#The_Boss,Pat:25,26,27
Afreen ella
25
মায়া এখনো থ দাঁড়িয়ে ইলমাজের দিকে তাকিয়ে আছে তা
দেখে ইলমাজ বলতে লাগলো,,
জানি আমি অনেম হ্যান্ডসাম এভাবে না তাকালে ও চলে।।।চেয়ারে আয়েসের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বুজে বললো ইলমাজ।।
মায়া চুপচাপ ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ইলমাজ আবারও বলে উঠলো,,,
মাথা ম্যাসাজ করে দিতে বলেছি ঠিক ভাবে শুনো নি বোধ হয়।।কি তখনের মতো কানের কাছে মুখ নিয়ে বলতে হবে নাকি এমনিই আসবে?।(ইলমাজ)
ন,না তো আমি যাচ্ছিলাম কই?বাহিরে চেক করছিলাম কেউ আছে কি না।।চাপা হেসে আমতা আমতা করে জবাব দিলো মায়া।।।।😅
মাথায় ম্যাসাজ করতে বলেছি রোমাঞ্চ না যে বাহিরে কে আছে তা চেক করতেই হবে।।😒(ইলমাজ)
মায়া আলগা আলগা পায়ে ইলমাজের চেয়ারের পছনে গিয়ে দাঁড়ালো।।ইলমাজের কপালে হাত দেয়ার আগেই যেন গা ছম ছম করছে ভয়ে হাত ও কাঁপছে তার।
কাপাকাপি থামলে এবার শুরু করতে পারো।।চোখ বন্ধতেই বললো ইলমাজ।।
মায়া চমকে ইলমাজের কপালে ম্যাসাজ করতে শুরু করলো।। ইলমাজও বেশ শান্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে যেনো তা চেহারায় প্রকাশ পাচ্ছে।।।ইলমাজ চেয়ারে গা আরও ইজিলি এলিয়ে দিয়ে নড়ে বসলো।।
মায়ার হাত কাঁপলেও ইলমাজকে ছোয়ার প্রতিটি অনুভূতি কে অনুভব করছে সে।
শক্তি নেই?রাতে খেয়েছিলে তো নাকি?মাথাটা ম্যাসাজ করার জন্য সামান্য শক্তি ব্যায় করতে ও ভয় করছে তোমার, গুন্ডা দের তো বেশ ভালোই পিটুনি দাও,তখন শক্তি কোত্থেকে আসে?নাকি শুধু আমার বেলায় এমন করো?(ইলমাজ)
মায়া রাগে ফুসছে, ইলমাজের কথা শুনে আরো জোরে জোরে মাথা টিপতে শুরু করলো, ইলমাজের রাগ সব ইলমাজের মাথার উপর উরাচ্ছে।।।আর মনে মনে বলছে,,
।এতো কষ্ট করে মাথা টিপে দিচ্ছি,কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করে উল্টো অপবাদ দিচ্ছে,অকৃতজ্ঞ লোক কথাকার।।ইচ্ছা তো করছে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে আপনার মাথার বদলে আপনার গলা টিপে দিতে।।😤😤
আমাকে গালি দেয়া শেষ হলে এবার ম্যাসাজিং এর গতি টা একটু কমাতে পারো।।।(ইলমাজ)
মায়া এবার স্বাভাবিক ভাবে কপাল ম্যাসাজ করতে শুরু করলো।। মায়া অন্যমনস্ক হয়ে নিজের কাজে ব্যাস্ত আর সেই অন্যমনস্কতার সুযোগ নিলো ইলমাজ।।চোখ খুলে বার বার আড়চোখে মায়ার দিকে নাগাত তাকাচ্ছে সে।।
হঠাৎ ইলমাজের দিকে খেয়াল করতেই মায়া চমকে গেছে।।।
আল্লাহ এই লোক টা এভাবে তাকিয়ে আছে কেন?মনে মনে বলে হাল্কা গলা ঝড়লো সে।।
মায়া ইলমাজের দিকে তাকানোর পর ও ইলমাজ চোখ সরাচ্ছে না।।
মায়া আবারও গলা ঝেড়ে বললো,,,
স্যার একটু ওয়াস্রুম যাবো।।। 😑(মায়া)
সিরিয়াসলি?আর ইউ সিউর?(ইলমাজ)
জ,জ্বী স্যার।।(মায়া)
ওকে ইউ মে গো নাউ।।(ইলমাজ)
ধন্যবাদ স্যার।।(মায়া)
ধন্যবাদ দেয়ার কিছুই নেই,যেতে না দিলে আবার পরিবেশ নোংরা হয়ে যাবে।।ইলমাজ এক চোখ টিপ মেরে বললো।।।
কিইইইইইই???🤬যাবো না।। রাগে ফুসতে ফুসতে আবারও ইলমাজের মাথায় ম্যাসাজ করতে শুরু করলো।।।
ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে আর মনে মনে বলছে,,,
টেকনিক জানতে হয় ম্যান।।।আদারওয়াইজ আম ইউর বস।।।😎(ইলমাজ)
কাজ সেড়ে মায়া অফিসের বাহিরে এসে দাঁড়ালো,হাটতে হাটতে রাস্তায় এসে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছে।।ইলমাজের গাড়ি সামনে এসে থামতেই চমকে উঠলো মায়া।।
চাইলে উঠতে পারো।।ইলমাজ গ্লাস নামিয়ে গাড়ির ভিতর থেকে বললো।।।
কিন্তু স্যার,,,মায়াকে থামিয়ে আবার বলতে শুরু করলো,,,
গাড়িতে উঠতে বলেছি।।(ইলামাজ)
মায়া গাড়ি তে উঠে বসলো।। ইলমাজ ড্রাইভ করছে আর বার বার মায়ার দিকে তাকাচ্ছে।।ইলমাজের এমন চাহনিতে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে মায়া।।
ইলমাজের দিকে একবার তাকিয়ে নড়ে চড়ে বসলো সে।।
মায়া ইলমাজের দিকে আবার তাকিয়ে দেখছে ইলমাজ এখনো মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে।।
গাড়ি থামান।।(মায়া)
what?মায়ার এমন আচমকা কথায় অবাক হয়ে বললো ইলমাজ।।
বললাম গাড়ি থামাতে!!(মায়া)
পাগল হয়ে গেছো?(ইলমাজ)
না,,সুস্থ আছি আমি,আপনি গাড়ি থামান। (মায়া)
মাঝরাস্তায় গাড়ি কিভাবে থামাবো আজিব!!সমস্যা কি তোমার? !ধমকের স্বরে বললো ইলমাজ।।
আমার সমস্যা হচ্ছে আপনি আমার দিকে কন্সট্যান্টলি তাকিয়ে থাকছেন যেটা আমার একদম হজম হচ্ছে না।(মায়া)
ওহ রিয়েলি?? আমার চয়েজ ওতো খারাপ না সেটা আগেও বহুবার বলেছি।।(ইলমাজ)
তাহালে আমার দিকে সবসময় ওভাবে তাকিয়ে থাকেন কেন?(মায়া)
আসলেই জানতে জানতে চাও কেন তাকিয়ে থাকি?(ইলমাজ)
জ্বী।।( মায়া)
সিউর?কথা টা হজম করতে পারবে তো?(ইলমাজ)
হা পারবো বলেই মায়া ঢোক গিললো।।
ওকে তাহলে শুনো।।গ্রামে আমার একটা ৬০ বছরের কাকিমা ছিলো যে দেখতে একদম তোমার মতো ছিলো,আমাকে অনেক আদর করতো তাই যতবারই তোমার দিকে তাকায় আমার উনার কথা মনে পড়ে যায়।।🤣(ইলমাজ)
ইচ্ছা তো করছে এক ঘুসিতে আপনাকে আপনার ওই কাকিমার কাছে পাঠিয়ে দিতে।।😤রাগে ফুসছে আর মনে মনে বলছে মায়া।।
চলবে।।
#The_Boss
Part:26
Afreen ella
ইলমাজের দেয়া সময়ের আজ শেষ দিন।।মায়া চিন্তিত কিভাবে ইলমাজকে এই ব্যাপারে জানাবে।।জানালার পাশে বসে চিন্তা করছে ইলমাজ ঘারত্যাড়া যদি আবার উল্টো কিছু করে বসে।।।
পরেরদিন অফিস পৌছে ইলমাজকে গুড মর্নিং জানাতে তার ক্যাবিনে গেছে।।ভিতরে প্রবেশ করতে ইলমাজ ধমকের স্বরে বলতে শুরু করলো,,,
সামান্য একটা এম্পলয় হয়ে বসের ক্যাবিনে প্রবেশ করছো তাও নক না করে ওইটুকু ম্যনার টা ও শিখো নি? (ইলমাজ)
মায়া অবাক হয়ে ছল ছল চোখে তাকিয়ে আছে ইলমাজের দিকে।।
এভাবে তাকিয়ে ক দেখছো যাও আবার নক করে প্রবেশ করো।।(ইলমাজ)
ওকে স্যার।।(মায়া)
তাৎক্ষনাক মায়া সেখান থেকে বেরিয়ে দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে চোখে থাকা টলটল জল মুচে নিজেকে স্বাভাবিক করে দরজায় আবার নক করলো।।
ইলমাজ ভিতর থেকে আসার অনুমতি দিলে ভিতরে প্রবেশ করলো মায়া।।
এবার বলো কি কাজে এসেছিলে?(ইলমাজ)
আসলে স্যার মায়ের শরীর খারাপ তাই তাৎক্ষনাক বাসায় যেতে হবে আপনার অনুমতি নিতে এসেছিলাম।।(ইলমাজ)
যাও।।মায়ার দিকে না তাকিয়েই বললো ইলমাজ।।
মায়া চুপচাপ সেখান থেকে বেরিয়ে সোজা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো।।।
অফিস থেকে ফেরার পর মায়া একবারও কান্না করেনি।।শুধু ভাবছে মানুষ কতটা রহস্যময় হতে পারে,তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো মায়া।।
ছাদে বসে সিগারেটের ধোয়া উরাচ্ছে ইলমাজ,,দিহান এসে ইলমাজের পাশস বসলো।।
ভাই??ঠিক আছেন?(দিহান)
ইলমাজ আকাশের দিকে এখনো তাকিয়ে আছে।। তার মাঝে অন্যমনস্কী ভাব প্রকাশ পাচ্ছে তা নিরদ্বিধায় বুঝেছে দিহান।।
দিহান ইলমাজের কাঁধে হাত রাখলো।।আর বলতে লাগলো,,,
ভাই???(দিহান)
হুম,,দিহানের ডাকে ফিরে তাকালো ইলমাজ।।
ভাই আমি জানি আপনি কিছু একটা নিয়ে খুব ডিপ্রেস্ড,আপনাকে আমি আজ পর্যন্ত আপনাকে কখনো এতটা চিন্তিত দেখি নি,,কি হয়েছে?(দিহান)
কিছু হয় নি,,,এম্নিতেই রাতের আকাশে তারা গুনার চেষ্টা করছিলাম ভাল্লাগছিলো না তাই।।(ইলমাজ)
মন খারাপের মাঝেও আপনি ফাইজলামি করা ছাড়বেন না।আপনি যেটা বলতে ইচ্ছুক না তার জন্য আপনাকে কখনো জোর করবো না শুধু এটাই বলবো আল্লাহ আপনার সহায় হোক। ।।।
চাপা হাসলো ইলমাজ।।দিহান চলে যাওয়ার পর দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো সে।।
ইলমাজ মায়ার সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না আজকে একমাস প্রায় শুধু তাই না মায়ার দিকে একপলক তাকায় না পর্যন্ত,,আর মায়ার অবস্থা তো কুকড়ে যাচ্ছে,ইলমাজের এমন মর্মান্তিক ব্যাবহার মায়াকে খুড়িয়ে মারছে না সহ্য করতে পারছে না কাউকে বলতে পারছে।।এনির ল্যানলাইনে কল এসেছে মায়াকে ইলমাজের ক্যাবিনে পাঠানোর জন্যে।।
স্যার তোমাকে উনার ক্যাবিনে যেতে বলেছে।।(এনি)
তা শুনে মায়ার ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠেছে কোন প্রশ্ন না করে মায়া তাৎক্ষনাক ইলমাজের ক্যাবিনের বাহিরে দাঁড়িয়ে দরজায় টোকা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো।।
ইলমাজ মায়াকে দেখে হাল্কা গলা ঝেড়ে বললো,,
কিছু প্রয়োজনীয় কথা ছিলো (ইলমাজ)
জ্বী স্যার বলুন।।(মায়া)
এটা চেক করো।।মায়ার দিকে একটা ফাইল ছুড়ে দিলো ইলমাজ।।
মায়া চেক করেই যেন আতংকিত হয়ে গেলো।। জিজ্ঞাসু আর করুন দৃষ্টিতে ইলমাজের দিকে তাকালো মায়া।।।
আপনার রেজিগনেশন লেটার টা এক্সেপ্ট করা হলো নিচে হস্তাক্ষর করুন আর এবার আপনি অফিস ছেড়ে যেতে পারেন।।।
মায়ার চোখ থেকে গড়গড়িয়ে জল পড়তে শুরু করলো আর ইলমাজ মায়ার দিকে না তাকিয়েই এতক্ষন কথা গুলো বলছিলো তাই হয়তো সে মায়া তার অধর নয়নের কান্না আড়াল করলো
চলবে।।
#The_Boss
Part:27
Afreen Ella
পেপারে সাইন করে মায়া ব্যাগ নিয়ে সোজা ইলমাজের ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।।ইলমাজ দরজার দিকে একবার তাকিয়ে আবার নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।।
মায়া কাঁদছে না শুধু গুমরে আছে, নিজেও কিছু বুঝতে পারছে না আসলে হলো টা কি??
বাসায় গিয়ে শাওয়ার নিয়ে বিছানায় শুতেই ইলমাজের দেয়া উপহার টির দিকে চোখ গেলো, আবার উঠে তা হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলতে গিয়েও ফেলতে পারলো না।।কাপার্ডের এককোনে দুমড়ে রেখে ধরাম করে আলমারির দরজা লাগিয়ে ফুপাতে শুরু করলো।।
আজ প্রায় সপ্তাহ পেরিয়েছে মায়া ঘর থেকে বের হয় নি।।।
কিরে এভাবে বসে আছিস কেন?চাকরি তো ছেড়েছিস ভালো কথা কিন্তু এভাবে বসে থাকলে কি হবে?গ্রামের বাড়ি চলে যাবি?(মায়ার মা)
হুম,,সব ঠিকঠাক করে নাও মা,এই ব্যাস্ত শহরে নিজের গন্তব্যে পৌছানোর পিছনে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।।হাফ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো মায়া।।
আচ্ছা,দেখি সপ্তাহ ক্ষানিকের মধ্যে কিছু একটার ব্যাবস্থা করতে পারি কি না।(মায়ার মা)
মা,আমি একটু বাহিরের বাতাস উপভোগ করে আসি,আজকে বহুদিন কোথাও বের হইনি।।(মায়া)
আচ্ছা,,,(মায়ার মা)
মায়া রাস্তার একপাশে একা একা হাটছে,রাতের আকাশে হাল্কা মেঘ আর শীতল বাতাস,ল্যাম্পোষ্টের আবছা আলো যেনো মায়ার অনুভূতি গুলো কে আরও আবেগপ্রবণ করে দিচ্ছে।।মুখে দুহাত দিয়ে ফুকছে মায়া চলতে চলতে প্রায় দূরে কুয়াশার আড়ালে হারিয়ে গেছে সে।।
হেই,,,মিস,,পিছন থেকে কারও ডাকে ফিরে তাকালো মায়া।।
হেই এতো রাতে কোথায় যাচ্ছেন একা একা?
দিহান আপনি?এখানে?(মায়া)
আরেহ ইয়ার আমি তো ছেলে যে কোন সময় আসতেই পারি।।কিন্তু আপনি?(দিহান)
আম,না,মানে আসলে আ,,ভাল্লাগছিলো না তাই একটু হাটতে এসেছি,তো আপনার কি অবস্থা?চাপা হেসে বললো মায়া।।
আলহামদুলিল্লাহ ,, আপনি?(দিহান)
হুম খুব ভালো, দুজন হাটতে হাটতে সামনের দিকে এগিয়ে গেলো।।
চলুন কোথাও গিয়ে বসি?(দিহান)
আম,না মানে আমার বাসায় ফিরতে হবে।।(মায়া)
এতো জলদি কিসের?(দিহান)
না মানে একটু প্যাকিং করতে হবে তাই।।(মায়া)
কিসের প্যাকিং?কোথায় যাচ্ছেন?(দিহান)
আসলে গ্রামের বাড়িতে এক্কেবারে শিফট হয়ে যাচ্ছি তাই সব গুছাতে একটু সময়ের প্রয়োজন।। (মায়া)
ওহ,কখন যাচ্ছেন?আকষ্মিক চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো দিহান।।
এইতো এক সপ্তাহ তো লাগবে।।(মায়া)
ওহ।।।আম গন্না মিস ইউ,,হ্যাভ এ নাইস লাইফ।।🙂(দিহান)
আমিও🙂ধন্যবাদ এবার আসি দেরি হয়ে যাচ্ছে খুব,,মা বকবে।।(মায়া)
ওকে,আচ্ছা আমার গাড়ি আছে চলুন আপনাকে পৌছে দিয়ে আসি।।(দিহান)
না, না থাক,আমার হাটতেই বেশ ভালো লাগছে।।(মায়া)
আহ,ওকে,,আল্লাহ হাফেজ।।(দিহান)
আল্লাহ হাফেজ,ভালো থাকবেন।।(মায়া)
দুজনই চাপা হাসলো,, মায়া আবার ইউ টার্নে বাড়ির রাস্তা ধরে হাটতে শুরু করলো।।
সকাল সকাল কে কল করেছে আবার?ঘুম ঘুম চোখে ফোনের দিকে তাকালো মায়া।।আননোন নাম্বার।।
হ্যালো,আসসালামু আলাইকুম, কে?(মায়া)
ওয়ালাইকুম আসসালাম।।আমি দিহান বলছি।।ফোনের ওপাশ থেকে।।
আরেহ আপনি এত সকাল সকাল কিভাবে?(মায়া)
আসলে আপনি তো সপ্তাখানেক বাদে এখান থেকে চলে যাবেন তাই ভাবছি আপনার সাথে কাল রাতে একটা ডিনার হয়ে যাক।।(দিহান)
আসলে না,আমি,,,,মায়াকে থামিয়ে ফোনের ওপাশ থেকে দিহান আবার বলতে লাগলো
নো এক্সকিউজেস।।।প্লিজ না করবেন না,ছোট্ট একটা রিকুয়েষ্ট মাত্র।।(দিহান)
মায়া ভাবছে যার জন্য না করছে সেই তো অবেলার অভিলাষ,তাই আর না করলো না আবার বলতে লাগলো
আচ্ছা,ক’টায় আর কোথায় আসবো ?(মায়া)
এইতো ৭ঃ৩০ এর দিকে,আর কাল যে জায়গায় হাটছিলাম ওখানেই আসবো আপনাকে পিক করতে।।(দিহান)
আচ্ছা,চাপা হাসলো মায়া।
দিনটা বেশ নিরামিষ সময়ের সাথে কেটেছে মায়ার।।
গাড়ি নিয়ে মায়া আসার অপেক্ষা করছে দিহান,,প্রায় আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর তার অপেক্ষার আবাসন ঘটেছে,ইতিমধ্যে মায়া হাজির হলো।।
দিহান গাড়ি থেকে বেরিয়ে দরজা খুলে দিয়েছে মায়া প্রবেশ করার জন্যে।।দিহান ড্রাইভ করছে,মায়ার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,,
এই ক্রীম কালারে আপনাকে মন্দ লাগছে না মুচকি হেসে বললো দিহান।।
মায়াও মুচকি হাসলো।।
একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে গাড়ি থামালো দিহান।যেই মায়া গাড়ি থেকে নামতে যাবে দেখলো ইলমাজ একটা মেয়ের সাথে হোটেল থেকে বেশ হেলে দুলে বেরিয়ে তার গাড়িতে উঠছে।।
মায়ার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে,মায়া তাকিয়েই শুধু জল ঝরাচ্ছে।।
হেই মিস নামছেন না যে?(দিহান)
মায়া পানি মুছে দিহান কে বলতে লাগলো,,,
ওই যে ব্ল্যাক এ্যাশ কার টা দেখছেন ওটার পিছু নিন।।তারাতাড়ি।। (মায়া)
কিন্তু কেন?কে ওখানে?আতংকিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো দিহান।।
পরে বলছি আগে যান প্লিজ,জলদি।।(মায়া)
দিহান বেশ অবাকাতর হয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ইলমাজের গাড়ির পিছু যেতে শুরু করলো।।
মায়া ফুঁপাচ্ছে আর ঢোক গিলছে।।ইলমাজের পিছু নিতে নিতে, ইলমাজের কার একটা বিল্ডিংয়ের সামনে গিয়ে থামলো।।। দিহান ও ইলমাজের গাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তার গাড়ি থামালো।।।
গাড়ি পার্কিংয়ে রেখে ইলামাজ আর তার সাথে থাকা মেয়েটা সোজা এলিভেটরে উঠে গেলো।
দিহান বলতে লাগলো,,
আরেহ এটা তো ভাই,এখানে কি করছে?আশ্চর্য হয়ে বললো সে৷।
তাই দেখতে এসেছি,চলুন আমার সাথে। মায়া তড়িঘড়ি গাড়ি থেকে বেরিয়ে লিফটের সামনে গিয়ে,এলিভেটর এর মিটারের দিকে লক্ষ্য করলো তা কয় ত’লায় গিয়ে থামবে।।১১ ত’লায় গিয়ে থেমেছে।।মায়া দরজা ওপেন করে ১১ ত’লায় বাটন ক্লিক করার আগে দিহানও জলদি এসে লিফটে প্রবেশ করলো।।
১১ তলায় লিফট থামতেই দেখলো চারদিকে চারটি এপার্টমেন্ট।।রাগে ফুসতে ফুসতে মায়া বলতে লাগলো,
এখন কোনটাতে খুজবো?কোথায় গায়েব হয়ে গেছে অমানুষ টা।।😡(মায়া)
হচ্ছে টা কি দয়া করে একটু বলবেন আমায়?।(দিহান)
ইলমাজকে খুজছি,চলুন সব এপার্টমেন্টের দরজা নক করে দেখি।।(মায়া)
আরেহ আরেহ এটা কিভাবে সম্ভব, এটা ভদ্রতার সপক্ষে পড়ে না,দাঁড়ান দেখছি কি করা যায়,(দিহান)
মায়া সিড়িতে বসে মাতার চুল টানছে,দিহান এদিক ওদিক তাকাতেই দেখলো একজন ডেলিভারি বয় লিফট থেকে কিছু খাবারের প্যাকেট নিয়ে বের হলো আর দিহান তা লক্ষ্য করে মায়াকে ডাকলো।।মায়াও আতংকে উঠে দাঁড়ালো।দিহান মায়ার পাশে গিয়ে বলতে লাগলো আপনি দাঁড়ান আমি দেখি এগুলো কোন এপার্টমেন্টে দেয়।।
সিড়ির পাশের টাতে ডোরবেল বাজালো লোক টি।।দরজা আর কেউ না ইলমাজ ই খুললো।।মায়া তা দেখে প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাবার অবস্থা।।লোক টি চলে যাবার পর মায়া আবারও ডোরবেল বাজালো, ইলমাজ দরজা খুলে চমকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,
তুমি এখানে?(ইলমাজ)
মায়া কিছু না বলে ইলমাজের বুকে হাত দিয়ে ধাক্কাতে ধাক্কাতে আর ভিতরে প্রবেশ করতে করতে বললো,,,,
ছি,এতটা জঘন্য আপনি?লজ্জা করে না আপনার?চেচিয়ে বললো মায়া।।
ইলমাজ ভ্রু কুচকে কিছু বলতে যাবে এমন সময় মায়া আবার বলতে লাগলো,,
চুপ একদম,,একটা শব্দ উচ্চারণ করবি না,তুই কি ভেবেছিস তোর যা ইচ্ছা তা করতে পারবি তুই?অন্য মেয়ের সাথে আগে থেকেই যেহেতু চক্কর তোর তবে কি দরকার ছিলো আমাকে তোর লাইফের অংশ বানানোর?মায়া কাঁদছে আর রাগে ফেটে যাচ্ছে।।
আমি তোমাকে আবার কখন আমার লাইফের অংশ বানিয়েছি?সাংঘাতিক অসহায়ের মতো চেহারা বানিয়েছে ইলমাজ।।
এতো নিষ্পাপ বনছিস কেন?যদি তাই হয় তবে কেন ওই শো পিসে সেনি সেভিয়ারাম মায়া খোদায় করে তা আমাকে দিয়েছিলি?মায়া চেঁচিয়েই যাচ্ছে।।
ইলমাজ রহস্যজনক ভাবে তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে।।
তোর লাইফে আগে থেকেই অন্য কেউ ছিলো যেহেতু তো আমাকে ভালবাসিস কেন বলেছিলি?মায়া ইলমাজের বুকে ধাক্কাতেই আছে,,
ইলমাজ বাকা হেসে মায়ার দুহাতের কবজি ধরে বুকে টেনে তার ঠোঁট মায়ার ঠোঁটে চেপে ধরলো।।। 🙏
চলবে।।।
সরি🙈🙈