আলো_আধারের_খেলা পর্ব_১৪

0
311

আলো_আধারের_খেলা
পর্ব_১৪
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ

জান্নাত পুরো শরীরে শাড়ি পেঁচিয়ে কিছুতেই হাঁটতে পারছে না।আবার শাড়িটা খুলতেও পারছে না।কারণ রুয়েল বিছানায় শুয়ে থেকে তার দিকেই দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে।রুয়েল কে এমন মুচকি মুচকি হাসা দেখে জান্নাত আবার হাঁটার চেষ্টা করলো।কিন্তু এক পা এগোতেই একদম ধপাস করে পড়ে গেলো সে।রুয়েল তা দেখে দৌঁড়ে চলে গেলো জান্নাতের কাছে।আর বলতে লাগলো,জান্নাত!জান্নাত!আপনি কি ব্যাথা পেলেন?কত করে বললাম শাড়িটা খুলে ফেলুন,কিছুতেই আমার কথা শুনলেন না।এই বলে রুয়েল নিজেই জান্নাতের শাড়িটা খোলার চেষ্টা করলো।

জান্নাত তখন চিৎকার করে বললো,কি করছেন?কি করছেন আপনি?আমি কোনো ব্যাথা পাই নি।এই বলে একা একাই উঠতে ধরলো।কিন্তু কিছুতেই আর উঠতে পারলো না।রুয়েল তা দেখে এক ঝটকায় জান্নাতকে কোলে তুলে নিয়ে একদম আয়নার সামনে নিয়ে গেলো।জান্নাত কিছু বলার আগেই রুয়েল এক টানে জান্নাতের শাড়িটাও খুলে ফেললো।
জান্নাত রুয়েলের এমন কান্ড দেখে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে রইলো।সে একদম হতবিম্ব হয়ে গেলো।আয়নায় চোখ পড়তেই আরো বেশি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো জান্নাত।তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো।বুকটা ধড়াস ধড়াস করে কাঁপছে জান্নাতের।চোখের অবস্থা সেই আগের মতোই আছে।তবে সে পলকহীন ভাবে রুয়েলের দিকে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ রুয়েল শাড়ির আচল টি জান্নাতের বুকের উপর রাখলো।আর শাড়িটা পড়িয়ে দিতে লাগলো জান্নাতকে।শাড়ি পড়ানো হয়ে গেলে রুয়েল জান্নাতের চুলগুলোও বেঁধে দিলো।আর কিছু লাল গোলাপ জান্নাতের খোঁপায় গুজে দিলো।খুবই অপ্রকৃতিস্থ ভাবে নিশ্বাস টানতে লাগলো রুয়েল।রুয়েলের প্রতিটা নিশ্বাস জান্নাতের ঘাড়ে এসে ধাক্কা খেতে লাগলো।হঠাৎ জান্নাতের পুরো শরীর থরথর করে কাঁপতে লাগলো।কারণ জান্নাত রুয়েলের এমন কান্ড দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে।তার মুখের ভাষা মুহুর্তের মধ্যে হারিয়ে গেছে।তার মুখ দিয়ে একটা কথাও বের হলো না।

অন্যদিকে রুয়েল তার রূপবতী জান্নাতকে দেখে আউট অফ মাইন্ড হয়ে গেলো।মনে হচ্ছে সে সাক্ষাৎ কোনো আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।আর কিছুক্ষন থাকলে সেই আগুনের শিখায় একদম পুরে ছারখার হয়ে যাবে।হঠাৎ রুয়েল এক হাত জান্নাতের খোলা কোমরে রাখলো আর অন্য হাত দিয়ে জান্নাতের একটা হাত খপ করে ধরলো।জান্নাতের আংগুলের ফাঁকে নিজের আংগুল গুজিয়ে দিয়ে শক্ত করে আঁকড়িয়ে ধরলো তাকে।আজ জান্নাতের এতো কাছে গিয়ে রুয়েলের নিজেকে আটকানো একদম দুঃসাধ্য ছিলো।তবুও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছিলো সে।এদিকে জান্নাতের বুকের হৃদযন্ত্রটা উচ্চমাত্রায় ধড়ফড় করতে লাগলো,সারাদেহে বেগতিক হারে রক্ত ছুটছিলো।দুইজন দুইজনার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।কারো মুখে কোনো কথা নেই।দুইজনের চাহনি দেখে বোঝা যাচ্ছে আজ তারা দুইজনই ভালোবাসার একদম কেন্দ্রবিন্দু তে পৌঁছতে চায়।

জান্নাত রুয়েলের এমন চাহনি দেখে লজ্জায় নিচ মুখ হলো।কিন্তু রুয়েল সবকিছু ভুলে গিয়ে শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো জান্নাতকে।জান্নাত সাথে সাথে চোখ বুজে নিলো।এদিকে রুয়েল জান্নাতকে তার আরো কাছে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
জান্নাত ভীষণ লজ্জার মধ্যে পড়ে গেলো।সে তখন রুয়েলের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো।কিন্তু রুয়েল জান্নাতকে কোথাও যেতে দিলো না।আবার এক ঝটকায় কোলে তুলে নিলো জান্নাতকে।কোলে তুলে নিতেই জান্নাতের চুলের খোপা খুলে গেলো।চুলগুলো একদম মেঝে ছুয়ে ফেললো।এদিকে মাথায় গুজে দেওয়া গোলাপগুলো সব মেঝেতে পড়ে গেলো।রুয়েল তখন জান্নাতকে নিয়ে বিছানায় রাখলো।আর মেঝে থেকে ফুলগুলো কুঁড়িয়ে আনলো।

লাল টকটকে গোলাপগুলোর ঘ্রাণ নিয়ে সেগুলো জান্নাতের সামনে ধরে বললো, আমি কি আপনাকে একটু আদর করতে পারি জান্নাত?আপনাকে গভীরভাবে ভালোবাসার ইচ্ছা হচ্ছে আজ?

জান্নাত সেই কথা শুনে লজ্জায় অন্য মুখ হলো।সে বুঝতে পারছে না কি করে নিজের মুখে হ্যাঁ বলবে?
রুয়েল তখন বললো,জান্নাত উত্তর দিন।আপনি রাজি থাকলে তবেই আপনাকে ছুঁয়ে দেখতে চাই।জান্নাত এবারও চুপ হয়ে রইলো।
রুয়েল তখন বললো, তার মানে আপনি এখনো আমাকে ভালোবাসতে পারেন নি?ওকে নো প্রবলেম।আপনাকে আমি আরো সময় দিচ্ছি।এই বলে রুয়েল কালকের মতো জান্নাতকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো।তবে তার ভিতর টা একদম দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছিলো।সে কিছুতেই আর তার মনের যন্ত্রনার কথা বললো না জান্নাতকে।সে জান্নাতকে তার বুকের সাথে পিষিয়ে নিলো।জান্নাত রুয়েলের এমন কাকুতি মিনতি দেখে আর কিছুতেই চুপ করে থাকতে পারলো না।সে নিজেও রুয়েলের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে আছে।কিন্তু কি করে সেটা রুয়েলকে বলবে?এদিকে রুয়েল চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করছে।

জান্নাত তখন বললো, আপনি কি ঘুমালেন?
–না।
–আপনাকে আমার কিছু বলার ছিলো।
–জ্বি বলুন।
–আপনি কি আমাকে মন থেকে ভালোবাসেন?
–হ্যাঁ।অবশ্যই।আপনার কি আমার ভালোবাসা নিয়ে কোনো সন্দেহ হচ্ছে?

জান্নাত তখন রুয়েলকে সরিয়ে দিয়ে নিজে উঠে বসলো।আর বললো,আপনি আমার স্বামী হন।আমার ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার যেমন আপনার আছে।তেমনি আপনার ভালোবাসা পাওয়ার অধিকারও আমার আছে।

রুয়েল সেই কথা শুনে জান্নাতকে জড়িয়ে ধরে বললো,আমি আপনাকে খুব বেশি ভালোবাসতে চাই জান্নাত।অনেক বেশি ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে রাখবো আপনাকে।কিন্তু আপনি সেটা কিছুতেই বুঝতে চাইছেন না।

জান্নাত সেই কথা শুনে বললো,এই কথাটা এর আগে আর কতজনকে বলেছেন?

রুয়েল জান্নাতের এমন প্রশ্ন শুনে বললো,কি বলছেন জান্নাত?আর কাউকে কেনো বলতে যাবো?

–তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন আমিই আপনার প্রথম ভালোবাসা?

–হ্যাঁ অবশ্যই।সারাজীবন তো টাকার পিছনে ছুটতে ছুটতেই শেষ করে দিলাম নিজেকে।জীবনের ইয়ং কাল পার করেছি বিদেশে।আর বিদেশে নিশ্চয় বসে থাকি নি।সারাদিনরাত পরিশ্রম করেই আজ এতো সম্পদের মালিক হয়েছি।প্রেম ভালোবাসা করার সময় পেলাম কোথায়?আমার জীবনে এসব প্রেম ভালোবাসা আসে নি জান্নাত।তবে দেশে থাকলে প্রেম না করলেও অনেক আগে বিয়ে টা হয়তো করতাম।

জান্নাত রুয়েলের কথা শুনে সুযোগ পেয়ে গেলো।সে তখন বললো,কেনো?তখন এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করতেন কেনো?

রুয়েল তখন বললো, দেশে থাকতে তো আর রোজকার করি নি।বসে থেকে খেয়েছি।দিন রাত আড্ডা দিয়ে বেড়িয়েছি।অনেক কিছুই করেছি জান্নাত।তখন বিয়েও করতে চেয়েছি।কারণ বাবা যে টাকা পাঠাতো সেই টাকা দিয়ে বউ কে খাওয়াতে পারতাম।
কিন্তু বিদেশ যাওয়ার পর যখন নিজে ইনকাম করা শুরু করলাম তখন বুঝলাম বাস্তবতা কি জিনিস?নিজের ইনকাম করা টাকা কিছুতেই অপব্যয় করতে পারি নি।একের পর এক চাহিদা বেড়ে গেলো আমার।জমি কিনলাম,তারপর মনে হলো এরপর বাড়ি করবো?তারপর ভাবলাম আরো কিছু সম্পদ করি।গাড়ি কিনলাম।বিয়ে যে করবো এই সময়ই আর পেলাম না।

জান্নাত তখন হাসতে হাসতে বললো,তাহলে দেশে থাকতে কি কি করেছেন বলা যাবে কি সেটা?

–বাবার হোটেলে খাওয়া ছেলেরা কি কি করে?সেসব করেছি।বাবা বিদেশ থেকে টাকা পাঠাইতো,আর আমি আর ভাই বসে বসে খেতাম।অনেক উপভোগ করেছি জীবনটা।সেসব অতীত আর সামনে আনতে চাই না।এখন আমি বর্তমানে কেমন আছি,আর কি করছি সেটা জিজ্ঞেস করুন জান্নাত।

জান্নাত সেই কথা শুনে বললো, আপনার ভাবি আমাকে কিছু গোপন কথা বলেছে।সেজন্য আপনাকে এতো জেরা করছি।

–কি গোপন কথা বলেছে?

–আমাকে বলতে নিষেধ করেছে।এজন্য বলতে পারছি না।সরি মাফ করবেন আমাকে।

রুয়েল তখন জান্নাতের হাত ধরে বললো, জান্নাত,আপনাকে আগেই বলেছি আমরা দুইজন এখন স্বামী স্ত্রী।সুতরাং আমাদের মধ্যে কোনো লুকোচুরি থাকা চলবে না।আপনি কখনোই অন্য মানুষের কথায় কান দিবেন না।কেউ কিছু বললে সবার প্রথম আমাকে জিজ্ঞেস করবেন।আমি কখনোই আপনাকে মিথ্যা কথা বলবো না।সবসময় সত্য কথা বলার চেষ্টা করবো।

জান্নাত তখন সব কথা বলে দিলো রুয়েলকে।রুয়েল জান্নাতের কথা শুনে বললো,আমি জানি না ভাবি কেনো আপনাকে এসব কথা বলেছে?তবে আমি যদি এমন সত্যি হতাম তবুও ওনার আমার বিষয় টা গোপন রাখা উচিত ছিলো।যেহেতু আমি ওনার দেবর হই।আর আমি মাত্র বিয়ে করেছে।উনি কি করে একজন নতুন বউকে তার স্বামীর অতীত বলে এভাবে তার মন টা নষ্ট করে দিলো?নিশ্চয় ভাবি চাচ্ছে না আমরা দুইজন মিলেমিশে সংসার করি?

–তাহলে কি এসব কথা মিথ্যা?

–না।মিথ্যা না।আবার পুরাটা সত্যিও না।

–মানে বুঝলাম না।

রুয়েল তখন বললো একজন ক্লাস টেনের ছেলে প্রেম ভালোবাসার কি বোঝে?আর তারা বিয়ে, বউ,সংসার এসবেরই বা বোঝে কি?এই সময় টা খুব খারাপ জান্নাত।যাকে দেখে তাকেই ভালো লেগে যায়।রুহি নামের একটা মেয়ে আমাদের বাসায় কাজ করতো।সে আমার সমবয়সী ছিলো।আমার সাথে একই স্কুলে পড়তো।মেয়েটাকে আমার ভালো লেগে যায়।বলতে গেলে খুবই পছন্দ হয়েছিলো তাকে।কিন্তু আমি এসব প্রেম ভালোবাসায় বিশ্বাস করতাম না।সেজন্য আমার মাকে বলি মা,আমি রুহিকে বিয়ে করতে চাই।মা সাথে সাথে না করে দেয়।বলে এতো অল্প বয়সে কিসের বিয়ে?আগে নিজে ইনকাম করা শেখ।
আর ভাবি তো শুনতেই পারে নি।তিনি রাগ করে রুহিকে আর কাজে রাখেন নি।পরে ভাবি ওর বাবা মার সাহায্য নিয়ে রুহিকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয়।যে মেয়েকে ভালো লাগতো তার যদি বিয়ে হয়ে যায় তার জন্য খারাপ লাগাটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার।

এদিকে জান্নাত রুয়েলের মুখে রুহির কথা শুনে কাঁদতে কাঁদতে একদম শেষ হয়ে গেলো।রুয়েল তখন জান্নাতকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বললো,আপনি কাঁদবেন না জান্নাত।প্লিজ বিশ্বাস করুন আমাকে।ওই মেয়েকে আমি কখনোই টাচ করি নি।আর ওর বাড়িতেও যাই নি।ভাবি এসব মিথ্যা কথা বলেছে।কিন্তু ভাবি এসব কথা বলে কেনো আপনার মন টা ভেংগে দিয়েছে সত্যি বুঝতে পারছি না আমি।আপনি যদি প্রমাণ চান আমি অবশ্যই কালকে এ নিয়ে কথা বলবো ভাবির সাথে।

–না,না বলতে হবে না কিছু।আমার কোনো প্রমাণ চাই না।এই বলে জান্নাত আরো জোরে জোরে কাঁদতে কাঁদতে লাগলো।

রুয়েল তখন বললো, একজন মেয়েকে ভালো লাগলে আর তাকে বিয়ে করতে চাইলেই কি ছেলেটা খারাপ হয়ে যায়?আর তখনকার বয়সটা ভাবুন। কাউকে ভালো লাগতেই পারে।কিন্তু বিশ্বাস করুন আমি খারাপ ছেলে নই।আমি শুধু রুহিকে না,আর অন্য কোনো মেয়েকেও টাচ করি নি।বিশ্বাস করুন জান্নাত।

জান্নাত তখন কাঁদতে কাঁদতে বললো,শুধু এটাই না,আপনি যে নেশা করতেন সে কথা তো একবারও বললেন না।

রুয়েল তখন বললো, আপনি বলার সুযোগ দিলে তো বলবো।সেই থেকে শুধু বাচ্চাদের মতো কেঁদে চলছেন।এবার চোখের পানিটা দয়া করে মুছুন।আপনার চোখের পানি আমি আর দেখতে পাচ্ছি না।এই বলে রুয়েল নিজেই জান্নাতের চোখের পানি মুছিয়ে দিলো।আর তাকে জড়িয়ে ধরে বললো,জান্নাত আমি এখন কোনো নেশা করি না।তবে আগে বন্ধুদের দেখাদেখি কিছুদিন করেছি।কিন্তু বিদেশ যাওয়ার পর সব নেশা ছেড়ে দিয়েছি।বিদেশে আমার ভাই সবসময় আমার সাথে সাথেই থাকতো।যখন যেখানে যাওয়ার দরকার ভাইয়া সাথে সাথেই থাকতো।তখন কি করে নেশা করবো বলুন তো?বিদেশ যাওয়ার পর সব ছেড়ে দিয়েছি। বিশ্বাস করুন।

জান্নাত রুয়েলের কথা শুনে তার কান্না থামিয়ে দিলো।আর বললো,কিন্তু এখন তো আপনি একা একা থাকেন।আপনার ভাই তো থাকে না আর।

রুয়েল সেই কথা শুনে বললো,ভাই নেই তো কি হয়েছে?ভাই এর বন্ধুবান্ধব আছে তো?আমার এক মামাতো ভাই আমার সাথে এক রুমেই থাকে।ওকে জিজ্ঞেস করে দেখুন আমি আর নেশা করি কিনা?বিশ্বাস করুন সব ছেড়ে দিয়েছি।আগে একটু একটু করতাম তো এজন্য সবাই ভাবে আমি এখনো নেশা করি?

জান্নাত তখন তার মাথায় রুয়েলের হাত রেখে বললো,সত্যি আর কোনো নেশা করেন না?

–না করি না।নেশা করা অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি।শুধু মাঝেমধ্যে একটু সিগারেট টানি।

জান্নাত সেই কথা শুনে বললো,সিগারেট খাওয়াও বাদ দিতে হবে।সব নেশা জাতীয় জিনিস খাওয়া হারাম।

–ওকে চেষ্টা করবো।অনেক দিন ধরে খাই তো,একটু সময় লাগবে।

জান্নাত তখন বললো, না,কোনো সময় দিবো না আমি।আজ থেকেই কথা দিতে হবে।

রুয়েল তখন বললো, কি ছোটো বাচ্চাদের মতো আবদার করছেন বলুন তো?বললাম তো চেষ্টা করবো।যেখানে দিনে দুই তিন প্যাকেট খেতাম সেখানে না হয় এক প্যাকেট খেলাম?

জান্নাত রুয়েলের কথা শুনে মাথায় হাত দিয়ে বললো,কি বলছেন এসব?এক দিনে দুই তিন প্যাকেট খেতেন।এই তো কিছুক্ষন আগেই বললেন অল্প একটু খান।

রুয়েল তখন বললো জান্নাত আপনি কি সারারাত আমার সাথে এভাবে ঝগড়া করবেন?কিছু কথা কালকের জন্য বাঁচিয়ে রাখুন।তা না হলে কাল আবার কি নিয়ে ঝগড়া করবেন?

জান্নাত সেই কথা শুনে বললো,কথা ঘুরাচ্ছেন কেনো আপনি?আগে কথা দিন সিগারেট আর খাবেন না।তারপর আমি আর এ নিয়ে কখনো কথা বলবো না।

রুয়েল তখন জান্নাতের হাতে হাত রেখে বললো,ঠিক আছে।কথা দিলাম।শুধু মাঝেমধ্যে একটু খাবো।

–না,না।সেটা কখনোই হবে না।একবারেই অফ করে দিতে হবে।

রুয়েল তখন বললো, আচ্ছা,ট্রাই করবো।

হঠাৎ রুয়েলের ফোনে কল বেজে উঠলো।রুয়েল তার ফোনটা হাতে নিয়ে কল কেটে দিলো।জান্নাত তা দেখে বললো,কে কল দিয়েছে?আপনি ধরলেন না কেনো?
–না মানে এমনি?
–এমনি আবার কি?দেখি কে ফোন দিয়েছে?এই বলে জান্নাত রুয়েলের হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিলো।আর চেক করতে লাগলো।

জান্নাতের চোখ একদম কপালে উঠে গেলো।এতো রাতে একজন মেয়ে রুয়েলকে কি জন্য ফোন দিয়েছে?
জান্নাত তখন চোখ বড় বড় করে রুয়েলকে জিজ্ঞেস করলো,
রাইসা কে?

#চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here