#অন্যরকম_নেশা পর্ব৯
#ঊর্মি_আক্তার_ঊষা
আপুর বিয়ের এক সপ্তাহ হয়ে গেছে। আজ আমি-তানভীর আর আপু-দুলাভাই মাম এর বাড়িতে এসেছি সারাদিন থাকবো আবার সন্ধেবেলা চলে যাবো। ঈশু আর সুজনও এসেছে। ড্রইং রুমে সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছি। তানভীরকে গান গাইতে বললো। ভার্সিটি লাইফে সে নাকি মেয়েদের ক্রাশ আইকন ছিলো আর খুব ভালো গান করতো।
♪♪♪♪♪♪♪♪
oh karam khudaya hain
tujhe mujhse milaya hain
tujhpe mar ke hi toh
mujhe jeena aya hain
oh tere sang yara
khush rang bahara
jo raat dewani
nazar kar seetara
oh tere sang yara
khush rang bahara
main tera ho jaun
jo tu karde ishara
♪♪♪♪♪♪♪♪
হঠাৎ ফোনে একটা মেসেজ এলো তাকিয়ে দেখি সুজন এর মেসেজ।
সুজন : 2 min er jonno ektu chade aste parbe??? please! (sms)
আমি : তোমরা আড্ডা দাও আমি একটু আসছি।
ছাদে…….
আমি : কি ব্যাপার সুজন? তুমি আমাকে এখানে কেনো ডেকেছো?
সুজন : তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
আমি : কি কথা তাড়াতাড়ি বলো
সুজন : আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি প্লিজ তানভীরকে ডিভোর্স দিয়ে দাও আমি তোমাকে বিয়ে করবো।
আমি : তুমি এসব কি বল……
(কিছু বলার আগেই তানভীর এসে আমার হাত ধরে সেখানে থেকে সোজা গাড়িতে উঠালো। এই মুহূর্তে তার চোখ মুখ লাল বর্ন ধারণ করেছে। ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছে)
আমি : তা….তানভীর আমরা কি বাড়ি যাচ্ছি?
তানভীর : (চুপ)
তানভীর গাড়ি এতো জোড়ে চালিয়েছে যে কিছুক্ষণের মধ্যেই গাড়িটা একটা গেস্ট হাউজের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। বাড়িটা দেখতে সুন্দরই দো’তলা।
তানভীর গাড়ি দরজা খুলে আমার হাত ধরে টানতে টানতে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেলো।
কেয়ার টেকার : কি হয়েছে তানভীর বাবা?
তানভীর : চাচা আজ আমরা এখানে থাকবো।
কেয়ার টেকার : আচ্ছা বাবা।
তারপর আমার হাত ধরে উপরে নিয়ে গেলেন আর রুমের দরজা বন্ধ করে দিলেন।
আমি : ক…কি করেছেন কি?
তানভীর : খুব শখ না তোর আমাকে ছেড়ে ওই সুজন এর কাছে চলে যাওয়ার? (শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে)
আমি : প্লিজ এমনটা করবেন না। আমি এসবের জন্য তৈরি নই।
এতো বলেও শেষ রক্ষা হলো না। খাটের কোনায় বসে কান্না করছি আর উনি ঘুমাচ্ছে। কোনো রকম উঠে ওয়াশরুম গিয়ে সাওয়ার নিলাম। বিছানায় গুটিশুটি হয়ে বসে আছি আর চোখ দিয়ে অনবরত পানি গড়িয়ে পড়ছে।
তানভীর : প্লিজ ঊর্মি আমাকে মাফ করে দাও। আসলে আমার মাথা ঠিক ছিলো না। আমি কখনোই চাইনি তোমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু করতে। তোমাকে হারানোর ভয়ে এসব করেছি। আসলে তখন ওই কথা গুলো শুনে নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনি। দেখো আমাদের যদি একটা বেবি হয় তাহলে তুমি চাইলেও আর আমার থেকে দূরে যেতে পারবে না, আমাদের বেবির জন্য হলেও আমার কাছে থাকবে, আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি, তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না।
আমি : (চুপ করে চোখের পানি ফেলছি)
তানভীর : প্লীজ এভাবে কেঁদো না, তুমি কাঁদলে আমার কষ্ট হয়।
বলেই জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো আর আমিও কখন যে ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানি না। সকালে ফ্রেশ দুজনে বাসায় চলে আসি। আজ নাকি রুহি আপুর মা আসবে তাই মামুনি আমাদের একটু তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে বলেছে।
রান্না ঘরে মুখ গোমরা করে দাড়িয়ে আছি। আজ তানভীর এর খালামনি এসেছেন মানে রুহির মা। মহিলাটা দেখতে ঠিক স্টার জলসার দজ্জাল শাশুড়িদের মতো। এখানে আসা মাত্রই শুরু হয়ে গেছেন কিন্তু মামানির কাছে ঠিক পাত্তা পায় নি। আগেই বলে দিয়েছেন “ও আমার বউমা নয় আমার মেয়ে। দোষী হলেও আমার আর গুণী হলেও আমার। আমার মেয়ের সম্পর্কে অন্যকারো কাছ থেকে আমার জানতে হবে না। কিন্তু বজ্জাত মহিলা বলে কথা এতো সহজে মানবে নাকি? কিছুক্ষণের মধ্যেই মামুনি খাবারের জন্য ডাক পাঠালেন আমিও বাধ্য মেয়ের মতো তানভীর এর পাশে গিয়ে বসে পড়লাম। এ বাড়িতে আসার পর থেকে মামুনি বলেছে সবার সাথে একসঙ্গে খেতে। খানিকপর খালামনি আর রুহিও খেতে এলো। আমাকে দেখেই বলে উঠলেন……..
খালামণি : কি মেয়েরে বাবা, আরে বাড়ির বউ এর যোগ্যতা আছে নাকি এই মেয়ের? কই সবাইকে খাবার সার্ভ করবে তা না সবার আগে কব্জি ডুবিয়ে খাচ্ছে বেহায়া মেয়ে কোথাকার।
উনার কথায় খাবারটা গলায়ই আটকে গেলো। এতোটা বাজে ভাবে এর আগে কেউ বকেনি আমায়।
চলবে?………