#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_9
🍁🍁
____আলোঃ আম্মু আমি রোদ ভাইয়াকে বিয়ে করতে পারবো না (মাথা নিচু করে)
রোদের আম্মুঃকেন রোদকে তোর পছন্দ হয় নি(ভ্রু কুচকে)
আলোঃ আম্মু এই কথা বলবেন না!আমি বামুন হয়ে চাঁদে হাত বাড়াতে পারবো না আম্মু। কোথায় রোদ ভাইয়া আর কোথায় আমি কোথায় ? আম্মু উনার পাশে দাড়ানোর মত কোন যোগ্যতা আমার নাই!উনাকে বিয়ের কথা ভাবতে পারি না আম্মু…!! (কেঁদে কেঁদে)
রোদের আম্মুঃ তোকে আমি রোদের যোগ্য করেই তুলবো।এজন্য তোকে আমি এখানে নিয়ে এসেছি..
আলোঃ আম্মু আমি এখানে থাকতে পারবো না!আর যদি থাকতে হয়! তাহলে আমি এই বাসায় নিজে কাজ করে তারপর এখানে থাকবো! আর তা না হলে আমি গ্রামে চলে যাবো।
রোদের আম্মুঃ আমি জানিনা এই ডিসিশন কেন নিলি?তবে আমি তোর পাশে আছি আর পাশে থাকবো।
আলোঃআর রোদ ভাইয়া যদি কোন দিন আমাকে তার যোগ্য মনে করে তাহলে আমি উনাকে ফিরাবো না আম্মু! কিন্তু তার আগে আপনি রোদ ভাইয়া কে বিয়ের কথা বলবেন না।
রোদের আম্মুঃ হুমমম!
–
মেঘে এত কঠিন কঠিন বুঝতে না পারলো এটা বুঝলো যে আলো রোদকে বিয়ে করতে চাই না।মেঘ আলোর কাছে গিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে বললো।
মেঘঃ বউমনি তাহলে কি তুমি আমাকে রেখে চলে যাবে।আর থাকবে না আমাদের সাথে!তুমি কি আমার উপরে রাগ করছো বউমনি??
আলোঃ আমি কোথাও যাবো না মেঘ বাবু! আমি তোমার সাথেই থাকবো। আর আজকে থেকে যে নতুন একটা লড়াইয়ে নামলাম। সেই লড়াই যে আমার জিততেই হবে মেঘবাবু!তুমি একদম চিন্তা করো না
আমি তোমার সাথেই থাকবো (মেঘের চোখের পানি মুছে দিয়ে)
–
রোদের আম্মু আলোর এস এস সির সার্টিফিকেট গুলো নিয়ে মেঘ আর আলোকে কলেজে ভর্তি করার জন্য বেরিয়ে গেল।তারপর আলোকে কলেজে ভর্তি করে যাবতীয় বইপত্র আর আলোর জন্য নতুন বেশ কয়েক সেট জামা কাপড় কিনে তারপর বাইরে থেকেই খেয়েই ওরা একেবারে বাসায় আসে।তিনজন বাইরে খুব মজা করেছে! তারপর বাসায় এসে যে যার রুমে চলে যায়!তারপর বাসায় এসে আলো গোসল সেরে নেয়!আলো জামা কাপড় ধুয়ে ছাদে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই রোদের মুখোমুখি পড়ে আলো।রোদ কে দেখলে আলোর কেন জানি খুব ভয় লাগে…রোদ ফট করে বলে উঠলো…!!
–
রোদঃ চোখে কি কম দেখো নাকি..!নাকি ইচ্ছা করে আমার ধাক্কা খাওয়ার জন্য এমন ভাবে সামনে এসে দাড়ালে শুনি…
মেঘঃ দাভাই তুমি কি বউমনিকে বকছো??
রোদঃ এই কে তোর বউমনি হ্যা!তুলে এক আছাড় দিবো (মেঘকে ধমকে)
আলোঃমেঘের সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন??
রোদঃ আমার ভাইয়ের সাথে আমি এখন কিভাবে কথা বলবো তোমার থেকে শিখতে হবে নাকি।মায়ের থেকে মাসির দরদ বেশি তাই না..!!
–
রোদ কথাটা বলে চলে গেল! মেঘ আলোর দিকে তাকিয়ে বললো…
মেঘঃ বউমনি মন খারাপ করো না!আমার দাভাই এমনই!
আলোঃ না মেঘ আমি মন খারাপ করিনি
মেঘঃ বউমনি আমি আর তুমি মিলে দাভাইকে এমন শাস্তি দিবো!তখন দেখবে আর তোমাকে বকা দিবে না।
–
মেঘের কথাটা আলোর পছন্দ হলো! তারপর মুচকি হেসে মেঘের হাত ধরে ছাদে চলে গেল কাপড় গুলো ছাদে শুকাতে দিতে!তারপর ছাদ থেকে নেমে বাইরের থেকে আনা খাবার গুলো রোদের জন্য ডায়নিং টেবিলে রেখে আলো নামাজ পড়তে চলে যায়।রোদ খেতে এসে দেখে সব রেডি করা তাই না ভেবে খেয়ে উপরে চলে যায়। আলোর রুমের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রোদ কি মনে করে যেন একবার আলোর রুমের দিকে চোখে যায় দেখে আলো নামাজ পড়ছে…..!!
–
রোদের আজকে সন্ধ্যায় একটা প্রোগ্রাম আছে!আজকে ওখানে যেতে হবে।রোদ ওর রুমে এসে দেখে মেঘ রোদের বেডে শুয়ে গেম খেলছে!রোদ মেঘের পাশে শুয়ে পড়লো। মেঘ রোদের দিকে না তাকিয়ে বললো…
মেঘঃ দাভাই আমাকে কি তুমি ভালবাসো??
রোদঃ এই কথা কেন হুট করে??(ভ্রু কুচকে)
মেঘঃ বলো না..!!
রোদঃ হুমম আমি আমার এই বিচ্ছু ভাইটাকে খুব ভালবাসি (মেঘের গাল টেনে)
মেঘঃ দাভাই তুমি আমাকে ভালবাসো আর আমি বউমনিকে ভালবাসি।তাই বলছি যে তুমি বউমনিকে বকা দিও না।
রোদঃ…..
মেঘঃবউমনি কাঁদলে আমার বুকে কষ্ট হয়!যত বকার দেওয়ার ইচ্ছা হয় আমাকে দিবে! কিন্তু আমার বউমনিকে তুমি বকবে না।আজকে তোমার জন্য আমার বউমনি কেঁদেছে!
রোদঃ আমি তো ওই মেয়েটাকে বিয়ে করবো না তাহলে তুই ওকে বউমনি বলছিস কেন??
মেঘঃ বউমনি আমার বউমনিই হবে!আর তুমিই বউমনিকে বিয়ে করবে।
রোদঃ আমি ওকে বিয়ে করবো না!ব্যস্
মেঘঃ আমি বউমনিকেই তোমার বউ বানিয়ে ছাড়বো!ব্যাস্
রোদঃ এই তুই যা তো আমার রুম থেকে(দাঁতে দাঁত চেপে)
মেঘঃ এটা আমার বাবার বাসা আমি যাবো না।তুমি যাও এখান থেকে হিস হিস
রোদঃ মেঘ এখন আমার মাথা গরম করবি না একদম বলে দিলাম।যা এখন…!!
মেঘঃ না গেলে কি করবা??
রোদঃ তুলে আছাড় দিবো তোকে(রেগে গিয়ে)
মেঘঃ না থাক এত তারাতারি আমি মরতে চাই না।
রোদঃ তুই কি এখন যাবি???
মেঘঃ ওকে এখন যাচ্ছি! কিন্তু একটু পর আবার আসবো।
–
রোদ বেডের উপর বসে পড়লো! কিছুক্ষন গিটার হাতে নিয়ে টুংটাং করে গিটার টাও রেখে দিলো!রোদের কেন জানি সবকিছু অসহ্য লাগছে।রোদ বারান্দায় বসেছিলো হঠাৎ করে মেঘের রুম থেকে ফুল সাউন্ডের গানের শব্দ পেয়ে রোদ রুম থেকে বের হলো।এমনিতেই রোদের মেজাজ খারাপ তারপরেও এত জোরে গান দিয়ে মেঘ বানরের মত লাফাচ্ছে! রোদ মেঘের রুমে ঢুকতে যাবে আর আলো বের হতে যাবে ঠিক তখনই দুজন দুজনের মাথায় ঠুয়া লাগে!রোদ মেঘের রুমের গান বন্ধ করে দিয়ে আলোর দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললো…
রোদঃ এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি??চোখে দেখতে পাও না।
আলোঃ আসলে আমি খেয়াল করি নি..
রোদঃ সেটা খেয়াল করবে কেন??ইচ্ছা করেই তো ছেলের সাথে ধাক্কা খেতে আসো।
আলোঃ যা বলার বলুন কিন্তু লিমিটের মধ্যে
রোদঃ এই মেয়ে এই তুমি আমাকে লিমিট শিখাচ্ছো?
আলোঃ দরকার পড়লে শিখাবো।আমি যদি বলি আপনি গায়ে পড়া ছেলেদের মত আমাকে ধাক্কা খেতে আসেন।
রোদঃ এই মেয়ে একটা কথা শুনে নাও!রোদ মেহবুবের কোন ইচ্ছে নেই তোমার মত মেয়ের সাথে ধাক্কা খাওয়ার। (দাঁতে দাঁত চেপে)
আলোঃ আমিও যদি এই বলি…!!
রোদঃ তুমি আমার সাথে তর্ক করছো!এক থাপ্পড় দিয়ে তোমার সব দাঁত খুলে ফেলবো।নিজের কোন ম্যানারস্ তো নেই আবার এসেছে মুখে মুখে তর্ক করতে।ফাজিল মেয়ে একটা…
–
রোদের কথা শুনে আলোর খুব রাগ হলো! তাই আলো আর কিছু না বলে ইচ্ছে করেই রোদকে খুব জোরে ধাক্কা দিয়েই ওর রুমে চলে গেল।আর রোদ দরজার সাথে ধাক্কা খেলো।রোদ রাগী চোখে আলোর দিকে তাকিয়ে আছে।আর মেঘ বেডের উপর দাড়িয়ে চিৎকুর দিয়ে বললো…
মেঘঃ জিও বউমনি!যা দিলে না পুরাই জখাম!ওরে কেউ সিটি বাজাও রে!!!!
To be continue….