#অন্যরকম_নেশা পর্ব ৭
#ঊর্মি_আক্তার_ঊষা
আমি : মাম এটা ঠিক যে আমাদের দুজনের বিয়ে হয়ে গেছে, কিন্তু…..
মাম আর কিছু বলতে না দিয়েই এসে আমাকে একটা চর মারলো, আর বললো….
মাম : আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করে নিলি? আমাকে বললে কি আমি তোকে বাঁধা দিতাম? তুই এইভাবে আমাদের ঠকালি?
মাম সত্যি টা না জেনেই আমাকে ভুল বুঝলো যে করেই হোক আম্মুর ভুল আমাকে ভাঙা তেই হবে, মাম এর কথা শুনে অনেক কান্না পাচ্ছে। মাম আমার সামনে দাঁড়িয়ে কান্না করছে হঠাৎ করেই তানভীর স্যার বললেন…..
তানভীর : দেখুন আপনি ভুল ভাবছেন।
আমি : প্লীজ স্যার আমাদের মা মেয়ের মধ্যে আপনি ঢুকবেন না এটা আমাদের পারিবারিক ব্যাপার।
তানভীর : দেখো এখন এই পরিবারটি শুধু তোমার একার নয় আমারও। তুমি আমার স্ত্রী তোমার প্রতি আমার কিছু দায়িত্ব কর্তব্য আছে। আমার স্ত্রী কে আমার সামনে যদি কেউ শুধু শুধু অপমান করে তাহলে সে অপমানের জবাব দেওয়া স্বামী হিসেবে আমার দায়িত্ব,
আমি : হুহ! দায়িত্ব কর্তব্য? স্যার আপনি তো এই বিয়েটা নিজের ইচ্ছায় করেননি আর আপনি এই বিয়েটা কে মন থেকে মানেনও না তাহলে দায়িত্ব কর্তব্য পালনের প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে?
তানভীর : আমি কি তোমাকে বলেছি যে আমি এই বিয়েটা মন থেকে মানিনা, আমি তো শুধু বলেছি এই বিয়েটা করার আমার কোনো ইচ্ছে ছিলনা, কিন্তু যেভাবেই হোক আমাদের বিয়েটা তো হয়েছে, এই সত্যিটা কে তো আমাদের মেনে নিতেই হবে তাইনা?
মাম : ঊর্মি কি হচ্ছে আমাকে একটু খুলে বলবি প্লীজ?
তানভীর : আমি বলছি শুনুন……
তারপর তানভীর ঊর্মির মাম কে সব কিছু খুলে বললো।
মাম : এতো কিছু ঘটে গেলো তুই আমাকে একবারও জানালি না?
আমি : সরি মাম
সুজন : ওকে সবটাই বুঝলাম কিন্তু এখন এটা বল ওনার সাথে ডিভোর্স হতে কতদিন সময় লাগবে?
তানভীর : কি বলতে চাইছেন আপনি? ঊর্মির সঙ্গে আমার কখনো ডিভোর্স হবে না আমি হতে দেবো না।
সুজন : আমি এই প্রশ্নটা ঊর্মিকে করেছি, আর আপনি কি হতে দিবেন আর কি হতে দিবেন না তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
আমি : সুজন তুমি চুপ করো।
মাম : কথা শেষ হয়ে থাকলে সবাইকে নিয়ে খেতে আয়।
আমি : আসছি মাম।
খাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আংকেল আন্টি সুজনকে নিয়ে চলে গেলো স্যার কে কোথাও দেখতে না পেয়ে ভাবলাম হয়তো চলে গেছে তাই আমিও আমার রুমে চলে এলাম। এসে দেখি স্যার আমার বেডে শুয়ে আছে…..
আমি : স্যার আপনি এখানে?
তানভীর : হ্যাঁ আমার বউ এর ঘরে আমি থাকবো না তো কে থাকবে?
শোয়া থেকে উঠে বসেই আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে আমাকে ঘুরিয়ে তার কোলে বসিয়ে দিলো তারপর আমার ঘাড়ে নাক ঘষতে লাগলো, ওনার ছোঁয়াতে আমার সারা শরীর যেন কেঁপে উঠলো, আমি ওনার থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য ছটফট করতে লাগলাম।
তানভীর : এই তুমি এতো ছটফট করছো কেন একটু শান্ত হয়ে বসো না? জানো তখন তুমি অফিস থেকে চলে আসার পর আমার কেমন যেন লাগছিল তাই তো তোমাকে ফোন করেছিলাম কিন্তু শাম্মি ফোন তুলে যখন বললো তোমার বিয়ের কথা চলছে আমি তখন নিজেকে সামলাতে পারিনি ড্রাইভ করে তোমার বাসায় চলে এসেছি। আজই আমি তোমাকে আমার বাড়ি নিয়ে যাবো। বাড়িতে আমাদের বিয়ের কথা জানে। ওরা তোমাকে খুব পছন্দ করেছে।
——————-
মাম আর শাম্মির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যাচ্ছি নতুন ঠিকানায় তানভীর নাকি আজই আমাকে সাথে করে নিয়ে যাবেন।
তানভীর গাড়ি চালাচ্ছে আর বারবার ঊর্মির দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে।
আমি : ওফ অসহ্য এই ব্যাটা এমন করে বারবার তাকায় কেন? (বিড়বিড় করে)
তানভীর : কিছু বললে?
আমি : এভাবে বসে থাকতে ভালো লাগছে না আমার।
তানভীর : তাহলে রোমান্স করতে ইচ্ছে করছে? আগে বললেই পারতে (চোখ টিপ দিয়ে)
আমি : উফ আপনিও না একটু বেশি বুঝেন! গান শুনবো গান ছাড়ুন।
♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪
একজনে চোখে ছবি আঁকে এক মনে ওই ও মন
আরেকজনে বসে বসে রঙ মাখে ওই ও মন (2x)
ও মোর সেই ছবি খান নষ্ট করে কোন জনা কোন জনা
আমার সেই ছবি খান নষ্ট করে কোন জনা কোন জনা
তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা মন জানো না
তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা
তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো ছেড়ে দেবো না (3x)
ওরে ছেড়ে দিলে সোনার গৌড় আর তো পাবো না
খ্যাপা ছেড়ে দিলে সোনার গৌড় আর তো পাবো না
না না না ছেড়ে দেবো না
তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো ছেড়ে দেবো না
♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪
গান শুনতে শুনতে একটা বড় বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামলো। গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথেই আমাকে কোলে তুলে নিলো, কিন্তু কোলে কেন নিলো বুঝতে পারছি না।
আমি : স্যার আপনি আমাকে এভাবে কোলে নিলেন কেন আমি তো হেটে যেতে পারতাম।
তানভীর : এখন তুমি একটা কথাও বলবে না। একদম চুপ করে থাকবে।
আমি চুপ করে আছি, আমাকে নিয়ে বাড়ির চৌকাঠে দাঁড়াতেই একজন লোক আর মহিলা এসে দাঁড়ালেন, লোকটা কে আমি চিনি আমার চাকরির ইন্টারভিউ উনিই নিয়েছিলেন। আমাকে বরণ করে বাড়ির ভেতর ঢুকালেন।
চলবে?……..