এলোকেশী_কন্যা২__ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_21 🍁🍁

0
706

#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_21
🍁🍁

মন তো চাইতাছে এই পোলাডারে এখনই চুম্মায় মাইরাল্লাই….(মনে মনে)

আলো আড়চোখে আরেকবার রোদের দিকে তাকিয়ে আবার মনে মনে বললো..

আলোঃ না না এই পোলারে চুম্মানো যাইবো না!এই পোলা না পুরাই আগুনের গোলা!আর একে চুম্মানোর কথা বললে আমাকে সেই আগুনে ঝলসে দিবে!থাক এই সিংহের থেকে যত দুরে থাকবে আমি ততই ভালো থাকবো।উমম ঢং দেখরে শরীর জইল্লা যাইতেছে!ক্যারে তোর এত সাজুগুজু করা লাগবো ক্যান? তুই কি বিয়া করতে যাইতাছোস।শালা লুচু …..(মনে মনে)

মেঘঃ বউমনি আমাকে কেমন লাগছে বলো! বলো!

আলোঃ হা হা হা!তোমার ভাষার পুরাই জখাম(মেঘের গাল টেনে)

মেঘঃ এবার বলো আমাকে বেশি ভাল দেখাচ্ছে? নাকি দাভাইকে বেশি ভালো দেখাচ্ছে..???

আলোঃ অবশ্যই তোমাকে বেশি দেখাচ্ছে মেঘবাবু!তোমার দাভাই কে তো পুরা কাউয়া লাগছে…

রোদঃ তাই নাকি!এজন্য হা করে তাকিয়ে ছিলে বুঝি।(তেডি স্মাইল দিয়ে পেছন থেকে)

মেঘঃ বউমনি তুমি দাভাইয়ের উপর হা করে তাকিয়ে ছিলে..!!

আলোঃ আ আম আমি ক ক কখন তোমার দাভাইয়ের দিকে তাকালাম।(তুতলে)

রোদঃ মেঘ মানুষ কখনো তোতলায় জানিস?(তেডি স্মাইল দিয়ে)

মেঘঃ হুমম!চুরি করলে মানুষ তোতলায়

রোদের আম্মুঃ আলো,রোদ, মেঘ গাড়িতে গিয়ে বসো।

রোদঃজি আম্মু

রোদ আর মেঘ বাইরে যাওয়ার জন্য বের হতে যাবে আর ওমনি মেঘ আবার সোফার সাথে ধাক্কা খায়!রোদ কিছু বলার আগেই মেঘ ফট করে উঠলো…

মেঘঃ আজকে সকাল থেকে আমার ইয়ের উপর দিয়ে এত বিপদ যাচ্ছে কেন?উফফ আবার ব্যাথা পেলাম!ধুররর আর ভাল্লাগেনা….!!

রোদঃ হা হা হা হা!ঠিক হয়েছে..!!

রোদ, মেঘ আলো,রোদের আম্মু এসে গাড়িতে বসে!রোদ বসেছে ড্রাইভারের পাশে আর রোদের কোলের উপর বসেছে মেঘ!রোদ মেঘকে পেছনের সিটে বসতে বলছে বাট মেঘ জোর করে রোদের কোলের উপরেই বসেছে!আলো আর রোদের আম্মু বসেছে পিছনের সিটে।গাড়ি চলতে চলতে হঠাৎ মেঘ আঙ্গুল দিয়ে বাইরে একজনকে দেখিয়ে বললো….!!

মেঘঃ দাভাই তুমি তো আমার বউমনিকে পছন্দ করো না!বউমনিকে নাকি বিয়েও করবে না। তো এক কাজ করো তুমি ওনাদের মধ্যে একজনকে বিয়ে করে নাও….!!

রোদঃ আম্মু তোমার ছোট ছেলেকে কিন্তু আমি গাড়ি থেকে ফেলে দিবো!আমার কোলে বসে আমাকে এসব কি বলছে দেখছো?(দাঁতে দাঁত চেপে)

রোদের আম্মুঃ চলন্ত গাড়িতে মেঘ কাকে দেখালো আমরা তো দেখিনি!রোদ মেঘ কাকে দেখালো রে…

রোদঃ……

মেঘঃ আম্মু হ্যালো হাই বাই বাই কে দেখিয়েছি।হা হা

রোদের আম্মুঃ সেটা আবার কে??

ড্রাইভারঃ ম্যম মেঘ বাবু হিজড়াদের কথা বলছে…

রোদের আম্মু আর আলো হো হো করে হাসতে শুরু করলো!রোদ ঘাড় ঘুরিয়ে চোখ মুখ লাল করে আলোর দিকে তাকিয়ে বললো…!!

রোদঃ থাটিয়ে এমন থাপ্পড় দিবো সব দাঁত ঝরঝর করে পড়ে যাবে!দাঁত কেলিয়ে আবার হাসা হচ্ছে। আর একটা টু শব্দ আমার কানে আসলে! তোমাকে গাড়ি থেকে ফেলে যদি না দিসে তো আমিও রোদ মেহবুব না…(রেগে গিয়ে)

রোদের ধমক শুনে কেউ আর কোন টু শব্দ করে নি বাট সবাই মুখ টিপে টিপে হেসেছে।তারপর ওরা ষ্টেশনে পৌছালো আর রোদ আর ড্রাইভার মিলে ওদের কেবিনে ব্যাগ গুলো রাখলো! তারপর রোদ ড্রাইভার কে বাসায় চলে যেতে বললো!রোদ, মেঘ আলো আর ওর আম্মুকে কেবিনে রেখে বাইরে গেল!মেঘ আর আলো তো গল্প জুড়ে দিয়েছে! ওদের কথা কোন সময়ই শেষ হয় না! দুজনেই সমান তালে কানের কাছে বকবক করতেই থাকে।রোদের আম্মু আলোকে বললো….

রোদের আম্মুঃ আলো ওখানে সবার সাথে মানিয়ে নিস কেমন!কারন বাসার সবাই তো আর এক হয় না।আর আমার মা খুব কড়া টাইপের মানুষ! পান থেকে চুন খসলেই কারো রক্ষা নেই।আগের মানুষ তো ওনি যা বুঝে সেটাই ঠিক বলে মনে করে।

আলোঃ আচ্ছা আম্মু সমস্যা নাই…!!(মুচকি হেসে)

মেঘঃ জানো বউমনি দীদান সারাদিন পান খায়!ছাগলে যেমন পাতা খায় ওমন আর কি….!!

রোদের আম্মুঃ কি বললি তুই??আমার মাকে তুই ছাগল বললি (মেঘের কান টেনে)

মেঘঃ আমার মুখ স্লিপ করছে আর বলবো না আম্মু।

আলোঃ হা হা হা!মেঘবাবু বড়দের সাথে কথা এভাবে কথা বলতে নেই।

মেঘঃ আচ্ছা আর বলবো না।

রোদের আম্মুঃ এই তোরা দুইজন পাশের কেবিনে যা!আমি এখন ঘুমের মেডিসিন খেয়ে ঘুমাবো।কানের কাছে বকবক করলে আমি ঘুমাতে পারবো না।আর এত ঘন্টার রাস্তা বসে বসে কোমর ব্যাথা করার কোন মানেই হয় না।(আসলে রোদের কাছে পাঠানোর জন্য)

এর মধ্যে টেন চলতে শুরু করলো!আলো আর মেঘ দুজন দুজনের দিকে তাকালো তারপর আচ্ছা বলে দুজনেই এই কেবিনের গেট আটকে পাশের কেবিনে চলে গেল।আর রোদের আম্মু মেডিসিন খেয়ে শুয়ে পড়লো!রোদ পাশের কেবিনে ঢুকে দেখে আলো আর মেঘ ফিসফিস করছে!রোদকে দেখে দুজনেই চুপ হয়ে গেল!রোদ কে আসতে দেখে দুজনেই মুখের ভাব দেখে মনে হচ্ছে দুজনেই খুব বিরক্ত হয়েছে!রোদ ওর হাতে খাবার গুলো রেখে! কেবিনের বেডে শুয়ে পড়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে…

রোদঃ তোরা এখানে কি করিস??(ভ্রু কুচকে)
মেঘঃ তুমি এখানে কি করো?

রোদঃ মেঘ যা জিজ্ঞাসা করছি তাই বল!

মেঘঃ আমরা এখানে গল্প করতে এসেছি!তুমি আম্মুর কেবিনে যাও।

রোদঃ এটা আমি আমার একার জন্য নিয়েছি! তোরা যা এখান থেকে।আর থাকতে চাইলে একদম চুপচাপ থাকবি একটা কথাও বলতে পারবি না….

মেঘঃ তাহলে আমাদের জন্য আরেকটা কেবিন নাও নি কেন?তোমার কাছে কি টাকা ছিলো না আমাকে বলতে?

রোদঃ ওহহ আমার ভুল গেছে! তা এখন তোর কাছে কত টাকা আছে শুনি (এক হাতের উপর ভর দিয়ে শুয়ে)

মেঘঃ বামে পকেটে আছে সতেরো টাকা! আর ডান পকেটে আছে বিশ টাকা।

রোদঃ এত টাকা দিয়ে তো পুরো ট্রেনটাই বুক করা যেতো!ইসস আমিই ভুল করে ফেললাম।তোকে আগেই আমার বলা উচিত ছিলো..!!

মেঘঃ দাভাই আমাকে গরীব ভেবো না বুঝলে!আজকে সকালে তোমার ওয়ালেট থেকে ২ হাজার টাকা ঝেড়েছি।এই দেখো (মেঘের ওয়ালেট বের করে)

রোদঃ তুই আবার আমার ওয়ালেটে হাত দিয়েছিস!তোকে না নিষেধ করছিলাম।

মেঘঃপ্রতিটা বড় ভাইয়ের ওয়ালেটে হাত দেওয়া তার ছোট ভাইয়ের অধিবান..

আলোঃ ওটা অধিবান না মেঘ! ওটাকে বলে অধিকার..

রোদঃ এসেছে আরেকটা ম্যম!সব সময় টিচারগিরি তাই না।

মেঘঃ দাভাই বউমনিকে বকবে না!

রোদঃমেঘ তুই বেশি কথা বললে আজকে সকালের কথা তোর বউমনিকে বলে দিবো।তখন বুঝবি…

মেঘ আর টু শব্দ করে নি!রোদের দিকে কয়েক মিনিট কুটুরকুটুর করে তাকিয়ে চুপ করে গেছে।আলো কিছু বলছে না কারন এখন কিছু বললেই রোদের থেকে আলো বাঁশ খাবে এটা সিওর!মেঘ চুপ করে থাকার চেষ্টা করেও যখন চুপ করে থাকতে পারলো না তখনই রোদের দিকে তাকিয়ে বললো…

মেঘঃ দাভাই চলো আমরা বাজি ধরে লুডু খেলি!খেলবে…??

রোদঃ উমমম ওকে!বাট হেরে গেলে আমি যা বলবো তাই করতে হবে..!! (তেডি স্মাইল দিয়ে)

আলোঃ না না আমি খেলবো না!তোমরা খেলো…

রোদঃ খেলবে নাকি ট্রেনের ওয়াশরুমে তোমাকে আটকে রেখে আসবো।বলো কোনটা করবো…??

মেঘঃ বউমনি ভয় পাচ্ছো কেন?আমি আছি তোমার সাথে!

আলোঃ আচ্ছা খেলবো!(মুখ গেমড়া করে)

রোদ মুচকি হেসে উঠে বসে!মেঘ ওর ট্যাব বের করে লুডু খেলা শুরু করে!রোদ আলোর দিকে তাকিয়ে একটা দুষ্টু হাসি দিলো!বেচারা আলো এই হাসির মানে বুঝতে না পেরে হাবলাম মত হা করে তাকিয়ে থাকলো।তিনজন তিনটা চিপ্সের প্যাকেট নিয়ে বসেছে!রোদ আগে মেঘের গুটি কাটতে শুরু করে!মেঘ অসহায় দৃষ্টিতে রোদের দিকে তাকালো!রোদ মেঘকে কিছু একটা ইশারা করলো মেঘ বুঝতে পেরে মাথা নাড়ালো!এবার রোদ আর মেঘ মিলে আলোর সব গুটি কেটে ঘরে ঢুকিয়ে দিলো!দুই ভাই শেয়ারে খেলছে আলোও বুঝতে পেরে বুদ্ধি খাঁটিয়ে খেলতে শুরু করলো কিন্তু দুইভাই আলোর গুটি বের হতেই দিচ্ছে না।এদিকে দুই ভাইয়ের দুইটা করে গুটি উঠে গেছে….!!মেঘের যখন ছয় পড়ে তখন মেঘ তো গান গাইতে শুরু করে…

তুনে মারি এন্টি আর দিলমে বাজি ঘান্টি আর
ডাং ডাং ডাং

আলো দুইভাইয়ের দিকে রাগি চোখে তাকালো!রোদ খেলাতে ফাস্ট হয়ে গেল!মেঘ সেকেন্ড আর বেচারা আলো হলো ভজার মা !রোদ ভ্রু নাচিয়ে মুচকি হেসে আলোকে বললো…

রোদঃ কি ম্যম হারলেন তো?এবার আমি যা বলবো তাই করবেন।

আলোঃক ক কি করতে হবে??

মেঘঃ দাভাই বউমনিকে সহজ কাজ দিও প্লিজ

রোদঃ হুম!আলো তুমি আমার মাথার চুল টেনে দাও!আমার খুব মাথা ব্যাথা করছে। আর হ্যা আমি যদি ঘুমিয়ে যায় তো আমাকে আর ডাকবে না! আর যদি তোমাদের দু’জনের জন্য আমার ঘুম ভেঙেছে তো দুইজনকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখবো

রোদ ওর বুদ্ধি খাঁটিয়ে ঠিকই ওর কাজ হাসিল করে নিলো!তারপর রোদ টানটান হয়ে শুয়ে পড়লো আর আলো রোদের চুল টেনে দিতে শুরু করলো।মেঘ পাশের বেডে শুয়ে শুয়ে মনের সুখে গেম খেলছে আর ইয়ার দিয়ে গান শুনছে!রোদ চোখ বন্ধ করে মনে মনে বলছে…!!

রোদঃ তিলোকন্যা তোমাকে বোকা বানাতে পেরে যে আমার কি ভালো লাগে তা বলে বোঝাতে পারবো না।তোমার নরম হাতে পরম যত্নে চুল টেনে দিচ্ছো কি যে ভালো লাগছে আপাতত সেটা ভাষার প্রকাশ করতে পারছিনা আমি!এত যত্নে চুল টেনে দিচ্ছো যে আমার এখন ঘুমের দেশে পাড়ি জমাতে মন চাচ্ছে
তিলো কন্যা….!!

To be continue…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here