-‘এলোকেশী কন্যা’-
[৪১]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)
জীবনটা খুব সুখময় মনে হয় তখন; যখন প্রিয় মানুষটা পাশে থাকে। তার ছোট ছোট আবদার, খুনশুটি, যত্ন আর ভালোবাসা গাঢ়ভাবে হৃদয় স্পর্শ করে। প্রনয় আর প্রাপ্তি এসে পরিপূর্ণ হয়।
তখন একরাশ প্রশান্তি এসে মন ছেঁয়ে যায়।এত ভালোবাসা পেয়ে বড্ড লোভও হয়। বেহায়া মন খুব করে চায়, সময়টা যদি থমকে যেতো।সুখময় একটা মুহূর্তে সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা, দিন, মাস, বছর, যুগও পেরিয়ে যেতো। অথবা বুকের গহীনে তাকে লুকিয়ে রাখলেও বেশ হতো।সারাজীবনের
জন্য প্রণয়ে ডুবে স্থির হয়ে গেলেও মন্দ হতো না।
সবকিছু তখন সুখময় স্বপ্নপুরী মনে হতো। প্রিয়
মানুষটাও সর্বদা পাশে এবং কাছে থাকত। মন প্রাণ উজাড় করে পাগলের মতো ভালোওবাসত।
এমন হলে বেশ হতো! হয়তো সবার সব ইচ্ছে পূরণ হয় না। কিন্তু কারো কারো হয় তো! কারো
কারো জীবনে প্রনয় জিনিসটা খুব সহজেই ধরা দেয়। প্রণয়ের পূর্ণতাও সুমিষ্ট হয়। এমন জুটিরা সত্যি’ই সৌভাগ্যবান। জীবন তাদের মূল্যবান প্রাপ্তি পেতে সহায় হয়। আর বাকিরা পরিস্থিতির শিকার নয়তো ভাগ্যের পরিহাস। তাদের প্রাপ্তি; বুকভর্তি কষ্ট আর মুখেভর্তি মিথ্যার হাসি।
____________________
রাত তখন এগারোটা সাতাশ। নিকষকালো রাত ধরণীকে আঁকড়ে ধরেছে। আকাশে চাঁদ তারা’রা
গল্প জুড়ে দিয়েছে। ক্ষণিকে আবার মিটমিট করে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। কী সুন্দর প্রকৃতির একটা একটা সৃষ্টি। যে যার স্থানে নিদারুণ সুন্দর! কারো সঙ্গে কারোর তুলনা চলে না। রৌদ্রজ্জ্বল দিনে সূর্য সুন্দর আর ঘন রাতের আঁধারে চাঁদ। ফুলেরা গাছে সুন্দর আর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। যে যার জায়গায় সৃষ্টিকর্তা নিখুঁত ভাবে সাজিয়ে দিয়েছেন। ধরণীর নিয়মমাফিক সন্ধ্যার পরপরই পাখিরা নীড়ে ফিরে গেছে।তারা
হয়তো ছানাদের আহার করিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে গেছে। ছানাগুলোও মায়ের উম পেয়ে চুপটি করে আছে।শুধু ব্যস্ততা শেষ হয় নি, মানব জীবনের। প্রয়োজনের তাগিদে যে যার আপন উদ্দেশ্যে ছুটে চলেছে ! এই চলার অন্ত নেই!
রাতে খেয়ে আলো মেঘকে ঘুম পাড়িয়ে রোদের পাশে এসে বসল। প্রশ্নের পাহাড় তুলে সব শুনে তবেই দুষ্টটা ঘুমিয়েছে। তার প্রশ্নেরও শেষ নেই!
আলোও যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে সঠিক উত্তর’টা দেওয়ার। যাতে অবুজ মনে ভুল ধারণার সৃষ্টি না হয়। রোদ আলোকে একবার দেখে ফোন স্কল করতে করতে বলল,
“কিছু বলবে?”
“আপনি কী ব্যস্ত?”
রোদ ফোন থেকে চোখ সরিয়ে ছোট করে উত্তর দিলো,
“না।”
আলো কিছুক্ষণ চুপ থেকে আমতা আমতা করে কিছু বলতে চাচ্ছে। কিন্তু রোদ রাগ করবে ভেবে, বলতে পারছে না। ওকে চুপ থাকতে দেখে রোদ বলল,
” রাগ করব না, বলো।”
“চুলে তেল দিয়ে দেন। আমার মাথা ঘুরছে তেল না দিয়ে।”
রোদ ইশারায় ওকে তেল আনতে বলে ঠিক হয়ে বসল। আলো তেল এনে ওর সামনে টুলে টেনে বসল। যেমনভাবেই হোক দিয়ে দিলেই হবে।রোদ একবার তেল আর ওর চুলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল,
”কীভাবে শুরু করব?”
আলো সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো। রোদও বুঝে কাজ শুরু করল। তবে এই
মেয়ে এত সহজে কাছে আসে না। অথচ আজ তার মধুর বায়না! কাহিনী তো আছেই। কিন্তু কী? এখন জিজ্ঞাসা করলে কিছু বলবে না। তাই রোদ আর কথা বাড়াল না। কথার ছলে নাহয় পরে জেনে নিবে।
মূলত আলোর বৃদ্ধাঙ্গুল একটু কেটে গেছে, তেল দিতে গিয়ে চুল ঢুকে রক্তও বেরিয়ে গেছে। এখন ব্যথায় টনটন করছে। সে আবার চুলে তেল না দিয়ে থাকতে পারে না, মাথা ঘুরে। সমস্যাটা ওর ছোট থেকেই; যাকে বলে পুরনো অভ্যাস। রোজ রাতে তেল না দিলে ঘুমও আসে না।
রোদ আনাড়িভাবে তেল দিতে দিতে সহজ করে, নিজের মতো দিতে থাকল। বড় চুলে তেল দিতে সমস্যা হলেও; মন্দ লাগছে না।তাছাড়া পছন্দের জিনিসে বিরক্ত আসে না। বরং অভিজ্ঞতা হচ্ছে বিধায় মৃদু হাসছে। বিয়ে, বউ, সংসার, আবদার নিয়ে, ওর কখনো ভাবা হয় নি। বউয়ের বড় চুল হবে; তেল দিয়ে দিবে! এমন আদুরে সব আহ্লাদ মনে পোষণও করে নি।সে ছোট থেকে কাঠখোট্টা প্রকৃতির সে। তবে এসব না ভাবলেও ওর ভাগ্যে ছিল। তাই হয়তে এই মুহূর্তের সৃষ্টি!
আলো এখনো চোখ জোড়া বন্ধ করে আছে।ওর ঘুমে চোখ জোড়া বুজে আসছে! বেশ লাগছে!
গতরাতে অর্ধেক চুলে তেল দিয়ে আর পারে নি, হাত ধরে গেছে। বিরক্তিতে পরে আর দেওয়া হয় নি। তার আগের দিনেও তাই হয়েছে! ঘন লম্বা চুলের জন্য দিতে কষ্ট হয়। রাকা থাকলে রোজ সেই দিয়ে দেয়। রাকা নেই তাই আজ বাধ্য হয়ে রোদকে বলল। যদিও ধমক খাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। হঠাৎ রোদ বলল,
“বড় চুল রাখার কারণ কী?”
“যাতে চুল দিয়ে বরকে বেঁধে রাখতে পারি।”
মুখ ফসকে কথাটা বলে আলো জিহবা বের করে কামড় বসাল। ছিঃ! এটা কী বলে ফেলল। রোদ মুচকি হেসে পুনরায় বলল,
“এত কিছু থাকতে চুল দিয়ে? যদি বাঁধা না থাকে?”
আলো ঘাড় ঘুরিয়ে রোদের দিকে তাকিয়ে সোজা হয়ে বসল। রোদের কথাটা ওর পছন্দ হলো না।কেন হবে না? যত্ন করে বড় করেছে, সবাই কত্ত প্রশংসা করে। বড় চুলে নাকি ওকে দেখতেও বেশ লাগে। আবার কত মেয়ে ওর চুল দেখে হিংসাও করে। আড়চোখে বার বার তাকায়। তাহলে বর কেন বাঁধা থাকবে না, হুম? এ্যাঁ, মামার বাড়ির আবদার নাকি? তাকে বাঁধা থাকতেই হবে।এসব ভেবে আলো নিচু স্বরে বলল,
“সে প্রশংসা নাই বা করল।তবে বাঁধা থাকবে না কেন? এত যত্ন তো তার জন্যই করি। যদিও মুখে কিছু না বললেও, আমি সব বুঝি।”
“ওহ আচ্ছা।”
কথাটা বলে রোদ হেসে ইচ্ছে করেই ওর চুলে টান দিলো। আলো ব্যথা পেলেও কিছু বলল না;বরং হাসল। বাড়তি কিছু বললে যদি তেল না দিয়ে দেয়। এর তো আবার নাকের ডগায় রাগ! রোদ শুধু নিঃশব্দে হাসল। আলো আগে ওকে একটু আধটু ভয় পেতো। কিছু বলতে গেলেও থতমত খেয়ে কেঁদে ফেলত। কিন্তু বিয়ের পর ভয়টা কেটে
যাচ্ছে, ওদের সম্পর্কটাও সহজ হচ্ছে। ধীরে ধীরে একে অপরকে বুঝতে শিখছে। হয়তো প্রণয়ের প্রথম ধাপ একেই বলে! সত্যি বলতে, সম্পর্কটা ঠিক চারা গাছের মতো। এটাকে যত সময় নিয়ে যত্ন করা হবে।এটা তত তাড়াতাড়ি বড় হয়ে কলি ফোটাবে। হোক সেটা ফুলের বা প্রণয়ের! দু’টোই পবিত্র ফুল!
আলো বইয়ে চোখ বুলাচ্ছে আর কঠিন চ্যাপ্টার গুলো রোদকে দেখাচ্ছে। রোদ সহজ ভাষায় ওকে বুঝিয়ে দিচ্ছে।আর না বুঝলে, রোদের দু’একটা টোকাও খাচ্ছে। অনেক সময় নিয়ে তেল দেওয়া শেষ করে রোদ হাত ধুয়ে আসল। ঘড়িতে বাজে বারো’টা সতেরো! আলো চুলে খোঁপা করে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ল। কাল সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে। ঘুমেও চোখ বুজে আসছে! রোদ মেঘকে দেখে এসে আলোকে বলল,
“কাল দুপুরে রোহানদের বাসায় যেতে হবে। রেডি থেকো।”
“যেতেই হবে?”
“হুম।”
“আচ্ছা।”
এভাবে কথা বলতে বলতে দু’জনে ঘুমিয়ে গেল।
একটুপরে, রোদ চোখ খুলে আলোকে পরখ করে নিলো। তারপর সতর্কতার সাথে আলোকে ওর বাহুডোরে টেনে থুতনীর নিচে আদর দিলো। এই কাজটা সে প্রতি রাতে করে। গাল, কপাল, ঠোঁট, সব রেখে আলোর থুতনীর নিচেই আদর দেয়।
প্রেমিক পুরুষদের এক এক একজনের পছন্দ এক এক ধরনের। কেউ প্রেয়সীর কপালে, কেউ গালে অথবা ঠোঁটে আদরের স্পর্শ দিতে পছন্দ করে। কিন্তু রোদের পছন্দ’টা একটু ভিন্ন। আগে থেকেই ব্যতিক্রমী সে।আলোর থুতনীর নিচটা ওর বেশি পছন্দ। তাই হয়তো! তাছাড়া কপালে স্পর্শ দিলে হয়, আর্দশ প্রেমিক। ঠোঁটে দিলে, লুচ্চা প্রেমিক। তাহলে রোদ কোন পর্যায়ের প্রেমিক? এর উত্তরটা হয়তো অাবিষ্কার করা হয় নি।
রোদের বাহুডোরে আলো আদুরে বিড়ালছানার মতো গুটিয়ে গেল। পরক্ষনে মুখ লুকিয়ে মুচকি হাসল। আচ্ছা, রোদ কখনো বুঝবে? প্রতিরাতে ওর এই কাজের সাক্ষী, আলো নিজে! কিছু কিছু জিনিস মুখে বলতেও নেই, বুঝাতেও নেই। শুধু অনুভব করে হৃদয়ে পুষে রাখতে হয়।এসব ভেবে আলো চোখ জোড়া বন্ধ করে ঘুমের দেশে পাড়ি জমাল।
পরেরদিন সকালে চড়ুই পাখিটা এসে থাই গ্লাসে টোকা দিচ্ছে। পাখিটা রোজ এমন করে! হয়তো সকালের আগমনী বার্তা জানাতে হাজির হয়।
সেই শব্দে আলোর ঘুমটা ভাঙ্গলেও সে একচুলও নড়তে পারল না। রোদ পাশ ফিরে বালিশ ছাড়া উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। আর ওর পিঠের নিচ দিয়ে আলোর চুল চাপা পড়ে মেঝে থেকে তিন ইঞ্চি উপরে ঝুলছে। অর্থাৎ উঠতে গেলে রোদকে ডাকতে হবে। নয়তো চুল ছাড়ানোও সম্ভব নয়।
আলো উপায় না পেয়ে মৃদু স্বরে রোদকে ডাকল,
“আমার চুলে লাগছে, উঠুন। উফ, এই যে এই বর মহাশয়! ”
রোদ তিন বারের বেলায় চোখ খুলে চুলগুলো সরিয়ে আবার ঘুমিয়ে গেল। আলো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দ্রুত উঠে বিরক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে গেল।ধুর,
এক কাজ বার বার করতে বিরক্ত লাগে।তাছাড়া রান্না করার আগে চুল ভালোভাবে না বাঁধলেও, আরেক সমস্যা। এজন্য চুলের কাটা’টা নিতে সে রোদের উপর দিয়ে হাত বাড়াল। ওর খোলা চুল রোদের গলায় স্পর্শ করাতে রোদ খুব কাতুকুতু অনুভব করল। শরীরটা আচমকা শিরশির করে উঠল। আলো সরে যাওয়ার আগেই রোদ ওকে জাপটে ধরল। আলো ছাড়া পেতে জোর খাটাতে গেলে রোদ বলল,
“ঘুম ভাংলো কেন এলোকেশী, হুম? এখন তো শাস্তি পেতে হবে!”
“মেয়েদের এত কাছে আসতে নেই, সরুন।”
“আসলে কী হয়?”
“মেয়েদের শরীরে কলংক লাগে।”
“কীসের কলংক?”
“প্রণয়ের।”
কথাটা বলে আলো রোদকে সরিয়ে চুলে খোঁপা করে কাটা আটকে নিলো।যাওয়ার জন্য এক পা বাড়াতেই রোদ বলে উঠল,
“তাহলে এই কলংকে তোমাকে আমি শতশত বার কলংকিত করব।”
রোদের কথা শুনে আলো পিছু না ফিরে মুচকি হাসল। কারণ এই একই রোগে সেও আক্রান্ত। আর এই রোগের একমাত্র নিরাময়দাতা; রোদের মেহবুব।
–
শুভননাগণ খুব সকালে হাঁটতে বেরিয়েছেন।মূলত কাজ কতদূর এগোলো দেখতে এসেছেন।
প্রথমে হাকিমের দোকানের কাজটা শুরু হয়েছে। কারণ এটার প্রয়োজন বেশি। অনেকে উনাদের সালাম দিচ্ছে, কুশল বিনিময় করছে। মাতবর থাকাকালীন কেউ উনাদের এতটা সন্মান করে নি। হয়তো ভয়ে! তবে সময় বদলাচ্ছে নিজেদের সন্মান নিজেরা অর্জন করছেন। রবিও উনাদের আঙ্গুল ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটছে।আজকাল
ওর খুব ভালো সময় কাটে! সবার সঙ্গে খেলতে পারে, মায়েদের সঙ্গে ঘুরতে যেতে পারে। কতশত আবদার করতে পারে। এখন কেউ মারেও না, বকেও না।
কয়েকদিন ধরে গ্রামবাসীদের মুখে আফসোসের বাণী শোনা যাচ্ছে। মাতবর নাকি দরদী মানুষ ছিলেন। পূর্ণির পাপের জন্য উনার এই অবস্থা হয়েছিল। শেষে পাক-পবিত্র না করে’ই দাফন করতে হলো। আহারে! সব পূর্ণির পাপের জন্য!
তবে মাতবর না পেয়েছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ, আর না স্বাভাবিক মৃত্যু! উনার কপালে দাফন জুটলেও, পবিত্র অবস্থায় কাফন পরানো সম্ভব হয় নি। অপবিত্র অবস্থায়ই কবর দেওয়া হয়েছে।
আর মতি পেয়েছিল ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ। তবে তাকে দাফন করা হয় নি।
মতি ধর্ষণের পর মেয়েদের নগ্ন দেহটা পাহাড়ের
উপর থেকে ফেলে দিতো।যেভাবে ওর মৃত দেহটা পড়েছিল। মেয়েদের লাশগুলো ওখানে গলে পঁচে নিঃশেষ হয়ে যেতো। কখনো জঙ্গলের হিংস্র বন্য প্রাণীদের খাবার হতো। এসব কষ্ট তাকে অনুভব করতে হতো।কারণ মানব জাতি অন্যকে আঘাত করতে পারদর্শী।আর সেই আঘাত নিজে পাওয়া না অবধি এর ব্যথাও বুঝে না। এজন্যই হয়তো মতির ভাগ্যতে এমন কিছু ছিল। এত পাপকর্মের পরে ওদের কপালে এতটুকু জুটেছে, এটাই বেশি নয় কি! ওরা যদি সবকিছু স্বাভাবিকভাবে পেতো,
তাহলে সৎকামী আর অসৎকামীর মধ্যে তফাত থাকত না। এজন্য প্রকৃতি তাদের শাস্তিটা ভিন্ন ভাবে তুলে রেখেছিল।
শুভাননাদের হঠাৎ একটা বাড়িতে চোখ পড়ল। একজন মহিলাকে কাঁদতে দেখে উনারা সেদিকে এগিয়ে গেলেন। মহিলাটা মোনাজাতে অঝরে অশ্রু ঝরাচ্ছেন। সেই কান্নার না আছে শব্দ, না আতনার্দ। উনার একটাই ছেলে ছিল, সে মারা গেছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে। বেশ কয়েক বছর আগে মেয়েটাকেও কারা যেন ধর্ষণ করে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছিল।
এখন স্বামী ছাড়া উনার কেউ নেই।শুভাননাগণ সব শুনে কিছু বলার ভাষা পেলেন না, জেনে বুঝেও চুপ থাকলেন! শুধু স্বান্ত্বণা দিতে এতটুকু বললেন ,
“বুবু কাঁনদো না, দুয়া কলো। তোমাল দুয়াটুকুই ওদেল কাজে লাকবে।”
এভাবে অনেক কিছু বলে উনাকে বুঝিয়ে শান্ত করলেন। মায়ের মন তো। স্বান্ত্বণাতেও শান্ত হয় না। ছেলে মেয়ের জন্য অঝরে অশ্রু ঝরে যায়।
শুভাননা’রা ওখানে কিছুক্ষণ বসে বাড়ির পথে রওনা দিলেন। পাপকে উনাকে নিজে হাতে শেষ করেছেন, নয়তো ছোট্ট রবিও আজ বেঁচে থাকত না।
To be continue……!!