#বিষাক্তফুলের_আসক্তি পর্ব-৩০
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
তাজ ভাবলো হয়তো সে ভুল শুনেছে।
পরক্ষণে আবারও ধ্রুবর গলা শোনা গেলো, বাবা দরজা খোলো না কেনো ?
তাজ উঠে ছুটে গিয়ে দরজা খোলে দিলো। দরজার সামনে ছোট্ট ধ্রুবকে দেখে চোখ ভিজে উঠলো। জাপ্টে কোলে তুলে নিয়ে সারা মুখে অজস্র চুমুতে ভড়িয়ে দিলো।
আপনার মতো মানুষের থেকে এমনটা আশা করিনি তাজ ভাইয়া।
আহানের মলিন আওয়াজ শুনে তার দিকে তাকালো। তাজের হাতে এখনো পি*স্ত*লটা রয়েছে। আহান সেটা তাজের হাত থেকে নিয়ে নিলো।
প্রথম থেকেই আপনার এমন স্বাভাবিক আচরণই আমার কাছে অস্বাভাবিক লেগেছিলো। গাড়িতে বসে পুরোটা বিষয় চিন্তা করলে হঠাৎ একটা জিনিস খেয়াল করেছি মনে হলো। আপনি যখন ধ্রুবকে কোল থেকে নামিয়ে তিতিরের রুমের দিকে যাচ্ছিলেন তখন আপনার কোমরে গুঁজে রাখা পি*স্ত*লের এক অংশ চোখে পড়ে আমার। তখন ব্যাপার গুরুত্ব না দেওয়ায় বুঝতে পারিনি। কিন্তু গাড়িতে বসে সবটা চিন্তা করতেই হিসাব মিলে গেলো। এটা আপনি কী করছিলেন ? ভাইয়া আত্মহত্যা মহাপাপ সেটা কী আপনি ভুলে গিয়েছিলেন ? ইহকালের সামান্য কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে অনন্তকাল জাহান্নামের আগুনে পুড়ার পথ বেছে নিচ্ছিলেন ? সেই অসহনীয় কষ্ট কীভাবে সহ্য করতেন একবার ভেবেছিলেন। সেখান থেকে কোথায় পালাতেন ? একবার ধ্রুবর কথা মনে হয়নি আপনার ? ছেলেটা জন্মের পর থেকেই মাতৃহারা, এখন আপনি ওকে পুরোপুরি এতিম করে দিচ্ছিলেন।
তাজ এবার ডুকরে কেঁদে উঠলো, এতকিছু মাথায় আসেনি আহান। শুধু মনে হয়েছে আমার ছেলেটা যদি সব সত্যি জেনে আমাকে ঘৃণা করে ? নিজের সন্তানের ঘৃণার দৃষ্টি মনে হতেই আমার কলিজা কেঁপে উঠে আহান। আমি অপেক্ষা করতাম আমার সন্তানের জন্য কিন্তু সব জেনে সে যদি আমায় ঘৃণা করে। সেটা আমি সহ্য করতে পারবো না আহান।
মুচকি হাসলো আহান, এখনও চিনতে পারলেন না আমার তুতুলকে।
তাজ প্রশ্নবোধক চাহনি তাকালো, মানে ?
ভাইয়া আমি আপনাকে বলেছিলাম আমার বাবা কতটা জ*ঘ*ন্য অন্যায় করেছিলো তুতুলের পরিবারের সাথে। তবু তুতুল বাবার কোনো অন্যায়ের কথা আমাকে বলেনি। কারণ ও চায়নি আমি আমার বাবাকে ঘৃণা করি। মেয়েটা নিজের বাবাকে খুব বেশি ভালোবাসতো। ও কখনো চায়নি একজন সন্তানের সামনে তার বাবা ছোট হয়ে যাক। সেখানে তুতুল আপনাকে ভালোবাসে তাজ ভাইয়া। সে কীভাবে চাইবে আপনার সন্তান আপনাকে ঘৃণা করুক ? আর আপনাকে ঘৃণা করে আপনাদের সন্তানও নিশ্চয়ই খুব ভালো থাকবে না। কোনো মা চাইবে তার সন্তান খারাপ থাকুক ?
তাজ এতকিছু ভেবে দেখেনি। তার শুধু মনে হয়েছে ধ্রুব যদি জানে সে তার বাবার হিংস্রতার ফল, তবে তাজ তাকে মুখ দেখাতে পারবে না। এসব চিন্তায় তাজ নিজের হিতাহিতজ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। ঠিক ভুল বিচার করতে ভুলে গিয়েছিলো।
তাজ একহাতে জড়িয়ে নিলো আহানকে, এতবড় পাপ করা থেকে তুমি আজ বাঁচিয়েছো আমায়। তোমার এত ঋণ আমি কীভাবে শোধ করবো আহান, ভাই আমার ?
আহান মুচকি হেসে বললো, ভাইয়া বলে ডেকেছি আপনাকে। ভাইয়ের কাছে ভাইয়ের কীসের ঋণ ?
তাজ আহানকে ছেড়ে মুখোমুখি দাঁড়ালো। কে বলবে রায়হান আর আহান একই মায়ের পেটের দুই ভাই। দু’জন সম্পূর্ণ দুই মেরুর মানুষ। রায়হান হয়েছে তার বাবার মতো দূষিত মস্তিষ্কের আর আহান হয়েছে তার মায়ের মতো।
আহান ধ্রুবর গালে হাত রেখে কাঁপা গলায় বললো, আপনার আমানত আমি আপনাকে ফিরিয়ে দিলাম। বাবাইয়ের আঠারো বছর হলে সে তার মায়ের ডায়েরি পড়ে নাহয় ঠিক করবে আপনার কাছে থাকবে কিনা। এখন বরং আপনার কাছেই থাক।
আহান ভেজা চোখে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে আছে। আহানের মনে হচ্ছে নিজের কলিজা ছিঁড়ে অন্যকারো হাতে তুলে দিয়েছে। ধ্রুবর কপালে চুমু খেয়ে কিছু বলতে চাইলো ধ্রুবকে কিন্তু গলা দিয়ে কথা বের হলো না।
তাজের উদ্দেশ্যে বললো, নিজের কলিজা ছিঁড়ে আপনার হাতে দিয়ে গেলাম।
আহান চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই তাজ বললো, ভাইয়া বলে ডেকেছো। ভাইয়ার কাছে থেকে যাওয়া যায় না ? মা তো পায়নি আমার ছেলেটা, দুই বাবার ভালোবাসা পেয়ে নাহয় বড় হোক।
আহান ঘুরে তাকালো না, আমি যেখানেই থাকি আমার সব ভালোবাসা থাকবে আমার বাবাইয়ের জন্য।
আহান দ্রুত বের হয়ে গেলো খান ভিলা থেকে। ন্যান্সি বারবার কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারছে না। তাজ আর আহানের কথার মাঝে ইরিনা, ন্যান্সি আর পাখি ছিল নিরব ভূমিকায়। সব শুনেছে তাই কিছু বলতে পারছে না ন্যান্সি। এদিকে পাখি ধ্রুবর জন্য কান্না করতে করতে হেঁচকি তুলে ফেলেছে। ধ্রুবকে ছাড়া যে পাখিরও এক মুহূর্ত চলে না। ন্যান্সি দুধের শিশুকে কোলেপিঠে করে এতবড় করেছে তারও বুকটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটা তো মানতেই হবে ধ্রুব তাদের কাছে ছিলো আমানত হিসাবে। আহান বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে, টপটপ নোনাজল গড়িয়ে পড়ছে চোখ থেকে। অনেকগুলো বছর পর আবার হারানোর যন্ত্রণায় পুড়ছে আহান। জীবনের হিসাবের খাতা খোলে বসেছে সে। প্রথমে তুতুলকে হারালো সেই ছোটবেলায়, তারপর বাবা-মা থেকে দূরে চলে যেতে হলো, মাকে হারিয়ে ফেললো চিরতরে, ভাই তো থেকেও ছিলো না কখনো। আহানের আজ নিজেকে বড্ড একা লাগছে। আহান লুকিং গ্লাসে তাকিয়ে পাখিকে দেখলো। এই পুতুলটা ছাড়া জীবনের প্রাপ্তির খাতায় আর কিছু পেলো না আহান। চোখদুটো ঝাপসা হলো আবার।
৩৫.
ছেলেকে নিজের হাতে রেডি করিয়ে দিচ্ছে তাজ। নিজের মতো ছেলেকেও সাদা পাঞ্জাবি পড়িয়ে মাথায় টুপি দিয়ে দিলো। আজকাল তাজ প্রায় সবসময় সাদা পড়ে আর ছেলেকেও পড়ায়। ছেলের হাত ধরে চললো মসজিদের উদ্দেশ্যে। এখন প্রতিটা সকাল এভাবেই শুরু হয় বাবা ছেলের।
মসজিদ থেকে এসে আবারও নিজের সাথে ম্যাচিং করে সাদা আর কালো রঙের কম্বিনেশনে জগিং সুট পড়িয়েছে ছেলেকে আর পায়ে সাদা কেডস। দেখে মনে হচ্ছে জুনিয়র তাজওয়ার খান তাজ। রেডি করিয়ে ছেলের কপালে আর দুই গালে চুমু খেলো তাজ।
মাশাআল্লাহ আমার ছেলেকে একদম প্রিন্স লাগছে। বাবাকে আদর দিবে না বাবার প্রিন্স।
ধ্রুব দাঁত বের করে হেঁসে বললো, দেবে তো।
ধ্রুব নিজের ছোট ছোট হাতদুটো তাজের দুই গালে রেখে কপালে আর দুই গালে চুমু খেলো।
তাজ ছেলেকে কোলে তুলে বললো, আমার সোনা বাবাটা৷ চলো এবার আমরা জগিংয়ে যাবো।
ধ্রুব কোলেই লাফিয়ে উঠে বললো, ইয়ে চলো।
তাজ ধ্রুবকে নিয়ে বাড়ির সামনে গার্ডেনে এক্সারসাইজ করতে লাগলো। ছোট্ট ধ্রুব বাবার সাথে দৌড়াদৌড়ি করছে। ধ্রুবকে পিঠে বসিয়ে পুশআপ করছে তাজ। এভাবেই ছেলের সাথে সব এক্সারসাইজ করছে তাজ। বারান্দায় দাঁড়িয়ে তাদের দেখছে ইরিনা খান। বাড়িটা এখন আর নিরবতায় ছেয়ে থাকে না এখন। ধ্রুব সবসময় মাতিয়ে রাখে বাড়ি। প্রথমদিকে ধ্রুবকে সামলানো কষ্ট হয়েছিলো তাজের। আহান, পাখি আর ন্যান্সির জন্য অনেক কান্না করতো। তাজ এক মুহূর্তের জন্য ছেলেকে কাছ ছাড়া করেনি। দেখতে দেখতে মাস পার হয়ে গেছে। ধ্রুব তাজের সাথেই হাসিখুশি থাকে, তাজকে ছাড়া কিছু বুঝে না। তবে আহান, পাখি আর ন্যান্সিকে খোঁজে মাঝে মাঝে। তখন তাজ বলে নিয়ে যাবে তাদের কাছে।
ইরিনা চলে গেলো ব্রেকফাস্ট বানাতে। ধ্রুবর খাবার ইরিনাকে নিজের হাতে বানাতে হয়। ধ্রুবর খাবার নিয়ে অন্যকারো উপর ভরসা করে না তাজ।
এক্সারসাইজ করে রুমে চলে এলো বাবা-ছেলে। একসাথে শাওয়ার নিয়ে নিলো। তাজ অফিসের জন্য রেডি হয়ে ধ্রুবকেও রেডি করিয়ে দিচ্ছে। স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে ধ্রুবকে। ধ্রুবও স্কুলে যেতে খুব আগ্রহী তার নতুন বন্ধু হয়েছে এখানে।
ব্রেকফাস্ট টেবিলে তাজ নিজে খাচ্ছে আর ধ্রুবকেও খাইয়ে দিচ্ছে। ইকবাল খান খাবার রেখে ছেলে আর নাতির দিকে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ ধ্রুব বললো, তুমি খাচ্ছো না কেনো দাদাভাই ?
চমকে উঠলো ইকবাল খান। ধ্রুব তাকে যতবার দাদাভাই বলে ডাকে ইকবাল অনুশোচনার আগুনে পুড়ে। তিতিরের কথা মনে পড়ে যায়, কতই না ভুল বুঝেছিল মেয়েটাকে। ইকবাল ভাবে মেয়ের কদর করতে জানে না বলেই হয়তো আল্লাহ তাকে একটা মেয়ে দেননি।
ইকবাল দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, খাচ্ছি তো দাদাভাই। তো আজ ধ্রুব সোনা কার সাথে স্কুলে যাবে দাদাভাই নাকি দাদুমণি ?
ধ্রুব মিষ্টি হেসে বললো, দাদুমণির সাথে যাবো।
তাজ ধ্রুবর মুখ মুছিয়ে দিয়ে বললো, তুমি সোফায় গিয়ে বসো, বাবা এখনই আসছে। তোমাদের ড্রপ করে দিয়ে আমি অফিসে যাবো।
ধ্রুব মাথা নাড়িয়ে ছুটে সোফায় গিয়ে বসলে তাজ সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। ছেলেটা এতো বাধ্য, ভাবলে অবাক হয় তাজ।
আগামীকাল ধ্রুবকে নিয়ে লন্ডন যাচ্ছি আমি।
ইকবাল আর ইরিনা তাকালো তাজের দিকে, হঠাৎ লন্ডন কেনো ?
আহান আর পাখিকে ফিরিয়ে আনতে। ওরা ধ্রুবকে নিজের সন্তানের মতো আগলে রেখেছে পাঁচটা বছর। ধ্রুবকে ছেড়ে ওদের কতটা কষ্ট হচ্ছে সেটা আমি বুঝতে পারছি। আমি চাই ওরা আমাদের সাথেই থাকুক, ধ্রুবর সাথেই থাকুক।
আহান তো এখানে থাকতে জানি হয়নি সেদিন।
আহান খুব আত্মসম্মান সম্পূর্ণ মানুষ। সে আমাদের বাড়িতে এভাবে থাকতে রাজি হবে না মা।
ইকবাল চিন্তত গলায় বললো, তাহলে ?
আমাদের বাড়ির সামনের বাড়ি শান্তিনিড় বিক্রি হবে। সেটা কেনার জন্য আমি এডভান্স করে দিয়েছি। আহান আমাদের বাড়িতে না থাকুক সামনের বাড়িটা কিনে সেখানে থাকবে। আগামীকাল গিয়ে আহানকে সবটা বুঝিয়ে বলে সাথে করেই নিয়ে আসবো।
ইকবার খাবার নাড়াচাড়া করে বললো, যদি না আসে ?
বাবা আহান ধ্রুবকে নিজের সন্তানের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। ধ্রুবকে কাছে পেতে সে অবশ্যই আসবে।
৩৬.
ধ্রুবর একটা টেডিবিয়ার বুকে জড়িয়ে শুইয়ে আছে পাখি। তার মাথার কাছে বসে আছে আহান। তিতির চলে যাওয়ার পর পাখির পাগলামি যেমন বেড়েছিল, ধ্রুবকে রেখে আসার পর আবার পাখি তেমন হয়ে গেছে। আহানের নিজেকে অসহায় লাগে আজকাল। সে কোন মুখে তাজের কাছে ধ্রুবকে ফেরত চাইবে। সে তো নিজের ইচ্ছেতে ধ্রুবকে ফিরিয়ে দিয়েছে। ধ্রুবকে ছাড়া আহানের নিজেরও তো অনেক কষ্ট হয় কিন্তু তার কষ্ট দেখার মতো কেউ কী আছে ? আহান একবার ভাবছে বাংলাদেশে ফিরে যাবে। তাজের বাড়িতে থাকা সম্ভব নয় তার পক্ষে কিন্তু আশেপাশে থেকে ধ্রুবকে তো দেখতে পারবে যখন ইচ্ছে তখন। এই বাসাতে ধ্রুবকে ছাড়া দম বন্ধ হয়ে আসে সবার। ন্যান্সিও কেমন চুপচাপ নিজের কাজ করে, প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না। আহান কী করবে ভেবে পাচ্ছে না।
মাঝে একদিন কেটে গেলো, পাখি এখন কিছুটা সুস্থ। আহান সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজে ফ্রেশ হয়ে পাখিকেও ফ্রেশ করিয়ে দিলো। ওয়াশরুমে ধ্রুবর ছোট্ট ব্রাশটা দেখে বুকের ভেতরে জ্বালাপোড়া বাড়লো আহানের। পাখিকে বেডে বসিয়ে খাইয়ে দিতে লাগলো আহান আর ভাবতে লাগলো ধ্রুবর কথা। কেমন আছে ছেলেটা ? ফোনেও কথা বলার সাহস হয় না আহানের। ছেলেটাকে দেখে বা তার আওয়াজ শুনে নিজেকে সামলাতে পারবে কিনা বুঝতে পারে না। তাই কল করতে গেলেও ফোনটা রেখে দেয় আর তাজ দিলেও ধরে না।
আহান দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে পানির গ্লাস টেবিল থেকে নিতে যাবে তার আগেই কেউ আহানের চোখ চেপে ধরে। পাখি চোখ বন্ধ করে আছে তাই সেও দেখতে পায়নি। আহানের এই কোমল স্পর্শ খুব ভালো করে চেনা। আহান নিজের চোখের উপর রাখা ছোট ছোট হাতের উপর নিজের কাঁপা হাতটা রাখলো আলতো করে।
কাঁপা গলায় বললো, বাবাই ?
বাবাই শব্দটা কানে যেতেই পাখি ফট করে চোখ খুললো।
ধ্রুবকে দেখে চেঁচিয়ে উঠলো, ধ্রুব।
ধ্রুব আহানের চোখ ছেড়ে একটু সরে দাঁড়িয়ে, খিলখিলিয়ে হাসতে লাগলো।
দরজা দিয়ে প্রবেশ করলো তাজ আর ন্যান্সি। ন্যান্সির চোখ দু’টো ভেজা। সকালবেলা গোমড়া মুখে ব্রেকফাস্ট করছিলো সে। ধ্রুব নেই আর পাখি অসুস্থ বাসাটা তার কাছে মরা বাড়ি মনে হচ্ছিল। তখনই কলিংবেল বেজে উঠলে বিরক্তি নিয়ে দরজা খোলে দেখে ধ্রুব দাঁড়িয়ে আছে মিষ্টি হেসে আর তার পেছনে তাজ। ন্যান্সি চিৎকার করতে গেলে তাজ আর ধ্রুব নিজেদের ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে চুপ থাকতে ইশারা করে। এদিকে আহান অন্যমনস্ক থাকায় কলিংবেলের আওয়াজ খেয়ালই করেনি। আহান হাতের প্লেটটা রেখে ধ্রুবকে ছুঁ মেরে কোলে তুলে নিলো। বুকের সাথে মিশিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো আর তার বন্ধ চোখের কোণে জমা হলো আনন্দঅশ্রু।
চলবে,,,
(গতপর্বে একজনের কমেন্ট পড়ে আমি বাকরুদ্ধ। এতদিন ধরে এই গল্পের সমালোচনার সব সীমা অতিক্রম করেছে গত পর্বের কমেন্টে। রাইটার নাকি গল্পের আল্লাহ, নাউজুবিল্লাহ। আপনি কোন ধর্মের আমি জানি না, তবে আমি মুসলিম। আল্লাহ শব্দটা কোনো সাধারণ শব্দ নয় যে আপনি নিজের ইচ্ছেমতো ব্যবহার করবেন। আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় আর এই শব্দটার ব্যবহারও একজনকে বুঝাতেই করা যায়। সামান্যতম বিবেকবোধ থাকলে কোথায় কোন শব্দ ব্যবহার করা যায় সেটা ভেবে কথা বলবেন। আমি কারো কমেন্টের কোনো রিপ্লাই করি না বলে অনেকে যা খুশী বলে চলে যান। কমেন্টটা পড়ে লেখার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলাম বলতে পারেন। তবে শুরু যেহেতু করেছি শেষ তো করতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে গল্প দিলাম আর আগামী পর্বে শেষ করে দিবো ইনশাআল্লাহ।)