0
1034

#মেঘবতীকন্যা পর্ব ৩

# সুমাইয়া আক্তার মিম

(অনেকেই বলেছেন নায়িকা এতো ফর্সা কেনো।সব গল্পে এমন শ্বেতরোগী নায়িকা ভালো লাগে না।আরো কতো কী!আমি প্রথমেই বলেছি এই গল্পটা সম্পূর্ণ নতুন গল্প তবে সকলের কথা প্রাধান্য দিয়ে আপনাদের পছন্দ অনুযায়ী নায়ক নায়িকা দেওয়া হয়েছে এবং কী ওদের আগের চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে।।যারা আমার লেখা বিষাক্তময় আসক্তি গল্পের শেষ পর্ব পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই বিষয়টা বুঝতে পেরেছেন।।। আমি আগের সাথে নায়ক নায়িকার চরিত্র মিল রেখে তাদের বিবরণ দিয়েছি।। আর রইলো নায়িকা সাদা কেনো তাহলে বলবো আমি বরাবরই মতো গল্পের নামের সাথে মিলিয়ে গল্পের থিম তৈরি করি এবং নামের সাথে মিল রেখে গল্পটা ফুটিয়ে তুলি।। গল্পের নাম #মেঘবতী_কন্যা আর মেঘ হচ্ছে সাদা। আমি নায়িকাকে মেঘের সাথে তুলনা করেছি। মেঘ সাদা সেহেতু নায়িকাও। নাকি আপনাদের মতে মেঘ শ্যামবর্ন।সেই যাইহোক, আমি নায়িকাকে আহামরি সাদা বলিনি শুধু বলেছি নায়িকা অনেক সুন্দরী আর সুন্দর মানে ফার্মের মুরগির মতো অতিরিক্ত সাদা নয়, মানসই সাদা যাতে করে তাকে নিখুঁত সুন্দরী বলা যায়।।নায়িকা কেমন নায়ক কেমন এটা বিবেচনা করতে যাবেন না। শুধু গল্পটা কেমন সেটা বিবেচনা করুন।।নায়িকা কালো, সাদা যাইহোক সে নায়িকাই থাকবে। )

৩/
‘সাদা,কালো রঙের পাতলা ফিনফিনে পর্দা গুলো ভেদ করে সোনালী রোদের আলো রুমে প্রবেশ করতে কালো ব্ল্যানকেট জড়িয়ে রাখা এক সুঠাম দেহের অধিকারী পুরুষ কিছুটা নড়েচড়ে উঠেন।। উল্টো হয়ে শুয়ে এক হাতে মাথার চুলের মাঝে আর অন্য হাত একটা বড় ছবিতে জড়িয়ে রেখেছেন।। এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন মনে হচ্ছে কেউ জোর করে তাঁর কাছ থেকে নিয়ে যাবে ছবিটিকে।। ঘুমের ঘোরে মৃদু হেসে আরো গভীরে নিয়ে আসে বিশাল ছবিটিকে। একদম বাচ্চাদের মতো করে ঘুমিয়ে আছে।একরাশ কালো চুল কপালের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।। বিশালবহুল রুমটায় সব আধুনিকতার ছোঁয়া।।সব কাঁচের তৈরি জিনিসপত্র।। সম্পূর্ণ রুমের জিনিস কাঁচের তৈরি হওয়ায় বাহিরের কচি রোদে সম্পূর্ণ রুমের জিনিস মুক্তের মতো চিকচিক করছে।।তখনি আলিশান রুমের দরজা ঠেলে একজন মহিলা প্রবেশ করেন।।বয়স হয়েছে কিন্তু চেহারায় জেনো বয়সের বিন্দুমাত্র ছিটে ফোটা নেই।। ফরেনিদের মতো হালকা ব্রাউন চুল কিন্তু চেহারা খাটি বাঙ্গালীর ছাপ।।। মহিলাটি রুমে প্রবেশ করে মৃদু হেসে বিছানার দিকে তাকিয়ে জানালার দিকে ছুটেন।। কাঁচের জানালা ভেদ করে জেনো রোদ প্রবেশ করতে না পারে তাই পর্দা গুলো ভালো করে টেনে দিলেন।।। রোদের আলো যে একদম সহ্য হয়না বিছানায় ঘুমন্ত যুবকের।।রোদের আলো মুখে পরলে রেগে সব তছনছ করে দিবে সে। এই রোদ আর বাহিরের গরম,ধুলো বালি একদম অপছন্দের তাঁর।। ময়লা জিনিসটা একদম পছন্দ করেন না সে।পা থেকে মাথা পর্যন্ত সব তাঁর পারফেক্ট চাই। কোনো ধরনের ময়লা থাকা যাবে না।। যথেষ্ট সেনসিটিভ সে।।এর বিশেষ কারন তাঁর প্রেয়সীর যে ড্রাস্ট এলার্জি।তাই সব কিছু ময়লা মুক্ত থাকতে হবে।এটাই তাঁর কঠোর নিয়ম।সে একদমই ময়লা পছন্দ করেন না। কিছু অগোছালো কিংবা পরিপাটি নেই তাহলে সকলের উপর মারাত্মক ঝড় চলে।।তাই বাড়ি এবং সব কিছু ক্লিন আছেন কিনা,সকল কর্মরত র্সাভেন্ট ঠিক মতো কাজ করছেন কিনা তাঁর সব কিছু দেখাশোনা এবংকি কাজ বুঝিয়ে দেন মিসেস মিথিলা খান।।
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।। মিথিলা খান দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকা র্সাভেন্ট থেকে ব্লাক কফির মগ নিয়ে এসে ছেলের পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে আদুরে গলায় বলেন,

-বারিশ উঠে পরো কতোটা বেলা হলো!
তাঁর কন্ঠ শুনে কিছুটা নড়েচড়ে উঠে আবারও ঘুমিয়ে গেলো বারিশ।। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে তৃপ্তির হাসি হাসেন মিথিলা খান।। কতোটা চিন্তা বিহীন এবং সুখী লাগছে বারিশকে।। মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে তাঁর অপেক্ষার দিন শেষ আজকেই।ঠিক কবে এতোটা শান্তিতে বেশি সময় ঘুমিয়েছে মিথিলা খানের মনে নেই।।ছেলের কপালের চুল গুলো ঠেলে দিয়ে হেসে মনে মনে ভাবেন,,,
আজকে তাঁর সব চিন্তা শেষ। আজকে থেকে তিনিও শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন।। কতোটা কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে এই দিনের জন্য তাদের।। আজকে তাদের সকলের জীবনে বিশেষ দিন স্পেশালিই বারিশের জন্য।। আজকে তাঁর জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন।এই দিনটার জন্যই তো এতো সব আয়োজন।এই দিনটার জন্যই তো এতো এতো অপেক্ষা। নিজেকে শান্ত রাখা।নিজের জিদ, ভালোবাসা, আসক্তি, চাওয়া-পাওয়া সব তো দমিয়ে রেখেছে এই দিনটার জন্য।।। মিথিলা খান কিছু সময় ভেবে আবার ধীরে গলায় ঢাকতে লাগলেন বারিশকে।। প্রতিদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে জিম করা এবং কী নিজের তৈরি রুলস মেনে কাজ করা বারিশের কাজ ‌।এর থেকে হেরফের কখনো হয়নি। মাঝে মাঝে অতিরিক্ত ড্রিংস করেও সে বিন্দাস নিজের কাজকর্ম করে কোনো হেরফের করে না। দীর্ঘ অনেক বছর পর সে খুব ভালো ঘুমিয়েছে। আজকে যে তাঁর সব অপেক্ষা শেষ হতে চললো। মিথিলা খান আবার ভয়ে ভয়ে ছেলেকে ঢাকলেন। কখনো সকালে ছেলের রুমে আসেন না তিনি। বলতে গেলে কখনো আসেন না ছেলের রুমে।।বারিশ খুব একঘোয়ে,রাগী স্বভাবের মানুষ তাঁর রুমে প্রয়োজন ছাড়া নিজের বোন এবং বাড়ির লোককে ও এলাউ করে না।। যতোক্ষন বাড়ি থাকবে কেউ উচ্চ স্বরে কথা পর্যন্ত বলতে পারেন না। সবসময় নিরবতা বিরাজ করে সম্পূর্ণ বাড়ি জুড়ে।ছোট বেলায় থেকে অত্যান্ত মেধাবী ছাত্র এবং শান্ত ছেলে সে তাই অতিরিক্ত কথা এবং জোরে আওয়াজ করে কথা বলা সে পছন্দ করে না।যতোক্ষন বাড়ি থাকবে সকলে নিজেদের মতো কাজ করবে কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়া আর সে না থাকলে সবাই জেনো হাঁফ ছেড়ে বাচেন।।। আজকে একটু বেশি দেরি হয়ে যাওয়া মিসেস মিথিলা বাধ্য হয়ে ঢাকতে আসেন তাকে। কিছুক্ষণ পর তাদের বের হতে হবে যে।রাত ১২টায় আমেরিকা থেকে সবাই বাংলাদেশে এসে নিজেদের বিশাল বড় বাগান বাড়িতে উঠেছেন। সেই আসার পর যে সে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়েছে আর উঠার নাম নেই।।ছেলেকে ঢাকলে এখন যদি উঠে চেঁচামেচি শুরু করেন এটা ভেবে মুখ কাচুমাচু হয়ে যায় মিসেস মিথিলা খানের।। তারপর কিছু একটা ভেবে মৃদু হেসে ছেলের কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলেন,

-বারিশ আজকে আমাদের হায়দার বাড়ি যেতে হবে রূপকে আনতে।তুমি কী ভুলে গেলে!
মিথিলা খানের এতো টুকু কথা শুনে বারিশ তাঁর হাল্কা ঘোলাটে সবুজ চোখ জোড়া খুলেন।। তাঁর চোখ দুটো ভীষণ লাল হয়ে আছে কপালের রগটাও কিছুটা ফুলে রয়েছে।। মিথিলা খান কিছুটা ঘাবড়ে গেলেন বারিশের চেহারা দেখে।বারিশ কী রেগে আছে!দেখেতো মনে হচ্ছে সে ড্রিংস করেছে। কিন্তু কেনো? আজকে তো তাঁর অপেক্ষা শেষ তাহলে সে কেনো এখনো নিজেকে এমন কষ্ট দিচ্ছে। মিথিলা খান কিছু বলতে যাবেন তাঁর পূর্বেই বারিশ থমথমে গলায় বললো,

-সবকিছু তৈরি করুন আম্মি। আমি ফ্রেস হয়ে সব তৈরি চাই।
ছেলের কথা শুনে মিথিলা খান কিছু না বলে তারাতাড়ি রুম ত্যাগ করে নিচে হল রুমে চলে গেলেন। সবাই তোরজোর করে সবকিছুর ব্যবস্থা করছে।ইভেন্টের লোকেরা প্রায় বাড়ি সাজানোর কাজ সেরে ফেলেছেন।।সকল গার্ড র্সাভেন্ট মিলে ছুটোছুটি করে সব কাজ শেষ করছেন। মিথিলা খান সব বুঝিয়ে দিচ্ছেন এক এক করে সব করা ঘনিয়ে আসছে।বারিশ আসার আগে সব শেষ করতে হবে সে এসে দেখার পর সব গাড়িতে তোলা হবে এর আগে নয়।।। অন্যদিকে নিলয় খানও বসে নেই এই কাজে ঔ কাজে ছুটোছুটি করছেন।। দুজন লয়ার এসেছেন তাদের সাথে স্টাডি রুমে কাগজপত্র দেখছেন।।। রিনি এসে মায়ের সাথে সবকিছু দেখছে। তাঁর মুখের থেকে হাঁসি সরছেই না।মেয়ের হাঁসি দেখে চিন্তার মাঝেও হেসে দেন মিথিলা খান।। রিনি মাকে জড়িয়ে ধরে বললো,

—–উফফ্ আম্মি আজকে আমাদের সকলের অপেক্ষার প্রহর তাহলে অবশেষে শেষ হচ্ছে! উফ্ কতোদিন ধরে যে এই দিনটার অপেক্ষায় ছিলাম।। আজকে খুব খুব বেশি খুশি লাগছে।। অবশেষে ভাইয়া তাঁর মেঘবতীকে নিজের করে সারাজীবনের জন্য নিয়ে আসবে।।(খুশিতে আত্মহারা হয়ে)

মিথিলা খান মেয়ের গাল টেনে বললো,

-হুম একদম! আমার বাড়িতে আজকের পর থেকে সবসময় খুশির বর্না বয়ে যাবে। আমার রাগী ছেলেটার কঠিন হৃদয় টা আজকে এতো বছর পর শান্ত হবে।সব ভালোয় ভালোয় হয়ে গেলে হয়।।এক গাল হেসে।।।
সকলের মনে হাজার খুশির প্রজাপতি ডানা মেলে উড়ছে। সকলের অপেক্ষার প্রহর এইবার শেষ হতে চলেছে।।।

‘বালিশে আধশোয়া হয়ে হাতের বড় ছবিটার দিকে একমনে তাকিয়ে আছে বারিশ।চোখ দুটো টকটকে লাল হয়ে আছে। মুখে তৃপ্তির হাসি তাঁর।। হাতের ছবিটার সারা মুখে নিজের বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে আঁকিবুঁকি করে নেশালো গলায় বলে উঠলো,

-অনেক অপেক্ষা করিয়েছো মেঘবতী। অনেক কষ্ট দিয়েছো। এইবার সব পুষিয়ে নিবো।যতোটা জ্বালিয়েছে তাঁর শাস্তি তোমায় পেতে হবে জান।। আজকে সম্পূর্ণ নিজের করে নিবো তোমাকে।আর কোনো দূরত্ব নয়। অনেক কামনার পর তোমাকে আমার করেছি।এর সুদ তো তোমাকে দিতে হবে তাই না মেরি জান।। বাঁকা হেসে।।
ছবিটায় ঠোঁট ছুঁইয়ে বাঁকা হেসে আবার বলতে লাগলো,
‘পাখির ডানা ছাঁটার সময় এসে পড়েছে।আর নয় ডানা ঝাপটানো।। এখন থেকে তোমাকে বারিশ খানের খাঁচায় থেকে ঝাপটাতে হবে। তোমার মানতে হবে তোমার শুরুটা ও আমি আর শেষ টাও।। তোমার রূহ টা ও আমার নামে চাই। তোমার নিঃশ্বাস,শ্বাস-প্রশ্বাস সব আমার নামে আমার ভালোবাসার সুর থাকতে হবে।।।যতোটা পুড়িয়োছো তাঁর থেকে দ্বিগুণ আমি তোমাকে দিয়ে পুষিয়ে নিবো। ছবির মালিকের ওষ্ঠে আঙ্গুল দিয়ে স্লাইট করে।।।

৪/
বিছানায় গাল ফুলিয়ে বসে আছে রূপসা আর তাঁর চারিদিকে তাঁর আম্মি,ভাবিরা আর চাচিমনিরা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত।।সে চারিদিকে তাকাচ্ছে আর গাল ফুলিয়ে হাঁটুর মাঝে মাথা ঠেকিয়ে কান্না করছে।। কিন্তু আজকে দেখো এতো এতো ভালোবাসার মানুষগুলো তাঁর কথা শুনছে না।এটা সেটা বুঝিয়ে মুখ বন্ধ করে রেখেছেন।।সে কিছুতে যাবে না এই বাড়ি ছেড়ে এটা কোনো গ্ৰহণযোগ্য কথা না হলেও সে একই কথা বলেই যাচ্ছে তাই রোজা হায়দার মেয়েকে ধমকিয়ে চুপ করিয়ে রেখেছেন ‌বড্ড জেদি এই মেয়ে একটা কথাও কারোর শুনে না। সকলের আদর পেয়ে বাঁদর হয়েছে।এসব কথা বলে বকছেন আর কাজ করছেন রোজা হায়দার।। তাঁর কথা শুনে বাড়ির ছোট বড় সকলেই একদফা কথা শুনান তাকে। কেনো তাদের আদরের রাজকন্যা কে তিনি বকছেন । সকলের কথা শুনে নিজে নিজে কিটকিট করে কাজ করছেন তিনি। মায়ের কিটকিট কথা শুনে চুপ করে যায় রূপসা।। সকলে এটা সেটা বলে তাঁর মন খারাপ দূর করছে ।চাচা আর বাবা তো অনেক বুঝিয়ে গেলেন। সকলে বুঝাচ্ছে কিন্তু মেয়ে তো মানতে নারাজ।সবাই পড়েছে মহা বিপাকে তাই বাধ্য হয়ে রোজা হায়দার বারিশকে কল করবে হুমকি দিয়ে আপাতত মুখ বন্ধ রেখেছেন রূপসার।।।রূপসা মনে মনে নিজেকে বকতে লাগলো, কেনো যে সে ঔ এরোগেন্ট ম্যানকে পছন্দ করতো।।এই লোকটা আসলে বদ সবসময় তাকে প্যারা দেয়। এখন আবার তাঁর আব্বি আম্মি, পরিবার থেকে চিরকালের জন্য দূরে নিয়ে যাবে।ভেবেই ফুঁপিয়ে কেঁদে দেয় সে।। তাকে কাঁদতে দেখে সকলে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়লো তাঁর কান্না থামানোর জন্য।এটা সেটা বলে তাঁর কান্না থামানোর চেষ্টা করছে।। রোজা হায়দার মেয়ের কান্না থেকে নিজের মনটাও খারাপ হয়ে যায়। সকলের মুখে কষ্ট এসে ভিড় জমেছে। সবাই নিজেদের শক্ত করে রূপসাকে বোঝাতে লাগলো।।মেয়েটা নেয়াহতি বাচ্চা একটা মেয়ে। পরিবারের অতিরিক্ত ভালোবাসা পেয়ে অল্পতেই ভেঙে যায়।। তাঁর বয়সী অন্য মেয়েরা বেশ শক্ত। হেসে খেলে বেশ জীবন কাটাচ্ছেন।আর সে পরিবারের ছায়া বড় হয়েছে। এখন এই ছায়া ছেড়ে অন্য ছায়া আপন করা তাঁর জন্য কষ্টকর।।এখনোতো ঠিক ভাবে তাকে সম্পর্কের মানে শিখানো হলো না। কিন্তু রূপসা পড়াশোনা এবং সব দিক থেকেই ভারি শক্ত মস্তিষ্কের মানুষ। ব্যবহারের মিচিউর না আসলেও সম্পর্কের দিক থেকে সে খুব চতুর।। যথেষ্ট বুদ্ধিমতি আর সাহসী মেয়ে শুধু পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে একটু নাজুক। তাঁর রাগ, দুষ্টুমি, বুদ্ধি সব দিক থেকে বিবেচনা করে সে পারবে বারিশের সাথে সংসার করতে। একদম নাকানিচুবানি খাওয়াবে এমন পাজি মেয়ে সে। এসব কথা ভেবে ফিক করে হেসে দিল রোজা হায়দার। রোজা হায়দারের হাসির দিকে সকলে তাকিয়ে আছেন। রূপও কান্না বাদ দিয়ে মায়ের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে।সে কাঁদছে আর তাঁর মা হাসছে।।রূপসা কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললো,,,

-আম্মি আমি কাঁদছি তো।
রোজা হায়দার মেয়েকে জড়িয়ে কপালে চুমু খেলেন। রূপসা ও দুই হাতে মাকে জড়িয়ে ধরলো। রোজা হায়দার মৃদু হেসে বলেন,

-তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় দিন আজকে রূপ।প্রত্যেক মেয়ের পরিবার ছেড়ে মা-বাবা ছেড়ে যেতে কষ্ট হয়। কিন্তু আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি যে তুমি এখান থেকে বারিশের কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো থাকবে। তোমার সবচেয়ে সেইফ জায়গায় বারিশ। তোমার কোলে সুখ এনে ভরিয়ে দিবে সে। তোমার এমন কোনো দিন আসবে না আমাদের তুমি মিস করবে। তোমার ভাবনার আগেই সব পেয়ে যাবে বারিশের কাছ থেকে।আর এটা সেই ছোটবেলা থেকেই জেনে আসছো এখন শুধু সামনে থেকে দেখবে। এতোটা সুখী হবে যেটা তোমার প্রত্যাশার বাহিরে। আমার কথা মিলিয়ে নিও। এখন কান্নাকাটি বন্ধ করো কেমন।।আর আমাদের দেখতে ইচ্ছে হলে তুমি চাওয়ার আগে আমরা সকলে হাজির হয়ে যাবো।বারিশের সাথে কথা হয়েছে সে আগেই বলে দিয়েছে,যখন তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হবে সে নিজেদের পার্সোনাল ফ্লাইটে একদম তোমার কাছে নিয়ে হাজির করবে। এইবার খুশিতো। বলে নাক টেনে দিলো।। মায়ের কথা শুনে এইবার কান্না বন্ধ করে মৃদু হাসে রূপসা।।
সবাই আবার নিজেদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আর রূপসা মনে মনে ভাবে,,

‘ঔ ইংরেজ সাদা ভুত যা রাগী যদি আমাকে সকলের থেকে দূরে নিয়ে মেরে গুম করে ফেলে তবে তো কেউ জানবেই না।। না না ওখানে তো মামুনী,পাপা,রিনি থাকবে। কিছু করতে পারবে না। আমাকে তো তাঁর রুমে থাকতে হবে যদি ছোট বেলার মতো শাস্তি কিংবা কামড় দেয় তাহলে।। মুখটা ছোট করে।।
কিছুক্ষণ ভেবে বললো,হু আমিও দেখে নিবো। তখন বাচ্চা ছিলাম এখন বিশ প্লাস। আমার সব কামড়ের জবাব নিবো।।মি.কোল বালিশ তোমাকে আমি কামড়িয়ে কুমড়িয়ে খেয়ে ফলবো।আর যদি না পাড়ি তাহলে ওখান থেকে পালিয়ে আম্মি আব্বির কাছে চলে আসবো।হু ভালো আইডিয়া।
কথা গুলো ভেবে মনে মনে সাহস জুগিয়ে নিলো রূপসা।। কিন্তু যতো বারিশদের আসার সময় হচ্ছে সব গুলিয়ে যাচ্ছে।।যতো নিজেকে সাহসী আর বুদ্ধিমতি মনে করুক ভেতরে বোকা আর ভীতুর ডিম সে।।বারিশ যে এক থাবায় তাঁর মতো পুঁটি মাছকে নিজের কবলে বন্ধি করে নিতে পারে সেটা ভাবলে গলাটা শুকিয়ে যায় তাঁর।।।।

চলবে,,,,❣️

[লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম✵]
“বিভিন্ন জায়গায় আমার গল্প গুলো কপি হচ্ছে।কপিকারি অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন বোধ পর্যন্ত করছেন না।।🚩গল্প কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ। লেখিকার নামসহ হলেও পোস্ট করতে পারবেন না। করলে বিনা নোটিশে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।। পাঠকদের কাছে অনুরোধ এমন চোখে পরলে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন এবং অবশ্যই আমাকে জানাবেন।। কষ্ট করে গল্প লিখি আর কপিবাজ এক চাপে নিজের করে নিবে এটা ঠিক না।।। এমন কাউকে পেলে অবশ্যই পাঠকগণ নিজেরা ব্যবস্থা নিবেন এবং সর্ব প্রথম আমাকে জানাবেন। ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here