#শাপলা_ও_সেতুর_গল্প
#প্রভা_আফরিন
[পর্ব-১০
লিখিদের বাড়ির অবস্থা এখন অনেকটা শরতের আকাশের মতো। কখনো ঝলমলে দিনের হাসিখুশি ভাব, কখনো মেঘলা অভিমান, কখনো বা তীব্র খরতাপের মতো অতিষ্টতা আবার কখনো মন খারাপের ঝমঝমিয়ে নামা বৃষ্টি। তবে এখন মেঘলা অভিমানের সময়। রেবেকা মেয়ের সঙ্গে ভালো করে কথা বলছেন না। কথা বলছেন না কারো সাথেই। লিখি যেচে কথা বলতে চাইলেও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তবে ওনার মুখ বন্ধ নেই। একা একাই তিনি ঝগড়া করেন, বকেন, নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করেন। রিথীর মাঝে মাঝে মনে হয় তার মায়ের মানসিক সমস্যা হচ্ছে। নাহলে মেয়েদের সাথে কেনো শত্রুর মতো আচরণ করে? কেনো তাদের বুঝতে চায় না? লিখি অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছিলো। রিথী স্কুলের জন্য তৈরি হয়ে এসে মাকে বললো,
“মা এত বদলে যাচ্ছে কেনো, আপু?”
“আমাকে তাড়ানোর জন্য।”
“তাহলে আমার সঙ্গেও রেগে থাকে কেনো? আমার কি বিয়ের বয়স হয়েছে নাকি? হলে দেখো মা বলার আগেই বিয়ে করে ফেলবো।”
লিখি বোনের দিকে তাকিয়ে হাসলো। রিথী এখন চৌদ্দ বছরের কিশোরী। দুই বোনের বয়সের বিস্তর তফাৎ থাকলেও মনের দূরত্ব নেই। লিখি বললো,
“আমি বিয়ে-শাদী করে চলে গেলেই দেখবি মা আবার আগের মতো হয়ে গেছে।”
“কিন্তু ওই ঝগড়ুটে লোকটাকে আমার একদমই পছন্দ না। তুমি আর কাউকে ধরার জন্য পেলে না? তোমার কোনো বন্ধুও না?”
“তুই ই না কিছুদিন আগে কানের কাছে শুধু ওই লোকটার গান গাইতি?”
রিথী থতমত খেয়ে বললো,
“সেটা তো ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য। ক্ষমা মহৎ গুন। আমি চাইতাম তুমি এই মহৎ কাজটা করো। কিন্তু তাই বলে ওনাকে আমার দুলাভাই বানাতে চাইবো! না, কক্ষনো না।”
“বোকামি করেছি রে।”
“তোমার এই বোকামির সুযোগটাই পেয়েছে সবাই। মাকে তোমার নামে যা নয় তাই বলেছে মামা-খালারা।”
লিখি হতাশ গলায় বললো,
“জানি। মায়ের আত্মীয়দের কাছে মুখ ছোট হয়েছে বলেই মা এমন করছেন।”
রিথী মুখ টিপে রইলো কিছুক্ষণ। এরপর বললো,
“চলো আমরা দুজন বাড়ি ছেড়ে দূর কোনো পাহাড়ে চলে যাই। কাঠের বাড়িতে থাকবো। উন্নত প্রযুক্তির থেকে দূরে বসবাস করবো। চাইলে বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবো কিন্তু মায়ের সাথে কোনো যোগাযোগ করবো না। তখন মা আমাদের মর্ম বুঝবে। আর বিয়ে দিতে চাইবে না।”
“পাহাড়ে গিয়ে খাবি কি?”
“বিয়ার গ্রেইল প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার ভিডিও বানিয়েছে কি করতে? সব দেখা শেষ আমার। আমি জঙ্গল থেকে সাপ ধরে আনবো আর তুমি পাথর ঘষে আগুন জ্বা’লিয়ে বারবিকিউ করবে। কি সুন্দর জীবন!”
“ছি! যা ভাগ বলছি।”
রিথী দুই বেনি ঝুলিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেলো। সেদিকে তাকিয়ে লিখি হঠাৎ উদাসীন হলো। সেদিন রেস্টুরেন্টে রাসিফকে বয়ফ্রেন্ড পরিচয় দেওয়ার খবর খুব জলদিই তার মায়ের কানে এসেছে। সম্বন্ধটা লিখির ছোটখালা এনেছিলো বলে ওনারাই ছেলেপক্ষ থেকে সব জানতে পেরেছিলো। অপমানিতও হয়েছে ভীষণ। লিখির এই হুজুগে করা ছোট বোকামিতে তার মাকে কথা শোনানোর মহৎ সুযোগটা পেয়ে বসেছে মামা-খালারা। প্রেমের সম্পর্ক আছে বলেই লিখি এতদিন একটা সম্বন্ধেও রাজি হয়নি এমন ধারণা জন্মেছে সবার মনে। জাহিদুল ইসলাম সব শুনে যখন খোঁজ নিয়ে জানলেন ছেলেটা রাসিফ তখন হতভম্ব হয়ে গেছিলেন। কিছুদিন আগে পকেটমারের ঘটনা নিয়ে যে বিস্তর ঝামেলা বাধিয়েছিলো দুজনে তাতে এমন সম্পর্ক অসম্ভব প্রায়। তিনি বুঝেছিলেন নেপথ্যে ভিন্ন ঘটনা আছে। তবে লিখিকে জেরা করার প্রয়োজন মনে করেননি। লিখি যখন বাবার কাছে গিয়ে বলেছে,
“তুমি আমাকে বিশ্বাস করো তো, বাবা?”
জাহিদুল ইসলাম মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলেছেন,
“অবশ্যই মামনি।”
এরপর লিখির আর কারো কথায় কান দেওয়ার দরকার পড়েনি। কিন্তু রেবেকা এবার কথিত প্রেমিকের সাথে বিয়ের কথা তুলেছেন। সাধারণত মেয়ের পরিবার চায় নিজেদের থেকে একধাপ উপরের স্ট্যাটাসে মেয়েকে বিয়ে দিতে। সেখানে রাসিফের অর্থনৈতিক অবস্থা ওদের চেয়ে একধাপ নিচেই বলা চলে। এই নিয়ে রেবেকার মনে বিরাট অসন্তোষ। ওনার স্বপ্ন ছিলো মেয়েদের বড় বড় জায়গায় বিয়ে দেবে। কিন্তু বদনাম যা হওয়ার তা বাতাসের চেয়েও তীব্র গতিতে হয়ে গেছে। লিখির একটি ছেলের সাথে প্রণয়ের সম্পর্ক তা সকলেই জেনে গেছে। তাই রেবেকা মেয়েকে সেখানেই বিয়ে দিতে মনস্থির করেছে। মায়ের এই মতে লিখি বেঁকে বসেছে। রেবেকা বলেন,
“প্রেম করেছিস, সব মেনে বিয়েও দিতে চাইছি। তাহলে আপত্তি কিসের?”
লিখি উল্টো বুঝিয়ে বলে,
“আমি প্রেম করিনি, মা। নিজের মেয়েকে এতদিনেও চিনলে না? ছেলেটা আমার বয়ফ্রেন্ড। বয় মানে ছেলে আর ফ্রেন্ড মানে বন্ধু। মানে ছেলে বন্ধু বোঝাতে চেয়েছি। কিন্তু রেস্টুরেন্টে লোকটা উল্টো বুঝে চলে গেলেন। আর তোমরাও ভুল বুঝলে। এতে আমার কি দোষ?”
রেবেকা শীতল চোখে তাকিয়ে থেকে চলে গেছেন। এরপর মা-মেয়ের সম্পর্কের আরো অবনতি হয়েছে।
লিখির অন্তর থেকে দীর্ঘশ্বাস উথলে ওঠে। জাহিদুল ইসলাম ঘরে এসে ওর মাথায় হাত রাখলে লিখি চমকে উঠলো। তিনি সচরাচর মার্কেট বন্ধ থাকার দিনটা ছাড়া এই সময় বাসায় থাকেন না। লিখির আগেই তিনি দোকানের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। আজ বাসায় দেখে লিখি অবাক হয়ে বললো,
“বাবা তুমি?”
“এত চিন্তিত লাগছে কেনো তোকে?”
“ও কিছু না। অফিসে ভীষণ কাজের চাপ যাচ্ছে কিছুদিন। তাই আরকি..”
“শুধুই তাই?”
“হু।”
লিখি ব্যাগ গোছানোয় মন দিলো। জাহিদুল ইসলাম মেয়েকে ডাকলেন,
“লিখি?”
“বলো বাবা।”
“মায়ের ব্যবহারে কষ্ট পাচ্ছিস? জানিসই তো মা কেমন।”
“জানি তো। অভ্যাস হয়ে গেছে। কিন্তু বাবা একটা কথা বলো?”
“নিশ্চয়ই।”
“আমরা নাহয় জন্ম থেকে মাকে এভাবেই পেয়ে অভ্যস্ত। কিন্তু তুমি তো বিয়ের পর মাকে পেলে। তুমি কি করে অভ্যস্ত হলে?”
জাহিদুল ইসলাম মেয়ের কথায় মৃদু হাসেন। দুইহাত পিছনে ভাজ করে বলেন,
“এখানে একটু হলেও আমার ব্যর্থতা আছে। বিয়ের সময় রেবেকা এমন ছিলো না। খুবই চুপচাপ ও লাজুক স্বভাবের ছিলো। আমার বাবা-মা দুজনে মারা যাওয়ার পর তোর ফুপিই ছিলো আমার একমাত্র অবিভাবক। তখন আমাদের এই বাড়িটা ছিলো না। আপার বাসায় একটা রুমে আমি যায়গা পেয়েছিলাম। বিয়ের পর আমরা প্রথম সংসার বেধেছিলাম সেই ঘরেই। আপার শ্বাশুড়ি বিয়ের পর থেকেই আড়ালে আবডালে তোর মাকে খোটা দিতেন। লাজুক স্বভাবের ফলে আমাকে বলতে পারতো না। আপাও সংসারে অশান্তি আটকাতে মুখ বুজে মেনে নিতেন। তোর জন্মের পর মাথার ওপর ছাদ তৈরি করাই ছিলো আমার একমাত্র নেশা। আমি ওকে সময় দিতে পারতাম না। কষ্টে রেখেছিলাম খুব। রেবেকার সুযোগ ছিলো আমাকে ছেড়ে বাবার বাসায় আরামের জীবনযাপন করার। সে করেনি। আমার পাশে ছিলো। ওই সময় আমরা যে আর্থিক ও মানসিক চাপের মধ্যে গিয়েছি সেসব আমি কাটিয়ে উঠতে পারলেও তোর মা পারেনি। তাই বলে কি আমার দুঃসময়ের সঙ্গী সেই মানুষটাকে আমি সুসময়ে অবহেলা করতে পারি? থাকুক ওর যেভাবে ভালো লাগে। রাগ পড়ে গেলে নিজের ব্যবহারে নিজেই বেশি কষ্ট পাবে।”
লিখি হাসে। এই গল্প সে অনেকবার শুনেছে। কিন্তু প্রসঙ্গ এড়াতে আপাতত এই কথাটায় মাথায় এলো। তাছাড়া প্রতিবারই গল্পটা বলার সময় বাবার মুখে যে আত্মতৃপ্তির আভাস দেখা যায় তা অন্যরকম আনন্দ দেয় লিখিকে। জাহিদুল ইসলাম ঘড়ি দেখে বললেন,
“তোর কি দেরি হয়ে যাচ্ছে?”
“না। তুমি কি কিছু বলবে?”
“তোর বিয়ে নিয়ে তো আমি কখনো কোনো মতামত দেইনি। সবসময় তোর মতের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।”
“হু, দিয়েছো।”
“এবার যদি আমি কোনো সিদ্ধান্ত নেই তোর আপত্তি আছে?”
লিখি একটু চমকালো। বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আন্দাজ করে নিলো কিছু। এরপর ডানে-বামে মাথা নেড়ে বললো,
“আমি জানি বাবা আমার জন্য সবসময় ভালোটাই চাইবে।”
____________
কাজের চাপে লিখির অবস্থা বেহাল। অফিসের মালিক বিশাল ঋণগ্রস্ত হয়ে অফিসটা বিক্রি করে দিয়েছে। প্রথমে সবাই ভয়ে ছিলো নতুন মালিক কর্মচারী না ছাটাই করে দেয়। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। বরং কাজের ধরনে নতুনত্ব আনার ফলে ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। লিখি মাথা নুইয়ে একাধারে টাইপ করে যাচ্ছিলো। নবীন এসে গলা ঝেড়ে লিখির ডেস্কের সামনে দাঁড়ালো। সে এই অফিসের ইনচার্জ। ভদ্র, বোকাসোকা একটি ছেলে। লিখি মাথা তুলে বললো,
“নবীন ভাই, চায়ের দাওয়াত নিয়ে এসেছেন?”
নবীন সম্মতিসূচক হাসলো। বললো,
“আমি বলার আগেই কি সুন্দর বুঝে যাও তুমি। সময় পেলে আসতে পারো। আমি ক্যান্টিনে যাচ্ছি।”
লিখি চায়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। মাথা ধরেছে ভীষণ। দুজনে চা নিয়ে ক্যান্টিনের একপাশে খোলা জানালার পাশে বসলো। মৃদু বাতাস এসে ছুঁয়ে দিলো ওদের। কাজের চাপ ভুলে খানিক আরামবোধ করলো উভয়েই। লিখি চায়ে পর পর কয়েকবার চুমুক দিয়ে নবীনের দিকে তাকালো। নবীন উশখুশ করছে। লিখি বললো,
“আপনি কি কিছু বলতে চান, নবীন ভাই?”
নবীনের স্বভাবে লাজুকতা বেশি। সে কখনো লিখির চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলে না। সে কোনো মেয়ের চোখেই সরাসরি তাকাতে পারে না। এবারও সে মাথা নুইয়ে বললো,
“তোমাদের বাড়ির সবাই কেমন আছে?”
“ভালো আছে।”
“ওহহ।”
“আপনি কি শুধু ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করতেই ডেকেছেন? তাহলে বলবো ভালো খবরও নেই আবার মন্দ খবরও নেই।”
নবীন কোনো উত্তর দিলো না। লিখি আবারো বললো,
“আপনার তো বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে, নবীন ভাই। আপনার পরিবার কি এখনো আপনার বিয়ের কথা ভাবছে না? আর কত সংসারের প্রতি নিবেদিত হয়ে পিষ্ট হবেন? নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছা বলে কিছু নেই?”
“এভাবে বলো না লিখি। পরিবার আমার ভালোমন্দ নিশ্চয়ই ভাবেন।”
“আপনি যে বুড়িয়ে যাচ্ছেন তা কি খেয়াল করেছেন? বয়স পয়ত্রিশ হয়ে গেছে। মাথার চুলে পাক ধরছে। এখনো আপনার পরিবার ভালোমন্দ দেখছে? এরপর দেরি করলে কে বিয়ে করবে আপনাকে?”
নবীন চিন্তিত গলায় বললো,
“সত্যিই বুড়িয়ে যাচ্ছি? কেউ বিয়ে করবে না?”
“আমি তো করবোই না, আমার কোনো আত্মীয়কেও করতে দেবো না।”
নবীন চমকে তাকালো। লিখি পাত্তা না দিয়ে চায়ের কাপে শেষ চুমুকটা দিয়ে বললো,
“আপনি কিছু বলার আগে আমি বুঝে গেলেও সবাই তো বুঝবে না। আপনাকেই বোঝাতে হবে। স্পষ্ট করে নিজের ইচ্ছা প্রকাশ করতে হবে। এখনো যদি নিজের ভালোটা না বুঝতে শিখেন তবে বসে বসে বুড়ো হোন।”
লিখি নিজের ডেস্কে ফিরে ফোন হাতে নিলো। করবে না করবে না করেও রাসিফের নাম্বারে ডায়াল করলো। তিনবার বাজতেই ফোন রিসিভ হলো। রিসিভ করলো রুনি। লিখি সালাম দিয়ে বললো,
“মি. রাসিফ আছেন?”
মেয়ের গলা শুনে রুনির ভ্রু জোড়া একত্র হয়ে এলো। সন্দেহ নিয়ে বললো,
“কে আপনি? আপনার পরিচয় কি?”
“আমি লিখি।”
“কি লিখেন?”
“আরে আমার নাম লিখি।”
“ও বাবা, এটা আবার কেমন নাম? যাইহোক, রাসিফের সাথে আপনার কি দরকার?”
“দরকারটা ওনাকেই বলতে চাইছি। আপনি কি ওনাকে ডেকে দেবেন?”
“ধরুন দিচ্ছি।”
রুনি ফোনের দিকে তাকিয়ে দুইবার মুখ ভেংচি কাটলো। শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাওয়ার দুইদিন পর রাসিফের কোনো মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে শুনে সে আবারো বাপের বাড়ি চলে এসেছে। এখন রাসিফের ওপর সতর্কভাবে নজর রাখছে সে। রাসিফ খাবার খাচ্ছিলো। রুনি ওকে ফোনটা দিয়ে সরে গেলো না। রাসিফ ফোন কানে নিতেই চমকে গেলো। বললো,
“আপনি আমার কন্টাক্ট নাম্বার কই পেলেন?”
“সেটা বড় কথা নয়।”
“তাহলে বড় কথাটা কি যার জন্য আমার জীবন নরক বানানোর পরও যোগাযোগ করতে হলো?”
“বাবা বোধহয় আপনার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।”
“কেনো?”
“বিয়ের জন্য।”
“অসম্ভব।”
“শুনুন, আপনি বিয়েটা ভাঙবেন।”
“আপনি কেনো নয়? আমার ঘাড়ে কাঠাল ভাঙতে চাইছেন? যেন আপনি সেইফ থাকেন? আপনার কোনো কথা আমি শুনছি না। এমনিতেই আমাকে যেভাবে ফাঁসিয়েছেন আপনি। এখনো নাকানিচুবানি খাচ্ছি।”
লিখি সে কথার উত্তর না দিয়ে বললো,
“আমি কিন্তু তিনটা ছেলের সঙ্গে প্রেম করেছি। ছ্যাকাও দিয়েছি। বিয়ের পরও করবো না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এরপরও আমাকে বিয়ে করতে চাইলে সেটা নিতান্তই আপনার ইচ্ছা। আমার আপত্তি নেই।”
“কি সাংঘাতিক!”
রাসিফ ফোন রাখতেই রুনি ঝাপিয়ে পড়লো।
“লিখি কে ভাই? তোর সাথে কিসের সম্পর্ক?”
“কোনো সম্পর্ক নেই, আপা।”
রাসিফ বিগড়ে যাওয়া মেজাজে ঘরে চলে গেলো। রুনি মন খারাপ করে নওশাদকে কল দিয়ে বললো,
“বাবুর আব্বু জানো, আমার ভাইটা বদলে গেছে। কোন মেয়ে জানি জাদু করে ফেলেছে আমার সোনা ভাইটাকে।”
চলবে…