এলোকেশী_কন্যা২__ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_26 🍁🍁

0
670

#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_26
🍁🍁

______রোদের চালাকি অবশেষে সফল হয়…!!রোদ গল্প বলতে বলতে খেয়াল করে দু’জনেই ভয়ে চোখ বন্ধ করে থাকতে থাকতে দুজনেই ঘুমিয়ে পড়ছে!রোদ আস্তে করে উঠে আলোকে ভাল করে শুইয়ে দেয়! তারপর মেঘকেও মাঝখানে ভাল করে শুইয়ে দিয়ে রোদ নিজেও কাত হয়ে শুয়ে পড়ে!আর এক হাতের উপর ভর দিয়ে রোদ ওর তিলোকন্যা কে দেখতে থাকে…!!

রোদ ওর তিলোকন্যার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পড়ে!রাত প্রায় তিনটার দিকে আলো উঠে রুমের দরজাটা খুলে হাঁটা ধরে! ড্রয়িং রুম পেরিয়ে আলো উঠনো পা রাখতে রাখতে যাবে! তখন দীদান এসে আলোর সামনে মিষ্টির প্যাকেট ধরে!আলো মিষ্টি দেখে হাত বাড়িয়ে নিতে যাবে তখন দীদান উনার রুমে দিকে হাটা ধরে!মিষ্টির লোভে আলোও দিদানের রুমে যায়!আলো রুমে ঢুকতেই দীদান রোদকে ফোন দিয়ে ওনার রুমে আসতে বলে!রোদ উঠে আলোকে না পেয়ে তারাতারি করে দীদানের রুমে যায়!রোদ দীদানের রুমে গিয়ে দেখে আলো বসে বসে মিষ্টি খাচ্ছে! দীদান রোদ কে ইশারায় চুপ থাকতে বলে….!!রোদের আম্মু আর রোদ আলোর পেছনে দাড়িয়ে আছে!রোদের দীদান বলে উঠে….!!

দীদানঃ তোমার নাম কি??

আলোঃ….

দীদানঃ তোমার নাম বলো তাহলে আরো মিষ্টি দিবো।

আলোঃ আমার নাম গণশা…!!গণশা! গণশা! আমার নাম…! হা হা হা

দীদানঃ তুমি হিন্দু সম্প্রদায়ের

আলোঃহ

দীদানঃ তুমি মেয়েটাকে এভাবে জ্বালাচ্ছো কেন??ও কি করছে যে! তুমি শুধু শুধু ওকে কষ্ট দিচ্ছো।ওর থেকে চলে যাও…

আলোঃনা হেতিরে আমার খুব ভাল্লাগছে!আমি কিছুতেই হের থেইকা যামু না!

দীদানঃকেন যাবে না?তোমার বাড়ি ঘর নাই।তুমি থাকো কোথায়??

আলোঃআমি বেশির ভাগ থাকি মাইয়া মানুষের শরীরে! কারন মাইয়া মানুষের শরীরের গন্ধ আমার মেলা ভাল্লাগে!আমার হেতিরে খুব পছন্দ হইছে ওরে আমার পোলার মা বানাবো…!!হেতির চেহারা আমার দূর্গা মায়ের মত।আমি কিছুতেই হেতিরে ছাড়মু না।

দীদানঃওহ তো মুসলিম! আর তুমি তো হিন্দু! তুমি চলে যাও ওর থেকে!

আলোঃ আমারে তাড়াইতে পারবা না!আমি গেলে হেরে মাইরা রাইখা দিয়া যামু!আমি গনশা! আমার যেইডা পছন্দ হয় আমি নিয়াই যায়।আমি রুগীরে আইজ নিয়াই যাচ্ছিলাম….হা হা হা

দীদানঃ আচ্ছা তুমি কি বলতে পারবে আলোর শরীরে তোমরা মোট কতজন আছো??

আলোঃ হ মুই সব জানি..!!না কমু না!কিছু কমু না

দীদানঃ বলো আমাকে!

আলোঃকমু তার আগে আমি ধুপ খামু!ধুপ দে!ধুপ দে ধুপ!তাহলে কমু…!!

দীদানঃধুপ নাই আগরবাতি আছে!আপাতত আগরবাতি খাও! আমি পরে তোমাকে পেট পুরে ধুপ খাওয়াবো।কথা দিলাম..!!

আলোঃ তুমি ভালা মানুষ তাই মাইনা নিলাম।কথার নড়চড় কইরো না তাহলে হেতিরে ক্ষতি কইরা দিমু।

দীদানঃ এবার বলো!তোমরা কতজন আছো ওর শরীরে..!!

আলোঃ আমরা আছি চারজন! তবে তিনজন মুসলিম জ্বিন আছে!ওরা রুগীর উপর মেলা রাইগা আছে। হা হা হা

দীদানঃ কেন???

আলোঃকমু না!আর কিছু কমু না! কমু না!

রোদের দীদান ভাল ভাবে কথা বলেই সবটা জেনে নিতে চাচ্ছিলো কারন এদের চেতানো উচিত না। আর এখন চেতানোও উচিত হবে না।এই হিন্দু জ্বিনটিও ছিলো আলোর শরীরে!এই জ্বিনটি মিষ্টির পাগল!দীদান আর কিছু বলার আগেই আলো ঠাস করে মাটিতে পড়ে গেল!রোদ দৌড়ে এসে আলোকে তুলে দীদানের বেডে শুইয়ে দিলো!রোদ আর রোদের আম্মু অবাক হয়ে গেছে!দীদান রোদ আর রোদের আম্মুকে বলে উঠে….!

দীদানঃ আমি এসব টুকটাক জানি সেটা তোমরা জানো!আলোকে এখানে আনার আগে ওর শরীর বন্ধ করে আনোনি কেন?ওর মাঝে এমন কিছু আছে যেগুলো সাধারণ মানুষ বাদেও অন্যকিছুকেও আকষর্ণ করে!আলো এখানে আসার পর ওকে জ্বিন রা ছায়া দিয়েছিলো কিন্তু এখন ওরা সরাসরি আলোর শরীরে ভর করছে!

রোদঃ ২০২০ সালেও এখন এসব মানতে হবে!আমি বলছিনা দীদান এসব মিথ্যা! যেহেতু জ্বিন জাতি নিয়ে আমাদের ধর্মগ্রন্থে অনেক কিছু বলা আছে!আমার মনে হয় আমাদের কোথাও ভুল হচ্ছে বুঝতে।

দীদানঃ না রোদ সবকিছু তুচ্ছ করে নেওয়াটা বোকামি! এটা বিয়ে বাড়ি এজন্য আমি কিছু করতেও পারছি না!আদিলের বিয়ে হয়ে গেলেই এর সমাধান করবো যত শীঘ্রই !এখন কিছু করতে গেলে সবাই জেনে যাবে আর বাড়ির বাচ্চারা ভয় পাবে।

রোদের আম্মুঃ আম্মা তুমি কিছু একটা করো!মেয়েটা জীবনে অনেক কষ্ট করছে। এখানে এসেও আরেক ঝামেলায় পড়লো…!!ওকে এখানে আনাটাই আমার ভুল হয়েছে…!!

দীদানঃ রোদ আলোকে চোখে চোখে রাখবা!যখন অস্বাভাবিক কিছু দেখবা জমজমের পানি ওর শরীরে ছিটিয়ে দিবে!আর তুমি ওর আশে পাশে থাকলে ওর শরীরে বেশি জ্বালাপোড়া করবে কারন জ্বিন গুলো চাচ্ছে না তুমি ওর আশে পাশে থাকো।

রোদঃ ওর তাহলে আজকে বিয়ে বাড়ি যাওয়ার কোন দরকার নাই..!!ও বাসায় থাকুক…!!

দীদানঃনা না ওকে একা কোথাও রাখা যাবে না!বিয়ে বাড়ি যাওয়ার আগে জমজমের পানি ছিটিয়ে দিও!তাহলে কিছু হবে না আর এসব কথা আলো বা মেঘ যেন না জানে।

রোদঃআচ্ছা…!!

রোদ আলোকে কোলে নিয়ে ওদের রুমে চলে গেল!দীদান আর রোদের আম্মুও ঘুমাতে গেল!রোদ আলোকে বেডে শুইয়ে আলোর কপালে একটা আদর দিয়ে দিলো! তারপর রোদ ওর জায়গায় গিয়ে শুয়ে পড়লো আর আলোর দিকে তাকিয়ে থাকলো!এর মধ্যে মেঘ রোদের বুকে মুখ ঘষতে শুরু করলো!মেঘের এই একটা বাজে অভ্যাস! ছোট থাকতে যখন মেঘ রোদের কাছে ঘুমানো আবদার করতো! তখন রোদ মেঘকে বুকের উপর নিয়েই ঘুম পড়াতো!মেঘ যখন ঘুমিয়ে পড়তো তখন রোদ মেঘকে পাশে শুইয়ে দিতো! মেঘের যখন মাঝরাতের দিকে খুধা লাগতো তখন রোদের বুকে সাথে লেপ্টে গিয়ে রোদের বুকে মুখ ঘষতে শুরু করতো!রোদ বিরক্ত হয়ে উঠে তখন ওর আম্মুর কাছে মেঘকে দিয়ে আসতো!এখনও মেঘ তাই করছে! আর রোদ বিরক্ত হয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে…!

রোদঃ দুষ্টুমিতে মাশাল্লাহ সব থেকে এগিয়ে! দিন দিন বড় হচ্ছে ছোট বেলার অভ্যাস ছাড়বে তা না আগের মত আছে!মন চাচ্ছে ঠাটিয়ে একটা থাপ্পড় দেই!এমনিতেই আমার বেশি কাতুকুতু আর আসছে বুকে মুখ ঘষতে!আরেক জনকে তো আবার ভূতে ধরে বসে আছে।আমার হয়েছে যত জ্বালা। এটাকেই মনে হয় বলে মাইকার চিপায় পড়া…!!(বিরবির করে)

মেঘের অত্যাচারে রোদ উঠে সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লো!রোদের খুব চিন্তা হচ্ছে আলোকে নিয়ে কারন এসব এখনই আটকাতে হবে তা না হলে পরে হিতে বিপরীত না হয়ে যায়!রোদ কপালের উপরে একহাত দিয়ে চিন্তা করছে! রোদ একবার আলোর দিকে তাকিয়ে দেখলো কি নিষ্পাপ একটা মুখ!রোদ আবার চোখ বন্ধ করে নিলো আর ঘুমে তলিয়ে গেল…!!

পরেরদিন সকালে….!!

আজকে আদিলের বিয়ে!সকাল থেকেই শুরু হয়েছে হইচই! মেঘ ঘুমিয়ে ছিলো হঠাৎ হুড়মুড় করে উঠে বাথরুমের দিকে দৌড় দিলো!মেঘের এভাবে যাওয়ার জন্য রোদের আর আলোর ঘুম ভেঙে গেল!আলো ঘুম ঘুম চোখে একবার তাকিয়ে আবার পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো!মেঘ আবার হুড়মুড় করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে রোদের সামনে এসে লাফাতো শুরু করলো!রোদ চোখ খুলে ঘুম ঘুম কন্ঠে মেঘকে বললো…!!

রোদঃ কি হয়েছে? এভাবে বানরের মত লাফালাফি করছিস কেন?

মেঘঃ দাভাই আমি ওয়াশরুমে যাবো…!!!!!!!

রোদঃ উফফ!ওয়াশরুমে যাবি তো যা! আমার এখানে এসে এমন করছি কেন??

মেঘঃ দাভাই আমি প্যান্টের হুকটা খুলতে পারছি না!তারাতারি খুলে দাও আমার জরুরী বিভাগে যেতে হবে।উরি বাবা রে তারাতারি…!!

রোদঃ তোকে নিয়ে আমি আর পারিনা রে মেঘ!তোর এত জ্বালা বিশ্বাস কর ভাই! তোকে দেখে আমার আর বিয়ের পর আর বাচ্চা নেওয়ার শখ নাই। (খুলে দিয়ে)

মেঘঃওকে!দাভাই তুমিও আমার সাথে এখন ওয়াশরুমে চলো!কালকে ভূতের গল্প শুনে এখন আমার ভয় লাগছে।

রোদঃ আমি তোর সাথে ওয়াশরুমে যাবো!তুই এক্ষুনি আমার সামনে থেকে যা! না হলে তোরে সত্যি একটা কিক মারবো??(রেগে গিয়ে)

মেঘঃ না না তোমাকে আমার সাথে ওয়াশরুমে যেতে হবে না!তুমি ওয়াশরুমের দরজার কাছে দাড়িয়ে থাকবে।

মেঘ রোদকে টেনে ওয়াশরুমে দরজায় দাঁড় করিয়ে রাখলো আর মেঘ ওয়াশরুমে চলে গেল!একটু পর মেঘ ওয়াশরুমের ভেতর থেকে বলছে….

মেঘঃ দাভাই!দাভাই শুনে পাচ্ছো

রোদঃ হুমমম!

১মিঃ পর..!!

মেঘঃ দাভাই!দাভাই আছো…!!

রোদঃ…

মেঘঃ দাভাই!ওহহ দাভাই কথা বলছো না কেন?দাভাই…(উত্তেজিত হয়ে)

রোদঃ আছি রে বাবা!

মেঘঃ আচ্ছা…!!

আলো বেডে শুয়ে শুয়ে দুই ভাইয়ের কান্ড দেখছে আর হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে! বেচারা রোদ রাতেও ঘুমাতে পারেনি আর এখন মেঘের জন্য দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে! রোদ দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে চোখটা বন্ধ করতেই একটু পর পর মেঘ ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মত ভ্য ভ্য করে উঠছে।এদিকে আলোর হাসি দেখে রোদের শরীর জ্বলে যাচ্ছে! রোদ আলোর কাছে গিয়ে একটানে রোদ আলো তুলে বসায়।আলো হা করো রোদের দিকে তাকিয়ে থাকে…!!

রোদ আবার ওর ঠোঁটের দুষ্টু হাসির রেখা টেনে আলোর কোমর জড়িয়ে ধরে আলো কোলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে…!!

To be continue….
(কেমন হচ্ছে গল্পটা! next না লিখে আজকে ভাল কিছু কমেন্ট করুন!😊)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here