#অন্যরকম_নেশা পর্ব ৮

0
561

#অন্যরকম_নেশা পর্ব ৮
#ঊর্মি_আক্তার_ঊষা

শাশুড়ী আমাকে বরণ করানোর পর সোফায় নিয়ে গিয়ে বসালেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তানিশা আপু বাড়িতে ঢুকলো কিন্তু তানিশা আপু এখানে কেনো সেই কারণটাই আমি বুঝতে পারছি না। তানিশা আপু আসার পরপরই একটা মেয়ে লাগেজ নিয়ে ঢুকলো।

শাশুড়ী : কিরে মা এতোক্ষণে তোর আশা সময় হলো।

তানিশা : মামুনি সিয়াম এর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।

শাশুড়ী : আচ্ছা ঠিকাছে। কিরে রুহি তোর আসতে কোনো অসুবিধে হয় নি তো?

রুহি : না! আচ্ছা খালামণি তানভীর কোথায়? আমাকে এয়ারপোর্ট থেকে আনতে গেলো না যে?

শাশুড়ী : সে কি রে তুই জানিস না তানভীর বিয়ে করেছে।

রুহি : কিইইইইইইইই (চেচিয়ে)

(মেয়েটাকে দেখে মনে হচ্ছে খুশি হয়নি)

শাশুড়ী : তোর আবার কি হলো?

তানিশা : আরে ঊর্মি কেমন আছো?

আমি : আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপু। তুমি কেমন আছো?

তানিশা : আমিও ভালো আছি। তোমার সাথে সেদিন অফিসে দেখা হয়েছিলো তুমি হয়তো জানো না তানভীর আমার ছোট ভাই।

আমি : কিইই (অবাক হয়ে)

তানিশা : কি হয়েছে?

আমি : কিছু না আপু (হায় আল্লাহ বোনের কাছে ভাই এর বদনাম করেছিলাম)

শাশুড়ী : ঊর্মি মা তুমি যাও রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।

আমি : আচ্ছা মামুনি।

তানিশা আপু আমাকে তানভীর এর রুমে দিয়ে যায়। ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসতেই তানভীর রুমে আসে।

তানভীর : কি মহারানী শশুর বাড়ি কেমন লাগছে?

আমি : (মুচকি হেসে)

তানভীর : এই সপ্তাহে আপুর বিয়ে তাই তাড়াতাড়ি তোমাকে বাসায় নিয়ে আসলাম। বাবাই মামুনি বলেছে আপুর বিয়ের পর আমাদের বিয়ের একটা গেট টুগেদার করবে।

আমি : আপুর বিয়ে? (শুনেই মনটা কেমন যেনো করলো যেনো নিজের কাছের মানুষ দূরে সরে যাবে)

তানভীর : হুম! আর হ্যাঁ শুনো তোমাকে আর অফিসে যেতে হবে না।

আমি : কিন্তু…..

তানভীর : কোনো কিন্তু না মাম আর শাম্মির দায়িত্ব আমার। সেটা নিয়ে তোমাকে এতো ভাবতে হবে না।

আমি : তা হয় না।

তানভীর : চুপ! তোমার পরিবার মানে আমার পরিবার।

————————

আজ তানিশা আপুর বিয়ে। পার্লার থেকে মেয়েরা এসে আপুকে সাজাচ্ছে। রুহি আগেই সেজেগুজে তানভীর এর পিছে পিছে ঘুরছে উফ বিরক্ত লাগে।

আমি : আপু আসবো?

তানিশা : বলতে হবে না আয় ভিতরে।

আমি : মাশা-আল্লাহ আপু তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে বউ এর সাজে।

তানিশা : তোকেও সুন্দর লাগছে আজ।

কিছু বলতে যাবো তার আগেই চোখ গেলো আপুর গলায় থাকা চেইন আর লকেট এর দিকে।

আমি : আপু এই লকেটটা? (চোখ টলমল)

তানিশা : এটা আমার বাবাই আমাদের দুই বোনকে দিয়েছিলো সবসময় পড়ে থাকার জন্য।

আমি : এমন একটা লকেট আমারও আছে (নিজেরটা দেখিয়ে)

তানিশা : বোন তুই জানিস সেদিন তোকে আমি কত খুঁজেছি? (কান্না করে)

আমি : আমিও তোমাকে অনেক খুঁজেছি আপু (জড়িয়ে ধরে)

এর মধ্যেই রুমে তানভীর, বাবাই-মামুনি, মাম, শাম্মি, ঈশু, রুহি সবাই এসে হাজির।

তানভীর : কি হয়েছে আপু?

তানিশা : ভাই আমি আমার হারিয়ে যাওয়া বোন খুঁজে পেয়েছি (কান্না করে)

অতীত……..

সে রাতে তানিশা (শিম্মি) ঊর্মির জন্য খাবার সন্ধান করতে করতে তানভীর দের গাড়ির সামনে পড়ে জ্ঞান হারায়। তখন তারা তানিশা (শিম্মি) কে হসপিটালে নিয়ে যায়। জ্ঞান ফিরে তানিশা (শিম্মি)……

শাম্মি : আমি কোথায়?

তাহসান : শান্ত হও মা তুমি আমাদের গাড়ির সামনে পড়েছিলে আর জ্ঞান হারিয়েছিলে (তাহসান তানভীর এর বাবাই)

শিম্মি : আমার বোন কোথায়? আমার বোনের কাছে নিয়ে চলুন আংকেল (কান্না করে)

তানভীর এর বাবা শিম্মিকে সেখানে নিয়ে যায় অনেক খুঁজে কিন্তু ঊর্মিকে পায় না। তখন থেকে তানভীর এর বাবাই-মামুনি নিজের সন্তান এর তানিশাকে আগলে রাখে।

অন্যদিকে ঊর্মি বোনের কোনো খোঁজ খবর না পেয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায় বোনকে খুঁজতে। কিছুদূর যাওয়ার পর ঊর্মি পথ হারিয়ে ফেলে। বাবাই-মাম ঊর্মিকে নিজেদের কাছে রাখে।

বর্তমানে……….

তানিশা : বাবাই আমি আমার বোনকে খুঁজে পেয়েছি।

বাবাই : হুম মা।

আমি : মাম দেখো আমার আপুকে আমি ফিরে পেয়েছি আর হারাতে দেবো না আমার আপুকে।

তানিশা : হুম বোন।

মামুনি : হয়েছে বাচ্চা আর কান্না করে না হলুদের অনুষ্ঠানের জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছে তৈরি হয়ে স্টেজে চলো।

তানিশা : হুম

কিছুক্ষণ পর বরযাত্রীরা চলে এসেছে। আপু বউ সেজে বসে আছে। আমি তানভীরকে খুঁজছি হঠাৎ কেউ হাত টান দিয়ে রুমে নিয়ে গেলো, তাকিয়ে দেখি তানভীর।

আমি : কি হলো এটা?

তানভীর : কোথায় ছিলেন মহারানী আপনি?

আমি : কেনো হঠাৎ আমার খোঁজ?

তানভীর : রোমান্স করার জন্য (চোখ টিপ দিয়ে)

আমি : ধুর! (সরে যেতে নিবো তখন আবার হাত টেনে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন)

তানভীর : আজ আমার লাল পরীকে খুব সুন্দর লাগছে।

আমি : একটু দূরে যান আমার কেমন যেনো লাগছে।

তানভীর : কেমন লাগছে? (আরো কাছে এসে)

শাম্মি : আমরা কিছু দেখিনি (চোখে হাত দিয়ে)

আমি : কি হয়েছে? (তানভীর এর থেকে কিছুটা দূরে সরে)

তানভীর : কিছু বলবে শালিকা?

ঈশু : দুলাভাই সবাই আপনাদের খুঁজছে আর আপনারা তো রোমান্স করতে ব্যস্ত (শাম্মি আর ঈশু হাসতে হাসতে)

আমি : ধুর তোরাও না (বলেই নিচে চলে আসলাম)

বিদায়ের পালা চলে এসেছে। আপু আমি আর সবাই কাঁদছে। আজই আমি আমার আপুকে ফিরে পেলাম আর আজই আমার আপু অন্যের ঘরে চলে যাচ্ছে ভেবেই বুকটা ফেটে যাচ্ছে।

চলবে?…………

ফোন হাতে নেই তাই সময় মতো গল্প লিখতে পারছি না🥺

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here