বিষন্ন_রাত💖,০৭,০৮

0
366

#বিষন্ন_রাত💖,০৭,০৮
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ💖
#পর্বঃ__৭

ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে নিলো দুজন। রাত জামা কাপর গুলো ব্যগে নিচ্ছে একে একে। পাশ থেকে বৃষ্টি বলে উঠে,
– জামা কাপর ঘুচিয়ে কোথায় যাচ্ছো?
– কেনো বাড়ি যেতে হবেনা?
– একটা অনুরুধ করি?
– কী?
– গত কাল থেকে এখন পর্যন্ত সময়টা আমার জীবনের বেষ্ট সময় ছিলো তুমি পাশে ছিলে বলে। আর বাসা থেকে দুদিনের কথা বলে বেড়িয়েছি। এখনো একদিন বাকি। চলে গেলেই তো সব আগের মতো হয়ে যাবে। আজকের দিনটাও আমি তোমার সাথে কাটাতে চাই। না করোনা প্লিজ,,,,

অবশেষে বৃষ্টি করুন আবদারের কাছে হেরে গেলো রাতের চিন্তাধারা।
রাত বাইরে গিয়ে কিছু জামা কাপর কিনে আনলো বৃষ্টির জন্য।
রাত বৃষ্টিকে নিয়ে পার করে দিলো আরো একদিন। যতই রাতের কাছে থাকছো ততোই লোভের পাল্লা ভারি হচ্ছে বৃষ্টির। এটা লোভ নয় এক প্রকার নেশা। রাতের সাথে থাকার নেশা।
রাতের কাছেও এই দু,দিনের জন্য মনে হয়নি বৃষ্টি তার অন্যকেও। মনে হয়েছিলো খুবই কাছের কেও বৃষ্টি।
বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছে তারা। বৃষ্টির মুখ জুরে অভিমানের ছাপ। কেনো রাত তাকে বাড়ি দিয়ে আসছে? আরেক দিনের জন্য নিজের পাশে রাখলে কি হয়? রাত কেনো বুঝেনা? কেনো তার কাছে থাকার জন্য নানান অজুহাত খুজি বুঝেনা সে? তার কাছে থাকলে আমার পুরু পৃথিবিটাই আপন লাগে তা কি বুঝেনা?
চলে যাচ্ছে তারা, সারা রাস্তা চুপটি মেরে বসে আছে বৃষ্টি।
পাশ থেকে রাত বলে উঠে,
– মন খারাপ?
– উহু।
– তাহলে চুপ করে আছো যে?
– এমনি ভালো লাগছেনা।
– ভালো না লাগার কারণটা কি আমি?
– নাহ্
– তাহলে?
– কিছুনা এমনি।
আর কিছু বললো না রাত। বৃষ্টির নিরবতার ভাষা টা কিছুটা বুঝতে পারছে সে।

বাসায় পৌছে গেলো তারা। বৃষ্টিকে নামিয়ে দিয়ে বিদায় দিলো রাত। বৃষ্টি কিছুক্ষন স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো রাতের দিকে। কিছুক্ষন নিরবতায় কাটলো তাদের মাঝে। মনে হচ্ছে মুখে নয় চোখে চোখে কথা হচ্ছে তাদের।
তার পর বিদায় নিয়ে ভিতরে চলে গেলো বৃষ্টি। রাতও বিদায় দিয়ে রওনা দিলো বাড়ির উদ্দেশ্যে। কেমন একটা শুন্যতা অনুভব করছে রাতের। মনে হচ্ছে খুব কাছের কিছু একটার মাঝে আবার দুরুত্ব বেড়ে গেলো।

বাসায় প্রবেশ করতেই সোফায় গা এলিয়ে দিলো রাত। রুদ্র চৌধুরি তখন অফিসে। পলি চৌধুরির চেচামেচি কানে আসছে রাতের। মনে হয় রাতকে নিয়ে খেপেছে সে। কিন্তু আসতে না আসতে কি এমন করে ফেললো যার জন্য পলি চৌধুরি এমন চিৎকার চেচামেচি শুরু করে দিলো?
পলি এগিয়ে এসে দুটু সিগারেটের পেকেট ছুরে দিলো রাতের সামনে।
– এ কেমন অসভ্যতা রাত? এতো দিন জানতাম বাইরে নেশা করতে। এখন দেখি ঘরের মাঝেও এসব হাবিজাবি। সাহস দিন দিন আকাশ ছুয়ে যাচ্ছে তোমার। কয়দিন পরতো আমাদের সামনে বসেই এসব শুরু করবে।
পলির কথা শুনেও চুপচাপ বসে আছে রাত। সব সময় তর্ক করার মুড থাকেনা মানুষের। ব্যাগ নিয়ে চুপ চাপ নিজের রুমে চলে গেলো সে।
পলি চৌধুরির মুখে এর চাইতেও বেশি কথা শুনতো। যখন সে আরো ছোট ছিলো। কিন্তু এখন তো সে বড় হয়েছে। ভালো মন্দ বুঝার বয়স হয়েছে তার। তাও পলির এমন আচরণ। এটা নিয়ে মাঝে মাঝে অবাক হয় রাত। মাঝে মাঝে এসব কথার প্রতিবাদ করে উঠলেও সেটা তর্ক হয়ে যায়। আর সেই তর্ককে ন্যাশেনাল নিউজ বানিয়ে পরিবেশন করে তার বাবার কাছে।
মাঝে মাঝে রাতের ইচ্ছে হয় এসব ঝামেলা ছেরে অনেক দুরে চলে যেতে। যেখানে এসব কিছুই থাকবেনা।

রাতে চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে পলি চৌধুরি। পাশ থেকে কাজের মেয়েটা বলে উঠে,
– খালাম্মা, ভাইজান মাত্র বাসায় আসছে। এসব কথা তো পরেও কইতে পারতেন তাইনা? আর ভাইজান এখন বড় হয়েছে তার সাথে এভাবে আচর করাটা উচিৎ না।
পলি রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শিওলির দিকে।
– তোর কাছ থেকে এখন সব শিখতে হবে আমার? ওকে কখন থেকে এসব নিয়ে পড়াবি বল? কাজের সাথে এক্সট্রা টিওশনির মাইনেও পাবি।
– না খালাম্মা আমি অইডা কই নাই। আর এইডা কইতে পারি আপনের শিক্ষা ধিক্ষা কিছুটা থাকলেও জেনারেল নলেজের অভাব আছে আপনার।
– তোর তো দেখি খুব সাহস বেরে গেছেরে শিওলি। আমার মুখে মুখে কথা বলছিস, তাও আবার জ্ঞান নিয়ে। তোর আর এই বাসায় কাজ করতে হবেনা। কাল থেকে তোর আর আসতে হবেনা।
– আমিও আর আপনের কাজ করতে চাইনা। সারাদিন কুত্তার মতো আচরণ করেন আমার লগে। যদিও আমরা কাজ করে নিজের পেট চালাই, কিন্তু আমাগোও একটা সম্মান আছে। কারণ আমরাও মানুষ। হয়তো আপনাগো মতন এতো বিশাল অট্টালিকা নাই। কিন্তু আমরা মানুষদের সম্মান করতে জানি। আমরা কাম করে খাই, ভিক্ষা করে খাইনা। আর কারো কর্মকে ছোট করে দেখবেন না।
– তোদের মতো মেয়েদের দু,দিন কাজে রাখলেই শরিলে পাখা গজিয়ে যায়। কাজ করতে না চাইলে এখনো দাড়িয়ে আছিস কেনো। যা বের হ, গেট আউট ফ্রম মাই হাউজ।
– চলে জামু আমি। থাকতে আসিনাই এইখানে। মাসের অর্ধেকের চেয়ে বেশি চলে গেছে, আমার কামের টাকাটা দেন আমি চলে যাচ্ছি।
– এক টাকাও তুই পাবিনা। আমার সাথে তর্ক করার সাহস হয় কি করে তোর? যে বের হ এখান থেকে।

উপর থেকে সব কিছু দেখে যাচ্ছে রাত। সোজা বাবার রুমে গিয়ে আলমারি থেকে কিছু টাকা নিয়ে এসে শিউলির দিকে বাড়িয়ে দেয় রাত।
– এই নাও এখানে পুরু এক মাসের টাকা আছে। আর শুনো যে তোমার কাজকে সম্মান করতে জানেনা, তাকেও তোমার সম্মান করার দরকার নেই। যে তোমার সাথে কুকুরের মতো আচরণ করবে তাকে তুমিও ঘোরার মতো পিছ পা দিয়ে লাত্তি দিবে অন্য কোথাও কাজ খুজে নিবে। এতেই তোমার সম্মানটা বেচে থাকবে।
শিউলি টাকা নিয়ে চলে গেলো আর পলি অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে রাতের দিেকে। সেদিকে কোনো পাত্তা না দিয়ে সেখান থেকে প্রস্থান করলো রাত।

বিকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এখন গেম খেলছে রিদ। পাশে এসে দাড়ায় বৃষ্টি।
– এই রিদ ধর আমার বিকাশ নাম্বারে পাঁচ হাজার টাকা পাঠিয়ে আয় তো।
– এতো টাকা বিকাশ করে কি করবি তুই?
– মাঝে মাঝে ফোনে রিচার্জ দিতে হয়। এতো কথা কলিস না তো যা রিচার্জ দিয়ে আয় আর এই একশ টাকায় তুই কিছু খেয়ে নিস।
– যা তো আপু বিরক্ত করিস না। দেখছিস না গেম খেলছি। পরে দিবো।
– এখন যা তুই। আর গেম খেলতে হবে না। দেখি ফোনটা আমাকে দে।

বিরক্তি মনে বেড়িয়ে পরলো রিদ। সন্ধা অব্দি বসে আছে বৃষ্টি, ফোনে টাকা আশার কোনো নাম গন্ধও নেই। বৃষ্টি অপেক্ষায় আছে রাতের সাথে খথা বলতে। ফোনেও ব্যলেন্স নাই। এদিকে রিদেরও কোনো খোজ নেই।
সন্ধার পর বাড়ি এলো রিদ। বৃষ্টি এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– কিরে কোথায় ছিলি এতোক্ষন?
– ওইতো আমার বন্ধু সামি আছেনা। ওর সাথে ছিলাম।
– তো ফোনে টাকা আসেনি কেনো?
– কিসের টাকা?
– তোকে যে বললাম বিকাশ রিচার্জ দিতে সেই টাকা।
– কখন বললি? একটু আগে তো তুই বললি, এই নে ধর তোর নাকি টাকা লাগবে এগুলো রাখ।
– কিহ্, তুই ফোনে টাকা দিস নি?
– তুই আমায় টাকা দিলি হাত খরচের জন্য, আর সেগুলো আমি তোর ফোনে ভরে দিবো। মগের মুল্লুক নাকি?
– ফোনে পাঠাতে হবেনা তুই আমার টাকা দে আগে।
– নেই।
– নেই মানে?
– নেই মানে নেই, আমাদের স্কুলের মাঠে একটা ফুটবল টুর্নামেন্ট হচ্ছে। সেখানে ৪ হাজার দিয়ে একটা টিম দিয়ে এসেছি। আর সামির সাথে একটু ঘুরাফিরা করলাম খেলাম এই আরকি। পাঁচশ টাকার মতো আছে এখন। সেগুলো নিবি? আচ্ছা বাদ দে এই পাঁচশ নিয়েও আর কি করবি, এগুলো না হয় আমার কাছেই থাক।
বলেই নাচতে নাচতে উপরে চলে গেলো রিদ। বৃষ্টি রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রিদের দিকে। জেনে শুনে শিয়ালের কাছে মুর্গি জমা রাখলো আজ।
,
,
রাত তখন গভির,
ঘুম নেই বৃষ্টির চোখে। আর রাত তো এমনিতেও দেরি করে ঘুমায়। মনের মাঝে একটা শুন্যতা কাজ করছে দুজনেরই। গত দু,দিন একসাথে ছিলো দুজন। আর আজ ভিন্ন জায়গায়।
রাতের চোখে বার বার ভেসে উঠছিল বৃষ্টির ভয়ার্ত চেহারা নিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরার মুহুর্তটা। ঘুম থেকে উঠে বৃষ্টিকে আলতে করে বুক থেকে সরানোর মুহুর্তটা। আজ আর কোনো কিছুতেই মন বসছেনা রাতের। শুধু বৃষ্টির শুন্যতা অনুভব করে যাচ্ছে সে।
আর ওপাশে ছটপট করছে বৃষ্টি। রাতকে না বলা কথাটা আর জমিরে রাখতে পারছেনা বুকে। বার বার মুখ ফুটে বেড়িয়ে আসতে চায়।
রাত ফোন হাতে নিলো। আজ বৃষ্টি একবারও ফোন করেনি। হয়তো তার ফোনেরই অপেক্ষা করছে। বৃষ্টিকে ফোন দিতে যাবে তখনই দেখে ওপাস থেকে ফোন দিলো বৃষ্টি। উত্তেজিত হয়ে ফোনটা রিসিভ করলো রাত।
কারো মুখে কোনো কথা নেই শুনে চলছে একে অপরের নিশ্বাসের শব্দ। নিরবতা ভেঙে রাত বলে উঠে,
– কেমন আছো?
– ভালো, তুমি?
– আলহাম্দুলিল্লাহ্।…….. কিছু বলছোনা যে?
– কি বলবো?
– তাহলে ফোন দিলে যে?
– তোমার ভয়েজ শুনতে ইচ্ছে হচ্ছিলো।
– ওহ্। আর?
– খেয়েছো?
– হুম।

শিউলি চলে গেলো তাই আজ পলি চৌধুরি রান্না করেছে সব, আর এতো কিছুর পর ও সেই খাবার নামবে না রাতে গলা দিয়ে। তাই রেস্টুরেন্ট থেকেই খেয়ে এলো সে। সকালের ওই বেপার আর এই ব্যাপার নিয়ে ভালোভাবেই নালিশ দিলো পলি চৌধুরি। কিন্তু পলির কথায় কোনো কান দিলোনা রুদ্র। ইদানিং পলির থেকে দুরে দুরেই থাকছে রুদ্র। দিন দিন এতো অভিযোগ তার সহ্যের বাইরে। অসহ্য।

কিছুক্ষন ফোনালাপ করে করে শুয়ে থাকলো দুজনই। কারো চোখে ঘুম নেই কিন্তু মনে অদ্ভুত প্রশান্তি।
রাফিরা তাদের ফেলে চলে যাওয়ার পর রাত ভেবেছিলো তাদের পেলে আগে কোনো কথা ছারাই ইচ্ছে মতো ধোলাই করবে। কিন্তু চিন্তা বাবনার বেতিক্রম ঘটলো খুব সহজেই। মার দেওয়া ও থ্যাংস দেওয়ার মাঝামাঝি অবস্থায় আছে সে। যাই হোক ভালোই হয়েছে।
,
,
পরদিন কলেজ ছুটির পর মাঠের মাঝখানে দাড়িয়ে আছে বৃষ্টি ও রাত। সবাই চলে গেছে এতোক্ষনে। রাফিরা সবাই বসে আছে একটু দুরেই, কলেজ বারান্দায়।
মাথার উপর দিয়ে বয়ে চলছে ভারি বর্ষন। কাক ভেজা হয়ে যাচ্ছে দুজন। কিন্তু তা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই বৃষ্টি। তার আজ দৃঢ় প্রতিজ্ঞা মনের কথাটা খুলে বলবে রাতকে। যাই হয়ে যাকনা কেনো আজ আর কোনো বাধা মানবেনা সে।
এক হাটু মাটিতে ফেলে বসে পরে বৃষ্টি। তাকিয়ে আছে রাতের চোখের দিয়ে। রাতও যেনো অধিক অপেক্ষায় রয়েছে। বৃষ্টির মুখ থেকে সেই না বলা কথাটা শুনার জন্যে।
প্রেম ভালোবাসাকে সবসময় ঘৃনা করা মানুষ গুলোও এক সময় কাওকে খুব ভয়ঙ্কর ভাবে ভালোবেসে ফেলে। যেনো এটা একটা নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে।

To be continue……….

#বিষন্ন_রাত💖
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ💖

#পর্বঃ__৮

মুশল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এক হাটু মাটিতে ফেলে বসে পরে বৃষ্টি। তাকেয়ে আছে রাতের চোখের দিকে। রাতও যেনো অধিক আগ্রহে তাকিয়ে আছে বৃষ্টির মুখ থেকে সেই না বলা কথাটা শুকার জন্য। প্রেম ভালোবাসাকে সব সময় ঘৃনা করা মানুষ গুলোও একসময় কাওকে খুব বাজে ভাবে ভালোবেসে ফেলে। যেনো এটা একটা নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে।

কিভাবে বলবে বুঝতে পারছেনা বৃষ্টি। লাইফে প্রথম এমন কোনো সিচুয়েশন। তবুও বুকে সাহস নিয়ে বলে দিলো মনের মাঝে জমিয়ে রাখা না বলা কথাটা।
– কলেজের সেই প্রথম দিন, যেদিন তুমি আমার হাতটা ধরে অনেকটা পথ নিয়ে এসেছিলে। তার পর থেকে হালকা কথা, তোমার সব এটিটিউট, সব মিলিয়ে মুগ্ধতায় তোমার প্রতি দুর্বল হয়ে পরেছে এই অশান্ত হৃদয়। না বলা কথাটা বলার সাহস ছিলোনা বলে বন্ধুত্বের জায়গা নিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি তোমায় কখনোই বন্ধুর চোখে দেখিনি, ভেবেছি এর চেয়ে বেশি কিছু। শত চেষ্টা করেও না বলা কথাটা বুকের মাঝে জমা করে রেখেছিলাম দিনের পর দিন। বলতে পারতাম না তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে।
সবাই তোমাকে যেমন রাত নামেই ডাকে তেমনই আমি তোমার অন্য একটা নামে ডাকি। সেই নামটাও যেমন অপ্রকাশিত ছিলো, তেমনি করে অপ্রকাশিত ছিলো আমার প্রতিটি ভালোবাসার বার্তা। যা হয়তো কখনো তোমার মন অব্দি স্পর্শ করেনি। জানিনা ভালোবাসার প্রতি তোমার কিসের এতো অভিযোগ। আর তা জানতেও চাইনা। বিশ্বাস করো আমার ভালোবাসায় কোনোদিন কোনো জটিলতা খুজে পাবেনা তুমি। মনটা উজার করে ভালোবাসতে চাই তোমায়। সারাটা জীবন তোমার সাথে থাকতে চাই। একসাথে বাচতে চাই দুজন। দুটি ভিন্ন দেহে একটাই অন্তর গড়ে তুলতে চাই আমি। দুটি হাত এক করে তোমার সাথে হাটতে চাই কোনো এক অপুরন্ত পথ।
💖 I Love you 💖 রাত। সারাটা জীবন নিজের করে ভালোবাসতে চাই তোমায়। Do you love me?💖

চোখের কোনো পানি চলে এলো রাতের। কারো ভালোবাসা ছারা একাই বড় হতে হয়েছিলো তাকে। কখনো পায়নি কারো ভালোবাসা। আজ হটাৎ একম করুন কন্ঠে কারো মুখে ভালোবাসার কথাটা শুনের অশ্রুমালা আটকে রাখতে পারছেনা সে। কিন্তু সেই চাপা কান্নাও বৃষ্টি পানির সাথে ধুয়ে মুছে মাটিয়ে মিশে যাচ্ছে।
বৃষ্টি মুখে হাসি টেনে মাথাটা একটু নেরে চোখ বরাবর তাকিয়ে আছে উত্তরের অপেক্ষায়।
বৃষ্টির হাতটা ধরে দার করিয়ে পাগলের মতো জড়িয়ে ধরে রাত। চোখের পানি অঝরে ঝরছে। যাকে বলে সুখের কান্না।

রাতের জড়িয়ে ধরা দেখে উত্তর পেয়ে গেলো বৃষ্টি। সেও জড়িয়ে ধরে আছে রাতকে।
কিছুক্ষন ওভাবেই থাকে দুজন। বৃষ্টিকে বুক থেকে সরিয়ে কপালে আলতো করে একটা চুমু একে দেয় রাত। করুণ কন্ঠে বলে উঠে রাত,
– কখনো ছেরে যেওনা এই ভালোবাসাকে। পাগল হয়ে যাবো আমি।
রাতের দিকে চেয়ে বৃষ্টিও বলে উঠে,
– কথা দিচ্ছি, কখনোই ছেরে যাবোনা। একে অপরের ছায়া হয়ে থাকবো সব সময়। একসাথে বাচবো সারাটা জীবন। প্রয়োজনে মরলে একসাথে মরবো দুজন। এই বিচ্ছেদ একমাত্র মৃত্যুতেই হবে।
রাত বৃষ্টির মুখটা হাতের আঙুল দিয়ে অফ করে দিয়ে বলে উঠে,
– এভাবে বলোনা বৃষ্টি, ইমোশন নয় আমি চাই সম্পর্কের শুরু ও শেষটা মধুময় হোক।
বৃষ্টি করুন সুরে বলে উঠে,
– যদি কেও আমাকে তোমার কাছ থেকে নিয়ে নিতে চায় তখন?
– পারবেনা। বুকের ভিতরে লুকিয়ে রাখবো তোমায়। খুজেই পাবেনা।
রাতের কথায় হেসে দেয় বৃষ্টি। আবার জড়িয়ে ধরে রাতকে।
বন্ধুরা এসে সেলিব্রেইট করছে তাদের।

ভিজতে ভিজতে দুজন একসাথে হেটে হেটে প্রায় বাড়ি পর্যন্ত চলে এসেছে। আজ এতদুর রাস্তাটাও খুব কম মনে হলো তাদের। বিদায় নিয়ে ভিতরে চলে যাচ্ছে বৃষ্টি। গেট পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে তাকালো বৃষ্টি। একটা হাসি দিয়ে বলে উঠে,
– ফোনে কথা হবে।
রাত হাতের ইশারায় বলে, বুঝিনি। বৃষ্টির শব্দে কিছু বুঝেনি সে।
বৃষ্টি একটা হাসি দিবে কানে আঙুল নিয়ে ইশারায় বুঝিয়ে দেয়, ফোনে কথা হবে।
রাতও সম্মতি জানায়।

বুকে দু,হাত গুজে নিজের রুমের বারান্দা থেকে সব দেখে যাচ্ছে রিদ। রিদ ভালোই বুঝতে পারছে এটা কোনো সাধারন ব্যপার নয় এটা সাজিদ নামক ঘুর্নিঝড়ের আগাম বার্তা।

ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া শেষ করে রুমে বসে ফোন টিপছে বৃষ্টি। রাতকে ফোন দিতে যাবে তখনই রিদ দরজার সামনে এসে বলে,
– আপু আসবো?
– আয়।
রিদ গিয়ে বসে বৃষ্টির পাশে। রিদের মাঝে আজ কোনো চঞ্চলতা দেখছেনা বৃষ্টি। রিদ দুই টাইমে এমন থাকে। কোনো বিষয়ে সিরিয়াস থাকলে, আর কোনো আকাম করে এলে।
বৃষ্টি ফোনের দিকে তাকিয়ে বসে উঠে,
– আজ কি আকাম করলি আবার?
– নাহ্।
বৃষ্টি এবার বরাবর রিদের দিকে তাকায়,
– তাহলে এমন চুপচাপ কেনো?
– আপু একটু বেশি হয়ে যাচ্ছেনা?
– কি ব্যাপারে?
– রাত ভাইয়াকে নিয়ে বলছি আমি।
– তুই কিভাবে জানলি রাতের কথা?
একটা তাচ্ছল্যের হাসি দেয় রিদ।
– আমি কি করে জানলাম? হাসালি আপু। আমি তোর ভাই, আর আমার বোনের বেপারে আমি খোজ খবর রাখবোনা? আমার বোনটার কোনো বিপদ হচ্ছে কি না? ভুল মানুষের সাথে চলছে কিনা? আর দু,দিন আগে যে ঘুরতে গিয়েছিলি, কোথায় গিয়েছিলে কোথায় থেকেছিলি সবই আমি জানি। আর এটাও জানি দু,দিন তুই রাত ভাইয়ার সাথেই ছিলি।
– তুই কি আমায় ভুল বুঝছিস রিদ?
– না আপু, আমি জানি আমার বোনটা আর যাই করুক ফ্যামিলির সম্মান নষ্ট হবে এমন কোনো কাজ সে করবেনা।
– খুব বড় হয়ে গেছে আমার ভাইটা।
– দু,দিন পর কলেজে ভর্তি হবো এখনো কি বাচ্চা মনে হচ্ছে?
– তুই আমার কাছে সব সময়ই বাচ্ছা। তাই তো আমাকে এতো জ্বালানোর পরও তোকে ক্ষমা করে দিই। আর তুই রাতকে চিনিস কিভাবে। আমিতো তোকে তার নাম ও তার সম্পর্কে কিছুই বলিনি।
– যেদিন তোর আর রাত ভাইয়াকে নিয়ে আমার প্রথম সন্দেহ হয়েছিলো ঠিক সেদিন আমি রাত ভাইয়ার ব্যাপারে সব খোজ খবর নিয়েছি। ছেলেটা ভালো। পূর্বে কোনো মেয়ে ঘটিত ব্যাপারে জরিত ছিলোনা। শান্ত স্বভাবের ভদ্র একটা ছেলে রাত ভাইয়া। আমার পক্ষ থেকে পুরুপুরি মেনে নিলাম। কিন্তু তিন বছর পূর্বের কহিনিটা কি তোকে আবার নতুন করে মনে করিয়ে দিতে হবে?
– আমার সব মনে আছে রিদ।
– তোর হাতটা ধরেছিলো বলে, সেই পিন্টু ভাইয়াকে সাজিদ ভাইয়া কি করেছিলো? জদি সাজিদ ভাইয়া রাত ভাইয়ার সাথেও এমন কিছু করে বসে?
– পেয়েছেটা কি ওই সাজিদ? সব সময় যাই বলবে তাই করবো। সে যা চাইবে তাই হবে। ওর প্রতি বিরক্ত হয়ে গেছি আমি।
– টেনশন নিসনা আপু। আমি সব সময় তোর সাথে আছি। আমার বোনটা লাইফে সুখি হোক এটাই আমি চাই। আর আমি সব সময় ফানি মুডে থাকি তার অর্থ এই নয় যে আমি এসব আবেগের বসে বলছি। যখন আমি ফাজলামির মুডে থাকি তখন আমি ফাজিল আর যখন সিরিয়াস হয়ে যাই তখন আমি পুরুপুরি ভাবেই সিরিয়াস। তোর সুখের জীবনে যদি কেও বাধা হতে আসে যদি করো জন্য তোর মনে একটু খানি আঘাত লাগে, তবে সেটা সাজিদ হোক আর অন্য কেও হোক। সে আমার আসল রুপটা দেখতে পাবে। এখনো ছোট বলে সব না বুঝার ভান করে পরে আছি। সময়ের সৎ ব্যাবহারটা সকলে দেখতে পাবে।
সিরিয়াস মুড নিয়ে রুম থেকে হন হন করে বেড়িয়ে গেলো রিদ।
,
,
বৃষ্টি ফোন দিলো রাতকে,
– কি করো?
– এইতো বৃষ্টি শেষ তাই ছাদে একটু হাটাহাটি করছি, তুমি?
– আমি সুয়ে আছি।
– বাহরে, এতো অলস হলে আমার বাচ্চা কাচ্চাগুলো সামলাবে কি করে?
রাতের কথায় একটু বিষম খেলো বৃষ্টি। লজ্জায় কিছু বলছেনা সে।
রাত আবার বলে উঠে,
– কি হলো, বাচ্চার কথা শুনে চুপ হয়ে গেলে যে?
– তা না, কিন্তু এভাবে বলোনা আমার লজ্জা লাগে।
– এখন থেকে আমার সব কথায়ই লজ্জা পাওয়ার মতোই হবে। লজ্জা পাওয়ার মুহুর্তটায় বার বার দেখতে চাই তোমায়। আর লজ্জাই তো নারির অলঙ্কার।
,
,
আজ রাত তারাতারি বাড়ি আশায়ও লাফিয়ে উঠলো পলি চৌধুরি। তার ধারনা নিশ্চই আজ কোনো আকাম করে তারাতারি বাসায় চলে এসেছে রাত।
ইদানিং রাতের সাথে ভালো যাচ্ছেনা পলি চৌধুরির। এই নিয়ে অতিষ্ট হয়ে পরলো রুদ্র চৌধুরি। যেই ছেলের খুশির জন্য সব মেনে নিচ্ছে সে, আর সেই ছেলের সাথে পলির এমন দুর ব্যাবহার। সব ভেবে চিন্তে চুরান্ত সিদ্ধান্তে পৌছালো রুদ্র চৌধুরি। পলির সাথে ডিবোর্সের সিদ্ধান্ত নিলো সে। ডিবোর্সের কথা শুনে রুদ্র চৌধুরির হাতে পায়ে ধরলেও সে তার সিদ্ধান্তেই অটল থাকলো। কারণ এর আগেও বহুবার সতর্ক করেছে পলিকে। সে ভালোই বুঝতে পেরেছে পলির সভাব চরিত্র কুকুরের লেজের মতোই বারো মাস তেল মাখলেও যেটা কখনো সোজা হবেনা।

পলির সাথে ডিবোর্সের পর রাতের সাথে আবার ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে রুদ্র চৌধুরির। সুখে থাকার জন্য এক চাইতে বেশি কিছুর প্রয়োজন মনে করছেনা সে।

এভাবেই কাটছে সময়। রিদের খুনশুটি প্রেম। রাত বৃষ্টির গভির প্রেম। ভালোই চলছে সব।
পার হয়ে গেলো একটি বছর।
রিদ এখন কলেজের স্টুডেন্ট। রাত ও বৃষ্টি এখন দ্বিতীয় বর্ষের মাঝামাঝি। ওদিকে সাজিদের পড়াশুনাও প্রায় শেষ। হয়তো খুব শিগ্র ফিরছে দেশে।

ফল কাটতে গিয়ে হাতে ছুরি বসে যায় বৃষ্টির মা নয়নতারা বেগমের। বেশি কেটে যাওয়ায় রক্ত বন্ধ করতে কষ্ট হচ্ছে। একসময় রক্ত বন্ধ হলেও অজ্ঞান হয়ে যায় নয়নতারা বেগম। রাত হওয়ায় সব মিলিয়ে একটা হ্যানতেন অবস্থা। রিদ ও তার বাবা মিলে হসপিটালে নিয়ে যায় তাকে। বৃষ্টি বাসায়ই ছিলো। তার বাবা নাজিম সাহেব কয়েকজন ছেলে রেখে যায় তাকে পাহারা দেওয়ার জন্য।
বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে চমকাচ্ছে বিদ্যুৎ। ঘরে একা একা ভিষন ভয় করছে বৃষ্টির। সব চেয়ে বেশিই ভয় হচ্ছে তার বাড়িতে পাহারা দেওয়া ছেলে গুলোর উপর। বাইরের লোক আর যাই হোক বিশ্বাস করাটা মুশকিল। তার উপর আবার এই বৃষ্টির রাত আরো সে পুরু ঘরে একা। রাতকে ফোন দিলো বৃষ্টি।
– আমার ভিষন ভয় হচ্ছে রাত।
– কেনো কিছু হয়েছে?
বৃষ্টি সব খুলে বললো রাতকে। রাত ঠান্ডা মাথায় বলে উঠলো,
– রাতে খেয়েছো?
– হুম।
– তাহলে নির্ভয়ে ঘুমিয়ে পরো। কিচ্ছু হবেনা এগুলো তোমার মনের ভয়।
ফোনটা অফ হয়ে যায় বৃষ্টির। চার্জ শেষ। এবার ভয়টা আরো বেরে যায় তার। ভেবেছিলো রাতের সাথে কথা বলতে বলতে অনেকটা সময় পার করে দিতে পারবে সে। এখন তাও শেষ।
কিছুক্ষন পর বারান্দায় কারো ছায়া ভালোভাবেই দেখতে পেলো সে। বিদ্যুৎ চমকানোর আলোয় কেও একজন বারান্দায় হাটাহাটি করছে। রাতের সাথে কথা বলার আগেও হালকা পাতলা দেখেছে। কিন্তু তা মনের ভুল ভেবে নিয়েছে সে। কিন্তু এখন ভয়টা পুরুপুরি ঢুকে গেলো তার মনের মাঝে। কম্বল মুড়িয়ে শুয়ে থাকলো সে। কিছুক্ষন পর এবার স্পস্ট দেখতে পেলো তাকে। কেও একজন দাড়িয়ে আছে বারান্দায়। এবার ভিতু পায়ে বারান্দায় যেতেই চোখ কপালে উঠে যায় বৃষ্টির।
রাত দাড়িয়ে আছে বারান্দায়। কাক ভেজা হয়ে আছে সে। তার মানে রাতের সাথে কতা বলার আগেও রাত এখানে ছিলো? ভয়ে ও এমন অবস্থা সামলাতে না পেরে রাতকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বৃষ্টি।
– তুমি এসেছো অথছ আমাকে তখন ফোনে বলোনি কেনো?
– ভাবলাম তুমি ঘুমাবে আর আমি এখান থেকেই পাহারা দিয়ে যাবো। তোমায় ভয় পেলে তো দারুন লাগে।
– হুহ্, আমি ওসব ভয় টয় পাইনা। বৃষ্টি চৌধুরি এতো ভিতু না।
– মির্জা থেকে চৌধুরি হয়ে গেলে কখন?
– বাহরে মেয়েদের কি সব সময় এক পরিচয় থাকে? নিজস্ব কোনো পরিচয় থাকেনা মেয়েদের। যখন তোমার বৌ হয়ে তোমার বাড়ি যাবো তখন তো সবাই তোমার পরিচয়েই সবাই আমায় চিনবে। রাত চৌধুরি, বৃষ্টি চৌধুরি। সিম্পল😊
– আর যাই বলো, তুমি কিন্তু এখনো ভয়ের মধ্যেই আছে।
– হুহ্, একবার বললাম না, ওসব ভয় টয় এই বৃষ্টি চৌধুরি কেয়ার করেনা।
একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলতে বলতে রুমে ঢুকে গেলো বৃষ্টি। পুনরায় পেছন ফিরতেই রাতকে আর দেখতে পেলোনা বৃষ্টি বারান্দায়ও নেই। ভয় এবার আরো বেরে গেলো বৃষ্টির। কার সাথে কথা বললো এতোক্ষন? ভুত নয়তো আবার? ভয়ে হাত,পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির। হটাৎ পেছন ফিরতেই রাতের সাথে ধাক্কা খেলো সে।
– শুধু শুধু ভয় দেখাও কেনো?
রাত একটু হেসে উঠে বলে,
– হায়রে সাহসিরে?
,
,
সাজিদ আসছে আর কয়েকদিন পর। মায়ের মুখে এমন একটা কথা শুনে ভয়ে আৎকে উঠে বৃষ্টি। তবুও কিছু বললো না সে।
আর যাই হোক রাতের সাথে আগের মতো মিশতে পারবেনা সে এটা ভালোই বুঝতে পারছে বৃষ্টি। রাতকে ফোন দিয়ে একটা অনুরুধ করে বৃষ্টি,
– প্লিজ রাত এই কয়দিন আমি তোমার পাশে থাকতে চাই। কোথাও নিয়ে চলো আমাকে। তোমার সাথে দুরুত্ব বেড়ে গেলেই আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। প্লিজ কয়েকদিনের জন্য এমন জায়গায় নিয়ে চলো যেখানে শুধু তুমি আর আমি থাকবো।
রাত ঠান্ডা মাথায় বলে উঠে,
– কখন যাবে?
– এই দু,এক দিনের ভিতরেই নিয়ে চলো।
,
,
একই কলেজে ভর্তি হলো রিদ ও শুভ্রতা। এখন আর ফাকি দিয়ে দেখতে যাতে হয়না শুভ্রতাকে। তার পাশেই থাকে এখন।
ক্যান্টিনে বসে আছে রিদ। সামিও এসে বসে তার পাশে।
– দোস্ত্ একটা খবর শুনলি?
রিদ আড় চোখে তাকায় সামির দিলে।
– কি খবর।
– তোর গার্লফেন্ড শুভ্রতার কথা।
– কিছুক্ষন আগেই তো কথা হয়েছে আমার সাথে, এখন আবার কি আকাম করলো?
– আরে আকাম করেনি, শুভ্রতাকে আজ রাজিব প্রপোজ করেছে।
সামির কথা শুনে এক পায়ে দাড়িয়ে যায় রিদ। যেনো কেও তার হৃদপিন্ডে আঘাত করেছে। সামি বলে উঠে,
– আরে রেগে যাচ্ছিস কেনো, শুভ্রতা বলে দিয়েছে ওর বয়ফ্রেন্ড আছে।
রিদ আরো উত্তেজিত হয়ে বলে উঠে,
– চল আমার সাথে।
– কোথায়?
– ওই সালার কলিজাটা কতো বড় দেখে আসি। আমার কলিজায় হাত দেওয়ার সাহস হয় কি করে ওর মতো ছেলের।
– থাক বাদ দে এসব।
– বাদ দে মানে। চল ওকে সিমিত আকারে একটা শিক্ষা দিয়ে আসি।
– এখন আবার কি করবি তুই?
– ওই সালার পক্ষিরে আজ নিজ হাতে জবাই দিবো।
– এই দারা, রাজিবের তো কোনো গালফ্রেন্ড নাই পক্ষি কাকে বলছস তুই?
– আরে ধুর, গার্লফ্রেন্ড না। পক্ষি হচ্ছে ওর বংশের প্রদিপ জালানোর লাইটার।

To be continue,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here