অনুভূতির_শীর্ষবিন্দু #written_by_Nurzahan_Akter_Allo #part_08

0
789

#অনুভূতির_শীর্ষবিন্দু
#written_by_Nurzahan_Akter_Allo
#part_08

— “অই ফুরি আমার নাত্তি রে কি কালাজাদু খরসত এখবারে বউর ফাগল অইগেছ।”

নানুর কথা শুনে বড়রা মুখ টিপে হাসছে। নক্ষত্রও এবার লজ্জা পেলো। বিশেষ করে ‘বউ’ শব্দটা শুনে। তিতিক্ষা এখন নক্ষত্রের বউ; এই কথাটা শুনলেই নক্ষত্রের মনে অন্যরকম একটা অনুভূতি এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে। আর তিতিক্ষার মনে হচ্ছে মাটি ফাঁক করে মাটির নিচে ঢুকে পড়তে। যেমন ফাজিল ভাই তেমনি হয়েছে তার বোন। আর নানু সে তো আছে একধাপ উপরে। বড় মামিরাও হাসছে অদ্রির কথা শুনে। বড়দের সাথে সামনে লজ্জাজনক একটা পরিস্থিতি। তিতিক্ষার ইচ্ছে করছে এক দৌড়ে রুমে গিয়ে বালিশের নিচে মুখ লুকাতে। সবাই তিতিক্ষাকে লজ্জাতে ফেলার প্রতিযোগিতায় যেন নাম লিখিয়েছে। এজন্য যখন তখন যে যার মতো করে ওকে লজ্জা দিয়ে যাচ্ছে।

নক্ষত্র সবার দিকে আড় চোখে একবার তাকালো। এরপর নরম সুরে তিতিক্ষার দিকে তাকিয়ে বললো,

— “তুমি শীতের ড্রেস পড়ে এসো। আমরা একটু বাইরে বের হবো।”

নক্ষত্রের আম্মু কথাটা শুনে নক্ষত্রকে বললো,

— “আব্বু রাতের বেলায় আবার বের হবি? এত জার্নি করে এসে এখন একটু রেস্ট নিলে হতো না?”

নক্ষত্র তিতিক্ষার দিকে একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো। নক্ষত্র ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে ছোট্ট করে বললো,
— “আম্মু আমার একটু কাজ আছে।”

নক্ষত্রের আম্মু আর কথা বাড়ালো না। কিন্তু বড় মামির মেয়ে পাতা নক্ষত্রের আম্মুকে উদ্দেশ্য করে বললো,

— “ফুপিমণি তুমি এত টেনশন করছো কেন? ভাইয়ার এখন আর এক্সটা এনার্জির প্রয়োজন নেই। ভাইয়ার পাওয়ার ব্যাঙ্ক তো ভাইয়ার সাথেই যাচ্ছে।”

পাতার কথা শুনে নক্ষত্রও হাসলো। নক্ষত্র অদ্রি আর পাতার দিকে তাকিয়ে বলল,

— “ফিরে এসে আপনাদের প্রাপ্য পিটুনিটুকু পরিশোধ করে দিবো।”

নক্ষত্রের কথা শুনে অদ্রি আর পাতা একে অপরের দিকে তাকালো। নক্ষত্রের আম্মু তিতিক্ষাকে রেডি হয়ে আসতে বললো। তিতিক্ষা রুমে যেতে যেতে পাতার পুরো কথাটাই শুনেছে। এদিকে নক্ষত্রের সাথে এখন ওর যেতে হবে। এটা ভাবলেই ওর শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। নক্ষত্র ছোট্ট মামার থেকে গাড়ির চাবিটা নিলো। আর নিজেও শীতের ড্রেস পড়ে আসলো। নক্ষত্রের আম্মু তিতিক্ষার রুমে এসে দেখে, তিতিক্ষা চুপ করে বসে আছে। তিতিক্ষা অসহায় মুখ করে বললো,

— “ও আম্মু আমি না গেলে কিছু হবে? প্লিজ তোমার ছেলেকে বলো না যে আমি যাবো না।”

নক্ষত্রের আম্মু তিতিক্ষার কথা শুনে রাগী চোখে তিতিক্ষার দিকে তাকালো। নক্ষত্রের আম্মুর রাগী চোখে তাকানো দেখে তিতিক্ষা ওর চোখ নামিয়ে নিলো। নক্ষত্রের আম্মু তিতিক্ষাকে রেডি করতে করতে বললো,

— “নিজের ফিওন্সের সাথে যাচ্ছিস, তাহলে এত লজ্জা কিসের শুনি? আমার ছেলেটা তোর সাথে সময় কাটাবে বলে শীতের মধ্যে তোকে নিয়ে ঘুরতে বের হচ্ছে। আর তুই কিনা এখানে এসে লজ্জায় মরে যাচ্ছিস?”

তিতিক্ষা কিছু বলার ভাষা খুঁজে পেল না। নক্ষত্রের আম্মু যে এখন কিছুতেই তিতিক্ষার সাপোর্ট করবে না। এটা তিতিক্ষা খুব ভালো করে বুঝলো। ওর শাশুড়িই মনে হয় পৃথিবীর প্রথম শাশুড়ি; যে ছেলের সাথে প্রেম করতে যেতে নিজে শাশুড়ি হয়ে বৌমাকে উৎসাহ দিচ্ছে। নক্ষত্রের আম্মু তিতিক্ষাকে নক্ষত্রের কাছে নিয়ে গিয়ে বলল,

— “এই নে আমার মেয়েকে। যেমন ভাবে দিলাম ঠিক তেমন ফেরত নেব। যদি কোনভাবে ওর ঠান্ডা লাগে। তাহলে আমি তোর বারোটা বাজাবো। মনে থাকে যেন।”

নক্ষত্র ওর আম্মুর কথা শুনে তিতিক্ষার দিকে তাকালো। তিতিক্ষা কে দেখতে পুরো পুতুলের মত লাগছে। নক্ষত্রের আম্মু একদম বাচ্চাদের মত তিতিক্ষা কে সাজিয়ে দিয়েছে। তিতিক্ষার আম্মু নক্ষত্রের আম্মুকে বারবার করে বলে দিয়েছে যে তিতিক্ষার অল্পতেই ঠান্ডা লাগে। তিতিক্ষাকে যেন উনি একটু দেখেশুনে রাখেন। নক্ষত্রের আম্মুও কোন রিক্স নিতে চায় না। এজন্য তিতিক্ষাকে উনি একেবারে মাথা থেকে পা পর্যন্ত শীতের পোশাকে মুড়িয়ে দিয়েছে। নক্ষত্র তিতিক্ষার দিক থেকে চোখ সরিয়ে মুচকি হেসে ওর আম্মুকে বলল,

— “হুম! আমার বয়েই গেছে তোমার পুতুল মেয়েকে ঠান্ডা লাগাতে।”

নক্ষত্রের আম্মু নক্ষত্রের পিঠে একটা থাবা দিলো। নক্ষত্রের তিতিক্ষাকে গাড়িতে উঠে বসতে বলল। নক্ষত্র নিজেও গাড়িতে উঠে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লো। নক্ষত্রের আম্মু ওদের সাবধানে যেতে বলল। নক্ষত্র ওর আম্মুকে ‘আল্লাহ হাফেজ’ বলে গাড়ি স্টার্ট দিল। তিতিক্ষা জানালার দিকে তাকিয়ে চুপ করে করে বসে আছে। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
— “এই যে পুতুল কন্যা আপনি কি আমাকে ভয় পাচ্ছেন? এভাবে চুপ করে আছেন কেন?”

তিতিক্ষা একনজর নক্ষত্রের দিকে তাকালো। নক্ষত্র মিটিমিটি হাসছে। তিতিক্ষা নক্ষত্রের দিক থেকে চোখ সরিয়ে মৃদু কন্ঠে বলল,
— “ভ ভ ভয় পাবো কেন?”

নক্ষত্র তিতিক্ষার কথা শুনে আবারও হাসল। তিতিক্ষার লজ্জা মাখা মুখটা নক্ষত্রের রাতের ঘুম হারাম করার জন্য যথেষ্ট। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে একটু রাগানোর জন্য বলল,
— “তুমি কি জন্ম গতই তোতলা? নাকি বিয়েগত তোতলা?”

নক্ষত্রের কথা শুনে তিতিক্ষা ভুরু কুঁচকে নক্ষত্রের দিকে তাকালো। জন্মগত শব্দটার মানে তিতিক্ষা খুব ভালো করে বুঝে। কিন্তু বিয়েগত শব্দটার মানে তিতিক্ষার অজানা। তিতিক্ষা মাথা নিচু করে মৃদু স্বরে বলল,
— “বিয়েগত? এই কথাটার মানে ঠিক বুঝলাম না।”

নক্ষত্র এক হাত দিয়ে ড্রাইভ করছে আর অন্য হাত দিয়ে নিজের চুল গুলোতে হাত বুলাচ্ছে। নক্ষত্রের ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসি স্পষ্ট। নক্ষত্র তিতিক্ষা কে বলল,
— “জন্মগত মানে জন্ম থেকেই। আর বিয়ে গত মানে বিয়ে থেকেই। যদিও আমাদের বিয়ে হয়নি তবে এনগেজমেন্ট তো হয়েছে। পুরোপুরি ভাবে আমি তোমাকে পাইনি । তবে এখন অর্ধেকটা তো পেয়েছি। এনগেজমেন্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি জানতাম তুমি তোতলা না। কিন্তু এখন আমি কিছু জিজ্ঞাসা করলেই তুমি তোতলাও। ঐজন্য আমি ভাবলাম তুমি বিয়েগত তোতলা।”

তিতিক্ষা হতভম্ব হয়ে নক্ষত্রের দিকে তাকালো। নক্ষত্র যে এরকম একটা যুক্তি দেখাবে তিতিক্ষা কল্পনাও করেনি। নক্ষত্র একটু পর গাড়ি থামালো। তিতিক্ষা কে নামতে বলে সে নিজেও নামলো। অসম্ভব সুন্দর একটা ব্রীজের উপরে ওরা এসেছে। চারদিকে লাইটের ঝলকানি। ব্রিজের উপর দিয়ে অনেক গাড়ি যাচ্ছে। ঠিক রাতের যমুনা সেতুর সৌন্দর্যতা যেমন দেখায় কিছুটা তেমন মনে হলেও দুটোর সৌন্দর্য দুই ধরনের। তিতিক্ষা নক্ষত্রের পাশে এসে দাঁড়ালো। তিতিক্ষা অবাক চোখে দেখছে ব্রিজের সৌন্দর্য। আর নক্ষত্র দেখছে তিতিক্ষার হাস্যজ্জল প্রাণবন্ত মুখশ্রীটাকে। তিতিক্ষা ওর দুই গালে হাত থেকে অবাক হয়ে নক্ষত্র কে জিজ্ঞাসা করল,
— “ওয়াও! এটা কোন জায়গা? জায়গাটা তো অসম্ভব সুন্দর!”

নক্ষত্র তিতিক্ষার দিকে তাকিয়ে বলল,
— “যেটা ন্যাচারাল বিউটি সেটার সাথে কখনো কারো তুলনা হয় না। ন্যাচারাল হলো একদম সবার থেকে ভিন্ন কোয়ালিটির।” ( ধীর কন্ঠে)

তিতিক্ষা আবারও জানতে চাইলো ওরা এখন কোথায় আছে? নক্ষত্র ছোট্ট করে উত্তর দিল,
— “এই ব্রিজটার নাম ক্বীন ব্রিজ।”

এই ব্রিজটার এমন অদ্ভুত নাম শুনে তিতিক্ষা সামনের দিক থেকে ওর দৃষ্টি সরিয়ে নক্ষত্রের দিকে তাকালো। নক্ষত্র তিতিক্ষার আগ্রহসূচক দৃষ্টির মানে বুঝে নিজে থেকেই বললো,
— “গত শতকের তিরিশ দশকের দিকে আসাম প্রদেশের গভর্নর ছিলেন মাইকেল ক্বীন। তিনি সিলেট সফরে আসেন। তার স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতেই এ ব্রীজটি নির্মাণ হয় । এবং এই ব্রীজটির নামকরণ করা হয় গভর্নর মাইকেল ক্বীনের নামানুসারে।”

তিতিক্ষা এবার বুঝতে পারলে এমন অদ্ভুত নামের কারণ। আরো বেশ কিছুক্ষন ওরা ওখানে থেকে গাড়িতে উঠে বসলো। পাঁচ মিনিট পর নক্ষত্র আবার গাড়ি থামিয়ে তিতিক্ষা কে গাড়ি থেকে নামতে বললো। তিতিক্ষা গাড়ি থেকে নেমে নিচে দাঁড়ালো। নক্ষত্র গাড়ি লক করে তিতিক্ষা কে নিয়ে সামনে এগুলো। নক্ষত্র একটা চায়ের দোকানের সামনে এসে চাওয়ালা কে বলল,
— “মামা দুই কাপ বুলেট চা দিয়েন।”

নক্ষত্র কথা শুনে দোকানী মাথা নাড়িয়ে বললো,
— “জি মামা এখনই দিতেছি।”

তিতিক্ষা একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে অনেকগুলো মানুষ ভিড় জমিয়েছে চা খাওয়ার জন্য। নক্ষত্র তিতিক্ষার পাশে এসে দাঁড়াতেই একটা ছেলে এসে ওদের চা দিয়ে গেল। নক্ষত্র ছেলেটার হাত থেকে চায়ের কাপ দুটো নিলো। একটা কাপ তিতিক্ষার দিকে এগিয়ে দিল। তিতিক্ষা নক্ষত্রের হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে একটা চুমুক দিয়ে চোখ মুখ কুঁচকে নিল। তিতিক্ষার অবস্থা দেখে নক্ষত্র হো হো করে হেসে দিল। তিতিক্ষা অবাক চোখে নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে আছে। এই প্রথম নক্ষত্রকে তিতিক্ষা এভাবে হাসতে দেখলো । নক্ষত্র যে এমন প্রাণখোলা হাসি হাসতে পারে; এটা তিতিক্ষা আজকে জানলো। নক্ষত্র হাসি থামিয়ে বললো,
— “এটা সাধারন চা না। এই চায়ের নাম বুলেট চা। তেতুল, লবণ, কাঁচা মরিচ, চা, আর চিনির সংমিশ্রণে এই চা টা বানানো হয়। এর টেস্ট টা দারুন না?”

তিতিক্ষা নক্ষত্রের কথায় মাথা নাড়িয়ে শুধু হ্যাঁ বোঝাল। নক্ষত্রের হাসির শব্দটা তিতিক্ষা কানের কাছে বেজে উঠছে। ওর হৃদস্পন্দন টা আবার কম্পিত হতে শুরু করেছে। তিতিক্ষা চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে একটা পা এক পা করে সামনের দিকে এগোচ্ছে আর চায়ে চুমুক দিচ্ছে। এই চায়ের টেস্টা আসলেই অসাধারণ। হুট করে কোথা থেকে একটা লোক এসে তিতিক্ষার পাশে দাঁড়ালো। তিতিক্ষা লোকটিকে দেখে নক্ষত্রের দিকে এগিয়ে আসতেই, লোকটিও তিতিক্ষার সাথে সাথে হাঁটতে শুরু করল। নক্ষত্রের দৃষ্টি ওদের দিকে নিবন্ধ। লোকটির এমন কাজে তিতিক্ষা দ্রুত পায়ে এসে নক্ষত্রের পাশে দাঁড়ালো। নক্ষত্র লোকটির দিকে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠে একটু জোরে বললো,
— “আপনি কি আমার বউয়ের পাশে দাঁড়াতে চাচ্ছেন?” নক্ষত্রের মুখে বউ শব্দ টা শুনে লোকটি থমকে দাঁড়িয়ে গেল। সেই লোকটি ভেবেছিল তিতিক্ষা একা। এজন্য তিতিক্ষা কে ডিস্টার্ব করতে এসেছিল। একা মেয়ে থাকলে যেরকম হয়ে থাকে। নক্ষত্র তিতিক্ষা হাত ধরে লোকটির সামনে এসে দাড়ালো। লোকটি মুখ কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে আছে। নক্ষত্র মুচকি হেসে তিতিক্ষার দিকে তাকিয়ে বলল,
— “উনি তোমার মামার বয়সী। উনাকে মামা সম্মোধন করে উনার সাথে ইন্ট্রুডিউস করে নাও। আর মামা আপনি আপনার ভাগ্নীকে কি বলবেন?”

লোকটি আমতা আমতা করে জোরপূর্বক একটা হাসি দিলো। মাইনকার চিপায় পড়লে মানুষ যেমন হাসিটা দেয় তেমন! নক্ষত্রের ঠান্ডা মাথায় দেওয়া বাঁশ লোকটি বিনাবাক্যে হজম করে নিলো। চায়ের দোকানের কয়েকজন এগিয়ে আসলো। উনারাও এতক্ষণ লোকটির কান্ড দেখছিলো। দোকানের ছেলেগুলো লোকটিকে কিছু বলতে যাবে। তখনই লোকটি এদিক ওদিক তাকিয়ে ভৌ-দৌড় দিয়ে সে স্থান ত্যাগ করল। তিতিক্ষা নক্ষত্রের মুখপানে চেয়ে আছে। নক্ষত্র চায়ের বিল দিয়ে ওখান থেকে সরে আসলো। সাথে তিতিক্ষা ছিলো এজন্য নক্ষত্র ছেলেটাকে তেমন কিছু বলেনি।

বড়মামা আর নক্ষত্রের আম্মু বসে গল্প করছে। পাশে ছোট্ট মামি বসে ফল খাচ্ছে। বড় মামী নক্ষত্রের আম্মুর দিকে তাকালো বললো,
— “আপা নক্ষত্র আর তিতিক্ষাকে এভাবে একা ছেড়ে দেওয়া কি ঠিক হচ্ছে?”
নক্ষত্রের আম্মু মুচকি হেসে বললো,
— “দিন পাল্টেছে এখন। তিতিক্ষা নক্ষত্রকে চেনে না জানে না। ওদের তো দুজন দুজনকে চেনা উচিত, সময় দেওয়া উচিত। আর নক্ষত্রের উপর আমার বিশ্বাস আছে।”

নক্ষত্র গাড়িতে বসেই তিতিক্ষাকে এটা ওটা দেখাচ্ছে। ওই ব্যাপারটা নিয়ে তিতিক্ষা তখন ভয় পেয়েছিলো। কিন্তু নক্ষত্র ব্যাপারটাকে এমনভাবে সমাধান করবে তিতিক্ষা ভাবতেও পারেনি। নক্ষত্র কে নিয়ে তিতিক্ষার মনে অদ্ভুত একটা অনুভূতি বাসা বাঁধছে। তিতিক্ষা একবার নক্ষত্রের দিকে তাকাতেই নক্ষত্রের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল। তিতিক্ষা সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিলো। নক্ষত্র মুচকি হাসলো। তিতিক্ষা মাথা নিচু করে ওর আঙুল মোচড়াচ্ছে। নক্ষত্র তিতিক্ষাকে স্বাভাবিক করতে বললো, “তিতিক্ষা তুমি কিতা সিলেটি মাত বুজো নি?”

তিতিক্ষা নক্ষত্রের মুখে সিলেটি কথা শুনে হাসলো। আর বললো একটু আধতু বোঝে। নক্ষত্র ওর ঠোঁটের কোণে দুষ্টু হাসির রেখা টেনে বললো,
— “আমার টেমেটু বউ। তুমারে ফুতুল ওর লাখান লাগের। খাল্কে থাকি আমরা দুইজনে মন কুলিয়া প্রেম/ফেম করমু।”

তিতিক্ষার নক্ষত্রের কথা বুঝতে একটুও সময় লাগেনি। তিতিক্ষা নক্ষত্রের কথা শুনে দুই হাত মুখ ঢেকে নিলো। আর নক্ষত্র হো হো করে হেসে দিলো।

To be continue

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here