#সুখের_নেশায় পর্ব ২৯

0
596

#সুখের_নেশায় পর্ব ২৯
#লেখিকাঃআসরিফা_সুলতানা_জেবা

বাড়ির মেইন ফটক দিয়ে ঢোকার মুহুর্তে দারোয়ান সালাম দেয় চৈত্রিকা ও মোনার উদ্দেশ্যে। বিনিময়ে মিষ্টি হাসে চৈত্রিকা। মোনার পিছু পিছু ফাইলগুলো হাতে নিয়ে হাঁটতে থাকে দ্রুত। মোনা এতো জলদি হাঁটছে ওর সাথে হেঁটে প্রায় হাঁপিয়ে উঠার উপক্রম চৈত্রিকার। তার উপর ওড়না সরে গিয়ে একটা অংশ মেঝে ছুঁয়ে দিচ্ছে। হাতে ফাইল থাকায় চৈত্রিকা ঠিক করতে পারছে না। মোনাকেও হেল্প করতে বলতে পারছে না। এই মেয়ে যা ঝাঁঝালো পরে দেখা যাবে মুখের উপর অপমান করে বসবে। মানুষের কথার আ*ঘাত সহ্য করতে করতে বড় হলেও চৈত্রিকা যথেষ্ট চেষ্টা করে যারা হেনস্তা করে, আঘা/ত করে তাদের এড়িয়ে চলার। তাছাড়া ওর খুব ইচ্ছে করছিল সাফারাতকে স্বচক্ষে একটা বার দেখবার। মোনার কাছে অনুরোধ করার পূর্বেই সে নিয়ে এসেছে এতে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ ও মোনার প্রতি।

সদর দরজার কাছে আসতেই কাজের মেয়ে মিনা চৈত্রকে দেখে দৌড়ে এলো। ফাইলগুলো টেনে নিজের হাতে নিয়ে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলে উঠল,

‘ ম্যাডাম কেমন আছেন?স্যার রে দেখতে আইছেন?কান্ড তো ঘইটা গেছে। স্যার সকালে জ্বরের ঘোরে দাদির সামনে খালি কইতাছিল চৈত্র কে দেখব। দাদি তো জানে না চৈত্র কেডা। আমিও কই নাই। আপনে আইয়া পড়লেন এহন স্যার একদম চাঙ্গা হয়ে উঠব। আমি মুভিতে দেখছি জ্বরে যার নাম লই তারে দেখলে শরীলে একটা ভাব আইয়ে। ‘

চৈত্রিকার অবস্থা বেগতিক। মিনা দাঁত কেলিয়ে এক নাগাড়ে বলেই যাচ্ছে। অপরদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে সবটা পর্যবেক্ষণ করছে মোনা। এক পর্যায়ে মিনা কে থামিয়ে বলে,

‘ চৈত্রিকা এই বাড়িতে আগেও এসেছিল?’
‘ হ আইছে তো। ‘
মিনা ব্যস্ত কন্ঠে সাদামাটা উত্তর দেয়। আর কিছু বলতে নিলে ড্রইং রুমে আগমন ঘটে সাফারাতের চাচী ও প্রিয়ন্তীর। দু’জনেই নত মস্তকে দাঁড়ানো চৈত্রিকা কে চিনে ফেলে। মাথা নিচু করে রাখলেও চৈত্রিকা বুঝতে পারছে সকলের দৃষ্টি। এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক।তার এই বাড়িতে প্রথম পা রাখার দিনটা ছিল খুবই বিচ্ছিরি একটা দিন। লজ্জায় মাথা তুলতে পারছে না সে। আরেকবার যখন এসেছিল তখন বাড়ির কোনো সদস্য ছিল না বলে চৈত্রিকার লজ্জায় পড়তে হয় নি। এখন মনে হচ্ছে মুখ তুলে তাকানো টাই কষ্টকর। প্রিয়ন্তী এগিয়ে আসে। কন্ঠে তার বেশ বিস্ময়।

‘ আপনি তো সেই মেয়েটা যাকে জেরিন আপু থাপ্প*ড় মেরেছিল?আপনি আবারও কি করছেন এখানে?ভাইয়া দেখলে তো রাগ করবে আবার। অপমান করবে আপনাকে। ‘

চৈত্রিকার মুখে চরম অসহায়ত্ব ফুটে উঠে। সে তো জানত এমন কিছুর সম্মুখীন এখানে এসে হতে হবে। তবুও সাফারাতের অসুস্থতার কথা শুনে নিজের মন কে আঁটকে রাখতে ব্যর্থ হয়। মোনার বেশ মজা লাগছে চৈত্রিকা কে এমতাবস্থায় দেখে। তবে পূর্বের কোনো কাহিনি সে জানে না। থাপ্প’ড় শব্দটা শুনে এক প্রকার প্রশান্তি অনুভব করে হৃদয়পটে। প্রিয়ন্তীর মা এগিয়ে এসে ক্রুদ্ধ কন্ঠে চেঁচালেন,

‘ এই মেয়ে প্রিয়ন্তী কি বলছে তুমি শুনতে পাচ্ছো না?এখনও দাঁড়িয়ে আছো কেন?আর দারোয়ানের সাহস কি করে হয় তোমার মতো বস্তির একটা মেয়েকে আমাদের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়ার। বের হও এখুনি। ‘

প্রিয়ন্তী ওর মা’কে থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি যেন চৈত্রিকাকে সহ্যই করতে পারছেন না। দু’হাতে জামা মুঠো করে মাথা তুলে নিজেকে ধাতস্থ করে চৈত্রিকা। অতঃপর ভাঙ্গা কন্ঠের জবাব ওর,

‘ আমি বস্তির মেয়ে নই ম্যাম। সাফারাত স্যারের অফিসের একজন
এমপ্লয়ী আমি। মোনা ম্যামের সাথে এসেছি। ‘

প্রিয়ন্তীর মা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো মোনার দিকে। মোনা নম্র স্বরে জানায়–‘ আমি আনি নি ম্যাম। ‘

স্তব্ধ, হতবাক হয়ে পড়ে চৈত্রিকা। এত বড় মিথ্যা কথা?মোনা যে ইচ্ছে করেই মিথ্যে বললো তা বুঝতে চৈত্রিকার এক সেকেন্ডও সময় লাগে নি। মোনা মনে মনে বেশ শান্তি পাচ্ছে চৈত্রিকাকে অপমানের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে সক্ষম হয়ে। এটাই তো চেয়েছিল সে। কিন্তু এতো ইজিলি হয়ে যাবে একদমই ভাবে নি। প্রিয়ন্তীর মা আক্রোশে ফেটে পড়ে।

‘ তুমি কর্মচারী হও বা যে হও এখুনি বের হও এখান থেকে। সাফারাতের অনুমতি পেয়েছ তুমি?’

চৈত্রিকা ঠোঁটে ঠোঁট চেপে মাথা নাড়ায়। চক্ষু কোটর জলে টলমল করছে। গড়িয়ে পড়ার ভীষণ তাড়া জল বিন্দুদের। কাউকে চোখের জল প্রদর্শন করে নিজেকে দুর্বল প্রমাণ করার কোনো প্রশ্নই আসে না। চৈত্রিকা কঠোর। শক্ত। পৃথিবীর সকল মানুষের নিকট চৈত্রিকার মন শক্ত খোলসে আবৃত। কেবল একজন মানুষের কাছে উন্মুক্ত মন এবং তা নিজের স্বামীর নিকট। মিনা সাফারাতের চাচী কে একদমই দেখতে পারে না। সারাক্ষণ কারণে অকারণে সুযোগ পেলেই মিনাকেও এই মহিলা ছাড় দেয় না। গরীব, মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের প্রতি যেন উনার এলার্জি আছে। চৈত্রিকার প্রতি উনার এমন আচরণ মিনার ভালো লাগছে না। চুপি চুপি সিঁড়ি বেয়ে উঠে কর্ণারের দিকে রুমটায় ছুট লাগায় ও।

চৈত্রিকার তীব্র ইচ্ছে করছে প্রতিবাদ করতে। সাফারাতের পরিবার মানে নিজের শশুড় বাড়ির লোকজন। তাই নিজেকে দমিয়ে নিয়ে নরম কন্ঠে শুধালো,

‘ আমি চলে যাচ্ছি। অস্থির হবেন না ম্যাম। পরের বার স্যার অনুৃমতি দিলেই আসব। ‘

কথাটা বলতে গিয়ে ওর গলা ধরে আসছিল। সাফারাত কে দেখা ব্যতীত চলে যেতে তার মন মানছে না৷ তবুও যে বাধ্য। পিছন ফিরে চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হওয়া মাত্র কর্ণকুহরে ঝংকার তুলে প্রবেশ করে গম্ভীর, অস্থিরতা মাখা স্বর।

‘ কোথায় যাচ্ছেন আপনি চৈত্র? স্টপ দেয়ার। ‘

থেমে গেল পা দুটো। মুহুর্তের জন্য থমকালো হৃদপিণ্ড। সবার দৃষ্টি সাফারাতের পানে। চোখ মুখ অসম্ভব লাল তার। চুল উশকো খুশকো। চোয়াল শক্ত হয়ে আছে এতো জ্বরেও। চৈত্রিকা ঠাহর করতে পারছে না জ্বরের কারণে এতো লাল বর্ণে ছেয়ে আছে ফর্সা মুখটা নাকি রাগের ছটায়?কালো একটা গেঞ্জি ও হাঁটু অব্দি থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পড়নে তার। বড় বড় কদম ফেলে সিঁড়ি ভেঙে নেমে এক ঝটকায় উপস্থিত হলো ঠিক চৈত্রিকার সামনে৷ নিদারুণ অধিকার নিয়ে আঁকড়ে ধরে নিজের অর্ধাঙ্গিনীর ডান হাত টা। শরীরের অত্যাধিক তাপমাত্রায় আঁতকে উঠলো চৈত্রিকা। সে হলে বোধ হয় এতো জ্বরে বেহুঁশ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকত অথচ এই লোক নিজের বলিষ্ঠ দেহ টা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে ঠিকঠাক। অসুস্থতা যেন তাকে গ্রাস করে নি। সাফারাত কঠিন স্বরে বললো,

‘ নিজের বাড়ি থেকে অন্যের কথায় কেন বেড়িয়ে যাবেন আপনি?’
‘ আমার বাড়ি?’
ভ্রুঁ কুঁচকে প্রশ্ন করে চৈত্রিকা। সাফারাত হাতের বাধন শক্ত করে প্রতুত্তর করে,
‘ অবশ্যই আপনার বাড়ি। আপনার হাসবেন্ডের বাড়ি মানে এটা আপনারই। আপনি আমার অর্ধাঙ্গিনী। এটা শুধু নাম মাত্র সম্পর্ক নয়। আমার জীবন, আমার সবকিছুতে আপনি অংশীদার। শুধু মাত্র আপনি। ‘

সাফারাতের কথা শুনে সবাই হতভম্ব। মোনার মনে হচ্ছে ও কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখছে। কেউ পারছে না সমীকরণ মেলাতে। সাফারাতের দাদি এসেছিলেন পিছু পিছু। তখন মিনা রুমে যেয়ে দেখে সাফারাত কপালে হাত দিয়ে শুয়ে আছে। আর ওর দাদি টুকটাক কথা বলছে। মিনা নিজের উপস্থিতি জানান দিতেই সাফারাত হাত নামিয়ে দৃষ্টি তাক করে। গড়গড় করে নিচে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা ব্যাখা করতে দুই মিনিট সময় নেয় মিনা। এমনকি মোনার কথাগুলো পর্যন্ত বাদ দেই নি ও। এই মুহুর্তে থ হয়ে রইল সকলে। সাফারাত চৈত্রিকার চোখের দিকে প্রগাঢ় দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। কাজলকালো নয়নে জল থইথই করছে। সাফারাত হাত মুষ্টিবদ্ধ করে চাচীর দিকে চেয়ে বললো,

‘ বাড়িতে আসা মানুষের সাথে এতো খারাপ ব্যবহার করা উচিত হয় নি আপনার। ভাগ্যিস আপনি আমার বড় এবং একজন নারী। শ্রবণগ্রন্থি তে ভালোভাবে ঢুকিয়ে নিন এই মেয়েটা আমার স্ত্রী। আমার সুখ। এবার যদি আপনারা আমার সুখের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ান তবে সকল মানবতা ভুলে গিয়ে আপনাদের রাস্তায় নামাব আমি। মাইন্ড ইট। এন্ড মিস মোনা অফিসে গিয়ে রিজাইন লেটার জমা দিবেন এবং নিজের অর্ধেক মাসের স্যালারি বুঝে নিবেন। আপনাকে এক পলকের জন্যও আমি কখনও দেখতে চাই না। বিকজ ইউ প্ল্যান টু হার্ট মাই হ্যাপিনেস। গেট লস। ‘

মোনা কেঁদে দিল। অশ্রুসিক্ত কন্ঠে কিছু বলতে চাইলে সাফারাত মিনা কে উদ্দেশ্য করে বলে মোনা কে যেন গেইট অব্দি দিয়ে আসা হয়। চরম অপমানিত হয়ে বেড়িয়ে যায় মোনা। একেই বোধ হয় বলে অপরের জন্য ফাঁদ পাতলে সেই ফাঁদে নিজেই পড়তে হয়।

সাফারাতের দাদি থমথমে মুখে এগিয়ে এসে বললেন,
‘ তুমি এসব কি বলছো?’
‘ ঠিক বলছি। তিনদিন আগে আমি বিয়ে করেছি চৈত্রকে। ‘
চৈত্রিকার হাত টা ছেড়ে দিয়ে দাদির দিক দৃষ্টি জ্ঞাপন করে বললো সাফারাত। তার নিরলস, নির্লিপ্ত অভিব্যক্তি দেখে উনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে ক্ষণিকের নিমিত্তে। মিনিট সময় অতিবাহিত হতেই প্রশ্ন করেন,
‘ চিনো না জানো না একটা মেয়েকে হুট করে বিয়ে করে নিলে?’
‘ হুট করে হয় নি। ওর সাথে আমার পরিচয় দীর্ঘ অনেক বছরের। তুমি অসুস্থ থাকায় তোমাকে বিয়ের কথা জানাতে পারি নি। তবে আমি চাইব চৈত্রকে যথেষ্ট ভালোবাসা দিয়ে মেনে নিবে তুমি। ‘
সাফারাত তাহলে সকালে জ্বরের ঘোরে এই মেয়ের নাম নিচ্ছিল?মনের কথা মনে রেখে তিনি মুখে ব্যক্ত করেন,
‘ ওর পরিবারের সাথে কথা বলতে চাই আমি। ‘
‘ ওর মা ও বোন আছে। তুমি চাইলে আমি উনাদের আসতে বলব। ‘
‘ ডেকে পাঠাও। ‘

কথাগুলো বলে সুফিয়া বেগম চৈত্রিকার কাছে এগিয়ে গেল। জহুরি চোখে পরখ করে নিল ওকে। চৈত্রিকা ভীষণ নার্ভাস ফিল করছে। ওর এই অস্বস্তি না বাড়তে দিয়ে সুফিয়া বেগম হাসি মুখে বলে উঠলেন,

‘ বাহ!তুমি তো অপরুপ সুন্দরী। একদম সাফারাতের মায়ের মতো। কি সুন্দর টানা টানা চোখ তোমার। ‘

প্রশংসা শুনে লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে পড়ল চৈত্রিকা। নিমিষেই পুরো মুখ জুড়ে লাল বর্ণের আস্তরণ পড়ে যায়। সাফারাত তা দেখে সূক্ষ্ণ একটা নিঃশ্বাস ছাড়ে। দাদির দিকে তাকিয়ে বলে,

‘ কথা শেষ হলে তুমি প্রিয়ন্তী কে দিয়ে চৈত্র কে আমার রুমে পাঠিয়ে দিও দাদি। মাথা টা ভীষণ ব্যাথা করছে। আমি গেলাম। ‘

পিলে চমকে উঠল চৈত্রিকার। আজ কি এখানে থাকতে হবে?সুফিয়া বেগম চৈত্রিকার হাত ধরে নিজের রুমে নিয়ে এলো। পিছু পিছু এলো মিনা ও প্রিয়ন্তী। প্রিয়ন্তীর মা এতো নাটক দেখে মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলেন। উনার ছেলে জেলে পঁচে মরছে অথচ সাফারাত বিয়ে করে সুখের সংসার করবে এটা কোনো ক্রমেই মানতে পারছেন না তিনি।

চৈত্রিকা কি ভেবে এসেছিল আর কি হচ্ছে? ও কল্পনা করে নি এতো তাড়াতাড়ি এই বাড়িতে সাফারাতের বউয়ের পরিচয়ে সকলের সামনে হাজির হতে হবে। প্রিয়ন্তী ওর গা ঘেঁষে বসল। মলিন স্বরে আওড়ালো,
‘ স্যরি ভাবী। তখন আম্মুর ও আমার ব্যবহারের জন্য। প্লিজ ফরগিভ মি। ‘
মেয়েটার গালে হাত রাখে চৈত্রিকা। মৃদু হেসে বললো,
‘ ইটস ওকে কিউট গার্ল। ‘
আনন্দে, উৎসাহে চৈত্রিকাকে ঝাপটে ধরল প্রিয়ন্তী। কন্ঠে তীব্র উচ্ছ্বাস।
‘ এখন থেকে আমায় সারাক্ষণ একা একা থাকতে হবে না। তোমার সাথে আড্ডা দেওয়া যাবে। উফ!ভাইয়া বিয়ে করেছে আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না। ‘
সুফিয়া বেগম একটা চেইন এনে চৈত্রিকার গলায় পড়িয়ে দিল।
‘ তোমার শাশুড়ি পুত্রবধূর জন্য অনেক গহনা রেখে গিয়েছে। তার মধ্য থেকে চিকন এই চেইন টা পড়িয়ে দিলাম তোমায়। প্রিয়ন্তী ওকে সাফারাতের রুমে দিয়ে আয়। ‘
___________

ধীরে ধীরে পা ফেলে সাফারাতের রুমে প্রবেশ করে চৈত্রিকা ও প্রিয়ন্তী। সাফারাত নেই রুমে। প্রিয়ন্তী বেলকনিতে উঁকি দিতেই দেখতে পায় সাফারাত দাঁড়িয়ে আছে।
‘ ভাবী ভাইয়া বেলকনিতে। তুমি থাকো তাহলে। আসছি। ‘

কথাটা বলেই প্রিয়ন্তী প্রগাঢ়পাড়। চৈত্রিকার অকস্মাৎ লজ্জা অনুভূত হচ্ছে। পা বাড়িয়ে বারান্দায় আসে সে। সাফারাত অভিভূত নয়নে তাকিয়ে রাশভারি গলায় বলে উঠল,

‘ লজ্জা পাওয়ার মতো এখনও আমি কিছুই করি নি তবুও লজ্জা পাচ্ছেন?আই থিংক আমার কিছু করা উচিত। এমনি এমনি আপনাকে দূর থেকে লজ্জা পেতে দেখে একদমই ভালো লাগছে না। ‘

চৈত্রিকা হকচকিয়ে যায়। কয়েক পা পিছিয়ে রুমে চলে আসে ও। সাফারাতের মতিগতি ভালো ঠেকছে না। বিড়বিড় করে বললো,
‘ জ্বরে পাগল হয়ে গেল না তো?’
‘ জ্বরে নয় আপনার প্রেমে। ‘

কথাটা বলেই সাফারাত রুমের দরজা লাগিয়ে আসে। পেশিবহুল হাতে পিছন হতে ঝাপটে ধরলো চৈত্রিকার কোমর। চুলে মুখ ডুবিয়ে দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস টেনে নিল নিজের মাঝে। পেটে এক হাত চেপে ধরে বললো,
‘ আপনি বড্ড পাষাণ চৈত্র। কি হয় একটু কাছাকাছি আসলে?নাকি আমার প্রতি ফিলিংস জাগে না আপনার?

শ্রবণেন্দ্রিয় ঝনঝন করে উঠল চৈত্রিকার। যেন কেউ কানের অতি নিকটস্থে তবলা বাজাচ্ছে। ঘাড়ে ঠোঁটের গাঢ় স্পর্শ অনুভব হতেই পেটে বিরাজমান সাফারাতের গরম হাত টা খামচে ধরল মুহুর্তেই,তৎক্ষনাৎ।

#চলবে,,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here