#Fearঅন্তিম পর্ব
Writer: #Tanjima_Islam
ভ্যাটিকানে সকালের রোদ উঁকি দিচ্ছে, শুভ্র সাদা তুলোর মতো মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে নীল আকাশে। বাতাসে লম্বা লম্বা পাম গাছ গুলো এদিক ওদিক দোল খাচ্ছে, পিচ ট্রি গুলোতে ছোট ছোট “লিটল টার্ন” পাখি কিচিরমিচির করছে।
ভেনিসের “রিয়াল্টো সেতু” তে দাঁড়িয়ে আছে ফ্লোরা। ছেড়ে রাখা চুল গুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে বাতাসে, দুচোখের দৃষ্টি নীল পানিতে ভেসে বেড়ানো ছোট ছোট বোট গুলোতে। এখানে এটাই চলাচলের একমাত্র মাধ্যম, এখানে কোনো রোড নেই যে বাস বা ট্যাক্সিতে চলাচল করবে, জলপথেই চলাচল করতে হয়।
ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে ক্যানেলের দুপাশে রং বেরঙের সুউচ্চ বিল্ডিং দেখছে ফ্লোরা। ভাবছে সার্জিও এলে বলবে, তাকে বোটে নিয়ে বেড়াতে।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ রাতের কথা মনে পড়তেই হটাৎ গা ছমছম করে উঠল ফ্লোরার, যদিও এখন ভয়ের কিছুই নেই।
সে রাতে জন্মদাতা পিতাকে হারিয়েছে ফ্লোরা, সাথে অতৃপ্ত ডাইনি মা লরা কে।
সকালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফ্লোরার জ্ঞান ফিরল। জ্ঞান ফিরেই নিজেকে সার্জিওর কোলের উপরে পেল ফ্লোরা। উঠে চারিপাশে তাকাতেই হতভম্ব হয়ে গেল সে, ধীরে ধীরে রাতের ঘটনা মনে পড়ল।
সার্জিও জিজ্ঞেস করল,” কি হয়েছিল সে রাতে তোমার সাথে!?
ফ্লোরা নিজের চুল টেনে ধরে সে রাতের ঘটনা কেটে বলল।
বলা শেষে এডমন্ডকে বেডে পড়ে থাকতে দেখে ছুটে গেল ফ্লোরা, পালস চেক করে শান্ত হল, এডমন্ড বেচে আছে। ফ্লোরার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সার্জিও।
মা ফিয়নার কথা মনে পড়তেই সাড়া বাড়ি তন্নতন্ন করে খুজেছে ফ্লোরা আর সার্জিও, অবশেষে বাড়ির বেসমেন্টে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পেল তাকে।
এডমন্ড আর ফিয়নাকে হসপিটালাইজ করা হল, ফাদার মারিনোর লাশ গীর্জার কতৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রিয়েতোর দেহের পোড়া ছাই দিয়েই সমাধিস্ত করল ফ্লোরা।
মিসেস ফিয়না এখনও ট্রমা থেকে বের হতে পারেন নি, “ইতালিয়ান ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টার” এ ভর্তি করা হয়েছে তাকে।
এডমন্ড এখন সুস্থ, গতকাল তাকে বাড়িতে নিয়ে গেছেন মিসেস এলিটা। এডমন্ডকে যখন জিজ্ঞেস করা হল, ” তুমি ফ্লোরাদের বাসায় কি করতে গেছিলে!? আর অজ্ঞান হলে কিভাবে!?
এডমন্ড বলল,” ফ্লোরা অসুস্থ শুনে দেখতে গেছিলাম। কলিংবেলের শব্দে ফ্লোরা দরজা খুলল, কিন্ত ওকে দেখে কেমন যেন অস্বাভাবিক লাগছিল। ওর কথাবার্তা, চালচলন খুবই অপরিচিত লাগছিল আমার কাছে। আমি বারবার জিজ্ঞেস করলাম, ” এখন কেমন আছো! বাসায় সবাই কোথায়!?
ফ্লোরা কোনো উত্তর না দিয়ে এগিয়ে এসে ওর হাতের ছোয়া লাগালো আমার ঠোটে। অস্বাভাবিক বরফ শীতল হাতের ছোয়ায় শিউরে উঠলাম আমি। সেই মুহুর্তে কেন যেন ফ্লোরাকে একটা মৃত লাশ মনে হল আমার। কথাটা মনে হতেই গা ছমছম করতে লাগল, আমি বেরিয়ে আসতে চাইলে ফ্লোরা কেমন নেশাভরা চোখে তাকিয়ে বলল,” এখনই চলে যাবে এড!?
আমার যেন কি হল, মন্ত্রমুগ্ধের মতো ওর পিছুপিছু ওর রুমে চলে গেলাম, তারপর আর কিছু মনে নেই আমার।
হটাৎ কাধে কারও হাতের ছোয়া পেয়ে চমকে পেছনে ফিরল ফ্লোরা। দুই হাতে দুটো আইসক্রিম নিয়ে হাসসোজ্জল মুখে তাকিয়ে আছে সার্জিও। ফ্লোরা একটা নিয়ে বলল,” ধন্যবাদ সার্জিও, আমাকে বাচানোর জন্য।
সার্জিও আইসক্রিম খেতে খেতে বলল,” এই নিয়ে কতবার!?
ফ্লোরা মৃদু হেসে বলল, ” কি করব বলো!! এমন উপকার করেছো যে কিভাবে ঋণ মেটাবো বুঝতেই পারিনা।
সার্জিও কিছুক্ষণ ফ্লোরার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,” হুম ঋণ!! কিন্ত সেটাতো শুধু ধন্যবাদ দিয়ে মেটালে হবেনা মিস।
ফ্লোরা অবাক হয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “তাহলে!?
সার্জিও বলল,” একটা উপায় আছে।
ফ্লোরা আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞেস করল, “কি উপায়!?
সার্জিও বলল,” উম এখন থাক, সময় হলে বলব।
ফ্লোরা বিরক্ত হয়ে আইসক্রিম খেতে লাগল, সার্জিও একগাল হেঁসে বলল, ” বোটে চড়বে!?
ফ্লোরা দ্রুত মাথা নাড়িয়ে সায় দিল।
||সমাপ্ত||
বিঃদ্রঃ জানিনা কেমন হয়েছে, কেমন লাগল জানাবেন প্লিজ।
আর লুসিফার গল্পটা এবার থেকে পাবেন।
Love u all..Happy reading 😊
#Stayhome #staysafe