#বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤
#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr
#Part: 02
লোকটি বাকা হেশে আমার আরো কাছে আসতে থাকে। হঠাৎ করেই সবকিছু ঘোলা হয়ে যেতে লাগল। আবছাতে শুধু বুঝতে পারছি লোকটা নিজের শার্টের উপরের বোতামগুলো খুলছে। আমার কাছে আসতেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু হঠাৎ চারদিকে অন্ধকার হয়ে সবটা হারিয়ে গেল। নিজের বোধ শক্তিটুকু হারিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলাম। তারপর আর কিছু মনে নেই….
,
,
,
,
,
,
,
,
,সকালে শরীরে অসহ্য এক যন্ত্রণা অনুভব নিয়ে ঘুমটা ভেঙে গেল। চোখ মেলে তাকাতেও কষ্ট হচ্ছে কিন্তু ঘুমের ঘোরটা এখনো কাটেনি যেন কেউ নেশা করিয়ে দিয়েছে। তবুও অনেক কষ্টে নিজের পাশে ফিরতেই ঘুমটা যেন উড়ে গেল। আমার পাশে শুয়ে আছে সেই লোকটা। এর আগেও এটা দেখেছি তবে সেটা মাঝরাতে কারন সকালে তাকে দেখার দুভাগ্য আমার কখনো হয়নি। কিন্তু আজ দেখছি তাও আবার একটা পাতলা টি-শার্ট পরে। এবার নিজের দিকে খেয়াল যায় পুরো শরীর কাথা দিয়ে মোড়ানো। তখনি কালকের লোকটার সেই কথাটা মনে পরে যায়। আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না তারমানে লোকটি সত্যি কাল রাতে……
ভাবতেই বুক ফেটে কান্না আসতে লাগল। নিজেকে সত্যি সামলানো দায় হয়ে পড়ল।অজান্তেই নিজের সবর্স হারানোর আক্ষেপে বুক ফাটা আর্তনাদ বেড়িয়ে এলো মুখ থেকে। অঝোরে কাদতে লাগল তুর। কান্নার আওয়াজে লোকটার ঘুম ভেঙে গেল। একরাশ বিরক্তি নিয়ে সে উঠে নিজের চোখে আঙুল বুলিয়ে ঘুম কাটানোর চেষ্টা করল। দেখে বুঝাই যাচ্ছে সারারাত একটু ঘুম হয়নি। তিনি রাগী কন্ঠে তুরকে থামতে বললেন কিন্তু তুর এখন কথা শোনার মত পর্যায়ে ছিল না। এবার লোকটির খুব বিরক্ত লাগল….
— সমস্যাটা কি তোমার একটুও কি ঘুমাতে দেবে না নাকি? সারারাত তোমার জন্য একটু ও ঘুমোতে পারিনি এখনো কি ঘুমাতে দিবা না নাকি?😡
তুর কোনো কথা বলল না। নিজের কত কাদতে লাগল। আর লোকটাকে দেখে মনে হচ্ছে যেন কিছুই ঘটেনি। এতটা নরমাল কিভাবে হতে পারে কেউ। তুরের যতটা না রাগ লাগছে তার চেয়েও বেশি ঘৃনা হচ্ছে…
তুরের এমন বিহেভে এবার একটু শান্ত হলো। নরম সুরে তুরকে জিজ্ঞেস করল…
— আরে বাবা আগে বলত তো কি হয়েছে? তারপর না হয় মরা কান্না কেদো? কেউ না করবে না।
— এখনো জিজ্ঞেস করছেন কি হয়েছে আমার? লজ্জা করে না। আপনার প্রতি একটু হলেও আমার সন্মান ছিল এতদিন যে আপনি একটা মেয়ের সাথে এতদিন থেকেও তাকে স্পর্শ করতে চাননি। বরং নিজেও দুরে সরে থেকেছেন। কিন্তু কাল ইনজেকশনের মাধ্যমে আমাকে বেহুশ করে নিজের কার্য হাসিল করেছেন। আবার বলছেন কি হয়েছে? লজ্জা করে না। [ জড়ো সড়ো হয়ে কাদতে কাদতে ]
— মানে… [ বেশ অবাক হয়ে ] মানে আমি তোমাকে… হা.. হা.. হা… আচ্ছা এইটা ঠিক আছে আমি এটা করতেই পারি কিন্তু এই ধারনা ভুল যে আমি তোমাকে ন্সেসলেস করেছি।
— ও আমি নিজে ন্সেসলেস হয়ে গেছি তাই না যাতে আপনার কোনো অসুবিধা না হয়😭
— দেখ আমি সেরকম কিছু বলিনি..
— চুপ করুন। আপনাদের মত লোকেরা কোনোদিন ভাল হতে পারে না। কারন পশুদের কাজ হচ্ছে এটা। আর আপনি তাদের মধ্যেই পরেন। দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব।
এতক্ষন নিজেকে শান্ত রাখলেও কথাটা শুনেই খুব রাগ লাগল ওর। ও তুরকে কাছে টেনে বিছানায় শুইয়ে একদম ওর মুখের কাছে গেল।
— তোমার এটাই মনে হচ্ছে আমি তোমাকে ন্সেসলেস করে এসব করেছি। ওকে এখন তো তুমি সজ্ঞানে আছো তাহলে দেখি কতটুকু প্রটেক্ট করতে পারো নিজেকে। 😡 [ বেশ রেগে ]
— প্লিজ নাহহহ..
কাদতে শুরু করল। নিজের গায়ের চাদরটা আরো শক্ত করে আকড়ে ধরার চেষ্টা করল। কিন্তু পারল না। লোকটা ওর হাতটা থেকে চাদর টা একপ্রকার ছিড়েই ফেলে দিল। ও হাত দিয়ে নিজেকে ঢাকার চেষ্টা করতেই লোকটা অট্রহাসিতে ফেটে পড়ল।
— আরে বোকা আগে তো নিজেকে দেখ তারপর নাহয় নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করো।
তুর লোকটার বিহেভে অবাক হয়। তারপর ও নিজের দিকে তাকায়। কাল রাতে যে ড্রেস পরা ছিল সেই ড্রেস। একটুও অন্যরকম হয়নি। লোকটি বিছানায় হেলান এক হাটু উঠিয়ে তার উপর হাত দিয়ে শান্ত গলায় বলল….
— কাল যখন আমি তোমাকে ন্সেসলেস দেখি তখন বুঝতে পেরেছি তুমি দুর্বলতা কারনে ন্সেসলেস হয়ে গিয়েছ। বিশ্রাম প্রয়োজন। তাই জ্ঞান ফেরার পর ইনজেকশন দিয়েছিলাম। আর তোমার মাথা ঘোরার কারন তোমার দুর্বলতা আর ঘুমের কারন ইনজেকশন। ওকে….
— তার মানে আপনি আমার সাথে…..
লোকটি ওর দিকে তাকিয়ে ওকে টেনে নিজের উপর ফেলে দেয়। শক্ত করে নিজের সাথে মিশিয়ে বলতে থাকে….
— তোমাকে কিছু করার জন্য তোমাকে ন্সেসলেস করার কোনো প্রয়োজন নেই। আর না আমি তা করব । যা হবে সেটা সজ্ঞানে। তাই তোমাকে এতদিন নিজের কাছে রেখেছি কামর্ফোটজোন দেওয়ার জন্য। তবে তুমি যদি রাজি না হয় তবে ব্যাপারটা আলাদা।
[ মুখের কাছ থেকে চুল গুলো সরিয়ে তুরে্র । ্ঠোঁট আলত স্পর্শ করল। লোকটার এমন কথা আর কাজে তুর আকাশ থেকে পরল। লোকটা আসলে কি করতে চায়। ও তুরকে সেচ্ছায় বাধ্য করতে চায় এর মানে কি? অবাক চোখে তাকিয়ে দেখতে থেকে লোকটা দিকে…. ]
— এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থেক না। প্রেমে পরে গেলে কিন্তু তোমার ক্ষতি হবে। পরে কিন্তু ছেড়ে যেতে পারবে না।
ওর কথায় তুর নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চায়। কিন্তু লোকটা আরো জোরে ওকে ধরে বলে…
— বলছি বলেই ছেড়ে যাবে নাকি। চেষ্টা করেও লাভ নেই কারন এই বন্ধ দরজার ওপারে কোনোদিন যেতে পারবে না তুমি। কারন #বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤। আর এখানেই আমার জন্য থাকতে হবে তোমাকে সারাজিবনের জন্য।
তারপর লোকটা তুরকে ছেড়ে বিছানার পাশে থাকা শার্টটা টি-শার্ট এর উপরে পরতে পরতে বলে….
— তোমার জন্য একটা সুসংবাদ আছে। আমি আবার কিছুদিনের জন্য চলে যাচ্ছি। তোমার যাবতীয় সবকিছু রাখা আছে। তবে এবার নিজেকে তৈরি করে রেখ। কারন ফেরার পর আমি নিজেরটা বুঝে নেব।
লোকটা ফ্রেশ হতে চলে যায় আমাকে এই #বন্ধ_দরজার ভিতরে লক করে। তাকে যাওয়ার জন্য এই রুমটায় আসার প্রয়োজন নেই। কারন এই রুমে আমার কিছু ছাড়া অন্যকিছু বলতে অন্য বলতে শুধু এই লোকটা। আর দরজার অপাশে কি আছে সেটা আমার অজানা। শুধু একটা কথাই ভাবছি যাওয়ার আগে কি সে একবারের জন্য এই রুমে আসবে। যাতে বাইরের একটু বাতাস এই রুমে আসতে পারে তার সাথে।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে তুর দেখল লোকটি দরজা খুলে ভিতরে আসছে। তুর ফ্রেশ না হয়ে বিছানাই গুটিশুটি মেরে ছিল।
— আপনি কি এখনি চলে যাচ্ছেন?
— আমি কখন যাব সেটা তোমার না জানলেও চলবে শুধু জেনে রেখ আজ রাতে আমি থাকছি…. [ তুরের দিকে তাকিয়ে। কথাটা শুনেই তুরের মনে অদ্ভুত সেই ভয়টা সৃষ্টি হল ]
আর কিছু না বলে চলে যেতে চাইলো। তখনি পিছন থেকে ডাকল তুর… শুনুন.. তুরের ডাকে বেশ অবাক হলো লোকটা…
— কিছু বলবে?
— না মানে.. [ আমতা আমতা করতে লাগল ]
— বলে ফেল। আমি astrologer নই। তাই মন পরতে পারব না।
— আপনার নামটা কি বলবেন? আসলে এতদিনে আমি আপনার নাম জানিনা। [ বেশ ভয় পেয়ে ]
তুরের কথায় একটু অবাক হলো। মানে ৩ মাস ওর সাথে আছে অথচ নাম জানে না। পরক্ষনেই মনে পরল কিভাবে জানবে ও তো নিজের নাম ওকে জানতেই দেয়নি। ও একটু স্মিত হেসে বলল…
— এতদিন আমার সাথে আছ। আর যেহেতু আমার সাথেই থাকতে হবে। তাহলে তোমার রাইট আছে নাম জানার। তবে এখন না সময় হলে বলব কে আমি? তোমার নাম তো তুর…..
— হুমম।
— ওকে…
[ আর কিছু না বলে চলে যেতে চাইল। কিন্তু কি একটা মনে করে ফিরে এলো। তুরের আছে গিয়ে তুরকে ধরতে গেলে তুর একটু পিছিয়ে যায়। এটা দেখে সে ভ্রু কুচকে তুরকে টেনে নিজের কাছে আনে। তুর নিজেকে ছাড়াতে চাইলে সে তুরের কপালে চুমো একে তুরের চোখে কোনে জমানো জল মুছে দেয়…
— যেটা পারবে না সেটা করতে যেও না। আবারো বলছি যা করতে চাই করতে দেও আমাকে রাগিও না তাতে তোমার ক্ষতি।
তুরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাওয়ার সময় আবার বলে উঠল….
— আর হ্যা আমি শুনেছি বাইরে যাওয়ার সময় বউয়ের কপালে চুমো খেলে মন ভালো থাকে। ফলে নাকি বিপদ কম হয়। আমার তো বউ নেই। আর লাইফে থাকা মেয়ে বলতে তুমি আছো তাই একটু ট্রাই করলাম। বউ না হলেও বউয়ের কাজ গুলো তোমাকেই করতে হবে। তবে ভয় পেও না বিয়ে করব না।
তারপর ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসির রেখা তুলে চলে গেলেন। তুর ওর কথার আগা মাথা কিছু খুজে পেল না। কি বলে গেল লোকটা। বউ না হয়েও বউয়ের কাজ করতে হবে। চাচ্ছে কি লোকটা….
,
,
,
,
,
,
,
,
,,
নিজের মত করে কাটতে থাকে সময়। দিন নাকি রাত সেটা জানা নেই। শুধু এটাই জানা লোকটা আসা মানেই তুরের বন্ধ জগতে রাত নামা। বেশ ক্ষিদে পেয়েছে তুরের খাবার বলতে সবকিছুই বাইরের শুকনো খাবার রয়েছে। ক্রিচেন আছে প্রবেশ অনুমতি নেই। তাই বাধ্য হয়েই ওই খাবার গুলো খায় তুর। শেষ রান্না করা খাবার খেয়েছিল প্রথম বার যখন লোকটি এসেছিল কিন্তু তারপরে…..
তুর ফ্রশ হয়ে খেয়ে শুয়ে পরে। কোনো কাজ নেই তাই ওই বদ্ধ দরজার ভিতর টুকটুক করতে থাকে। কখনো ঘুমায় কখনো নিজের মত বকবক করে। লোকটাকে বকে। যদিও লোকটা সব জেনে যায়। তাতে ওর কি?
এভাবে সময় কাটতে থাকে তুরের একসময় তুর আবার ঘুমিয়ে যায়। তখনি রুমের দরজা খুলে যায়। ঘুমন্ত তুর তা জানতেও পারে না।
তুর বিছানায় এলোমেলো ভাবে শুয়ে আছে। হাতে থাকা ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখে ১টা। হুমম রাত ১টা। এটা দেখে সে নিজের রুমে ফ্রেস হতে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে এসে তুরের কাছে যায়। বেডহীন মেঝেতে পাতা নরম বিছনায় তুরের পাশে গিয়ে শুয়ে পরে। কিছুক্ষন এভাবে থাকার পর বড্ড ইচ্ছে করে তুরের মুখটা একটু দেখতে। ও তুরের দিকে ফিরে ডান হাতের পাতায় মাথার ভর দিয়ে তুরকে দেখতে থাকে। ফ্যানের বাতাসে তুরের সিল্কি খোলা চুল গুলো ওর মুখে পরছে যা লোকটাকে তুরের দিকে বড্ড টানছে….
ও তুরের মুখের চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে নিজের অজান্তেই ওর গালে আর ঠোঁটে হাত বুলায়। ওর ঠোঁট স্পর্শ করতে গিয়েও করে না বরং কপালে স্পর্শ আকে গভীর ভাবে।
— কে তুমি তুর? তুমি তোমার পরিবার কিছুই তো আমি জানিনা। তাহলে কেনই বা এভাবে আমার জীবনে এলে? যাকে আমি দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট জায়গায় নিলাম করতে চেয়েছিলাম। তাকেই নিজের জন্য বন্ধ দরজার আড়ালে লুকিয়ে রেখেছি। নিজের পাশে সাজিয়ে রেখেছি। আমার সাথে কোনো অন্যায় না করেও আজ তুমি আমার কাছে সবচেয়ে বড় অপরাধী। আর তাই অপরাধের শাস্তি তোমাকে পেতে হবে। অভিশাপের সামনে যখন এসেছ অভিশপ্ত তো হতেই হবে। যার শুরু খুব শ্রীঘ্র হতে চলেছে। কারন তুমি নিজেও জানোনা তুমি কত বড় অন্যায় করে ফেলেছ আমার সাথে…. 😡 [ নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করতে না পেরে চলে যায়
এখন এখানে থাকলে ও কি করবে নিজেও জানেনা। ]
সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেল তুরের। নিজের সামনে তাকাতেই একটা ছিড়কুট দেখতে পায়….
,,,,,,,,,,,, সবকিছু রেডি করা আছে। ফ্রেশ হয়ে খেয়ে মেডিসিনটা নিয়ে রেস্ট নেও। নাইলে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না। আরেকটা কথা আমি কিন্তু আমার পাওনা কিছুটা নিয়ে গেছি। পরে বলবে আমি বলিনি কেন? তারায় ছিলাম তাই ডাকিনি। আর হ্যা যাওয়ার পর আমার উপর অভিশাপ দেওয়াটা বন্ধ করো। কারন আমার যদি কিছু হয় এই দুনিয়ার কেউ তোমাকে খুজে বের করতে পারবে না। পচে মরতে হবে তোমাকে। তাই নিজের ভালোর জন্য হলেও আমার ভালোটাই চাও….
নাম জানতে চেয়েছিলে তাই না। ওকে বললাম তুমি আমাকে তীব্র নামে ডাকতে পারো তুর…..
— ওনার নাম তাহলে “তীব্র… ”
,
,
,
,
,
,
,
,
,
[
,বাকিটা পরের পর্ব গুলোতে জানবেন ]
জানিনা আপনাদের কেমন লাগছে। তবে আশা করি নেক্সট পার্ট গুলোতে আপনাদের ভালো লাগবে…..
Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr