বুকে মাথা ঘষতে ঘষতে মৃদুস্বরে বলে উঠলো,
—” না, ভুল। আমি আজ থেকে আর বেশি করে রাত জাগবোনা। খাওয়া দাওয়াও ঠিকমত করে করবো।”
বিদ্যার কথায় অভি মুচকি হেঁসে ওঠে। কত সহজ সরল স্বীকারোক্তি। বিদ্যার কোমর উচু করে ওকে জাগিয়ে খাটে বসাল অভি। তারপর আদেশ সূচক কন্ঠে বলল,
—” হুম অনেক হয়েছে। এবার ফটাফট সুয়ে পড়ো দেখি! আর দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ো।”
বিদ্যা চট করে সুয়ে পরে দু’হাত অভির দিকে বাড়িয়েই বলল,
—“আমি একা ঘুমাবোনা, আমার সাথে তোমাকেও ঘুমাতে হবে। আসো আসো কুইক।”
ওকে বলে অভি বিদ্যার পাশে সুয়ে পড়তেই বিদ্যা ওকে আষ্টে-পৃষ্টে জড়িয়ে ধরল। অভি কিছু না বলে হাত দিয়ে বিদ্যার মাথার চুল বুলিয়ে দিতে লাগলো।
এবার বিদ্যা চোখ বন্ধ করে চুপ করে রইলো। এমন সময় অভির কল বেজে উঠলো। অভি হাতে ফোন নিয়েই বিদ্যার দিকে চেয়ে দেখলো, ও চোখ বড় বড় করে চেয়ে আছে অভির দিকে। অভি একটু হাসার চেষ্টা করলো। তারপর বলল,
—” কি, ঘুমাবেনা?”
বিদ্যা কথা না বলে অভির গায়ের উপর পা তুলে দিয়ে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুপ হয়ে রইল। ঠিক আপুর সাথে বিদ্যা যেমন করে ঘুমাতো। আজও ওমন ভাবেই অভিকে জড়িয়ে ধরলো সে।
অভিও সাথে সাথে ওর ঠিক ভ্রু জোড়ার মাঝখানে একটা কিস করে কলটা রিসিভ করে বলল,
—” হ্যাঁ কনক, কল দিয়েছ কেন?”
কনক কান্না কণ্ঠেই বলে উঠলো,
—“অভিদা, আপনি কই? সবাইকে দেখছি, কিন্তু আপনাকে দেখছিনা যে!”
কনক হয়ত এতক্ষন ধরে কাঁদছিল। কেন কাঁদছিল সেটা অভি জানার প্রয়োজন বোধ মনে করলোনা। কারন একটু অনূভুতি দেখানো মানে তাকে আশ্বাস দেওয়া। তাছাড়া বিদ্যা ছাড়া কোন মেয়ের দিকে তাকাতেও ভালো লাগেনা অভির। অভি দ্রুত কনককে বলল,
—” আমি একটা কাজে বিজি আছি। একটু পড়ে আসছি।”
কনক অভির কথা শুনে রেগে গেল। অভিদা, আপনি ঐ বিদ্যার কাছে আছেন তাই না! সেই তো আপনার সমস্ত বিজি কাজ। কার কি হল সেটা দেখার আপনার মোটেও সময় নেই।
কনকের কথা শুনে অভি বিদ্যার দিকে চাইলো। বিদ্যা ততক্ষনে ঘুমের দেশে পাড়ি জমিয়েছে। এবার অভি দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো,
—” কবে থেকে তুমি আমার জাসুসি করতে শুরু করেছ হুম! আমার অগচরে তাহলে তুমি এসব করে বেরাও? আমাকে নিয়ে কেউ ভাবুক, সেটা আমি একদম পছন্দ করিনা বুঝলে? ফোন রাখো।”
কথাগুলো বলে অভিই আগে কল কেটে দিল। তারপর একটু নড়তেই বিদ্যা নড়ে উঠে অভির দিকে পিটপিট করে তাকালো। ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বলে উঠলো,
—” অভি, কই যাচ্ছো আমাকে ছেড়ে!”
আমিতো কোথায়ও যাইনি সোনা। আমার এই মিষ্টি বউকে ছাড়া আমি কই যাব বলেই অভি বিদ্যাকে কয়েকটা কিস করলো।
এবার বিদ্যা নিঃশ্চিতে আবার চোখ বুজলো। এবং খানিকবাদে পুরোপুরি গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল। অভি অতি সাবধানে নিজের শরীর থেকে বিদ্যার পা সরিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে বেড থেকে নামল। তারপর ওর শরীরে ভালো করে চাদর মুড়িয়ে দিয়ে দেয়াল ভেদ করে চলে গেল।
♥
অভি যখন বিয়ের মন্ডপে আসলো ততক্ষনে পন্ডিত মসাইয়ের মুখে বিয়ের মন্ত্র উচ্চারিত হচ্ছিল। “যদেতৎ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম। যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব।।”
ইতিমধ্য মালাবদল সহ কন্য সম্প্রদানের সকল কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এরপর অঞ্জলির পালা। এসময় কন্যা ও বর খৈ অগ্নাহুতি দেন। প্রচলিত বাংলায় একে বলে খৈ পোড়া। বৈদিক যুগে মানুষ নানা ধরনের শক্তির উপাসনা করতেন। অগ্নিও তাদের মধ্যে অন্যতম।
এর পর আসে সিঁদুর দান। কাবির রিয়ার সিঁথিতে সিঁদুর লেপে দেয়। এভাবেই বিয়ে সমাপ্ত হয়।
♥
সবাই খেতে বসেছে। কাবির অভিকে অনেকবার ডাকলো খাওয়ার জন্য কিন্তু অভি কিছুই খেলোনা। এ বাহানা সেই বাহানা দিয়ে চলে গেল। ওদের কাছ থেকে দুরে যেতেই ওর মায়ের কল আসলো। অভির মা জুলিয়া ভৌমিক একটু রাগ দেখিয়েই তার ছেলেকে বলল,
—” অভি, তুমি আমাকে না জানিয়ে কোথায় গিয়েছ!”
—” মম, আজ কাবিরের বিয়ে। তোমাকে তো টেক্সট করেই এসেছি। তুমি দেখোনি?”
কাবিরের বিয়ের কথা শুনে জুলিয়া একটু শান্ত হল। তারপর বলল,
—” কাবিরকে একটু ফোনটা দাওতো! ওর সাথে কিছু কথা আছে।”
মম, স্যরি। আজ ওর বিয়ে। এমন কিছু বলোনা যাতে ওর আনন্দটাই মাটি হয়ে যায়।
—“বাবা, তুমি বড় না আমি বড় বলতো! তোমাকে এখানে আসতে হবে। ওকে বুঝিয়ে-সুজিয়েই বলবো। ওকে ফোনটা দাও।”
ওকে মম, বলে অভি কাবিরেরর কাছে গিয়ে ফোনটা দিয়ে বলল,
—” মম তোর সাথে কথা বলবে।”
কাবির ফোনটা নিয়ে অভির মায়ের সাথে অনেকক্ষন ধরে কথা বলল। তারপর ফোনটা রেখে অভিকে ডেকে বলল,
—” আন্টিতো তোকে কালই যেতে বলছে। আর দুুটা দিন থাকলে হতোনা?”
অভি রেগে গিয়ে বলল,
—” মমকে পটাতে পারলিনা আর আমার কাছে এসে বাহানা ধরেছিস?”
কাবির আর কিছু না বলে চুপ হয়ে রইলো। অভি কাবিরের কাছে বসে ওর ঘাড়ে হাত দিয়ে বলল,
—” চিন্তা করিসনা। প্রানপাখিকে যখন এখানে রেখে যাচ্ছি, তখন তো এখানে আমাকে বার বার ছুটে আসতেই হবে।”
কাবির অভির কথায় মিথ্যা একটি হাসি দিয়ে চুপ হয়ে গেল। অভি রিয়ার কাছে গিয়ে বসে বলল,
—” তোমার বরতো আমার উপর ভিষন রেগে আছে। তাই আমি ভাবছি, কিছু একটা করবো। আজতো বাসর জাগা হবে, তাইতো!”
রিয়া মাথা ঝাকিয়ে হুম বলল।
—” তাহলেতো আজ সবাই আনন্দ করবে। তোমাদের বাসায় হাড়ি ভাঙ্গা খেলা, যাবেতো!”
রিয়া বসা থেকে লাফিয়ে উঠে বলল, নিশ্চয় যাবে। তারপর রিয়া রিভা, টুম্পাকে ডেকে সব কথা বলল। ওরা তো সেই খুশি। আয়ান দৌড়ে গিয়ে রান্নাঘর থেকে একটা রং-বেরঙের হাড়ি আর লাঠি এনে হাজির হলো। রিয়া চিল্লায় বলল,
—” ঐ শালা, একটা হাড়ি আনছোস কেন? যা, আরো কয়েকটা আন।”
রিয়ার এমন উল্লাসে কাবির অবাক হয়ে রিয়ার দিকে চাইতেই রিয়া ভ্রু নাচিয়ে বলল,
—-” আজ তোমাদের নাচিয়ে ছাড়বো।”
পুরো বিশাল ডাইনিং রুমে সবার জায়গা হল। সোফাসেট গুলো সরিয়ে ফেলে জায়গা বাড়ানো হলো। দুই দল নির্বাচন করা হলো। একটা ছেলেপক্ষ অন্যটা মেয়েপক্ষ। বিয়ের রাতে এমন মজা করা মনে হয় কোন বিয়েতেই করা হয়না। প্রবীনরা অবশ্যই কিছু বললোনা। বরং তারা সময়টা উপভোগ করতে লাগলো।
এদের ১০ জন ওদের ১০জন। এর মাঝে কাবির বলল,
—” বিদ্যা কোথায়! ওকে ছাড়া কি খেলা জমে?”
কাবিরের কথা শুনে অভি শুধু একটু মুচকি হেসেঁ খেলার দিকে মনযোগ দিল। এদিকে শ্যামল বাবু বিদ্যাকে ডাকতে উপরে উঠে গেল। নিচে অলরেডি হৈচৈ শুরু হয়ে গেছে। বর কনে দুইজন দুই দলের ক্যাপ্টেন। কোন দল আজ জিতে। সব কিছু জমে উঠতে রাত প্রায় দেড়টা বেজে গেল। কনেপক্ষ এবং বড়পক্ষের অনেক লোকজনরা বিশ্ময় চোখে অভির দিকে চেয়েই আছে। মন মাতানো নীল চোখ, টকটকে ফর্সা গায়ের রং, হালকা সোনালি রঙ্গের চুল। এমন বিদেশী একটা ছেলে, যে গটগট করে বাংলা ভাষায় কথা বলছে।
সেই সকাল থেকে অভির দিকে এমনভাবে অনেকে চেয়ে আছে। যেটা অভির কাছে বিরক্তি ছাড়া কিছুই নয়। আরে বাবা আর কত দেখবি আমাকে। কথাগুলো মনে মনে বলে উঠলো অভি। এরা কি আমাকে চিড়িয়াখানার জন্তু ভেবেছে নাকি!
কিন্তু রিয়ার বান্ধবী সহ মোটামুটি অনেক মেয়ের চোখেই অভি আকৃষ্ট হয়েছে। এটা যদি বিদ্যা দেখতো, তাহলে অভিকে যে কোথায় লুকিয়ে রাখতো সেটে সে নিজেই জানতোনা। যাইহোক খেলা জমে উঠেছে।
বরপক্ষ থেকে, প্রভাষের প্রথমে চোখ বেঁধে দেওয়া হয়। তারপর জেসি হাতের ৫ আঙ্গুল ধরে বলল,
—” বলেনতো, আমি কয়টা আঙ্গুল ধরেছি?”
প্রভাষ অনেক চিন্তা করে বলল,
—” ৩ টা।”
হয়নি, আমি ৫টা আঙ্গুল ধরেছি বলেই জেসি প্রভাষের হাতে লাটিটা দিয়েই ৩ পাঁক ঘুরিয়ে দিয়ে ওকে ছেড়ে দিল। এবার যাও হাড়ি ভাঙ্গো।
তিন পাঁক খেয়ে প্রভাষের মাথা ঘুরছে। সে ফ্লোরে লাঠি ঠেকিয়ে হাড়ি খুঁজতে খুঁজতে যাচ্ছিল। এটা দেখে মেয়েরা বলল,
—” প্রভাষদা, তুমি চিটিং করছো।”
—” আমি মোটেও চিটিং করছিনা।”
—-“না তুমি লাঠিটা উচু করে ধরে পথ চলো।”
ওকে বলে প্রভাষ থেমে গেল।
এমন সময় প্রভাষের দাদু চিৎকার দিয়ে বলল,
—” বাপু রাম সাপুরে, কোথা যাস বাপুরে।
আয় বাবা দেখে যা…….।
কথাগুলো বলতেই দুর থেকে বিদ্যা ঘুম ঢুলঢুল অবস্থায় বলল,
—” দাদু, আপনিতো চিটিং করছেন। ওকে আপনি আপনার তরিকায় পথ দেখিয়ে দিচ্ছেন। এটা একদম উচিত না। আমি কি মুখ খোলবো?”
বিদ্যার মা সাধনা দেবী মেয়েকে ঘুম থেকে টেনে তুলে এনেছেন। এত সুন্দর মুহুত্ব ইনজয় না করে তার মেয়ে পড়ে পড়ে ঘুমাবেন সেটা তিনি চাননা। মেয়ে তার এমনি মনমরা হয়ে থাকে।
বিদ্যার কথায় সবাই পিছন ফিরে বিদ্যার দিকে চাইলো। আর সাথে সাথে প্রভাষের দাদু বলল,
—” তোমায় কে বলেছে আমি প্রভাষ কে পথ দেখিয়ে দিচ্ছি?”
বিদ্যা কাছে এসে বলল,
—” আমার খুব প্রিয় একটা মানুষ এভাবে আমায় খেলা শিখিয়েছিলেন। ডান-বাম, আগে-পিছের জন্য আলাদা আলাদা কবিতা আছে। আপনি যেই কবিতাটি বলেছেন তার মানে প্রভাষ ডান দিকে সরে যেতেই থাকবে আপনি কবিতা বলা বন্ধ না করা পর্যন্ত। আপনি বন্ধ করবেন তবে সে থামবে। তারপর সামনে দিকে যাওয়ার জন্য আর একটা কবিতা বলবেন। তখন সে সামনের দিকে যাবে। নিদিষ্ট জায়গায় আপনি থেমে যাবেন। তখন সে সেখানে দাড়িয়েই লাঠি দিয়ে আঘাত করবে। ব্যাস কেল্লাফতে। আমার মনে হয় আপনার নাতির সাথে আপনি খুব ভালো শৈশব কাটিয়েছেন। তাই সে আপনার এই বুদ্ধিটা রপ্ত করেছে। কি ঠিক বললাম?
[] চলবে…….[]
বিদ্রঃ বাসায় মেহমান এসেছে। তাদের রেখে লেখালেখি করাটাও বিয়াদপীর মধ্য শামিল হয়। তাই আজ একটুকুই পড়েন। আশা করি সমস্যাটা সবাই বুঝবেন।
সরাসরি ওয়েবসাইট এ পড়ুন: https://nafisarkolom.com/2020/10/sidur-suddhi-20/
আমার ব্যক্তিগত ফেইসবুক একাউন্ট: https://www.facebook.com/nafisa.muntaha
চাইলে আমার গ্রুপে জয়েন করতে পারেন: https://www.facebook.com/groups/nafisarkolom