বন্ধ দরজায় তুমি🖤পর্ব-২৪

0
698

#বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤
#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr
#Part: 24…….

— আমি জানিনা তুর… আজকের কাটানো সময়টা সত্যি ছিল নাকি মিথ্যে। তবে যেটা ছিল সুন্দর ছিল। তুমি যদি মিথ্যে করেও আমাকে এভাবে ভালোবাস আমি সারাজীবন তা সত্যি মনে করে গ্রহণ করব। ভালোবেসে যদি নিজ হাতে বিষ দেও তবে অমৃত ভেবে তৃপ্ত হব আমি। জানোতো ধোকাটা যখন জানা থাকে তখন তা পাওয়ার স্বাদ আরো তীব্র হয়। আজকের টা সত্যি হলেও আমি জানি হয়ত খুব দ্রুত তা মিথ্যে হয়ে ধরা দেবে। আমি তবুও তাই চাই। কারন তাতেই তোমার ভালোবাসা থাকবে…..

নিজের মনে ড্রাইভ করতে থাকে…

বাসায় ফিরে তুর দেখল তোয়া ড্রয়িং রুমে কপালে একহাত দিয়ে কপাল ধরে বসে আছে। তুর খুব ভালোভাবে বুঝতে পারল যে তোয়া তার অপেক্ষায় আছে। কিন্তু ও কি বলব সেটা বুঝতে পারল না। কারন যাই হোক এই মুহুর্তে তীব্রের কথা তোয়াকে জানানো যাবে না। তাহলে তীব্রের সাথে ঘটে যাওয়া সব কাহিনী বলতে হবে। কিন্তু এটা ভেবে ভয়ে ভিতরটা হালকা হয়ে যাচ্ছে তোয়া যদি কিছু জিজ্ঞেস করবে তখন কি বলবে….. এসব ভাবতে ভাবতে তোয়ার ডাক শুনতে পেল…..

_- কিরে সানির সাথে গেলি অথচ সানিকে একবারো আমার সাথে দেখা করতে বললি না। জানিস কত টেনশন হচ্ছিল….

তোয়ার কথায় একটু স্বস্তি পেল তুর। তারমানে তোয়া জানে ও সানির সাথে গেছে।

— না মানে আপু আমি সানিকে বলেছিলাম। কিন্তু ও শোনেনি।

এই কথায় তোয়া আর তেমন কিছু বলল না। রুমে গিয়ে রেষ্ট নিতে বলল। তুর একটা স্বস্তীর নিশ্বাস নিয়ে ভিতরে চলে গেল। যা চোখ এড়ালো না তোয়ার। তোয়া খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে তুর মিথ্যে বলছে। আর তার কারন টাও খুব সহজ। কারন ও বাবার কাছে থেকে নাম্বার নিয়ে সানিকে ফোন করে। কিন্তু সানিকে কল করলেও ও কল ধরেনি। প্রচন্ড চিন্তা হয়েছিল। কিন্তু সেটা প্রকাশ করেনি। কিছুক্ষন আগেই সানি নিজে থেকে ফোন করে জানায় ও সারাদিন একটা কাজে ব্যস্ত ছিল তাই ফোন ধরতে পারেনি। ঠিক তখনি গাড়ি থেকে তুর নামে। যেহেতু ও জানালার সামনে দাড়িয়ে ফোন করেছে। তাই দেখেছে আর ও যার সাথে ছিল সে অবশ্যই সানি নয় তা বলার বাহুল্য রাখে না। কিন্তু তুরের দৌড়ে চলে আসা ওর মনে শংশয়ের সৃষ্টি করেছে৷

সকালে ঘুম থেকে উঠে তুরের ফ্রেশ হয়ে খেয়ে বিয়ের কেনাকাটা দেখছিল। তখনি ওর মনে হয় সবার জন্য কেনা হলেও নিজের জন্য কেনা হয়নি তার আগেই তীব্র ওকে নিয়ে গেছে…….

তখনি ননী এসে বলে…… তোয়া আপু তায়ান ভাইয়া এসেছে তোমার সাথে দেখা করবে নিচে যাও। তোয়া সবকিছু রেখে বাইরের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় ঠিক তখনি ননী আবার বলে, তায়ান ভাইয়া তুরকেও নিয়ে যেতে বলেছে। আর হ্যা ওনার কোনো বন্ধু এসেছে। তাই তাড়াতাড়ি …..

কথাটা বলেই চলে গেল। তোয়া তুরকে যেতে বললে পরে আসছে। তোয়া একাই চলে যায়।

কিছুক্ষন পর ননী তুরকে ডাকে।

— তায়ান ভাইয়া চলে যাবে। তোকে দেখতে চায়।

— আচ্ছা চল।

তুর ওরনাটা মাথায় দিয়ে নেয়। এই বাড়িতে এটাই নিয়ম। তুর নিচে গিয়ে তায়ানকে সালাম দেয়….

— ভাইয়া ভালো আছ… অনেক দিন পর দেখলাম। জানো তোয়া আপুর যখন অন্য একটা ছেলের সাথে অনেক রাগ হয়েছিল। কিন্তু সেদিন বিয়েটা হয়নি তুমি জান আমি কতটা খুশি😁😁😁

তুরের কথায় তোয়া চুপ হয়ে গেল। কিন্তু তায়ান মৃদু হেসে জবাব দিল…

— আসলে দেখতে চেয়েছিলাম তোমার আপুকে অন্য ছেলের ঘাড়ে চাপানো যায় কিনা। কিন্তু দেখ তা তোমার আপুর পছন্দ হলো না সেই আমার ঘাড়ে উঠার জন্য বসে রইল।

কথাটা বলেই তায়ান হাসা শুরু করল। সাথে তরও তাল মিলালো। তখন তায়ান আবার বলল….

— তবে তুমি আমার কথাটা রাখলে না তুর। কই ভাবলাম তোমাকে আমার বন্ধুর মিষ্টি বউ করে নিব। কিন্তু সেটা ওই ছেলেটা পন্ড করে তোমাকে ছো মেরে নিয়ে চলে গেল। কিন্তু আমি সিউর যার জন্য ঠিক করেছিলাম সে যদি আগে তোমাকে দেখতে তাহলে কাউকে নিতে দিত না।

ক্লথাটা শুনে তুর চুপ হয়ে গেল… তায়ান বুঝতে পারল ওর খারাপ লাগছে তাই তায়ান কথা ঘুড়িয়ে বলল….

— আমার ফ্রেন্ড আজ তোমার সাথে দেখা করতে এসেছে।

— কেন?

— আসলে আমি নিয়ে এসেছি। আগে আসত না কিন্তু আজ এসেছে হয়ত আমার বিয়ের জন্য…

তখন ননী বলল…

— হ্যারে তুই যখন হারিয়ে গিয়েছিলি তখন ওনি অনেক হেল্প করেছেন।

— হুমম…

— কিন্তু ড. রায়হান কোথায়..?

তখনি তীব্র আসে বলে…

— আমার খোজ করা হচ্ছিল বুঝি।

কন্ঠস্বরটা পেয়ে তুর থমকে গেল। ওর পুরো শরীর কাপতে লাগল। অজানা এক ভয় নিয়ে সামনে থাকা মানুষের দিকে তাকাল তুর। আর তার চেহারা দেখে কলিজা কেপে উঠল তুরের… ও বসা থেকে দাড়িয়ে গেল। অস্পষ্ট সুরে বলে উঠল….

— তীব্র……

তুরের পুরো শরীর কাপছে। এই ঠান্ডার মাঝেও তুরের শরীর ঘামতে থাকে । তীব্র শুধু হালকা হেসে স্বাভাবিক ভাবেই সোফায় বসল… তুরের দাঁড়িয়ে থাকা দেখে তীব্র বলল…..

— এভাবে দাড়িয়ে আছো কেন বস?

তোয়া এবার রেগে গিয়ে তুরকে টান দিয়ে বসিয়ে বলল…

— কি হয়েছে রে তোর 😡 বাড়িতে গেস্ট এসেছ আর তুই….

— না মানে আপু….

— হইহে চুপচাপ বস।

তারপর ওরা সবাই কথা বলতে লাগল। তুর শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে হাত ঘসশে আর তীব্র তুরকে তখন থেকে ওদের কথায় তাল মিলিয়ে তুরকে দেখে যাচ্ছে…. তখনি তোয়ার মা এসে বলল… তায়ান তীব্রকে উদ্দেশ্য করে বলল…

— দেখ এসেছিস যখন তাহলে দুপুরের খাবার খেয়ে যাবি। নাইলে কিন্তু….

তীব্র হালকা হেসে বলল…

— ঠিক আছে। আচ্ছা এই বাড়িটা অনেক পুরানো….

তখনি ননী জবাব দিলো।

— হুমম আমার নানু বানিয়েছিলেন।

— হুমম বুঝতেই পারছি। আচ্ছা আমি কি বাড়িটা একটু ঘুরে দেখতে পারি। যদি আপনাদের কারও সমস্যা না হয়৷

তীব্রের কথায় তায়ান এমন একটা রিয়েকশন দিল যেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নেতা এডলফ হিটলার ইহুদি হত্য না করে বরং তাদের পুরুষ্কৃত করতে চাইছে।

— কিরে এভাবে দেখছিস কেন?

— না আমি কি তোর জায়গায় অন্য কাউকে নিয়ে চলে এলাম নাকি। নাকি আজ ঘড়ির কাটা উল্টো দিকে ঘুরছে যা বলছি তাতেই রাজি। তার উপর আবার এই বাড়ি ঘুরে দেখার ইচ্ছে। হ্যারে তোকে জাদুঘরে নিয়ে গেলেও তো তুই দর্শনার্থীদের মত না ঘরে থাকা এন্টিক পিছের মত বিহেভ করে এক জায়গায় দাড়িয়ে থাকিস। কিন্তু আজ কি হল…

— আমি যাই করি কিন্তু তোর কথা আমার রিদ্ধর মত লাগছে…

তখনি তোয়া বলে..

— প্রবলেম কেন হতে যাবে? আপনি চাইলে দেখতেই পারেন। আর বাড়িটা বড় বাগান আছে আপনার ভালো লাগবে….

-_ আমি বাড়ি ঘুড়িয়ে দেখাব। [ নীমি ]

তোয়া বুঝল নিমী আর ননী যেকোন কাউকে পাঠালে দুজনেই কোনো না কোনো উল্টো পাল্টা কথা বলবে। আর সেটা ওদের ভাবসাবে প্রকাশ পাচ্ছে…. তাই ও তুরকে বলল… এটা শুনে তুর ঘাবড়ে গেল… ও কিছু বলতে চাইল কিন্তু তার আগেই তীব্র বলে।উঠল তাহলে চল.. তুর বাড়িটা একটু ঘুরে দেখাবা। তুর কিছু বলতে পারে না। এখন না করা মানে তীব্রকে অপমান করা। তাই তুর কথা না বলে হাটা দেয়৷ ওর পিছে যায় তীব্র। ঠোঁটের কোনে আলত হাসি…. তায়ান যেন নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তাহলে কি তুরকে ওর ভালো লেগে গেছে কিন্তু তুর…..

তুর বাড়ির ভিতরটা ঘুরে দেখাতে ঠিক যখন উপরে গেল ঠিক তখনি তীব্র ওর হাত ধরে তোয়ার রুমে নিয়ে গেল।

— কি করছেন ছাড়ুন…. কেউ দেখে ফেললে। আর আপনি আপনি এখানে…. [ অনেকক্ষন নিজের কান্নাটা চেপে রাখলেও এবার আর পারল না তুর। কেদেই দিল ] আপনি তায়ান ভাইয়ের সেই ফ্রেন্ড অথচ আপনি…..

তুর ওকে ছেড়ে চলে যেতে নেয়। কিন্তু তীব্র ওকে টেনে জড়িয়ে ধরে নিজের মধ্যে আবদ্ধ করে…..

— সরি তুর আমি জানতাম না যে আমি যাকে আটকে রেখেছি সে তোয়ার বোন। মানে তুমি….

— জানতেন না আপনি? [ কাদতে কাদতে ]

— দেখ তায়ান যখন সুস্থ হয়ে ফিরেছিলো। তখন তোয়া তোমাকে খোজার জন্য আমার কাছে এসেছিল আর আমি তখন জানতে পেরেছি তুমি তোয়ার বোন….

— তাহলে কেন ফিরিয়ে দেন নি? [ কাদতে কাদতে ]

— কারন যতদিনে আমি জানতে পেরেছি ততদিনে নিজেকে সম্পুর্ন ভাবে তোমার সাথে জড়িয়ে ফেলেছিলাম। আর তুমিও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছিলে তাই ভেবেছিলাম তোমাকে বিয়ে করে তারপর আমি তোমার পরিবারের কাছে তোমাকে ফিরিয়ে দেব কিন্তু তুমি তার আগেই…..

— কেন এসেছেন এখানে.??

— তোমার জন্য….

— আমাকে নিজের বন্দী বানানোর জন্য…

-_ না তুর। তোমার পরিবারের সন্মতিতে তোমাকে বিয়ে করে নিজের বউ বানানোর জন্য…. আমি শুধু তোমার অপেক্ষায় আছি। তুমি যদি হ্যা বলো তাহলে….

— ছাড়ুন আমাকে… দরজা খোলা কেউ এসে পরলে….

তীব্র তুরকে ছেড়ে দিয়ে দুরে দাড়ায়। তারপর নিজের পকেট থেকে একটা পেনডেন বের করে তুরের গলায় পড়িয়ে দেয়…

— এটা কি?

— মুখ দেখার উপহার। মনে কর আজ ছেলে পক্ষ তোমাকে দেখতে এলো যার সাথে ধমীয় অনুযায়ী বিয়ে করবে তুমি।

তুরের প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে। তুর কিছু বলতে যাবে তখনি তোয়ার ডাক শুনে। ও দ্রুত চোখ মুছে তোয়ার কাছে যায়। তীব্রও নিচে নেমে আসে। ওকে বাগান দেখানোর কথা বললে না করে দেয়।

তারপর ওদের সাথে গল্প করায় মেতে উঠে। তুর ওর শরীর ভালো লাগছে না বলে চলে যায়। দুপুরের খাবার তায়ান আর তীব্র একসাথেই ওদের বাড়িতে করে। তুরের দিকে খেয়াল করলে দেখে ও প্লেটে আঙুলের রেখা কাটতে ব্যস্ত খাওয়ার কোনো নাম নেই।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে বেড়িয়ে যায় তীব্র। রেষ্ট নিয়ে যেতে বললে ও না করে দিয়ে চলে যায়। তাই তায়ান ও বেড়িয়ে যায়।

ওরা যাওয়ার পর তোয়া তুরকে টেনে রুমে নিয়ে রুমের দরজা লক করে দেয়। তারপর বেশ গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করে…

— তুই কি ড. রায়হানকে চিনিস তুর।

তোয়ার এই কথায় চমকে উঠে তুর। হঠাৎ আপু এই কথা জিজ্ঞেস করছে কেন?

— কিরে বলছিস না যে তুই ডক্টর রায়হানকে চিনিস কিনা….

— আসলে আপু……

,
,

,
,
,
,
,

,,রাতে…

তীব্র নিজের রুমে বসে কাজ করছিল তখনি রিদ্ধ আসে। ওকে তীব্র সমস্ত কাজ বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু কিছুক্ষন পর খেয়াল করল রিদ্ধ ওর আগের জায়গাতে দাঁড়িয়ে আছে…. বুঝতে পারল ও কিছু বলতে চায়….

— কিছু বলবে…

— স্যার আপনি তুরকে বিয়ে করবেন তাহলে এত ঝামেলা কেন পোহাচ্ছেন ওর ফ্যামিলিকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে নাচতে নাচতে বিয়ের জন্য রাজি হবে।

— হবে না।

— মানে।

— আমি কোনো ঝামেলা চাই না। তাই এসব করছি। যেহেতু ওরা জানে সানিকে তুরের বিএফ ভাবে। আর এটা জানে তুর এতদিন সানির বাড়িতে ছিল তাই ওরা সানির সাথেই তুরের বিয়ে দিতে চাইবে….

— তাহলে….

— সেটা তোমার ভাবতে হবে না। যাও তুমি।

— কিন্তু..

-_ রিদ্ধ…

— ওকে স্যার।

, রিদ্ধ চলে গেল। ঠিক তখনি তীব্র নিজের মনেই বলল…

— তুমি বুঝবে না রিদ্ধ। তুরের ফ্যামিলির কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানোর আগে তুরকে দুর্বল করাটা জরুরি। আর তার জন্যই আমার প্রতি ওর অনুভুতি কাজে লাগিয়ে ওকে দুর্বল করতে চেয়েছি। কারন আমি যদি ওর উপর ডিসিশন চাপিয়ে ওকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেই। আর জেদে ও যদি সবাইকে সবটা বলে দেয় তাহলে সবটা আমার হাতের বাইরে চলে যাবে। যাকে খোজার জন্য আমি সবাইকে হেল্প করেছি অথচ সে আমার কাছে বন্দী ছিল এটা কারোই কাম্য হবে না।

,

,
,
,
,
পরের দিন তীব্র তুরের বাড়ি যায়….. ওকে দেখে সবাই বেশ খুশি হয়। তখন তীব্র তুরের চাচা আর ওর বাবা মায়ের সাথে কথা বলতে চায়। তীব্র দেখে মনেই হচ্ছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তীব্রের সাথে তায়ানও এসেছে। তবে কেন সেটা জানে না। তখনি তোয়ার বাবা বলে উঠল….

— তায়ান আর তোয়ার বিয়ে নিয়ে কিছু….

ওনাকে থামিয়ে দিয়ে বলে…

— আমি তায়ান আর তোয়ার বিয়ে নিয়ে কিছু বলতে আসেনি।

— তাহলে….

— আমি আপনার ভাস্তি তুরকে বিয়ে করতে চাই।

কথাটা শোনামাত্র ওনাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরল। তীব্র সব জেনেও…. ওনাদের অবাক হওয়ার কারনটা বুঝতে পারল তীব্র তাই নিজে থেকে বলল….

— আমি তুরের মতামত জানতে চাই। যদি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয় তাহলে আমার কোনো সমস্যা নেই। আর যদি আগের কথা ধরে বসে থাকেন তাহলে….

তখনি তোয়া বলে উঠে….

— We are sorry mr. Rayhan… কিন্তু আমার বোনের বিয়ে অলরেডি সানির সাথে ঠিক হয়ে গিয়েছে আর তাই আমাদের পক্ষে আপনার সাথে তুরের বিয়ে দেওয়াটা সম্ভব না।

— সেটা আমি তুরের কাছ থেকে জানতে চাই। তুর তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে?

তুর একবার তোয়ার দিকে তাকায় একবার তীব্রের দিকে। তোয়া বলে উঠল….

— বল তুর তুই ওনাকে নয় সানিকে বিয়ে করবি বল….

তুর কিছু বলল না শুধু মাথা নাড়াল।

এইটা দেখে তীব্রের ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেল। কিন্তু কিছু বলল না। তায়ান নিজেও অবাক তীব্রের এই প্রস্তাবে। আর তোয়া কিভাবে এতটা স্পষ্ট করে তীব্রকে ফিরিয়ে দিল…. তীব্র তুরের বাবা মায়ের কাছে জানতে চাইল।

— আপনারা আপনাদের মেয়েকে কি আমার সাথে বিয়ে দিতে আপত্তি আছে।

এইটা শুনে তুরের বাবা বলে…

— তোমার সাথে বিয়ে দিতে তেমন ভাবে কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু আমি তুরের অমতে…

তীব্র কিছু বলল না। নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করতে চাইল। এই প্রথম নিজেকে ছোট মনে হচ্ছে তীব্রের। প্রথম কোনো কিছুর জন্য আরেকজনকে চাইছে….তীব্রের রাগটা আরো বেশি লাগছে তুরের উপর। ওর মতে তুরের বিয়ে না করার কারন ছিল না। ও তুরের দিকে তাকাতেই দেখে তুর নিচের দিকে তাকিয়ে কাদছে। ভালোভাবেই বুঝল এটা তুরের মর্জিতে হচ্ছে না। তোয়ার দিকে তাকাতেই ওর ঠোঁটে একটা অদ্ভুত হাসির আভা দেখতে পেল…. তীব্র তায়ানের দিকে তাকাতেই ওর বাড়ি থেকে বেড়োতে চাইল। ঠিক তখনি একটা ফোন আসে…. তীব্র ফোনটা রিসিভ করতেই. …..

-_ স্যার থানা থেকে বলছি। আপনার নামে একজন মেয়ে কমপ্লেন করেছে আপনি তার বোনকে আটকে রেখে চর্রচার করেছেন। আপনাকে শুধুমাত্র জিজ্ঞসাবাদের জন্য ডাকা হবে। কাইন্ডলি যদি আসতেন….

— আমি আসছি…. [ তুরের দিকে তাকিয়ে ফোনটা নামিয়ে নিল। তুরের ভয়ে কলিজা কেপে উঠছে। ] তায়ান আমি আসছি….

— কোথায় যাচ্ছিস….

— মেয়ে দেখতে এসেছি তার গিফট আনতে যাচ্ছি….

— মানে…

কোনো কথা না বলে বেড়িয়ে এসে নিজের গাড়িতে বসে থানার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে গেল তীব্র।

,
,
,
,

কালকের ঘটনা…..

কালকে যখন তোয়া তুরকে জিজ্ঞেস করছিল….

— কিরে তুই ডক্টর রায়হানকে চিনিস..??

— না আপু….

কথাটা শোনা মাত্র সজোরে তুরের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয় তোয়া।

-_ আমাকে মিথ্যে বলছিস যে তোর থেকে তোকে ভালো করে চেনে। কাল তুই সানির সাথে যাসনি। তুই ডক্টর রায়হানের সাথে গিয়েছিলি… কারন যে গাড়িতে আজ আমি ডক্টর রায়হান এসেছে ঠিক সেই গাড়িটা কাল তোকে নামিয়ে দিয়েছে। আর আমি সানিকে ফোন দিয়েছিলাম ও স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছে তুই আর সাথে নেই।

— আপু আসলে… [ কাদতে কাদতে ]

— কোন মিথ্যে কথা না। এই লকেট এই লকেট ওনি তোকে কেন দিবে?

—…….

— এই লকেটটা মিনিমাম ১০ লক্ষ+ হবে এত দামী জিনিস তোকে কেন দিব…. বল… তার মানে এটাই ধরব তুই সানিকে ঠকিয়ে ডক্টর রায়হানের সাথে…

তখনি তুর গিয়ে তোয়ার পা জড়িয়ে ধরে….

— আপু তুই আমাকে ভুল বুঝিস না। আমি কোনো অন্যায় করিনি।

এটা দেখে তোয়া নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করে তুরকে উঠায়…. তারপর বলে…

-_ তাহলে সত্যি টা কি?

— সত্যি টা হলো…. [ আরো জোরে কেদে ফেলে তুর ] সেদিন বিয়ে থেকে আমাকে কিছু লোক তুলে নিয়ে যায়। জানিনা কেন ওরা নীমী আর ননীকে ছেড়ে দিল। কিন্তু আমাকে ওরা কিছু লোকদের হাতে তুলে দিল। যারা আমাকে একটা হোটেলে নিয়ে বিক্রি করে দেয়। যার সেখান থেকে তীব্র…. মানে ডক্টর রায়হান আমাকে কেনে….. তারপর….

সবকথা তোয়াকে খুলে বলে… ওর বিয়ে থেকে পালানো। কথাগুলো শুনে তোয়ার গায়ে আগুন জলে উঠে। যে তুরকে খোজার জন্য ও তীব্রের কাছে ছুটে গিয়েছে সে নিজেই ওর বোনকে আটকে রেখে তুরকে খোজার মিথ্যে নাটক করল….

— আপু ওনি এখন আমাকে বিয়ে করতে চায়। তাই….

— তাই কি? তাই তুই নাচতে নাচতে রাজি হয়ে গেলি৷ কতটা নোংরা হলে এরকম কাজ করা যায় তার ধারনা আছে তোর। আমার তো ভাবতেই ঘৃনা হচ্ছে…. ছিহহ….

তুর কোন কথা বলতে পারল না। শুধু কাদত লাগল। তখনি তোয়া বলল….

— তোকে কিছু করতে হবে না। এবার যা বলার,যা করার আমি করব….

,
,
,
,
,
,
,
,

,[ বাকিটা পরের পর্বে জানবেন ]
Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr

.

.

.
.
আমার গ্রুপ লিংক এড দিয়ে পাশে থাকুন…..
💕💕💕Meheriyar💓Meher💕💕💕— ডায়েরির ভাজের গল্প💙

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here