#Your_psychoPart_02_03

0
597

#Your_psycho Part_02_03
#A_Devils_Love

#Written_by_Aruhi_khan (ছদ্মনাম)

.

সবাই এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে ইয়াশ আর কাব্যর জন্য অপেক্ষা করছে।

আর রশ্নি বাইক পার্ক করে আসছে!

তার একটুও আসার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু সবার জোরাজোরিতে আসতে বাধ্য হলো।

আর শুধু নিজে একা আসে নি!
সাথে সানাকেও মারতে এনেছে।

শুভ: মিষ্টি ওই দেখো ওরা আসছে!

শুভর কথায় সবাই সামনে তাকালো।

তিনটা ছেলে একসাথে হেটে আসছে।

কিন্তু ওদের মাঝে সব থেকে লম্বা একটা ছেলেকে দেখা যাচ্ছে,
ফুল ব্ল্যাক পড়া! ব্ল্যাক শার্ট, ব্ল্যাক প্যান্ট, ব্ল্যাক গ্লাসেস
আর হাতের মধ্যে গায়ের ব্লেজারটা।
কিন্তু তার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় তার নীল রঙের চোখের মণি গুলো।

যে কেউই দেখলে পাগল হবে।

আর ইনি হলেন আমাদের ফেভরেট ইয়াশ ওরফে নিলাদ্রিশ!!😁

{Note: আমাদের গল্পের নায়ককে সবাই ইয়াশ বলেই ডাকে শুধু রশ্নি ওকে নীল বলে।

[কিছু মানুষের ইয়াশ নামটা ভালো লাগে তাই দিলাম]}

ইয়াশ আর কাব্য গিয়ে সবাইকে জড়িয়ে ধরলো সালাম করলো।

এদিকে শুভা তো ইয়াশকে দেখে পুরাই ফিদা হয়ে গিয়েছে
শুভা অনেক আগের থেকেই ইয়াশকে পছন্দ করে

ইয়াশ আর কাব্য একা আসে নি
তাদের সাথে নীলের আরেকটা বন্ধুও এসেছে
আর সে হলো সেহের

এদিকে ইয়াশের চোখ জোড়া শুধু একজনকেই খুঁজছে
কিন্তু কোথাও দেখতে পাচ্ছে না তাকে।

তখনই সেখানে সানা আর রশ্নি উপস্থিত হলো।

রশ্নি: পাপা আমি……

সামনের ব্যাক্তিটাকে দেখে তার কথা আটকে গেলো
গলার মধ্যে কি যেন দলা পাকিয়ে যাচ্ছে
হৃদস্পন্দন ক্রমশই তীব্রতা পাচ্ছে

রশ্নি: Oh damn….এই দেখি আগের থেকেও হট হয়ে গেছে
ছি ছি রশ্নি তুই এগুলো কি ভাবছিস, এই লোকটাতো একজন খুনি। আমাকে খুন করেছে এই লোকটা।
কিন্তু আমি তো মরি নাই🤔
হোয়াটেভার খুনি তো খুনিই হয়ে,
না মরলেও আমার খুন বের করেছে তো এই লোকটা।

কিন্তু যাই বলি না কেন দেখতে সত্যিই পুরা আগুন লাগছে, একদম যেন ডার্ক চকলেট টা।😋

উফ আবারও না না এসব ভাবলে চলবে না!
আর এটা ওই ডার্ক চকলেট, যেটার ভিতর সারপ্রাইজ নাটস থাকে এন্ড আই জাস্ট হেট নাটস।🤢
–(মনে মনে)

শুভ: কিরে ভাবছিস এত?

রশ্নি: নাথিং!

ইয়াশ সবার সাথে কথা বললেও রশ্নির সাথে কোনো কথা বললো না।
কথা তো দূরের ব্যাপার একবার ওর দিকে তাকালোও না।

রশ্নি: হুহ যেই গেটআপ নিয়ে এসেছি মেইবি আমাকে চিনে নাই।😎

রশ্নি একটা কালো প্যান্ট, কালো জ্যাকেট, সাদা গেঞ্জি, সাদা কেইডস, মুখে কালো মাস্ক, মাথায় কালো টুপি আর চোখে কালো সানগ্লাস লাগিয়ে এসেছে।

ওকে আজ কোনো এলিয়েনের থেকে কম লাগছে না।

এদিকে সেহেরকে দেখে সানার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে
কারন এই সেহেরটা ওকে সেই ছোট বেলা থেকে জ্বালিয়ে এসেছে
যেদিন স্টাডি কমপ্লিট করার জন্য দেশের বাহিরে চলে যাচ্ছিল
সেদিনও সানার ঠোঁট কামড়ে গিয়েছিল

সানার তাই ভয় করছে যেন আবারও সেহের অমনটা না করে
কিন্তু সেহেরএর ঠোঁটের বাঁকা হাসি প্রমান দিচ্ছে
যে ওর ধারনাটাই ঠিক

রশ্নি হাফ ছেড়ে বাচল, যে ইয়াশ ওর সাথে কোনো কথা বলে নি। ওর ধারণা ইয়াশ হয়তো বিদেশে গিয়ে বদলে গিয়েছে। এখন হয়তো ওকে আর ভয় দেখানো বা বিরক্ত করবে না।

যাক এখন একটু শান্তি লাগছে, আর ইয়াশের প্রতি ভয় টাও একটু কমেছে।

.

বাসায় এসে রশ্নি বুঝতে পারলো আজ থেকে তার পাত্তা কাট হয়ে গিয়েছে।

এখন আর কেউ তাকে দাম দিচ্ছে না। সবাই ইয়াশকে নিয়ে মেতে উঠেছে।

কেউ ওকে খাইয়ে দিচ্ছে, তো কেউ মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আর শুভা পেত্নী তো চামচামি গিরি করেই চলেছে।

রশ্নি সোফার এক কোনায়, গালে হাত রেখে এগুলো দেখছে।

ইয়াশের খাওয়া শেষে ও উঠে চলে গেল।

তারপর সবার রশ্নির উপর নজর পড়লো।

নিলাসা: কিরে তুই ওই কোনায় বইসা কি করস?
আচ্ছা আয় তোরে খাওয়ায় দেই।

রশ্নির এই কথায় অনেক রাগ হলো!

রশ্নি: আমি যে আপনাদের চোখে পড়েছি এটাই অনেক।

বলে ধুপধাপ করে নিজের রুমে চলে গেল।

.

সেখানে গিয়ে খেলো আরেক ঝটকা

রুমে গিয়ে দেখে ইয়াশ ওর বিছানার উপর আরামসে এক হাটু ভাঁজ করে বসে আছে

রশ্নি: নিনীল ভাইইয়া আপনি?

ইয়াশ গিয়ে রশ্নিকে টেনে নিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো,
তারপর ওর উপর উঠে বসে ওর হাত গুলো বিছানার সাথে চেপে ধরলো।

রশ্নি এতক্ষনে ছুটাছুটি শুরু করে দিয়েছে।

রশ্নি: অসহ্য, ফাজিল, বেয়াদব লোক!
আপনি আবার এসব শুরু করেছেন, ছাড়ুন আমায় ছারুন বলছি।

রশ্নির অবস্থা দেখে ইয়াশের বেশ হাসি পাচ্ছে।

ইয়াশ ওর আঙ্গুল রশ্নির ঠোঁটে ছুইয়ে ওকে চুপ করিয়ে দিল।

ইয়াশ: এই কয়েক বছরে তুমি আগের থেকেও বেশি সুন্দর হয়ে উঠেছ দেখছি।

রশ্নি: শুনুন এটা না আর আগের ভীতু রশ্নি নেই যে আপনাকে ভয় পাবে।
তাই এবার আমার সাথে উল্টা পাল্টা কিছু করার কথা ভাবলেও আমি জাস্ট আপনার মার্ডার করে দিব।

ইয়াশ এবার বেশ জোরেই হেসে দিলো।

ইয়াশ: আচ্ছা তাই? বাই দা ওয়ে
এখন মেইন পয়েন্টে আসি যার জন্য আমি এখানে এসেছি।

রশ্নি ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
দেখে ইয়াশ একটা বাঁকা হাসি দিয়ে, রশ্নির শার্টের সামনের দুটো বোতাম খুলে দিল।

তারপর ওর নাম লিখা জায়গাটায় ঠোঁট বুলিয়ে দিলো।
রশ্নি এবার কেঁদে দিলো।

ইয়াশ: আমার কাজ শেষ।

বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

আর রশ্নি এখানে হাটু তে মুখ গুজে কেঁদেই চলেছে

.

ইয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে দেখলো
শুভ হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে

শুভ প্লেইটটা পাশের টেবিলে রেখে ইয়াশের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিল

ইয়াশও হেসে ওকে জড়িয়ে ধরলো

ইয়াশ: থ্যাংকস রে শুভ তুই না থাকলে যে কি হতো

শুভ: ধন্যবাদ দিয়ে আমাকে ছোট করছো কেন ভাই।

ইয়াশ: না সত্যিই তো!
আমি যাওয়ার পর তো তুইই আগলে রেখেছিস রশ্নিকে।
শুধু মাত্র আমার জন্য তুই এব্রডে যাস নি।

শুভ: রশ্নি তো আমারও বোন, ওর জন্য এইটুকু করতে পারবো না

ইয়াশ: হুম। কিন্তু এই নিজের রুমটাকে এমন বানিয়ে রেখেছে কেন?
কেউ বলবে না যে এটা একটা মেয়ের রুম, দেখে তো মনে হয় কোনো জঙ্গিবাদী থাকে।

শুভ: হাঃ…….সবে তো মাত্র এসেছ এখনো কত কিছু দেখা বাকি আছে!
আচ্ছা ওসব কথা পরে হবে আগে তুমি এই খাবার গুলো ওকে খাইয়ে দাও গিয়ে।

ইয়াশ: না ওকে আজকে মেরে ফেললেও আমার হাতে খাবে না, তাই তুমিই বরং ওকে খাইয়ে দাও।

শুভ: আচ্ছা ঠিক আছে দেখছি।

বলে রশ্নির রুমে ঢুকে গেলো।

রশ্নি এখনো সেভাবে বসে কাঁদছে।

শুভ: কিরে পিচ্চি শয়তান? তুইও কাঁদিস নাকি? নিজেকে না ইমোশনলেস বলিস তাহলে এখন কি হলো?

রশ্নি শুভর কন্ঠ শুনে চোখ মুখ মুছে নিলো।

রশ্নি: আমি কাঁদছিলাম না!

শুভ: বাহ এখন আমার কাছেও মিথ্যে বলবি এইই আমি তোর ফ্যাভ ব্রো

রশ্নি এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না!
শুভকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো।

রশ্নি কারো সামনে কাঁদে না। নিজেকে সবসময় স্ট্রং দেখায়, কিন্তু শুধু শুভ আর ওর বাবার সামনে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না।

শুভ: এখন কি হয়েছে বল আমায়।

রশ্নি শুভকে ইয়াশের করা কাজের ব্যাপারে বলতে পারবে না।
তাই ওর কাছ থেকে সরে আসলো।

রশ্নি: কিছু না! তুই শুধু কাওকে বলিস না যে আমি কেঁদেছিলাম।

শুভ: ঢং কত! আচ্ছা এবার খাবারটা খেয়ে নে!

রশ্নি: আমি খাবো না!

শুভ: দারা ঢোল বাজিয়ে সবাইকে বলছি যে তুই কাঁদছিলি।

বলে উঠে যেতে নেয়
রশ্নি ওকে ধরে ফেলে।

রশ্নি: আআআআ😒

শুভও হেসে খাবারটা ওর মুখে পুরে দিলো।

.

পরেরদিন……….

রশ্নি কালকের ব্যাপারটা নিয়ে এমনিই রেগে ছিল তাই ভার্সিটিতে গিয়ে ওর কোনো বন্ধু বান্ধবদের সাথেও কথা বলেনি।

কিন্তু ওরা ঠিকই রশ্নির কি হয়েছে তা জানার জন্য ওর পিছে পিছে ঘুরছে।

রশ্নি এক কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বড় বড় কদম ফেলে আগে বাড়ছিল।

তখন কোথাথেকে একটা ছেলে এসে রশ্নির সামনে হাটু গেড়ে বসে পড়ে।
ছেলেটার নাম রাফসান।

রাফসান: রশ্নি আই লাভ ইউ সো মাচ।
প্লিজ আমাকে এক্সেপ্ট করে নাও সত্যি বলছি খুব ভালোবাসি তোমায়।
তোমায় ছারা আমি বাঁচতে পারবো না।

শুভ: আজকে এই গেছে।
রাতুল: পুরো ফিনিশ।

রশ্নির এমনিতেই মেজাজ সপ্তমে ছিল তার উপর আবার এই নমুনাটা।

তবুও রশ্নি নিজের রাগটাকে সংযত করে নিলো।

রশ্নি: সরি ভাইয়া কিন্তু আমার এসবের প্রতি কোনো ইন্টারেস্ট নাই সো তুমি যেতে পারো।

রাফসান: প্লিজ এভাবে বলো না। দেখো আমি সত্যি বলছি তোমাকে ছারা থাকতে পারবো না।

রশ্নি ওরা সবাই অনেক বুঝানোর চেষ্টা করলো কিন্তু ছেলেটা কারো কোনো কথাই শুনছে না।
উল্টো সুইসাইড করার হুমকি দিচ্ছে।

রশ্নি: ব‍্যাস………

রশ্নির চিৎকারে সবাই নিজের কান চেপে ধরলো।

রশ্নি: শুভ এটাকে এখানেই থেমে যেতে বল নাহলে কিন্তু আমি কিছু একটা করে ফেলবো।

শুভও গিয়ে ছেলেটাকে বুঝানোর চেষ্টা করলো,
কিন্তু নো লাভ নো ফায়দা।

রশ্নি: এই অনেক হয়েছে এবার সামনে থেকে সর।

রাফসান: দেখো রশ্নি আমি মজা করছি না
আমি কিন্তু সত্যিই হাত কেটে ফেলবো!

রশ্নি: হাত কাটবি তাই না?
এই শুভ, রাতুল ধরতো এই সালারে।

রশ্নির কথায় ওরা দুইজন গিয়ে রাফসানকে ধরে ফেলল!

রশ্নি রাফসানের হাত থেকে ব্লেডটা নিয়ে নিলো
আর রাফসানের মুখের কাছে ঘুরাতে লাগলো

আর রাফসান এতক্ষনে ছাড় পাওয়ার জন্য ছুটাছুটি করা শুরু করে দিয়েছে

রশ্নি: হাত কাটলে মরতে টাইম লাগবো, এর থেকা ভালো আমি তোর গলাটাই কাইটা দেই তাড়াতাড়ি মরবি

বলেই রশ্নি ব্লেডটা দিয়ে একটা টান মারে
আর সাথে সাথে রক্ত বেরোতে শুরু করে

তারপর রশ্নি ব্লেডটা শুভকে ফেলে দেওয়ার জন্য দিয়ে দেয়

রশ্নি: রশ্নিকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করতে এসোনা সোনা,,,,কারন ওর মনটা পাথরের তৈরি

To be continued………..

#Your_psycho
#A_Devils_Love
#Part_03

#Written_by_Aruhi_khan (ছদ্মনাম)

.

.

.

রশ্নি: রশ্নিকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করতে এসোনা না
সোনা, কোনো লাভ হবে না।
কারন তার মনটা পাথরের তৈরি।

বলে ব্যাগটাকে অন্য কাঁধে নিয়ে হেটে ভিতরে চলে গেল।

আর এদিকে রাফসান মাটিতে বসে কাঁদছে।

(ওই সময় রশ্নি ওর হাতের উপরের পাতলা চামড়াটা কেটে দেয়। যেটাতে রাফসানের মরার কোনো চান্সই নেই।
আর গলা কেটে দিবে বলে তো জাস্ট ভয় দেখিয়েছিল।)

সানা: নেক্সট টাইম থেকে আর আমাদের বান্ধুপির সাথে পাঙ্গা নিও না, কেমন খুকুমণি?🥴

রাতুল: না দোস্ত এটা খুকুমণি না “খুকুমনা”

সবাই এক সাথে হেসে দিলো।

অন্তর: শুন নিজের ভালো চাইলে নেক্সট টাইম থেকে আর রশ্নির আসে পাশেও ঘুরিস না। এই চল তো সবাই।

ওরা নিজেদের ক্লাস এটেন্ড করতে চলে গেল।

আর এদিকে রাফসান সবার রিয়েকশন দেখে অবাক।

কারন সেখানে উপস্থিত কারোই এদের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই।
কিন্তু অন্য কোনো সময় এমনটা হলে হয়তো অনেকেই ফ্রির বিনোদন উপভোগ করতে চলে আসতো।

রাফসান বুঝতে পারলো রশ্নির কাছে এসব কোনো ব্যাপার না। আর সেখানের সবাইও এগুলো দেখে অভ্যস্ত তাই তারাও অবাক হলো না।

.

ক্লাস শেষে সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিল,
হঠাৎ রশ্নির ফোনটা বেজে উঠে।

রশ্নি দেখলো স্ক্রিনে “জোৎস্না আন্টি” নামটা ভেসে উঠেছে।

জোৎস্না রশ্নিদের বাড়িতে কাজ করে।
কিন্তু রশ্নির সাথে খুব ক্লোজ, আর উনি অনেক সময় রশ্নিকে অনেক ভাবেই হেল্প করেন।

রশ্নি কলটা রিসিভ করে কানের কাছে ধরলো

রশ্নি: মানে টা কি?

— …………………….

রশ্নি: আচ্ছা আমি আসছি

ফোনটা কেটে রশ্নির বাইকে গিয়ে বসল

সানা: ওই ছেড়ি খাড়া

রশ্নি: দেখ আমার এখন যেতে হবে তোদের সাথে পরে কথা বলবো

অনু: কিন্তু যাস টা কই?

রশ্নি: জোৎস্না আন্টি ফোন দিয়া কইলো রশ্নিরে নাকি কারা দেখতে আসছে তাও আবার বিয়ের জন্য। 🥴

রাতুল: তাহলে তুই এখন কি করবি?

রশ্নি: এতগুলো বছর আমার সাথে থাকার পর আজ এই কথা তোমাদের মুখে মানায় না জানুরা (বাঁকা হেসে)

তারপর তাদের থেকে বিদায় নিয়ে বাইকটা স্টার্ট দিলো।

.

ঠাস ঠাস করে গেইটে বাড়ি পড়াতে রেহেনা বেগমের বুঝতে একটুও বাকি রইল না যে তার গুণধর মেয়ে এসেছেন।

উনি এসে দরজাটা খুলে দিলেন।

রেহেনা: আমাদের বাড়িতে কলিং বেলও আছে।

রশ্নি: কারা দেখতে এসেছে রশ্নিকে?

রশ্নির কথায় রেহেনা বেগম জোৎস্না আন্টির দিকে চোখ গরম করে তাকালেন।

তা দেখে উনি মাথা নামিয়ে নিলেন

রশ্নি: তুমি উনাকে এভাবে কি দেখছো? আমার কথার উত্তর দাও!

রাশিদ খানও সেখানে উপস্থিত হলো।

রশ্নি: পাপা কি হচ্ছে এসব? তুমিও আমার সাথে বেইমানি করলে!

রাশিদ: তোমার মাই ভালো জানেন।

রেহেনা: তুমি ওনাদের একা বসিয়ে রেখে চলে এসেছি কেন? যাও ওদের কাছে গিয়ে বস।

রাশিদ খানও মুখ বেকিয়ে চলে গেলেন।

রেহেনা: আর তুমি(রশ্নিকে উদ্দেশ্য করে)
এতদিন অনেক তিড়িং বিড়িং করেছ,
এখন যাও উপরে তোমার রুমে একটা ড্রেস রাখা আছে!
ওটা পরে লক্ষী মেয়েদের মতো রেডি হয়ে ওদের সামনে এসে বসো।

বলে রেহেনা বেগম সেখান থেকে চলে গেল।

রশ্নি: সরি মাম্মাম কিন্তু তোমার মেয়ে যে মোটেও লক্ষী নয়!
বলে বাঁকা হাসলো।

.

কিছুক্ষন বাদে রশ্নি নীচে নেমে এলো,
কিন্তু নিজের গেট আপেই।

আর হাতে হকি স্টিক।

রশ্নি: তো আঙ্কেল আর আন্টিরা, আমি বেশ সম্মান সহিত আপনাদের সামনে এটা বলিতেছি, যে এই বিয়ে টা আমি করবো না। তাই আপনার এবার আসতে পারেন।

ছেলের বাবা: আপনাদের মেয়ে কি বলছে এসব?

ছেলের মা: আর বিয়ে না করলে আমাদের আসতেই বা বললেন কেন?

রেহেনা: ওর কথা আপনারা কিছু মনে করবেন না! ছোট মানুষ কি বলতে কি বলে ফেলছে।

রশ্নি: ঠিক আছে প্রথমে তো ভালো ভাবেই বলে ছিলাম। তোমাদের যখন ভালো লাগে নি, তাহলে এখন দেখো এই ছোট মানুষ কি করতে পারে।

বলেই হাতের হকি স্টিকটা দিয়ে টিভির গ্লাসের মধ্যে বাড়ি দিলো।

আর তা সাথে সাথে ভেঙে গুড়ি গুড়ি হয়ে গেল।

ছেলে+ছেলের মা+ছেলের বাবা= 😱😱

রশ্নি: আপনাদের কি এখনো মন ভরে নি নাকি?

বলে পকেট থেকে গান টা বের করে একদম ঝাড়বাতির হুক বরাবর শুট করে।

আর সেটা মাটিতে চুরমার হয়ে পড়ে যায় আর খুব জোরে একটা বিকট শব্দ হয়ে।

ছেলের বাড়ির লোকেরা দৌড়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।

কিন্তু ঘটক এখনো সেখানে বসে ছিল।

ঘটক: ছি ছি ছি ছি আপনাদের বাড়ির মেয়েরা পিস্তল নিয়ে ঘুরে নাকি।

রশ্নি: বাকিদেরটা জানি কিন্তু আমি ঘুরি আর এটা দিয়ে কাওকে শুট করে মারতেও পারি।

রশ্নির কথায় ঘটক কয়েকটা শুকনো ঢোক গিললো

উনি যে সোফাটায়ে বসে ছিলেন তার এক সাইডে পা রেখে তার দিকে কিছুটা ঝুকে দাঁড়ালো রশ্নি

তারপর গানটা তার গালে স্লাইড করতে করতে বললো
— আগের বার আপনার উপর যে ডিম ছুড়ে মারছিলাম তাতে মেইবি আপনি স‍্যাটিসফাইড হন নি তাই এবার বুলেট এর বাড়ী খেতে চলে এসেছেন

ঘটক কাঁপতে কাঁপতে বললেন
— আমি তো তোমার ভালোর জন্যই আসি বলো, বেশি বয়স হয়ে গেলে আবার মেয়েদের বিয়ে হয়ে না।

রশ্নি: জি জি একদম ঠিক বলেছেন! দেখুন আমার শরীরের চামড়াও ঝুলে গেছে! একদম সাড়ে ঊনিশ বছরের কুটিকুটি বুড়ি হয়ে গিয়েছি! আচ্ছা আপনার মা না একটা বয়স্ক ভাতা না কি যেন বলে, হোয়াটেভার ওটা পায়।
আপনি বুঝেছেন তো, তাহলে প্লিজ আমাকে ওটা পাওয়ার ব্যবস্থা টা একটু করে দিবেন।

ঘটক: মা আমার, ভুল হয়ে গেছে! যেতে দে প্লিজ আর কখনো তোদের বাড়ির আসে পাশেও আসবো না।

রশ্নি: ইন্টেলিজেন্ট!

রশ্নি তার কাছ থেকে সরে আসলো!
আর রশ্নি সরে যেতেই উনি ভৌ দৌড় দিলেন।

রেহেনা: এটা কি হলো রশ্নি?

রশ্নি: যেটা দেখলে এন্ড লিসেন্ট নেক্সট টাইম থেকে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করতে যেও না
তাহলে ফল টা এমনই হবে।

বলে চুইংগাম চিবুতে চিবুতে, একটা ড‍্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে নিজের রুমে চলে গেল।

রেহেনা: সব তোমার দোষ।

রাশিদ: আজব তো! আমি আবার কি করলাম?

রেহেনা: তুমিই তো তোমার মেয়েকে আস্কারা দিয়ে মাথায় তুলেছ।

কি দরকার ছিল গান লাইসেন্স করে দেওয়ার।

উফ আমি কিভাবে যে ঘটক অপার কাছে মুখ দেখাবো।

রাশিদ: শুন আমার মেয়ে যা করেছ একদম ঠিক করেছে। এটা তো হওয়ারই ছিল। হুহ কথা নেই বার্তা নেই হুট করে গিয়েছিল মেয়ের বিয়ে দিতে।

আর শুন গানটা ওর সেফটির জন্য প্রয়োজন।

রেহেনা: হুহ সেফটির জন্য, তোমার মেয়ের কিছু হবে না তুমি বরং বাকিদের কিভাবে তোমার মেয়ের কাছ থেকে সেফ রাখবে সেটা ভাবো।

আমার জাস্ট ভালো লাগে না….

বলে নিজের রুমে চলে।

রেহেনা বেগম নিজের রুমে যেতেই রশ্নি নেমে এলো,
রশ্নি এতক্ষন এখানেই দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছিলো।

রশ্নি: থ্যাংকইউ আমার গুলু মুলু পাপা টা!

রাশিদ: থ্যাংকস কেন?

রশ্নি: কারন আমি জানি জোৎস্না খালাকে তুমিই কল দিতে বলেছিলে।😁

রাশিদ: বাহ আমার মেয়েটা দেখছি বেশ বুদ্ধিমান হয়ে উঠেছে একদম তার বাবার মতো।😎

রশ্নি: ঐযে আবার।😑

আচ্ছা চলো তোমাকে আর জোৎস্না খালাকে আজ আমি আমার বাইকে ঘুরাবো

জোৎস্না: আমারে মাফ করেন কিন্তু আমি আর আপনার টমটমে বহুম না,
আপনি যেই জোরে চালান।😨

রশ্নি: ওর নাম টমটম না ধাণ্য!😡

জোৎস্না: জেইডাই হোক আমি যামু না😨

রশ্নি: পাপা তুমি যাবে তো?

রাশিদ: Of course!

তারপর রশ্নি আর ওর বাবা বেরিয়ে গেল।

ওরা বেরিয়ে যেতেই রেহেনা বেগম ইয়াশকে কল দিলেন।

রেহেনা: হ্যালো ইয়াশ.

ইয়াশ: …………….???

রেহেনা: হ্যা তুমি বাসায় এসো আমি সব বলছি।

ইয়াশ: ……………..???

রেহেনা: হ্যা ঠিক আছে।

কিছুক্ষন কথা বলে রেহেনা বেগম কল টা কেটে দিলেন

রেহেনা: হুহ নিজেকে খুব চালাক ভাবে এরা কিন্তু ভুলে যাস না যে আমিও তোর মা😎

.

.

.

To be continued………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here