আলো_আধারের_খেলা পর্ব_১৫

0
308

আলো_আধারের_খেলা
পর্ব_১৫
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ

রুয়েল নিজেও বুঝতে পারছে না রাইসা এতো রাতে তাকে কেনো ফোন দিয়েছে।তার সাথে তো রুয়েলের একদিনও কথা হয় নি।যখন রাইসার সাথে রুয়েলের বিয়ে ঠিক হয়েছিলো তখন ঊর্মি ফোন নাম্বার টা দিয়ে বলেছিলো,এটা তোর হবু বউ এর নাম্বার।নাম্বারটা সেভ করে নিয়ে কথা বলিস।রুয়েল তখন শুধু জাস্ট নাম্বার টা সেভ করে রেখেছিলো।কিন্তু কথা হয় নি কখনো।সে তো তখন জান্নাতের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলো।এজন্য রাইসার সাথে কথা বলার একটুও ইচ্ছে করে নি তার।তখন রুয়েলের মনে প্রানে শুধু জান্নাতের বসবাস ছিলো।

এদিকে রুয়েলকে এমন বোবার মতো চুপ করে থাকা দেখে জান্নাত নিজেই আবার ফোন দিলো রাইসা কে।
রাইসা রুয়েলের কল পাওয়া মাত্র সাথে সাথে রিসিভ করে বললো,হ্যালো, আপনি কি রুয়েল বলছেন?অনেক কষ্টে আপনার ফোন নাম্বার জোগাড় করেছি।আপনি নাকি বিয়ে করেছেন?কথাটা কি সত্যি?

জান্নাত রাইসার কথা শুনে বললো,আসসালামু আলাইকুম।কে বলছেন?
রাইসা জান্নাতের কথা শুনে বললো,ওয়ালাইকুম আসসালাম।আপনি কে বলছেন?
জান্নাত তখন বললো,আপনি যাকে ফোন দিয়েছেন আমি তার স্ত্রী জান্নাত বলছি।
রাইসা জান্নাতের কথা শুনে বললো,ওহ,তাহলে ঠিক শুনেছি।রুয়েল তাহলে সত্যি সত্যি বিয়ে করেছে?
জান্নাত তখন বললো, জ্বি।তা আপনি কে হন ওনার?
রাইসা তখন বললো, কেউ না।আপনি দয়া করে আপনার হাজব্যান্ড কে একটু ফোন টা দিবেন?
–জ্বি সিওর।এই বলে জান্নাত রুয়েলের হাতে দিলো ফোনটা।

রুয়েল ফোনটা কানে ধরে যেই হ্যালো বলেছে,রাইসা এক নিঃশ্বাসে বলতে লাগলো আপনাদের ফ্যামিলির মতো খারাপ ফ্যামিলি আমি জীবনেও দেখি নি।আপনারা কি করে এই রকম একটা জঘন্য কাজ করতে পারলেন।আপনারা আমার জীবন টা একদম তছনছ করে ফেললেন।এখন আমি কি করে সমাজে মুখ দেখাবো।পুরো এলাকার লোক জানে আপনার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হইছে।অনেকে তো মনে করছে আমাদের দুইজনের বিয়ে হয়েও গেছে।সামান্য একটা কারণে আপনি সেদিন রেজিষ্ট্রির দিন রাগ করে চলে আসলেন।তারপর আর আপনারা কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করলেন না।আমরা ভেবেছি আপনারা আপনাদের পারিবারিক ঝামেলা মিটিয়ে আবার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবেন।কিন্তু আজ শুনি আপনি বিয়েও করেছেন?কি দরকার ছিলো আমার জীবন টা নিয়ে খেলার?আপনার যখন আমাকে ভালোই লাগে নি তাহলে কেনো সেদিন বিয়ে করতে গিয়েছিলেন?আপনার যে অন্য কোথাও পছন্দ আছে সেটা আপনার ফ্যামিলির লোকদের না জানিয়ে ধিন ধিন করে নাচতে নাচতে বিয়ে করতে কেনো এসেছিলেন?

রুয়েল রাইসার প্রশ্নের কি উত্তর দেবে বুঝতে পারছিলো না।কারণ সেদিন সে সত্যি খারাপ করেছে রাইসার সাথে।এভাবে বিয়ের আসর থেকে চলে আসা ঠিক হয় নি তার।কিন্তু তার যে কিছুই করার ছিলো না।তার মন প্রাণ পড়ে ছিলো জান্নাতের কাছে।তবুও ভাই ভাবির মুখের দিকে তাকিয়ে রেজিস্ট্রি করতে গিয়েছিলো।কিন্তু সেখানে গিয়ে তার ভাই এর যৌতুক নেওয়ার কথা টা শুনে সে আর কিছুতেই থাকতে পারে নি।হয় তো এটাই বিধাতার নিয়তি ছিলো।তা না হলে ঠিকঠাক হওয়া বিয়ে এভাবে কেনো ভেংগে গেলো?

রুয়েলকে চুপচাপ থাকা দেখে রাইসা বললো,কি হলো উত্তর দিন?আপনি কাজ টা কি ঠিক করেছেন?এভাবে একটা মেয়েকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবার অন্য আরেকটা মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে তুলেছেন।আমরা ইচ্ছা করলে আইনের আশ্রয় নিতে পারি।কিন্তু আপনাদের মতো নিচু মনমানসিকতার লোক নই আমরা।গুড বাই।ভালো থাকবেন।এতো রাতে ডিস্টার্ব করার জন্য দুঃখিত।নতুন জীবনের জন্য শুভ কামনা রইলো।এই বলে রাইসা কল কেটে দিলো।তবে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে সে কাঁদছে।বার বার নাক টানছিলো সে।রুয়েলকে ভীষণ ভালো লেগেছিলো রাইসার।যেদিন রুয়েলের সাথে তার রেজিষ্ট্রি হওয়ার কথা ছিলো সেদিন রাইসা ভীষণ খুশি হয়েছিলো।কিন্তু বিয়েটা ভেংগে যাওয়াই মারাত্মকভাবে ভাবে ভেংগে পড়ে সে।রাইসার বাবা মা রুয়েলের সাথে যোগাযোগ না করলেও ঊর্মি আর রুবেলকে অনেকবার রিকুয়েষ্ট করেছে।কিন্তু রুবেল কোনো উত্তর দেয় নি।কারণ তারা তখন রুয়েলের মন ভালো করার জন্য ব্যস্ত ছিলো।রুয়েল যাকে বিয়ে করলে খুশি হবে তারা সেই জান্নাতের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টায় ছিলো।যাতে করে রুয়েল তাদের ভাই আর ভাবীর যৌতুক নেওয়ার অপরাধ টা ভুলে যায়।

রুয়েল ফোনটা হাতে নিয়ে চুপচাপ থাকলো।সে একদম বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে রাইসার কথাগুলো শুনে।যে মেয়ের সাথে একদিনও তার কথা হয় নি সেই মেয়ে কিভাবে তাকে এতোগুলো কথা শুনিয়ে দিলো!আর সে বোকার মতো চুপচাপ শুনে গেলো।

জান্নাত এতোক্ষণে জিজ্ঞেস করলো রুয়েলকে।
বললো,মেয়েটি কে ছিলো?এভাবে এতোগুলো কথা শুনিয়ে কল কেটে দিলো কেনো?আর আপনি কিছু না বলে চুপচাপ ছিলেন কেনো?

রুয়েল তখন বললো,মেয়েটির নাম রাইসা।এই মেয়ের সাথে আমার বিয়ে ঠিক হইছিলো।কিন্তু শেষমেশ বিয়ে টা আর হয় নি।আপনাকে বিয়ে করায় মেয়েটা ভীষণ কষ্ট পেয়েছে।সেজন্য রাগ করে এতোগুলো কথা শুনিয়ে দিলো।

জান্নাত সেই কথা শুনে বললো,ও,এটাই সেই মেয়ে!আমিও শুনেছিলাম আপনার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হইছে।জাহান আমাকে বলেছিলো।আপনার বিয়ের কথা শুনে আমি সেদিন অনেক বেশি খুশি হয়েছিলাম।

রুয়েল তখন বললো,তাই?তাহলে রাইসার সাথে বিয়ে টা হলেই ভালো হতো?

জান্নাত রুয়েলের প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না।সে অন্য মুখ হয়ে থাকলো।

রুয়েল তখন বললো, সবাই আমাকে বিয়ে করার জন্য পাগল।যে কয় টা মেয়েকে দেখতে গিয়েছি সবগুলো মেয়েই ভীষণ ভাবে পছন্দ করেছিলো আমাকে।সবাই আমাকে স্বামী হিসেবে পেতে চেয়েছিলো।কিন্তু আমার কাউকে মনে ধরে নি,শুধু আপনি ছাড়া।আপনাকে দেখার পর কেনো জানি মনে হয়েছে আপনাকে আমি হাজার হাজার বছর ধরে চিনি।মনে হয় এর আগেও কোথায় যেনো দেখেছি আপনাকে।আপনি আমার মনের ভিতর এমন ভাবে গেঁথে ছিলেন যে আপনার চেহারা দেখারও প্রয়োজনবোধ করি নি।
আর আপনি বলছেন,আমার অন্য জায়গায় বিয়ের কথা শুনে আপনি অনেক বেশি খুশি হয়েছিলেন?

জান্নাত তখন বললো, হ্যাঁ কথা টা আপনি ঠিক বলেছেন?আমি কখনোই চাই নি আপনার সাথে আমার বিয়ে হোক।আপনার সাথে বিয়ে হবে শুনে আমি অনেক কেঁদেছি।কাঁদতে কাঁদতে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম।কিন্তু পরিবারের সবার রিকুয়েষ্ট এ রাজি হয়ে যাই।বিশেষ করে আমার আব্বু যখন আমার হাত ধরে রিকুয়েষ্ট করলো তখন আর কিছু বলতে পারি নি।

রুয়েল তখন জান্নাতের মুখ টা তার দিকে ঘুরিয়ে বললো,কিন্তু জান্নাত আপনি তো বলেছিলেন আপনি মন থেকে রাজি আছেন এই বিয়েতে।আমি তো জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনাকে।আমি যদি জানতাম আপনি রাজি ছিলেন না তাহলে কখনোই এভাবে জোর করে বিয়ে করতাম না।

জান্নাত তখন বললো, এসব কথা এখন বলে আর কি হবে?বিয়ে তো হয়েই গেছে।আমি আপনাকে কখনোই আমার জীবনে দেখতে চাই নি।কিন্তু ভাগ্যচক্রে আমি আপনার জীবনে এসে গেছি।

রুয়েল জান্নাতের কথা শুনে ভীষণ মন খারাপ করলো।সে বুঝতেই পারে নি জান্নাত তাকে অপছন্দ করে।তাকে তার বাবা মা জোর করে বিয়ে দিয়েছে।মন খারাপ করে রুয়েল বেড থেকে হঠাৎ উঠে গেলো।

জান্নাত তা দেখে বললো, আপনি কই যাচ্ছেন? শুনুন আগে পুরো কথাটা।

–না,আর কিছু শোনার নাই আমার।যা বোঝার বুঝে গেছি আমি।আসলে ভুল টা আমারই হয়েছে।আমি বুঝতেই পারি নি সবার পছন্দ এক না।আপনাকে আমার পছন্দ হয়েছে দেখে যে আপনারও আমাকে পছন্দ হবে সেটা আমার মাথাতেই ছিলো না।এই বলে রুয়েল বেলকুনির দিকে চলে গেলো।সে আজ দিয়ে বুঝতে পারছে কেনো জান্নাত সারাক্ষণ এতো কাঁদে।আর কেনোই বা তার থেকে এতো দূরে দূরে থাকে।কেনো তাকে ভালোবাসতে দেয় না।রুয়েল ভেবেছিলো জান্নাত ছোটমানুষ,সেজন্য তাকে দেখে এভাবে পালিয়ে বেড়ায়,তার কাছে আসতে চায় না।রুয়েল এজন্যই ভেবেছে যে জান্নাতকে স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা বোঝার জন্য তার সময় দেওয়া উচিত।যেদিন সে স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার পবিত্র ভালোবাসা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করবে সেদিন আপনা আপনি তার কাছে আসতে চাইবে।তাকে ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে নেবে।

বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে রুয়েল আনমনে দূরের ঐ চাঁদটার দিকে তাকিয়ে আছে।রাতের বেলা চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার হলেও চাঁদের আলোয় কি সুন্দর চারদিকে ঝলমল করছে।হালকা একটু বাতাস ও বইছে।সেজন্য রুয়েলের পুরো শরীর টা শিরশিরে উঠলো।হঠাৎ জান্নাত এসে রুয়েলের ঘাড়ের উপর তার হাত টি রেখে বললো,

এভাবে বেড থেকে চলে আসলেন কেনো?

রুয়েল কোনো উত্তর দিলো না।

জান্নাত তখন বললো,আমি মিথ্যা কথা বলতে পারি না।এজন্য সত্য টা প্রকাশ করে দিলাম।আসলেই আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই নি।আমার ফ্যামিলি আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছে।

রুয়েল সেই কথা শুনে জান্নাতের হাত দুটি সরিয়ে দিয়ে বললো,দোহাই লাগে আপনার।এই কথা টা আর বলেন না।আমার ভালো লাগছে না শুনতে।

জান্নাত তখন আবার রুয়েলের কাঁধে তার হাত রাখলো আর বললো,একশো বার বলবো,হাজারবার বলবো কথাটা।কারণ এটা একদম চরম সত্য কথা,যে আমি আপনাকে কখনোই বিয়ে করতে চাই নি।কিন্তু,

জান্নাত পুরো কথা শেষ না করতেই রুয়েল রাগ করে চলে যেতে ধরলো।জান্নাত তখন রুয়েলের হাত টেনে ধরে বললো,আপনি পুরো কথাটা না শুনেই এতো রাগ করতেছেন কেনো?আচ্ছা আপনি যদি মন খারাপ করে থাকেন তাহলে কি এই কথা টা মিথ্যা হয়ে যাবে যে,আমি আপনাক বিয়ে করতে চাই নি, সবাই মিলে জোর করে বাধ্য করেছে বিয়েটা করতে।

রুয়েল এবার জান্নাতের হাত টা ঝটকা মেরে ফেলে দিলো।সে আর বেলকুনিতেই থাকলো না।রুমে গিয়ে লাইট অফ করে শুয়ে পড়লো।জান্নাত তা দেখে বললো,এই,আপনি এটা কি করলেন?আমি এখন রুমে যাবো কি করে?কিছুই তো দেখতে পারছি না।
রুয়েল সেই কথা শুনে আবার উঠে এসে লাইট টা অন করলো।আর এক মুহুর্ত দেরী না করে তাড়াতাড়ি করে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো।জান্নাত বুঝতে পারছে অনেক বেশি অভিমান করেছে রুয়েল।কিন্তু সে কি করে তার ভালোলাগার কথা জানাবে?আর কিভাবেই বা বলবে সে নিজেও ভীষণ ভাবে তার প্রেমে পড়েছে।তাকে ছাড়া সে নিজেও আর থাকতে পারবে না।জান্নাত বুঝতে পারলো এটাই ভালোবাসা।শুধু ভালোবাসা বললে ভুল হবে,কারন রুয়েলের মতো সেও তার গভীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।

অন্যপাশ হয়ে শুয়ে আছে রুয়েল।আজ আর বললো না,জান্নাত আপনাকে কি বুকের মধ্যে নিয়ে একটু ঘুমাতে পারি?আপনাকে জড়িয়ে ধরে থাকলে আমার আত্নাটা ঠান্ডা হয়ে যায়।প্লিজ জান্নাত না করবেন না।

জান্নাত তখন নিজেই বললো,আমাকে আপনার বুকের মধ্যে আজ নিবেন না?

অপরপাশ থেকে অভিমান মাখা কন্ঠ নিয়ে রুয়েল উত্তর দিলো, না।

–কিন্তু কেনো?

–আমি জোর করে কাউকে ভালোবাসতে চাই না।

জান্নাত তখন বললো, আসলে আমি বুঝতে পারছি না কিভাবে আমার মনের কথা আপনার সাথে শেয়ার করবো?

–আর শেয়ার করতে হবে না।যা বোঝার বুঝে গেছি আমি।

–কিন্তু আপনি তো বুঝেছেন অন্যটা।আমি আসলে বলতে চাইছিলাম আমাকে জোর করে বিয়েটা,

রুয়েল সেই কথা শুনে বললো, জান্নাত আবার আপনি সেই এক কথাই বলছেন?

–না মানে,সরি।আমার ভুল হয়ে গেছে।ওই কথা আর ভুল করেও মুখ দিয়ে বের করবো না।আসল কথা হচ্ছে আমিও আপনাকে ভালোবাসি।

রুয়েল জান্নাতের মুখে ভালোবাসার কথা শুনেও কোনো রিয়্যাক্ট করলো না।

জান্নাত তখন বললো, আপনি কি কিছু শুনতে পান নি নাকি?

–কি শুনতে পাই নি?

–ওই যে বললাম, ভালোবাসি আপনাকে।

রুয়েল সেই কথা শুনে বললো,তো এখন আমি কি করতে পারি?

–মানে?আপনার কিছুই মনে হচ্ছে না?

–না।

–ওকে।না মনে হওয়ায় ভালো।এই বলে জান্নাতও চুপচাপ শুয়ে থাকলো।সে আর একটি কথাও বললো না।অন্যদিকে রুয়েলও চুপচাপ। আজ দুটি মনেই ভালোবাসা জেগে উঠেছে।কিন্তু কেউ কাউকে ঠিকভাবে বোঝাতে পারছে না কে কতটুকু কাকে ভালোবাসে?

#চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here