#তোমার_পিছু_পিছুপর্ব-১৮

0
451

#তোমার_পিছু_পিছুপর্ব-১৮

নীলময়ী বসেছে একদম দক্ষিণের জানালার ধারে,,,,বিকালের ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করেছে,,,নীলময়ী দুই পা নাচাতে নাচাতে আরো একবার বর্নর সম্পুর্ণ রুমে চোখ বুলালো,,,,বর্ন হাসি হাসি মুখে তাকিয়ে আছে নীলময়ীর দিকে,,,,
নীলময়ী গলা খাকারি দিয়ে শুরু করল,,,
-শুনলাম আপনি নাকি আমাকে বিয়ের পাত্রী হিসেবে দেখতে গিয়েছিলেন!!!
-তাই নাকি!!!
-ও মাই গড!!! আপনি কি এখন অস্বীকার করছেন!!!?
নীলময়ী আতংকিত ভংগিতে নিজের দুইগাল চেপে ধরল,,,
-না,,মানে,,, ধারনা ছিলো এমন কিছুই একটা,,,,কিন্তু সিওর ছিলাম না,,,
-তো,,,কেমন দেখলেন!!! কোনো রিসপন্স নেই কেনো!!! আমি কি আপনার জবাবের আশায় আজীবন বসে থাকবো নাকি!! নো নো নট পসিবল,,,
নীলময়ী দুই দিকে মাথা নাড়াতে লাগল,,,,
-নীলময়ী আপনি দেয়াল টপকে কেনো বাড়িতে প্রবেশ করলেন!?
-আরে,,,,, আর বলবেন না,,,,ওই চ্যাংড়া গার্ডটা বলে কিনা এপোয়েন্টমেন্ট ছাড়া নাকি বাড়িতে প্রবেশ নিষেধ,,৷ এত করে বললাম,,,,,গেট খুলল না তো খুললই না,,,,,পরে কি করি,,,,তাই তড়াক করে দেয়ালের উপর উঠে গেলাম,,,,,,,,,তারপ- ও মাই গড,,,ইজ দ্যাট ইউ
পুরো কথা শেষ না করেই লাফিয়ে উঠল নীলময়ী,,,
বর্ন নীলময়ীর দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকালো,, ,, বর্নর বইয়ের কাচের আলমারিতে ওর একটা ছবি। ৬ কি ৭ বছর হবে ছবির বয়স,,,, ছবিতে বর্নর ফোকলা দাতের একটা হাসি…..
নীলময়ী ছবিটার একদম কাছে গিয়ে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে লাগল,,,, বর্ন হালকা একটু লজ্জা পেয়ে,,,মাথার পিছন চুলকাতে লাগল।

মিলন সাহেব হাতের নিউজপেপারের দিকে সপ্তমবারের মত মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করলেন,,,,,,কিন্তু বরাবরই ব্যার্থ হলেন,,,উনি যখনই হাল ছেড়ে দেওয়ার জন্য ভাবলেন,,,তখনই উনার রবার্ট ব্রুসের কথা মনে পড়ল,,,,,এবং তিনি আবারো নতুন উদ্যোমে মনোযোগ প্রদানের চেষ্টা করলেন,,,,কিন্তু!!!! না হচ্ছে না!!!! এভাবে কানের পাশে ভাংগা রেডিও বাজতে থাকলে মানুষ হাগতে গেলেও শান্তি পাবে না….. পরক্ষনেই নিজের ভাবনায় নিজেই সচেতন হয়ে গেলেন,,,,বউ-এর যন্ত্রনায় এবার বুঝি সত্যি মাথাটা গেলো,,,নাহয় এমন ওয়ার্ডতো আগে কখনো বলেন নি,,,,,
-তুমি কি আদৌ কিছু শুনছো….!!!
স্ত্রীর কথায় হাতের পেপার ভাজ করতে করতে উনি বললেন,,,,
-হ্যা আমি শুনছি,,,,এবং ক্রিস্টাল ক্লিয়ার শুনছি,,,,তোমাকে এতো চিৎকার করে বার বার রিপিট করতে হবে না,,,,
-আরে চুপ থাকোতো,,,,,আমার এতো আলাভোলা ছেলেটার পিছনে পড়েছে,,ওই পাগলা মেয়ে,,,,কিরকম পাগলা না হলে বলো ছেড়া কাপড় পড়ে ঘুরে বেড়ায়,,,,,ইয়া মাবুদ,,,ইয়া আল্লাহ আমার ছেলেকে রক্ষা করো,,৷
-পারভিন তুমি কিন্তু এখন অভাররিএক্ট করছো…..
-বেশি কথা বলবে না,,,, আমি অভার করছি!!!! একতো তুমি এরকম পাগল ছাগল মেয়ে দেখাতে নিয়ে গেছো,,,,,আবা………………..
-পারভিন আমি কখনোই বলি নি আমি মেয়ে দেখাতে নিয়ে যাচ্ছি,,,আমি বলেছিলাম ক্লায়েন্টর বাসায় ইনভাইটেশন আছে,,,,
-তাহলে এখন এখানে বসে কেনো!!! যাও একটু ছেলের ঘরে,,,দেখো ওই মেয়ে আমার ছেলের উপর কি জাদুটোনা করে,,,,
-আশ্চর্য্য কিসব আউল ফাউল কথাবার্তা বলছো,,,,এরকম চিন্তাভাবনা তোমার মাথায় আসে কোথা থেকে,,,,
পারভিন বেগম স্বামীর কথা উপেক্ষা করে সমানে তবজি গুনতে লাগলেন।

নীলময়ী রাস্তায় নেমেই কানে হেডফোন গুজল,,,, আজকের আবহাওয়াটা খুব সুন্দর,,,,নীলময়ীর মনটা যেনো কি কারনে খারাপ ছিলো!! আরে বাহ মন খারাপের কারনটাও ভুলে গেছে… নীলময়ীর মন আরো খুশি খুশি হয়ে উঠল,,,,, ও গুন গুন করে গান ধরল,
“দুঃখটাকে দিলাম ছুটি আসবে নাকো ফিরে………..”

(আসছে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here