স্পর্শানুভূতি #writer_Nurzahan_Akter_Allo #part_9

0
716

#স্পর্শানুভূতি
#writer_Nurzahan_Akter_Allo
#part_9
🍁🍁

মুহিতঃ মিষ্টু আজকাল বড্ড বেশি পাকা পাকা কথা বলো তুমি!তুই একদম ওর পেছনে লাগতে যাবি না।ও কিন্তু খুব ঠান্ডা মেজাজের বাট যার উপরে রেগে যায় তার দফারফা করে ছাড়ে!এখানে নাকি ফ্ল্যাটও আছে ওর বাট আমিই ওকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসছি! জিগার কা বন্ধু বলে কথা(খুব খুশি হয়ে).

মিষ্টুঃওকে!আমি যার তার পেছনে লাগতে যায় না ভাইয়া!সেটা তুমি জানো করেই জানো?

মুহিতঃজানি তো!বোন রে আমার অফিসে খুব কাজের প্রেসার যাচ্ছে ।বন্ধুটা আসলে তাকে সময় দিতে পারবো নাকি কে জানে?আর ও রাজশাহীতে প্রথম আসছে ওকে রাজশাহী শহর না ঘুরিয়ে দেখালে হয়।

মিষ্টুঃকবে আসবে উনি!
মুহিতঃআজকে সন্ধ্যায়!ফ্রাইটেই আসবে আর ওকে অফিস থেকেই আমিই আনতে এয়ারপোর্টে যাবো।

মিষ্টুঃওকে আর বাসায় ফেরার সময় আমার জন্য রশিদ চানাচুর (রাজশাহীর নামকরা চানাচুর) আনবে।

মুহিতঃনা এসব খেতে হবে না!পেটে ব্যাথা করবে।আমি আনতে পারবো না।

মিষ্টুঃ আম্মু তোমার ছেলে দেখো একটা মেয়ের পিক লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে!আমি দেখে ফেলছি তাই আমাকে বকা দিচ্ছে। (চিৎকার করে ওর আম্মুকে বললো)

মুহিতঃ বোন আমার এসব বলিস না!আম্মু আবার শুরু করে দিবে ভাষণ। এনে দিবো চানাচুর তাও এসব চুপ যা বোন আমার। (মিষ্টুর মুখ চেপে ধরে)

মিষ্টুঃহুমমমমম ওকে (খিলখিল করে হেসে).

তারপর মিষ্টু খেয়ে কলেজ যায় আর মুহিত অফিসে চলে যায়।রাত্রির খুশির শেষ নেই বকুলকে পেয়ে!ওরা সারারাত কথা বলে এখন!নিরবও চলে গেছে বকুলদের সাথে। রাত্রির বাবা মা রাত্রির মুখ দেখে বুঝে গেছে রাত্রি আসলে কতটা খুশি!উনারা মেয়ের এমন হাসি খুশি থাকা দেখেও নিশ্চিত হয়।প্রতিটা বাবা মায়ের মত উনার সুপাএের হাতে মেয়ে তুলে দেওয়া নিয়ে চিন্তিত ছিলেন।যেমন সব জায়গাতে উপকার করে নাম কুড়াতে নেই তেমনি মিষ্টু যে এসবের পেছনে আছে এটা প্রায় অনেকে কাছেই অজানা থেকে গেল।থাকুক না অজানা ভাল কাজ করলেই যে বলে বেড়াতে হবে তা তো না……

মিষ্টু কলেজে গিয়ে ক্লাস করে দুপুরে ফিরে এসে টানা দুই ঘন্টা ঘুমিয়ে নিলো!তারপর ঘুম থেকে উঠে কিছুসময় ঠায় মেরে বিছানাতে বসে থাকলো!আড়মোড়া ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে হঠাৎ ওর হ্যান্ডব্যাগের দিকে তাকাতেই সেইদিনে সেই খামের কথা মনে পড়লো।তারপর উঠে খাম খুলে দেখে এটা কাগড় চারভাজ করা।মিষ্টু বেডের উপর বসে কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠি নিয়ে খুলে আর চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে…..

নিদ্রাকুমারি….❤❤

এই নামটা দিলাম কারন তোমাকে এই নামের সাথে বড্ড মানিয়েছে!নিদ্রাকুমারী তুমি হয়তো ভাবছো আমি কে?তাহলে বললো আমি খুব সাধারণ একটা ছেলে! তোমাকে দেখে আমার খুব ভালো লাগছে।হুম ভালো লাগছেই বললাম কারন হুট করে ভালবাসা এটা সিনেমাতেই মানায় রিয়েল লাইফে না।আর ভাললাগা আর ভালোবাসা এই দুটোই আলাদা জিনিস!ভালো লাগা থেকে থেকে হাজারো অনুভূতি দিয়ে তৈরী ভালবাসা।আর এই ভালবাসা থেকেই মনের স্পর্শানুভূতি দিয়ে তৈরী হয় ভাল লাগার মানুষটাকে হাজারো সপ্ন,কল্পনা।আমি তোমার পেছনে দৌড়ালাম না ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলাম তোমাকে!যদি তুমি নামক এই অমূল্য সম্পদটা আমার ভাগ্যতে থাকো তাহলে আমার কাছে তোমাকে আসতেই হবে।আল্লাহ ভরসা..ভালো থেকো ভাললাগার মানুষ।

অপরিচিত কেউ….. ❤❤

মিষ্টু চিঠি পড়ে মনে করা চেষ্টা করলো কে দিতে পারে?বাট মনে করতে পারে না।চিঠিটা আবার ভাজ করে একটা ড্রায়ারের ভেতরে রেখে দিলো!মিষ্টুর চিঠিটার প্রতিটা কথা মনে দাগ কেটে বসেছে।মিষ্টু আর মাথা না ঘামিয়ে বেডে থেকে উঠে একটা চুলের কাটা নিয়ে চুল গুলোকে কাটা দিয়ে আটকাতে আটকাতে ছাদে চলে গেল।মিষ্টু ছাদে গিয়ে দেখলে পাশের ছাদে রাত্রি দাড়িয়ে কারো সাথে ফোনে কথা বলছিলো।মিষ্টু অজানা নেই রাত্রি কার সাথে কথা বলছে।মিষ্টু ছাদের রেলিংয়ের সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে চিঠির কথা গুলো ভাবছিলো।

রাত্রির বকুলের সাথে কথা শেষ করে মিষ্টুর সাথে সাথে কিছুক্ষন আড্ডা দেয় দুবোন তারপর মাগরিবের আজান দেয় ওরা দুজনেই ছাদ থেকে নেমে আসে! মিষ্টু নামাজ পড়ে আর পড়তে বসার ভয়ে ওর আম্মুর জন্য কফি বানিয়ে সিরিয়াল দেখতে বসে। কিন্তু মিষ্টুর কাহিনী বুঝতে পেরে ওর আম্মুকে ওকে ওকে বকা দিয়ে পড়তে বসায় আর মিষ্টু বইয়ের মধ্যে ফোন রেখে ফেসবুকিং করছিলো!মিষ্টু জানে মুহিতের মন ভোলা এজন্য আবার ফোন দিয়ে চানাচুর আনার কথাটা মনে করিয়ে দিল।

ওদিকে মুহিত এয়ারপোর্টে পৌঁছায় আর ভেতরে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখে একটা ছেলে নীল টি- শার্ট, কালো জিন্স পরা ছেলেটি ওর দিকেই এগিয়ে আসছে!হ্যা এটাই তার চিরচেনা সেই বন্ধু। ছেলেটি মুহিতকে দেখে দৌড়ে এসে মুহিতকে জড়িয়ে ধরে!কতদিন পর আবার তাদের দেখা খুশিতে কেউ কারো সাথে কথা বলতে পারছে না।মুহিত ছেলেটিকে বুক থেকে সরিয়ে বলছে…
মুহিতঃকি রে ভাই আগের থেকে অনেক হ্যান্ডসাম হয়ে গেছিস?(ছেলেটির দিকে তাকিয়ে)

ছেলেটিঃশালা পাম কম মার!নিজের কম যাও নাকি।তারপর বল ভাই কেমন আছিস..(মুছকি হেসে)

মুহিতঃ আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি!কতদিন পর দেখা ভাবতেই পারিনি আবার তোর সাথে দেখা হবে।তারপর বল তোর কি অবস্থা? বাসার সবাই কেমন আছে।

ছেলেটিঃ আলহামদুলিল্লাহ আমি সহ আমার পুরো পরিবার ভাল আছে। (মিষ্টি হেসে)

মুহিতঃচল বাসায় যায় আমি তো আম্মুকে বলি নি তুই আসছিস!তোকে দেখে খুব খুশি হবে।তারপর বিয়ে টিয়ে করছিস…

ছেলেটিঃ
সিঙ্গেল আছি ভাল আছি বিন্দাস জীবন ভাই
ভালবাসা নামক প্যারা এই জীবনে নাই
ওরে সিঙ্গেল আছি ভাল আছি বিন্দাস জীবন ভাই
ভালবাসা নামক কষ্ট এই জীবনে নাই
আজো আমার বাবার টাকায় বসায় না তো ভাগ!বাবু সোনা মিথ্যা নামে দেয় না রে কেউ ডাক…

রে রে এখনও আমি সিঙ্গেল রে
রে রে জীবনও চলে নিজ নিয়মে
রে রে এখনও আমি সিঙ্গেল রে
রে রে আহ্ কি শান্তি এই জীবনে…….
(ছেলেটি হাসতে হাসতে গান গাইছিলো আর হাটছিলো)

মুহিতঃহা হা হা থাক বন্ধু আর বলা লাগবে না!তোর এই গানের মাঝেই সব উওর দিয়ে দিয়েছিস।আর লাগবে না বুঝে গেছি…..আমারও সেইম দশা। হা হা হা

ছেলেটিঃ হা হা হা প্রেম করে বউয়ের হক নষ্ট করবো না!সরাসরি বিয়ে। হা হা হা হা

তারপর ওরা কথা বলতে বলতে গাড়িতে উঠে বসলো মুহিত মাঝ রাস্তাতে এসে মিষ্টুর জন্য চানাচুর সহ অনেক কিছু নিলো।

ছেলেটিঃতুই যে বললি বিয়ে করিস নি তাহলে এসব বাচ্চা দের খাবার নিলি যে!নাকি আমাকে ঢপ মারছিস শুনি।(মুহিতের দিকে তাকিয়ে)

মুহিতঃনা রে বিয়ে করিনি আর এসব আমার ছোট বোনের জন্য! আর এগুলো না নিয়ে গেলো মাথাতে একটাও চুল থাকবে না আমার।হা হা হা

ছেলেটিঃতোর ছোট আছে আমি তো ভুলেই গেছি!ভাই সামনে শপিংমল থাকলে একটু গাড়িটা সাইড কর।প্লিজ ভাই,,,, ( মুহিতের দিকে তাকিয়ে)

মুহিতঃনা না এখন নামতে হবে না।
ছেলেটিঃচুপ কোন কথা না!তোর বোন কি পছন্দ করে শুধু তাই বল
মুহিতঃএসবের কি দরকার?
ছেলেটিঃ চুপ তুই….

মুহিত আর ছেলেটি এক সাইডে গাড়ি থামিয়ে মিষ্টির দোকানে ঢুকলো!ছেলেটি কয়েক ধরনের মিষ্টি নিলো বাট মিষ্টু এসব ছুয়েও দেখবে না শুনে ছেলেটি দশকেজি কালো মিষ্টি নিলো।মুহিত মানা করলেও শুনে নি তারপর একটা শপিংমলে ঢুকে একটা বড় গোলাপি টেডি বিয়ার কিনলো।মুহিত বার বার নিষেধ করছে বার বার তাও জোর করেই নিলো কারন ছোট্ট বাচ্চা রা টেডি বিয়ার খুব পছন্দ করে এটা ভেবেই ছেলেটি টেডিটা কিনছে….ছেলেটি মনে করছে মুহিতের বোন পিচ্চি

ওরা বাসার সামনে এসে নামলো! মুহিত ছেলেটি তিনতালাতে উঠতে বলে গাড়ি পার্ক করতে গেলো!ছেলেটি টেডি নিয়ে মুহিতদের দরজার সামনে এসে কলিংবেল বাজায়! দুই বারের বেলাতে কেউ দরজা খুলে দেয় আর ছেলেটি কিছু বলার আগেই কেউ একজন হামলে পড়ে ওর চুল ধরে ঝাকাতে থাকে।
ওদিকে মিষ্টু তিন ঘন্টা ধরে বসে ছিলো চানাচুরের জন্য! মিষ্টু মনে নেই যে আজকে বাসাতে কারো আসার কথা।তাই কলিংবেল বাজতে মুহিত মনে করে মিষ্টু গিয়ে ছেলেটির চুল ধরে ঝাকাতে থাকে।

মুহিত এসে দেখে মিষ্টু ওর বন্ধুর চুল ধরে ঝাকাচেছ! মুহিত চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।তারপর দৌড়ে গিয়ে মিষ্টুকে থামায়!আর ছেলেটির হাতে টেডি বিয়ার থাকাতে মিষ্টু বুঝতে পারে নি ছেলেটি মুহিত না।ছেলেটি মুখে সামনে থেকে টেডি সরাতেই মিষ্টু চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে..ছেলেটিও হা করে তাকিয়ে আছে কারন ছেলেটিও মিষ্টুকে এখানে কল্পনা করে নি।হঠাৎ মিষ্টুর আম্মু ওদের কথা শুনে দৌড়ে আসে আর ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরে বলে….

আম্মুঃরা…..সু। রাসু তুই???????? (অবাক হয়ে)

(জি আপনারা ঠিক ভেবেছেন রাসুই হচ্ছে রাসেল তওসীফ)

চলবে….

(দিন দিন গল্পটাতে রেসপন্স কমে যাচ্ছে! গল্পটা কি লিখা লিখা বন্ধ করে দিবো?তোমাদের মনে হয় ভালো লাগছে না।কাল থেকে তাহলে আর পোষ্ট করবো না😊😊)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here