অনুভবে আজো তুমি🍁🍁 পর্ব-২৮

0
1149

#অনুভবে_আজো_তুমি🍁🍁
পর্ব-২৮
ফাবিহা নওশীন

আমি তোমার বিরহে
রহিবো বিলিন
তোমাতে করিব বাস।
দীর্ঘ দিবস,দীর্ঘ রজনী
দীর্ঘ বরস-মাস।

গভীর রাত মেহের চোখ বন্ধ করে মনে মনে গান আওড়াচ্ছিলো।তখনি লাইট অন করে দিলো।বিরক্তি নিয়ে চোখ মেলে।চোখমুখ শক্ত করে কিছু বলতে যাবে তখনি ওর দৃষ্টি শান্ত হয়ে গেলো।কারণ সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে তার সাথে চোখ গরম করে কিছু বলার মতো স্পর্ধা ওর নেই।
মেহের মাথা নিচু করে রইলো।কিছু বলতে চাইছে কিন্তু বারবার গলা আটকে যাচ্ছে।বলতে পারছেনা।চোখে পানি ছলছল করছে।গলা ভাড়ী হয়ে যাচ্ছে।তবুও নিজেকে সামলে মাথা নিচু করেই বললো,
–কি চান,আর কিছু বাকি আছে?
ফায়াজ ওর কাছে এসে বললো,
–এই ছয়মাসে না আমি ভালো কিছু পেয়েছি,না তুমি।আমি কিছু চাইতে আসিনি।আমি শুধু তোমাকে দেখতে এসেছি।কেমন আছো তুমি?
–দেখছেন ই তো ভালো আছি।
ফায়াজ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
–হুম তা তো দেখছিই কত ভালো আছো।
তারপর দুজনের মাঝেই নীরবতা।ফায়াজ নীরবতা ভেঙে বললো,
–জিজ্ঞেস করবে না আমি কেমন আছি?
মেহের ফায়াজের দিকে একবার চেয়ে আবারো চোখ ফিরিয়ে নিলো।ফায়াজের দিকে তাকানো যাচ্ছেনা।এই কয়দিনেই খোচাখোচা দাড়ি গুলো বেশ বড় হয়ে গেছে।চুলগুলো এলোমেলো।চোখের নিচে কালি পড়েছে।মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।গায়ের শার্টটা কুচকে আছে।কেমন ছন্নছাড়া লাগছে।মেহের কিছু না বলে চুপ করে আছে।

–কি জিজ্ঞেস করলেনা??আমিই বলছি,,যেদিন তুমি,,, সেদিন আমি অপরাধবোধে মরে গেছি।আমি তোমাকে বলবোনা আমাকে ক্ষমা করো।কারণ আমি ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য না।বরং বলবো আমাকে ক্ষমা করো না কখনোই না।আমি তোমাকে আমার কাছে ফিরে যেতেও বলবোনা।কেন বলবো?কি দিয়েছি আমি তোমাকে?অপমান,অবহেলা ছাড়া কিছুই দেইনি।তবে বলতে পারো কেন এসেছি?সব অপরাধ স্বীকার করতে এসেছি।আমি অপরাধী,আমি অন্যায় করেছি।তোমার মতো একটা মেয়েকে কষ্ট দিয়েছি।মৃত্যুর দিকে এগিয়ে দিয়ে এসেছি।আমি নিজের কষ্টে এতটাই কাতর ছিলাম তোমার কষ্টটা দেখতে পাইনি।তোমাকে বিশ্বাস করিনি।

ফায়াজ ডুকরে কেদে উঠলো।তারপর মেহেরের বেডের পাশে ফ্লোরে বসে মেহেরের পা আকড়ে ধরলো।
–আমাকে শাস্তি দেও।আমি অনুতাপে জ্বলে পুরে শেষ হয়ে যাচ্ছি।আমাকে শাস্তি দেও।আমি আর সহ্য করতে পারছিনা।আমি শাস্তি চাই।অনেক বড় পাপ করেছি আমি।

মেহের ফায়াজকে এই অবস্থায় দেখে কেদে দিলো।ওর পায়ে থেকে হাত সরিয়ে বেড থেকে নেমে অন্যদিকে ঘুরে ফুপিয়ে কাদতে লাগলো।ফায়াজ বেডের উপর মাথা রেখে কেদেই চলেছে।

মেহের চোখ মুছে বললো,আপনার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই।আমি যা করেছি নিজের ইচ্ছেয় করেছি।এর জন্য নিজেকে দায়ী করবেন না।

ফায়াজ উঠে মেহেরের মুখোমুখি দাড়ালো,
–কেন নেই।কোনো অভিযোগ কেন নেই?প্লিজ অভিযোগ করো।শাস্তি দেও।আমি শাস্তি চাই মেহের আমি অনেক কষ্টে আছি।আমাকে মুক্তি দেও।আমাকে মেরে ফেলো।সেদিন কফিতে বিষ দিয়ে আমাকে মেরে ফেলোনি কেন?কেন আমার অত্যাচার সহ্য করেছো?

মেহের ফায়াজের সামনে এসে বললো,
–আমি কি করে এটা করতে পারি,,আমি আপনার এত অপছন্দের থাকা সত্ত্বেও আপনি আমাকে মারেন নি।তাহলে আমি আপনাকে ভালোবেসে কি করে আপনার ক্ষতি করতে পারি?

ফায়াজ মেহেরের দুহাত ধরে মেহেরের নাকের সাথে নাক ঘেষিয়ে রাখলো।মেহের চোখ বন্ধ করে ফেললো।মেহের অনুভব করতে পারছে ফায়াজের গায়ে জ্বর।মেহের ফায়াজের দুহাত চেপে ধরে বললো,
–তোমার গায়ে তো জ্বর।দাড়াও আমি ওষুধ নিয়ে আসছি।
–না প্লিজ আমাকে ছেড়োনা।
–তুমি আবার কি করেছো?জ্বর কেন এসেছে?
–এইবার আমি কিছু করেনি।নিজের শরীরে একটুও আঘাত করিনি।হৃদয়ে আঘাত পেয়েছি ভিষণ।
মেহের কাদছে।ফায়াজকে আরো চেপে ধরলো।
–তুমি কষ্ট কেন পাচ্ছো?তোমার তো খুশি হওয়ার কথা।তুমি তো আমাকে শাস্তি দিতে চেয়েছিলে।তাই আমি নিজেকেই দিয়েছি।বেচে যাবো ভাবিনি।বাচতে আমি চাইনি।

–মেহের প্লিজ।আমি রাগের মাথায় সেদিন ওসব বলেছি।তুমি কি আমার ঘৃণার আড়ালে ভালোবাসা দেখতে পাওনি।তোমার কিছু হলে আমি মরে যেতাম।আমি যে তোমাকে ভালোবাসি খুব।তুমি ছাড়া আমি শূন্য।তুমি আমাকে দুখের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে চলে যেতে চাইছিলে?তুমি জি জানতে না আমি তোমাকে ছাড়া পাগল হয়ে যাবো।জানতে না?
–হুম।
–তাহলে কেন?আমাকে শাস্তি দিতে?
–না।আমি তোমার অবহেলা সহ্য করতে পারছিলাম না।আমার অনেক কষ্ট হয়েছিলো ওইদিন রাতে।আমি আমার জীবনে একজন পুরুষকে ভালোবেসেছি আর তার কাছ থেকে অবিশ্বাস আর অবহেলা মেনে নিতে পারছিলাম না।
–আমি ভুল করেছি।আমি অনেক ভুল করেছি।আমি ওদের কথা বিশ্বাস করেছি।তিন বছর আগে আমি অনেক পাগলামি করেছি।অনেক অঘটন ঘটিয়েছি।মানসিকভাবে ভেঙে পরেছিলাম।তখন সবাই আমাকে যেটা বুঝিয়েছে সেটাই আমার মাথায় সেট হয়ে গিয়েছিলো।আমি বুঝতে পারিনি।আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।আমি তোমাকে ছাড়া ওই ঘরে থাকতে পারছিনা।ওই ঘরে গেলে মনে হয় কেউ আমার গলা চেপে ধরেছে।আমি থাকতে পারিনা।আমার ভিষণ কষ্ট হয়।ফাঁকা ফাঁকা লাগে।
ফায়াজ মেহেরকে ছেড়ে দিয়ে চোখের পানি মুছে বলে,
–তোমাকে দেখতে এসেছিলাম।দেখা শেষ,ভালো থেকো।আমি চলে যাচ্ছি।ফায়াজ বারান্দার দিকে এগিয়ে গেলো।মেহেরও পিছে পিছে গেলো।
–ফায়াজ,, এই জ্বর নিয়ে এদিক দিয়ে এভাবে নেমোনা।পড়ে যাবে।
–কিচ্ছু হবেনা।আমি ঠিক যেতে পারবো।
তোমার বাড়ির কেউ দেখলে সমস্যা হয়ে যাবে।
–কিছু হবে না।মেইন দরজা দিয়ে যাও।আমি তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি।
মেহের জোর করে ফায়াজকে টেনে নিয়ে আসলো।ফায়াজ সিড়ি দিয়ে নিচের দিকে হাটা দিলো।তারপর গেইটের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে মেহেরের একবার পিছ ফিরে তাকালো।তারপর বললো,
–ভাবছো কেন তোমাকে আমার সাথে যেতে বলছিনা তাই তো।
মেহের মাথা নিচু করে ফেললো।ও আসলে এটাই ভাবছে ফায়াজ কেন একবারো যাওয়ার কথা বলছেনা।
–কারণ সে মুখ আমার নেই।আমি তোমাকে সেটা বলতে পারবোনা।তবে বলবো, হ্যা।শাস্তি দিতে ভুলোনা।
ফায়াজ চলে গেলো।একবারও পিছু ফিরে দেখেনি।আরেকবার পিছু ফিরে মেহেরকে দেখলে আর ফিরতে পারবেনা।মেহের দরজার সামনে দাড়িয়ে কাদছে।
ফায়াজ তুমি একবার বলতে মেহের ফিরে চলো,আমি তোমার সাথে চলে যেতাম।কেন আমাকে নিয়ে গেলেনা?আমিও যে থাকতে পারছিনা।

ফায়াজ বাড়িতে ঢুকেই দেখে ফাইজা বসে আছে।ভাইকে দেখে টেনে নিয়ে সোফায় বসিয়ে দিলো।তারপর থার্মোমিটার নিয়ে জ্বর মেপে মুখের সামনে ওষুধ ধরলো।
–রাখ,আমি খাবোনা।ঠিক আছি।
–ভাবি বলেছে খেতে,খাবিনা?
ফায়াজ চমকে গেলো ফাইজার কথায়।
–ভাবি!!
–হুম ফোন করে বলেছে তোর গায়ে নাকি জ্বর।তোকে যেন মেডিসিন দেই।
–দেখেছিস কত খেয়াল রাখে,কত্ত ভালোবাসে আর আমি,,,
ফায়াজ মেডিসিন নিয়ে উঠে গেলো।
ফাইজা পিছন থেকে বললো,
–তুই ও তো পারিস একটু ভালোবাসতে।পারিস না।
ফায়াজ থমকে গেলো।তারপর বোনের দিকে না ঘুরেই বললো,
–কে বলেছে ভালোবাসিনা?আই লাভ হার লাইক ক্রেজি।
বলেই সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেলো।
ফাইজা ভাবছে,
–আমাকেই কিছু করতে হবে।

🍀🍀

ফাইজা মেহেরের সামনে বসে আছে।মেহেরের শ্বশুর শাশুড়ী আর ফাইজা এসেছে মেহেরকে দেখতে।মেহের সবার সাথে কুশল বিনিময় শেষ হলেই ফাইজা ওকে আলাদা রুমে নিয়ে যায় কথা বলতে।ফায়াজের বাবা-মা ফায়াজের আচরনের জন্য বারবার মেহের আর মেহেরের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে আর বলেছে মেহের যা চাইবে তাই হবে।
মেহের ফাইজার কাছে ফায়াজের খোজ খবর নিলো।ফাইজা বারবার ইতস্তত করছে কিন্তু কিছুই বলতে পারছেনা।
মেহের ওর কাধে হাত রেখে বললো,
–কি বলতে চাইছো বলোনা।
ফাইজা এক নিশ্বাসে বললো,
–ভাবি তুমি ফিরে চলো।
বলেই কেদে দিলো।
–ফাইজা তুমি কাদছো কেন?
–ভাবি ভাই ভালো নেই।অনেক কষ্ট পাচ্ছে।আমি ওর কষ্ট সহ্য করতে পারছিনা।ভিতরে ভিতরে শেষ হয়ে যাচ্ছে।কাউকে কিছু বলতে পারছেনা।জানিনা তোমার সাথে কি করেছে,,কিন্তু ওর বিহেভিয়ারে এটুকু বুঝেছি ও তোমাকে ভালোবাসে।খুব ভালোবাসে।হয়তো ওর আগের প্রেমিকাকে,,,
মেহের থামিয়ে দিলো ফাইজাকে।
ফাইজা মেহেরের দিকে অবাক হয়ে চেয়ে আছে।
–ফাইজা,আগের প্রেমিকা বলতে কেউ নেই।তোমার ভাই একজনকেই ভালোবাসে।সে হচ্ছে মেহের।
–মানে?
–আমিই সেই যাকে তোমার ভাই ভালোবাসতো,এখনো বাসে।আমিই তোমার ভাইয়ের সেই প্রেমিকা।
ফাইজার অবাক হওয়ার চরম পর্যায়ে।
–কি বলছো??তুমি!!
–হ্যা।আমি সেই।
মেহের ফাইজাকে ওর জীবনে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা খোলে বললো।ফাইজা সব শুনে নির্বাক।তারপর ডুকরে কেঁদে ওঠে।
–ভাবি,,ভালোবাসা মানেই কি কষ্ট?যারা মনপ্রাণ দিয়ে একে অপরকে ভালোবাসে তাদেরকে এইভাবে কষ্ট পেতে হয়।নয়তো তোমার আর ভাইয়ার সাথে এসব কেন হবে?তোমাদের দুজনকে এসব কেন সহ্য করতে হবে?

ফাইজা কিছুক্ষণ থেমে চোখমুখ মুছে বললো,
–তুমি জানো ভাবি,ভাইয়া তোমার বিয়ের খবর শুনে পাগল হয়ে গিয়েছিলো।এয়ার্পোট থেকে বাসায় ফিরার সময় গাড়ির কাচে দুবার ঘুষি মারে।ওর বন্ধুরা ওকে অজ্ঞান অবস্থায় বাসায় আনে।জ্ঞান ফিরার পর ঘরের জিনিসপত্র ভেঙে হাতের রগ কেটে ফেলে।ভাইকে হসপিটালে নেওয়া হয়।অবস্থা খুবি ক্রিটিকাল ছিলো।আমাদের খবর দেওয়া হয়।আমরা ইমারজেন্সি দেশে ফিরি।ডাক্তার জানায় অনেক ব্লাড ফল হয়েছে কিছু বলা যাচ্ছেনা।পুরো পরিবারে শোকের ছায়া পড়ে যায়।৩দিন পর জ্ঞান ফিরে।জ্ঞান ফিরার পর যখন দেখে বেচে আছে তখন সব কিছু টানাহেঁচড়া করে।আম্মু গিয়ে থামায়।তারপর আম্মুকে ধরে চিতকার করে কাদে।আম্মুও খুব কাদে।ভাইয়াকে বাসায় নিয়ে যাই।সবসময় চোখে চোখে রাখতাম সবাই।ভাইয়ার ভাবসাব ভালো লাগতোনা।বাসায় ফিরার দুদিন পর ভাইয়া ছাদে উঠে।আমিও পিছনে পিছনে যাই।ভাইয়া ছাদের রেলিংয়ে উঠে।আমি পিছন থেকে ঝাপ্টে ধরে চিতকার করি।আমার চিতকারে সবাই ছাদে দৌড়ে আসে।মম ভাইয়াকে থাপ্পড় মারে আর বলে,
–লাফাবি,মরে যেতে চাস?লাফ দে।মরে যা।তবে শুনে রাখ তুই যখন লাফ দিবি তার পর পর ই আমি লাফ দিবো।
আমাকে টেনে ভাইয়ার সামনে দাড় করিয়ে বলে,এই যে তোর বোন,তোর আদরের বোন।যেকিনা তোর মমকে ছাড়া পুরোই অচল।সে এতিম হয়ে যাবে।সবার ঠুকর খেয়ে যতদিন পারবে বাচবে তারপর মরে যাবে।যাক মরে তাতে তোর কি?
তোর মা মরুক,বাপ মরুক,বোন মরুক তাতে তোর কি আসে যায়?
তোর তো এই পৃথিবীতে একজন ই আপন।এই এক বছরের ভালোবাসার জন্য এত বড় প্রতিদান দিচ্ছিস তাহলে আমি তোকে ১০মাস পেটে ধরেছি।২৪বছর ধরে লালন করেছি তার কি প্রতিদান দিবি?বল,কি দিবি?
যা লাফ দে।মরে যা।যা খুশি কর।আমি কিচ্ছু বলবোনা।বলেই মম কান্না শুরু করে।ভাইয়াও কাদে আর বলে আমাকে ক্ষমা করো,আমি আর এমন করবোনা।তারপর আমার মাথায় হাত রেখে কসম কাটে।
কিন্তু ভাইয়া বদলে যায়।ঘর অন্ধকার করে বসে থাকতো।বের হতোনা।কারো সাথে কথা বলতোনা।ঘরের ভিতরে এখানে সেখানে সিগারেট,সিগারেটের ছাই,ওয়াইনের বোতল,বিভিন্ন ধরনের ড্রিংকস এসব পাওয়া যেত।আমি ২মাস ছিলাম।মমকে রেখে যাই।মম ছয়মাস থেকেছিলো ভাইয়ার কাছে।যখন একটু নরমাল হয় তখন মম লন্ডন ফিরে।ভাইয়াকে লন্ডন নেওয়ার অনেক চেষ্টা করি কিন্তু সে রাজি হয়না।বিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করি কিন্তু সে সাফ জানিয়ে দেয় সে বিয়ে করবেনা।কেউ যেন জোর না করে।
তারপর হটাৎ একদিন বললো,সে বিয়ে করবে।এটা শুনে আমরা সবাই হতবাক।যে কিনা মেয়েদের দুই চোক্ষে দেখতে পারেনা,ঘৃণা করে সে বিয়ে করবে।তারপর আর কি ভাইয়ার কথায় আমরা সবাই বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যাই।
তখনই বুঝা উচিত ছিলো।তোমার প্রথম বিয়েও ৩বছর আগে হয়েছিলো।কিন্তু এতসব বুঝতে পারিনি।
মেহের কাদছে।
–ভাবি,তোমাদের ভালোবাসার পূর্ণতার জন্য আল্লাহ তোমাদের দ্বিতীয় সুযোগ দিয়েছে।তোমাদেরও উচিত আর একটা সুযোগ দেওয়া।ভালোবাসার মানুষের সাথে দ্বিতীয়বার থাকার সুযোগ সবাই পায়না।তোমরা পেয়েছো।দুজনেই কষ্ট পাচ্ছো।এবার এসব শেষ করো।প্লিজ ভাবি।
মেহের চোখের পানি মুছে বললো,
–একটা হেল্প করবে?
–অবশ্যই।

🌺🌺🌺

ঘড়ির কাটায় রাত ১২টা ছুইছুই।ফাইজা ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছে।কিন্তু ফায়াজের আসার নাম ই নেই।
ফায়াজ ঢুলতে ঢুলতে বাসায় ঢুকলো।ফাইজা বিরক্তি নিয়ে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
–ড্রিংক করেছিস?
–হুম।অল্প।
ফাইজা টেনে নিয়ে লেবুপানি খাইয়ে দিলো।
–ওই কি করছিস?
–বেশ করেছি।আজ অন্তত ড্রিংক না করলেই পারতি।
ফায়াজ বোনের উপর খুবই বিরক্ত।
–ওই তুই কি লেবুপানি নিয়ে বসে ছিলি?তোর আর কাজ নেই?
–আপাতত এইটাই আমার কাজ।আই হোপ আজকেই শেষ।
–কি বলছিস উল্টো পাল্টা??
–গিয়ে ঘুম দে।আমাকে আর জ্বালাস না।
বলেই ফাইজা নিজের রুমে চলে গেল।ফায়াজ মাথা চুলকাতে চুলকাতে নিজের রুমের দিকে অগ্রসর হলো।কেমন নেশা কেটে গেছে মনে হচ্ছে।বেশ বিরক্ত লাগছে।রুমে গিয়ে কয়েক প্যাক খেতে হবে।রুমে ঢুকেই বোতল খোলে বসলো।যখনি মুখে দিবে চুরির রিনিঝিনি শব্দ পাচ্ছে।সাথে একটা মিস্টি ঘ্রান।ফায়াজ শব্দের উৎস খোজার জন্য পুরো রুমে চোখ বুলালো।তখনই চোখে পড়লো পুরো রুম বিভিন্ন ফুল দিয়ে সাজানো,বিভিন্ন সেইফের ক্যান্ডেল লাইট জ্বলছে আর গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
ফায়াজ কিছুই বুঝতে পারছেনা।হটাৎ ই রিনিঝিনি শব্দ কাছে এলো।ফায়াজ চোখ তুলে অবাক।চোখ তুলে ওর হুশ উড়ে গেলো।অস্ফুটস্বরে বললো,
–মেহের!!

চলবে,,

(এর চেয়ে বেশি লিখা সম্ভব হয়নি।মেহের ফায়াজের কথামতো শাস্তি দিতে চলে এসেছে।কিন্তু কি শাস্তি দিবে??আপনাদের কি মনে হয়??🙆🙆)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here