#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_20
🍁🍁
পরেরদিন সকালে……!!
রোদের আম্মু আর আলো নাস্তা বানিয়ে রেডি করে ফেলে!তারপর সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে আর সবাই একসাথে খেতে বসে!রোদের আম্মু আলো,মেঘ আর রোদকে একেবারে গোসল সেরে নিতে বলে কারন ১৪ ঘন্টার রাস্তা যেতে যেতে রাত হয়ে যাবে।আলো আর মেঘ খেয়ে চলে গেল!রোদ ওর আব্বু দিকে তাকিয়ে বললো….
রোদঃ আব্বু তুমি কবে যাবে?
আব্বুঃ আমি বিয়ের দিন সকালেই চলে যাবো।রোদ তুমি সবার খেয়াল রেখো কেমন।
আম্মুঃ যত তারাতারি সম্ভব যাওয়ার চেষ্টা করো।
আব্বুঃ রোদ ট্রেন কয়টায় ছাড়বে।
রোদঃ ১০ টায়
আব্বুঃ এসি কেবিন বুক করছো তো।
রোদঃ জি আব্বু
আম্মুঃরোদ তুমিও গোসল সেরে রেডি হয়ে নাও।
রোদঃ হুমমম।
রোদ খেয়ে ওর রুমে গেল!আলোর ওয়াশরুমে আলো আর মেঘ ঢুকে দুইজন গল্প করছে আর সাবান মাখছে।আলো তারাতারি করে মেঘকে গোসল করিয়ে দিয়ে ওর রুমে পাঠিয়ে দেয়!মেঘ টাওয়াল পড়েই ওর ড্রেস নিয়ে রোদের রুমের দিকে হাটা ধরে!মেঘের এখন রোদের রুমে যাওয়ার প্রধান কারন রোদের স্পেশাল পারফিউম টা হাতানো।মেঘ তো অনেক খুশি তাই চিৎকার করে গান গাইছে…
গোগুলা গোগুলা
মাই বুলবুলা…….বুলবুলা
ইটস্ ইজ সো ইউজফুল আ…
ভেরি কুল আ..
হোয়েন আই হ্যাভ এ কোশ্চেয়ন আ
আই সার্চ ইন দা হোমপেজ আ
ইটস্ উয়িল আনসার আ
ভেরি রিয়েল আ
গুগোলা গুগোলা..!!
মেঘ গানটা গাইতে গাইতে হঠাৎ মেঘের টাওয়াল খুলে নিচে পড়ে গেল!মেঘ তাড়াতাড়ি করে ওর হাতের ড্রেস ফেলে আগে টাওয়াল তুলে পেচিয়ে নেয়।তারপর আশে তাকিয়ে দেখে কেউ আছে কি না!যখন মেঘ দেখলে আশে পাশে কেউ নেই তখন আবার ড্রেস গুলো তুলে বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে রোদের রুমের দিকে হাটা দিলো….!!
রোদও টাওয়াল পড়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে তখন চুল ঠিক করছিলো!মেঘ রোদের রুমে ঢুকে বললো…
মেঘঃ দাভাই টাওয়াল ভাল করে পেচিয়েছো তো
রোদঃতুই এখন আমার রুমে কেন?আর আমার টাওয়ালের কথা না ভেবে তোর টাওয়ালের কথা ভাব।
মেঘঃ আমারটা খুলবে না!জানো তো দাভাই টাওয়াল আর কপাল কখন যে খুলে যায়।সেটা কেউ বলতে পারে না।তাই সাবধান…
রোদঃ এত বড় বড় কথা তুই আমদানি করিস কই থেকে!তোর কথা শুনে মনে হয় কেউ তোকে কথা শিখিয়ে দেয়!(মেঘের মাথায় চাট্টি মেরে)
মেঘঃ মেঘকে কিছু শেখাতে হয় না।মেঘ একাই এক হাজার বুঝলে দাভাই (ভাব নিয়ে)
রোদঃ তা মেঘ মেহবুব আপনি আমার রুমে কেন সেটা বলেন!আপনি যে এমনি এমনি আসেন নি আমি ভালো করেই জানি।
মেঘঃ না মানে ভাবলাম দুইভাই একসাথে রেডি হয় আর সুখ দুঃখের আলাপ করি। তাই আর কি…..!!
রোদ আর মেঘ রেডি হতে শুরু করলো!মেঘ আগে শার্ট পড়ছে আর রোদ আগে প্যান্ট পড়ছে।রোদ যখনই ওর প্যান্টের চেন আটকে ঘুরতে যাবে তখনই মেঘ বেডের উপর চিৎকার করে লাফাতে থাকে!রোদ মনে করছে মেঘ ফাজলামি করছে তাই শার্ট হাতে নিয়ে পড়তে পড়তে বললো…
রোদঃ মেঘ এবার বেশি হয়ে যাচ্ছে। অযথা কানের কাছে চিৎকার করছিস কেন?
মেঘঃ দাভাই আমার ইয়ের সাথে চেন আটকে গেছে।দাভাই তারাতারি ছুটিয়ে দাও… (চিৎকার করে)
রোদঃ আচ্ছা তোর এত চেন আটকায় কেন বল তো?কি করে প্যান্ট পড়িস তুই…!!
আলোঃ কি হয়েছে মেঘ?এভাবে চিৎকার করছো কেন?? (দরজায় নক করে)
মেঘঃ দাভাই বউমনিকে রুমে আসতে দিও না দাভাই!আমি লজ্জায় কংকাল হয়ে যাবো।(চিৎকার করে)
রোদ হাসবে না কাঁদবে এটা নিয়ে কনফিউজড হয়ে গেছে!রোদ ওর কনফিউজড টাকে সাইডে রেখে মেঘের দিকে এগিয়ে গেল!মেঘ উল্টো দিকে ঘুরে দাড়িয়ে আছে! আর আলো কিছু বুঝতে না পেরে হাবলার মত দাড়িয়ে আছে!রোদ আলোর দিকে তাকিয়ে বললো…
রোদঃ এই যে রাণী এলিজাবেথ আপনি রেডি না হয়ে এখানে দাড়িয়ে আছেন কেন??
আলোঃ মেঘের চিৎকার শুনে এসেছি!মেঘের কি হয়েছে? (মেঘের দিকে তাকিয়ে)
মেঘঃ দাভাই পরে গল্প করো।আগে আমাকে ইয়েটা খুলে দাও….
রোদঃমেঘের কিছু হয়নি তুমি যাও তারাতারি রেডি হয়ে নাও।
আলো কিছু বলার আগে রোদ ওর রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়!আলোও আর কিছু না বলে ওর রুমে এসে রেডি হতে থাকে!রোদ ড্রেসিং টেবিলে সামনে গিয়ে গান গাইছে আর চুল ঠিক করছে!বেচারা মেঘ পড়ছে মাইনকার চিপায়। মেঘ কাঁদো কাঁদো হয়ে বলছে…
মেঘঃ ওহ দাভাই তারাতারি ছুটিয়ে দাও না প্লিজ
রোদঃ পারবো না।তোর বউমনির কাছে যা
মেঘঃ দাভাই এমন বলে না।
রোদঃ কেন বলবো না?অন্য সময় তো তোরা দুজন চিপকে থাকিস।এখন তোকে হেল্প করতে পারি তবে একটা শর্ত আছে…
মেঘঃ তুমি যা বলবে আমি তাতেই রাজি আগে আমাকে সাহায্য করো প্লিজ দাভাই।
রোদঃ বিয়ে বাড়ি গিয়ে কোন ছেলেকে তোর বউমনির আশে পাশে ঘেষতে দিবি না।আর আমি যা বলবো তাই করবি…
মেঘঃ হুম হুম! তুমি যা বলবে তাই হবে।
রোদঃগুড
তারপর রোদ মেঘকে উদ্ধার করে দিলো!মেঘ ড্রেসিং টেবিলে চুলের উপর দাড়িয়ে রোদকে ওর সামনে দাঁড়াতে বললো!রোদ মেঘের সামনে দাঁড়াতেই মেঘ রোদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো!
মেঘঃ দাভাই আমার চুল গুলো তোমার মত স্পাইক করে দাও
রোদঃ আমার মতই তোকে করতে হবে
মেঘঃ হুমমম!তারাতাারি চুলটা ঠিক করে পারফিউমও দিয়ে দাও…!!
রোদঃ….
মেঘঃ দাভাই কালো শার্টে আমাকে দেখতে ভালো দেখাচ্ছে তো।
রোদঃহুমমম
মেঘঃ তোমার থেকে সুন্দর দেখাচ্ছে তো
রোদঃ না
মেঘঃ না না আমাকে তোমার থেকেও সুন্দর করে সাজিয়ে দাও।
রোদঃ তোর মতলব টা কি বল তো
মেঘঃ না মানে বিয়ে বাড়ি যাচ্ছি একটা ব্যাপার আছে না।
রোদঃ আমার থেকেও সুন্দর দেখাচ্ছে তোকে(মুচকি হেসে)
রেডি হয়ে দু’জনে তাদের ব্যাগ নিয়ে রুমে থেকে বের হলো!আলো একটা গোলাপি কালার থ্রি পড়ে রুম থেকে বের হতেই রোদের আম্মু এসে আলোর বাম হাতে একটা স্বণের ব্যাচলেট আর দুইটা আংটি আঙ্গুলে পড়িয়ে দিলো!আলো কিছু বলতে যাবে তার আগেই রোদের আম্মু চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই চুপ হয়ে গেল!আলো খুব সাবধানে ওর চোখের পানি মুছে ফেললো!আলো আর রোদের আম্মু ড্রয়িং রুমে দাড়াতেই রোদ আর মেঘ সিড়ে দিয়ে নামছিলো।আলো পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে….
রোদ পড়ছে সাদা শার্ট আর কালো জিন্স আর মেঘ পড়ছে কালো শার্ট আর ব্লু জিন্স!দুইভাই কেউ কারো থেকে কম না দেখতে!মেঘ গুলুমলু আর সাদা ফর্সা এজন্য মেঘকে হিরোর থেকে কম কিছু লাগছে না!আর রোদকে সাদা শার্ট খুব মানিয়েছে। সাদা শার্টে রোদকে এত ভালো দেখানোর কোন কারন আলো খুঁজে পাচ্ছে না। তারপরেও রোদকে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে…!! আলো আজকে রোদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে…!!আলো মনে মনে বললেই ফেললো…
আলোঃ ইসসস রে এই পোলাডারে এত কিউট লাগে ক্যারে!দেখতে তো মাশাল্লাহ! আমারই না নজর লেগে যায়।পুরাই চকলেট বয় একটা। মন ডা তো চাইতাছে….
এই পোলাডারে এখনই চুম্মায় মাইরাল্লাই….(মনে মনে)
To be continue…..
(গল্পটা আর দেওয়ার কথা ছিলো না!বাট তোমাদের কথা ভেবে আবার দিলাম…😥😥)