হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২) #লেখিকা__ফিহা_আহমেদ #পর্বসংখ্যা_১৫

0
278

#হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২)
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা_১৫
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]

ফিহা একটা চিৎকার দিয়ে…..,,, ঝি…ঝিনুক। না এইটা হতে পারে না তোর কিছু হতে পারে না।
চোখ খোল ঝিনুক।
রাস্তায় রক্ত গড়াগড়ি খাচ্ছে।

ফাহাদ ফিহার কাছে গিয়ে….. শান্ত হও ফিহা এই মেয়েটা ঝিনুক নাও হতে পারে।আর রক্তের কারনে মেয়েটা কে সেটা ও সঠিক ভাবে বুঝা যাচ্ছে না।
ফিহা কান্না করতে করতে…. আ..আজকেও এই সবুজ রঙের থ্রি পিচটা পরেছিল।
—— সব আমার দোষ আমি যদি ওকে একা না রেখে যেতাম।
ফাহাদের ও খুব খারাপ লাগছে এতে ও কিছুটা হলে ও দায়ী। ফিহাকে যদি না ডাকতাম তাহলে…..
রওশানের দুনিয়া যেন ঘুরছে।

লাবিবা ঝিনুকের পালস চেক করে…… ফাহাদ এখনো ও বেঁচে আছে।
জাহিদঃ তাহলে আশা আছে।
ফাহাদঃ দাঁড়িয়ে আছিস কেন রওশান । ঝিনুককে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। চল।
রওশান বিষন্ন মনে,,,,হুম।
ঝিনুককে কোলে তুলে নিলো রওশান।ঝিনুকের রক্তে রওশানে সাদা শার্ট রক্তাক্ত হয়ে গেছে।

হাসপাতালে……………

ফাহাদ চিৎকার করে…,,,, ডাক্তার.. ডাক্তার……….

ফাহাদের চিৎকারে ডাক্তার কেবিন থেকে বের হয়ে আসলেন……
ডাক্তারঃ রোগীর অবস্থা খুব খারাপ ICO তে নিয়ে যেতে হবে। আপনারা বললে এখনই…..
ফাহাদঃ আপনার যা করার করেন ডাক্তার। আমার বোনকে যেভাবেই হোক বাঁচান প্লিজ।
ডাক্তারঃ মিস্টার ফাহাদ চৌধুরী আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
ডাক্তারঃ নার্স রোগীকে দ্রুত নিয়ে যাও।

ফাহাদ রওশানের কাছে গিয়ে কাঁধ হাত রেখে…. ভাই সব ঠিক হয়ে যাবে।একদম চুপচাপ হয়ে গেলি।খুব ভালোবাসিস তাইনা রে।
ভালোবাসি কথাটা শুনার সাথে সাথে রওশান ফাহাদকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো।
রওশানঃ অনেক।ওর কিছু হলে আমি নিজেকে শেষ করে ফেলবো ফাহাদ।
রওশানের কান্না দেখে বাকি সবার চোখ দিয়ে জল পরছে।
লাবিবাকে জড়িয়ে ধরে ফিহা কান্না করছে। লাবিবা কিছুতেই ফিহাকে শান্ত করতে পারছে না।

ফাহাদ ইশারায় লাবিবাকে ফিহার কাছ থেকে সরে যেতে বললো।
ফাহাদ ফিহার কাছে গিয়ে…… এই যে পেত্নী মহারানী এইভাবে কাঁদলে হবে।সব ঠিক হয়ে যাবে সবাই মিলে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করি ঝিনুক যেন ঠিক হয়ে যায়।।

দুই ঘন্টা পর………..
ওটির লাইট বন্ধ হতেই রওশান ওঠে দাঁড়ালো ।

ডাক্তার বেরিয়ে আসতেই রওশান,,, ডাক্তার আমার ঝিনুক ঠিক আছে।
ডাক্তার কিছু না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
রওশানঃ কি হলো ডাক্তার কথা বলছেন না কেন। আমার ঝিনুক ঠিক আছে তো।
ফাহাদঃ জাহিদ তুই রওশানকে সামলা। আমি দেখছি…
জাহিদ রওশানের কাছে গিয়ে…. ভাই এতো অস্থির হস না সব ঠিক আছে।
ফাহাদ ডাক্তারের সামনে গিয়ে….. দেখুন ডাক্তার ক্লিয়ার করে বলেন প্লিজ আমাদের সবার অনেক টেনশন হচ্ছে।
ডাক্তারঃ আই এম সরি মিস্টার ফাহাদ চৌধুরী।
সি…ইজ…ডে….
তখনই পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো……… ফি….ফিহা।

সবাই পিছনে তাকিয়ে যেন আকাশ থেকে পরলো।
এইটা কি করে সম্ভব।
ফিহাঃ ঝি…ঝিনুক। তাহলে ওই মেয়েটা কে।
রওশান দৌড়ে ঝিনুকের কাছে গেল।ঝিনুককে ধরতেই ও রওশানের বুকে ঢলে পরলো।রওশান যেন প্রান ফিরে পেলো।
হঠাৎ এমন কিছু হওয়াতে সবাই হতভম্ব। সবাই বুঝার চেষ্টা করছে কি হলো এইটা।

ফাহাদঃ আমি তোদের আগেই বলেছি এইটা ঝিনুক নয়।কিন্তু ঝিনুকের এই অবস্থা কেন। শরীরের অনেক জায়গা কেটে গেছে।
ডাক্তার ও বুঝতে পারছে না আসলে কি হচ্ছে।
ডাক্তারঃ আমাকে একটু ক্লিয়ার করে বলবেন আসলে হচ্ছেটা কি।
ফাহাদঃ ডাক্তার এত কিছু বলার সময় নেই আপনি ওর তাড়াতাড়ি চিকিৎসার ব্যাবস্থা করুন।
ডাক্তারঃ ঠিক আছে।

ফাহাদ রওশানের কাছে গিয়ে…. রওশান ঝিনুককে ছাড়। ডাক্তার ওকে দেখবে।
রওশান ঝিনুককে বুকের মাঝে শক্ত করে ধরে রেখেছে। এমন ভাবে ধরে রেখেছে যেন ছেড়ে দিলেই কেউ নিয়ে যাবে।

রওশান ঝিনুককে ছাড়ছে না দেখে ফাহাদের খুব রাগ হলো।
ফাহাদ রেগে…থাপ্পড় খাবি তুই।ওকে এইভাবে জড়িয়ে ধরে রাখলে ও সুস্থ হয়ে যাবে। ওর চিকিৎসার প্রয়োজন।
রওশান ঝিনুককে ছেড়ে দিয়ে…. ছোট বাচ্চাদের মতো কান্না শুরু করে।
নার্সরা ঝিনুককে নিয়ে গেলো।

রওশান কান্না করতে করতে ফাহাদকে বলে…আমার ঝিনুক ঠিক হয়ে যাবে তো।
ফাহাদঃ ঠিক হয়ে যাবে।তুই চিন্তা করিস না। এখন বাচ্চাদের মতো কান্না করা বন্ধ কর।

ফিহার বাড়ির কথা মনে পরতেই ব্যাগ থেকে মোবাইল নিয়ে দেখে পয়তাল্লিশটা কল বাড়ি থেকে এসেছে।
ফোন সাইলেন্ট করা ছিলো।তাই বুঝতে পারিনি।
ফিহা বাড়িতে ফোন করে……
মিসেস রাজিয়াঃ মা তুই কই এতগুলো ফোন দিলাম ধরলি না যে। কোনো বিপদ হয় নি তো।
ফিহা তার মাকে সব ঘটনা খুলে বললো।

মিসেস রাজিয়া ঝিনুককে নিজের মেয়ের মতো মনে করেন। সত্যিই মেয়েটার জন্য অনেক খারাপ লাগছে।আল্লাহ মেয়েটাকে সুস্থতা দান করো।

ফিহা সবার উদ্দেশ্যে বললো….আচ্ছা ঝিনুকের মাকে কি করে বলবো ঝিনুক হাসপাতালে। আন্টির হার্টের সমস্যা। যদি শুনে ঝিনুক অসুস্থ তাহলে আন্টি বাঁচবেন না৷ ঝিনুকই ওনার সবকিছু। যদি শুনে ঝিনুক……
ফাহাদঃ না আন্টিকে বলার দরকার নাই।
ফিহাঃ তাহলে…..
ফাহাদঃ ঝিনুক কিছুদিন আমার সাথে থাকবে।ভার্সিটি থেকে অনেক এসাইনমেন্ট করতে দেওয়া হয়েছে তাই ও কিছুদিন আমার সাথে থাকবে এইটা বলো ফোন করে।
ফিহাঃ ঠিক আছে।
ফাহাদের কথায় ফিহা তাই করলো।
ঝিনুকের মা কোনো সন্দেহ করেনি।মেয়েকে ছাড়া থাকা কষ্ট হবে কিন্তু মেয়ের কথা ভেবে তিনি রাজি হয়ে গেলেন।

চলবে………
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here