#বুকের_বা_পাশে 🌿🌿
#written_by_Nurzahan_Akter_Allo
#Part_16
প্রত্যয় ওর ভাবনার বেড়া জাল থেকে বের হয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওর রুমের দিকে হাঁটা ধরলো। তুয়া একটা বই নিয়ে নাড়াচাড়া করছিলো। এর মধ্যে প্রিয়ম তুয়াকে ফোন করে। তুয়া মুচকি হেসে প্রিয়মের কলটা রিসিভ করল।
— “কি স্যার কি করেন?”
— “শুয়ে আছি। আপনি কি করছেন ম্যাম?”
— “একটু পড়তে বসেছিলাম।”
— “ওহ! সরি তাহলে ডিস্টার্ব করার জন্য। তোমার পড়া কমপ্লিট করে, তারপর আমাকে ফোন দিও।” (প্রিয়ম)
— “না তুমি বলো, সমস্যা নেই। আচ্ছা তুমি খেয়েছো?”
— “হুম। তুমি?”
— “মিথ্যে বলছো কেন? আচ্ছা তার আগে বলো তোমার মন খারাপ কেন? কিছু কি হয়েছে?” (তুয়া)
— “হঠাৎ এমন মনে হলো কেন?”
— “কেন মনে হলো? এটা ব্যাখা করতে আমার এখন ইচ্ছে করছে না। আগে বলো মন খারাপ কেন তোমার?”
–“মন খারাপ না,এমনিতেই।”
–“প্রিয়ম।” (স্লো ভয়েজে)
— “হুম শুনছি!”
— “মিথ্যা কথা বলাটা যখন গুছিয়ে বলতে পারবে, তখনই না হয় মিথ্যা বলতে আসবে! এখন শুধু শুধু বৃথা চেষ্টা নাই-বা করলে।” (তুয়া)
— “আরে না রে পাগলী, তেমন কিছু না।”
— “১০মিঃ টাইম দিলাম! খাবার নিয়ে ভিডিও কল দাও, আমি তোমার খাওয়া দেখবো। এখন একটু টু শব্দ শুনতে আমি বাধ্য নই। রাখলাম।” (তুয়া)
তুয়া কথাটা বলে কল কেটে দিলো। প্রিয়ম আবার বেড থেকে উঠে মাথায় ক্যাপ দিয়ে ওর গাড়ি নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে গেল। রেস্টুরেন্টে বসে খাবার অর্ডার করে তুয়াকে ফোন দিলো। প্রিয়মের প্রাইভেসির জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এটা ভিআইপিদের জন্য করাই থাকে আর কি! আর এই কথা, প্রিয়মের বার বার এসে বলা লাগে না! কারণ প্রিয়ম এই রেস্টুরেন্টের প্রায় আসে। তাই ওখানকার সবাই জানে প্রিয়ম প্রাইভেসি চাই। তা না হলে ফ্যানরা দেখলে খাওয়ার বারোটা বাজিয়ে দিবে।
তারপর তুয়া প্রিয়মের সাথে কথা বলতে শুরু করলো।তুয়া প্রিয়মের সাথে কথা বলতে বলতে প্রিয়ম ওর খাওয়া শেষ করলো। প্রিয়ম আজকে ওর বাসায় ফিরবে না, ওর ফ্ল্যাটেই থাকবে। প্রিয়ম ওর ফ্ল্যাটে ঢুকে বেডের উপর দুম করে শুয়ে পড়লো। আর তুয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
— “তুয়াপাখি আজকাল তোমাকে নিয়ে আমার খুব ভয় হয়। মনে হয়, আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলবো। আচ্ছা তুয়া আমি যদি এখন বলি এখনই আমাকে বিয়ে করতে হবে। তুমি কি রাজি হবে?” (প্রিয়ম)
— “রাজি না হওয়ার কি আছে? ভরসা আর বিশ্বাস করি বলেই তো তোমাকে এত ভালোবাসতে পেরেছি। তাহলে বিয়ে করার সময় পিছিয়ে যাবো কেন? আমি বখাটে বা রাস্তায় ছেলেকে তো ভালোবাসিনি, যে ভালোবাসার কথা বাসায় প্রকাশ করতে আমার ভয় করবে!” (তুয়া)
— “আমাকে যদি তোমার পরিবার না মানে? যদি রাজি না হয়, তখন কি করবে?” (প্রিয়ম)
— “না মানার কি আছে? আব্বু-আম্মু ছোট থেকে তোমাকে দেখছে। তারা তো জানে তুমি কেমন, আর আমার বিশ্বাস কেউ অমত করবে না।” (তুয়া)
— “আজকাল কেন জানি খুব ভয় হয়, কেন ভয় হয়? এর উত্তর আমার জানা নেই। তুয়া এই ভয় থেকে মুক্তির পথ আমাকে বলে দে না রে।” (দীর্ঘশ্বাস ফেলে)
–“তাহলে চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি, বিয়ে হয়ে গেলে সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে। তুমি শীঘ্রই বিয়ের ব্যবস্থা করো। আমি রাজি!” (তুয়া)
— “সত্যি তো?”
— “হুম!”
— “পরে পিছিয়ে যাবে না তো? তখন হাজারটা অজুহাত দেখাবে না তো?” (প্রিয়ম)
— “মুখে বড় বড় কথা তো বলাই যায়! সময় হোক বুঝিয়ে দিবো সব, যে আমি কতটুকু পারি বা আমার কতটুকু ক্ষমতা।” (তুয়া)
— “আগামী শুক্রবার তাহলে ডেট ফিক্সড করি। আমি কিন্তু সিরিয়াস।” (প্রিয়ম)
— “হুম,আমিও!” (তুয়া)
তুয়ার ফোন রেখে সামনে তাকাতেই দেখে প্রত্যয় দাঁড়িয়ে আছে। তুয়া প্রত্যয়ের মুখের দিকে একবার তাকায়। আর দেখে প্রত্যয়ের চোখ ছলছল করছে। তুয়ার বুঝতে বাকি নেই, যে প্রত্যয় ওর সব কথা শুনে ফেলছে। তুয়া একবার ঢোক গিলে মাথা নিচু করে বললো,
— “ভাইয়া,আপনি ফ্রি আছেন?”
— “হুম!” (ধরা গলায়)
— “আপনার সাথে একটু কথা বলতাম, ফ্রি থাকলে চলুন ছাদে যায়।”
— “হুম।”
প্রত্যয় ওর আম্মুকে বললো ছাদের যাওয়ার কথা। প্রত্যয়ের আম্মু দুজনকে রাতের খাবার খেয়ে তারপরে যেতে বললো। সবাই একসাথে খেতে বসলো। তুয়ার তখনকার কথা শুনে প্রত্যয়ের মনে হচ্ছে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। বুকের ভেতর অসহ্য ব্যাথা করছে। বার বার দম আটকে যাচ্ছে এমন মনে হচ্ছে। প্রত্যয় তবুও সবার সামনে নিজেকে স্বাভাবিক রেখে কোন রকম খেয়ে নিলো। তারপর প্রত্যয় আর তুয়া ছাদে গেল। দুজনেই দুরত্ব বজায় রেখে ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে। কারো মুখে কোন কথা নেই। তুয়া আকাশের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,
— “আমি সরি!”
— “কেন?”
— “আপনার ভালবাসাটা গ্রহন করতে পারলাম না। আমি প্রিয়মকে খুব ভালবাসি। তাই আমি একটু হলেও বুঝি প্রিয় মানুষটাকে হারানো ভয়। আমাকে মাফ করে দিবেন ভাইয়া।” (তুয়া)
— “আমাকে ভালোবাসিস না ঠিক আছে। তবে আমাকে আগের মত তুমি সম্বোধন করে কথা তো বলতে পারবি? যদি পারিস তো এখন তোর বলা কথাগুলো শুনবো। আর তা না হলে আমিও সরি। কারণ তোর আপনি সম্বোধন করে কথা বলা আমি সহ্য করতে পারি না।” (প্রত্যয়)
— “হুম! প্রত্যয় ভাইয়া আমি বুঝতে পারছি তুমি কষ্ট পাচ্ছো। তবে সবার ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না। সবাই যদি তার প্রিয় মানুষটাকে পেতো, তাহলে ভালোবাসার দহনটা কেমন কেউ বুঝতো না। আমি তোমার ভালবাসাটা গ্রহন করতে পারিনি ঠিকই, তাই বলে তোমাকে অসন্মান করবো তাও কিন্তু না। এজন্য বলছি শুধু শুধু কষ্ট পেও না।” (তুয়া)
— “হঠাৎ এমন সিমপ্যাথি দেখাচ্ছিস কেন? আমি কি বলেছি আমাকে সিমপ্যাথি দেখাতে?” (প্রত্যয়)
— “সিমপ্যাথি কেন দেখাবো? আমি শুধু এটাই বলতে চাচ্ছি, যে সবার ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না।” (তুয়া)
— “পূর্ণতা পাবে কি না, সেটা তো পরের কথা! আর চাওয়া পাওয়ার হিসেব করে তো তোকে আমি ভালোবাসিনি! আর তোকে পাবো না বলে কি এখন তুই আমাকে তোকে ভালোবাসতেও নিষেধ করছিস?” (প্রত্যয়)
— “শুধু কষ্ট পাবে আর পাচ্ছোও! তাই বলছিলাম কথা গুলো। এছাড়া অন্য কিছু না।” (তুয়া)
— “এই আমি কোনদিক থেকে কম আছি রে? আমাকে বল কেন পারবি না আমাকে ভালবাসতে? কি দোষ আমার? কি করেছি আমি? কেন ইগনোর করিস? কেন আমাকে একটু ভালবাসতি পারিস না? আমার জায়গাটা কেন প্রিয়মকে দিলি? কেন প্রিয়মকে ভালোবাসিস?আমাকে চোখে পড়ে না? আমার কষ্টটা দেখতে পাস না? আমার বুকে দহন যখন কমাতে পারবি না, তখন কেন এই বুকে দহনে পরিমানটা বাড়িয়ে দিচ্ছিস? সারাদিন প্রিয়ম প্রিয়ম করিস, কেন আমার সাথে একটু কথা বললে কি হয় তোর? একটা পলক দেখার জন্য সকালে বেলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকি, কত বাহানা খুঁজি একটাবার তোর সাথে কথা বলার জন্য। এসব তোর চোখে পড়ে না? নাকি প্রিয়মের মতো এতবার ভালোবাসি ভালোবাসি বলতে পারি না, তাই আমাকে ভাবিস আমি ভালোবাসতেই পারি না? বল কি করলে আমাকে একটু ভালোবাসবি? বল না কি করলে আমাকে সাথে ভালো করে একটু কথা বলবি? বল না তুয়া, কেন এত ইগনোর করিস আমাকে? এত ভালোবাসি তবুও কেন এত অবহেলা করিস? কেন এত কষ্ট দিস আমাকে? কেন? কেন?” (প্রত্যয় তুয়ার বাহু ধরে ঝাঁকিয়ে)
প্রত্যয় কথা গুলো বলতে বলতে একটা সময় হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছে তুয়ার পায়ের কাছে! প্রত্যয়ের চোখের পানি আজকে যেন আর লুকানো যাচ্ছে না। আজকে প্রত্যয় ওর ভালোবাসার কাছে হার মেনে নিতে পারছে না।প্রত্যয়ের এমন পাগলামি দেখে তুয়াও ধপ করে বসে পড়ে। আর ছলছল চোখে প্রত্যয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,
— “আমাকে মাফ করে দাও। আমি পারবো না প্রিয়মকে ছাড়া থাকতে। ওই পাগল ছেলেটাকে আমি বড্ড বেশি ভালোবাসি। প্রিয়ম কোনদিন ওর পরিবারের থেকে একটু ভালোবাসা পায়নি, সে শুধু মাত্র আমার জন্য এখনও বেঁচে আছে। আমি জানি আমিই হলাম ওর বাঁচার অবলম্বন! আমি কি করে ওকে ঠকাবো? আমি প্রিয়মকে ভালোবাসি, বার বার ভালোবাসি কথাটা বলার জন্য না।ওকে আমি ভালোবাসি আমার প্রতি ওর ভালোবাসা দেখে! প্রিয়ম আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে, আর আমিও। প্রিয়ম সবাইকে সবসময় এটা বোঝায় যে প্রিয়ম অনেক সুখী, কিন্তু বিশ্বাস করো ও হচ্ছে ভালোবাসার কাঙ্গাল। ওর সবকিছু থেকেও ওর কিছু নেই। এমন একটা ছেলেকে কিভাবে আমি ঠকাবো? সেই ছোট্ট বেলা থেকেই আমরা দু’জন দুজনের প্রতি একটা মায়াতে জড়িয়ে গেছি। আর দিন দিন সেই মায়া টা আমাদের ভালোবাসাতে পরিণত হয়েছে। আমাদের তিল তিল করে বুনে রাখা ভালোবাসাটা কিভাবে ভুলে যাবো? ভাইয়া প্লিজ তুমি কষ্ট পেও না,আমি চাই তুমিও ভালো থাকো।তোমাকে কষ্ট পেতে দেখলে আমার নিজেকে ছোট লাগে। তোমাকে সিমপ্যাথি দেখানোর যোগ্যতার আমার নেই। আমি তোমার শুধু মাত্র কথাগুলো বললাম যেন তুমি কষ্টটা না পাও।” (তুয়াও কেঁদে কেঁদে)
প্রত্যয় একদৃষ্টিতে তুয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। তুয়া হেঁচকি তুলে মাথা নিচু করে কাঁদছে। তিনজনে পড়ে গেছে একটা গোলক ধাঁধায়। তুয়া প্রিয়ম দুজন-দুজনকে ভালোবাসে। আর এখানে প্রত্যয়ের ভালোবাসাটা একতরফা। আর এখন প্রত্যয়ের সরে দাঁড়ানো কি উচিত নই? কেউ আর কোন কথা বললো না। তুয়াও ওখানে আর এক মুহূর্ত না থেকে দৌড়ে নিচে চলে গেল। আর প্রত্যয় দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতে শুরু করলো।
— “আমি চাইলে তোকে বাধ্য করতে পারতাম আমাকে বিয়ে করার জন্য! বিয়ে না হয় জোর করে করলাম, কিন্তু ভালোবাসাটা কি জোর করে হয়? এখানে তুই আর প্রিয়ম দুজন-দুজনকে এতটা ভালোবাসিস! আমি যদি জোর করে তোদের মাঝে ঢুকে পড়ি, তাহলে না আমি তোর ভালোবাসা পাবো, না তুই আমার কাছে ভালো থাকবি। আর না প্রিয়ম তোকে ছাড়া ভালো থাকবে! কেউ ভালো থাকবো না। তিনজনকেই ভালোবাসার ব্যাধিতে সারাটা জীবন ভুগতে হবে। আমিই না হয় সরে যাবো তোদের থেকে। তোরা তাও ভালো থাক। আমি না হয় আমার ভালবাসাটা বির্সজন দিলাম। ভালোবাসার মানুষটা মুখের হাসির জন্য আমিই না হয় ত্যাগ স্বীকার করলাম। তুই ঠিকই বললি, আসলেই তো সবার ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না।আর পূর্ণতা পেতেও ভাগ্য লাগে। আর এখানে প্রত্যয়ের ভাগ্য শূন্যের খাতায়।” (চোখের কোণের পানি টুকু মুছে ফেলে)
সেদিন রাতে প্রত্যয় সারারাত ছাদেই ছিলো, নিজের অবুজ মনটাকে বুঝ দেওয়ার জন্য। ভোরের আলোর ফোটার পর প্রত্যয় বাসায় ফিরেছে।
দুইদিন পর______
এই দুইদিন তুয়া আর প্রত্যয়কে দেখেনি। তুয়ার বাবা মা বাসায় ফিরেছে, তাই তুয়াও ওর বাসায় চলে গেছে। তুরাগ আর কয়েকদিন পর ফিরবে, প্রিয়ম তুয়াদের বাসায় এসেছে। তুয়া কলেজে গেছে, প্রিয়ম তুয়ার আব্বু আর আম্মুর সামনাসামনি বসে আছে। প্রিয়ম উনাদের দিকে একবার তাকিয়ে,মাথা নিচু করে বললো!
— “আংকেল আমি তুয়াকে বিয়ে করতে চাই!” (মাথা নিচু করে)
— “তোমার বাবা-মা তো এই বিষয়ে আমাদের কিছু বলেনি আব্বু!” (তুয়ার আব্বু)
— “আংকেল আমার জন্য তাদের এত সময় কই? তাই আমার নিজের কথা নিজেই বলতে বাধ্য হলাম।আপনারা তো জানেন আমি কেমন, আমি তুয়ার দায়িত্ব নিতে চাই।” (প্রিয়ম)
— “বিয়ের কথাবার্তা এভাবে হয় না। আর তুয়ার মতামত না জেনে, আমি কিছু কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না।তুয়া আসুক ওর সাথে কথা বলি।” (তুয়ার আব্বু)
— “হুম অবশ্যই! আংকেল আপনারা বাবা-মায়েরা হয়তো জানেন আমরা দুজন-দু’জনকে পছন্দ করি। আমাদের উচিত ছিলো আপনাদের জানানো। আমি আমার আব্বু আম্মুকেও জানিয়েছি, তারা অমত পোষণ করেছে। এবার আমার মনে হয়েছে আপনাদের জানানো উচিত। তাই আপনাদেরও জানিয়ে দিলাম। এবার আপনারা যদি অমত করেন, তো আমাদেরও অন্য পথ বেছে নিতে হবে। আমি মোটেও সেই পথ অবলম্বন করতে চাই না।” (প্রিয়ম)
— “তোমার আব্বু আম্মু অমত করলো কেন? আমাদের দোষ টা কি?” (অবাক হয়ে, ভ্রু কুচকে )
— “কারণ আপনারা আমাদের মত এত হাই সোসাইটির না তাই। তবে আংকেল আমি বলছি, আপনার কি আছে এটা আমার দেখার বিষয় না! আমি আপনার কাছে আপনার মেয়েকে চাচ্ছি আমার বেঁচে থাকার অবলম্বন করে রাখতে। আমার আর কিছু দেখার প্রয়োজন নেই। আংকেল আপনিও হয়তো জানেন, আমার এখন কারো দায়িত্ব নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সার্মথ্য আল্লাহ আমাকে দিয়েছে। আংকেল প্লিজ আপনি আমার আব্বু-আম্মুর মতো করে না ভেবে, আপনারা আপনাদের সোসাইটির কথাও না ভেবে আমাদের দুজনের কথা একটা বার ভাবুন। প্লিজ আংকেল আপনি অন্তত আমাকে নিরাশ করবেন না।” (শান্ত কন্ঠে)
প্রিয়ম কথা গুলো তুয়ার বাবার পাশে বসে, তুয়ার বাবার দিকে তাকিয়ে খুব শান্ত ভাবে কথা গুলো বললো।তুয়ার বাবা আজকে প্রিয়মের কথা শুনে অবাক না হয়ে পারলো না। সেদিন প্রিয়মের জ্বরের জন্য তুয়াকে ব্যাকুল হতে দেখেছে! আর আজকে তুয়াকে পাওয়ার জন্য প্রিয়ম কেমন পাগলের মতো করছে। তুয়ার বাবা প্রিয়মের মাথায় হাত রেখে বললো।
— “আল্লাহ যদি তোমাদের জোড়া করে পাঠিয়ে থাকে, তাহলে কেউ তোমাদের আলাদা করতে পারবে না আব্বু। আমি নিজে তোমার বাবার সাথে কথা বলবো, তুমি চিন্তা করো না। আর আমার মেয়ের চাওয়াকে আমি সব সময় প্রধান্য দেই! এবারো দিবো, কারণ আমার মেয়ে চয়েজ সব সময় উচ্চমানের। ওর চাওয়া কোন জিনিস আমি আজ পর্যন্ত অপূর্ণ রাখিনি। কারণ আমার তুয়া পঁচা-শামুকে পাঁ কাটার মতো মেয়েই না। আর প্রিয়ম আব্বু তোমার মতো ছেলেকে রিজেক্ট করার প্রশ্নই আসেনা। তুমি চিন্তা করো না, আমি তোমার আব্বু আম্মুর সাথে নিজে কথা বলছি।”
তারপর তুয়ার বাবা প্রিয়মের সামনেই প্রিয়মের বাবাকে ফোন দিলো।
To be continue…
(গল্প নিয়ে কারো কিছু বলার থাকলে বলতে পারেন!)