#বিষাক্তফুলের_আসক্তিপর্ব-০৬

0
429

#বিষাক্তফুলের_আসক্তিপর্ব-০৬
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা

ঘন্টা খানেক সময় শাওয়ার নিয়ে রুমে এসেছে তাজ। মাথায় ঘুরছে নানা প্রশ্ন। কিছুতেই কিছু মিলাতে পারছে না। তাজের মনে হচ্ছে সে ক্রমশ একটা ষড়যন্ত্রের জালে জড়িয়ে যাচ্ছে। যত বের হওয়ার চেষ্টা করছে ততটাই বাজেভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে। ফোনের রিংটোনে ভাবনায় ছেদ পড়লো তার। ফোন হাতে নিয়ে মৌয়ের নাম্বার দেখে বুকটা কেমন ধক করে উঠলো। এতসবের মধ্যে মৌয়ের কথা যেনো মাথা থেকে একেবারেই বেড়িয়ে গিয়েছিলো। হঠাৎ করেই মৌয়ের উপর তীব্র অভিমান অনুভব করলো তাজ। মানুষ তো তার উপর অভিমান করে যাকে সে ভালোবাসে। কিন্তু তাজ তো মৌকে কখনো ভালোবাসেনি তবে কেনো এতো অভিমান হচ্ছে। না ভালোবেসে তো, বন্ধু হিসাবে, সত্যি কী তাই ? কেনো মনে হচ্ছে সারা পৃথিবী অবিশ্বাস করলেও মৌয়ের উচিত ছিলো তাজকে বিশ্বাস করা। তাজ নাহয় মৌকে সেভাবে ভালোবাসেনি কিন্তু মৌ তো বেসেছে। তবে কেনো বিশ্বাস করতে পারলো না তাজকে। তাজের ভাবনার মাঝেই কল কেটে গেলো। সাথে সাথেই আবার বেজে উঠলে রিসিভ করলো তাজ।

গম্ভীর গলায় বললো, হ্যালো।

তাজের আওয়াজ শুনতেই ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো মৌ। তাজ বেশ শান্ত ভঙ্গিতে শুনতে লাগলো মৌয়ের কান্না। তবে বুকের ভেতর কেমন একটা করছে মৌয়ের কান্না শুনে। মৌকে সবসময় হাসিখুশি দেখে এসেছে তাজ। তাই হয়তো কান্নাটা ঠিক মানতে পারছে না।

তাজ দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, কিছু বলবি নাকি কেটে দিবো কল।

মৌ এবার শব্দ করে কেঁদে দিলো, কেনো এমন করলে তাজ ?

তাজের অজানা কারণে রাগ হচ্ছে না এখন বরং কষ্ট হচ্ছে। মানতে পারছে না মৌও তাকে ভুল বুঝছে।

তাজ বেলকনিতে গিয়ে দেয়াল ঘেঁষে ফ্লোরে বসে শান্ত গলায় বললো, মৌ আমি তোকে কখনো বলিনি ভালোবাসি। কিন্তু উনত্রিশ বছর ধরে তোকে চিনি। আমাকে যদি কেউ এসে বলে মৌ এমন জঘন্য একটা কাজ করেছে। আমি কিন্তু বিশ্বাস করবো না, যতক্ষণ না তুই নিজে সেটা স্বীকার করছিস। কারণ আমি চিনি তোকে। অপরদিক দেখ তুই আমাকে হাজারবার বলেছিস ভালোবাসি। কেউ একজন এসে বললো তাজ এমন আর তুই বিশ্বাস করে নিলি ? একবার মনে হয়নি তাজ এমন কিছু করতে পারে না। ভালোবাসার কথা নাহয় বাদই দিলাম, উনত্রিশ বছরে তুই এই চিনলি আমাকে ? মৌ শুধু ভালোবাসি বললেই হয় না, তার উপর বিশ্বাস রাখতে হয়। সারা পৃথিবীর মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে শুধু ভালোবাসার মানুষের কথায় যেদিন বিশ্বাস করতে পারবি সেদিন বুঝবি তুই তাকে ভালোবাসিস।

মৌ কী বলবে বুঝতে পারছে না। সত্যি তো শুধু ভালোবাসলে হয় না বিশ্বাস থাকতে হয়। বিশ্বাস হচ্ছে ভালোবাসার ভিত্তি, বিশ্বাসই যদি নড়বড়ে হয় তাহলে ভালোবাসা টিকে থাকবে কীভাবে ?

মৌ কিছু বলছে না দেখে তাজ বললো, রাখছি এখন।

মৌ তাড়াতাড়ি বললো, না।

আবার কিছুটা সময় নিরবতায় কেটে গেলে তাজ বললো, একদিন সব সত্যি সামনে আসবে মৌ। আমি সেদিনের অপেক্ষায় আছি। সেদিন তোরা আমার চোখে চোখ রাখতে পারবি তো ? তোর দোষ নেই রে, যেখানে আমার নিজের বাবা-মা আমাকে বিশ্বাস করতে পারছে না সেখানে তোর কী দোষ। তবে মনে রাখিস সত্য কোনোদিন লুকিয়ে রাখা যায় না। সত্য হচ্ছে দিনের আলোর মতো, নিজের পথ খোঁজে ঠিক বেড়িয়ে আসবে আর সেদিন তোরা কীভাবে আমার চোখে চোখ রাখতে পারিস আমি দেখবো। সেদিন কাউকে মাফ করবো না আমি। আমার বাবা-মা আমাকে অবিশ্বাস করার চরম শাস্তি পাবে সেদিন আর সাথে তুইও। এসবের পিছনে যে আছে তাকে আমি ছাড়বো না। প্রত্যেককে তার শাস্তি ভোগ করতে হবে। এই গল্পটির সবচেয়ে অসহায় ব্যাক্তি আমি, তোরা কেউ নয়। নিজে সত্যিটা জেনেও প্রমাণ করতে না পারার মতো অসহায়ত্ব আর কিছুতেই নেই। নির্দোষ হয়েও সবার ঘৃণার দৃষ্টি সহ্য করার মতো কষ্ট আর কিছুতে নেই। একটু একটু করে গড়ে তোলা স্বপ্ন, ক্যারিয়ার চোখের সামনে ধূলোয় মিশে যাওয়ার মতো তীব্র যন্ত্রণা কিছুতেই নেই। কাউকে ছাড়বো না আমি, কাউকে না। আমার প্রতিটা অপমানের প্রতিশোধ নিবো।

মৌয়ের হঠাৎ মনে হলো সে ভুল করেছে তাজকে অবিশ্বাস করে। অন্যায় করে এতোটা কনফিডেন্স কারো থাকতে পারে না। মৌয়ের চোখে ভেসে উঠলো গত উনত্রিশটি বছর, যেটা সে তাজের সাথে কাটিয়েছে। স্কুল থেকে প্রপোজ পাওয়া শুরু হয়েছিলো তাজের, সব পায়ে মাড়িয়ে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেছে কেবল। মেয়েদের কখনো অসম্মান করেনি, কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি। তাহলে সেই ছেলেটা কীভাবে এমন নিম্ন কাজ করবে। না না আরো দেরি হয়ে যাওয়ার আগে তাজকে সরি বলতে হবে মৌয়ের।

তাজ বললো, রাখছি এখন। বড্ড ক্লান্ত আমি, ঘুমাবো।

মৌ অস্থির গলায় বললো, আ,,আম সরি।

তাজ তাচ্ছিল্যের সুরে বললো, কেনো ?

মৌ জিহ্বা দিয়ে শুকনো ঠোঁট ভিজিয়ে বললো, ক্ষণিকের জন্য পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম।

আগামীকাল কেউ নতুন কিছু বললে আবারও পথ হারিয়ে ফেলবি। তুই বরং আগে নিজের সঠিক পথটা খোঁজে বার কর। বারবার পথ হারালে সমস্যা তোরই হবে।

মৌকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন কেটে দিলো তাজ। সবকিছু বিষাক্ত লাগছে তার কাছে। যতদিন তার জীবনে তিতির নামক বিষাক্তফুলটা আছে ততদিন সব এমনই বিষাক্ত থাকবে।

তাজ বিড়বিড় করে বললো, এভাবে হবে না তাজ। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা কর। এই ষড়যন্ত্রের জাল থেকে বের হওয়ার একটা রাস্তা ঠিক পেয়ে যাবি তুই।

৭.
গত কয়েকদিনের অনিয়মে একদমই দূর্বল হয়ে গেছে তিতির। খাওয়াদাওয়া না করা, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, ঠিকমতো না ঘুমানো সব মিলিয়ে শরীরটা আর পেরে উঠেনি। তাজ সারাদিন এক হসপিটাল থেকে আরেক হসপিটাল ছুটালেও এক দানা খাবার খাওয়ানোর প্রয়োজন মনে করেনি। তাই হঠাৎ করেই চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে এসেছে। পিটপিট করে চোখ খোলে সামনে ইরিনাকে বসে থাকতে দেখে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো।

ইরিনা সেটা খেয়াল করে গম্ভীর গলায় বললো, এতো ছটফট করার প্রয়োজন নেই।

সাইড টেবিলে দেখিয়ে বললো, খাবারগুলো খেয়ে মেডিসিন খেয়ে নাও আর নিজের খেয়াল রাখতে শেখো। নিজের জন্য না হলেও যে আসছে তার জন্য।

কথাগুলো বলে ইরিনা বের হয়ে গেলো রুম থেকে। তিতির বেডে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো। বড্ড ক্লান্ত লাগছে তার। সাইড টেবিলে তাকিয়ে খাবার দেখে ধীরে ধীরে উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে নিলো, খুব বেশি ক্ষুধা পেয়েছিলো। খাবার খেলেও মেডিসিন খেলো না। এতক্ষণে খেয়াল হলো এটা তাজের রুম নেই। সেটা বুঝতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। আজ অন্তত একটু ঘুমানো যাবে। তিতির কিছু না ভেবে চুপচাপ শুয়ে পড়লো।

ফজরের আযানে ঘুম ভাঙলো তিতিরের। কয়েকদিনের ঝামেলায় ঠিকঠাক নামাজও পড়া হয়নি। ওযু করে এসে নামাজ পড়ে নিয়ে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো। সকালের সতেজ বাতাসে মনটা একটু শান্ত হলো। সকালের ব্রেকফাস্ট তিতিরের রুমে দিয়ে গেলো এক সার্ভেন্ট, তিতিরও চুপচাপ খেয়ে নিলো। দশটার দিকে রুম থেকে বেড়িয়ে অনেকটা ইতস্তত হয়ে তাজের রুমের দিকে গেলো। গতকালের ড্রেসটাই এখনো পরে আছে সে। মুলত একটা ড্রেস নিতেই তাজের রুমে আসা। দরজায় নক করে সাড়াশব্দ না পেয়ে রুমে গিয়ে দেখলো তাজ নেই। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে কাবার্ড থেকে একটা ড্রেস নিয়ে দ্রুত বের হয়ে গেলো তাজের রুম থেকে। গতরাতে যে রুমে ছিলো সেখানে গিয়ে শাওয়ার নিয়ে রেডি হলো। তিতির ঠিক করেছে আজই সে মৌয়ের সাথে দেখা করতে যাবে। রেডি হয়ে বের হতেই ড্রয়িংরুমে ইরিনার সামনে পড়লো।

ইরিনা গম্ভীর গলায় বললো, কোথায় যাচ্ছো ?

তিতির নিচু গলায় বললো, আমার একটু কাজ ছিলো বাইরে। বেশি সময় লাগবে না তাড়াতাড়ি চলে আসবো ?

ইরিনা শান্ত দৃষ্টিতে কিছুটা সময় তাকিয়ে রইলো তিতিরের দিকে। তবে আর কিছু বললো না, এদিকে তিতির কনফিউজড সে যাবে কী যাবে না।

কিছু সময় পর ইরিনা গম্ভীর গলায় বললো, তাজ ফিরার আগে যেনো তোমাকে বাসায় দেখি আমি।

তিতির মাথা নাড়িয়ে বের হয়ে গেলো বাসা থেকে। মুখে মাস্ক পরে গেইটের বাইরে এসে একটা রিকশা ডেকে তাতে উঠে পড়লো। উদ্দেশ্য মৌয়ের বাসা, তারপর নিজের ফ্ল্যাটে গিয়ে নিজের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র আনতে হবে। তার জানা নেই খান ভিলায় আর কতদিন থাকতে হবে তাকে।

কলিংবেল বাজাতে গিয়েও তিতির হাত সরিয়ে নিচ্ছে বরাবর। তাকে দেখে এ পরিবারের সবার কেমন রিয়াকশন হবে সেটা ভাবতেই ঘাম ছুটে যাচ্ছে। কিন্তু মৌয়ের সাথে কথা বলা যে খুব বেশি প্রয়োজন তার। অনেকটা সাহস নিয়ে কলিংবেল বাজালো তিতির। কিছুক্ষণ পর দরজা খোলে দিলো মৌয়ের মা রেহেনা।

তিতিরকে দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বললো, এই মেয়ে তুমি এখানে কী করছো ? আমার মেয়ের জীবনটা নরক করে শান্তি হয়নি তোমার ? আবার কী ধ্বংস করতে এসেছো এখানে।

তিতির ভীত গলায় বললো, আমি মৌ আপুর সাথে একটু কথা বলতে চাই।

রেহেনা অনেক রেগে গেলো, তুমি এখনই এখান থেকে না গেলে খুব খারাপ হয়ে যাবে। কারো সাথে কথা হবে না তোমার, যাও এখান থেকে।

চিৎকার চেঁচামেচি শুনে মৌ বাইরে এসে বললো, কী হয়েছে মা এভাবে চেঁচামেচি করছো কার সাথে ?

তুই রুমে যা মৌ।

দরজায় তিতিরকে দেখে অনেক বেশি অবাক হলো মৌ। তিতিরকে গায়ে নিজের কেনা ড্রেস দেখে বুকে চিনচিন ব্যাথা অনুভব করলো। মৌ নিজেই এগুলো কিনে তাজের কাবার্ডে রেখেছিলো। এতে তাজ অনেক হেসেছিলো তার কান্ড দেখে।

একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে শান্ত গলায় বললো, ওকে আসতে দাও। আমারও কিছু কথা আছে ওর সাথে।

রেহেনা বললো, কিন্তু।

প্লিজ মা, আসতে দাও।

রেহেনা তিতিরের দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দরজা থেকে সরে দাঁড়ালেন৷ তিতির ধীর পায়ে প্রবেশ করলো ভেতরে। মৌ তাকে ইশারা করলো তার সাথে যেতে। তিতির বাধ্যঁ মেয়ের মতো মৌকে অনুসরণ করলো। মৌ তিতিরকে নিয়ে নিজের বেলকনিতে গিয়ে বসলো।

মৌ শান্ত গলায় বললো, কী বলবে বলো ?

তিতির কিছুটা সময় থম মেরে বসে থেকে চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করে বললো, স্যার সত্যি বলছে তার কোনো দোষ নেই।

মৌ অনেক অবাক হলো তিতিরের কথা শুনে। তাজ নিদোর্ষ শুনে না বরং তিতির তাকে সত্যিটা বলছে বলে অবাক হচ্ছে।

তিতির আবার বললো, না আমি প্রেগনেন্ট আর না স্যারের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক ছিলো কোনো কালেই।

রাগে শরীরের রক্ত গরম হয়ে আসছে মৌয়ের। ইচ্ছে করছে তিতিরকে গলা টিপে মেরে ফেলতে। দুটো জীবন নষ্ট করে, দুটো পরিবারের মান সম্মান মাটিতে মিশিয়ে মেয়েটা কতো সহজে সব স্বীকার করে নিচ্ছে। আদোও বুঝতে পারছে মেয়েটা কত বড় অপরাধ করেছে।

মৌ লম্বা শ্বাস টেনে নিজেকে শান্ত করলো, তাহলে এসব কেনো করলে ?

অকপটে তিতিরের উত্তর, বাধ্যঁ হয়ে।

মৌ অবাক হয়ে বললো, মানে ?

এবার টলমলে চোখে তিতির তাকালো মৌয়ের দিকে ভেজা গলায় বললো, আপনার জীবনের বেঁচে থাকার কারণ যে মানুষটা। কেউ যদি তার মাথায় গান তাক করে বলে তার কথা না শুনলে শেষ করে দিবে মানুষটাকে। আপনি কী করতেন আপু ? আমি স্বার্থপর মানুষ আপু, পারিনি নিজের স্বার্থের সাথে আপোষ করতে।

তিতিরের গাল বেয়ে এক ফোটা নোনাপানি গড়িয়ে পড়লো। মৌ বিস্ময় কাটিয়ে উঠতে পারছে না। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তিতিরের দিকে।

মৌ কাঁপা গলায় বললো, কে করেছে এমনটা আর কেনো ?

তিতির চোখ বন্ধ করে একটা ঢোক গিলে বললো, র,,,

মৌ কোথায় তুই ?

কারো আওয়াজে থেমে গেলো তিতির। এই আওয়াজ তার খুব ভালো করে চেনা। এই তো সেই নরপশুটা যে সবার জীবন এলোমেলো করে দিয়েছে। ভয়ে গলা শুকিয়ে এলো তিতিরের। কী করবে বুঝে উঠার আগেই বেলকনিতে প্রবেশ করলো রায়হান, মিস্টার রায়হান চৌধুরী। রহমান চৌধুরীর বড় ছেলে। তিতির বড় বড় চোখে তাকালো রায়হানের দিকে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের আনাগোনা দেখা গেলো তিতিরের।

রায়হান শান্ত দৃষ্টিতে একবার তার দিকে তাকিয়ে আবার মৌয়ের দিকে তাকালো, শরীর কেমন এখন তোর ?

মৌ কিছুটা সময় চুপ থেকে বললো, আলহামদুলিল্লাহ। তুই এখানে কেনো ?

তিতির অবাক হয়ে তাকালো মৌয়ের দিকে। মৌয়ের কথা শুনে তার বুঝতে অসুবিধা হলো না রায়হান শুধু তার পরিচিত নয় বরং কাছের কেউ। তিতির বুঝতে পারেনি রায়হান মৌয়ের পরিচিত। তিতির তাজের সাথে রায়হানের শত্রুতার কারণ জানে না। তিতির ভাবতেও পারেনি রায়হান মৌয়ের পরিচিত কেউ।

রায়হান তিতিরের দিকে তাকিয়ে শান্ত আর স্বাভাবিক গলায় বললো, মেয়েটা কে ?

রায়হানের শান্ত গলায়ও ভয়ে কেঁপে উঠলো তিতির।

মৌ বললো, আমার পরিচিত একজন।

তিতির হঠাৎ বলে উঠলো, আজ আমি আসি আপু।

মৌ বললো, কিন্তু..

মৌয়ের কথা সম্পন্ন হওয়ার আগেই তিতির উঠে বের হয়ে গেলো দ্রুত। মৌ আটকানোর সময়ও পেলো না। তিতির কিছু বলতে চাইছিলো সেটা সম্পূর্ণ শুনতে পারলো না মৌ।

রায়হান বললো, মেয়েটা এভাবে চলে গেলো কেনো ?

তোকে দেখে হয়তো আনইজি ফিল করছিলো। এখন কী মনে করে এসেছিস সেটা বল।

তোর খোঁজ নিতে এলাম।

মনে মনে বললো, আমি ঠিক সামনে না এলে তো আমার দুই বছরের সাজানো খেলা এক মিনিটে শেষ করে দিচ্ছিলো তিতির। এর ফল তোকে ভোগ করতে হবে তিতির।

চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here