প্রেমাতাল পর্ব ৯

0
538

প্রেমাতাল পর্ব ৯

মৌরি মরিয়ম

মুগ্ধর মনে হলো রাস্তার দিকটায় কেউ নেই, কারন কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। শুধু জঙ্গলের ভেতর থেকে শুকনো পাতায় পা ফেলার ঝুপঝাপ শব্দ আসছিল। বেশ কিছুক্ষণ পর পায়ের আওয়াজটা কাছে চলে এল। আবার কথোপকথন শোনা গেল। তার মানে ওদের দলের সর্দারটা জঙ্গলে ঢোকেনি, এখানেই ছিল। একজন বলল,
-“ওস্তাদ, জঙ্গলে কেউ নাই।”
সর্দার চেঁচিয়ে বলল,
-“কেউ নাই মানে? গেল কই তাইলে?”
অন্য একটা গলা পাওয়া গেল,
-“ওস্তাদ, আমার মনে লয় অরা এই রাস্তায় আহে নাই, যেমনেই হউক থানচি গ্যাছেগা। উল্টা রাস্তায় ক্যান আইবো কন? অরা তো আর জানতো না আমরা পিছন লাগছি।”
সর্দার বলল,
-“জানতো জানতো। ওই কুত্তার ছাও যেমনেই হউক ট্যার পাইসিলো। নাইলে এত জলদি পলাইতো না।”
এবার ৪র্ধ কোন ব্যক্তির গলা পাওয়া গেল,
-“কিন্তু ওস্তাদ, গাড়ি ছাড়া এত জলদি অরা থানচি গেল ক্যামনে?”
-“গাড়ি ছাড়া যায় নাই। গাড়ি দিয়াই গ্যাছে।”
-“গাড়ি পাইলো কই?”
-“***পো.. আমারে জিগাস গাড়ি কই পাইলো? কত বড় কইলজা!”
-“ওস্তাদ, মাফ কইরা দেন।”
সর্দার বলল,
-“যা সর, তরে লইয়া টাইম নষ্ট করার টাইম নাই আমার। ওই রবিন্যা এদিক আয়।”
কিছুক্ষণ পর সর্দার জিজ্ঞেস করলো,
-“তুই ওই মাইয়ার ছবি দেহাইয়া আমার গায়ে জ্বালা ধরাইছস!”
তিতির চমকে মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে চাইলো। মুগ্ধ তিতিরের মুখ চেপে ধরল।
লোকটা কাঁচুমাচু হয়ে বলল,
-“ওস্তাদ আপনের পায়ে ধরি.. আমারে এইবারের মত মাফ কইরা দ্যান। আমি কোনদিন আর এমুন কাঁচা কাজ করুম না।”
-“করবি ক্যামনে? সুযোগ পাইলে না করবি! আমার দলে ভুল করার সাজা কি অয় জানোস না?”
-“ওস্তাদ, আমারে মাফ কইরা দ্যান ওস্তাদ, আপনে যা কইবেন করুম। আর জীবনেও এই ভুল করুম না। জান ভিক্ষা দেন।”
-“তাইলে তর বউরে আইজ রাইতে আমার ঘরে পাডাই দিস। তর বউ যদি আমারে খুশি করবার পারে তাইলে তুইও মাফ পাবি।”
লোকটা এবার কেঁদে ফেলল। তারপর বলল,
-“ওস্তাদ, বউডা পোয়াতি। ৫ মাস চলতাছে। অরে আমি ক্যামনে পাডামু?”
তারপর একটা ছুরির আঘাতের আওয়াজ হলো আর সাথে সাথে লোকটার মাথাটা আর মাথাকাটা দেহটা খাদে পড়ে গেল। লোকটাকে ওইভাবে পড়তে দেখে তিতির অজ্ঞান হয়ে গেল। সর্দার বলল,
-“বজলু, আমি বাইত্তে যাইতাসি। এক ঘন্টার মইধ্যে তুই রবিনের বউরে উঠাইয়া নিয়া আয়।”
-“জ্বী ওস্তাদ!”
-“মনে রাখিস যদি কোন ভুল হয় তাইলে তর অবস্থাও রবিনের মত অইব।”
-“কোন ভুল অইবো না ওস্তাদ। আমি অখনই যাইতাসি।”
এরপর সবাই জীপে উঠে চলে গেল। জীপের শব্দ যতক্ষণ শোনা গিয়েছে মুগ্ধ ওর যায়গা থেকে নড়েনি। তারপর যখন শব্দটা পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেল তখন মুগ্ধ তিতিরকে নিয়ে ওখান থেকে সরে সেই পাথরটার উপর এল যেখানে ওরা বসেছিল। ততক্ষণে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে চারপাশটা। শুধু চাঁদের আলো ছাড়া অন্য কোন আলো নেই।
একহাতে তিতিরকে ধরে অন্য হাত দিয়ে ব্যগ থেকে পানি বের করে তিতিরের চোখে মুখে ছিটালো। তিতির চোখ খুলল। মুগ্ধ ওর মুখটা তুলে ধরে পানি খাওয়ালো। পানি খাওয়া শেষ হতেই কান্নায় ভেঙে পড়লো তিতির। মুগ্ধ বলল,
-“আরে, বোকা মেয়ে কাঁদছো কেন? ওরা চলে গেছে তো। আর আসবে না।”
তিতির তখনও মুগ্ধর এক হাতের উপর পড়ে ছিল, ওঠার মত শক্তি ওর নেই। কোনরকমে বলল,
-“আপনি না থাকলে আমি আজকেই শেষ হয়ে যেতাম।”
-“সেজন্যই তো আল্লাহ আজকে আমাকে এখানে তোমার সাথে রেখেছে। যাই হোক, চলো জঙ্গলে যাই।”
-“নাহ, আমি যাবনা। যদি ওরা আবার আসে?”
-“জঙ্গলে ওরা খুঁজেছে। যেহেতু পায়নি ওরা আর আজকে আসবে না। ওরাতো ভেবেই নিয়েছে আমরা থানচি চলে গিয়েছি, শুনলেই তো। তাছাড়া ওদের আজকের কাজ এখান থেকে ফিক্সড করেই গিয়েছে। ওটা শুনতে পারোনি কারন তখন তুমি অজ্ঞান হয়ে ছিলে।”
-“কি কাজ বলুন না!”
-“ওসব শুনে তোমার কাজ নেই।”
-“না না প্লিজ বলুন না।”
-“ওরা অন্য কাউকে তুলে আনার প্ল্যান করেছে।”
-“সেকি!”
-“হুম! বাদ দাও তো। চলো চলো.. খাদের পাশে সারারাত থাকবো নাকি?”
তিতির উঠতে চেষ্টা করলো, কিন্তু পারলো না। ওর সাড়া শরীর অসাড় হয়ে পড়েছে। এত ভয় ও জীবনেও কোনদিন পায়নি। মুগ্ধ তিতিরের কাধ থেকে ব্যগপ্যাক টা নামিয়ে কাধে নিজের ব্যাগপ্যাকের উপরে নিল। তারপর তিতিরকে কোলে তুলে নিয়ে রাস্তায় উঠলো। জঙ্গলের ভেতর ঢুকতে ঢুকতে বেশ ভেতরে ঢুকে গেল, একদম রাস্তার পাশের পাহাড়টার পিছন দিকটায়। যাতে ওরা আগুন জ্বালালে রাস্তা থেকে কেউ দেখতে না পায়।
মুগ্ধ দুটো ব্যাগ কাধে নিয়ে আর তিতিরকে কোলে নিয়ে অবলীলায় হাটছিল। তখন তিতির অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল মুগ্ধর দিকে। ওর খুব ইচ্ছে করছিল মুগ্ধর গলাটা ধরে রাখতে। কিন্তু হাত উঠানোর মত শক্তি পেলনা।
মুগ্ধ তিতিরকে কোল থেকে নামিয়ে একটা গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসালো। তারপর ব্যাগপ্যাক দুটো নামালো। শেষ বিকেলে যে কাঠগুলো কুড়িয়েছিল সেগুলো এখন অনেক দূরে। তিতিরকে বলল,
-“তিতির আমি সেই কাঠগুলো নিয়ে আসি, তুমি একটু বসো হ্যা?”
তিতির মুগ্ধর জ্যাকেট খামচে ধরে বলল,
-“প্লিজ! আমাকে একা রেখে কোথাও যাবেন না। দরকার নেই আলো জ্বালানোর। চাঁদের আলোতেই সব দেখা যাচ্ছে।”
মুগ্ধ হেসে বলল,
-“হুম চাঁদের আলোতে তো দেখা যাচ্ছেই, কিন্তু দেখার জন্য তো আর আলো জ্বালাতে হবে না। বন্যপ্রাণী আর শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য আগুন জ্বালাতে হবে। আলো দেখলে ওরা আর আসবে না।”
-“আমি এতকিছু জানিনা। আমাকে একা রেখে আপনি যেতে পারবেন না।”
মুগ্ধ গেলনা। ওখান থেকেই কাঠ কুড়িয়ে আগুন জ্বালালো। তারপর ব্যাগপ্যাক থেকে কাপড়ের কি একটা বের করে সেটা নিয়ে কিছু একটা করতে লগলো মুগ্ধ। কিচ্ছুক্ষণ পর তিতির বুঝতে পারলো ওটা একটা তাঁবু! তিতির বলল,
-“আপনার কাছে তাঁবু ছিল?”
-“হ্যা, না থাকলে কি নিশ্চিন্তে জঙ্গলে থাকার চিন্তা করতাম? কেন তুমি বুঝতে পারোনি আমার কাছে তাঁবু আছে।”
-“না।”
-“ও।”
-“কিন্তু তাঁবু নিয়ে এসেছিলেন কেন? তাঁবু কি নিজের আনতে হয়? সাফি ভাইরা প্রোভাইড করেনা?”
-“হ্যা, তা তো করেই। আমার নিজের তাঁবু আছে তাই নিয়ে এসেছিলাম যাতে শেয়ার করতে না হয়।”
-“ওহ!”
তাঁবু পুরোপুরি টাঙানো হতেই মুগ্ধ তিতিরকে সেখানে নিয়ে গেল। তারপর ব্যাগ থেকে একটা স্টিলের মগ আরেকটা কাপড়ে মোড়ানো কাচের মগ আর কিছু ছোট ছোট কৌটা বের করলো। তিতির বলল,
-“আপনার ব্যাগটা পুরো একটা ছোটখাটো বাসা।”
মুগ্ধ হেসে স্টিলের মগে পানি নিয়ে তাঁবু থেকে বেড়িয়ে গেল। পানিটা আগুনে গরম করে নিয়ে আবার তাঁবুতে ঢুকলো। ঝটপট দুই কাপ কফি বানিয়ে ফেলল মুগ্ধ। তারপর এক কাপ কফি, বিস্কুট আর গাছ থেকে ছিঁড়ে আনা কমলা তিতিরের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
-“এই হলো আজকের ডিনার।”
তিতির হেসে বলল,
-“আপনি এগুলো খেয়ে সারারাত কাটিয়ে দিতে পারবেন?”
মুগ্ধ হেসে বলল,
-“হুম! তাজিংডং এ হারিয়ে যাওয়া সেই রাতে এক ফোটা পানিও ছিলনা। সেই তুলনায় এটা আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল ডিনার। বাই দ্যা ওয়ে তোমার হবে তো এতে?”
তিতির হেসে বলল,
-“আমি ডায়েট কন্ট্রোল করি। রাতে শুধু সবজি সেদ্ধ খাই অথবা যেকোনো একটা ফল। সেই তুলনায় এটা অনেক।”
-“বাপরে! তুমি কেন ডায়েট করো? তুমি তো স্লিমই আছো!”
-“হুম, ডায়েট কন্ট্রোল করি বলেই স্লিম আছি, নাহলে গোল হয়ে যেতাম। অনেক খেতে পারি তো আমি!”
-“ওহ। যাই হোক, কফিটা ঠান্ডা হবার আগে খেয়ে নাও। দূর্বলতাটা কমে যাবে।”
খাওয়া শেষ করে মুগ্ধ বলল,
-“তুমি শুয়ে পড়ো। আমি বাইরে আছি, কিছু লাগলে ডেকো।”
মুগ্ধ বেড়িয়ে গিয়ে আগুনের পাশে একটা গাছে হেলান দিয়ে বসলো। তারপর হঠাৎ তাঁবুর দিকে অনিচ্ছাকৃতভাবে তাকাতেই দেখতে পেল তিতির ওর ড্রেস খুলছে। তাঁবুটা কাপড়ের তাই ছায়াটা দেখা গেল। সাথে সাথে মুগ্ধ চোখ ফিরিয়ে নিল। এই দৃশ্যটা দেখামাত্রই কেমন যেন লাগলো ওর। বুকের ভেতর শিরশির করে উঠলো। আবার তাকাতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু তাহলে ওর আর ওই জানোয়ার গুলোর মধ্যে কোন তফাৎ থাকবে না। তাই তাকালো না।
কফি খাওয়ার পর তিতিরের উইকনেস কিছুটা কেটেছে। ড্রেস চেঞ্জ করে কিচ্ছুক্ষণ শুয়ে থাকার পর মনে হলো এই শীতের রাতে মুগ্ধ এভাবে বাইরে বসে আছে! ও কেন এটা মেনে নিল! ছেলেটা ওর জন্য কতকিছু করলো। সাথে সাথে উঠে তাঁবুর দরজার উপড়ের ছোট্ট নেটের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো। দেখলো আগুনের পাশে একটা গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে মুগ্ধ। তিতির ডাকলো,
-“এই যে শুনছেন?”
মুগ্ধ বলল,
-“হ্যা বলো। কিছু লাগবে?”
-“হ্যা, আপনাকে লাগবে।”
-“মানে?”
-“বাইরে থাকার মানে কি হলো?”
-“কেন কি হয়েছে?”
-“আপনি ভেতরে আসুন।”
-“কেন?”
-“এই শীতের মধ্যে সারারাত বাইরে বসে কাটাবেন?”
-“আরে এখানে আগুন আছে, শীত লাগছে না।”
-“না প্লিজ আপনি ভেতরে এসে শুয়ে পড়ুন। ভেতরে যথেষ্ট যায়গা আছে দুজনের জন্য।”
মুগ্ধ বলল,
-“আরে, আমিও যদি ভেতরে থাকি তো আমাদের পাহাড়া দেবে কে?”
-“আপনি বলেছেন ডাকাতরা আর আসবেনা।”
-“হুম, কিন্তু বন্যপ্রাণীরা আসতে পারে।”
-“আপনিই বলেছিলেন আগুন জ্বালালে ওরা আসবে না। প্লিজ আসুন না। আপনি সারারাত এভাবে বাইরে বসে থাকলে আমার ঘুম আসবে না।”
মুগ্ধ অগত্যা তাঁবুর ভেতরে ঢুকলো। তারপর ব্যাগ খুলে একটা টি-শার্ট আর একটা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট বের করল। তারপর হুট করে নিজের জ্যাকেট, শার্ট খুলে টি-শার্ট টা পড়লো। এই এতটুকু সময়ের মধ্যেই মুগ্ধর লোমশ বুকটা দেখতে মিস করেনি তিতির। বেহায়ার মত তাকিয়ে ছিল, মুগ্ধ খেয়াল করেছে কিনা কে জানে! সে যাই হোক, ছেলেদেরকে খালি গায়ে কতই তো দেখেছে ও। কিন্তু এরকম তো লাগেনি কখনো। এখন যে আবারও দেখতে ইচ্ছে করছে!
তিতির এসব ভাবতে ভাবতেই মুগ্ধ বলল,
-“বাইরে থাকবো বলে চেঞ্জ করিনি। ভ ভিতরেই যদি থাকি তাহলে চেঞ্জ করা উচিৎ। তুমি থাকো, আমি বাইরে থেকে চেঞ্জ করে আসি।”
মুগ্ধ চেঞ্জ করে আসলো এবং দুজনে দুইপ্রান্তে শুয়েও পড়লো। হঠাৎ তিতিরের ঘুম ভেঙে গেল। মুগ্ধকে ডাকলো,
-“এইযে, এই..
মুগ্ধ চোখ মেলে তাকাতেই তিতির বলল,
-“আপনি জেগে ছিলেন?”
-“না, কেন?”
-“একবার ডাকতেই উঠে গেলেন!”
-“ওহ, আমার ঘুম খুব পাতলা। বল কি বলবে।”
-“ইয়ে মানে একটু প্রব্লেমে পড়েছি।”
-“কি?”
-“আসলে আমি..
তিতিরের আমতা আমতা করা দেখে মুগ্ধ বুঝে নিল। বলল,
-“বাথরুম পেয়েছে?”
তিতির লজ্জায় মরে যাচ্ছিল। মুগ্ধ বলল,
-“এত লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। এটা ন্যাচারাল একটা ব্যাপার।”
তিতির চুপ করে রইল। মুগ্ধ বলল,
-“খোলা যায়গায় করতে হবে, এছাড়া কোন উপায় নেই। এখানে ঘরবাড়িই নেই, টয়লেট কোত্থেকে আসবে বলো?”
-“কিন্তু খোলা যায়গায়…!”
-“একটু প্রব্লেম হবে বাট একটা রাতই তো ম্যানেজ করে নাও। তাছাড়া তুমি আমি ছাড়া এখানে কেউ নেই।”
মুগ্ধ তাঁবুর সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। তিতির যেতে যেতে ভাবছিল, এমন পরিস্তিতিতে আল্লাহ কেন যে ফেলে। এত লজ্জা লাগছিল যে তিতিরের মনে হচ্ছিল এখনি মরে যাক, আবার চেপেও রাখতে পারছিল না।
তিতির সাহস করে অনেকটা দূরে গিয়েছিল। ফিরে আসার সময় কেন জানি অনেক ভয় লাগছিল। মনে হচ্ছিল পেছন থেকে কেউ টেনে ধরবে, তাই এক দৌড় দিল। দৌড় দিয়ে এসে মুগ্ধর সাথে ধাক্কা খেল। মুগ্ধ বলল,
-“কি হলো?”
-“কিছুনা।”
-“তুমি না কাউকে ভয় পাওনা? তুমি না ছেলেদের উপর ডিপেন্ডেন্ট না?”
-“ছেলেরা এমনই হয় না? সুযোগ বুঝে খোটা দেয়!”
-“এই না, সরি সরি। আসলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছেলেরা মেয়েদের উপর ডিপেন্ডেন্ট আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের উপর ডিপেন্ডেন্ট। এটাই সত্যি। যাকগে.. চলো ঘুমাই।”
-“না।”
-“না মানে?”
-“মানে আপনি বলেছিলেন রাতে গান শোনাবেন, এখন গান শোনাতে হবে।”
-“এখন? এই অবস্থায়?”
-“হুম! আর কোনো কথাই শুনতে চাচ্ছি না।”
-“আচ্ছা আচ্ছা দাড়াও আমি জ্যাকেট টা নিয়ে আসি, শীত করছে।”
-“আপনি দাঁড়ান, আমি এনে দিচ্ছি।”
-“কেন? আমি পারবো তো।”
-“আমিও পারবো তো!”
তিতির দৌড়ে গিয়ে জ্যাকেট টা নিয়ে এল। সেটা গায়ে দিয়ে মুগ্ধ গাছে হেলান দিয়ে বসলো। তিতির আগুনের পাশে ওর মুখোমুখি বসলো। তারপর মুগ্ধ একবার চাঁদের দিকে তাকালো, তারপর তিতিরের দিকে তাকিয়ে গাইতে শুরু করলো..
“ও চাঁদ সামলে রাখো জোছনাকে..
সামলে রাখো জোছনাকে!
কারো নজর লাগতে পারে..
মেঘেদের উড়োচিঠি উড়েও তো আসতে পারে।
জোছনা বড়ই লাজুক মাখা,
লুকিয়ে থাকে ধরা দেয়না।
সেকি তোমার গড়া
নাকি শুধুই মায়া বোঝা যায়না
ও চাঁদ সামলে রাখো জোছনাকে।”
তিতিরের মনে হলো গানটা মুগ্ধ ওকে নিয়েই গাইছে। অজানা একটা লজ্জায় পেয়ে গেল ওকে!

To be continued…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here