-‘এলোকেশী কন্যা’-
[৩৪]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)
“ছালা, তর ত্যাজ’ই আইজ বাইল কলুম।”
কথাটা বলে একজন মাঝবয়সী মহিলা মতিকে পটাপট থাপ্পড় দিতে থাকলেন। থামার নাম গন্ধ নেই, ঠাস্ ঠাস্ শব্দে অনবরত এই কাজ চলমান রাখলেন। পুরুষালি হাতের মতো উনার শক্ত হাত। আর সেই হাতের অনবরত থাপ্পড়ে মতির গাল, কান, আর মাথা অবশ যেন অসাড় হয়ে যাচ্ছে। ঠোঁট কেটে রক্ত ঝরে মাথা ভনভন করে ঘুরছে। কী আশ্চর্য! মহিলাদের হাতের থাপ্পড়ও এত ব্যথাতুর হয়, মতির তো জানা ছিল না। জানবে কীভাবে? সে এতদিন ইচ্ছেমতো শাষণ চালিয়ে এসেছে, মারের আঘাত তো কখনো সহ্য করে নি। যদি শাষণের ছিঁটেফোঁটাও ওর কপালে জুটত তাহলে অমানুষ নয়; বরং মানুষ’ই হতো! নিষ্ঠুরের মতো কাজ করার আগে বিবেকে নাড়া দিতো। মাটিতে শুয়ে হাত বাঁধা অবস্থা সে থাপ্পড় হজম করেছে। ওই মহিলা ওর বুকের উপর চেপে বসে এতক্ষণ মারের কাজে মগ্নে ছিলেন। ক্লান্ত হয়ে স্বজোরে দুই হাতে দু’টো থাপ্পড় লাগিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। বেচারা হাঁপিয়ে গেছে এই মহৎ কাজ করতে বসে। মতির গলাকাঁটা মুরগির মতো খুব ছটফট করে অবশেষে জ্ঞান হারালো। কয়েকজন মেয়ে ওর অবস্থা দেখে খিলখিল শব্দে হেসে একে অপরের গায়ে লুটে পড়ল।ব্যাপারটা ওদের কাছে বিনোদনস্বরুপ! আর মতি ঠোঁটের কোণের রক্ত আর চোখের কোণের অশ্রু গড়িয়ে মাটিতে মিশে গেল। কেউ দেখেও যেন দেখল না। পার্থিব সত্য
, ‘ব্যথার মর্ম তখন’ই বোঝা যায়। যখন নিজের বুকে ব্যথার তীর’টা সরাসরি এসে বিঁধে।’
মতি হয়তো আজ উপলব্ধি করছে যে, ‘শরীরে আঘাত পড়লে কেমনে লাগে!’
ওদিকে মাতবরকে দেখতে গ্রামবাসীরা উপস্থিত হয়েছেন। ইস! মাতবরের কষ্ট চোখে দেখা যাচ্ছে না। মাতবরের বিছানায় শুলে শরীর জ্বলছে তাই মাটিতে শুয়ে ছটফট করছেন। মাংস পঁচার বিশ্রী গন্ধে নাকে চেপেও কেউ বেশিক্ষণ দাঁড়ালেন না। উনাদের গা গুলিয়ে বমি হওয়ার উপক্রম। কে বা স্ব-ইচ্ছায় বমি করতে চায়? তাই যে যার কাজের বাহানা আর সান্ত্বণার বাণী ছুঁড়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করল। মাতবরের সহধর্মিণীরা রান্নাঘরের কাজে ব্যস্ত। তাদের মুখে না আছে কষ্টের ছাপ আর না আফসোসের! রোজকার জীবন্ত লাশের ন্যায় যে যার কাজ করে যাচ্ছেন। রবি উঠানের এককোণে বসে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুদিন আগে, মাতবর তােকে মেরে ঠোঁট কেটে দিয়েছিলেন। তার অপরাধ ছিল; খেলার ছলে
মাতবরের শখের আরশি’টা ভেঙ্গে ফেলেছিল।
আর সেদিনের মার খেয়ে রবি মাতবরকে প্রচুর ভয় পায়। এজন্য সর্বদা দূরে দূরে থাকে। মাতবর আজ সকাল থেকে কিছু খায়নি দেখে উনার এক সহধর্মিণী খাবার নিয়ে বললেন,
”খাওন খান, ওছুদ আচে।”
একথা শুনে মাতবর হাতের কাছে থাকা স্টিলের গ্লাস’টা ছুঁড়ে মারলেন। অসহনীয় ব্যথায় ছটফট করছেন আর উনি এসেছেন খাবার গিলাতে। এত ব্যথা আর কষ্ট নিয়ে খাবার কী গিলা যায়? এইটুকুন বোধ বুদ্ধিও নাই এদের মাথায়।গ্লাসটা ছিঁটকে গিয়ে লেগেছে সহধর্মিণীর নাকে। সাথে সাথে নাক থেকে রক্ত বেরিয়ে ঠোঁট বেয়ে গড়িয়ে গেল। প্রচন্ড ব্যথাতেও উনি টু শব্দ করলেন না। করে কিছু হবে কী? তাছাড়া এই অবধি এত মার খেয়েছেন যে, শরীরে সব সয়ে গেছে। এখন আর কিছু মনেও করেন না। কারণ এই অমানুষটা যে ভালো হওয়ার নন; উনি শুধু দেখতেই মানুষ। উনাকে নাক ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মাতবর রেগে গালি দিতে লাগলেন। গালিগুলো এতটাই বিশ্রী মুখে উচ্চারণ করা দায়। হাকিমকে আসতে দেখে মহিলা চক্ষু-লজ্জায় সরে গেলেন। নয়তো উনার সামনে মাতবরের এই বিশ্রীগালি চলতেই থাকত। হাকিম এসে গাছালি ওষুধ দিয়ে ক্ষত পরিষ্কার করতে লাগলেন। আর মাতবর তখন গলা ফাটিয়ে আতনার্দ করতে লাগল। ওহ মা, ওহ আব্বা গো, আল্লাহ! আল্লাহ গো রহম করো।
এসব বলে উনি প্রাণপণে কেঁদে আকুঁতি মিনুতি করতে লাগলেন। এত কষ্ট সহ্য করা যাচ্ছে না। মাতবর কাঁদছেন আর নাক কুঁচকাচ্ছেন, নিজের শরীরের গন্ধ’ই উনার সহ্য হচ্ছে না। এজন্য দুই বার বমিও করলেন। হাকিম উনার ক্ষতস্থানে কাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে পোকা পরিষ্কার করছেন।রক্ত, পুঁজ, পঁচা মাংসে সাদা পোকা কিলবিল করছে।
দেখতে ঠিক; বেশি পাঁকা পেয়ারার সাদা পোকার মতো। মাতবর কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বার বার বলতে লাগলেন,
“আল্লাহ! আল্লাহ গো আমালে টুইল্লা লেও লে। আল ছহ্য হচ্ছে না। আমি আল পালছি না ,মা ওমা মা লে।”
হাকিম সময় নিয়ে চিকিৎসা করে বিদায় নিলো। আর মাতবর কাটা মুরগির মতো মাটিতে শুয়েই
আহাজারি করতে লাগলেন। এত কষ্ট-যন্ত্রণায়
উনার দম’টা যেন আঁটকে আসছে। চোখ দিয়ে ঝরঝর করে অশ্রু ঝরছে। শরীরের ব্যথায় নড়া যাচ্ছে না, নড়লে মনে হচ্ছে, শরীর সূচ ফুটছে।
কষ্টে কাতর হয়ে উনি নিজে থেকে’ই মৃত্যু কামনা করতে লাগলেন। মরার কথা শতবার বিরবির করে আওড়াতে লাগলেন। মৃত্যু ছাড়া গতি নেই উনিও বুঝে গেছেন।
–
এখন বাজে রাত বারো’টা তিন। সারাদিনের ব্যস্ততা পার করে রোদ কেবল বাসায় ফিরল।গত সপ্তাহে সে দু’টো বিরাট অঙ্কের ডিল পেয়েছে।এ ডিলটা ওর জন্য অপ্রত্যাশিত’ই ছিল; মূখ কথা আল্লাহ ওর সহায় ছিল বিধায় সুযোগটা সে হাতে এসেছে। এজন্য রোদ তাৎক্ষণিক আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে ভুলে নি। এই ডিলটাতে সফল হলে কয়েক কোটি টাকা লাভ’ও আসবে।
এজন্য সে প্রোড্রাক্ট রেডি করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। ওর জ্বরটা এখন নেই; তবে শরীরটা বেশ ম্যাজম্যাজ করছে। রোদ রুমে প্রবেশ করে দেখে আলো আর মেঘ ঘুমিয়ে গেছে। ওদের ঘুমানোর ভঙ্গি হেসে রোদ মুচকি হাসল।আলোর একহাত মেঘের বুকের উপর আর অন্য হাত ওর কপালের উপর। আর ছোট সাহেবের এক’পা আলোর পেটের উপর অন্য পা কোলবালিশের নিচে।ডান হাতে আলোর ওড়নার কোণা মুঠ করা, তার বাম হাতে আলোর চুলের লম্বা বেনুনি পেঁচিয়ে রাখা।
যেন সে ঘুমালে বউমনি ওকে রেখে কোথাও না যায়। মেঘের কৌশল দেখে রোদ হেসে ফ্রেশ হয়ে
নিচে গেল। মাথা ব্যথা করছে, কফি খেলে মন্দ হয় না। রোদ নিজে কফি বানিয়ে মেঘদের দেখে ছাদে গেল। আজকের আকাশটা খুব গম্ভীর হয়ে আছে। চাঁদ, তারা, কারোর’ই দেখা নেই। ছাদের এককোণে অনেকগুলো নতুন গাছ দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, আজকেই যত্ন করে গাছানো হয়।ওই দু’জনের কাজ হয়তো। এ্যালোভেরা, জবা, ঘাস,
তুলসী, মেথি, মেহেদীসহ আরো অনেক গাছ।
এসব করে সময় অতিবাহিত হয় দু’জনের। আর
বাগানের একপাশে হরেক রকমের সবজির বাগানও করেছে। শসার গাছে দু’টো ফুল ফুটেছে দেখে দু’জনে সে কী খুশি। রোদকে যে কতবার জানিয়েছে তার অন্ত নেই। আলো যখন যা বলে তার সহকারী মেঘ সেটা করতে উঠে পড়ে লাগে। আর সাগর ওদের সেসব জিনিসের ব্যবস্থা দেয়। আলো আসার পর বাড়িতে যেন আনন্দ ফিরে এসেছে।হাসি, খুশি, আর খুনশুটিতে আজকাল সুখ সুখ ভাব অনুভব হয়। এসব ভেবে কফির মগে ঠোঁট ছোঁয়াতে রোদের চোখ পড়ল দোলনার দিকে। সেখানে গিয়ে আলোর চুলের কাঁটা দেখে রোদ মুচকি হাসল। হয়তো ছাদে এসে ভুলে রেখে গেছে।এই মেয়েটা বড্ড মনভোলা স্বভাবের।রোদ দোলনায় বসে কাঁটা’টার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে প্রায় এগারোদিন আগের কথা স্মরণ করল।
এগারোদিন আগে,
সেদিন সকালে রোদ মেঘকে আলোর হাতে খেতে দিচ্ছিল না। আর মেঘ আলোর হাতে খাওয়ার জেদ করছিল। আলোও জোর করে মেঘকে ধরে খাওয়াতে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে দু’জনের ঝগড়া লেগে যায়। ওদের ঝগড়া দেখে মেঘ শব্দ করে কেঁদে দেয়। আলো উঠে থামাতে গেলে রোদ ওকে মেঘের কাছে ঘেষতে দেয় না। মেঘকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং বকাবকির করে আলোর কাছে যেতে নিষেধ করে। একথা শুনে মেঘ ভয়ে আরো জোরে কাঁদতে থাকে। আর এক হাত বাড়িয়ে সে আলোকে ধরতে বলে। এক মিনিটেই কান্না করে মেঘের চোখ মুখের বেহাল দশা। তবুও রোদ ওকে আলোর কাছে যেতে দিচ্ছিল না। সকালবেলা রোদের এই কাজে আলো প্রচন্ড রেগে যায়।এটা কেমন ব্যবহার? মেঘকে অযথা কাঁদানোর মানে কী? আলো প্রচন্ড রেগে মেঘকে নিতে গেলে রোদ বলে,
“দূরে থাকো।”
“কেন?”
“তোমার অজানা নয়।”
“এটা ঠিক হচ্ছে? বাচ্চাটা কাঁদছে, কষ্ট পাচ্ছে।”
“আমি বুঝে নিবো।”
মেঘ ছুটে আলোর কাছে যেতে গেলে রোদ জোর করে কোলে তুলে নিলো। মেঘ কেঁদে হাত বাড়িয়ে ব্যাকুল হয়ে আলোকে ডাকছে। আলো বার বার রোদকে ধরা গলায় থামতে বলছে।মেঘের কান্না দেখে আলোর অঝরে অশ্রু ঝরছে। মনে হচ্ছে,
রোদ ওর বাচ্চাকে কেড়ে নিচ্ছে। সে হাত জোড় করে কেঁদে মেঘকে ছাড়তে বলছে। রোদ ওর কথা সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে মেঘকে নিয়ে উপরে চলে গেল। মেঘকে নামার জন্য ছটফট করলে রোদ ধমকে উঠে বলল,
” কান্নার শব্দ আমার কানে আসলে, তোর খবর আছে।”
মেঘ ফুঁপাতে ফুঁপাতে আলোর দিকে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে বলল, “ব ব বউমনি বাঁচাও!”
আলো ছলছল চোখে মেঘের দিকে তাকিয়ে অশ্রু ফেলছে। মেঘকে এভাবে ফুঁপাতে দেখে রোদ বলল,
“তোমার বউমনি না সে। তোমাকে আমি ভালো বউমনি এনে দিবে। তুমি ওকে ভালোবাসলেও, সে তোমাকে একটুও ভালোবাসে না। আজকের পর, ওকে বউমনি ডাকলে আমি আর বাসায় ফিরবো না। ”
কথাটা বলে রোদ গমগম করে মেঘকে নিয়ে রুমে ঢুকে গেল। আলো ওখানে বসে নিঃশব্দে কাঁদতে থাকল। রুম থেকে’ই মেঘের কান্নার শব্দ ভেসে আসছে। সে কেঁদে কেঁদে আলোর কাছে আসতে চাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আর শব্দ শোনা গেল না, মেঘ কাঁদতে কাঁদতে ওভাবে ঘুমিয়ে গেছে। রোদ
রেডি হয়ে অফিসের চলে গেল। আলোকে চুপ করে বসে থাকতে দেখেও কিছু বলল না।এমন ভাব যেন সে কিছু করেই নি। রোদ বেরিয়ে গেলে আলো দৌড়ে রোদের রুমের দিকে গেল। গিয়ে হতাশ হয়ে দরজার সামনে গিয়ে বসে কাঁদতে লাগল। রোদ দরজায় তালা আঁটকে গেছে যাতে আলো মেঘের কাছে যেতে না পারে। আলো চুপ করে ওখানেই ঘন্টার পর ঘন্টা বসে রইল।মেঘ ঘুমাচ্ছে বিধায় সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।তিন ঘন্টা পর রোদ বাসায় ফিরে আলোকে দেখে ভ্রু কুঁচকে নিলো। আলো রোদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লালবর্ণ ফোলা চোখে তাকিয়ে বলল,
“ব্যবস্থা করুন।”
”কিসের?”
আলো বার দু’য়েক ঢোক গিলে নত মাথায় উত্তর দিলো,
“মেঘের বউমনি হওয়ার। আজকে মানে আজ’ই ব্যবস্থা করুন।”
আলোর কথা শুনে রোদ শব্দ করে হেসে দিলো। হাসির চোটে সে কথা বলতে পারছে না। ওর এই হাসির মানে বুঝে আলোর অপমানে চোখ থেকে নোনাজল ঝরতে লাগল। এই লোকটা সব সময় ওকে অপমান করে। আলোকে হাতের উল্টো পিঠ চোখ মুছতে দেখে, রোদ পকেটে হাত গুঁজে বলল,
“এখন আবেগে ডুবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিয়ের পর বলবে, ‘এই স্পর্শ করবেন না, কাছে আসবেনা, ফ্লোরে ঘুমান, মেঘের জন্য বিয়ে করেছি তাছাড়া কিছু না, আরো নানা রংয়ের ব্লা ব্লা! কিন্তু আমি
এসব ঝামেলায় আমার জীবন নষ্ট করতে ইচ্ছুক নই। যেটা হচ্ছে হতে দাও, এখন রুমে যাও।”
আলো ছলছল চোখে তাকিয়ে শব্দ করেই কেঁদে দিলো। লোকটা এমন কেন? এর কী মন বলে কিছু নেই? রোদ নিচের ঠোঁট কামড়ে দাঁড়িয়ে ওর কান্না দেখছে, না থামতে বলছে আর না প্রস্থান করছে। আলো হেঁচকি তুলে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
”এখন কী করতে হবে? কী করলে আপনি বিয়ে করবেন?”
রোদ ঠোঁট কামড়ে কিছু একটা ভাবার ভাণ করে
বলল,
“তুমি আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছো? মানে তুমি স্বজ্ঞানে আমাকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক?”
” হুম।”
” ভেবে বলছো?”
“হুম”
”সত্যি আমাকে বিয়ে করবা। আই মিন আমার বউ হবা?
“হুম।”
“বিয়ের পর আফসোস করবে না?
” উহুম।”
“আমি রাজি না হলে জোর করে বিয়ে করবা?”
” হুম।”
কথাটা বলে আলো চোখ বড় বড় করে রোদের দিকে তাকাল। ইস! স্লিপ করে কথাটা বের হয়ে গেছে।রোদের এই মুহূর্তে ব্যাপক হাসি পাচ্ছে।সে
অনেক কষ্ট হাসি আটকে ঠোঁট কামড়ে দাঁড়িয়ে আছে। অবশেষে পাখি নিজে এসে ধরা দিলো। আহা! প্রশান্তিতে যেন বুকটা ভরে যাচ্ছে। রোদ আলোর দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমার পাঁচটা শর্ত মানলে তোমার প্রস্তাব মেনে নিবো, নয়তো আমি আর মেঘ আলাদা বাসায় উঠব।”
“মানবো সব শর্ত মানবো। আপনি যা বলবেন সব শর্ত মেনে নিবো।
রোদ বিজ্ঞদের মতো কয়েকবার মাথা নাড়িয়ে আশেপাশে একবার তাকিয়ে বলল,
”১,আমাকে কোনো কাজে বাঁধা দেওয়া যাবে না। যা চাইব, চাহিবামাত্রই প্রস্তুত করতে হবে।হতে পারে সেটা কোনো বস্তু অথবা তুমি নিজে।
২. আমার স্পর্শ, আদর/আবদার, অত্যাচার সব সহ্য করতে হবে।গাইগুই করলেই শাস্তি!
৩. সংসারের ভার এবং সব দায়িত্ব ভালোবেসে পালন করতে হবে।
৪. আমার দায়িত্ববান বউ হতে হবে।
৫. আমাদেরকে রেখে কোথাও যাওয়া যাবে না।
এই পাঁচটা শর্ত মানলে আজকে আমাদের বিয়ে হবে। আমি ফ্রেশ হতে যাচ্ছি, আধাঘন্টার মধ্যে
সিদ্ধান্তটা জানাও। আমাকে আবার অফিসে যেতে হবে।”
কথাটা বলে রোদ দ্রুত পায়ে রুমে ঢুকে দরজা আটকে দিলো। আর আলো হতভম্ব হয়ে রোদের দিকে তাকিয়ে রইল।
To be continue……!!