#অপূর্ব প্রাপ্তি পর্ব ১৬

0
452

#অপূর্ব প্রাপ্তি পর্ব১৬

#নাফিসা নীলয়া!

নীরার ঘুম ভেঙেছে অনেক আগেই। ঘুম ভাঙার পর নীরা দেখলো সে হসপিটালে রয়েছে। মালিহা এতক্ষন এখানেই ছিলেন। কিন্তু শিহাব আর মিলা মিলে তাদেরকে জোর করে কিছু খেতে পাঠিয়ে দিয়েছে। মিলা আবার কেবিনে ঢুকে তার আপাকে দেখতে এসেছিলো। সে দেখলো নীরা উঠে বসার চেষ্টা করছে। মিলা দৌড়ে গিয়ে বোনকে ধরে বসালো।

-আমাকে হসপিটালে এনেছিস কেন?আশ্চর্য সামান্য জ্বরের জন্য হসপিটালে নিয়ে আসতে হবে?

নীরার কথা শুনে মিলা কি বলবে বুঝতে পারছে না। ওইটা সামন্য জ্বর ছিলো? জ্বরের কারনে তার আপা অচেতন হয়ে পরেছিলো। সারা শরীর পুড়ে যাচ্ছিলো আর তার আপা বলছে সামান্য জ্বর ছিলো।

-আপা ওটা মোটেও সামন্য জ্বর ছিলো না। সবাইকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে তুমি। কিভাবে পরে ছিলে নিচে।আমরা সবাই তো ভয়ই পেয়ে গেছিলাম।

বলতে বলতেই কেঁদে ফেলে মিলা। নীরা বোনের দিকে তাকিয়ে আছে। এই মেয়েটা তার অল্প কিছু হলে কেঁদে ভাসিয়ে দেয়। সে মিলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। চোখের পানি মুছে দিলো।

-এতো কাঁদিস না মিলা। তুই কাঁদলে তো আমি আরো অসুস্থ হয়ে যাবো। আমি তো এখন একদম ঠিক আছি।

নীরার কথায় মিলা তার কান্না থামায়। তখনই সাইফ আর রুমা হতদন্দ হয়ে কেবিনে ঢুকলো। রুমা কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে সাইফের অবস্থাও করুন। ওরা দুজনই ভীষণ ভয় পেয়ে গেছিলো নীরার অসুস্থতার কথা শুনে। রুমা উতলা হয়ে গেল। দৌড়ে এসে নীরাকে জোড়িয়ে ধরলো। কান্না করে বলে উঠলো।

-এ কি হাল হয়েছে তোর। একটা বার ও কেউ জানালো না। ভাগ্যিস সকালে তোকে ফোন করেছিলাম। মিলাই ফোন ধরে বললো তোর কথা। কিভাবে হলো এমন? ঠিক আছিস তুই নীরা? আমি কতো ভয় পেয়ে গেছিলাম।

রুমা ক্রমাগত কাঁদতেই থাকলো। সাইফও নীরার পাশে বসে কপালে হাত দিলো। দেখলো এখনো জ্বর আছে কিছুটা। কি হয়ে গেছে নীরার চেহারা। একদিনের জ্বরেই চেহারাটা শুকিয়ে গেছে।

-নিজের প্রতি একটু খেয়াল রাখা যায় না? কি অবস্থা করেছিস নিজের। সবসময় সবাইকে দেখে রাখিস। আর নিজের বেলাতেই যতসব অনীহা তোর। ভালো লাগে না নীরা। সবাইকে কতোটা ভয় পাইয়ে দিয়েছিস তুই।

নীরা নিজের প্রতি ওদের এতো ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হলো। সে জানে ওরা তাকে অনেক ভালোবাসে। তার জন্য সবার এতো উতলা হওয়া ভীষণ আনন্দের। তবুও সে কপট বিরক্তিভাব দেখালো।

-উফ সামন্য জ্বরই তো হয়েছে। তোরা এমন করছিস কেন? আশ্চর্য! জ্বরের কথা শুনেই দৌড়ে চলে আসতে হবে। আর মিলা কি প্রয়োজন ছিলো রুমাকে বলার।

মিলা তার আপার কথায় কিছু বলতে পারলো না৷ সে কি করে রুমাকে মিথ্যে বলবে!

-খামোখা ওকে বকছিস কেন নীরা? ও বলে কি দোষ করেছে নাকি? বরং ও না বললেই আমি ওকে বকতাম।

-তুই চুপ কর নীরা। মিলা বলে ঠিক করেছে। বরং ওর আরো আগে বলা উচিত ছিলো। যখন তোকে হসপিটালে নিয়ে আসছিলো তখনই বলা উচিত ছিলো।

সাইফ আর রুমা একের পর এক কথা বলতেই থাকলো। নীরা ওদের ধমক দিলো।

-চুপ কর তো তোরা। আমি এখন একদম ঠিক আছি। এতো উতলা হতে হবে না। মিলা এখনই বাসায় যেতে চাই আমি। আম্মা আর আব্বা কোথায়?

-আম্মা আর আব্বাকে কিছু খেতে পাঠিয়েছি। আর তোমাকে এখনই যেতে দেওয়া হবে না। এগারোটা নাগাদ তোমাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

মিলার কথা শুনে কিঞ্চিত বিরক্ত হলো নীরা। এরমধ্যে রেজাউল আর মালিহা এসে গেছেন। মালিহা নিজের মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেন। নীরাও মাকে পেয়ে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।

-আম্মাকে কি কষ্ট দিতে ভালো লাগে তোর? রাতে কেন ডাকলি না তুই আমাকে? কি হাল করেছিস নিজের আমার বুঝি এখন খুব ভালো লাগছে?

মালিহা নীরাকে জড়িয়ে ধরেই বকাঝকা করলেন। রেজাউল চুপচাপ দাড়িয়ে আছেন। ভোররাতেই যেই মেয়েকে কোলে করে নিয়ে আসলেন। এখন সেই মেয়েকেই আদর করতে পারছেন না।

-আব্বা এদিকে আসো।

রেজাউল নীরার ডাক শুনে কাছে গেলেন।

-দাদীকে তো একা রেখে এসেছো। এখন সকাল আটটা বাজে। তোমরা চলে যাও। আমি তো এখন ঠিক আছি। আম্মা আর তোমাকেও ক্লান্ত লাগছে। আমার বের হতেও একটু সময় লাগবে। সব ফর্মালিটি সেরে মিলা আর আমিই চলে যাবো। আমার কথা শুনো। এখন তোমরা বাড়িতে যাও।

রেজাউল আর মালিহা যেতে চাচ্ছিলেন না। এদিকে নীরার দাদীও প্রতিবেশীর বাসায় আছেন। শেষমেষ নীরা রুমা আর সাইফের জোড়াজুড়ি তে তাদের যেতে হলো।যাওয়ার সময় রেজাউল সাইফকে বলে গেলেন।

-সাইফ তোমরা নিয়ে যেও ওকে। আম্মা বাসায় আছেন। মালিহা ও অনেক ক্লান্ত আমি বরং ওকে নিয়ে যাই।

-মিলা আপাকে ভালোমতো নিয়ে আসবে। আর রুমা ওকে খাইয়ে দিও কিন্তু। আমরা আসি।

মালিহা আর রেজাউল ওদের সব বুঝিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে গেলেন।
মালিহা বের হওয়ার সময় দেখলেন শিহাব এখনো যায়নি। তিনি শিহাবের কাছে গেলেন।

-বাবা এখনো যাওনি? নীরা তো ঠিক আছে। ওর ঘুম ও ভেঙেছে। ওর সাথে দেখা করে বাড়িতে চলে যাও।

-আমি ঠিক আছি আন্টি চলুন আপনাদের এগিয়ে দেই।

-না তোমার কষ্ট করতে হবে না। আমরা চলে যাবো কাছেই তো আমাদের বাড়ি।

রেজাউল না বলে উঠলেন। মালিহা ও বারবার না বলছেন। কিন্তু শিহাব ওনাদের কথা শুনলো না। নিজে থেকে ওনাদের এগিয়ে দিলো। বাড়ি কাছে হওয়া স্বওেও উবার কল করে ওনাদের উঠিয়ে দিলো। তারপর আবার হসপিটালের ভেতরে চলে আসলো।

মিলা,রুমা আর সাইফ নীরার কাছে বসে আছে। নীরা এখনো খুব ক্লান্ত। এখনো হালকা জ্বর আছে তার। এই স্যালাইনটা শেষ হলেই নীরাকে নিয়ে যাওয়া যাবে।

-আচ্ছা আমরা ঢোকার সময় শিহাব ভাইকে দেখলাম। উনি এখানে কি করছেন?

সাইফ বলে উঠলো। সাইফরা আসার সময় শিহাবকে দেখেছে। কিন্তু নীরার জন্য অতিরিক্ত চিন্তায় ওদিকে ভ্রুক্ষেপ করেনি। রুমাও সাইফের কথায় তাল মেলালো।

-হ্যা তাই তো। আমি কান্নার জন্য বেশি খেয়াল করিনি উনি কি অন্য কারো জন্য এসেছেন?

-আপার জন্যই এসেছেন।

তারপর মিলা সব ঘটনা খুলে বললো ওদের। সব শুনে রুমা সাইফ আর নীরা তিনজনই ভীষণ অবাক হলো। নীরা কিছু বলতে পারলো না। মনে মনে ভাবলো। সবার সামনে শিহাব এ কি শুরু করেছে। এখন নিশ্চয়ই ওরা উল্টাপাল্টা কিছু ভাবছে। নাহ্ শিহাবের সাথে কথা বলে এসব শেষ করতেই হবে।

-শিহাব ভাই নীরার জন্য ভোর রাতে এখানে এসে পরেছে। ও মাই গড!

রুমা হতভম্ব গলায় বললো। নীরার নিজের বোনকে এখন বকতে ইচ্ছে করছে। কি দরকার ছিলো রুমা আর সাইফকে হুবহু সব ঘটনা বলার। সাইফ বলে উঠলো

-দাড়া শিহাব ভাইকে ডেকে আনি।

বলেই আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে কেবিনের বাইরে গেল। নীরা আটকানোর সুযোগও পেলো না। সাইফ বাইরে গিয়ে দেখলো শিহাব দাড়িয়ে আছে। সে শিহাবের অবস্থা দেখে অবাক হয়ে গেল।

-শিহাব ভাই স্যরি আসলে তখন নীরার চিন্তায় আপনার সাথে কথা না বলেই ঢুকে গেছিলাম৷

সাইফের কথা শুনে শিহাব হাসার চেষ্টা করলো।

-ডোন্ট বি স্যরি সাইফ। আমি বুঝতে পেরেছি পরিস্থিতি। নীরা কেমন আছে এখন?

-এখন মোটামুটি ভালোই আছে। চলুন ভেতরে।

সাইফের কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো শিহাব। সে তো এই অপেক্ষাই করছিলো। সে কখন নীরাকে দেখতে পাবে এই আশায়ই ছিলো। তাই শিহাব বিনাবাক্যে সাইফের সাথে গেল। সাইফের সাথে শিহাব ভেতরে গেলে রুমা আর নীরা চমকে উঠলো। মিলা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে দাড়িয়ে রইলো। যা অবাক হওয়ার তা সে ভোর রাতেই হয়েছে। এখন এরা অবাক হোক।
রুমা শিহাবের অবস্থা দেখে বলেই ফেললো।

-ও মাই গড! শিহাব ভাই। আপনার চোখ মুখের এই অবস্থা কেন? মনে হচ্ছে অসুস্থ নীরা হয়নি। আপনি হয়েছেন।

নীরা এখনো অবাক হয়ে তাকিয়েই আছে। রুমার কথায় শিহাবের কিছু আসলো গেল বলে মনে হলো না। সে হঠাত নীরার কাছে গেল। তারপর সবার সামনেই নীরার কপালে হাত দিলো। স্যালাইন চেক করলো। তারপর নীরার পাশেই বসে পরলো।

শিহাবের কান্ড কারখানা দেখে মিলা,সাইফ আর রুমা বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে রইলো। এদিকে নীরার মনে হচ্ছে মাটি ফাক হোক আর সে ভেতরে ঢুকে যাক। শিহাব নীরাকে দেখতে পেয়ে দিন দুনিয়া ভুলে গেল। এই চেহারা দেখার জন্য সে রাতভর ভেতরে ভেতরে মরে যাচ্ছিলো। আর এখানে আসার পরও যখন দেখতে পেলো না। তখন তো তার হৃদয় জ্বলেপুড়ে যাচ্ছিলো। এখন সে কোনোদিকে ভ্রুক্ষেপ করবে না। শিহাব বলে উঠলো।

-আসলে আমি ঘাবড়ে গেছিলাম মিলার কথা শুনে। যে সিরিয়াস কিছু হয়ে গেল কিনা। তাই এখানে আসা।

শিহাবের কথা শুনে মিলা সাইফ আর রুমার কিছু ঠিক লাগলো না। তাদের মনে সন্দেহ রয়ে গেল।

-আমি একদম ঠিক আছি। আপনি শুধু শুধু কষ্ট করতে গেলেন। আপনি এখন বাসায় যেতে পারেন।

নীরা পরিস্থিতি পাল্টাতে স্বাভাবিক ভাবে বলে উঠলো।

-আমার কষ্ট মাএ চোখে পরলো?

নীরা দেখলো ঘারত্যাড়া শিহাব সবার সামনে তার মান সম্মান ধুঁয়ে দিবে। রুমা আর মিলার মতো বিচক্ষন মেয়ে এতক্ষনে নিশ্চয়ই সন্দেহ করা শুরু করেছে। তাই সে ভাবলো যে করেই হোক ওদের কাউকে সন্দেহ করতে দেওয়া যাবে না।

-বন্ধুর জন্য তো কষ্ট হবেই তাই না? আমি ঠিক আছি শিহাব। আপনার আর দুঃশ্চিন্তা করতে হবে না।

-তোরা বন্ধু?

নীরার কথার মাঝেই রুমা ফট করে বলে উঠলো। নীরা জোরবূর্বক হাসলো।

-আরে হ্যা ওরকমই তো। তোর বিয়ের সময়ই তো ফ্রেন্ডশীপ হলো আমাদের। তিতলির সাথে ওই ইন্সিডেন্ট এর পরেই।

নীরার কথা বিশ্বাস করতে চায় না সাইফ আর রুমা। তাই সাইফ ভ্রু কুঁচকে বলে ফেললো

-কই আমাদের তো বললি না। আর শিহাব ভাই ও তো বললো না। সব কথাই তো তুই আমাদের বলিস।

নীরা এবার কি বলবে বুঝতে পারছে না। তবুও বলতে তো হবেই। এদিকে শিহাব মিটিমিটি হেসে মজা নিচ্ছে। কিছু বলছে না। নীরা শিহাবের দিকে শক্ত নজরে তাকিয়ে বললো।

-আসলে বিয়ের ঝামেলায় বলা হয়নি। আর আমাদের বন্ধুত্ব এতো গভীর ও হয়নি। এখন কি তোরা এসব নিয়েই কথা বলবি। বাড়িতে যাবো আমি এখানে আমার ভালো লাগছে না।

এরপর কেউ আর কিছু বললো না। এদিকে মিলা চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। সে পুরো বিষয়টা ধরে ফেলেছে। কিন্তু কিছু বললে নীরা তাকে ধমকাবে।তাই চুপ করে আছে।

সাইফ আর রুমা সব ফর্মালিটি সারলো। তারপর ওরা সবাই হসপিটাল থেকে বের হলো। শিহাব ওদের সবাইকে পৌছে দেওয়ার কথা বললো। তবে নীরা না করে দিলো।

-আমাদের বাড়ি কাছেই। শুধু শুধু আপনাকে কষ্ট করতে হবে না।

শিহাব আরো কিছু বলতে চাইছিলো। কিন্তু নীরার চোখমুখ শক্ত দেখে কিছু বলতে পারলো না। মিলা ও ভদ্রতার খাতিরে শিহাবকে বাসায় যাওয়ার কথা বলতে চাইছিলো কিন্তু সে ও নীরার মুখ দেখে আর কিছু বললো না। সাইফ আর রুমা ফার্মেসিতে গিয়েছিলো। ওরা এসে পরলে নীরা ওদের সাথে চলে গেল। যাওয়ার সময় সবাই শিহাবকে বিদায় জানালো। তবে নীরা আর কোনো কথাই বললো না।

তিতলি আর রেহান সকাল থেকে তাদের ভাইয়ের অপেক্ষা করছে। কিন্তু সকাল থেকে শিহাবকে পাওয়া যাচ্ছে না। অফিসে ফোন করে জানলো শিহাব অফিসেও যায়নি। জহুরা খালাও বলতে পারেননি শিহাবের কথা। সবাই দুঃশ্চিন্তা করছিলো। তখনই শিহাব বাড়িতে প্রবেশ করলো। তিতলি ভাইকে দেখে দৌড়ে কাছে গেল।

-সকাল সকাল কই চলে গেছিলি তুই? কাউকে কিছু না বলে কোথায় গিয়েছিলি? আর এই অবস্থা কেন তোর?

শিহাব তিতলিকে কি বলবে বুঝতে পারছে না। সত্যিটা কি বলে দিবে। আর যদি সে মিথ্যে বলে তাহলে ঠিক হবে না। কারন রেহান আর মিলা একইসাথে পড়ে। আলাদা ডিপার্টমেন্ট হলেও ওদের তো প্রায়ই দেখা হয়। তখন যদি মিলা রেহানকে বলে দেয়। তারচেয়ে সত্যিটা বলাই হয়তো ভালো হবে।

-ভাই কোনো সমস্যা? এইভাবে তো কখনো বাইরে যাওনি। আর তোমার চোখমুখের এই অবস্থা কেন?

রেহান চিন্তিত স্বরে বলে উঠলো। শিহাব এখনো বুঝতে পারছে না। সত্যিটা বলা ঠিক হবে কিনা। ধুর এতো চিন্তা করে কি লাভ হবে। বলে দিলেই ভালো।

-নীরা অসুস্থ হওয়ায় হসপিটালে ছিলো। নীরাকে ফোন করেছিলাম সাইফের একটা কাজের জন্য। তখনই মিলা ফোন ধরে বললো। আমি ভেবেছি সিরিয়াস কিছু তাই তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে পরেছিলাম। আর আমার রাতে ঘুম হয়নি তাই চোখমুখের এই অবস্থা।

শিহাবের এমন কথায় তিতলি আর রেহান ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবেই নিলো। তার পাশাপাশি তারা অস্থির ও হয়ে পরলো নীরা এখন ঠিক আছে কিনা বারবার জিজ্ঞেস করলো। শিহাব ওদের আশ্বস্ত করলো যে নীরা এখন সম্পূর্ণ ঠিক আছে। ভালো আছে। তবুও তিতলি বায়না ধরলো যে সে নীরাকে দেখতে যাবে। তাকে নিয়ে যেতেই হবে। ওইদিনের পর থেকে নীরার প্রতি প্রচুর ভালোবাসা জন্মেছে তার।

-আচ্ছা আমি নিয়ে যাবো তোকে। মিলা ও বলেছিলো তোকে নিয়ে যেতে।

রেহানের কথায় তিতলি উচ্ছাসে ফেটে পরলো। শিহাব ওদের দুজনকে দেখে হাসলো। তিতলি আর রেহানের উদ্দেশ্যে সে বলে উঠলো।

-আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে আসি৷ তোরা থাক।

-ভাই তুইও চল না আমাদের সাথে।

তিতলি শিহাবকে বলে উঠলো। শিহাব কি বলবে বুঝতে পারলো না।

-আগে ফ্রেশ হয়ে আসি।

-হ্যা হ্যা যা। আমি খাবার বাড়ছি। সারারাত নাকি ঘুম হয়নি তোর। এখন খেয়ে একটু ঘুমিয়েও নিবি।

তিতলি চিন্তিত স্বরে বললো। শিহাব তিতলির কথামতো তার ঘরে চলে গেল। তিতলি রেহানের সাথে গল্প করতে করতে জহুরা খালাকে সাহায্য করে খাবার সাজাতে লাগলো।

–চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here