#হৃদয়ের_মাঝে_তুই(সিজন – ০২)
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
#পর্বসংখ্যা__০১
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ ❌]
ফি.…………হা……ফি…………হা।
ফিহা ঘুম থেকে ধড়ফড় করে ওঠে বসলো।
ফিহাঃ কে,,,কে,,,,,, চো,,চোর টোর ঢুকেনি তো বাড়িতে।
হাসির শব্দ কানে আসতেই পাশে তাকিয়ে দেখে বর্ন হাসতে হাসতে ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
ফিহার আর বুঝতে বাকি রইল না এইটা কার কাজ।
ফিহা রেগে বললো,, এই কুটনি আবার শ্বশুর বাড়ি থেকে চলে আসলি আামাকে জ্বালাতে।তোর কি পেটের ভাত হজম হয় না আামাকে না জ্বালালে।
এইভাবে কেউ কাউকে ঘুম থেকে ওঠায়।আর একটু হলে আমি হার্ট অ্যাটাক করে মারা যেতাম।আমি নিশ্চিত রুহান ভাইকে তুই জ্বালিয়ে মারিস।ওই বাড়ি থেকে চলে আসলি আমাকে জ্বালাতে।
আমার স্বাদের ঘুমটা তুই নষ্ট করে দিলি।
বর্ন কিছু না বলে হাবার মতো তাকিয়ে আছে ফিহার দিকে।
বর্ন ফিহার কান টেনে বললো,,ওরে আমার আদরের দুলালিরে সকাল কয়টা বাজে দেখছিস তুই,,,ফিহার মাথা ঘুরিয়ে ঘড়ির দিকে দেখালো।ফিহার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।
এইরে নয়টা অলরেডি বেজে গেল। আজকে তো আমার ভার্সিটির প্রথম দিন। বর্নের দিকে অসহায় ভাবে তাকালো।
ফিহাঃ তাই বলে কেউ এইভাবে ঘুম থেকে ওঠায়। আমি খুউব ভয় পেয়েছি।
বর্নঃ তোকে আমি দশ মিনিট ধরে ডাকছি কিন্তু তুই তো ওই যে কি যেন বলে,,,,,,,ও,,,হ্যাঁ মনে পরেছে,,,পাশের বাড়ির গাড্ডু আছে না ওর মতো হা করে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিস বলে হা হা করে হাসতে থাকে।
ফিহাঃ একদম গাড্ডুর কথা বলবে না ও একটা আলু চোর,,গামছা চোর,,বদনা চোর,,জুতা চোর,,,আমার বাগানের কি যেন,,,হ্যাঁ,, হ্যাঁ গোলাপ চোর,,আমার সব ফুল চুরি করে ওর ভাইয়ের ফুলসজ্জার খাট সাজিয়েছে ওর সাথে আমার তুলনা করছো।
ওরে পাই একবার পুকুরে নিয়া চুবানি খাইয়ে ছাড়মু তাহলে আমার নাম ও ফিহা নয় হু।
বর্নঃ হয়েছে তোর বকবক এইবার তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে রেডি হ্।
ফিহা ফ্রেশ হতে চলে গেল।
বর্ন নিজের রুমে গিয়ে আরাম করে খাটের ওপর শুয়ে বালিশে মাথা রেখে ঘুমাবে এমন সময় মোবাইল বেজে উঠল।
বর্নের ভীষণ রাগ হয়,,,,,আরাম করে ঘুমাইতেও দিবে না। কোন হতচ্ছাড়া ফোন দিলো।
★
ফোন রিসিভ করতেই………বর্ন জানপাখি মা তোমায় আবার বকেছে।আমি মায়ের হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি।তুমি বাড়িতে আস প্লিজ লক্ষিটি।
বর্নঃ দেখো রুহান আমি তিন..চার দিন থেকে তারপর যাবো। আর শুনো তুমি তোমার মাকে নিয়ে শান্তিতে থাকো।আমি নাকি তোমার মাকে সারাক্ষণ জ্বালাই। তোমার মা যে আমার মাথার ওপর সারাক্ষণ বকবক করে সেটার খবর তুমি রাখ।ভাতে নুন কম,ডালে হলুদ কম,তরকারিতে মরিচ বেশি এইসব বলে খোঁচা মেরে কথা বলে।ওনি আমার দোষ সারাক্ষণ ধরতে পারলেই যেন খুব ভালো থাকেন।আজকে ফিহার ভার্সিটির প্রথম দিন তাই আমি এসেছি। তোমার মায়ের ওইসব খোঁচা মারা কথার জন্য নয়।রুহান আমি তোমায় ভালোবাসি দেখে তোমার মায়ের এইসব মুখ বুঝে সহ্য করে নেই। তাহলে আমাকে ওই বাড়িতে কেউ রাখতে পারতো না শুনলে তুমি।
রুহানঃ তুমি আসবে না তাই তো। ওকে আমি আসছি তোমাকে নিতে।তোমাকে না দেখলে আমার ঘুম হয় না। আমার কিউট,,মিষ্টি বউটাকে ছাড়া আমি থাকতে পারি না। তাহলে আমিই আসি আর কি করার।
বর্নঃ আর ঢং করতে হবে না। তুমি আসলে তোমার মা আবার বলবে…আমার ছেলেকে হাত করে ফেলেছে ওই মেয়ে।আমি চলে আসবো। তুমি অফিসে চলে যাও।
রুহানঃ এইতো আমার মিষ্টি বউটা লাইনে আসছে।বাড়িতে এসে যেন আমার মিষ্টি বউটাকে আগে দেখতে পাই।
★
ফিহা আলমারি থেকে সব জামা কাপড় বের করে খাটের ওপর রেখে দেখছে কোনটা পরবে।সবগুলোই ভালো লাগছে।
এখন কোনটা পরবো সেটাই বুঝতে পারছি না। বর্ন আপুকে বলবো ও সাহায্য করবে।
এমন সময় বর্নও ফিহার রুমে এসে হাজির।
বর্নঃ ফিহা সব জামা কাপড় পরে যাবি নাকি।
ফিহাঃ না আপু সবগুলোই ভালো লাগছে কোনটা পরবো সেটাই বুঝতে পারছিনা। তুমি বলে দেও না কোনটা পরবো।
নীল রঙের একটা থ্রি পিচ নিয়ে বললো এইটা পর সুন্দর মানাবে তোকে।
ফিহা জামাটা নিয়ে পরতে যাবে ঠিক তখনই একটা কথা মনে হলো ফিহার।
ফিহাঃ এই আপু আমি আজকে কাপড় পরে যাব।
বর্ন যেন আকাশ থেকে পরলো,,,তোর মাথা ঠিক আছে ফিহু কাপড় কেন পরতে যাবি।
ফিহাঃ ভার্সিটির বড় খচ্চরদের থেকে বাঁচার জন্য।
বর্ন সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,,,,বড় খচ্চর মানে……
ফিহাঃ আরে আমার হাবা আপারে মানি রেগিং করে যে ওইটার কথা বলছি।ওইসব আমার একদম ভালো লাগে না।হাতে গোলাপ দিয়ে প্রপোজ করতে বলে,,,চুমু খেতে বলে,,,নাচতে বলে,,, গান করতে বলে,,কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে ব্লা ব্লা আরও কত কি।কে শুধু শুধু ঝামেলায় পরতে চায়। তাই আমি এখন ঠিক করেছি কাপড় পরে শিক্ষিকা সেজে যাবো। কেমন হবে আপু বল না।
বর্নঃ তোর মাথা হবে। এইসব দুষ্ট বুদ্ধি নিয়ে কীভাবে থাকিস তুই।আর তুই এইসব কাপড় পরে ভার্সিটি গেলে সবাই হাসাহাসি করবে।তোকে সবাই পাগল বলবে।
ফিহাঃ আমি এতকিছু জানি না প্লিজ প্লিজ আপু তোর একটা কাপড় আমায় পরিয়ে দে। বাকিটা আমি দেখবো।এই ফিহার বা হাতের খেল এইটা হু।প্লিজ।
বর্নঃ ধরা খাইলে অনেক শাস্তি ও পাবে।
বর্ন ফিহাকে কালো রঙের কাপড় খুব সুন্দর করে পরিয়ে দিলো।চুলগুলো খোপা করে দিলো। চোখা মোটা ফ্রেমের চশমা দিলো।
বর্নঃ বাহ্।একদম মেডাম মেডাম লাগছে।চল এইবার তোর সময় চলে যাচ্ছে।
ফিহা তার মা মিসেস রাজিয়াকে বলে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
বর্নকে মিসেস রাজিয়া দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো,,, কিরে বর্ন ফিহা না খেয়ে চলে গেল। আর কাপড় পরে কই যাচ্ছে। ভার্সিটি যাবে না নাকি।
বর্ন সব খুলে বললো মিসেস রাজিয়া সব শুনে হতবাক হয়ে গেল। এই মেয়েকে নিয়ে আর পারি না খালি দুষ্ট বুদ্ধি মাথায় নিয়ে ঘুরে।
ফিহা ভার্সিটিতে ঢুকতেই বাঁধলো আরেক বিপওি………….
চলবে………….
[ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]