হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন-০২) #লেখিকা__ফিহা_আহমেদ #পর্বসংখ্যা_০৫

0
312

#হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন-০২)
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা_০৫
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]

ফিহা বাড়িতে এসেই নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
নিজেকে বারবার পর্যবেক্ষণ করছে আর বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে নিজের ঠোঁট স্লাইড করছে।

ফিহাঃ বজ্জাত লোক একটা। প্রথম ভালো ভেবেছিলাম। এখন দেখি এই ছেলে আস্ত এক অসভ্য,, লুচু।বেটা তোকে আমি ছাড়ছি না। সুন্দর ছেলে দেখলেই নাকি চুমু খেতে মন চায়। এ,,,হ দেখতে পেত্নীর জামাইর মতো লাগে।বিদেশি বিলাই কোথাকার। আসছে সুন্দল বলতে।নিজেকে বিশ্ব সুন্দল মনে করে। এ,,হ্ আমি ও কম কিসে আমি ও সুন্দরী। একটা তুড়ি বাজালে সব ছেলেরা সামনে এসে হাজির হবে।এ,,,,,,হ্ সুন্দল। কচু।।

এইভাবে অনেকক্ষণ ফাহাদকে বকাবকি করে ফিহা সাওয়ার নিতে চলে গেল।

সাওয়ার শেষে ঘুমাতে যাবে তখনি মিসেস রাজিয়া ফিহার কান টেনে ধরে বসিয়ে দিলেন।

মিসেস রাজিয়াঃ খাওয়া দাওয়ার কোনো খবর আছে তোমার।প্রতিদিন তুমি এমন করো। না খেলে অসুস্থ হয়ে যাবে।তখন তোমার মতো দামড়ি মেয়েকে কে সামলাবে।আমারও তো বয়স হচ্ছে ফিহা কথা কেন শুনো না।নিজের খেয়াল রাখতে শিখ।যখন আমরা থাকব না তখন কি করবে হুম।ওঠো একসাথে খাব।

ফিহার চোখ চলচল করছে মায়ের কথা শুনে।
ফিহা মিসেস রাজিয়াকে জড়িয়ে ধরে সরি বললো।
ফিহাঃ আর কখনো তুমি থাকবে না এইটা বলবে না আম্মু। আমার সত্যিই অনেক কষ্ট হয়।এখন থেকে তোমার সব কথা শুনবো।

মিসেস রাজিয়া মেয়েকে বুকের মাঝে আগলে রেখে বললেন,,,,তাহলে ভালো মেয়ের মতো খেতে চলো।
ফিহাঃ ঠিক আছে আম্মু চলো।

মিসেস রাজিয়া ফিহাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছেন।

মিসেস রাজিয়াঃ ফিহা বর্নের শ্বশুর বাড়ি থেকে দাওয়াত দিয়েছে। আজকে যেতে বললো বর্ন।

ফিহাঃ না আম্মু আমি যাব না ওই বাড়িতে যেতে আমার একদম ভালো লাগে না। তুমি গেলে যাও।

মিসেস রাজিয়াঃ বর্ন নিজে বলেছে তোমাকে যেন নিয়ে যাই।তুমি না গেলে ও কষ্ট পাবে।
ফিহা বোনের কথা ভেবে রাজি হলো।ফিহাও তার বোনকে মিস করছে।
ফিহা রাজি হলো যাওয়ার জন্য।
ফিহার না যাওয়ার কারন,,,, রুহানের ভাইকে ওর মোটে ও পছন্দ নয়।ছেলেটা আমাকে দেখলেই গায়ে পরতে চায়। ভীষণ বিরক্ত লাগে। শুধু আপুর কথা ভেবে রাজি হয়েছি।না হলে আমাকে কেউ ওই বাড়িতে নিতে পারতো না।

ফিহাকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও বোনের শ্বশুর বাড়িতে যেতে হলো।
বর্ন তার মা আর বোন দুজনকে পেয়ে ভীষণ খুশি হলো।বাবা থাকলে আরও ভালো লাগতো।

বর্নঃ কিরে ফিহু মুখ এইরকম করে আছিস কেন।
ফিহাঃ কিছু না আপু।এমনিই শরীরটা একটু অসুস্থ লাগছে।
বর্ন ফিহার অসুস্থের কথা শুনে বোনকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরলো।এটা দিব কিনা ওটা দিব কিনা। ফিহার অবস্থা খারাপ করে দিচ্ছে।

ফিহাঃ আরে আমার তেমন কিছু হয়নি তুমি আমাকে নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ো না।আমাকে একটু ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দিলেই হবে।হালকা মাথা ব্যথা করছে।
বর্ন ফিহাকে গেস্ট রুমে নিয়ে গেলো।
ফিহা বালিশে মাথা দিতেই ঘুমিয়ে পরলো।

ফাহাদ বাড়িতে গিয়ে কোনো কাজে মন বসাতে পারছেনা।না খেতে পারছে,,,,না ঘুমাতে পারছে,,,কোনো কাজেই মন বসাতে পারছেনা। সারাক্ষণ ফিহার কথা মনে পড়ছে।

ফাহাদঃ মেয়েটা কি এমন করলো আমায়।ওকে ছাড়া কিছুই মাথায় আসছে না।যেদিকে যাই শুধু ওকেই দেখি।ওকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। ভালোবাসি কিনা সেটা বুঝতে পারছি না। কিন্তু আমার ওকে ভীষণ ভালো লাগে।ওকে দেখলে মনে আলাদা এক শান্তি লাগে।আর না দেখলে কেমন পাগল পাগল মনে হয় নিজেকে।

ফাহাদ বালিশের মাঝে নিজের মাথা চেপে ধরলো। মাথায় কোনো কাজ করছে না।ফিহাকে দেখতে ইচ্ছে করছে। ও এখন ড্রাগস এর মতো হয়ে গেছে ।ড্রাগস যেমন প্রতিদিন না খেলে পাগলের মতো লাগে।ফিহাকে না দেখলে আমার পাগল পাগল লাগে।
ফাহাদ বালিশের মাঝে মাথা দিয়ে চটপট করছে।

পিছন থেকে ফারিন ফাহাদের কাঁধে হাত রেখে বললো,,,,কিছু হয়েছে কি ভাই তোর এমন চটপট করছিস কেন।শরীর খারাপ লাগছে। ডাক্তার ডাকবো কি।
ফাহাদ বালিশ থেকে মাথা উঠিয়ে বোনের দিকে তাকিয়ে বললো,,, তেমন কিছু না এমনি একটু খারাপ লাগছে।

ফারিন বুঝতে পারলো তার ভাই কোনো সমস্যায় আছে।

ফারিনঃ দেখ ভাই আমি বুঝতে পারছি তুই কোনো সমস্যায় আছিস।আমি তোর বোন হই। আমার কাছ থেকে অন্তত কিছু লুকিয়ে রাখিস না।তুই বল কি হয়েছে। আমি ও তোকে সাহায্য করবো।

ফাহাদ তখন ফিহার সব ঘটনা খুলে বললো।

ফারিন মুচকি হেসে বললো,,,, ও,,,ও,,ওও।। তাহলে এই ব্যপার আমার ভাই প্রেমে পরেছে।
বাহ্ তুইও দেখি এখন প্রেমে পরেছিস।

ফাহাদ লজ্জা পেয়ে মাথা চুলকিয়ে,,,,, না আপু তুমি যা ভাবছো তেমন কিছু না। আমি তো ওই……..

ফারিনঃ হয়েছে হয়েছে আর ঢং করতে হবে না।প্রেমে পরেছে,,,,আমার ভাই প্রেমে পরেছে।
বলতে বলতে ফারিন ফাহাদের রুম থেকে বের হয়ে গেল।

ফাহাদ মুচকি হেসে বিরবির করে বললো,,,হয়তো তাই হবে আমি এখনও শিউর হতে পারছি না আধো ও কি প্রেমে পরলাম,………………🍂ফিহুপাখি🍂

কার গরম নিশ্বাস মুখের ওপর পরতেই ফিহার ঘুম ভেঙে গেলো।ফিহা চোখ খুলে সামনের ব্যক্তিটির দিকে তাকাতেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। ফিহা জোরে সোরে এক ধাক্কা মারলো।
ফিহা রাগান্বিত হয়ে বলে,,,আপনি আমার কাছে আসলেন কেন। আপনার তো সাহস কম না।

চলবে………
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here